× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

আন্তর্জাতিক
Behind the fall of Imran
google_news print-icon

ইমরানের পতনের নেপথ্যে

ইমরানের-পতনের-নেপথ্যে
সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। ছবি: এএফপি
নাটকীয়তার ভোটে রাজনৈতিক মৃত্যু হয় ক্রিকেটার থেকে মাঠকাঁপানো রাজনীতিক ইমরানের, যার পেছনে দুটি বাস্তবতা ছিল। পার্লামেন্টের ভেতর জোটসঙ্গীদের সমর্থন হারায় পিটিআই, যার ফলে অনাস্থা ভোটে জিততে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করতে পারেননি ইমরান। পার্লামেন্টের বাইরে সাবেক এ অলরাউন্ডার দৃশ্যত সেনাবাহিনীর সমর্থন হারান।

দিনভর অনেক নাটকীয়তা শেষে শনিবার মধ্যরাতে পাকিস্তানের পার্লামেন্টে হলো ইমরান খানের ওপর অনাস্থার ভোট। এতে হারলেন ইমরান; হারালেন প্রধানমন্ত্রিত্ব।

এর আগে বৃহস্পতিবার এক রায়ে অনাস্থা ভোট খারিজ করে পার্লামেন্ট ভেঙে দেয়ার সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষণা করে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট, যার ফলে পার্লামেন্টের হাতেই নির্ধারণ হয় ভোট এড়াতে চাওয়া ইমরানের ভাগ্য।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানের পার্লামেন্টে অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপনের পর ইমরানের হাতে দুটি সুযোগ ছিল। ভোটের মাধ্যমে সরিয়ে দেয়া না হলে তাকে পদত্যাগ করতে হতো। ইমরান শেষ বল পর্যন্ত খেলতে চাওয়ায় আইনপ্রণেতাদের ভোটেই তার বিদায় নিশ্চিত হয়।

নাটকীয়তায় ভরা এ ভোটে আপাতত রাজনৈতিক মৃত্যু হলো ক্রিকেটার থেকে মাঠকাঁপানো রাজনীতিক ইমরানের, যার পেছনে দুটি বাস্তবতা ছিল। পার্লামেন্টের ভেতর পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) জোটসঙ্গীদের সমর্থন হারায়, যার ফলে অনাস্থা ভোটে জিততে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করতে পারেননি ইমরান। পার্লামেন্টের বাইরে সাবেক এ অলরাউন্ডার দৃশ্যত সেনাবাহিনীর সমর্থন হারান।

২০১৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে জিততে সেনারা ইমরানকে সহায়তা করে বলে অভিযোগ ছিল বিরোধীদের। সেই সেনাবাহিনীই ইমরান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে জ্যেষ্ঠ পদগুলোতে কিছু নিয়োগ এবং নীতিগত সিদ্ধান্ত ইস্যুতে। যদিও ইমরানের সঙ্গে ‘বিচ্ছেদের’ অভিযোগ অস্বীকার করেছে বাহিনীটি।

পাকিস্তানে গত কয়েক সপ্তাহে ইমরানকে গদিচ্যুত করতে প্রধান দুই বিরোধী দল পাকিস্তান পিপল’স পার্টি (পিপিপি) ও পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) তাদের তৎপরতা বাড়িয়ে দেয়। পিটিআই নেতৃত্বাধীন জোটের মিত্ররা ইমরানের প্রতি অসন্তোষের বিষয়ে সোচ্চার হতে থাকেন।

মার্চের শেষের দিকে পিটিআইয়ের জোটসঙ্গী বেলুচিস্তান আওয়ামী পার্টির (বিএপি) সিনেটর আনোয়ার উল হক কাকর বলেছিলেন, ‘এখন পর্যন্ত সুশাসনের ক্ষেত্রে সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।’

ইমরানের জোটত্যাগী দলটির এ নেতা আরও বলেছিলেন, ‘গত দুই বছর ধরে অসন্তোষ চলছিল। কেন্দ্রীয় সরকারে নিজেদের অবস্থান এবং মন্ত্রিপরিষদের সদস্যসংখ্যা নিয়ে দল (বিএপি) অসন্তুষ্ট ছিল।’

পিটিআইয়ের সঙ্গে তিক্ত সম্পর্কের বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী আফজাল চাঁনের বক্তব্যে, যিনি মার্চের শুরুতে ছেড়ে আসা পিপিপিতে নতুন করে যোগ দেন।

ইমরানের নেতৃত্বাধীন জোট ছাড়ার কারণ হিসেবে চাঁন বলেছিলেন, ‘(ইমরান) খানের দুর্নীতিবিরোধী প্ল্যাটফর্মে প্রভাবিত হয়েছিলাম। একই সঙ্গে বিদ্যমান পরিস্থিতির ওপর ত্যক্ত ছিলাম, কিন্তু তারপর আমি দেখলাম, খান বাইরে গরিবদের নিয়ে কথা বললেও অন্দরে তিনি সম্পদশালী বিনিয়োগকারী বেষ্টিত।’

অর্থনৈতিক সংকট

পাকিস্তানে ইমরানের প্রতি অসন্তোষ বাড়ার অন্যতম কারণ হিসেবে দেখা হয় গভীরতর অর্থনৈতিক সংকটকে। তার শাসনকালের বড় সময় দুই অঙ্কের মুদ্রাস্ফীতি দেখেছে পাকিস্তান।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বিরোধীরা এককাট্টা হওয়ার পর বৈশ্বিক বাজারে ঊর্ধ্বমুখিতার মধ্যেও অভ্যন্তরীণ জ্বালানি ও বিদ্যুতের দাম কমানোর ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান। একই সঙ্গে জুনে অর্থবছর শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত দাম নির্দিষ্ট রাখার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

ইমরানের এ সিদ্ধান্ত ধারাবাহিক অর্থ ঘাটতি এবং দেনা-পাওনার ভারসাম্যজনিত সমস্যায় থাকা পাকিস্তানের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে। চলতি সপ্তাহে ডলারের বিপরীতে ঐতিহাসিক অবনমন হয় রুপির। এমন বাস্তবতায় এক জরুরি বৈঠকে সুদের হার ব্যাপকভাবে বাড়ায় স্টেট ব্যাংক অফ পাকিস্তান।

এ সংকট নিয়ে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্ল্যাভাৎনিক স্কুল অফ গভর্নমেন্টের অর্থনীতিবিদ শাহরুখ ওয়ানি আল জাজিরাকে বলেন, ‘এটার একাংশ আগের সরকার সৃষ্ট পরিস্থিতির কারণে এবং আরেক অংশ অবশ্যই কোভিডের কারণে, তবে সরকার কৌশলী না হয়ে সমস্যা সমাধানে তড়িঘড়ি শুরু করে এবং সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেয়নি কখনও।’

ইমরানের পতনের নেপথ্যে
ইমরানের শাসনামলে অর্থনৈতিক সংকট থেকে বের হয়ে আসতে পারেনি পাকিস্তান। ছবি: এএফপি

ইমরানের সাবেক মিত্র চাঁনের মতে, তার আসনে ভোটারদের মধ্যে অসন্তোষ পতনে ভূমিকা রেখেছে। তিনি বলেন, ‘মুদ্রাস্ফীতি, সারের ঘাটতি, পাঞ্জাবে স্থানীয় সরকার পরিচালনায় ব্যর্থতা, পুলিশের তৎপরতা—এসবের প্রত্যেকটিই সীমা ছাড়িয়েছে।’

পার্লামেন্টে মিত্রদের সমর্থন হারানোয় ইমরানের পক্ষের আইনপ্রণেতা কমে যায়। ৩৪২ সদস্যের জাতীয় পরিষদে বিএপি, মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট (এমকিউএম) এবং পাকিস্তান মুসলিম লিগ-কায়েদের (পিএমএল-কিউ) আসনসংখ্যা ৫ শতাংশের কম, তবে অনাস্থা ভোটে জোটের এ সঙ্গীদের ইমরানের বিরুদ্ধে ভোট দেয়ার ঘোষণায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার সাড়ে তিন বছরের অধ্যায় শেষ হয়ে যায়।

শুধু জোটের মিত্র নয়, খোদ পিটিআইয়ের বিদ্রোহী কিছু আইনপ্রণেতার সমর্থন পাওয়ার কথাও জানায় বিরোধী দলগুলো।

এই বিরোধী ও বিদ্রোহীদের মতো অর্থনৈতিক অবস্থাও ছিল ইমরানের বিপক্ষে। এ নিয়ে সাবেক অর্থমন্ত্রী মিফতাহ ইসমাইল বলেন, ‘পাকিস্তানের সামনে সবচেয়ে বড় দুই অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ হলো উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি এবং ক্রমহ্রাসমান বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ।’

তিনি আরও বলেন, ‘সমস্যা হলো রিজার্ভ কমতে থাকায় মুদ্রার অবনমন হচ্ছে, যেটি মুদ্রাস্ফীতি আরও বাড়াচ্ছে।’

সেনাবাহিনীর ভূমিকা

ইমরানের প্রস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর তার সাবেক মিত্ররা বেসামরিক প্রশাসনের সঙ্গে সামরিক কর্মকর্তাদের সম্পর্কের বিষয়টিকে আরও সামনে আনেন। বিরোধীদের অনাস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ইমরানের পক্ষ নেবে না বলে জানিয়ে দেয় সেনাবাহিনী, যাতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি পার্লামেন্ট সদস্যদের সমর্থন কমতে থাকে।

বিএপির সিনেটর কাকর বলেন, ‘প্রতিষ্ঠান (সেনাবাহিনী) নিরপেক্ষ হওয়ার পর মিত্ররা দেখল যে, সরকার আর টিকবে না। তিনি আর থাকতে পারবেন না, এমনটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এটি (পতন) ছিল সময়ের ব্যাপার।’

পাকিস্তানের বিগত অনেক প্রধানমন্ত্রীর একজন ইমরান খান, যিনি গদিচ্যুত হয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে নিয়োগ ও বৈদেশিক নীতির প্রশ্নে সেনাদের সঙ্গে বিরোধের পরিপ্রেক্ষিতে।

গত বছরের অক্টোবরে বেসামরিক প্রশাসনের সঙ্গে সামরিক কর্মকর্তাদের ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার বিস্ফোরণ ঘটে। সে সময় সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল কামার বাজওয়ার পছন্দের ব্যক্তির পরিবর্তে লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফাইজ হামিদকে সামরিক গোয়েন্দাপ্রধান হিসেবে রাখতে চেয়েছিলেন ইমরান। ঘটনাক্রমে বাজওয়ার মনোনীত লেফটেন্যান্ট জেনারেল নাদিম আনজুম আন্তবাহিনী গোয়েন্দা (আইএসআই) প্রধান হিসেবে নিযোগ পান, কিন্তু এ নিয়ে কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা বিরোধ অশুভ ইঙ্গিত দিচ্ছিল।

ইমরানের পতনের নেপথ্যে
সেনাবাহিনীর প্রধান কামার বাজওয়ার সঙ্গে ইমরান খান। ছবি: হিন্দুস্তান টাইমস

সেনাপ্রধান হিসেবে জেনারেল বাজওয়ার দ্বিতীয় মেয়াদ শেষ হচ্ছে নভেম্বরে। তার স্থলাভিষিক্ত হওয়ার সব যোগ্যতা রয়েছে সর্বজ্যেষ্ঠ জেনারেলদের একজন হামিদের। বলে রাখা ভালো, পাকিস্তানে সেনাপ্রধান নিয়োগ দেন প্রধানমন্ত্রী।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক ঢেলে সাজানোর চেষ্টা

দৃশ্যত অস্বাভাবিক পদক্ষেপ হিসেবে পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় ব্যবসায়িক মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক ঢেলে সাজানোর চেষ্টা করেছিলেন ইমরান খান। অন্যদিকে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রকে ধরে রাখতে চেয়েছে সেনাবাহিনী।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে স্বঘোষিত নিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ইমরান খান রাশিয়া সফরে যান। ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের মধ্যে তিনি রুশদের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি করার চেষ্টা করেন, তবে ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রুশ হামলা শুরুর কয়েক ঘণ্টা পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কাছ থেকে একটি করমর্দনের বেশি কিছু পাননি তিনি।

পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ইমরানের মস্কো সফরে সমর্থন দিলেও সামরিক-বেসামরিক প্রশাসনে মতদ্বৈততা তীব্র হতে থাকে। পার্লামেন্টে অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপনের পর ইমরান অভিযোগ করেন, রাশিয়া সফর এবং নিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতি বেছে নিতে চাওয়ার শাস্তি হিসেবে তাকে উৎখাতে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ষড়যন্ত্র শুরু হয়।

ইসলামাবাদে গত ২৭ মার্চ এক সমাবেশে ষড়যন্ত্রের প্রমাণ হিসেবে একটি চিঠি দেখান ইমরান খান। তার দাবি, তাকে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে অপসারণে কূটনৈতিক বার্তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

ইমরানের পতনের নেপথ্যে
সমাবেশে কথিত চিঠি হাতে ইমরান খান। ছবি: সামা নিউজ

কূটনৈতিক সেই বার্তা, যুক্তরাষ্ট্রের কথিত হুমকি এবং ইমরানের ওপর অনাস্থা ভোটকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ষড়যন্ত্র আখ্যা দেয়া পাকিস্তানের রাজনীতি এবং বেসামরিক-সামরিক সম্পর্ককে আরও ঘোলা করে।

এ বিষয়ে অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল, সাবেক সামরিক মুখপাত্র এবং ২০১৫ থেকে ২০১৮ মেয়াদে ইউক্রেনে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত আতহার আব্বাস বলেন, ‘ওই চিঠি তীব্র প্রতিক্রিয়া এবং সংশোধনমূলক ব্যবস্থার প্রেক্ষাপট সৃষ্টি করে। অনাস্থা ভোটে হস্তক্ষেপ নিয়ে (সেনাবাহিনীতে) মিশ্র প্রতিক্রিয়া হয়।’

জেনারেল আব্বাস ইমরান খানের শাসনামলে তার সঙ্গে সামরিক নেতৃত্বের বেশ কিছু মতপার্থক্যের কথা বলেন। তার মতে, ইমরানের দুর্বল রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তিতে আঁচড়ের মতো বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।

পাকিস্তানের অভ্যন্তরে সেনা অভিযান এবং নাইন-ইলেভেনের পর আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে দৃশ্যত অন্তহীন যুদ্ধের বিরোধী ছিলেন ইমরান। এ নিয়ে সেনাবাহিনীর সঙ্গে মতদ্বৈততা তৈরি হয় তার।

এ বিষয়ে জেনারেল আব্বাস বলেন, ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রধানমন্ত্রীর (ইমরান) অবস্থান ছিল, আমরা আমেরিকার যুদ্ধ বয়ে বেড়াচ্ছি এবং জান-মালের ক্ষতি করছি। সেনাবাহিনীর মত ছিল, এটা (সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান) আফগান যুদ্ধের কুফল এবং আমাদের হাতে অন্য কোনো সুযোগ ছিল না।’

তিনি বলেন, ‘সেনা নেতৃত্বের ওপর চাপ ছিল যে, যদি এটা আমেরিকার হয়ে যুদ্ধ হয়, তাহলে তরুণ কর্মকর্তা এবং সেনাদের আত্মত্যাগ বৃথা।’

অবসরপ্রাপ্ত আরেক সামরিক কর্মকর্তা এয়ার ভাইস মার্শাল শেহজাদ চৌধুরীর মতে, ইমরানের শাসনপদ্ধতির কারণেও সেনাবাহিনীর সঙ্গে তার উত্তেজনা বেড়েছে।

তিনি বলেন, ‘নীতিগত বিষয়গুলোতে ইমরান স্থির ছিলেন না। কোনো কিছু আগে থেকে ধারণা করা যেত না কিংবা ঠিক করা ছিল না। ইমরান খান জনপ্রিয়তামুখী, যেটা তার জন্য ঝুঁকিরও।’

পরিশেষে বলা যায়, পার্লামেন্টের অভ্যন্তরে পরাজিত এবং বাইরে সমর্থন হারানো ইমরান খান রাজনীতিতে একেবারে অতীত হয়ে যাননি। পাকিস্তানের রাজনৈতিক ঘূর্ণাবর্তে সাবেক প্রধানমন্ত্রীদের ফিরে আসা বিরল নয়।

এ নিয়ে ইমরানের সাবেক বিশেষ সহকারী চাঁন বলেন, ‘এক মাস আগে জনগণ (ইমরান ও তার নেতৃত্বাধীন সরকারকে) গালাগাল করছিল। আর এখন তারা বলছে, তিনি গৌরবের ও স্বাধীন পাকিস্তানের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন।’

আরও পড়ুন:
ইমরানের গদিচ্যুতিতে দায় নেই: যুক্তরাষ্ট্র
অনুমতি ছাড়া পাক কর্মকর্তাদের দেশত্যাগ নয়
জাতীয় পরিষদ মুলতবি, প্রধানমন্ত্রী ঠিক করতে ভোট সোমবার
ইমরান কোথায়
ইমরানের ক্ষমতাচ্যুতি নিয়ে কে কী বলছেন

মন্তব্য

আরও পড়ুন

আন্তর্জাতিক
Shakib Al Hasan including the ACC

সাকিব আল হাসানসহ ১৫ জনের নামে দুদকের মামলা

শেয়ারবাজার থেকে ২৫৭ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
সাকিব আল হাসানসহ ১৫ জনের নামে দুদকের মামলা

প্রতারণার মাধ্যমে শেয়ার বাজার থেকে ২৫৭ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও মাগুরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসানসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদকের সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন বাদী হয়ে সংস্থাটির সমন্বিত ঢাকা জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর সেগুন বাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন এসব তথ্য জানান।

আক্তার হোসেন বলেন, তিনটি কোম্পানির শেয়ারে সাকিব আল হাসান বিনিয়োগ করেছেন। বিনিয়োগ কার্যক্রমে মার্কেট ম্যানিপুলেট করা হয়েছে। মার্কেট ম্যানিপুলেশনের সঙ্গে তিনি (সাকিব) জড়িত।

এর আগে গত সোমবার সাকিব আল হাসানসহ ১৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত। সাকিব ছাড়া ১৪ আসামি হলেন— সমবায় অধিদপ্তরের উপনিবন্ধক মো. আবুল খায়ের (ওরফে হিরু) ও তার স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসান, আবুল কালাম মাদবর, কনিকা আফরোজ, মোহাম্মদ বাশার, সাজেদ মাদবর, আলেয়া বেগম, কাজী ফুয়াদ হাসান, কাজী ফরিদ হাসান, শিরিন আক্তার, জাভেদ এ মতিন, মো. জাহেদ কামাল, মো. হুমায়ুন কবির ও তানভির নিজাম।

আসামিদের বিরুদ্ধে ২৫৬ কোটি ৯৭ লাখ ৭০ হাজার ৩০৪ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহারপূর্বক দ্রুত আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার অসৎ অভিপ্রায়ে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ সংক্রান্ত প্রচলিত আইন ও বিধি (সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ, ১৯৬১ এর ১৭ ধারা) পরিকল্পিতভাবে লঙ্ঘনপূর্বক নিজেদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিও অ্যাকাউন্টসমূহে অসাধু, অনৈতিক ও অবৈধ উপায়ে ফটকা ব্যবসার মতো একাধিক লেনদেন, জুয়া ও গুজবের মাধ্যমে বাজারের কারচুপি করেছেন।

এজাহারে আরও বলা হয়, পরিকল্পিতভাবে নির্দিষ্ট কিছু শেয়ার সংঘবদ্ধভাবে ক্রমাগত ক্রয়-বিক্রয়পূর্বক কৃত্রিমভাবে দাম বাড়িয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ওই শেয়ারসমূহে বিনিয়োগে প্রতারণাপূর্বক প্রলুব্ধ করে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে তাদের ২৫৬ কোটি ৯৭ লাখ ৭০ হাজার ৩০৪ টাকা আত্মসাৎপূর্বক অস্বাভাবিক রিয়ালাইজড ক্যাপিটাল গেইনের নামে অর্জিত অপরাধলব্ধ অর্থ বা প্রসিড অব ক্রাইম শেয়ার বাজার থেকে সংঘবদ্ধভাবে উত্তোলন করেছেন। আসামি মো. আবুল খায়ের (ওরফে হিরু) কর্তৃক তার স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসানের সহায়তায় ক্যাপিটাল গেইনের নামে অর্জিত অপরাধলব্ধ অর্থের ২১ কোটি ১৪ লাখ ৪২ হাজার ১৮৫ টাকার উৎস গোপনের অভিপ্রায়ে লেয়ারিং করে বিভিন্ন খাতে স্থানান্তর করেন। তিনি ১৭টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সর্বমোট ৫৪২ কোটি ৩১ লাখ ৫১ হাজার ৯৮২ টাকার অস্বাভাবিক, অযৌক্তিক এবং সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন।

ওই মামলায় সাকিব আল হাসানের সম্পৃক্ততা প্রসঙ্গে বলা হয়, আসামি মো. আবুল খায়ের (ওরফে হিরু) কর্তৃক শেয়ার বাজারে কারসাজিকৃত প্যারামাউন্ট ইস্যুরেন্স লি., ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স লি. এবং সোনালী পেপারস লি.-এর শেয়ারে সাকিব আল হাসান বিনিয়োগ করে বাজার কারসাজিতে যোগসাজশ করেন। সরাসরি সহায়তাপূর্বক সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কারসাজিকৃত শেয়ারে বিনিয়োগে প্রতারণাপূর্বক প্রলুব্ধ করে তাদের ২ কোটি ৯৫ লাখ ২ হাজার ৯১৫ টাকা রিয়ালাইজড ক্যাপিটাল গেইনের নামে অপরাধলব্ধ আয় হিসেবে শেয়ার বাজার হতে উত্তোলনপূর্বক আত্মসাৎ করেছেন।

আসামিদের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) এবং দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/১২০বি/১০৯ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

চলতি বছরের এপ্রিলে সাকিবের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। অর্থপাচার ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য দুদকের উপ-পরিচালক মাহবুবুল আলমের নেতৃত্বে দুই সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Hope the National Charter in July Ali Riaz

জুলাই মাসে জাতীয় সনদের আশা করছি: আলী রীয়াজ

জুলাই মাসে জাতীয় সনদের আশা করছি: আলী রীয়াজ

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার ফলাফলের অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ডক্টর আলী রীয়াজ জুলাই মাসের মধ্যে একটি জাতীয় সনদ তুলে ধরার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

গতকাল বিকালে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দিনব্যাপী দ্বিতীয় দফার আলোচনার পর এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘আলোচনা অত্যন্ত ইতিবাচক। আমাদের প্রতিনিয়তই অগ্রগতি হচ্ছে এবং আমরা আশা করছি যে জুলাই মাসের মধ্যে আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত জাতীয় সনদে পৌঁছাতে পারব এবং রাষ্ট্রীয় স্বার্থে সেখানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে আমরা ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করতে পারব।’

আলোচ্য বিষয় নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রথম দফার আলোচনার পর সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের কিছু বিষয়ে পুনর্বিবেচনার কথা রাজনৈতিক দলগুলো বলেছিলেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল মঙ্গলবার আবার এ বিষয়ে আলোচনা করার পর আমরা এ বিষয়ে একমত হতে পেরেছি যে ৭০ অনুচ্ছেদের বিদ্যমান বিধান পরিবর্তন করে অর্থবিল ও আস্থা ভোটের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য বাধ্যবাধকতা থাকবে যেন তারা দলের পক্ষে ভোট দেন।

তিনি বলেন, দ্বিতীয়ত, গতদিনের আলোচনার তুলনায় একটি অগ্রগতি হয়েছে এবং আমরা সুস্পষ্টভাবে বলতে পারি যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ওই ক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে চারটি কমিটি অর্থাৎ পাবলিক একাউন্টস কমিটি, প্রিভিলেজ কমিটি, এস্টিমেশন কমিটি এবং পাবলিক আন্ডারটেকিং কমিটিসহ জন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সংক্রান্ত কমিটিগুলোর সভাপতির পদ আসনের সংখ্যানুপাতিক হারে বিরোধী দলকে প্রদানের বিষয়ে সকলে একমত হয়েছেন।

অধ্যাপক আলী রীয়াজ আরো বলেন, জাতীয় সংসদের নারী প্রতিনিধিত্বের বিষয় দীর্ঘ সময় ধরে আলোচনা হয়েছে। সকলেই জাতীয় সংসদে নারীদের জন্য ১০০টি আসন সংরক্ষিত করার জন্য সকলে একমত হয়েছেন। তবে এর পদ্ধতি ও প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা অব্যাহত থাকবে। আমরা আশা করছি আগামী সপ্তাহে এ বিষয়ে একমত হওয়া যাবে।

তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে যেটি সংবিধানের ৯৫(১) অনুচ্ছেদে আছে তার পাশাপাশি সংবিধানের ৪৮ (৩) অনুচ্ছেদে আছে সেগুলো সংশোধনের ব্যাপারে এক ধরনের ঐক্যমত হয়েছে। কিন্তু আমরা এই বিষয়টি আগামী সপ্তাহে আবার আলোচনা করব যেন একটি নির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত আমরা আসতে পারি। কিন্তু প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান ব্যবস্থা পরিবর্তনের বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্টের বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে কিন্তু তার সঙ্গে নীতিগতভাবে কিছু কিছু দল এর বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কিন্তু এটা কম বেশি সকলে স্বীকার করেছেন যে এ বিষয়ে পুনর্বিবেচনার দরকার আছে।

এ সময় কমিশনের একটি বড় স্টেকহোল্ডার হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর গতকালের আলোচনায় অনুপস্থিতির কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন , যে কোনো পরিস্থিতির উদ্ভব হলে আমরা সার্বক্ষণিকভাবে সব দলের সাথে যোগাযোগ রাখি যেন তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা যায়। কমিশনের পক্ষ থেকে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে, আমরা আশা করি গতকাল উপস্থিত না থাকতে পারলেও আজ তারা বা তাদের প্রতিনিধিরা এখানে উপস্থিত থাকবেন।

উল্লেখ্য, অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের সুপারিশ চূড়ান্ত করা এবং বহুল আলোচিত ‘জুলাই সনদ’ প্রস্তুতের লক্ষ্যে গতকাল থেকে শুরু হয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা।

বেলা এগারোটা চল্লিশ মিনিটে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে এ আলোচনার আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়।

আলোচনায় কমিশনের সহ সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে আরো অংশ নেন জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের সদস্য বিচারপতি এমদাদুল হক, বদিউল আলম মজুমদার, আইয়ুব মিয়া, মো. ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

এছাড়াও, বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ, বিএনপি চেয়ারপার্সন উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ,খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের, জাতীয় গণফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটির সমন্বয়ক টিপু বিশ্বাস, গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, এবি পার্টির জেনারেল সেক্রেটারি আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মুস্তাফিজুর রহমান ইরান, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ, বাংলাদেশ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (বিএলডিপি) চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, বাংলাদেশ জাসদের পক্ষ থেকে ডা. মুশতাক হোসেনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।

তবে, আমন্ত্রণ পেলেও বৈঠকে উপস্থিত হননি জামায়াতে ইসলামীর কোনো প্রতিনিধি।

এর আগে, এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জানায়, ১৭, ১৮ ও ১৯ জুন এই তিনদিন কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
I will not be afraid to bomb the trial I will take the trial to the shore
দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান

বোমা মারলেও ভয় পাব না, বিচারের তরী বয়ে নিয়ে যাব তীরে

বোমা মারলেও ভয় পাব না, বিচারের তরী বয়ে নিয়ে যাব তীরে

মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে ভয়হীন ও পক্ষপাতহীনভাবে কাজ করবেন বলে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেন, কেউ বোমা মারলেও তিনি ভয় পাবেন না।

গতকাল মঙ্গলবার সকালে পুরোনো হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারপতিদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার ত্বরান্বিত করতে গত ৮ মে ট্রাইব্যুনাল-২ গঠন করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিক সংবর্ধনার মাধ্যমে ট্রাইব্যুনাল-২ এর কার্যক্রম শুরু হয়ে গেল। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আমরা আল্লাহর ওপর নির্ভর করে পথ চলি। তার ওপর নির্ভর করে কাজ করি। কেউ বোমা মারলেও ভয় পাব না। কেউ গুলি করে মেরে ফেললে আমার সব গুনাহ নিয়ে যাবে। ফলে আমার ভয়ের কারণ নেই। আমি কবরের পাশে দাঁড়ানো, আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। ভয়ের কিছু নেই। বিচারের এই তরি বয়ে নিয়ে যাব।’ বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী আরও বলেন, কিছু লোক গত ১৫ বছর ক্ষমতা দখল করে রেখেছিল। তারা নিষ্ঠুরভাবে শাসন করেছে। তাদের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলার সাহস করেনি। মানুষ নিজেদের কথা বলতে পারেনি। সেই ফ্যাসিস্টরা এখনো ফিরে আসার চেষ্টা করছে।

বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, শত শত ছাত্র-জনতা জীবন দিয়ে মানুষকে স্বাধীনভাবে কথা বলার সুযোগ করে দিয়েছেন। অনেকে আহত হয়েছেন। তাদের অনেকে এখনো যথাযথ চিকিৎসা পাননি। বিচারকেরা চেষ্টা করছেন ছাত্র-জনতার দুর্ভোগ কমাতে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তাদের নাম উল্লেখ করে বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ভয়হীন ও পক্ষপাতহীনভাবে তারা কাজ করবেন। তাদের কাছ থেকে ন্যায়বিচার আশা করা যায়। তারা আন্তর্জাতিক নিয়ম ও প্রক্রিয়া মেনে চলবেন। আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের বিষয়গুলোও মেনে চলবেন বলেও উল্লেখ করেন নজরুল ইসলাম চৌধুরী। এ সময় ট্রাইব্যুনাল-২ এর সদস্য বিচারপতি মো. মঞ্জুরুল বাছিদ ও বিচারপতি নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সংবর্ধনার পর অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা দেখতে চাই আমাদের এই বিচার নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে যেন কোন প্রশ্ন না ওঠে। আমরা দেখতে চাই এই বিচার যেন হয় আন্তর্জাতিক মানের।’

চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, আজকের সংবর্ধনায় এজলাসে বসা শুরুর মধ্য দিয়ে ট্রাইব্যুনাল-২ এর যাত্রা শুরু হলো। ট্রাইব্যুনাল-১ থেকে কিছু মামলা এখানে আসবে বলে আশা করছি। আর কিছু নতুন মামলা এখানে দাখিল করব। ইনশাআল্লাহ, বিচারের অগ্রগতি দেশবাসী দেখতে পাবে। গত ৮ মে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের সাবেক বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীকে চেয়ারম্যান করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ গঠন করে সরকার। এই ট্রাইব্যুনালের সদস্য পদে নিয়োগ পান অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মঞ্জুরুল বাছিদ এবং মাদারীপুরের জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর। এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান ও সদস্যরা হাইকোর্ট বিভাগের বিচারকের প্রাপ্য বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা পাবেন। এছাড়া প্রজ্ঞাপনে বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদার, বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহিতুল হক এনাম চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বিদ্যমান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান নির্মূলে আওয়ামী লীগ সরকার, তার দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করেছে বলে শত শত অভিযোগ জমা পড়ে। জাজ্বল্যমান এসব অপরাধের বিচার অনুষ্ঠিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
There is no plan to raise fuel prices now Finance Advisor

এখনই জ্বালানির দাম বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা নেই: অর্থ উপদেষ্টা

এখনই জ্বালানির দাম বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা নেই: অর্থ উপদেষ্টা

সরকার ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাতের উপর নিবিড়ভাবে নজর রাখছে জানিয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, এই মুহূর্তে জ্বালানির দাম বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা নেই।

তিনি বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। যদি সংঘাত দীর্ঘায়িত হয়—তাহলে এটি আমাদের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। তবে আপাতত, আমরা অপেক্ষা করব।’

মঙ্গলবার (১৭ জুন) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নতুন সম্মেলন কক্ষে অর্থনৈতিক বিষয় সম্পর্কিত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি এবং পাবলিক ক্রয় সম্পর্কিত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

এই সংঘাত অভ্যন্তরীণ জ্বালানির দামের উপর প্রভাব ফেলতে পারে কিনা এমন প্রশ্নে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, ‘আন্তর্জাতিকভাবে এরই মধ্যে দাম সামান্য বেড়েছে, তবে আমাদের আগের দেওয়া ক্রয়াদেশগুলোকে এটি প্রভাবিত করেনি।’

তিনি আরও বলেন, সরকার গ্যাস ও এলএনজির দামও পর্যবেক্ষণ করছে।

উপদেষ্টা বলেন, ‘যদি এলএনজির দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে, তবে আমরা আমাদের পরিকল্পনায় এটি বিবেচনা করব। সৌভাগ্যবশত, আজ আমরা যে এলএনজি আমদানি প্রস্তাবটি অনুমোদন করেছি তা পুরোনো দামেই। আমরা ভাগ্যবান যে এটি আগের হারে পাচ্ছি।’

বাণিজ্যের উপর বর্তমানে কোনো প্রভাব পড়ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘না, বর্তমানে বাণিজ্যের উপর কোনো প্রভাব পড়ছে না।’

ভবিষ্যতে সম্ভাব্য বিঘ্নের আশঙ্কায় সরকার কোনো বিশেষ প্রস্তুতি নিচ্ছে কিনা জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘আজ আমরা যে এলএনজি এবং সার আমদানি প্রস্তাবগুলো অনুমোদন করেছি তা আগের দামেই রয়েছে। ভবিষ্যতে নতুন যেকোনো প্রস্তাব মূল্যে উপর প্রভাব পড়তে পারে।’

যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হলে তাক্ষণিক পরিকল্পনা সম্পর্কে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, জ্বালানি মন্ত্রণালয় বিকল্পগুলো নিয়ে কাজ করছে। ‘আমরা এলএনজির উপর ব্যাপকভাবে নির্ভর করি। এই সংঘাত কেবল জ্বালানি নয়, সার আমদানি এবং সামুদ্রিক পরিবহনকেও প্রভাবিত করতে পারে। হরমুজ প্রণালী দিয়ে জাহাজ চলাচল করে যার প্রভাব পড়তে পারে। তবে আমি মনে করি না যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হবে।’

বিশ্বব্যাপী জ্বালানির দাম ইতোমধ্যে বেড়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, অনেক দেশে দাম বেড়েছে, তবে আমরা এখনও কোনো পরিবর্তন করছি না। আমরা অপেক্ষা করব এবং দেখব।’

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
The unemployed people are lost in employment
কর্মসংস্থান হারিয়ে বেকার সংশ্লিষ্টরা

হারিয়ে যাচ্ছে বর-কনের বাহন পালকি

হারিয়ে যাচ্ছে বর-কনের বাহন পালকি গ্রামবাংলার ঐতিহ্য পালকি। ছবি: নিউজবাংলা

পালকি ছিল এক সময় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য, বর-কনের বাহন। এটা ছাড়া বিয়ের কথা ভাবাই যেত না। সারা দেশের মতো রূপগঞ্জেও একই অবস্থা ছিল। কালের বির্বতনে চিরায়ত গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের ধারক পালকি রূপগঞ্জে আজ আর চোখে পড়ে না। পালকি এখন মিউজিয়াম পিস হয়ে কালের সাক্ষী হয়ে আছে জাদুঘরে। বেহারাদের সুর করে সেই গ্রাম ঘুরে মাঠ-ঘাট-প্রান্তর পেরিয়ে গন্তব্যের কাছে দূর থেকে সেই ছয় বেহারাদের আর দেখা যাচ্ছে না। তাদের ছন্দিত লয়ে হাঁটার সঙ্গে সঙ্গে এ গাঁ থেকে ওগাঁয়ে নাইয়র, বিয়ের কনে বর কিংবা মান্যগন্য ব্যক্তিদের নিয়ে যাওয়ার এ চক্রবিহীন যান সম্ভবত তার অন্তিম যাত্রা করেছে। ছন্দের জাদুকর সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের ভাষায়, রবীন্দ্রনাথের কবিতায়, হেমন্তের গানে কিংবা ভুপেন হাজারিকার মাদল তালে চলা পালকি এখন ঐতিহ্যের খাতায় নাম লিখিয়েছে।

সেই ন্যাংটা পুঁটো ছেলেটা আর বলে না পালকি চলে পালকি চলে.....আদুল গাঁয়ে যাচ্ছে কারা হনহনিয়ে। রবি ঠাকুরের ‘বীর পুরুষ’ কবিতার খোকা তার মাকে পালকিতে নিয়ে যাওয়ার সময় ডাকাতদের সাথে লড়ে যখন ওরা আসে তেড়ে ‘হারে রে রে’ বলে। সেই ভীষণ যুদ্ধের বর্ণনাও দিতে পারে না মাকে। মাও বলতে পারে না, ভাগ্যেস খোকা ছিল তার সঙ্গে। দাদা তার সদ্য বিয়ে হওয়া দিদিকে আর বলে না, আর কটাঁ দিন থাক না দিদি, কেঁদে কেটে কঁকিয়ে, দুদিন বাদে তো নিয়েই যাবে পালকি করে সাজিয়ে। ‘মৈমনসিং গীতিকার’ দেওয়ানা মদিনা ও ছুটবে না পালকিতে আবের পাংখা নিয়ে আর পালকি বহরের সেই পরিচিত দৃশ্য এখন আর দেখা যায় না।

আধুনিক যোগাযোগের গোগ্রাসে পালকি হারিয়ে যাচ্ছে বিস্মৃতির অতল তলে প্রাচীন বাংলার এ বাহনটি। এক সময় গ্রাম-বাংলার হাটবাজারে পালকি সাজিয়ে রাখা হত। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতার আগেই পালকিওয়ালাদের কাছে ছুটে যেতেন বরের লোকজন। পালকি কাঠ দিয়ে তৈরি করা হতো। ছয়জন মিলে পালকি বহন করতো। সামনে পেছনে দুজন ও মাঝখানে দুজন করে পালকি কাঁদে নিত। প্রথমে বরকে পালকিতে করে তার নিজ বাড়ি থেকে কনের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হতো। বিয়ের কার্যক্রম সম্পূর্ণ হওয়ার পর বর-কনেকে এক সঙ্গে আবার বরের বাড়িতে নিয়ে আসতো।

আসলে পালকি নামটির উৎপত্তি ফারসি ও সংস্কৃত উভয় ইন্দো ভারতীয় ভাষা থেকে আর সেই সঙ্গে ফরাসি থেকেও। পল্লীকবি জসিম উদ্দিন তাঁর স্মৃতি কথায় এ গাঁ থেকে ওগাঁয়ে যাওয়া বেহারাদের পালকি নিয়ে চলার যে বিবরণ দিয়েছেন তা আমাদের আবহমান গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের অংশ। বিলুপ্ত এ পালকি এখন বিভিন্ন জাদুঘরে শোভা পাচ্ছে। বিয়ে বাড়িতে নব বর-বধুদের আনা নেয়ায় পালকি ব্যবহার করা হতো। চক্রযানের বিপ্লবে পালকির জায়গা দখল করে নিয়েছে আধুনিকতার এ যুগে প্রাইভেটকার, নোহা, বাস ও মাইক্রোবাস। হালের লাঙ্গল যেমন গ্রামেও অচল তেমনি ধনী গরিব নির্বিশেষে সকলের নানা অনুষ্ঠানে ব্যবহার করছে আধুনিক যান্ত্রিক যানবাহন। এসব যানের রমরমা ব্যবসাও এ কারণেই জমে ওঠেছে।

আধুনিকতার ছোঁয়ায় ইদানিং বর-কনের বাহনে যোগ হয়েছে হেলিকপ্টারও। রূপগঞ্জের মুড়াপাড়া এলাকা থেকে হেলিকপ্টারে করে বর যাত্রা গিয়েছেন সফিক মিয়া। হেলিকপ্টারে বর-কনে বহনের ঘটনা তখন পুরো এলাকায় বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। ছড়ায় বলা হতো বউ সাজবে কালকি, চড়বে সোনার পালকি! সোনার বরনী কন্যা এখন আর পালকিবদ্ধ পরিবেশে যাবে না, উঠবে আসল বা নকল ফুলের সাজানো এয়ারকন্ডিশন গাড়িতে।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Bus in Pabna Truck driver killed in a collision with truck

পাবনায় বাস- ট্রাক মুখোমুখি সংঘর্ষে ট্রাকচালক নিহত

পাবনায় বাস- ট্রাক মুখোমুখি সংঘর্ষে ট্রাকচালক নিহত

মঙ্গলবার (১৭ জুন) ভোর সাড়ে চারটার দিকে পাবনা বাইপাস মহাসড়কের ইয়াকুব ফিলিং স্টেশন এর সামনে দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত ট্রাকচালক সেলিম হোসেন (৩৮) মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার সাহারবাটি গ্রামের মৃত আব্দুল গনির ছেলে।

আহতরা হলেন- বাসের হেলপার তারেক (৩৫) ট্রাকের হেল্পার আলামিন (৩৫)। তাদের রাজশাহী মেডিকেল। কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ট্রাকচালক সেলিম সুনামগঞ্জ থেকে পাথর ভর্তি করে মাওয়া যাচ্ছিলেন।অপরদিক পাবনা এক্সপ্রেস বাসটি ঢাকা থেকে পাবনা বাস টার্মিনালে যাত্রী নামিয়ে হেলপার আলামিন গাড়ি গ্যারেজ করার জন্য দ্রুতগতিতে গাড়ি চালিয়ে ইয়াকুব ফিলিং স্টেশনের সামনে পৌঁছালে ট্রাকের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।

স্থানীয় লোকজন ফায়ার সার্ভিসকে জানালে তাৎক্ষিনক ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম আহত তিনজনকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ট্রাক চালক সেলিম কে মৃত ঘোষণা করেন।

অপরদিকে আহত ট্রাকের হেলপার ও বাসের হেলপারের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্থানান্তর করা হয়।

পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে সদর থানা হেফাজতে আনা হয়েছে। দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাক ও বাসটি জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Jamaat did not join the consensus commission discussion

ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় যোগ দেয়নি জামায়াত

ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় যোগ দেয়নি জামায়াত

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফার দ্বিতীয় পর্বের আলোচনায় যোগ দেয়নি জামায়েতে ইসলামীর কোনো প্রতিনিধি। বিএনপি ও এনসিপির মাঝে জামায়াতের জন্য সংরক্ষিত আসনটি মধ্যাহ্নভোজের আগ পর্যন্ত ছিল ফাঁকা।

জামায়াতের আলোচনায় যোগ না দেয়ায় নানা রাজনৈতিক দল নানা মত দিয়েছেন। অনেকে বলছেন, কমিশনের বেশ কয়েকটি বিষয়ে জামায়াতের বনিবনা না হওয়ায় মঙ্গলবারের আলোচনায় তারা যোগ দেননি।

এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘কেন জামায়াত আলোচনায় যোগ দেয়নি সেই উত্তর কমিশনই ভালো দিতে পারবে।’

জামায়াতের আলোচনায় যোগ না দেয়া প্রসঙ্গে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, ‘আমরা যতদূর জানি জামায়াত আজকের বৈঠক প্রতীকী বয়কট করেছে। ঐকমত্য কমিশনের আজকের আলোচ্য বেশ কয়েকটি বিষয়ে জামায়াত হয়তো একমত হতে পারেনি। তাই আলোচনায় অংশ নেয়নি।’

জামায়াতের আলোচনায় যোগ না দেয়া প্রসঙ্গে ক্ষোভ প্রকাশ করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দল হিসেবে আজকের আলোচনায় জামায়াতের থাকা উচিত ছিল। তারা এই আলোচনা বয়কট করেছে কিনা সে বিষয়ে পরিষ্কার কিছু জানায়নি। যদি মধ্যাহ্নভোজের পরেও জামায়াত আলোচনায় না আসে তাহলে পুরো ব্যাপারটি বোঝা যাবে।’

ইসলামী আন্দোলনের এই নেতা বলেন, ‘আদর্শিক জায়গা থেকে আমরা বেশিরভাগ বিষয়েই একমত হয়েছি। কিন্তু নারীদের জন্য আলাদা করে সংরক্ষিত ১০০ আসন রাখার প্রয়োজন দেখি না। নারীর ক্ষমতায়ন আমরাও চাই, কিন্তু কোনো বৈষম্যমূলক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে না।’

বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল মনে করছে, নারী আসনসহ বেশ কয়েকটি বিষয়ে কমিশনের সঙ্গে মতানৈক্য হওয়ায় আলোচনার প্রথম পর্যায়ে জামায়াত যোগ দেয়নি।

মন্তব্য

p
উপরে