ইমরান খানের প্রধানমন্ত্রিত্ব যে টিকছে না, সেটা আগেই অনেকটা নিশ্চিত হওয়া গেছে। শেষ হয়েছিল আনুষ্ঠানিকতাও। তবে আদালতের রায়ে সমীকরণ বদলে পাকিস্তানের রাজনীতির মোড় ঘুরেছে অন্যদিকে।
সার্বিক পরিস্থিতিতে অবস্থা এখন এমন, যেন সুতায় ঝুলছে ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিক বনে যাওয়া এই প্রধানমন্ত্রীর ভাগ্য। তিনি থাকছেন নাকি বিদায় নিচ্ছেন, সে ফলের জন্য পার্লামেন্টের দিকেই তাকিয়ে থাকতে হবে আগ্রহীদের।
দ্য ডন বলছে, সম্মান বাঁচানোর চেষ্টায় অবশ্য এই পার্লামেন্টই ভেঙে দিয়েছিলেন ইমরান। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, যা রায় হবার তা হবে পার্লামেন্টেই। অসাংবিধানিক কিছু করা যাবে না।
বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বলা হয়েছে, শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন বসাতে হবে। আস্থা ভোটের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মুলতবি করা যাবে না অধিবেশন।
পার্লামেন্ট ভেঙে দেয়া-না দেয়া নিয়ে সৃষ্ট সংকটে সুপ্রিম কোর্ট যে রায় দিয়েছে তা মানলেও দেশে কোনো ‘আমদানি করা’ সরকার মানবেন না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
হতে যাওয়া আস্থা ভোটের আগের রাতে জাতির উদ্দেশে এক ভাষণে তিনি বলেন, ‘রায়ে আমি দুঃখ পেয়েছি। কিন্তু আমি এটা মেনে নিচ্ছি।’
পাক প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পাকিস্তানের অনাস্থা ভোটে বিদেশি হস্তক্ষেপ ছিল। আমি চেয়েছিলাম সুপ্রিম কোর্ট অন্তত এটি দেখুক।
‘এটি একটি অত্যন্ত গুরুতর অভিযোগ যে একটি দেশ ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে সরকারকে পতন করতে চায়।’
ইমরান বলেন, ‘জাতির উদ্দেশে বলছি, এই বিদেশি ষড়যন্ত্র থেকে তোমাদের নিজেদের বাঁচাতে হবে। এর বিরুদ্ধে না দাঁড়ালে কেউ তোমাদের বাঁচাতে আসবে না।’
‘আমদানি করা সরকারের’ বিরুদ্ধে লড়তে রোববার এশার নামাজের পর দেশবাসীকে ‘শান্তিপূর্ণ’ বিক্ষোভে অংশ নেয়ার আহ্বান জানান পাক প্রধানমন্ত্রী।
সবমিলিয়ে যে অবস্থা তাতে ধারণা করা করাই যায়, অনাস্থা ভোটে হারার লজ্জা নিয়েই হয়তো ক্ষমতা ছাড়তে হতে পারে তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) নেতা ইমরান খানকে।
গত ২৮ মার্চ ছিল পাকিস্তানের রাজনীতিতে একটি ঘটনাবহুল দিন। এদিন দুপুরে ইমরানের ক্ষমতায় টেকা-না টেকা নিয়ে বিরোধী পক্ষ জাতীয় পরিষদে যে অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন করেছিল, তা খারিজ হয়ে যায়।
অধিবেশনের শুরুতে প্রস্তাব খারিজ করে দেন ডেপুটি স্পিকার কাশিম সুরি। ব্যাপারটিকে তিনি আখ্যা দেন ‘অসাংবিধানিক’ বলে। অধিবেশন চলাকালে প্রধানমন্ত্রী ইমরান উপস্থিত ছিলেন না।
ষড়যন্ত্রের কারণে এই প্রস্তাব তোলা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন কাশিম সুরি। পরে অধিবেশন মুলতবি করেন তিনি। একপর্যায়ে বিরোধী দলগুলোর তোপের মুখে পড়তে হয় তাকে। স্লোগান দিয়ে প্রতিবাদ জানান বিরোধীরা। হট্টগোল তৈরি হয়।
এর পরই প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পরামর্শে পাকিস্তানের পার্লামেন্ট ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের পক্ষ থেকে এই ঘোষণা দেয়া হয়।
কর্তৃপক্ষ বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করে জানায়, নিয়ম অনুযায়ী, আগামী তিন মাসের মধ্যে এই দেশে নতুন করে আবার নির্বাচন হবে।
পার্লামেন্ট ভেঙে দেয়ার কিছু সময় আগে ইমরান খান জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। ওই ভাষণে তিনি বলেন, আমি প্রেসিডেন্টকে পার্লামেন্ট ভেঙে নতুন নির্বাচন দিতে চিঠি পাঠিয়েছি। পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, তার সিদ্ধান্ত নেবে জনগণই।
পরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রীর নাম চেয়ে ইমরান খান ও বিরোধী দলীয় নেতাকে চিঠি পাঠান দেশটির প্রেসিডেন্ট। চলতে থাকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের প্রক্রিয়াও।
এরই মধ্যে সুপ্রিম কোর্ট অবস্থান গ্রহণ করে। শুক্রবার পাকিস্তানের পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে অন্তর্বর্তী নির্বাচনের যে আদেশ ছিল তা খারিজ করে দেয় আদালত। পার্লামেন্ট চালুর পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটির নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।
শনিবার জাতীয় অধিবেশন ডাকতে বলা হয় প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভিকে। এমনকি কখন ভোট হবে, তার সময় ঠিক করে দেয়া হয়। এখন পার্লামেন্টে ভোটের অপেক্ষা।
ইমরান খানের বিরুদ্ধে দেশ শাসনে অব্যবস্থাপনার অভিযোগ এনে গত ৮ মার্চ অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেয় বিরোধী দলগুলো। এ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা ও ভোটাভুটির জন্য অধিবেশন ডাকতে স্পিকার আসাদ কায়সারের প্রতি লিখিত আবেদন জানান তারা।
পাকিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী, লিখিত আবেদন জমার ১৪ দিনের মধ্যে স্পিকারকে আলোচনার জন্য অধিবেশন ডাকতে হবে। সে অনুযায়ী ২২ মার্চের মধ্যে অধিবেশন আয়োজন করার কথা ছিল।
তবে ২২ মার্চ থেকে জাতীয় পরিষদে ওআইসির দুই দিনব্যাপী পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলন শুরু হওয়ায় তা আর হয়নি। এর পরই অধিবেশনের তারিখ পেছায়। একপর্যায়ে তা জাতীয় পরিষদে উত্থাপন করা হলে খারিজ হয়ে যায়।
অনাস্থা প্রস্তাবে টিকে থাকতে হলে পিটিআইয়ের ইমরান খানকে অন্তত ১৭২ সদস্যের সমর্থন পেতে হবে। এরই মধ্যে তিন জোটসঙ্গী মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট পাকিস্তান (এমকিউএম-পি), পাকিস্তান মুসলিম লিগ-কায়েদ (পিএমএল-কিউ) এবং বালুচিস্তান আওয়ামী পার্টি (বিএপি) বিরোধী শিবিরে যোগ দেয়ার ইঙ্গিত দেয়ায় ব্যাপারটি অন্যদিকে মোড় নিয়েছে।
এর আগে তিন বছরের মাথায় গত মার্চে অনাস্থা ভোট হয় ইমরানের বিরুদ্ধে। সেবার সুবিধাজনক অবস্থানে থাকায় অনায়াসেই উতরে গিয়েছিলেন তিনি।
দুর্নীতির দায়ে নওয়াজ শরিফ অভিশংসিত হওয়ার পর ২০১৮ সালে চার দলের সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় আসেন ইমরান খান। ২০২৩ সালের আগস্ট পর্যন্ত তার নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের সরকারের মেয়াদ রয়েছে।
আরও পড়ুন:চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কাজে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সরকার।
রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এই সতর্কবার্তা জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ অত্যাবশ্যক পরিষেবা। এ সেবায় বাধা দেওয়া বা বিঘ্ন ঘটানো অত্যাবশ্যক পরিষেবা আইন অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
সরকার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীদের দাবিসমূহ সমাধানে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে এবং বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, পল্লী এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ কাজে নিয়োজিত এবং গণছুটির নামে অনুপস্থিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কর্মস্থলে ফেরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
এর আগে, শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সংবাদ সম্মেলন এসে দাবি আদায়ে রোববার থেকে গণছুটিসহ বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করেন আন্দোলনকারীরা।
রাজধানীর টঙ্গী থেকে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ইতালিতে পাচারের সময় সাড়ে ৬ কেজি ভয়ংকর মাদক ‘কিটামিন’ জব্দ করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। জব্দকৃত মাদকদ্রব্য বিশেষ কায়দায় তোয়ালের ভেতরে দ্রবীভূত অবস্থায় রাখা ছিল। এ ঘটনায় চাঁদপুর ও ফরিদপুর থেকে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে সংস্থাটি।
গতকাল রোববার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ডিএনসি সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির মহাপরিচালক হাসান মারুফ।
ডিএনসি মহাপরিচালক জানান, দীর্ঘদিন ধরেই আন্তর্জাতিক মাদকচক্র কুরিয়ার সার্ভিস ব্যবহার করে পাচার কার্যক্রম চালাচ্ছে। এ বিষয়ে গোয়েন্দা নজরদারির অংশ হিসেবে টঙ্গীর ফেডেক্স কুরিয়ার সার্ভিসে অভিযান চালানো হয়। ফেডেক্স কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় ঢাকা থেকে ইতালাগামী একটি পার্সেল জব্দ করা হয়।
তিনি জানান, অস্বাভাবিক ওজন এবং সন্দেহজনক অবস্থার কারণে পার্সেলটি পরীক্ষা করে দেখা যায়, একটি খাকি রংয়ের কার্টনের ভেতরে সাতটি সাদা তোয়ালে রাখা। ডিএনসির রাসায়নিক পরীক্ষক ঘটনাস্থলেই পরীক্ষা চালিয়ে তোয়ালের ভেতর থেকে দ্রবীভূত অবস্থায় ৬.৪৪ কেজি কিটামিন শনাক্ত করেন।
জব্দকৃত পার্সেলের প্রেরকের ঠিকানা, সিসিটিভি ফুটেজ ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে প্রথমে চাঁদপুরের মতলব উত্তর এলাকা থেকে প্রেরক মো. মাসুদুর রহমান জিলানী’কে (২৮) গ্রেপ্তার করা হয়। পরে অনুসন্ধান ও জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, এই চালান ফরিদপুরের মো. আরিফুর রহমান খোকা’র (৪৩) সহযোগিতায় বিদেশে পাঠানোর চেষ্টা হচ্ছিল।
এরপর ডিএনসির একটি অভিযানিক দল ফরিদপুরের সালথা থানার আটঘর বাজার থেকে খোকাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে দুটি অ্যান্ড্রয়েড ও একটি বাটন মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনিও কুরিয়ারের মাধ্যমে ‘কিটামিন’ পাচারের বিষয়টি স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে ডিএনসি।
ডিএনসি জানিয়েছে, পাচারকারীরা কেমিক্যাল ইমপ্রেগনেশন পদ্ধতিতে তোয়ালে মাদকের দ্রবণে ভিজিয়ে শুকিয়ে ফেলে। এতে কাপড়টি দেখতে স্বাভাবিক মনে হলেও ভেতরে মাদক মিশে থাকে। পরে বিশেষ কেমিক্যাল বা ল্যাব প্রসেসের মাধ্যমে কাপড় থেকে মাদক আলাদা করা হয়।
ডিএনসি জানিয়েছে, কিটামিন মূলত একটি ডিসোসিয়েটিভ অ্যানেস্থেটিক ওষুধ, যা একসময় অস্ত্রোপচারের আগে রোগেীকে অজ্ঞান করার জন্য ব্যবহৃত হতো। বর্তমানে এটি পার্টি ড্রাগ হিসেবে অপব্যবহার হচ্ছে। কিটামিন স্বল্পমেয়াদে বিভ্রান্তি, হ্যালুসিনেশন ও শারীরিক জটিলতা সৃষ্টি করে এবং দীর্ঘমেয়াদে কিডনি, মূত্রথলি ও মানসিক স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি করে। নিয়মিত সেবনে এটি জীবনহানির ঝুঁকি বাড়ায়।
ডিএনসি মহাপরিচালক হাসান মারুফ জানান, এই চক্রের সঙ্গে বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। তবে ঢাকায় তাদের কোনও সদস্য অবস্থান করে না। তারা মাদক সংগ্রহের পর প্রক্রিয়াজাত করে কুরিয়ারের মাধ্যমে বিদেশে পাঠিয়ে দেয়। এবার যে চালানটি জব্দ হয়েছে, তার গন্তব্য ছিল ইতালি।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আরও কয়েকজনের সংশ্লিষ্টতার তথ্য পাওয়া গেছে। তদন্ত সাপেক্ষে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি।
ডিএনসি মহাপরিচালক বলেন, ‘বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মাদকপাচারের রুট কিনা, সেটা নিশ্চিতভাবে বলা যাবে না। তবে প্রতিটি দেশেই চাহিদার ভিত্তিতে মাদক প্রবেশ করে। ইয়াবার ক্ষেত্রেও আমাদের সীমান্ত এলাকায় বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে।’
জনবল সংকটের কারণে গোয়েন্দা কার্যক্রমে সীমাবদ্ধতা রয়েছে জানিয়ে মহাপরিচালক বলেন, ‘সারা বাংলাদেশে অপারেশন ও গোয়েন্দা কার্যক্রমে মাত্র ১ হাজার ৬২২ জন কাজ করছেন। সীমিত জনবল দিয়েই আমরা অভিযান চালাচ্ছি। গত ছয় মাসে আমাদের অভিযান সংখ্যা বেড়েছে।’
বাংলাদেশসহ মুসলিমবিশ্বে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয়েছে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)। দিবসটি পালনে সরকার, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে। এসব কর্মসূচির মধ্যে ছিল মহানবী (সা.)-এর ওপর আলোচনা, মিলাদ ও দোয়া মহফিল। ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে মানবজাতির রহমত স্বরূপ প্রেরিত মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) আরবের মক্কা নগরীর সম্ভ্রান্ত কুরাইশ বংশে মা আমিনার কোলে জন্ম নেন।
তাঁর পিতার নাম আব্দুল্লাহ ইবনে আব্দুল মুত্তালিব। রিসালাতের দায়িত্ব পালন শেষে ৬৩২ খ্রিস্টাব্দের ঠিক একই তারিখে ৬৩ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন তিনি।
পবিত্র দিনটি উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের (ইফা) উদ্যোগে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে পক্ষকালব্যাপী অনুষ্ঠানসহ সারা দেশে ব্যাপক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। গত শুক্রবার বাদ মাগরিব বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পূর্ব সাহানে পক্ষকালব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মুহাম্মদ (আ.) আউয়াল হাওলাদার প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করেন।
বিশ্বনবীর জন্মদিন উপলক্ষে গত শুক্রবার বাদ মাগরিব থেকে শুরু হওয়া ওয়াজ মহফিল আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর শেষ হবে। ১৫ দিনব্যাপী বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ পূর্ব সাহানে এতে বয়ান করবেন দেশবরেণ্য আলেম-ওলামারা।
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে জাতীয় মসজিদের পূর্ব ও দক্ষিণ সাহানে মাসব্যাপী ইসলামী বইমেলারও আয়োজন করা হয়েছে।
১৩ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে এ মেলা। চলবে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। মেলায় মিসর, তুরস্ক, পাকিস্তান ও লেবাননের পুস্তক প্রকাশনা সংস্থাসহ দেশ-বিদেশের প্রায় ২০০ স্টল স্থান পাবে মেলায়।
এছাড়া ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সব বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়, ৫৬টি ইসলামিক মিশন ও ৮টি ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমিতে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে মহানবী (সা.)-এর জীবন ও কর্ম সম্পর্কিত ওয়াজ-মাহফিল এবং ইসলামী সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা আয়োজন।
একই সঙ্গে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) ১৪৪৭ হিজরি উদযাপন উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সব বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়, ৫৪টি ইসলামিক মিশন ও ৮টি ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমিতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। দৈনিক বাংলার জেলা-উপজেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত;
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষ্যে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে লাখো মানুষের অংশগ্রহণে জশনে জুলুস অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় ‘ইয়া নবী সালাম আলাইকা, ইয়া রাসুল সালাম আলাইকা’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো নগরী। গত শনিবার সকাল সোয়া ১০টায় নগরীর ষোলশহর আলমগীর খানকাহ থেকে এই জুলুস শুরু হয়।
জুলুসের নেতৃত্বে ছিলেন সিরিকোট দরবারে আলীয়া কাদেরিয়ার সাজ্জাদনশীন পীর সৈয়দ মুহাম্মদ সাবির শাহ। তাঁর সাথে আরও উপস্থিত ছিলেন- শাহজাদা সৈয়্যদ মুহাম্মদ কাসেম শাহ্ ও সৈয়্যদ মুহাম্মদ মেহমুদ আহমদ শাহ্।
মাদরাসা শিক্ষার্থীদের বেস্টনির মধ্য দিয়ে সাবির শাহকে বহনকারী গাড়ি অনুসরণ করে এগিয়ে যেতে থাকে নবীপ্রেমীদের মহামিছিল। নগরীর বিবিরহাট, মুরাদপুর, ষোলশহর, দুই নম্বর গেট, জিইসি মোড় হয়ে পুনরায় একই রুটে জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলীয়া ময়দানে গিয়ে মিলিত হন মুসল্লিরা। এ সময় মাইক ও সাউন্ডবক্সে হামদ, না’ত, গজলসহ নানা ধরনের ইসলামী গানে বন্দরনগরী জুড়ে উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হয়। ‘ত্রিভুবনের প্রিয় মুহাম্মদ এল রে দুনিয়ায়, এয়া নবী সালাম আলাইকা, তুমি সৃষ্টির সেরা নবী কামলিওয়ালাসহ নানা গানে মাতোয়ারা হন অংশগ্রহণকারীরা। জুলুসে অন্যান্যবারের মতো এবারও শরিয়ত সম্মত পরিবেশ বজায় রাখতে ড্রাম সেট বাজানো, নারীর অংশগ্রহণ ও খাবার নিক্ষেপ কঠোরভাবে নিষিদ্ধ ছিল। এর আগে, গত শনিবার ভোর থেকে নগর ও জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মুসল্লিরা মুরাদপুর জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদরাসা প্রাঙ্গণে আসতে থাকেন। জুলুস শুরুর আগেই লাখ, লাখ মানুষের জমায়েতে লোকারণ্য হয়ে ওঠে মাদরাসার আশপাশের এলাকা।
মহানবী হযরত মুহাম্মদের (সা.) জন্ম ও ওফাত দিবস উপলক্ষ্যে চট্টগ্রামে প্রতি বছর এদিনে আয়োজিত হয় জশনে জুলুস, যার আয়োজন করে আঞ্জুমানে আহমদিয়া রহমানিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট। এবারের ৫৪তম আয়োজনের মূল প্রতিপাদ্য ছিল ‘শান্তি ও সমৃদ্ধির বাংলাদেশ’।
তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে নৌকা যোগে জশনে জুলুছ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকাল ৯টায় আলা হযরত সুন্নি সংঘের সার্বিক সহযোগিতায় ও তাহিরপুর ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে এ জশনে জুলুছের আয়োজন করা হয়। প্রায় ১৫টি নৌকা নিয়ে একতা বাজার থেকে জুলুছ শুরু হয়ে হলহলিয়া, মাটিকাটা, হাফানিয়া, লেদারবন্দ, বিন্দাবন্দ, নতুন বাজার ব্রিজ, কাউকান্দি বাজার, বোরকারা ও চরগাঁওসহ বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে। পরে হলহলিয়া পশ্চিমপাড়া হাফেজ শামসুল হক বোগদাদি সুন্নিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে সমাবেশে মিলিত হয়।
আলা হযরত সুন্নি সংঘের কো-অর্ডিনেটর রমজান আলী রবিনের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তারা হযরত মুহাম্মদ এর আগমনের তাৎপর্য তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, ৩নং বড়দল দক্ষিণ ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নাছির মিয়া, আবু বকর সিদ্দিক আল ক্বাদেরী, হাফেজ মোশাররফ হোসেন, ক্বারী মাওলানা রাহুল আমিন, মাওলানা আশরাফুল ইসলাম, আলা হযরত সুন্নি সংঘের সভাপতি জলিল আহমেদ তামিম, অর্থ সম্পাদক নূরুল হক, সহ-সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম প্রমুখ।
জামালপুর প্রতিনিধি: ধর্ম সচিব একেএম আফতাব হোসেন প্রামানিক বলেছেন, মহানবী (সা.) জীবনাদর্শ মানুষের মুক্তির দিশারি। তিনি বিশ্ব মানবতার জন্য অনুপম শিক্ষা ও আদর্শ রেখে গেছেন। তার জীবনাদর্শ আলোকবর্তিকা হিসেবে প্রতিটি যুগ ও শতাব্দীর মানুষকে মুক্তির পথ দেখাবে। গত শনিবার সকালে জামালপুরে জেলা মডেল মসজিদ মিলনায়তনে পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী (সা.) ১৪৪৭ হিজরি উদযাপন উপলক্ষ্যে আলোচনা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জামালপুর জেলা প্রশাসন ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
জেলা প্রশাসক হাছিনা বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন নৈতিকতা ও ধর্মীয় মূল্যবোধ উন্নয়নে মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক এস এম তরিকুল ইসলাম। মূখ্য আলোচক হিসেবে হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর জীবন ও কর্মের ওপর আলোচনা করেন কামালখান হাট কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মো. আখতারুজ্জামান সিদ্দিকী।
অন্যান্যের মধ্যে সিভিল সার্জন ডা. মো. আজিজুল হক, জামালপুর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইয়াহিয়া আল মামুন, ইসলামিক ফাউন্ডেশন জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ প্রমূখ বক্তৃতা করেন। এ অনুষ্ঠানে ধর্ম সচিবের একান্ত সচিব মো. কামরুল ইসলাম, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবুবকর সিদ্দীক, জেলা তথ্য অফিসের সিনিয়র তথ্য অফিসার মোঃ জালাল উদ্দিনসহ জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও আলেম-ওলামারা উপস্থিত ছিলেন।
রূপগঞ্জ প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে র্যালি ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত শনিবার দুপুরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এ দোয়া মাহফিল, র্যালী ও অসহায় ও দুস্তদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়। শাহবাজ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ হোসাইন শাহবাজী'র নির্দেশনায় ও শাহবাজ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এ র্যালিটিতে উপস্থিত ছিলেন, শাহবাজ ফাউন্ডেশনের রিয়াদ হোসেন , হাসান মীর,ইয়ামিন মিয়া , মো. ফেরদৌস,মারফত আলী, মকবুল হোসেন, মো. কিরনসহ সর্বস্তরের মুসলিম জনতা। নগর পাড়া মাদ্রাসায এ উপলক্ষ্যে বিএনপি নেতা মামুন মিয়ার নেতৃত্বে মুসল্লিদের মাঝে রান্না করা খাবার বিতরণ করা হয়। সারা বিশ্বের মুসলিম উম্মার শুভকামনায় মাওলানা সিদ্দিকুর রহমান দোয়া করেন। গত শনিবার ভোর থেকেই এলাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুসল্লিরা জমায়েত হতে শুরু করেন। পরে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের অংশগ্রহণে এক বিশাল র্যালি বের হয়, যা ভূলতার প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। র্যালিতে ইসলামিক পতাকা, ব্যানার, স্লোগান এবং মিলাদুন্নবী (সা.)-এর মাহাত্ম্য তুলে ধরা হয়।
মইনুল হক মৃধা, রাজবাড়ী: জশনে জুলুস পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ) উপলক্ষ্যে রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার আঞ্জমানে-ই-কাদেরীয়া দৌলতদিয়া খানকা শরীফ ও কেন্দ্রীয় ইমাম বাড়া শরীফের আয়োজনে পৃথক মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে প্রথমে দৌলতদিয়া খানকা শরীফ থেকে একটি বিশাল মিছিল বের হয়ে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক দিয়ে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট এলাকা প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়। পরে সকাল ১০টা ১১ মিনিটে কেন্দ্রীয় ইমাম বাড়া শরীফ থেকে একটি বিশাল মিছিল বের হয়ে মহাসড়কের পাশ দিয়ে গোয়ালন্দ বাজার প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়।
দৌলতদিয়া খানকা শরীফের মিছিলে এসময় উপস্থিত ছিলেন, আঞ্জুমান-ই কাদেরীয়া দৌলতদিয়া খানকা শরীফের সভাপতি মুক্তার হোসেন বেপারী, সাধারণ সম্পাদক হেলাল উদ্দিন, যুগ্ম আহ্বায়ক ফজলুল হক ও কেন্দ্রীয় ইমাম বাড়া শরীফে এসময় উপস্থিত ছিলেন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাহাবুব, কোষাধ্যক্ষ সুমন মোল্লা সহ বিপুল সংখ্যক ভক্ত ও মুরিদান মিছিলে অংশগ্রহণ করেন।
মাহবুব পিয়াল, ফরিদপুর: ফরিদপুরে যথাযথ মর্যাদার মধ্য দিয়ে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী(সা:) পালিত হয়েছে। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা:) এর জন্মদিন উপলক্ষে শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা:) উদযাপন কমিটির উদ্যোগ একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়।
জশনে জুলুশে ঈদে মিলাদুন্নবীর শোভাযাত্রা টি জেলার সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান সড়ক ঘুরে আলিপুর গোরস্থান জামে মসজিদ প্রাঙ্গনে গিয়ে শেষ হয় ।
এর মাঝে ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সামনে সংক্ষিপ্ত পথ সভায় বক্তব্য রাখেন তুলাগ্রাম দরবার শরীফের পীর সাহেব শাহ সূফী আলহাজ্ব হযরত কোরবান আলী আল- চিশতী নিজামী, ডোমরাকান্দি সাবেরিয়া দরবার শরীফের পীর সাহেব সাজ্জাদ হোসেন রনী আল-চিশতী সাবেরী ও ফরিদপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর আমির হোসেন মাসুদ।
এসময় ভাটি লক্ষিপুর খানকায়ে চিশতীয়া রশীদিয়া দরবার শরীফের গদীনশীন পীর হযরত খাজা শাহ্ সুফী মো. আব্দুস সামাদ আল চিশতী নিজামী, পীরজাদা মো: সাহিদ মোল্লা আল চিশতী নিজামী, পীরজাদা মো: নুরুল ইসলাম আল চিশতী নিজামীসহ ধর্র্মপ্রাণ মুসলমারা শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন।
মাগুরা প্রতিনিধি: সারা দেশের ন্যায় মাগুরাতেও বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে ঈদে মিলাদুন্নবী। এ উপলক্ষে বিশাল এক আনন্দ রেলি বের করা হয়। বাংলাদেশের মুসলিমরা প্রতিবছর এই দিনটিকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন । গত শনিবার মাগুরা সদর উপজেলার আবালপুর গ্রামে স্থানীয় গ্রামবাসী এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের আয়োজনে বিশাল এক আনন্দ রেলি বের করা হয়। রেলিটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে । পরে প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্মদিন উপলক্ষে বিশেষ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এ সময় ছোট বড় হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটে। নবীজির উদ্দেশ্যে বিশেষ মোনাজাত শেষে গ্রামবাসীদের মধ্যে খিচুড়ি বিতরণ করা হয়।
বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম বলেছেন, রোগীদের অসন্তুষ্টি দূর করা ও রোগীদের কষ্ট অনুধাবন করার প্রথম দায়িত্ব নার্সদের। অনেক ঝুঁকি ও সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও, নানা প্রতিকূলতার মধ্যে নার্সদের সেবা দিয়ে রোগীদের সন্তুষ্ট করতে হবে।
রোববার গ্র্যাজুয়েট নার্সিং বিভাগের ১৪ম ব্যাচের ছাত্র-ছাত্রীদের ক্যাপিং সেরিমনির অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
উপাচার্য বলেন, সিঙ্গাপুর সার্ভিস দিয়ে উন্নত দেশ হয়েছে। বাংলাদেশ নার্সিং সার্ভিস দিয়ে বিশ্বে পরিচিত হওয়া সুযোগ রয়েছে। নার্সিং এমন একটি মহান পেশা যার গুরুত্ব শুধু সমাজে নয়, ধর্মেও রয়েছে। উন্নত নার্সিং সেবার মাধ্যমেই চিকিৎসাসেবা ব্যবস্থা পরিপূর্ণতা লাভ করতে পারে। তাই চিকিৎসাসেবার উন্নয়নে ও রোগীদের মন জয় করার লক্ষ্যে নার্সদের সেবার মহান পেশা নার্সিং এ সম্পূর্ণভাবে আত্মনিয়োগ করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপউপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ইসলাম ধর্ম ও ইসলামের ইতিহাসে নার্সিং সেবার গুরুত্ব বিশেষভাবে স্বীকৃত। মানবসেবায় আত্মনিয়োগের মাধ্যমে নার্সিং পেশার মর্যাদা সমুন্নত রাখতে হবে।
উপউপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন নার্সিং পেশার গুরুত্ব অনুধাবন করেই নার্সদের গবেষণার জন্য অনুদান দেওয়া শুরু করেছে। চিকিৎসাসেবায় নার্সিং সেবা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নার্সিংসেবা কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা আমি যখন অসুস্থ হয়েছি, যখন আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলাম তা গভীরভাবে উপলব্ধি করেছি। বিএমইউ নার্স, নার্সিং শিক্ষার্থীরা মানবসেবার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপণ করবে সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।
বিএমইউর নার্সিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মো. মনির হোসেন খানের সভাপতিত্বে ক্যাপিং সেরিমনি অনুষ্ঠানে শপথ পরিচালনা করেন গ্র্যাজুয়েট নার্সিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নুপুর ডি কস্তা।
কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) পরিবহন পুলে শিক্ষার্থীদের জন্য যুক্ত হয়েছে নতুন চারটি ভাড়াকৃত ডাবল ডেকার বাস। পাবনা বাস ডিপো থেকে ভাড়া করা হয়েছে এসব বাস। তবে এসব বাস ত্রুটিপূর্ণ হওয়ার অভিযোগ এসেছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা আলোচনা সমালোচনা চলছে। তবে ১ মাসের মধ্যে নতুন সংযোজন হবে বলে আশ্বাস দেন পরিবহন প্রশাসক ও বিআরটিসি পাবনা ডিপোর ডিজিএম মনিরুজ্জামান বাবু। রবিবার এসব বাস উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। এসময় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) ড. মনজুরুল হক, পরিবহণ প্রশাসন অধ্যাপক ড. আব্দুর রউফ, পাবনা বাস ডিপোর ডেপুটি জেনারের ম্যানেজার (ডিজিএম) মনিরুজ্জামান বাবু সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধন শেষে সবাই বাসে চড়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করেন। তবে জানা গেছে, এই বাসগুলো ঢাকার বিভিন্ন রুটে চলেছিলেন। যার ফলে দুর্ঘটনা-সহ বিভিন্ন কারণে বাসগুলোতে ত্রুটি রয়েছে।
জানা গেছে, পরিবহন পুলে মোট বাস রয়েছে ৫৬টি। নতুন ডাবল ডেকার চারটি ভাড়া বাস যুক্ত হয়ে এই সংখ্যা দাঁড়ালো ৬০টি। তার মধ্যে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের ৮টি এসি বাসসহ নিজস্ব বাস ২৪টি এবং ভাড়াকৃত ৩৬টি। এর মধ্যে শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ ৬টি বাস। বাকি নিজস্ব বাসগুলো কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে। এদিকে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য নিজস্ব ডাবল ডেকার বাস আছে একটি এবং সর্বশেষ সংযোজনসহ ভাড়াকৃত ডাবল ডেকারের সংখ্যা ১৩টি। বাকিসবই ভাড়া বাসে যাতায়াত করেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে লোকেশনগত সমস্যার কারণে যানবাহনের উপর নির্ভর করতে হয়। আজকের এই চারটি দ্বিতল বাস শিক্ষার্থীদের জন্য নিবেদিত। বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণমাত্রায় আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত না করা পর্যন্ত আমরা উত্তরোত্তর যানবাহন ব্যবস্থা উন্নত করে যাবো। বিআরটিসি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমরা কথা হয়েছে। তারা নতুন সংযোজন আসলে আমাদের বাসগুলো পরিবর্তন করে দিবে।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে গত তিন দিনে ৫ হাজার ৭১৯ টি মামলা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
এছাড়াও অভিযানকালে ৮৬৬টি গাড়ি ডাম্পিং ও ৩২০টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
রোববার ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, গত বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এসব মামলা করা হয়।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিকশৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
শিল্প ও গৃহায়ন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেছেন, সকল বাধা অতিক্রম করে, বিচার ও সংস্কারের ধারাবাহিকতায় এ সরকার আগামী নির্বাচন সম্পন্ন করবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেসব কাজ শুরু করেছে, জনগণের নির্বাচিত সরকার সেসব কাজ এগিয়ে নিয়ে যাবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
রোববার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের মেঘনাঘাট এলাকায় অবস্থিত আনন্দ শিপইয়ার্ড এন্ড শ্লিপওয়েজ লিমিটেড তুরস্কের মালিকানাধীন নির্মিত কার্গো জাহাজ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। দেশের মানুষ উৎসব মুখর পরিবেশে নির্বাচন উদযাপন করার অপেক্ষায় আছেন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের জাহাজ শিল্পের ঐতিহ্য রয়েছে। গার্মেন্টস শিল্পের পর গুরুত্বপূণ শিল্প জাহাঝ শিল্প। আমরা স্বপ্ন দেখি বাংলাদেশের তৈরি জাহাজ বাংলাদেশের প্রতিক্ষায় ব্যবহৃত হবে। বর্তমানে দেশে জাহাজ শিল্প আরো উপরের দিকে উঠছে। আনন্দ শিপইয়ার্ডে নির্মিত জাহাজ গুলো বিভিন্ন দেশে রপ্তানির মাধ্যমে জাহাজ শিল্পকে আরো এগিয়ে যাবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, তুরস্কের বাণিজ্যিক কাউন্সিলর বেলাল বেলিয়েট, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. নুরুজ্জামান এনডিসি, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞা, আনন্দ শিপইয়ার্ড এন্ড শ্লিপওয়েজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান ড.আব্দুল্লাহ হেল বারি, এবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সৈয়দ মিজানুর রহমান, আনন্দ শিপইয়ার্ড এন্ড শ্লিপওয়েজ লিমিটেডের পরিচালক ড. আব্দুল্লাহ নাজমা নওরজ প্রমুখ।
পরে জাহাজ রপ্তানীমুখী প্রতিষ্ঠান আনন্দ শিপইয়ার্ড এন্ড শ্লিপওয়েজ লিমিটেডের তৈরিকৃত ওয়েজ ওয়্যার নামে ৫৫০০ ডেড ওয়েট ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন মাল্টিপারপাস কার্গো জাহাজটি তুরস্কের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান নওপ্যাক শিপিং এন্ড ট্রেডিং লিমিটেডের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
মন্তব্য