যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টে কেতানজি ব্রাউন জ্যাকসনের নিয়োগ অনুমোদন করেছে সিনেটে। আর এর মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ২৩৩ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো কৃষ্ণাঙ্গ নারী দেশটির সর্বোচ্চ আদালতে বিচারকের আসনে বসতে যাচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট ৫১ বছর বয়সী জ্যাকসনের নিয়োগ অনুমোদন করে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জ্যাকসনের নিয়োগ অনুমোদনের মধ্য দিয়ে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আলোচিত একটি নির্বাচনি প্রতিশ্রতি পূরণ হলো।
বিরোধী দল রিপাবলিকান পার্টির তীব্র আপত্তির পরও ৫৩-৪৭ ভোটে তাকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক হিসেবে অনুমোদন দেয়া হয়।
সুপ্রিম কোর্টের বর্তমান বিচারপতি স্টিফেন ব্রায়ার জুনে অবসরে যাচ্ছেন। তার পদে স্থলাভিষিক্ত হবেন জ্যাকসন।
সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা ডেমোক্র্যাট দলীয় সিনেটর চাক শুমার বলেন, ‘সবচেয়ে আঁধার কালো সময়েও উজ্জ্বল আলোর দেখা মিলতে পারে। আজ তেমন এক আলোকিত দিন। আসুন সবাই মিলে প্রত্যাশা করি, যেন এটি একটি প্রতীক হয়ে থাকে, আরও অনেক উজ্জ্বল আলো আসার একটি ইঙ্গিত হয়ে ওঠে।’
ভোটের ফল ঘেষণার পর সিনেটর, কর্মী ও দর্শনার্থীরা উল্লাসে ফেটে পড়েন। তারা দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থেকে জ্যাকসনের প্রতি সম্মান জানান।
তবে তেমন খুশি হতে পারেননি রিপাবলিকানরা। সিনেটে সংখ্যালঘিষ্ঠ দলের নেতা রিপাবলিকান সিনেটর মিচ ম্যাককোনেল ভোটের ফল ঘোষণার পরপরই পেছনে ঘুরে ধীর পদক্ষেপে সিনেট চেম্বার থেকে বেরিয়ে যান, বেশির ভাগ রিপাবলিকান সিনেটর তাকে অনুসরণ করেন।
জ্যাকসনের নিয়োগের পক্ষে যে তিন রিপাবলিকান সিনেটর ভোট দিয়েছেন তারা হলেন মেইনের সেনস সুজান কলিন্স, আলাস্কার লিসা মুনকোভিস্কি ও উটাহর মিট রমনি।
বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসের রুজভেল্ট রুমে বসে বাইডেন ও জ্যাকসন টেলিভিশন স্ক্রিনে সিনেটের ভোটাভুটি দেখেন। ফল ঘোষণার পর তারা টেলিভিশনের সামনে দাঁড়িয়ে পরস্পরকে আলিঙ্গন করেন ও সেলফি তোলেন।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি এবং তার আসন্ন প্রশাসন চাপ সৃষ্টি না করলে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি চুক্তি কখনোই হতো না।
ইসরায়েলের মন্ত্রিসভার অনুমোদন পেলে যুদ্ধবিরতি চুক্তি রোববার থেকে কার্যকর হবে। এতে ফিলিস্তিনি বন্দি বিনিময়ের সঙ্গে ইসরায়েলি জিম্মি বিনিময় অন্তর্ভুক্ত থাকবে। পরে যুদ্ধের স্থায়ী সমাপ্তির শর্তাবলী চূড়ান্ত করা হবে।
দ্বিতীয় মেয়াদে অভিষেকের চার দিন আগে ট্রাম্প ড্যান বোঙ্গিনো শোতে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক রাষ্ট্রদূত স্টিভ উইটকফসহ তার দলের চাপ ছাড়া আলোচনা কখনোই চূড়ান্ত হতো না।
ওয়াশিংটন থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা যদি এই চুক্তির সঙ্গে জড়িত না থাকতাম, তাহলে চুক্তি কখনোই হতো না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চুক্তির গতিপথ পরিবর্তন করেছি এবং তা দ্রুতই করেছি। সত্যি বলতে আমি দায়িত্ব নেওয়ার আগে এটা একটা ভালো কাজ।’
চুক্তির শর্তাবলী নিয়ে আলোচনা করতে ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা শুক্রবার বৈঠকে বসবে। সোমবার ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট হিসেবে অভিষেকের আগে রোববার থেকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হবে।
ট্রাম্প যুদ্ধবিরতি চুক্তির কৃতিত্ব নেওয়ার জন্য বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নিন্দা করেছেন এবং তাকে ‘অকৃতজ্ঞ’ বলেছেন।
ট্রাম্প বলেন, ‘তিনি কিছুই করেননি। আমি যদি এটা না করতাম বা আমরা যদি না জড়াতাম, তাহলে জিম্মিরা কখনোই বেরিয়ে আসতে পারত না।’
বাইডেন গত বছরের মে মাসে শর্তসাপেক্ষে যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রস্তাব করেছিলেন, যা চলতি সপ্তাহে আলোর মুখ দেখবে।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানল ছয় দিনেও নিয়ন্ত্রণে আসেনি।
‘সান্তা আনা’ নামে পরিচিত ধ্বংসাত্মক বা হিংস্র ঝোড়ো বাতাসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
দাবানলে এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৪ জনে। গত ৬ দিনে দাবানলে পুড়ে গেছে ৪০ হাজারেরও বেশি এলাকা।
পাঁচ দিনের ভয়াবহ তাণ্ডবের পরও জ্বলছে আগুন। ছড়িয়ে পড়ছে নতুন নতুন এলাকায়।
দাবানল নতুন করে মোড় নিচ্ছে ব্রিটেন উডস ও সান ফার্নান্দো ভ্যালির দিকে।
প্যালিসেইডস, ইটন, কেনেত লিডিয়া, হার্স্ট এবং আর্চারের অনেক এলাকায় আগুন এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। এর মধ্যে প্যালিসেইডসে দাবানল আরও এক হাজার এলাকা ছড়িয়েছে।
সান্তা আনা বাতাস সাধারণত সেপ্টেম্বর এবং মে মাসের মধ্যে ঘটে। এটি সাধারণত কয়েক দিনের জন্য দেখা দেয়।
এদিকে ওয়াশিংটন পোস্ট আবহাওয়ার ধরনটিকে ‘বিশাল এক হেয়ার ড্রায়ার’-এর সঙ্গে তুলনা করেছে এবং লেখকরা দীর্ঘকাল ধরে উল্লেখ করেছেন যে, বাতাসের প্রভাব বাসিন্দাদের কাছে এটি মনস্তাত্ত্বিকভাবে রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
এএফপি সোমবার এক প্রতিবেদনে জানায়, লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টির স্বাস্থ্যকর্মী স্থানীয় সময় রোববার দাবানলের আগুনে ২৪ জন মারা যাওয়ার তালিকা প্রকাশ করেছে। এ ছাড়া ১৬ জনের নিখোঁজের কথাও জানিয়েছে।
বর্তমানে লস অ্যাঞ্জেলেসে চারটি দাবানল সক্রিয় রয়েছে। এর মধ্যে প্যালিসেইডস দাবানল আরও এক হাজার একর এলাকা ছড়িয়েছে। আগেই এ দাবানলে পুড়ে যায় ২২ হাজার একর এলাকা।
ক্যালিফোর্নিয়ার ফায়ার সার্ভিস জানায়, এখন পর্যন্ত প্যালিসেইডসের দাবানলের ১১ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
নতুন করে এ আগুন বৃদ্ধি পাওয়ার আগে ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা প্যালিসেইডস দাবানল ও লস অ্যাঞ্জেলেসের পূর্বাঞ্চলে দাবানল নিয়ন্ত্রণে অগ্রগতির কথা জানিয়েছেন।
এ দুই দাবানলই সবচেয়ে ভয়াবহ।
দুই দাবানলে একসঙ্গে ১৪৫ বর্গকিলোমিটার এলাকা পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এর আয়তন নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটন এলাকার চেয়ে আড়াই গুণ বেশি।
গত ছয় দিনের দাবানলে ৪০ হাজার একরেরও বেশি এলাকা পুড়ে ছাই হয়ে যায়। আগুনে ভস্মীভূত হয় ১২ হাজারেরও বেশি বাড়িঘর ও স্থাপনা। বাস্তুচ্যুত হয় লক্ষাধিক মানুষ।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়, লস অ্যাঞ্জেলেস ও ভেঞ্চুরা কাউন্টিতে স্থানীয় সময় রোববার রাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬০ মাইল পর্যন্ত বাড়তে পারে। এ ছাড়া দাবানলের কারণে পরিবেশ বিপর্যয়ও ঘটেছে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে ঘরের বাইরে না যাওয়ার পাশাপাশি মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে ভয়াবহ দাবানলে মঙ্গলবার পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির কিছুটা পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়েছে।
দাবানলে এখন পর্যন্ত মারা গেছে অন্তত ১১ জন। ধ্বংস হয়েছে ১০ হাজারেরও বেশি বিলাসবহুল বাড়ি ও অবকাঠমো।
এক লাখ ৮০ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে ১৫০ বিলিয়নেরও বেশি ডলারের।
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ এ দাবানলের মধ্যেই চলছে লুটতরাজ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্যালিসেইডস ও ইটন অঞ্চলে জারি করা হয়েছে কারফিউ।
নিউইয়র্ক থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
গত চার দিন ধরে দাউ দাউ করে জ্বলছে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেস। গোটা শহর যেন নরকে পরিণত হয়েছে।
কয়েকটি জায়গায় দাবানল কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলেও পরিস্থিতি এখনও ভয়াবহ।
ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ এ দাবানলে বেশ কয়েকজন প্রাণ হারিয়েছেন। ধ্বংস হয়ে গেছে ১০ হাজারেরও বেশি বাড়িঘর।
এখনও বাসিন্দাদের সরানো হচ্ছে নিরাপদ স্থানে।
বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, দাবানলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ পূর্বের রেকর্ড ছাড়াবে।
আগুন নেভাতে জীবন বাজি রেখে কাজ করে যাচ্ছেন ফায়ারফাইটাররা। টানা কাজের কারণে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তবুও স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্ধারে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
অভিজাত প্যাসিফিক প্যালিসেডস এলাকায় পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়া বাড়িঘরগুলোতে লোকজনকে ফিরতে দেখা গেছে। অনেকে পোড়া বাড়িঘর দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
বিপদের মধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বাড়িঘরে চলছে লুটপাট। এরই মধ্যে ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্যাসিফিক প্যালিসেইডস ও ইটনসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় কারফিউ জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। ন্যাশনাল গার্ডও মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে হেলিকপ্টারে পানি ছিটানো হচ্ছে।
স্থানীয় সময় শুক্রবার জুমার নামাজের পর লস অ্যাঞ্জেলেসে বসবাসরত বাংলাদেশি কমিউনিটি মসজিদে বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেয়।
ওই দিন টেক্সাস, ওকলাহোমা, নর্থ ক্যারোলিনা ও জর্জিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে বাতিল হয়ে যায় স্কুলের কার্যক্রম।
এমন পরিস্থিতিতে লাখ লাখ শিশুকে ঘরে বসেই অনলাইনে ক্লাস করতে হচ্ছে। বিভিন্ন অঞ্চলের অফিস-আদালতও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
বৈরি আবহাওয়ার কারণে শার্লোট, ডালাস-ফোর্ট বিমানবন্দরে বিমান চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে।
এদিকে আবহাওয়া অফিস জরুরি প্রয়োজন ছাড়া দুর্যোগের শিকার এলাকার বাসিন্দাদের ঘরের বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে ভয়াবহ দাবানলে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে ১০ জনে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।
আগুনে ১০ হাজার ঘরবাড়ি, অন্যান্য ভবন ও অবকাঠামো পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানল নিয়ে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্র্যাটিক পার্টির গভর্নরের সঙ্গে রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছেন।
পানি সংকটের জন্য ক্যালিফোর্নিয়া প্রশাসনের প্রতি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ট্রাম্প।
আলাদা ছয়টি দাবানলের মধ্যে অনেকগুলোই নিয়ন্ত্রণের পুরোপুরি বাইরে চলে গেছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। তীব্র বাতাস, শুষ্ক আবহাওয়া এবং পানির চাপ কম থাকায় আগুন নেভাতে হিমশিম খাচ্ছেন ফায়ারফাইটাররা।
আগুনের তীব্রতা দেখে তা নিয়ন্ত্রণ করার বদলে সাধারণ মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার কাজ করছেন ফায়ারফাইটাররা। ফলে হতাহতের সংখ্যা বেশ কম হয়েছে।
লস অ্যাঞ্জেলেসের ফায়ার সার্ভিসের প্রধান অ্যান্থনি ম্যারন বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আগুন নেভাতে যুক্তরাষ্ট্রের আরও ছয় অঙ্গরাজ্য থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের ক্যালিফোর্নিয়ায় আনা হয়েছে। আগুন নেভানোর কাজে নতুন সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে পানি।
তিনি আরও বলেন, প্যাসিফিক প্যালিসেইডস এলাকার কিছু আগুন নেভানোর জন্য পানি সরবরাহের হাইড্রেন্ট শুকিয়ে গেছে। লস অ্যাঞ্জেলেসের দুই লাখেরও বেশি বাসিন্দাকে নিরাপদে সরে যেতে বলা হয়েছে।
স্থানীয় সময় বুধবার সন্ধ্যায় আগুন দেখা যায় চলচ্চিত্র জগতের তীর্থস্থান হলিউডে। আগুনে হলিউডের বেশ কয়েকজন তারকার বাড়ি পুড়ে যায়।
বিখ্যাত হলিউড সাইনবোর্ডটির বেশ কাছাকাছি আগুনের শিখা দেখতে পেয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন লস অ্যাঞ্জেলেসের মূল শহরের বাসিন্দারা। এ এলাকায় বেশির ভাগ বাংলাদেশির বসবাস।
এ পর্যন্ত তারা নিরাপদে আছেন বলে খবর পাওয়া যায়।
আগুনে ভস্মীভূত বাড়িঘরে লুটপাট করার খবরও পাওয়া যায়।
এ চরম সংকটেও যারা লুটপাট করছে তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন লস অ্যাঞ্জেলেসের পুলিশ কর্মকর্তা ক্যাথরিন বার্গারবলেন।
লুটপাটের ঘটনায় এরই মধ্যে ২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আগুনে এ পর্যন্ত লস অ্যাঞ্জেলেসে প্রায় দুই হাজার অবকাঠামো ধ্বংস হয়। এর মধ্যে শত কোটি ডলারের বাড়িও রয়েছে। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে অন্তত সাড়ে তিন লাখ বাড়িঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান।
দাবানলে এ পর্যন্ত ৫০ বিলিয়ন বা ৫ হাজার কোটি ডলারের বেশি সম্পত্তির ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হয়েছে।
এদিকে হোয়াইট হাউসে এক ব্রিফিংয়ে বিশেষ ফেডারেল ফান্ড থেকে দাবানলে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। দাবানলের কারণে তিনি বাতিল করেন ইতালি সফর।
আগুনের দাহ থেকে বের হওয়া সূক্ষ্ম কণা অনেক দূর পর্যন্ত যেতে পারে। আগুনের এসব কণা ফুসফুস এমনকি ধমনিতে পর্যন্ত প্রবেশ করে যে কাউকে মারাত্মক অসুস্থ করে দিতে পারে বলে সতর্ক করেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
গত কয়েক দিনের তুলনায় বাতাসের গতিবেগ কম হওয়ায় আগুন নিয়ন্ত্রণ কিছুটা সহজ হবে বলে মনে করছেন দমকলকর্মীরা। তবে পানি সংকট নিয়ে ক্যালিফোর্নিয়া প্রশাসনের প্রতি ক্ষোভ জানিয়েছেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় দাবানলে অন্তত পাঁচজনের প্রাণহানি হয়েছে। আরও প্রাণহানির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আহত বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে বুধবার জানিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।
ফায়ারফাইটাররা অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির সাহায্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
ক্যালিফোর্নিয়ার উত্তরাঞ্চলের আলটাডেনার শহরতলীর ১০ হাজার ৬০০ একর এলাকা আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
আমেরিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর লস অ্যাঞ্জেলেসের প্রায় দেড় হাজার ভবন আগুনে পুড়ে গেছে। প্রায় ১ লাখ মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।
লস অ্যাঞ্জেলেসের শেরিফ রবার্ট লুনা জানান, এ পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আরও প্রাণহানির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
লস অ্যাঞ্জেলেস ফায়ার সার্ভিসের প্রধান অ্যান্থনি ম্যারোনি জানান, পালিসেডস ও ইটন এলাকায় দুটি দাবানলে সাত হাজারের বেশি এলাকা পুড়ে যায়। পালিসেডসের আগুনে বিপুলসংখ্যক মানুষ আহত হন।
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ ড্যানিয়েল সোয়াইন জানান, প্রবল বাতাসের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।
ম্যারোনি জানান, ২৪ ঘণ্টা পার হলেও দাবানল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তো আসেইনি, এর আরও অবনতি হয়েছে। এরই মধ্যে এক হাজারেরও বেশি বাড়িঘর আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
এমন পরিস্থিতিতে লোকজন বাড়ি, গাড়ি ফেলেই নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা এ পরিস্থিতিকে হলিউডের সিনেমার দৃশ্যের সঙ্গে তুলনা করছেন।
আগুন নেভাতে ১ হাজার ৪০০ ফায়ারফাইটার কাজ করছেন। অত্যাধুনিক সরঞ্জাম দিয়েও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে না।
প্যাসিফিক পলিসেডস এলাকায় জেনিফার অ্যানিস্টোন, ব্রাডলি কুপার, টম হ্যাঙ্কস, রিজ উইদারস্পুন, অ্যাডাম স্যান্ডেলার, মাইকেল কিটনসহ অনেক হলিউড তারকার বাড়ি রয়েছে।
ছড়িয়ে পড়া দাবানলে মঙ্গলবার মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে দুই হাজার ৯০০ একরেরও বেশি এলাকা পুড়ে যায়। কর্তৃপক্ষ রাজ্যজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে আগুনের সূত্রপাত হয় এবং খুব অল্প সময়ের মধ্যে তা চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে। এতে অসংখ্য বাড়িঘর পুড়ে যায় এবং তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
কর্তৃপক্ষ ৩০ হাজার মানুষকে অন্যত্র সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। ঝুঁকিতে রয়েছে ১৩ হাজার ভবন।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, সান্তা মনিকা ও মালাবু উপকূলীয় শহরগুলোর মধ্যে প্যাসিফিক প্যালিসেডস এলাকায় কমপক্ষে ২ হাজার ৯২১ একর পুড়ে যায়। এরই মধ্যে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
ওই এলাকার বাসিন্দা মার্টিন স্যানসিং জানান, গত ২০ বছরের মধ্যে দাবানলের এমন ভয়াবহতা আর কখনও দেখেননি।
কয়েকটি ছবিতে দেখা যায়, দাবানল ছড়িয়ে পড়া এলাকাগুলোতে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। চারপাশ কালো ধোঁয়ায় ছেয়ে আছে।
ছবিতে আরও দেখা যায়, অগ্নিনির্বাপণ কর্মীরা বিশেষ ব্যবস্থায় সমুদ্র থেকে পানি এনে আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন। আগুনের শিখা বাড়িঘরকে ক্রমাগত গ্রাস করছে। বুলডোজারগুলো রাস্তা থেকে পরিত্যক্ত যানবাহনগুলোকে সরিয়ে নিচ্ছে।
এদিকে লস অ্যাঞ্জেলেসের ফায়ার সার্ভিস বিভাগ ছুটিতে থাকা কর্মীদের কাজে যোগ দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
দাবানল ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যেও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ক্যালিফোর্নিয়ার ১৫ লাখ মানুষ বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে।
আরও পড়ুন:কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর বিরুদ্ধে তার নিজের দল লিবারেল পার্টিতে ক্ষোভ দানা বেঁধে উঠেছে। এর ফলে তিনি যেকোনো দিন দলের নেতা ও প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দিতে পারেন বলে রোববার জানিয়েছে ‘দ্য গ্লোব অ্যান্ড মেইল’।
লিবারেল পার্টির অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলো সম্পর্কে অবগত আছেন এমন তিনটি অসমর্থিত সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে রোববার‘ দ্য গ্লোব’ জানায়, পদত্যাগের ঘোষণা দিতে পারেন ট্রুডো।
দ্য গ্লোবের সূত্রে জানা যায়, বুধবার লিবারেল পার্টির জাতীয় সম্মেলনের আগেই এ ঘোষণা আসবে।
দ্য গ্লোব আরও জানায়, পদত্যাগের পরও ট্রুডো অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাজ চালিয়ে যাবেন কি না, তা নিশ্চিত নয়। তাৎক্ষণিকভাবে নতুন কাউকে নেতৃত্ব দেওয়ার বিকল্পটিও রয়েছে লিবারেল পার্টির সামনে।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ট্রুডোর জনপ্রিয়তা অনেক কমে এসেছে। তার সরকার কয়েক দফা অনাস্থা ভোট কোনোমতে এড়াতে সক্ষম হলেও সমালোচকরা তাকে একাধিকবার পদ ছাড়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
২০২৫ সালের অক্টোবরের নির্বাচন পর্যন্ত দলের নেতৃত্বে থাকার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন ট্রুডো। তবে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছ থেকে অপ্রত্যাশিত চাপের মুখে পড়েছেন তিনি, যা তাকে আরও বেকায়দায় ফেলে দিয়েছে।
ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, ক্ষমতা গ্রহণ করেই কানাডার পণ্য আমদানির ওপর বাড়তি ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন।
ট্রাম্পের এই হুমকির বিরুদ্ধে কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানানো হবে, সে বিষয়ে মতভেদের জেরে ডিসেম্বরে পদত্যাগ করেন উপপ্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড। এটাই ট্রুডোর মন্ত্রিসভায় প্রথম ‘প্রকাশ্য’ বিদ্রোহের ঘটনা।
এ ঘটনার পর ট্রুডো মন্ত্রিসভায় বড় পরিবর্তন আনেন। তিন ভাগের এক ভাগ মন্ত্রী পরিবর্তন করে রাজনৈতিক অস্থিরতা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি।
এর আগে নভেম্বরে ফ্লোরিডায় ট্রাম্পের বিলাসবহুল বাড়ি মার-এ লাগোয় বৈঠক ও নৈশভোজে যোগ দেন ট্রুডো । কিন্তু এতে তেমন কোনো কাজ হয়নি। এরপরও গণমাধ্যমে ট্রুডোকে নিয়ে অপমানজনক বক্তব্য দিয়ে গেছেন ট্রাম্প। তাকে কানাডার ‘গভর্নর বলে আখ্যায়িত করেন তিনি।
কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম রাজ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টিকে ‘চমৎকার পদক্ষেপ’ বলেও অভিহিত করেন ট্রাম্প।
২০১৫ সালে ক্ষমতায় আসেন ট্রুডো। একসময়ের অসম্ভব জনপ্রিয় এ নেতা এখন কনজারভেটিভ পার্টির পিয়েরে পোইলিভ্রের চেয়ে ২০ জনমত পয়েন্টে পিছিয়ে আছেন।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার প্রথম দুই মেয়াদে তিনি সিনেটের সংস্কার আনেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে একটি নতুন বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করেন এবং কানাডার গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনে কার্বন ট্যাক্স চালু করেন।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউজে প্রবেশের মাত্র কয়েক দিন আগে ১০ জানুয়ারি তার বিরুদ্ধে ঘুষের মামলায় রায় ঘোষণার দিন ঠিক করেছেন বিচারক।
মামলায় ট্রাম্পকে জেলে যেতে হবে না বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন ওই বিচারক।
এ সিদ্ধান্তের ফলে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে অপরাধমূলক কাজের জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করা প্রথম ব্যক্তি হবেন ট্রাম্প।
ম্যানহাটনের বিচারক জুয়ান এম মার্চেনে এ বিচারকাজের নেতৃত্ব দিয়েছেন।
একটি লিখিত রায়ে তিনি বলেছেন, তিনি তাকে ‘নিঃশর্ত অব্যাহতি’ দেয়ার পরিকল্পনা করছেন।
এর অর্থ ট্রাম্পের দোষী সাব্যস্ত হওয়ার বিষয়টি রেকর্ডে থাকবে, তবে তাকে জেল, জরিমানা বা প্রবেশনের মুখোমুখি হতে হবে না। সাজা ঘোষণার সময় ট্রাম্পকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হওয়ার সুযোগ দেয়া হয়েছে।
বিচারক মারচান প্রেসিডেন্টের দায়মুক্তি এবং তার আসন্ন দ্বিতীয় মেয়াদের ভিত্তিতে রায় খারিজ করার ট্রাম্পের প্রচেষ্টা প্রত্যাখ্যান করেছেন।
তিনি আইনের সামনে সমতা রাখার ওপর জোর দিয়েছেন।
ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যালে এর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে এ রায়কে রাজনৈতিক আক্রমণ এবং ম্যানহাটন ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি অ্যালভিন ব্র্যাগের পরিকল্পিত ‘কারচুপিপূর্ণ প্রতারণা’ বলে অভিহিত করেছেন।
এ সিদ্ধান্ত বহাল রাখলে প্রেসিডেন্সি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলেও তিনি হুঁশিয়ারি দেন।
এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি ব্র্যাগের অফিস, তবে আইন বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেছেন, ট্রাম্প তার দোষী সাব্যস্ত হওয়ার বিরুদ্ধে আপিল করতে পারেন।
মামলাটি রাষ্ট্রীয় আইনের আওতায় পড়ায় তিনি নিজেকে ক্ষমা করতে পারবেন না।
২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারের সময় পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে গোপনে অর্থ প্রদানের বিষয়টি গোপন করার পরিকল্পনা থেকেই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।
ট্রাম্প কীভাবে তার সাবেক অ্যাটর্নি মাইকেল কোহেনকে অর্থ প্রদানের জন্য সরবরাহ করেছিলেন সেটিকে কেন্দ্র করেই মামলাটি শুরু হয়েছিল। একটি কথিত সম্পর্কের দাবিকে গোপনে থামানোর জন্য এ অর্থ দেওয়া হয়েছিল, যা ট্রাম্প অস্বীকার করেছেন।
প্রাথমিকভাবে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ট্রাম্পের সাজা ঘোষণার কথা থাকলেও তা আর হয়নি। নভেম্বরের নির্বাচনে জয়লাভের পর উভয় পক্ষই তার আসন্ন প্রেসিডেন্ট হওয়ার তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা করেছে।
ট্রাম্পের আইনজীবীরা তার শাসন ব্যবস্থায় বিঘ্নের কথা উল্লেখ করে মামলাটি খারিজের পক্ষে যুক্তি দিয়েছেন। অন্যদিকে প্রসিকিউটররা এখনও সাজা বহাল রাখার পক্ষে।
মার্চান মামলাটি খারিজ করার বিরুদ্ধে রায় দিয়ে বলেছেন, একজন নির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে এ জাতীয় দায়মুক্তি দেওয়া আইনের শাসনকে ক্ষুণ্ন করবে।
তিনি সুপ্রিম কোর্টের দায়মুক্তির রায়কে এই মামলার সঙ্গে যুক্ত করার যুক্তি প্রত্যাখ্যান করে উল্লেখ করেছেন, ট্রাম্পের পদক্ষেপগুলো প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার প্রথম মেয়াদের আগে এবং সময়ে ঘটেছিল।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য