পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাতে যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। এর পর পরই ক্ষমতার মসনদে বসতে যাচ্ছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী নেওয়াজ শরিফের ভাই ও পার্লামেন্টে বিরোধীদলীয় নেতা শাহবাজ শরিফ।
বুধবার এ কথা জানিয়েছেন দেশটির অন্যতম বিরোধী দল পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি।
ইমরান খানের বিরুদ্ধে বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাবের বিষয়ে আলোচনা হবে বৃহস্পতিবার।
বিরোধীদলীয় নেতা শাহবাজ খানের তোলা অনাস্থা প্রস্তাবের বিষয়ে বিতর্ক শুরু হবে বলে জানিয়েছেন পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের স্পিকার কাসিম সুরি।
গতকাল ইমরানের জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেয়ার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে আজ রাতে নির্ধারিত করা হয়েছে। এমনটি জানিয়েছেন ফেডারেল তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী।
ইমরান খানের বিরুদ্ধে দেশ শাসনে অব্যবস্থাপনার অভিযোগ এনে গত ৮ মার্চ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেয় বিরোধী দলগুলো। এর মধ্যে রয়েছে পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) মতো বড় দলগুলো।
প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপনের অনুমতি চেয়ে সোমবার সন্ধ্যায় বিরোধী দলের নেতা শাহবাজ শরিফ পার্লামেন্টের স্পিকারের কাছে আবেদন করেন।
ডেপুটি স্পিকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘প্রস্তাবটি হাউসে উপস্থাপন করার অনুমতি দিন, যেহেতু রেজুলিউশনটি ইতোমধ্যে এজেন্ডায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।’
এদিকে ইমরান-বিরোধ আন্দোলনে যোগ দেয়ায় মুত্তাহিদা কোয়ামি মুভমেন্ট- পাকিস্তানের (এমকিউএম-পি) প্রধানকে ধন্যবাদ জানান বিলাওয়াল ভুট্টো।
ইমরান খানের সরকার গঠনে অন্যতম প্রধান শরিক দল ছিল এই এমকিউএম-পি পার্টি।
এরই মধ্যে ইমরান খানের দল পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে। তিনি এখন আর দেশটির কার্যকর প্রধানমন্ত্রী নন বলেও দাবি করেন বিলাওয়াল ভুট্টো।
তবে এমকিউএম-পির এমন বিমাতাসুলভ আচরণকে বৈদেশিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
জাতীয় পরিষদের স্পিকারকে সঙ্গে নিয়ে পার্লামেন্টের নিরাপত্তাবিষয়ক কমিটি ও জাতীয় নিরাপত্তা কমিটিকে বৈঠকে ডেকেছেন আজ ইমরান খান।
বৃহস্পতিবারের মধ্যে দেশটির পার্লামেন্টে ইমরানের প্রধানমন্ত্রিত্বের বৈধতা বিষয়ে বিতর্ক নিষ্পত্তির দাবিও জানান পিপিপি চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো।
কে এই শাহবাজ শরিফ
২০১৮ সালের আগস্ট থেকে দেশটির জাতীয় পরিষদে বিরোধীদলীয় নেতার দায়িত্ব পালন করে আসছেন শাহবাজ শরিফ।
তিনি পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন তিনবার। এখন পর্যন্ত এই প্রদেশে সবচেয়ে বেশি সময় মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন শাহবাজ।
দেশটির অন্যতম বিরোধী দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নেওয়াজ-এর (পিএমএল-এন) প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে রয়েছেন শাহবাজ নেওয়াজ। তিনি পাঞ্জাবের প্রাদেশিক পরিষদে সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন ১৯৮৮ সালে।
তিনি পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন ১৯৯৭ সালে।
১৯৯৯ সালে সেনা অভ্যুত্থানে সরকার উৎখাতের পর পরিবারসহ সৌদি আরবে নির্বাসনে যান শাহবাজ শরিফ। ২০০৭ সালে দেশে ফিরে আসেন তিনি।
দেশটির জাতীয় নির্বাচনে নওয়াজ শরিফের পিএমএল-এন জয়লাভ করলে তার ভাই শাহবাজ শরিফ দ্বিতীয়বারের মতো পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন।
দুর্নীতির অভিযোগে নেওয়াজ শরিফ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পাওয়ার পর দলটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করা হয় তার ভাই শাহবাজ শরিফকে।
পাকিস্তানের সংসদের নিয়ম অনুযায়ী এমন অনাস্থা প্রস্তাব গৃহীত হতে অন্তত ২০ শতাংশ সংসদ সদস্যের অনুমতির প্রয়োজন হয়। এর অর্থ অনাস্থা ভোট আয়োজনের প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার জন্য ৬৮ পার্লামেন্ট সদস্যের সম্মতি দরকার হবে।
কিন্তু ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনতে এর চেয়ে অনেক বেশি সদস্য সায় দেন। সব মিলিয়ে এ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন ১৬১ জন। এরপর প্রস্তাবটি গৃহীত হওয়ার ঘোষণা দেন স্পিকার।
ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবে শাহবাজ শরিফ বলেন, ‘ইসলামিক রিপাবলিক অফ পাকিস্তানের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৯৫-এর ১ ধারা অনুযায়ী, এই সংসদ ঘোষণা দিচ্ছে যে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান নিয়াজির ওপর সংসদের কোনো আস্থা নেই। ফলে ৪ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তাকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে।’
পার্লামেন্টে ভোটের হিসাব-নিকাশ
নিম্নকক্ষে ৩৪২ আসনের মধ্যে বিরোধীদের দখলে আছে ১৬৩টি। বাকি ১৭৯ আসনের মধ্যে ইমরানের দলের আছে ১৫৫টি এবং চার জোটসঙ্গীর ২০টি।
অনাস্থা প্রস্তাবে টিকে থাকতে হলে ইমরান খানকে অন্তত ১৭২ সদস্যের সমর্থন পেতে হবে। এর মধ্যে তিন জোটসঙ্গী মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট পাকিস্তান (এমকিউএম-পি), পাকিস্তান মুসলিম লিগ-কায়েদ (পিএমএল-কিউ) ও বালুচিস্তান আওয়ামী পার্টি (বিএপি) বিরোধী শিবিরে যোগ দেয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে।
সঙ্গীরা বিপক্ষে গেলে এমনিতেই ইমরানের প্রধানমন্ত্রী থাকা হবে না। তার ওপর নিজ দলের ২০ জনের বেশি এমপি তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। এ ছাড়া নিম্নকক্ষে ইমরানের আসন আছে ১৫৫টি। ক্ষমতায় টিকে থাকতে তার আরও ১৭ ভোট প্রয়োজন।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রাম মহানগরের খুলশী থানা এলাকায় একটি ফ্ল্যাটে সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই সদস্য পরিচয় দিয়ে ডাকাতির চেষ্টাকালে ১১ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সহায়তায় শুক্রবার রাত ১২টার দিকে তাদের আটক করা হয়।
আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিএমপি খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান।
আটক ব্যক্তিরা হলেন মো. ওয়াজেদ (৩৬), মো. হোসাইন (৪২), রুবেল হোসেন (২৫), মহি উদ্দিন (৪৫), আবদুস সবুর (৩৭), মো. ইয়াকুব (৩৫), মোজাহের আলম (৫৫), মো. রোমেল (৪১), ওসমান (২৪), আবদুল মান্নান (৩৫) ও শওকত আকবর (২৮)।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশের ভাষ্য, শুক্রবার রাত ১২টার দিকে ১৩ জনের দল একটি মাইক্রোবাসে করে খুলশীর ৩ নম্বর রোডের একটি বহুতল ভবনে আসে। ভবনের নিরাপত্তাকর্মীদের কাছে নিজেদের গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য বলে পরিচয় দেয় তারা।
এরপর ভবনের নিরাপত্তাকর্মীদের হাত-পা ও চোখ বেঁধে আটকে রেখে তারা ভবনের অষ্টম তলায় যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক গিয়াস উদ্দিন আনসারীর ফ্ল্যাটে ঢুকে পড়ে।
ওই সময় গিয়াস উদ্দিন বাসায় না থাকায় দলটি দরজা ভেঙে ফ্ল্যাটে প্রবেশ করে এবং জিনিসপত্র তছনছ করে। ভবনের অন্য বাসিন্দারা বিষয়টি টের পেয়ে পুলিশকে খবর দেন।
খুলশী থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ১১ জনকে আটক করে। অভিযানের সময় আরও দুজন পালিয়ে যায়।
আটক ব্যক্তিদের কাছ থেকে একটি চাইনিজ কুড়াল, খেলনা পিস্তল ও ভুয়া পরিচয়পত্র উদ্ধার করা হয়।
গিয়াস উদ্দিনের ভাই জালাল উদ্দিন আনসারী জানান, ঘটনার সময় তার ভাইয়ের পরিবারের কেউ বাসায় ছিলেন না। তারা বাইরে বেড়াতে গিয়েছিলেন। এ সুযোগে দলটি দরজা ভেঙে বাসায় প্রবেশ করে সবকিছু তছনছ করে।
সিএমপির উপকমিশনার (উত্তর) ফয়সাল আহমেদ বলেন, ‘১১ জনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনাটির তদন্ত চলছে। বিস্তারিত পরবর্তী সময়ে জানানো হবে।
‘পুলিশ এ ঘটনার তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে এবং পলাতক ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’
আরও পড়ুন:বার্ষিক ৫০ লাখ টন তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) কিনতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান আর্জেন্ট এলএনজির সঙ্গে একটি অবাধ্যতামূলক চুক্তিতে সই করেছে বাংলাদেশ।
আর্জেন্ট এলএনজি লুইজিয়ানায় বছরে ২ কোটি ৫০ লাখ টন (এমটিপিএ) এলএনজি সুবিধা সরবরাহ করছে।
আর্জেন্ট এলএনজির বিবৃতিতে বলা হয়, সোমবার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর এলএনজি সরবরাহের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের এটিই প্রথম বড় চুক্তি।
ক্ষমতায় আসার পর থেকে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নেই, এমন দেশগুলোতে সুপার-চিল্ড গ্যাস রপ্তানির লাইসেন্সের ওপর জ্বালানি বিভাগের স্থগিতাদেশ বাতিলের নির্বাহী পদক্ষেপ নেন। তিনি এলএনজি রপ্তানি বৃদ্ধির চেষ্টা করছেন।
চুক্তি অনুযায়ী পোর্ট ফোরচনে আর্জেন্টের এলএনজি প্রকল্পের কাজ শেষ হলে এর কার্গো পেট্রোবাংলার কাছে বিক্রি করা যেতে পারে।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, ‘এই চুক্তি কেবল বাংলাদেশের সম্প্রসারিত শিল্প ভিত্তির জন্য নির্ভরযোগ্য জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করবে না, বরং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের কৌশলগত অংশীদারত্বকেও শক্তিশালী করবে।’
এলএনজির ওপর নির্ভরতা বাড়িয়ে দীর্ঘমেয়াদি জ্বালানি চাহিদা পূরণের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। তবে বাংলাদেশ এখনও মূল্যের ক্ষেত্রে অত্যন্ত সংবেদনশীল।
ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে ২০২২ সালে যুদ্ধ শুরুর পর এলএনজির দাম বেড়ে গেলে বাংলাদেশ আরও সাশ্রয়ী মূল্যের কয়লা ব্যবহারের দিকে ঝুঁকে পড়ে।
আরও পড়ুন:দীর্ঘ ১৭ দিন পর বাসায় ফিরেছেন যুক্তরাজ্যে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
স্বাস্থ্যের যথেষ্ট উন্নতি হওয়ায় চিকিৎসকরা আপাতত তাকে বাসায় থেকে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
স্থানীয় সময় শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টা (বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে তিনটা) বেগম খালেদা জিয়াকে তারেক রহমান তার বাসায় নিয়ে যান।
এর আগে তারেক বাংলাদেশি অধ্যুষিত ব্রিকলেন মসজিদে তার প্রয়াত ছোট ভাই আরাফাত রহমান কোকোর রুহের মাগফিরাত কামনা করে আয়োজিত দোয়া মাহফিলে অংশ নেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার বেগম খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানান, শুক্রবার রাতের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট হাতে আসবে। সবকিছু ভালো থাকলে তাকে রিলিজ দেওয়া হতেও পারে। তবে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেও সাবেক প্রধানমন্ত্রী সার্বক্ষণিক প্রফেসর পেট্রিক কেনেডি ও জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধানে থাকবেন।
খালেদা জিয়ার লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করার বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্তে আসা যায়নি জানিয়ে তিনি বৃহস্পতিবার বলেন, ‘উনার লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করার বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্তে আসা যায়নি। কারণ উনার বয়সটা একটা বিবেচ্য বিষয়।
‘তা ছাড়া জেলে রেখে তাকে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। তখন তাকে বিদেশে নিয়ে আসা গেলে আরও হয়তো দ্রুত সুস্থ করা যেত। এখন আমাদের চিকিৎসকদের বক্তব্য হচ্ছে আগে হলে হয়তো উনার লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করা যেত।’
ডা. জাহিদ আরও জানান, বর্তমানে বেগম খালেদা জিয়ার লিভার, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, প্রেশার, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসসহ সব রোগের জন্য ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা চলছে। আপাতত ওষুধের মাধ্যমেই এটি অব্যাহত থাকবে। এর বাইরেও আরও কোনো চিকিৎসা করা যায় কি না, সে লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিনস হসপিটালের মেডিক্যাল টিমের সদস্যরা এখানে মেডিক্যাল বোর্ডের সভায় অংশ নিয়েছিলেন।
এদিকে দ্য ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় ডাক্তারের পরামর্শে বেগম খালেদা জিয়াকে প্রতিদিন বাসা থেকে খাবার এনে দেওয়া হতো। ছেলে তারেক রহমান, পুৃত্রবধূ জুবাইদা রহমান, নাতনি ব্যারিস্টার জাইমা রহমান, প্রয়াত ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথি, দুই কন্যা জাফিয়া ও জাহিয়া রহমান বিএনপি চেয়ারপারসনকে নিয়মিত দেখাশোনা করতেন।
এ ছাড়া যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এম এ মালেক, সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম আহমেদ প্রতিদিন হাসপাতালে উপস্থিত থাকতেন।
গত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান খালেদা জিয়া। সেদিন হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সরাসরি তাকে বিশেষায়িত বেসরকারি হাসপাতাল দ্য লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়।
আরও পড়ুন:দীর্ঘদিনেও টেকসই সংস্কার না হওয়ায় জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে নব্বইয়ের দশকে নির্মিত ঝালকাঠি জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবনটি।
এমন পরিস্থিতিতে চরম ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে বিচারক, আইনজীবী, বিচারপ্রার্থী ও আদালতে কর্মরতদের।
সংশ্লিষ্ট উচ্চপদস্থদের অবহিত করে গণপূর্ত বিভাগের ঝালকাঠি অফিস ২০১৯ সালে চিঠি চালাচালি করলেও বিষয়টি এখনও ফাইলবন্দি।
ভবনটি দ্রুত সময়ের মধ্যে টেকসই সংস্কার অথবা পুনর্নির্মাণের দাবি আদালত সংশ্লিষ্ট আইনজীবী, বিচারপ্রার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের।
ঝালকাঠি গণপূর্ত বিভাগ ২০১৯ সালের ৩০ অক্টোবর জরাজীর্ণ জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবনটি সরেজমিনে পরিদর্শন করে ৫ নভেম্বর বরিশালের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বরাবর পরিদর্শন প্রতিবেদন পাঠান।
ভবন পরিদর্শনকালে তিনজন উপসহকারী প্রকৌশলী, গণপূর্তের ঝালকাঠির নির্বাহী প্রকৌশলী এবং ঝালকাঠির অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ উপস্থিত ছিলেন। ওই প্রতিবেদনের একটি কপি সংগ্রহ করেছে নিউজবাংলা।
কী ছিল পরিদর্শন কপিতে
ঝালকাঠি গণপূর্তের উপসহকারী প্রকৌশলী অনিরুদ্ধ মন্ডল, মো. বদরুজ্জামান, মো. ইমরান বিন কালাম এবং নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবদুল্লাহ আল-মাসুম স্বাক্ষরিত ওই পরিদর্শন কপিতে উল্লেখ করা হয়, ‘ভবনটির দুই তলায় করিডোরের বেশ কিছু স্থানে ছাদের কনক্রিট স্প্যানিং হয়ে খসে পড়ছে। এ ছাড়াও নলছিটি কোর্ট রুমের পরিদর্শনকারীদের বসার ওপরের ছাদের অংশ খসে পড়েছে। এ সমস্ত স্থানে মরিচা পড়ে রড উন্মুক্ত হয়ে আছে। দ্বিতীয় তলা এবং নিচ তলার করিডোরের বেশ কিছু বিম ও কলামে ফাটল লক্ষ করা গেছে।
‘ভবনটির নিচ তলায় হাজতখানার ছাদের বেশ কিছু অংশসহ করিডোরের বিভিন্ন অংশে ছাদের কনক্রিট স্প্যানিং হয়ে খসে পড়েছে। এসব স্থানেও মরিচা পড়ে রড বের হয়ে আছে। নিচ তলার বিভিন্ন কলাম এবং বিমের ফাটল লক্ষ করা গেছে। কিছু স্থানে কলাম ফেটে রড বের হয়ে গেছে।’
পরিদর্শন প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, ‘ভবনটির দ্বিতীয় তলা পর্যন্ত ১৯৮৯-৯০ সালে নির্মাণ করা হয়েছে। পরবর্তীকালে ২০০৪-০৫ সালে তৃতীয় তলার উর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ করা হয়েছে। ভবনের বিভিন্ন স্থানে বিম কলামে ফাটল থাকায় এবং ছাদের কনক্রিট খসে পড়ায় বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
‘এমতাবস্থায়, উদ্ভূত পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট গণপূর্ত ডিজাইন বিভাগের মতামতসহ পরবর্তী প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রয়োজন।’
প্রতিটি কক্ষই ঝুঁকিপূর্ণ
সম্প্রতি জজ আদালত ভবনটি ঘুরে দেখা যায়, ভবনের ছাদের ওপর থেকে খসে খসে পড়ছে পলেস্তারা। ফাটল ধরেছে অনেক পিলারেও। ভারি বৃষ্টি এলেই ছাদ ও দেয়াল চুষে পানি পড়ে মেঝেতে। নষ্ট হয়ে যায় প্রয়োজনীয় নথিপত্র।
দীর্ঘদিনেও টেকসই সংস্কার না হওয়ায় তিন তলা ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। বিচারকের এজলাস, খাসকামরা, পেশকার, সেরেস্তাদারের কক্ষ, নকল কক্ষ, হাজতখানাসহ প্রতিটি কক্ষই ঝুঁকিপূর্ণ। এর মধ্যেই চলছে আদালতের কার্যক্রম। এতে যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
যা বলছেন আদালত সংশ্লিষ্টরা
আদালতের জরাজীর্ণ অবস্থার বিষয়ে কথা হয় আবদুর রহমান, তৈয়ব আলী, কামরুল ইসলাম, মুরাদ হোসেনসহ বেশ কয়েকজন বিচারপ্রার্থীর সঙ্গে।
তাদের একজন বলেন, ‘আদালত ভবনের ভিতরে প্রবেশের পর কার্যসম্পাদন করে বের হওয়া পর্যন্ত আমরা থাকি আতঙ্কে। প্রায় সময়ই ছাদের পলেস্তারা খসে নিচে পড়ে।
‘বর্ষায় তো বারান্দায় পানি জমে যায়। দেয়ালে পানি চুষে অনেক ফাইল নষ্ট হয়ে যায়।’
আইনজীবী মানিক আচার্য্য বলেন, ‘ভবনটি ধীরে ধীরে ঝুঁকিপূর্ণ হলেও তার সংস্কার করছে না কর্তৃপক্ষ। বিচারকরা যদি ভালো পরিবেশে বিচারকার্য পরিচালনা করতে না পারে, তাহলে বিচারকার্যে মনোনিবেশও করতে পারেন না।
‘ঝালকাঠির বিচারপ্রার্থী, আইনজীবীসহ সকলেই আমরা এ ভোগান্তিতে রয়েছি। বিভিন্ন সময়ে উচ্চপদস্থদের বিষয়টি অবগত করলেও এখনও কোনো ভূমিকা নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।’
আদালতের এপিপি অ্যাডভোকেট ফয়সাল বলেন, ‘ড্যামেজড ভবনে দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকি নিয়ে চলছে বিচারিক কার্যক্রম। ইতোপূর্বে জরাজীর্ণ আদালত ভবনের ছাদের ও দেয়ালের আস্তর খসে অনেকের ওপর পড়েছে।
‘আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা এবং নতুন ভবন নির্মাণ অথবা টেকসই সংস্কারের জন্য গণপূর্তের চিঠি চালাচালি হলেও দীর্ঘদিনেও কোনো ব্যবস্থা নেয়ার খবর পাইনি। জনস্বার্থে দ্রুত নতুন আদালত ভবন নির্মাণ জরুরি।’
আইনজীবী আক্কাস সিকদার বলেন, ‘বর্তমানে এ আদালতে ১৬ হাজার দেওয়ানি মামলা এবং দেড় হাজার ফৌজদারি মামলা চলমান। ইতোপূর্বে জরাজীর্ণ আদালত ভবনের ছাদের ও দেয়ালের আস্তর খসে অনেকের ওপর পড়েছে।
‘আদালত ভবনের নিচ তলায় হাজতখানার পশ্চিম দিকে মসজিদের সামনে একাধিকবার ধসে পড়েছে ছাদের অংশ। এখন এই ভবন অস্থায়ী সংস্কার না করে এটি ভেঙে এখানে নতুন ভবন করা উচিত।’
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ‘নব্বই দশকে দোতলা জজ আদালত ভবনটি নির্মাণের পর ২০০৬ সালে এর ওপর আরও এক তলা বর্ধিত করে তৃতীয় তলায় উন্নীত করা হয়। বর্তমানে নিচ তলার অনেক পিলারে ফাটল ধরেছে। ভবনটি জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় আদালতের স্টাফ, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা রয়েছেন আতঙ্কে।
‘হাজতখানা সরিয়ে পার্শ্ববর্তী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনে নেওয়া হয়েছে। ভবনে আগতদের নিরাপত্তা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। দ্রুত এটি ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণ এখন সময়ের দাবি।’
জরাজীর্ণ ভবনের বিষয়ে গণপূর্ত বিভাগ ঝালকাঠির সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফয়সাল আলম ও বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলী আমানুল্লাহ সরকার একই ধরনের বক্তব্য দেন।
তাদের একজন বলেন, ‘ভবন পরিদর্শনের রিপোর্ট ২০১৯ সালে দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে নতুন ভবনের জন্য সম্ভাব্য বাজেট তৈরি করা হয়েছে, যা বর্তমানে আইন মন্ত্রণালয়ে আছে।
‘সেখান থেকে অর্ডার হলেই গণপূর্ত বিভাগ টেন্ডার প্রক্রিয়াসহ অন্যান্য কার্যসম্পাদন করবে।’
ক্যাপশন: ঝালকাঠি জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবন। ছবি: নিউজবাংলা
ঝালকাঠি জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবনের ভেতরের জরাজীর্ণ অংশ। ছবি: নিউজবাংলা
আরও পড়ুন:চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার তেলকুপি সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে হাবিল নামের বাংলাদেশি এক যুবক আহত হয়েছেন।
সীমান্তে ভারতের অভ্যন্তরে শুক্রবার রাত সাড়ে তিনটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
আহত হাবিল শিবগঞ্জ উপজেলার তেলকুপি লম্বাপাড়া গ্রামের প্রয়াত বেলাল উদ্দিনের ছেলে।
এ ঘটনায় বিএসএফের সঙ্গে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
সীমান্তের একাধিক সূত্র ও বিজিবি জানায়, হাবিলসহ বেশ কয়েকজন সীমান্ত পেরিযে ভারতের অভ্যন্তরে মাদক আনতে গিয়েছিলেন। বিএসএফ সদস্যরা গুলি চালালে হাবিল আহত হয়ে সীমান্তের বাংলাদেশ অংশে পালিয়ে আসেন। তাকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে শনিবার সকাল সাতটার দিকে নিয়ে আসেন স্বজনরা। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাজশাহী পাঠানো হয়।
৫৯ বিজিবির চাঁপাইনবাবগঞ্জের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া জানান, বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক আহত হওয়ার বিষয়ে পতাকা বৈঠকের আহ্বান করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের নাগরিকরা যেন কোনো বাধা বা হুমকি ছাড়াই অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনে ভোট দিতে পারেন, সেই প্রক্রিয়া তৈরি করার ওপর জোর দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) প্রতিষ্ঠাতা ক্লাউস শোয়াবের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এ অভিমত দেন।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ডব্লিউইএফের বার্ষিক সম্মেলনের ফাঁকে ক্লাউস শোয়াব ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পটভূমি তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘গত বছর জুলাই মাসে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা সরকারি চাকরিতে বৈষম্য নিরসনের দাবি নিয়ে রাজপথে নেমেছিল।’
তিনি উল্লেখ করেন, আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীরা ঢাকার দেয়ালগুলোতে গ্রাফিতি এঁকে তাদের আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্ন প্রকাশ করেছে।
ড. ইউনূস বলেন, গত ১৬ বছরে বাংলাদেশে যারা নতুন ভোটার হয়েছেন, তাদের ভোট দেওয়ার সুযোগই হয়নি, যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার এজেন্ডা তুলে ধরে ২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ৮৪ বছর বয়সী এ অর্থনীতিবিদ বলেন, দেশের মানুষ কোন ধরনের নির্বাচন চায়, সেটি না জেনে সরকার নির্বাচন আয়োজন করতে পারবে না।
তিনি বলেন, সরকার নির্বাচন আয়োজনের অপেক্ষায় রয়েছে, তবে এখন দেশের জনগণকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে প্রক্রিয়াটি কেমন হবে। তারা কী ছোট পরিসরের সংস্কার কর্মসূচিতে যাবে, নাকি দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার চাইবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘যদি মানুষ দ্রুত সংস্কার চায়, তাহলে আমরা এ বছরের শেষ নাগাদ নির্বাচন করার লক্ষ্য নিয়েছি। আর যদি বলে, না আমাদের দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার দরকার, তাহলে আমাদের আরও ছয় মাস সময় লাগবে।’
বর্তমান প্রজন্মকে মানব ইতিহাসের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রজন্ম আখ্যায়িত করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এ প্রজন্মের অমিত সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘প্রযুক্তি বর্তমান প্রজন্মকে বদলে দেওয়ার কারণে তারা এখন শুধু বাংলাদেশি আর তরুণ নয়, বরং সারা বিশ্বের তরুণ প্রজন্মের অংশ হয়ে গেছে।’
তিনি উল্লেখ করেন, এ প্রজন্ম পুরোনো বাংলাদেশে ফিরে যেতে চায় না। তাই একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে হবে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তরুণদের কাজের প্রতিটি অংশে ঐকমত্য গড়ে তোলার জন্য একটি ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হচ্ছে। সব রাজনৈতিক দল এবং সুশীল সমাজের সংগঠনের ঐকমত্যের ভিত্তিতে ‘জুলাই সনদ’ প্রস্তুত করা হবে।
আরও পড়ুন:বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার লিভার প্রতিস্থাপনের বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়নি বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাতে ‘দ্য লন্ডন ক্লিনিক’ নামের হাসপাতালের সামনে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এ কথা জানান।
বাসসকে এমন তথ্য নিশ্চিত করেন লন্ডনের বসবাসরত বাংলাদেশি সাংবাদিক শাহেদ শফিক।
ডা. জাহিদকে উদ্ধৃত করে শাহেদ শফিক বলেন, ‘বেগম জিয়ার লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্টের বিষয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছা যায়নি। বৃহস্পতিবার বেগম খালেদা জিয়ার নতুন করে আরও কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা দেওয়া হয়েছে।
‘শুক্রবার সেসব রিপোর্ট পাওয়া যাবে। রিপোর্টে যদি সব ঠিক থাকে, তাহলে সন্ধ্যার দিকে হাসপাতাল থেকে তার ছুটি হতে পারে। এরপর তিনি বাসায় ফিরবেন।’
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক বলেন, পরবর্তী সময়ে বাসা থেকে নিয়মিত চিকিৎসা নেবেন বিএনপি চেয়ারপারসন। সার্বক্ষণিকভাবে অধ্যাপক পেট্রিক কেনেডি ও জেনিপার ক্রসের সার্বিক তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন থাকবেন তিনি।
ডা. জাহিদ আরও বলেন, ‘গত ১৭ দিনে বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো হয়েছে। দুই-একটি রিপোর্ট এখনও আসেনি। কয়েকটি পরীক্ষা ‘দ্য ক্লিনিকে’ করা যায় না। সেগুলো বাহিরের হাসপাতাল থেকে করাতে হয়।
‘তবে খালেদা জিয়া শারীরিকভাবে আগের চেয়ে এখন অনেকটাই বেটার আছেন।’
খালেদা জিয়ার লিভার প্রতিস্থাপনের বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্তে না আসার কারণ জানিয়ে ডা. জাহিদ বলেন, ‘ম্যাডামের লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করার বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্তে আসা যায়নি। কারণ, বয়সটা এখানে সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ বিবেচ্য বিষয়। তা ছাড়া জেলে রেখে তাকে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল।’
ডা. জাহিদ আরও বলেন, ‘দ্য লন্ডন ক্লিনিকের ডাক্তাররা বলছেন, আরও অনেক আগে ম্যাডামকে বিদেশে নিয়ে আসা গেলে তার লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করা যেত। তাকে দ্রুত সুস্থ করা যেত।
‘এখন ওষুধের মাধ্যমে উনার যে চিকিৎসা চলছে, তা অব্যাহত রাখার জন্য সব চিকিৎসকরা একমত এবং সে অনুযায়ী চিকিৎসা চলবে।’
ওই সময় যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এম এ মালেক, সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য