চলতি মাসের শুরুর দিকে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে অনুষ্ঠিত এক শান্তি আলোচনায় রুশ বিলিয়নিয়ার রোমান আব্রামোভিচকে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছিল বলে তার এক ঘনিষ্ঠ সূত্র দাবি করেছে।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের বরাতে সোমবার রাতে বিবিসির এক প্রতিবেদনে এই খবর জানানো হয়েছে।
আব্রামোভিচ ছাড়াও সেদিনের শান্তি আলোচনায় অংশ নেয়া ইউক্রেনের দুই মধ্যস্থতাকারীর শরীরেও বিষক্রিয়ার লক্ষণ দেখা গিয়েছিল বলে প্রতিবেদনটিতে দাবি করা হয়েছে।
ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে সংঘটিত শান্তি আলোচনাকে ভেস্তে দিতে রুশ কট্টরপন্থীরাই এই কাজ করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গত ৩ মার্চ ওই বিষ প্রয়োগের ঘটনাটি ঘটেছিল। পরে আব্রামোভিচসহ ইউক্রেনের আক্রান্ত অন্য দুই মধ্যস্থতাকারী ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠেছেন। ইউক্রেনের দুই মধ্যস্থতাকারীর মধ্যে দেশটির সাংসদ রাস্তেম উমেরভও ছিলেন।
আব্রামোভিচের ঘনিষ্ঠ আরেকটি সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, সেদিনের পর রুশ ধনকুবেরের শরীরে সন্দেহজন বিষক্রিয়ার লক্ষণ দেখা গিয়েছিল। এর মধ্যে চোখ লাল হয়ে যাওয়া, জ্বালা-পোড়া, চোখ দিয়ে পানি ঝরা এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফোসকা পড়ার মতো ঘটনা ঘটেছিল। তবে তিনি এখন সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন। শুধু তাই নয়, ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ থামাতে এখনও মধ্যস্থতা চালিয়ে যাচ্ছেন আব্রামোভিচ।
গত এক মাসে ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যে বেশ কয়েকবার আনাগোনাও করেছেন আব্রামোভিচ। বলা হচ্ছে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কির সঙ্গেও দেখা করেছেন। তবে, জেলেনস্কির তরফ থেকে এ ধরনের কোনো অভিযোগ ওঠেনি।
এদিকে, সোমবার দিনের শুরুতে ইউক্রেনের মধ্যস্থতাকারী ও এমপি রাস্তেম উমেরভ এক টুইটে দাবি করেন, তিনি সুস্থ ছিলেন। তিনি জনগণকে গুজবে কান না দেয়ার পরামর্শ দেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি, ইসরাইলের নৃশংসতার জন্য জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং ওই অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছেন।
বাংলাদেশে সফররত ফিলিস্তিনের প্রধান বিচারপতি ড. মাহমুদ সিদকি আল-হাব্বাশের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় গতকাল মঙ্গলবার এক বৈঠকে উপদেষ্টা এ মন্তব্য করেন। আজ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়ে জানানো হয়।
বৈঠকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি বাংলাদেশের অবিচল সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন এবং ১৯৬৭ সালের আগের সীমানা অনুযায়ী দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের প্রতি সমর্থন জানান।
ফিলিস্তিনের প্রধান বিচারপতি ড. আল-হাব্বাশ বাংলাদেশের নেতৃত্ব ও জনগণের স্থায়ী সমর্থনের জন্য গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি মুসলিম উম্মাহর মধ্যে ঐক্য আরও সুদৃঢ় করার গুরুত্বের ওপরও জোর দেন।
ফিলিস্তিনিদের নিরন্তর সমর্থনের জন্য দেশটির প্রধান বিচারপতি বাংলাদেশের নেতৃত্ব ও জনগণের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি এ বিষয়ে মুসলিম উম্মাহর মধ্যে বৃহত্তর ঐক্যের ওপরও জোর দেন।
বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির আমন্ত্রণে ড. আল-হাব্বাশ তিন দিনের সরকারি সফরে বাংলাদেশে এসেছেন।
কাতারে হামাসের বিরুদ্ধে ইসরাইলের হামলার জন্য প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর ওপর অসন্তুষ্ট হয়েছেন।
গতকার মঙ্গলবার ওয়াশিংটনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, এক ঘনিষ্ঠ মার্কিন মিত্রের বিরুদ্ধে অন্য এক মিত্রের আক্রমণে তার কোনও ভূমিকা ছিল না।
ওয়াশিংটন থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
ট্রাম্প বলেন, গাজা যুদ্ধের অবসান ও ফিলিস্তিনিদের হাতে বন্দী থাকা জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করার জন্য, ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ মধ্যস্থতাকারী উপসাগরীয় রাষ্ট্রটিতে ইসরাইলি হামলার বিষয়ে তাকে আগে থেকে জানানো হয়নি।
ওয়াশিংটনের একটি রেস্তোরাঁয় ব্যতিক্রমী ভ্রমণের সময় ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি পুরো পরিস্থিতি ও হামলা সংশ্লিষ্ট প্রতিটি বিষয়েই নিয়ে প্রচণ্ড অখুশি। পরিস্থিতি খুব একটা অনুকূলে নেই। তবে আজ ঘটনা যেভাবে মোড় নিল, সেটা নিয়ে আমরা খুশি না হলেও স্পষ্ট বলছি, আমরা জিম্মিদের ফেরত চাই।
আমিরাত সম্প্রতি ট্রাম্পকে তার প্রেসিডেন্ট বিমান হিসেবে ব্যবহারের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে একটি বিলাসবহুল বোয়িং ৭৪৭-৮ জেট বিমান দিয়েছে, যা একটি বড় নৈতিক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল নেটওয়ার্কে একটি পোস্টে বলেছেন, ‘ কাতারে হামলার প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সিদ্ধান্ত ছিল, এটি আমার সিদ্ধান্ত ছিল না।’
তিনি বলেন, আমি কাতারকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন শক্তিশালী ও ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে দেখি এবং দেশটিতে আক্রমণের খবর শুনে আমার খুব খারাপ লাগছে।
চলতি সপ্তাহে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে বিক্ষোভকারীরা যখন রাস্তায় নামেন, তখন বছরের পর বছর ধরে জমে থাকা ক্ষোভ ও হতাশার প্রকাশ বিস্ফোরণ হয়ে জ্বলে ওঠে। কয়েক দিন আগে প্রধান সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্মের ওপর সরকারের নিষেধাজ্ঞা কেবল তাদের ক্ষোভের আগুনে নাড়া দিয়েছে। নেপালের জেন-জির এ বিক্ষোভ কেবল তাদের নানা ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশই ছিল না, এটা ছিল তাদের দীর্ঘদিন ধরে চলা সামাজিক বঞ্চনায় ক্ষোভের প্রতিক্রিয়া।
গতকাল মঙ্গলবার দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। নেপালে রাজতন্ত্র থেকে বের হয়ে গণতন্ত্রে আসার ইতিহাস খুব বেশি দিনের নয়। এ রূপান্তরের সময়কালে অনেক সামাজিক সমস্যা দানা বাঁধতে থাকে। এ নিয়ে তরুণদের মধ্যে সৃষ্টি হয় ক্ষোভ। এর জেরেই বিক্ষোভে গতকাল মঙ্গলবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি ও তাঁর সরকারের অন্য মন্ত্রীরা পদত্যাগে বাধ্য হয়েছেন। তবে এখানেই বিষয়টি শেষ নয়। হিসাবনিকাশ কেবল শুরু হয়েছে।
বেকারত্ব ও বৈষম্য
নেপালের সবচেয়ে সমস্যা বেকারত্ব। দেশটির বিপুল সংখ্যক তরুণ বেকারত্বের কারণে জর্জরিত। তারা চাকরি খুঁজে বেড়াচ্ছেন। ভারত ও চীনের মাঝখানে অবস্থিত তিন কোটি জনসংখ্যার পাহাড়ি দেশ নেপালে চাকরি খুঁজে বের করা কঠিন কাজ। ২০২৪ সালে নেপালের জাতীয় পরিসংখ্যান অফিস দেশটির জীবনযাপনের মান নিয়ে জরিপ করে। তখন নেপালে বেকারত্বের হার ছিল ১২ দশমিক ৬ শতাংশ, যা পাঁচ বছর আগের তুলনায় ১ পয়েন্টেরও বেশি।
এ পরিসংখ্যানগুলো সমস্যার তীব্রতাকে তুলে ধরে। এগুলো কেবল আনুষ্ঠানিক অর্থনীতিতে অংশগ্রহণকারীদের প্রতিনিধিত্ব করে, বেশির ভাগ নেপালিকে বাদ দেয়। যারা আনুষ্ঠানিকভাবে চাকরি ছাড়াই কাজ করেন, বেশির ভাগই কৃষিকাজ করেন। বেকারত্ব মূলত তরুণ প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে কেন্দ্রীভূত, যারা চাকরির প্রত্যাশা করেন।
দেশে কাজের সুযোগ না পেয়ে প্রতিদিন শত শত তরুণ-তরুণী মালয়েশিয়া ও পারস্য উপসাগরের তেলসমৃদ্ধ দেশগুলোতে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে কাজ করার জন্য দেশ ছেড়ে যান। এ ছাড়া নেপালের অনেকেই ভারতে কাজের জন্য যান। তারা সেখানে পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। সরকারি তথ্য দেখায়, গত বছর সাত লাখ ৪১ হাজারের বেশি মানুষ নেপাল ছেড়েছেন। তারা বিভিন্ন দেশে নির্মাণ বা কৃষিকাজ করতে গেছেন।
যেভাবে সূত্রপাত
গত বৃহস্পতিবার এক ঘোষণায় নেপালের কে পি শর্মা অলি সরকার ফেসবুক, ইউটিউবসহ সামাজিক মাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এ নিষেধাজ্ঞা জনমনে, বিশেষ করে তরুণ-তরুণী, যাদের আমরা জেন-জি বলে চিনি, তাদের ক্ষুব্ধ করে তোলে। এর প্রতিবাদে গত সোমবার বিক্ষোভ শুরু করেন নেপালের হাজার হাজার মানুষ।
বিক্ষোভ দমনে সরকার কঠোর হলে ওই দিন নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ১৯ জন নিহত হন। আহত হন চার শতাধিক। গতকাল মঙ্গলবার এ নিহত বেড়ে ২২ জনে পৌঁছায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাজধানী কাঠমান্ডুসহ বিভিন্ন শহরে কারফিউ জারি করা হয়। সেই কারফিউ ভেঙে গতকাল মঙ্গলবার ভোরেই বিক্ষোভে নামেন শিক্ষার্থীরা।
আবারও সংকটে পড়েছে হিমালয়কন্যা নেপাল। টানা দুই দিনের জেন-জি আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে অন্তত ১৯ জন নিহত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি পদত্যাগ করেছেন। এবার দেশটিতে নতুন সরকার গঠনের দাবি তুলেছেন আন্দোলনকারীরা। গত ১৭ বছরে দেশটিতে ১৩ বার সরকার বদল হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, চলমান এই অস্থিরতা গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে সহিংস। এমনকি ২০০৬ সালের গণআন্দোলনের চেয়েও ভয়াবহ, যখন জনগণের তীব্র বিক্ষোভে নেপালের শেষ রাজা জ্ঞানেদ্র শাহ নির্বাহী ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন। সেই আন্দোলনে অন্তত ১৮ জন নিহত হয়েছিলেন।
এর দুই বছর পর ২০০৮ সালে সংসদের ভোটে নেপালের রাজতন্ত্র বিলুপ্ত হয় এবং নতুন প্রজাতন্ত্রের যাত্রা শুরু হয়।
তবে প্রজাতন্ত্র ঘোষণার পর থেকে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আসেনি দেশটিতে। ২০০৮ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত অর্থাৎ ১৭ বছরে নেপাল ইতোমধ্যেই ১৩ বার সরকার পরিবর্তনের সাক্ষী হয়েছে। ফলে জনগণের মধ্যে হতাশা ক্রমেই বাড়ছে।
কাঠমান্ডুর একজন বিক্ষোভকারী বলেন, আমরা ভেবেছিলাম রাজতন্ত্র শেষ হলে দেশে স্থিতিশীলতা আসবে। কিন্তু বছর ঘুরে বছর শুধু দুর্নীতি, দলবাজি আর ক্ষমতার লড়াই বেড়েছে।
রাজতন্ত্র শেষ হওয়ার পরও দেশে একাংশ এখনো রাজতন্ত্র পুনর্বহালের পক্ষে সক্রিয়। চলতি বছরের মার্চে কাঠমান্ডুতে রাজতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে আয়োজিত এক সমাবেশে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে দুইজন নিহত হন।
আল-জাজিরা বলছে, অলি পদত্যাগ করলেও রাজনৈতিক সমাধান সহজ নয়। আন্দোলনকারীরা সরকারের বিলুপ্তি দাবি করলে তা দেশটিকে আরও অনিশ্চয়তায় ঠেলে দিতে পারে। বিশ্লেষকদের মতে, দ্রুত নতুন নেতৃত্ব ও কার্যকর রাজনৈতিক সমঝোতা না এলে নেপাল আবারও দীর্ঘমেয়াদি অস্থিতিশীলতার মুখে পড়তে পারে।
নেপালে জেন জি আন্দোলন অবশেষে পতন হলো কে পি শর্মা অলির সরকারের। মাত্র দুদিনের বিক্ষোভেই পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। কিন্তু তার এই ক্ষমতাচ্যুতি আচমকা কোনো ঘটনা নয়। প্রতিবেশী বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কায় সরকার পতনের আন্দোলন থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই এমন কঠোর আন্দোলনে নেমেছিলেন নেপালের তরুণরা।
দুর্নীতি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের প্রতিবাদে সোমবারের বিক্ষোভে বিপুলসংখ্যক তরুণ অংশ নেন, যাদের মধ্যে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরাও ছিলেন। আন্দোলনের অংশগ্রহণকারীদের দাবি, এটি ছিল এক অভূতপূর্ব সমাবেশ, যেখানে কোনো রাজনৈতিক দলের প্রত্যক্ষ প্রভাব চোখে পড়েনি।
প্রতিবাদে অংশ নেওয়া আয়ুষ বাসায়াল নামের ২৭ বছর বয়সি এক স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী বলেন, আন্দোলনে বিশাল জনসমাগম হলেও কিছু সংগঠিত লোক মোটরসাইকেল নিয়ে ভিড়ের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে এবং তারা পার্লামেন্ট ভবনের দিকে এগিয়ে যায়।
২০ বছর বয়সি শিক্ষার্থী সুদী মহাতো জানান, দুপুরের পর পরিস্থিতি অস্থির হয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীদের ওপর টিয়ারগ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়া হয়, অনেকে পাশের গলিতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন।
দুর্নীতি ও হতাশা থেকে ক্ষোভের বিস্ফোরণ
কয়েক বছর ধরে দুর্নীতির নানা ঘটনা নেপালের পার্লামেন্ট ও জনসমাজে আলোচিত হলেও কার্যকর সমাধান হয়নি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ২০১৭ সালের এয়ারবাস চুক্তি, যাতে নেপাল এয়ারলাইনস দুটি এ-৩৩০ উড়োজাহাজ কিনে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে প্রায় ১ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন রুপি ক্ষতি করে। পাঁচ বছর তদন্ত শেষে কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা দোষী সাব্যস্ত হলেও জনঅসন্তোষ দূর হয়নি।
অংশগ্রহণকারীদের মতে, কর প্রদান করলেও তার সঠিক ব্যবহার নেই—এমন অভিযোগ তরুণদের ক্ষোভ আরও বাড়িয়েছে।
বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার আন্দোলন অনুপ্রেরণা
প্রতিবাদকারীরা বলছেন, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কায় সাম্প্রতিক সরকার পতনের আন্দোলন থেকে নেপালের তরুণরা অনুপ্রেরণা পেয়েছেন। ২০২২ সালে শ্রীলঙ্কা ও ২০২৪ সালে বাংলাদেশে তরুণদের নেতৃত্বে গণআন্দোলন সরকারকে পতন ঘটায়। একইসঙ্গে ফিলিপাইনে রাজনীতিবিদদের সন্তানদের বিলাসবহুল জীবনের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া নেপালের তরুণদের ক্ষোভ আরও উসকে দেয়।
এছাড়া, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নেপালি রাজনীতিবিদদের সন্তানদের বিলাসী জীবনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে বঞ্চনার অনুভূতি গভীর হয়। যেখানে দেশের মাথাপিছু আয় মাত্র ১ হাজার ৩০০ ডলার, সেখানে এ বৈষম্য তরুণদের ক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধে ক্ষোভ দ্বিগুণ
গত ৪ সেপ্টেম্বর নেপাল সরকার ফেসবুকসহ কয়েকটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের ঘোষণা দেয়। এতে আগেই ক্ষুব্ধ তরুণদের ক্ষোভ আরও বেড়ে যায়।
পোখারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক যোগ রাজ লামিছানে বলেন, এই আন্দোলনের কেন্দ্রে রয়েছে ন্যায়, জবাবদিহি ও ন্যায্যতার দাবি। তরুণরা দীর্ঘদিন ধরে উপেক্ষিত, আর সরকারের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত তাদের হতাশাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
আন্দোলনে সরকারের পতন
২০১৫ সালে যুব আন্দোলন হিসেবে যাত্রা শুরু করা সংগঠন ‘হামি নেপাল’ সোমবারের বিক্ষোভ আয়োজন করে। কাঠমান্ডু জেলা প্রশাসন দপ্তরের অনুমতি নিয়েই তারা এ কর্মসূচি পালন করে।
তবে বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্টে ভবনের প্রাঙ্গণে প্রবেশের চেষ্টা করলে পরিস্থিতি সহিংস হয়ে ওঠে। এসময় পুলিশ গুলি চালালে অন্তত ১৯ জন নিহত হন, আহত হন পাঁচ শতাধিক মানুষ। এতে আন্দোলন আরও তীব্র হয়ে ওঠে।
শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার পদত্যাগের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি।
নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির পদত্যাগের খবর ছড়িয়ে পড়তেই আন্দোলনকারীদের মধ্যে বিজয়োল্লাস দেখা গেছে। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়ার পরপরই উৎসবমুখর হয়ে ওঠে রাজধানী কাঠমান্ডুসহ পুরো দেশ।
মঙ্গলবার বিক্ষোভকারীরা আবারও কাঠমান্ডুর ফেডারেল পার্লামেন্ট ভবনে প্রবেশ করে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, তারা পার্লামেন্ট প্রাঙ্গণের ভেতরের কিছু অংশ ভেঙে প্রবেশ করে এবং সেখানেই ‘বিজয় পতাকা’ ওড়ান।
নেপালের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে বিবেচিত পার্লামেন্ট ভবন এখন আন্দোলনের প্রতীকী স্থানে পরিণত হয়েছে।
এর আগে, গত সোমবার সংঘর্ষ চরমে পৌঁছালে নিরাপত্তা বাহিনী গুলি চালায়। ওইদিন অন্তত ১৯ জন নিহত এবং প্রায় ৫০০ জন আহত হন। আহতদের অনেকেই গুলিবিদ্ধ অবস্থায় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় কাঠমান্ডুসহ বিভিন্ন শহরে কারফিউ জারি করে প্রশাসন। কিন্তু তার পরোয়া না করেই মঙ্গলবার আবারও রাস্তায় নেমে আসে নেপালের ছাত্র-জনতা। আর তাতেই ক্ষমতাচ্যুত হন প্রধানমন্ত্রী ওলি।
প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দিনও নিহত ২
নেপালে জেন জি আন্দোলনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২১ জনে দাঁড়িয়েছে। মঙ্গলবার নতুন করে আরও দুইজন প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানিয়েছেন কাঠমান্ডুর সিভিল সার্ভিস হাসপাতালের নির্বাহী পরিচালক মোহন রেজমি। তিনি জানান, শুধু এই হাসপাতালেই বর্তমানে ৯০ জন আহত চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এর আগে, গত সোমবার পার্লামেন্ট ভবনের সামনে তুমুল সংঘর্ষে ১৯ জন নিহত এবং কয়েকশ মানুষ আহত হন।
বিক্ষোভকারীরা দুর্নীতি, সরকারবিরোধী নিপীড়ন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকারের নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে রাস্তায় নামেন। নিরাপত্তা বাহিনী জলকামান, টিয়ার গ্যাস, রাবার বুলেট এবং গুলি ব্যবহার করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা চালায়। বিভিন্ন শহরে জারি করা হয় কারফিউ।
তবে আন্দোলনকারীরা দমে না গিয়ে মঙ্গলবারও বিক্ষোভ চালিয়ে যান। চাপের মুখে শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি।
ভারত সীমান্তে উচ্চ সতর্কতা
নেপালে টানা বিক্ষোভ ও সহিংসতার মুখে পদত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি। দেশে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ ও দুর্নীতির প্রতিবাদে বিক্ষোভ চলাকালীন ১৯ জন নিহত হওয়ার পর মঙ্গলবার দুপুরে তিনি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। এরপরই গুঞ্জন উঠেছে তিনি সম্ভবত পালিয়ে দুবাই অথবা ভারতে আশ্রয় নেবেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়। খবরে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী ওলি দেশ ছাড়তে পারেন; এমন পরিস্থিতিতে নেপাল সীমান্তে উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার কাঠমান্ডুসহ বিভিন্ন শহরে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো কারফিউ অমান্য করে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্টের দপ্তর, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ও সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনায় ভাঙচুর চালায়। কোথাও কোথাও আগুনও ধরিয়ে দেওয়া হয়।
রাজধানীর পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে প্রশাসন হিমশিম খেয়ে পড়ে। নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হলেও উত্তেজনা কমেনি। সাধারণ মানুষের ভোগান্তিও বাড়ছে। দোকানপাট বন্ধ, গণপরিবহন অচল—সব মিলিয়ে নেপালের দৈনন্দিন জীবন থমকে গেছে।
অলির পদত্যাগের পর থেকেই শুরু হয়েছে নতুন জল্পনা। দেশজুড়ে গুঞ্জন, সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী যে কোনো সময় নেপাল ছেড়ে পালিয়ে যেতে পারেন। রাজনৈতিক মহলেও এই আশঙ্কা ঘুরে বেড়াচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সব ধরনের উড্ডয়ন ও অবতরণ বাতিল করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
তবে এর মধ্যেই দুটি ফ্লাইট থাইল্যান্ড ও চীনের উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। অলির নাম যাত্রী তালিকায় ছিল কি না—তা নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। এতে গুঞ্জন আরও জোরালো হয়েছে। অনেকেই বলছেন, দেশ ছাড়তে হলে অলি ভিন্ন পথে বা গোপন ব্যবস্থায় বেরিয়ে যেতে পারেন।
অন্যদিকে প্রতিবেশী ভারতও পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। নয়াদিল্লি আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নেপালে প্রাণহানির ঘটনায় তারা উদ্বিগ্ন। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, নেপাল ভারতের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও প্রতিবেশী—তাই আশা করা হচ্ছে সব পক্ষ সংযম প্রদর্শন করবে এবং শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খুঁজবে।
ভারত নেপালে অবস্থানরত নিজেদের নাগরিকদেরও সতর্ক থাকতে বলেছে। তাদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশ মেনে চলতে এবং অযথা ভ্রমণ এড়িয়ে চলতে।
এরই মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের পানিটাঙ্কি সীমান্ত এলাকায় কড়া সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সীমান্তজুড়ে অতিরিক্ত পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ সুপার প্রবীণ প্রকাশ জানিয়েছেন, সীমান্তে তল্লাশি চৌকি বসানো হয়েছে। সীমান্ত পারাপার ও চলাচল নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
সব মিলিয়ে নেপালের রাজনৈতিক সংকট এখন শুধু অভ্যন্তরীণ অশান্তি নয়, আঞ্চলিক উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে। অলি আসলেই দেশ ছাড়বেন কি না—এই প্রশ্ন ঘিরে চরম অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। আর সেই অনিশ্চয়তাই ভারত-নেপাল সীমান্তকে করে তুলেছে আরও স্পর্শকাতর।
কেপি শর্মা অলিকে ‘হিটলার’ আখ্যা দিলেন বিক্ষোভকারীরা
নেপালের সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলিকে হিটলারের সঙ্গে তুলনা করেছেন বিক্ষোভকারীরা। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানায় কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
বিষ্ণু থাপা ছেত্রি নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, দেশের লাগামহীন দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে এসেছি। আমাদের দেশের পরিস্থিতির এতই অবনতি হয়েছে যে, তরুণদের এখানে আর থাকার পরিবেশ নেই।
বিষ্ণু থাপা ছেত্রি বলেন, আমাদের দাবি ও আকাঙ্ক্ষা হলো শান্তি প্রতিষ্ঠা করা এবং দুর্নীতির অবসান ঘটানো। যাতে করে মানুষ আসলে দেশে কাজ করতে এবং বসবাস করতে পারে।
নারায়ন আচার্য নামের এক বিক্ষোভকারী বলেন, আমাদের সহপাঠীদেরকে নির্বিচারে খুন করায় আমরা বিক্ষোভ করছি। আমরা এখানে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা এবং বর্তমান সরকারকে উৎখাতের দাবি নিয়ে এসেছি। তরুণ শিক্ষার্থীদের খুনের প্রতিবাদ করা উচিত।
কেপি শর্মার সরকারকে হিটলারের সঙ্গে তুলনা করে দুরগানাহ দালাল নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, এই সরকার যতদিন ক্ষমতায় থাকবে ততদিন আমাদের মতো সাধারণ মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হবে।
নেপালে প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলির পদত্যাগের পর আন্দোলনরত জেন জি বিক্ষোভকারীদের মধ্যে নতুন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছেন কাঠমান্ডুর মেয়র বালেন্দ্র শাহ। তিনি সবার কাছে ‘বালেন শাহ’ নামেই পরিচিত। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এরই মধ্যে তাকে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী করার দাবিও ছড়িয়ে পড়েছে।
কে এই বালেন্দ্র শাহ?
বালেন্দ্র শাহর জন্ম ১৯৯০ সালের ২৭ এপ্রিল। তিনি পেশায় একজন স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার, একই সঙ্গে র্যাপার, গীতিকার, কবি ও রাজনীতিক। ২০২২ সালের স্থানীয় নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে কাঠমান্ডুর মেয়র নির্বাচিত হন বালেন্দ্র শাহ, যা নেপালের ইতিহাসে প্রথম।
রাজনীতিতে আসার আগে তিনি নেপালের হিপহপ ঘরানার সংগীতশিল্পী হিসেবে জনপ্রিয়তা পান। ২০১৩ সালে ইউটিউব সিরিজ ‘র বার্জ’–এ অংশ নিয়ে আলোচনায় আসেন। প্রকৌশলে পড়াশোনা শেষে স্থানীয় সরকারে যোগ দেন এবং দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেন।
মেয়র হিসেবে অবদান
মেয়র হওয়ার পর থেকেই বালেন্দ্র শাহ বেশ কিছু সাহসী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনায় আসেন। যেমন-
* সিটি কাউন্সিলের সভা সরাসরি সম্প্রচার শুরু করেন।
* অবৈধ স্থাপনা ভাঙার উদ্যোগ নেন, যদিও এ নিয়ে আদালত ও সরকারি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিরোধ তৈরি হয়।
* কাঠমান্ডুর ময়লা-আবর্জনা সংকট সমাধানে সরাসরি বেসরকারি সংস্থাকে কাজে লাগান।
* নদী দখলমুক্ত করার অভিযানে ঝাঁপিয়ে পড়েন।
বিক্ষোভে সমর্থন
জেন জি আন্দোলনের শুরু থেকেই তরুণ প্রজন্মের পাশে ছিলেন বালেন্দ্র শাহ। প্রধানমন্ত্রী ওলির পদত্যাগের পর তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বার্তায় বিক্ষোভকারীদের সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
মেয়র বলেন, প্রিয় জেন জি, সরকারের পদত্যাগের দাবি পূরণ হয়েছে। এখন সংযত হওয়ার সময়। দেশের সম্পদ নষ্ট হওয়া মানে আমাদেরই ক্ষতি। নতুন প্রজন্মের দায়িত্ব নেপালের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব গঠন করা।
তিনি আরও জানান, সেনাপ্রধানের সঙ্গে আলোচনার সম্ভাবনা আছে। তবে তা কেবল পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার পরই হতে পারে।
কেন আলোচনায়?
ওলির পদত্যাগের পর দেশজুড়ে অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্ব কে দেবেন, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আস্থাহীন তরুণ প্রজন্ম এখন বিকল্প নেতৃত্বের প্রতীক হিসেবে বালেন্দ্র শাহকে সামনে আনছে। তার জনপ্রিয়তা, সাহসী পদক্ষেপ এবং রাজনৈতিক দলগুলোর বাইরে থেকে উঠে আসা পরিচয় তাকে এ মুহূর্তে সবচেয়ে আলোচিত নাম বানিয়েছে।
মন্তব্য