যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ফার্স্ট লেডি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তার শরীরে কোভিড-১৯-এর মৃদু লক্ষণ দেখা গিয়েছিল।
হিলারি ক্লিনটন এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘আমার কোভিড টেস্টে পজিটিভ এসেছে। মৃদু উপসর্গ রয়েছে, কিন্তু আমি ভালোই আছি।’
এ সময় তিনি জানান, গুরুতর অসুস্থতা এড়াতে টিকার ভূমিকার জন্য আগের থেকে তিনি আরও বেশি কৃতজ্ঞ। এ সময় সবাইকে টিকা নেয়ার আহ্বানও জানান তিনি।
অপর একটি টুইটে তিনি জানান, বিল ক্লিনটনের (যুক্তরাষ্ট্রের ৪২তম প্রেসিডেন্ট) কোভিড টেস্টে নেগেটিভ এসেছে এবং তিনি ভালো আছেন। কোয়ারেন্টিনে আছেন। সবাইকে তিনি এ সময় কোয়ারেন্টিনে দেখার জন্য ভালো চলচ্চিত্রের পরামর্শ চান। এ সময় হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জেন সাকি তাকে নেটফ্লিক্সের টিভি সিরিজ ‘ইনভেন্টিং আনা’ দেখার পরামর্শ দেন। শুধু তা-ই নয়, এ সময় সাকি তাকে প্রচুর পানি, চা ও জুস পান করার পরামর্শ দেন।
গত মঙ্গলবার জেন সাকিও কোভিড পজিটিভ শনাক্তের বিষয়টি জানান। তিনিও কোয়ারেন্টিনে আছেন।
Well, I've tested positive for COVID. I've got some mild cold symptoms but am feeling fine. I'm more grateful than ever for the protection vaccines can provide against serious illness. Please get vaccinated and boosted if you haven't already!
— Hillary Clinton (@HillaryClinton) March 22, 2022
কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রোকে নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্বব্যাপী মাদক ব্যবসায় ভূমিকা রাখার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এছাড়া নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছেন পেত্রোর স্ত্রী, পুত্র ও কলম্বিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট এক বিবৃতিতে বলেন, গুস্তাভো পেত্রো ক্ষমতায় আসার পর থেকে কলম্বিয়ায় কোকেন উৎপাদন কয়েক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে যা যুক্তরাষ্ট্রে ছড়িয়ে পড়ে আমেরিকানদের ক্ষতি করছে।
নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়ায় প্রেসিডেন্ট পেত্রো সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ জানান, তিনি একজন মার্কিন আইনজীবী নিয়োগ করেছেন এবং নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে লড়বেন। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মাদকবিরোধী লড়াই করার ফলেই এমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এটা এক অদ্ভুত পরিহাস; কিন্তু আমরা কখনো পিছু হটব না।
মাদকবিরোধী অভিযানের নামে সম্প্রতি দক্ষিণ ক্যারিবীয় উপকূলীয় অঞ্চলে সামরিক তৎপরতা বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। উপকূলীয় অঞ্চল থেকে মাদক চোরাচালানের অভিযোগে অনেককে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। ফলে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে পেত্রোর সরকার ও মার্কিন প্রশাসনের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে।
পেত্রো যুক্তরাষ্ট্রের মাদকবাহী নৌকায় বিমান হামলার কড়া সমালোচনা করে মার্কিনীদের খুনি বলে অভিহিত করেন। তিনি দাবি করেন, এসব নৌকার কিছুতে নিরীহ কলম্বিয়ান নাগরিক ছিলেন। গত দুই মাসে ক্যারিবীয় সাগরে অন্তত দুটি মার্কিন হামলায় কলম্বিয়ার নাগরিক নিহত ও আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
টিভিতে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী বিজ্ঞাপনের জন্য কানাডার ওপর ক্ষেপেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প! ফলে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে দুই দেশের বাণিজ্য আলোচনা। এ অবস্থায় সেই বিতর্কিত বিজ্ঞাপনটি সরিয়ে নিচ্ছে কানাডীয় প্রশাসন।
কানাডার সবচেয়ে জনবহুল প্রদেশ অন্টারিওর প্রধান ডগ ফোর্ড জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা ফের শুরু করার লক্ষ্যে তিনি সেই বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধ করবেন।
গত শুক্রবার ফোর্ড জানান, কানাডীয় প্রধানমন্ত্রী মার্ক কারনির সঙ্গে আলোচনার পর সোমবার থেকে বিজ্ঞাপন প্রচার স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
ওই বিজ্ঞাপনে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগানের ১৯৮৭ সালের এক বক্তব্য ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতির সমালোচনা করা হয়েছিল।
ট্রাম্প গত বৃহস্পতিবার এক পোস্টে অভিযোগ করেন, রিগান ফাউন্ডেশন ঘোষণা করেছে, কানাডা ভুয়া উপায়ে একটি বিজ্ঞাপনে রোনাল্ড রিগানের বক্তব্য ব্যবহার করেছে, যেখানে তিনি শুল্ক নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন।
এরপর গত শুক্রবার ট্রাম্প আরও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অন্টারিও সরকারের অর্থায়নে প্রচারিত ওই বিজ্ঞাপন কানাডার পক্ষ থেকে তার বৈশ্বিক শুল্কনীতি বিষয়ে আসন্ন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের রায় প্রভাবিত করার চেষ্টা। এ সময় কানাডার সঙ্গে সব বাণিজ্য আলোচনা বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন তিনি।
অন্টারিও সরকার জানিয়েছে, প্রায় সাড়ে সাত কোটি কানাডীয় ডলার ব্যয়ে বিজ্ঞাপনটি যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচার করা হয়েছে। বিজ্ঞাপনটিতে ১৯৮৭ সালে রিগানের শুল্কবিরোধী রেডিও ভাষণের অংশ দেখানো হয়।
যদিও ডগ ফোর্ড বলেন, আমরা আমাদের লক্ষ্য অর্জন করেছি। যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত বার্তা পৌঁছে দিতে পেরেছি। তিনি আরও জানান, সপ্তাহান্তে বিজ্ঞাপনটি চলবে, বিশেষত টরন্টো ব্লু জেস ও লস অ্যাঞ্জেলেস ডজার্সের মধ্যে অনুষ্ঠিতব্য ওয়ার্ল্ড সিরিজের প্রথম দুটি ম্যাচের বিরতিতে।
কিন্তু ট্রাম্পের ক্ষোভে এরই মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্কের টানাপোড়েন আরও বেড়েছে। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র কুশ দেশাই বলেন, অন্টারিওর বিজ্ঞাপনটি বিভ্রান্তিকরভাবে রিগানের ভাষণ ব্যবহার করেছে। কানাডা আলোচনায় আগ্রহী নয়, তারা কেবল রাজনৈতিক খেলা খেলছে।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী মার্ক কারনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নীতির পরিবর্তনকে মাথায় রেখে তার সরকার দেশটির বাইরের বাজারে রপ্তানি দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা নিয়েছে। তিনি বলেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যনীতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। আমাদের যা নিয়ন্ত্রণে আছে, সেদিকেই মনোযোগ দিতে হবে।
ফোর্ড ও কারনি রাজনৈতিকভাবে ভিন্ন আদর্শের হলেও উভয়ে বর্তমান শুল্কনীতিকে কানাডার অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর বলে মনে করেন।
তবে কানাডার রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই বিজ্ঞাপন আসলে উল্টো ফল দিয়েছে। ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড্যানিয়েল বেলান্দ মন্তব্য করেন, বিজ্ঞাপনটি বড় ধরনের কূটনৈতিক ভুল। এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে উত্তেজিত করে সম্পর্ক আরও খারাপ করেছে।
কানাডার সাবেক মন্ত্রী জেসন কেনি বলেন, অন্টারিওর বিজ্ঞাপনটি রিগানের বক্তব্যকে বিকৃত করেনি, বরং হুবহু পুনঃপ্রচার করেছে। রিগান ফাউন্ডেশনের বর্তমান নেতৃত্ব হোয়াইট হাউসের চাপে নতি স্বীকার করছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের রক্ষণশীল রাজনীতিতে ট্রাম্পের ক্ষতিকর প্রভাবের আরেকটি দৃষ্টান্ত।
অন্যদিকে ম্যানিটোবা প্রিমিয়ার ওয়াব কিনু ও ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার প্রধান ডেভিড এবি ফোর্ডের পাশে দাঁড়িয়েছেন। কিনু বলেন, যদি আপনি হ্রদে পাথর ছুড়ে দেন আর কোনো ছিটা না ওঠে, বুঝতে হবে আপনি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়েছেন। বিজ্ঞাপনটি কাজ করছে বলেই ট্রাম্প এতটা ক্ষুব্ধ।
বন্দি হস্তান্তর করছে হামাস। ছবি: সংগৃহীত
গাজা উপত্যকায় হামাসকে নিশ্চিহ্ন করতে অন্তত চারটি বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে বিভিন্নভাবে সমর্থন ও সহায়তা দিচ্ছে ইসরায়েল। শনিবার যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজ প্রকাশিত এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। গাজায় সর্বশেষ গঠিত একটি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নেতা হুসাম আল-আস্তাল স্কাই নিউজে বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
আস্তাল জানান, ‘প্রজেক্ট নিউ গাজা’ নামে একটি পরিকল্পনার আওতায় চারটি বিদ্রোহী গ্রুপ একযোগে কাজ করছে। এসব গ্রুপের লক্ষ্য গাজা থেকে হামাসের শাসন অপসারণ। তিনি আরও দাবি করেন, এই উদ্যোগে অন্য নেতাদের মধ্যে ইয়াসের আবু শাবাব ও আশরাফ আল-মানসিও যুক্ত হয়েছেন।
স্কাই নিউজের তথ্যমতে, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ)-এর পোস্ট থেকে মাত্র ৭০০ মিটার দূরে গাজা সীমান্তের ইয়েলো লাইন এলাকায় আস্তালের সদরদপ্তর অবস্থিত। আইডিএফ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমন্বয়ে একটি ‘গ্রিন জোন’ চুক্তি হয়েছে। গ্রিন জোন এলাকায় কোনো গোলাগুলি বা বিমান হামলা চালানো হবে না বলে নিশ্চয়তা দিয়েছে আইডিএফ।
প্রচারিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, আস্তালের ব্যবহৃত কিছু গাড়িতে হিব্রু লেখা ছিল যা পরে মুছে ফেলা হয়েছে। তিনি বলেন, এসব যানবাহন গাজার বাইরে থেকে আনা হয়েছে এবং তারা কালোবাজার থেকে হামাসের কিছু অস্ত্রও কিনেছে।
স্কাই নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আবু শাবাব বিদ্রোহী গোষ্ঠীর এক সদস্য দাবি করেছেন, ইসরায়েল তাদের অস্ত্র, নগদ অর্থ ও যানবাহন গোপনে গাজায় আনতে সহায়তা করেছে। অন্য দুটি গোষ্ঠীও নাকি একই ধরনের সহায়তা পেয়েছে।
তবে আল-মানসি সংগঠনের নেতারা আইডিএফের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের কথা অস্বীকার করে জানিয়েছেন, তারা শুধু জেলা অফিসের মাধ্যমে সমন্বয় করে থাকে যা ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের অধীনে পরিচালিত হয়।
গাজায় নতুন বেসামরিক প্রধান নিয়োগ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতি কার্যকর ও টেকসইভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এক অভিজ্ঞ কূটনীতিককে নতুন বেসামরিক প্রধান হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বেসামরিক প্রধান হিসেবে স্টিভ ফ্যাগিন এই দায়িত্ব পালন করবেন।
ফ্যাগিন যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট জেনারেল প্যাট্রিক ফ্র্যাঙ্কের সঙ্গে কাজ করবেন। প্যাট্রিক ইতোমধ্যেই ‘সিভিল-মিলিটারি কোঅর্ডিনেশন সেন্টারের’ সামরিক প্রধান হিসেবে দায়িত্বে আছেন। অক্টোবরের ১০ তারিখে যুদ্ধবিরতির হওয়ার পর ১৭ অক্টোবর ইসরায়েলে এই কেন্দ্রটি স্থাপন করা হয়েছে। এ কেন্দ্রটির কাজ হলো যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন পর্যবেক্ষণ এবং গাজায় ত্রাণ সরবরাহসহ অন্যান্য লজিস্টিক কার্যক্রমের মধ্যে সমন্বয় সাধন করা।
জানা গেছে, প্রায় ২০০ মার্কিন সেনা বর্তমানে কেন্দ্রটিতে কাজ করছেন। সেখানে ইসরায়েল, ইউরোপীয় দেশগুলো, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জর্ডান, জাতিসংঘ ও বিভিন্ন ত্রাণ সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে একযোগে কাজ করছেন মার্কিন সেনারা।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও গত শুক্রবার কেন্দ্রটি পরিদর্শন করেছেন। তিনি এ পদক্ষেপকে ঐতিহাসিক উদ্যোগ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, এই প্রক্রিয়ায় উত্থান-পতন থাকবে। তবে এখন পর্যন্ত অগ্রগতি নিয়ে আমাদের যথেষ্ট আশাবাদী।
স্টিভ ফ্যাগিন দীর্ঘদিন ধরে মধ্যপ্রাচ্যে কাজ করছেন। ২০২২ সাল থেকে তিনি ইয়েমেনে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
সম্প্রতি ফ্যাগিন একই সঙ্গে ইয়েমেনের রাষ্ট্রদূতের পাশাপাশি ইরাকের বাগদাদে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কূটনীতিক হিসেবেও তিন মাস দায়িত্ব পালন করেছেন।
নিরপেক্ষ প্রশাসনের হাতে ক্ষমতা দিতে একমত হামাস-ফাতাহ
যুদ্ধবিরতির পর গাজার অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত নিরপেক্ষ প্রশাসনিক কমিটি গঠনে সম্মত হয়েছে ফিলিস্তিনের প্রধান রাজনৈতিক সংগঠনগুলো। নিরপেক্ষ এ প্রশাসনের হাতে গাজা পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়ে একমত হয়েছে হামাস, ফাতাহসহ অন্যান্য মুক্তিকামী সংগঠন।
গত শুক্রবার কায়রোতে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে হামাসের ওয়েবসাইটে যৌথ বিবৃতি দেওয়া হয়েছে।
সংবাদ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকা পরিচালনার দায়িত্ব একটি অস্থায়ী নিরপেক্ষ প্রশাসনিক কমিটির কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ প্রশাসনিক কমিটি আরব দেশগুলো ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সহযোগিতায় গাজায় মৌলিক সেবা পরিচালনা করবে।
এছাড়া যৌথ বিবৃতিতে জাতীয় লক্ষ্যকে সামনে রেখে সকল দলের ঐক্যবদ্ধ অবস্থান গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়। দলগুলো ফিলিস্তিন মুক্তি সংস্থা (পিএলও) পুনরুজ্জীবনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি জনগণের একমাত্র বৈধ প্রতিনিধি হিসেবে তার ভূমিকা শক্তিশালী করার আহ্বান জানিয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে পশ্চিম তীরের নেতৃত্ব দিয়ে আসছে পিএলও- ফাতাহ। এ সংগঠনের সঙ্গে আদর্শ ছাড়াও রাজনৈতিক বিরোধ রয়েছে হামাসের। তবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে কায়রোতে হামাস ও ফাতাহ প্রতিনিধিদলের মধ্যে মার্কিন সমর্থিত গাজা যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। উভয় পক্ষ ভবিষ্যতেও বৈঠক চালিয়ে যাওয়ার এবং ইসরায়েলি সরকারের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ফিলিস্তিনি অভ্যন্তরীণ ঐক্য জোরদার করার বিষয়ে একমত হয়েছে।
এই বিষয়ে হামাসের মিত্র ইসলামিক জিহাদসহ পিএলও-ভুক্ত গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট ও পপুলার ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অব ফিলিস্তিনের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন মিসরের গোয়েন্দা প্রধান হাসান রাশাদ।
২০০৬ সালের নির্বাচনের পর হামাস ও ফাতাহর রাজনৈতিক বিরোধ একসময় সংঘর্ষে রূপ নেয়। এ সংঘর্ষ দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তিনি ঐক্যের পথে প্রধান বাধা হয়ে দাড়িয়েছিল। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে উভয় দল যুদ্ধ পরবর্তী গাজা প্রশাসনের জন্য একটি যৌথ কমিটি গঠনে সম্মত হয়েছে।
২০০৭ সালে গাজার নিয়ন্ত্রণ নেওয়া হামাস আগেই জানিয়েছে যে, তারা যুদ্ধোত্তর গাজার প্রশাসন চালাতে আগ্রহী নয়। তবে সংগঠনের যোদ্ধাদের নিরস্ত্র করার বিরোধিতা করছে হামাস।
বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন বলেছেন, ঢাকা–ওয়াশিংটন অংশীদারিত্বকে আরও এগিয়ে নিতে তিনি কাজ করবেন। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার এবং ভবিষ্যতে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে তিনি অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন।
বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটন ডিসিতে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট পররাষ্ট্র সম্পর্ক বিষয়ক কমিটিতে নিজের মনোনয়ন শুনানিতে অংশ নেন ক্রিস্টেনসেন। শুনানির উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি বলেন,
“যদি অনুমোদন পাই, তাহলে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের দলকে নেতৃত্ব দিয়ে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার এবং ভবিষ্যতের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে দৃঢ় সম্পর্ক গড়ে তুলব, যাতে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হয়।”
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের উজ্জ্বল ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের পথে যাত্রায় যুক্তরাষ্ট্র পাশে থাকবে।
ক্রিস্টেনসেন বলেন, “২০২৪ সালের আগস্টে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে আন্দোলনের মাধ্যমে ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা একটি সরকারের পতন ঘটে। আগামী বছরের শুরুতে বাংলাদেশের জনগণ ভোটের মাধ্যমে নতুন সরকার ও নতুন পথ বেছে নেবে—যা হবে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন।”
ভার্জিনিয়ার বাসিন্দা ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন যুক্তরাষ্ট্রের সিনিয়র ফরেন সার্ভিসের একজন ক্যারিয়ার সদস্য। অনুমোদন পেলে তিনি বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাম্বাসাডর এক্সট্রাঅর্ডিনারি অ্যান্ড প্লেনিপোটেনশিয়ারি হিসেবে দায়িত্ব নেবেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের কৌশলগত অবস্থানের কারণে দেশটি একটি উন্মুক্ত, নিরাপদ ও সমৃদ্ধ ইন্দো–প্যাসিফিক অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।
নিজের অভিজ্ঞতার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমার ফরেন সার্ভিস জীবনে বাংলাদেশ–সংক্রান্ত মার্কিন নীতি নিয়ে ২০ বছরেরও বেশি সময় কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে, যার মধ্যে ঢাকায় আমার পূর্ববর্তী দায়িত্ব পালনও অন্তর্ভুক্ত। তাই আমি বাংলাদেশের গুরুত্ব ও এখানে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত।”
বাংলাদেশকে নতুন ‘এশীয় টাইগার’ আখ্যা দিয়ে ক্রিস্টেনসেন বলেন, “অনুমোদন পেলে আমি যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়িক সুযোগ বাড়াতে, বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতা ও বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করতে কাজ করব।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, গত আট বছর ধরে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শরণার্থী জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে আসছে।
“অনুমোদন পেলে আমি বাংলাদেশ সরকার, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সঙ্গে মিলে রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই ও কার্যকর সমাধানে কাজ করব,” বলেন ক্রিস্টেনসেন।
তিনি বলেন, “যদি অনুমোদন পাই, তাহলে বাংলাদেশে রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের দক্ষ নারী–পুরুষদের নেতৃত্ব দেওয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র–বাংলাদেশ অংশীদারিত্বকে আরও এগিয়ে নেওয়া আমার জন্য সম্মানের বিষয় হবে। আজ আমাকে সাক্ষ্য দেওয়ার সুযোগ দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। আমি আপনাদের প্রশ্নের অপেক্ষায় আছি।”
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিষয়ক কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন ব্রেন্ট ক্রিস্টেনসেন।
গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে একটি দাতব্য সংস্থার কাছ থেকে খাবার সংগ্রহ করতে জড়ো হয়েছে ফিলিস্তিনি শিশুরা। ছবি: সংগৃহীত
যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার দুই সপ্তাহ পরও গাজায় ক্ষুধার সংকট বিপর্যয়কর পর্যায়ে আছে বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। বৃহস্পতিবার ডব্লিউএইচওর প্রধান তেদরোস আধানম গেব্রেয়াসুস গাজার মানুষের ক্ষুধা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে এ সতর্কবার্তা দেন।
এদিকে গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা দেওয়া বন্ধ করার জন্য বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থার পক্ষ থেকে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
ত্রাণ সংস্থাগুলো বলেছে, অবরুদ্ধ গাজায় যে পরিমাণ খাদ্যসরবরাহ করা হচ্ছে, তা সেখানকার মানুষের পুষ্টিচাহিদা পূরণের জন্য যথেষ্ট নয়। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) বলেছে, গাজায় প্রতিদিন দুই হাজার টন ত্রাণসহায়তা পৌঁছানোর কথা থাকলেও এর চেয়ে অনেক কম পৌঁছাচ্ছে। এর কারণ, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডটিতে বর্তমানে মাত্র দুটি প্রবেশদ্বার খোলা রয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান গেব্রেয়াসুস বলেন, ‘পরিস্থিতি এখনো বিপর্যয়কর পর্যায়ে আছে। কারণ, যা প্রবেশ করছে, তা একেবারেই যথেষ্ট নয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘পর্যাপ্ত খাদ্য না থাকার কারণে ক্ষুধাজনিত সংকটে কোনো পরিবর্তন আসেনি।’
গত বুধবার জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, গাজার অন্তত এক-চতুর্থাংশ মানুষ প্রচণ্ড রকমের অনাহারে ভুগছেন। এর মধ্যে ১১ হাজার ৫০০ জন অন্তঃসত্ত্বা নারীও আছেন। জাতিসংঘ বলেছে, অপুষ্টিজনিত এ সংকট গাজায় ‘পুরো এক প্রজন্মের ওপর’ ভয়াবহ প্রভাব ফেলবে।
জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) উপনির্বাহী পরিচালক অ্যান্ড্রু স্যাবারটন গত বুধবার বলেন, গাজায় এখন নবজাতকদের ৭০ শতাংশই অপরিণত অবস্থায় বা কম ওজন নিয়ে জন্ম নিচ্ছে। ২০২৩ সালের অক্টোবরের আগে এ হার ছিল ২০ শতাংশ।
স্যাবারটন আরও বলেন, ‘অপুষ্টির প্রভাব শুধু মায়ের ওপর নয়, নবজাতকের ওপরও পড়ে। এ কারণে শিশুটি সারা জীবন দীর্ঘস্থায়ী শারীরিক সমস্যায় ভুগতে পারে এবং তার জন্য দীর্ঘসময় ধরে বিশেষ যত্নের প্রয়োজন হতে পারে।’
গত আগস্টে গাজা শহর ও এর আশপাশের এলাকায় দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করা হয়। ওই সময় ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্ল্যাসিফিকেশন (আইপিসি) বলেছে, গাজা অঞ্চলের পাঁচ লাখের বেশি মানুষ ‘বিপর্যয়কর অবস্থার’ মুখোমুখি।
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ১০ অক্টোবর গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে উপত্যকাটিতে মানবিক সহায়তা প্রবেশের পরিমাণ বাড়ানোর কথা ছিল। সে অনুযায়ী প্রতিদিন প্রায় দুই হাজার টন সহায়তা প্রবেশ করানোর কথা জাতিসংঘের। তবে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি গত মঙ্গলবার বলেছে, প্রতিদিন গাজায় মাত্র প্রায় ৭৫০ মেট্রিক টন খাবার পৌঁছাচ্ছে। কারণ, গাজায় ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণাধীন মাত্র দুটি ক্রসিং চালু আছে। এগুলো হলো, দক্ষিণে কারেম আবু সালেম ও মধ্যাঞ্চলে আল-কারারা ক্রসিং।
ফিলিস্তিনি এনজিও পিএআরসির আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক পরিচালক বাহা জাকুত বলেন, ‘যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার দুই সপ্তাহ পরও গাজা অঞ্চলের পরিস্থিতি বিপর্যয়কর অবস্থায় আছে।’
জাকুত উদাহরণ দিয়ে বলেন যে বাণিজ্যিক ট্রাকে বিস্কুট, চকলেট ও সোডা ঢুকতে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বীজ ও জলপাইয়ের মতো পণ্যগুলো এখনো সীমিত পরিমাণে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে। যেসব পণ্য প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে সেসব শিশু, নারী ও সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় থাকা জনসাধারণের জন্য প্রয়োজনীয় ন্যূনতম পুষ্টিমান পূরণ করে না।
এ কর্মকর্তা আরও বলেন, কিছু ফলমূল ও সবজি গাজায় প্রবেশ করলেও সেগুলোর দাম অত্যন্ত বেশি। এক কেজি টমেটো আগে যেখানে ১ শেকেলে পাওয়া যেত, তা এখন প্রায় ১৫ শেকেলে বিক্রি হচ্ছে।
এরই মধ্যে অক্সফাম, নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিলসহ ৪১টি ত্রাণ সংস্থা গতকাল একটি খোলাচিঠি প্রকাশ করেছে। যেখানে তারা অভিযোগ করেছে, ইসরায়েল অবৈধভাবে গাজায় ত্রাণসামগ্রী প্রবেশে বাধা দিচ্ছে। ইসরায়েল সরকার নিয়মিতভাবে তাদের (সংস্থাগুলোর) মানবিক কার্যক্রম শুরুর আবেদন প্রত্যাখ্যান করছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, গাজায় ত্রাণ বিতরণে ১০ থেকে ২১ অক্টোবরের মধ্যে আন্তর্জাতিক এনজিওগুলোর ৯৯টি আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। নাকচ করা হয়েছে জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর ছয়টি আবেদনও।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে অগ্রহণযোগ্য ঘোষণা করা ত্রাণসামগ্রীর মধ্যে আছে—তাঁবু ও ত্রিপল, কম্বল, গদি, খাদ্য ও পুষ্টিসামগ্রী, স্বাস্থ্য কিট, স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশনের সামগ্রী, সহায়ক যন্ত্রপাতি এবং শিশুদের পোশাক। যুদ্ধবিরতির সময় এসব সামগ্রীর ওপর থেকে সীমাবদ্ধতা তুলে নেওয়া দরকার বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
ডোনাল্ড ট্রাম্প - ফাইল ছবি
ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন এবং তৃতীয়বারের মতো এই পদে অধিষ্ঠিত প্রথম ব্যক্তি হতে পারেন। ট্রাম্পের সাবেক প্রধান রাজনৈতিক কৌশলবিদ এবং উপদেষ্টা স্টিভ ব্যানন এমনটাই বলেছেন।
দ্য ইকোনমিস্টের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে ব্যানন বলেন, ‘তিনি তৃতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হতে চলেছেন। ট্রাম্প ২০২৮ সালে প্রেসিডেন্ট হতে চলেছেন। জনগণকে কেবল এর সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে।’
মার্কিন সংবিধানের ২২তম সংশোধনীতে ১৯৫১ সাল থেকে প্রেসিডেন্টের কার্যকাল দুই মেয়াদের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে সাক্ষাৎকারগ্রহীতার প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্পের সাবেক উপদেষ্টা বলেন, ‘অনেকগুলো বিকল্প রয়েছে। এই বিষয়ে নির্দিষ্ট পদক্ষেপগুলো যথাযথ সময়ে ঘোষণা করা হবে। তার অধীনে আমরা যা শুরু করেছি, তা শেষ করতে হবে।’
ট্রাম্প আর আগে তৃতীয় মেয়াদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সম্ভাবনা উন্মুক্ত রেখেছিলেন। মিডিয়া রিপোর্টে বলা হয়েছিল, তিনি বিচার বিভাগকে ২০২৮ সালের নির্বাচনে নিজের সম্ভাব্য অংশগ্রহণের বৈধতা যাচাই করার নির্দেশ দিয়েছেন।
তবে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসে ট্রাম্প এনবিসি নিউজকে বলেছিলেন, তিনি আর প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছা রাখেন না।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র বা অন্য কোনো বিদেশি শক্তির চাপের কাছে রাশিয়া কখনো নতি স্বীকার করবে না। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, রাশিয়ার গভীরে কোনো সামরিক হামলা হলে দেশটি অপ্রতিরোধ্য ও ভয়াবহ প্রতিক্রিয়া দেখাবে।
গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে পুতিন এই মন্তব্য করেন। এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনে যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়ার দুটি বৃহত্তম তেল কোম্পানির ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। এই পদক্ষেপের ফলে বৃহস্পতিবার বৈশ্বিক তেলের দাম প্রায় ৫ শতাংশ বেড়ে যায় এবং ভারত রুশ তেল আমদানি কমানোর বিষয়টি বিবেচনা করছে।
পুতিন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বিশ্বের নিষেধাজ্ঞাগুলো অবন্ধুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যা কিছু প্রভাব ফেলবে বটে, কিন্তু রাশিয়ার অর্থনৈতিক স্থিতি বা কল্যাণে তা বড় কোনো প্রভাব ফেলবে না। তিনি দাবি করেন, রাশিয়ার জ্বালানি খাত এখনো আত্মবিশ্বাসী ও স্থিতিশীল।
রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, এটি নিঃসন্দেহে রাশিয়ার ওপর চাপ প্রয়োগের চেষ্টা। কিন্তু কোনো সম্মানিত দেশ বা সম্মানিত জনগণ কখনো চাপের মুখে সিদ্ধান্ত নেয় না।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের সঙ্গে রসিকতা করতে গিয়ে পুতিন বলেন, এই নিষেধাজ্ঞার ফলে হয়তো পশ্চিমারা রাশিয়ার টয়লেটও আমদানি করতে পারবে না। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদেও রাশিয়ার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন।
পুতিন আরও সতর্ক করেন, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল রপ্তানিকারক দেশ রাশিয়ার রপ্তানি ব্যাহত হলে তেলের দাম হু-হু করে বেড়ে যাবে, যার প্রভাব মার্কিন বাজার ও জ্বালানি স্টেশনগুলোতেও পড়বে।
যদিও স্বল্পমেয়াদে নতুন নিষেধাজ্ঞাগুলোর অর্থনৈতিক প্রভাব সীমিত হতে পারে, বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ট্রাম্প স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত দিচ্ছেন যে তিনি রাশিয়ার আর্থিক প্রবাহে চাপ তৈরি করে ক্রেমলিনকে যুদ্ধবিরতির দিকে ঠেলে দিতে চান।
তবে ভারত রুশ অপরিশোধিত তেল কেনা বন্ধ করবে কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়।
মন্তব্য