× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

আন্তর্জাতিক
Who are the victims of US Russia reciprocal sanctions?
google_news print-icon

যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার পাল্টাপাল্টি নিষেধাজ্ঞার শিকার কারা?

যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার-পাল্টাপাল্টি-নিষেধাজ্ঞার-শিকার-কারা?
বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলেছেন, বড় ব্যাঙ্কগুলোকে কালো তালিকাভুক্ত করার সিদ্ধান্তের মতো বিধিনিষেধগুলো এমনভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে যাতে এর প্রভাব সরাসরি রাশিয়ার অর্থনীতিতে পড়ে। অন্যান্য বিধিনিষেধ যেমন প্রযুক্তি পণ্যের রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ, রাশিয়ান শিল্প ও প্রতিরক্ষা খাতকে দীর্ঘমেয়াদি সমস্যায় ফেলতে পারে।

ইউক্রেন অভিযানের শাস্তি হিসেবে রাশিয়ার ওপর একের পর এক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার ইউরোপীয় মিত্ররা। রাশিয়ার আর্থিক খাত, বড় কোম্পানি, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তা, রাশিয়ার অভিজাত শ্রেণি ও নর্ড স্ট্রিম টু প্রাকৃতিক গ্যাস পাইপলাইনকে লক্ষ্য করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। জবাব হিসেবে পাল্টা কিছু পদক্ষেপও নিয়েছে রাশিয়া। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদন অবলম্বনে লিখেছেন রুবাইদ ইফতেখার।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোর সরকার রাশিয়ায় আরও নিষেধাজ্ঞার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনে সৈন্য না পাঠানোর ঘোষণা দেয়ার পর রাশিয়ার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা, রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ ও অন্যান্য পদক্ষেপ পশ্চিমা বিশ্বের প্রতিশোধ নেয়ার প্রধান হাতিয়ার হয়ে উঠেছে।

বাইডেনের দাবি ছিল, এসব নিষেধাজ্ঞা রাশিয়াকে পঙ্গু করে দেবে। যুক্তরাষ্ট্রের ইউরোপীয় মিত্ররাও একই পথ অনুসরণ করে ভিন্ন ভিন্ন নিষেধাজ্ঞা দিয়েছ। এ কারণে পশ্চিমা দেশে পণ্য সরবরাহ ও লেনদেনে বিঘ্ন ঘটার সম্ভাবনা এবং কোনো ধরনের বিধিনিষেধ এড়াতে অ্যাপল, বোয়িং এক্সন-মবিল করপোরেশন ও পেপসিকোর মতো বিশ্বখ্যাত কোম্পানিগুলো রাশিয়া থেকে পণ্য প্রত্যাহার করেছে বা দেশটিতে তাদের কার্যক্রম কমিয়ে এনেছে।

রাশিয়ার সামরিক অভিযান চলতে থাকায় প্রাথমিকভাবে তালিকা থেকে বাদ পড়া কিছু সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞার কথাও এখন বিবেচনায় নেয়া হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা বৈশ্বিক ব্যাঙ্কগুলোর সঙ্গে সংযোগকারী আর্থিক অবকাঠামো ব্যবস্থা সুইফ্ট থেকে কয়েকটি রাশিয়ান ব্যাঙ্কের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে সায় দেয়েছে। তারা রাশিয়ার জ্বালানি খাতের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিচ্ছে।

বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলেছেন, বড় ব্যাঙ্কগুলোকে কালো তালিকাভুক্ত করার সিদ্ধান্তের মতো বিধিনিষেধগুলো এমনভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে যাতে এর প্রভাব সরাসরি রাশিয়ার অর্থনীতিতে পড়ে। অন্যান্য বিধিনিষেধ যেমন প্রযুক্তি পণ্যের রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ, রাশিয়ান শিল্প ও প্রতিরক্ষা খাতকে দীর্ঘমেয়াদি সমস্যায় ফেলতে পারে।

তবে উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, রাশিয়া তার তেল ও গ্যাস রপ্তানিকে একটি অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে পারে। কয়েকজন রুশ কর্মকর্তা এমনটাই আভাস দিয়েছেন। এর ফলে জ্বালানি বাজার ব্যাহত হবে ও ইউরোপসহ অন্য ভোক্তাদের জন্য ব্যয় বৃদ্ধি করবে। তবে এমন পদক্ষেপে রাশিয়ার অর্থনৈতিক দুর্দশাও বাড়বে।

সবশেষ নিষেধাজ্ঞা ও বিধিনিষেধগুলো কী?

যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে রাশিয়ার আর্থিক ব্যবস্থা একটি অন্যতম লক্ষ্য। তারা রাশিয়ার জ্বালানি খাতকেও লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে। তারা প্রায় সব দেশের জন্য প্রদত্ত অগ্রাধিকারমূলক, কম শুল্ক বাণিজ্যের মর্যাদা অপসারণের দিকেও তাকিয়ে আছে। মিত্রদের মতে এতে ক্রেমলিনের যুদ্ধ করার ক্ষমতা কমবে।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ রাশিয়ান কেন্দ্রীয় ব্যাংককে রিজার্ভের মজুদে ডলার, ইউরো ও অন্যান্য বৈদেশিক মুদ্রা বিক্রি করতে বাধা দিয়েছে। এটি রুবেলকে স্থিতিশীল করার ও মুদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করেছে। রাশিয়ার সার্বভৌম-সম্পদ তহবিলের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের মাধ্যমে দেশটির বিদেশ থেকে অর্থ সংগ্রহের ক্ষমতাকে সীমিত করে দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র, ইইউ, যুক্তরাজ্য ও কানাডা কয়েকটি রাশিয়ান ব্যাংককে সুইফ্ট নেটওয়ার্ক থেকে সরিয়ে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে, যা ব্যাংকগুলোর বিশ্বব্যাপী পরিচালনার ক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করেছে।

এসবারব্যাংক ও ভিটিবিকে কালো তালিকাভুক্ত

বাইডেন প্রশাসন আমেরিকান নাগরিক ও সংস্থাগুলোকে রাশিয়ার সঙ্গে ঋণের লেনদেন করা থেকেও নিষেধ করেছে। এর মাধ্যমে ক্রেমলিনের মূল তহবিলের উত্স বন্ধ করা হয়েছে।

আমেরিকার ইউরোপীয় মিত্ররাও একই পদক্ষেপ নিচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞা আন্তর্জাতিক আর্থিক বাজারে থেকে রাশিয়ার ৭০ শতাংশ ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা বন্ধ করে দিচ্ছে। ইইউ তার ক্রেডিট-রেটিং সংস্থাগুলোর মাধ্যমে রাশিয়া ও রাশিয়ান সংস্থাগুলির রেটিং ও রাশিয়ান ক্লায়েন্টদের রেটিং পরিসেবাও নিষিদ্ধ করছে৷ যুক্তরাজ্য সরকার বলেছে, তারা রাশিয়ান সরকার ও এর কয়েকটি বড় রাষ্ট্রীয় কোম্পানিকে ঋণ নিতে বাধা দেয়ার আইন পাস করবে।

যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা বিভিন্ন দেশ রাশিয়ায় প্রযুক্তির রপ্তানি সীমিত করেছে। রাশিয়ার মিত্র বেলারুশের কাছেও প্রযুক্তি রপ্তানি করছে না যুক্তরাষ্ট্র।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ রপ্তানি নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা, মহাকাশ ও সামুদ্রিক শিল্পকে টার্গেট করেছে। বিধিনিষেধগুলো সেমিকন্ডাক্টর, কম্পিউটার, টেলিযোগাযোগ, তথ্য-নিরাপত্তা সরঞ্জাম, লেজার ও সেন্সরের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, এই বিধিনিষেধের আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে উত্পাদিত পণ্যের পাশাপাশি আমেরিকান সরঞ্জাম, সফ্টওয়্যার ও ব্লুপ্রিন্ট ব্যবহার করে তৈরি বিদেশি পণ্যগুলোও অন্তর্ভুক্ত। একই কৌশল চীনা টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্কিং সরঞ্জাম প্রস্তুতকারক হুয়াওয়ে টেকনোলজিস কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হয়েছিল।

ইইউ রাশিয়ার কাছে বিমান ও খুচরা যন্ত্রাংশ বিক্রি নিষিদ্ধ করছে। একইসঙ্গে জ্বালানি খাতের কিছু পণ্য বিক্রিও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আমেরিকান কর্মকর্তাদের দাবি, এতে করে রাশিয়ার জন্য তেল শোধনাগারগুলোর আধুনিকায়ন কঠিন হয়ে পড়বে। যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার তেল ও গ্যাস শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় নিষ্কাশন সরঞ্জাম বিক্রি সীমিত করেছে।

ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতিক্রিয়া

আমেরিকান ও ইউরোপীয় নিষেধাজ্ঞার পরও ভাবলেশহীন পুতিন। একাধিক ফ্রন্টে তিনি ইউক্রেনে আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছেন। ইউক্রেনীয়দের মনোবল ধ্বংস করার জন্য আবাসিক ও অন্যান্য বেসামরিক এলাকায় আঘাত করছেন।

ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ ঘোষণা করার সময় পুতিন অন্যদের হস্তক্ষেপের বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্প্রতি বাইডেন, সেক্রেটারি অফ স্টেট অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন, সিআইএ ডিরেক্টর উইলিয়াম বার্নস ও প্রশাসনের অন্যদের সঙ্গে সাবেক সেক্রেটারি অফ স্টেট হিলারি ক্লিনটন ও বাইডেনের ছেলে হান্টার বাইডেনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

রাশিয়া জ্বালানি ও অন্য সম্পদের গুরুত্বপূর্ণ সরবরাহকারী। গত বছর ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রয়োজনীয় প্রাকৃতিক গ্যাসের ৪০ শতাংশ জোগান দিয়েছিল তারা। পশ্চিমা নীতিনির্ধারকদের মধ্যে একটি উদ্বেগ হলো, রাশিয়া এই সরবরাহ বন্ধ করতে বা কমাতে পারে। আর তেমনটি ঘটলে শুধু ইউরোপের ভোক্তা নয়, বিশ্ববাজার জুড়ে ধাক্কা অনুভূত হবে।

বাইডেন প্রশাসন রাশিয়ার তেল, নির্দিষ্ট পেট্রোলিয়াম পণ্য, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস এবং কয়লা আমদানি নিষিদ্ধ করেছে। আমেরিকার তেল ও পরিশোধিত পণ্যের প্রায় ৮ শতাংশ রাশিয়া থেকে আসে। ইইউ রাশিয়ার জ্বালানি খাতে বিনিয়োগের ওপর ব্যাপক নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা করেছে এবং এই বছরের শেষ নাগাদ রাশিয়ার প্রাকৃতিক গ্যাসের আমদানি দুই-তৃতীয়াংশ কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

যুক্তরাজ্য বলেছে, বছরের শেষ নাগাদ তারা রাশিয়ার তেল আমদানি বন্ধ করবে। বর্তমানে যুক্তরাজ্যে ব্যবহৃত গ্যাসের ৮ শতাংশ রাশিয়ার।

জ্বালানি ছাড়াও ইইউ রাশিয়ায় উচ্চ মূল্যের বিলাসবহুল পণ্য বিক্রি নিষিদ্ধ করছে এবং রাশিয়ার স্টিল আমদানি নিষিদ্ধ করছে। বাইডেন প্রশাসন রাশিয়ান সি-ফুড, ভদকা ও হীরা আমদানি নিষিদ্ধ করেছে। রাশিয়ান পণ্যে কম শুল্ক সুবিধা বাতিলের জন্য বেশিরভাগ দেশ ও কংগ্রেসের সম্মতি প্রয়োজন।

সম্মিলিতভাবে গ্রুপ অফ সেভেনের নেতারাও মূল রাশিয়ান পণ্যের জন্য অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য মর্যাদা বাতিলের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। জি সেভেন নেতারা আরও বলেছেন, তারা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার অন্য সদস্যদেরও একই কাজ করার আহ্বান জানাবেন। জি সেভেন আরও বলেছে, তারা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলসহ শীর্ষস্থানীয় বহুপাক্ষিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে রাশিয়ায় যেন অর্থায়ন না হয় সে লক্ষ্য কাজ করছে।

২০১৪ সালে রাশিয়া ইউক্রেনের ক্রিমিয়া অঞ্চলকে সংযুক্ত করে নেয় এবং দেশের পূর্বাঞ্চলে রাশিয়াপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহকে উসকে দেয়। সেবার যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর, মস্কো তার অর্থনীতিকে নিষেধাজ্ঞার বিপরীতে শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে।

রাশিয়া ডলার থেকে নিজেকে মুক্ত করেছে ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের হাতে থাকা ঋণের অংশ কমিয়ে এনেছে। সরকার একটি রক্ষণশীল রাজস্ব নীতি পরিচালনা করেছে। আইএমএফের তথ্য অনুসারে, সরকারি ঋণ জিডিপির ২০ শতাংশের নিচে রেখেছে তারা, যা যুক্তরাষ্ট্রে ১৩৩ শতাংশ।

কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের তথ্য অনুসারে, এটি একটি উল্লেখযোগ্য আর্থিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা তৈরি করেছে, যার মধ্যে রয়েছে সোনার হোল্ডিং ও বৈদেশিক মুদ্রাসহ আন্তর্জাতিক রিজার্ভ। ডিসেম্বরে যার মূল্য ৬৩০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। এটি বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম ও রাশিয়ার জন্য সর্বোচ্চ।

অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার প্রভাব কী হতে পারে?

বাইডেন প্রশাসনের মতে, নিষেধাজ্ঞাগুলো রুবলকে দুর্বল করা, রাশিয়ার স্টক মার্কেটকে বিপর্যস্ত করা ও ধীরে ধীরে রাশিয়ান অর্থনীতি, যা মূলত জ্বালানি রপ্তানির ওপর নির্ভরশীল, সেটি ধ্বংস করার জন্য করা হয়েছে।

পশ্চিমা মিত্ররা তার আর্থিক ব্যবস্থা ও কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের রিজার্ভের বিরুদ্ধে চলে যাওয়ায় রাশিয়া তার স্টক মার্কেট বন্ধ করে দিয়েছে। এতে করে তারা প্রত্যাশিত দরপতন বন্ধ করতে পেরেছে। রুবলকে ডুবে যাওয়া থেকে রক্ষা করার লক্ষ্যে মূলধন নিয়ন্ত্রণে থাকার পরেও মুদ্রাটি এ বছর ডলারের বিপরীতে তার মূল্যের প্রায় এক তৃতীয়াংশ হারিয়ে সর্বকালের সর্বনিম্ন পর্যায়ে চলে গেছে।

পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্যবস্তুর মধ্যে রয়েছে রুশ অভিজাত শ্রেণির সদস্যরা। এর মধ্যে আছেন পুতিনের কাছের অন্যতম ব্যক্তিবর্গ- যেমন রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ এবং পুতিন নিজে। ইইউ পুতিন ও ল্যাভরভের ব্লকে থাকা যেকোনো সম্পদ বাজেয়াপ্ত করছে। তবে কূটনীতির উপায় খোলা রাখার জন্য তাদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেয়া হচ্ছে না।

হোয়াইট হাউসের ঘোষণা দেয়া পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে পুতিনের উপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ও তার সম্পদ জব্দ করা। সাবেক কর্মকর্তাদের মতে, বিশ্ব মঞ্চে পুতিনকে রাজনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন করার উদ্দেশ্যে এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। রাশিয়ার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পুতিনের সম্পদ মূলত সহযোগীদের নামে রাখা হয়েছে, যে কারণে নিষেধাজ্ঞার প্রভাব পড়ছে না।

আমেরিকার বিচার বিভাগ বিশ্বজুড়ে লুকিয়ে রাখা রাশিয়ান অলিগার্কদের বিলাসবহুল রিয়েল এস্টেট, ব্যক্তিগত জেট, ইয়ট ও অন্য সম্পদ খুঁজে বের করতে ও বাজেয়াপ্ত করার জন্য একটি টাস্কফোর্স চালু করেছে।

ফরাসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা রাশিয়ান তেল উৎপাদনকারী রোসনেফ্টের প্রধান নির্বাহী ইগর সেচিনের মালিকানাধীন একটি ইয়ট আটক করেছে। এরপর যুক্তরাজ্য সেচিনের সম্পদ জব্দ করে তার উপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র অতীতে রাশিয়ান অলিগার্কদের কালো তালিকাভুক্ত করেছে। এবার ইউক্রেন সংকটের সময় তাদের আত্মীয়দেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

রাশিয়ার ধনীদের কাছে আকর্ষণীয় স্থান যুক্তরাজ্য এক হাজার জনের বেশি রুশ টাইকুন ও সহায়ক সংস্থাকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে। যুক্তরাজ্য আরও বলেছে, তারা রাশিয়ান নাগরিকদের ব্যাংকগুলোতে জমা হতে পারে এমন তহবিল ৫০ হাজার পাউন্ডে সীমাবদ্ধ করবে। তারা রাশিয়ার জাতীয় এয়ারলাইন অ্যারোফ্লোটের বিমান ব্রিটেনের বিমানবন্দরে নিষিদ্ধ করেছে। এর মধ্যে হিথ্রোর মতো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও অন্তর্ভুক্ত।

রাশিয়ার ধনকুবের রোমান আব্রামোভিচ, ইংল্যান্ডের ফুটবল ক্লাব চেলসি এফসির আগের দফায় নিষেধাজ্ঞা থেকে রক্ষা পেলেও যুদ্ধ শুরুর দুই সপ্তাহের মধ্যে তা পালটে গেছে। বৃটিশ সরকার আব্রামোভিচের ইংল্যান্ডে অবস্থিত সম্পদ জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছে ও তাকে ইংল্যান্ড ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। ক্রেমলিনের সঙ্গে সম্পর্ক থাকার কারণে তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানান করেকজন বৃটিশ মন্ত্রী। আব্রামোভিচ তার আগে জানান যে, চেলসি ক্লাব বিক্রি করবেন। নিষেধাজ্ঞার অধীনে যে কোনো বিক্রয় নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বৃটিশ সরকার বলেছে যে এটি চেলসিকে কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য একটি বিশেষ লাইসেন্স দেবে।

রাশিয়া কি আগে নিষেধাজ্ঞা পেয়েছে

যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ রুশ সরকার ও এর সহযোগীদের উপর আগেও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। রাশিয়ান ভাড়াটে সৈন্য সংস্থা ওয়াগনার গ্রুপ এবং এর প্রতিষ্ঠাতা ও পুতিনের ঘনিষ্ঠ ইয়েভগেনি প্রিগোজিনকেও কালো তালিকাভুক্ত করেছে।

২০১৪ সালে দখলদারিত্ব ও ক্রিমিয়াকে সংযুক্ত করার পর ৮ শিল্পোন্নত দেশের গ্রুপ থেকে রাশিয়াকে সরিয়ে দেয়া হয়। গ্রুপটি এরপর থেকে গ্রুপ অফ সেভেন নামে পরিচিত।

ট্রাম্প প্রশাসনের সময়, যুক্তরাষ্ট্র নর্ড স্ট্রিম টু নির্মাণে কাজ করা সংস্থাগুলোর অনুমোদন দিয়েছিল। এটি জার্মানিতে প্রাকৃতিক গ্যাস পরিবহনকারী রাশিয়ার একটি বিশেষ পাইপলাইন, যাকে রাশিয়া যেকোনো সময় ভূ-রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে পারে বলে আমেরিকান কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে সতর্ক বার্তা দিয়ে এসেছেন।

২০২১ সালের মে মাসে বাইডেন প্রশাসন প্রকল্প পরিচালনাকারী মূল সুইস প্রতিষ্ঠান নর্ড স্ট্রিম টু এজি ও এর প্রধান নির্বাহীকে বিধিনিষেধ দিতে চেয়েছিল। তবে বার্লিনের প্রতি সহায়তা হিসেবে আভাস হিসেবে তেমনটি আর করা হয়নি।

দুটি রুশ-সমর্থিত বিচ্ছিন্ন অঞ্চলের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দিয়ে পুতিনের ঘোষণার পর বাইডেন প্রশাসন নর্ড স্ট্রিম টু-এর জন্য নিষেধাজ্ঞাগুলো ফের আরোপ করেছে। জার্মানি প্রকল্পটি স্থগিত করার কথা বলার পরে এ নির্দেশনা আসে।

এক সুইস কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, এরপরই নর্ড স্ট্রিম টু এজি তার ১০০ জনের বেশি কর্মী ছাঁটাই করে এবং এর কার্যক্রম ধীরে ধীরে বন্ধ করে দেয়।

আরও পড়ুন:
রাশিয়ার সঙ্গে মঙ্গল অভিযান স্থগিত করল ইউরোপ
ভারতে লাগামহীন হতে পারে ভোজ্যতেলের দাম
ভোজ্যতেল ও খাদ্যের তীব্র সংকটের মুখে বিশ্ব
ইউক্রেনীয়দের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত তারা
ইউক্রেনে রুশ অভিযানে কেন ধীরগতি?

মন্তব্য

আরও পড়ুন

আন্তর্জাতিক
The United States will pay and 1 million for the Rohingya

রোহিঙ্গাদের জন্য ৭৩ মিলিয়ন ডলার দেবে যুক্তরাষ্ট্র

রোহিঙ্গাদের জন্য ৭৩ মিলিয়ন ডলার দেবে যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা ক্যাম্প। ছবি: বাসস
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক্সে একটি পোস্টে বলেন, ‘বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিওইএফ) মাধ্যমে এ খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা ১০ লাখেরও বেশি মানুষের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা প্রদান করবে। এটা গুরুত্বপূর্ণ যে, আমাদের আন্তর্জাতিক অংশীদাররা এ ধরনের জীবন রক্ষাকারী সহায়তার মাধ্যমে বোঝা ভাগ করে নেওয়ার সঙ্গে যুক্ত।’

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত বৃহত্তম জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের সাহায্য কমে যাওয়ার ফলে সংকট আরও গভীর হওয়ার উদ্বেগের মধ্যে ট্রাম্প প্রশাসন বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, তারা জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির মাধ্যমে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ৭৩ মিলিয়ন (সাত কোটি ৩০ লাখ) ডলার নতুন আর্থিক সহায়তা দেবে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক্সে একটি পোস্টে বলেন, ‘বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিওইএফ) মাধ্যমে এ খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা ১০ লাখেরও বেশি মানুষের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা প্রদান করবে।

‘এটা গুরুত্বপূর্ণ যে, আমাদের আন্তর্জাতিক অংশীদাররা এ ধরনের জীবন রক্ষাকারী সহায়তার মাধ্যমে বোঝা ভাগ করে নেওয়ার সঙ্গে যুক্ত।’

সিনহুয়া জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার প্রশাসন ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ এজেন্ডার অংশ হিসেবে বিদেশি সহায়তায় ব্যাপক কাটছাঁট এবং ফেডারেল ব্যয় ব্যাপকভাবে হ্রাস এবং যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কিছু অংশ ভেঙে ফেলার বিস্তৃত প্রচেষ্টার মধ্যেই এ অনুদান দেওয়া হলো।

জাতিসংঘের দুটি সংস্থা সতর্ক করে দিয়েছিল যে, তহবিলের ঘাটতি গত আট বছর ধরে প্রতিবেশী মিয়ানমারে সহিংসতার কারণে পালিয়ে আসা বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য রেশনের পরিমাণ কমিয়ে দেবে।

রোহিঙ্গারা আশঙ্কা করছেন, তহবিল হ্রাসের ফলে ক্ষুধা পরিস্থিতির অবনতি হবে। গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা এবং জ্বালানি হ্রাস পাবে।

পররাষ্ট্র দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সবচেয়ে বড় সহায়তা প্রদানকারী দেশ ছিল। প্রায় ২ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দিয়ে আসছে দেশটি। কিন্তু জানুয়ারিতে ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর সাম্প্রতিক তহবিল স্থগিত করার ফলে কমপক্ষে পাঁচটি হাসপাতাল তাদের সেবা কমিয়ে ফেলতে বাধ্য হয়েছে।

ট্রাম্প ও বিলিয়নেয়ার মিত্র ইলন মাস্ক প্রধান মার্কিন বৈদেশিক সাহায্য সংস্থা ইউএসএআইডি বন্ধ করে দিয়েছেন এবং এর অবশিষ্টাংশগুলোকে পররাষ্ট্র দপ্তরের সঙ্গে একীভূত করেছেন। শত শত কর্মী এবং ঠিকাদারকে বরখাস্ত করেছেন এবং কোটি কোটি ডলারের পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছেন, যার ওপর বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষ নির্ভরশীল।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ফেব্রুয়ারিতে সমস্ত জীবন রক্ষাকারী সহায়তা এবং এ ধরনের সহায়তা প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় যুক্তিসঙ্গত প্রশাসনিক খরচ মওকুফ করেছিলেন।

ওয়াশিংটন টাইমস জানায়, এ মাসের শুরুতে ইউএসএআইডি ভেঙে দেওয়ার তত্ত্বাবধানকারী ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তা রোহিঙ্গাদের জন্য পর্যায়ক্রমে সাহায্য বন্ধের প্রস্তাব করেছিলেন।

জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্য সহায়তা হ্রাস করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেছে।

কক্সবাজার উপকূলের বিভিন্ন শিবিরের বাসিন্দারা এখন জনপ্রতি মাসিক ১২ ডলার করে খাদ্য বরাদ্দ পাবেন, যা আগের ১২ দশমিক ৫০ ডলার থেকে কম।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ‘ডব্লিউএফপি একটি চিঠিতে এই সিদ্ধান্তের কথা আমাদের জানিয়েছে, যা ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে।’

তিনি আরও বলেন, ভাসানচরে বসবাসকারী রোহিঙ্গারা জনপ্রতি ১৩ ডলার করে পাবে, যা কক্সবাজারের তুলনায় এক ডলার বেশি।

বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্য সহায়তা কমানোর পরিকল্পনা ডব্লিউএফপি পূর্বে জানানোর পর এ পরিবর্তন এসেছে।

গত ৫ মার্চ বাংলাদেশের শরণার্থী কমিশন ডব্লিউএফপি থেকে একটি চিঠি পায়, যেখানে বলা হয়, তহবিল সংকটের কারণে এপ্রিল থেকে রোহিঙ্গাদের জন্য মাসিক খাদ্য বরাদ্দ জনপ্রতি ১২ দশমিক ৫০ ডলার থেকে কমিয়ে ৬ ডলার করা হবে।

চিঠিতে শরণার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য ব্যবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।

গত ১৪ মার্চ জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেন।

তার সফরের সময় তাকে ছয় ডলারে রোহিঙ্গারা কী খাবার পাবে তার বিস্তারিত বিবরণ উপস্থাপন করা হয়েছিল। সে সময় অপর্যাপ্ত পরিমাণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছিল।

আরও পড়ুন:
ঢাকা-বেইজিংয়ের মধ্যে ৯ চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর
ঋণের সুদহার কমাতে ইতিবাচক সাড়া চীনের, পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতার আশ্বাস
২৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল রিজার্ভ
রোহিঙ্গাবাহী নৌকাডুবি: উদ্ধার ২৫, বিজিবি সদস্যসহ নিখোঁজ অনেকে
যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে সতর্কতা যুক্তরাজ্য ও জার্মানির

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Trump officials added journalists to forget the chatgroup of war planning

যুদ্ধ পরিকল্পনার চ্যাট গ্রুপে ভুলে সাংবাদিককে যুক্ত করলেন ট্রাম্প কর্মকর্তারা

যুদ্ধ পরিকল্পনার চ্যাট গ্রুপে ভুলে সাংবাদিককে যুক্ত করলেন ট্রাম্প কর্মকর্তারা
হামলা পরিকল্পনা নিয়ে বাণিজ্যিক চ্যাটঅ্যাপ সিগনালে কথা বলছিলেন তারা। তখন ভুল করে দেশটির একজন বিখ্যাত সাংবাদিককেও গ্রুপে যুক্ত করা হয়েছিল। ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান এমন খবর দিয়েছে।

ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের ওপর হামলার ঘটনায় গোপনীয় সামরিক পরিকল্পনা নিয়ে আলাপকালে গুরুতর নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ঘটনায় জড়িয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্ত্রিসভার কয়েকজন জ্যেষ্ঠ সদস্য। যাদের মধ্যে ভাইস-প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, প্রতিরক্ষামন্ত্রী পেট হেগসেথ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ও জাতীয় গোয়েন্দা পরিচারক তুলসি গ্যাবার্ড রয়েছেন।

হামলা পরিকল্পনা নিয়ে বাণিজ্যিক চ্যাটঅ্যাপ সিগনালে কথা বলছিলেন তারা। তখন ভুল করে দেশটির একজন বিখ্যাত সাংবাদিককেও গ্রুপে যুক্ত করা হয়েছিল। ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান এমন খবর দিয়েছে।

এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দেশটির আইনপ্রণেতারা। তদন্তের আহ্বান জানিয়ে সিনেটে সংখ্যালঘু নেতা চাক শুমার বলেন, ‘বহু বছরের মধ্যে—আমি যতদূর জানি—এটা মার্কিন সামরিক গোয়েন্দা তথ্যের সবচেয়ে মারাত্মক লঙ্ঘনের একটি।’

স্পর্শকাতর তথ্য নিয়ে আলাপের জন্য সিগনাল ব্যবহারে মার্কিন সরকারের অনুমোদন নেই। সেদিনের এই আলোচনায় ট্রাম্পের উপদেষ্টা স্টিফেন মিলার, চিফ অব স্টাফ সুসি ওয়াইলস ও মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ দূত স্টিফ উইটকফও ছিলেন।

গেল সোমবার দ্য আটলান্টিক সাময়িকীতে এক লেখায় সম্পাদক জেফরি গোল্ডবার্গ এমন তথ্য প্রকাশ করেছেন। তিনি জানতে পারেন যে ‘হুতি পিসি স্মল গ্রুপ’ নামে সিগনাল আলাপে তাকে যুক্ত করা হয়েছে। ট্রাম্পের মন্ত্রিসভার ১৮ সদস্য এই গ্রুপচ্যাটে ছিলেন।

জেফরি গোল্ডবার্গ বলেন, সিআইয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ও বর্তমান আভিযানিক বিস্তারিত তথ্যসহ স্পর্শকাতর উপকরণ প্রতিবেদনে নিজের বিবরণ থেকে বাদ দিয়েছেন তিনি।

জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র ব্রিয়ান হিউগেস এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আটলান্টিক সাময়িকীকে তিনি বলেন, ‘একটি বার্তা প্রবাহ থেকে এমনটি ঘটেছে। কীভাবে অসাবধানতাবশত নম্বরটি যুক্ত হয়েছে, তা আমরা পর্যালোচনা করে দেখছি।’

তবে এই ঘটনা সম্পর্কে জানতেন না বলে জানিয়েছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। আর আমি আটলান্টিক সাময়িকীর খুব একজন বড় ভক্ত না।’

পেট হেগসেথ বলেন, ‘কেউ যুদ্ধ পরিকল্পনা নিয়ে সেখানে বার্তা দেয়নি। এ বিষয়ে আমি এতটুকুই বলতে পারবো।’ প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল সফর শেষে সোমবার হাওয়াইতে অবতরণ করে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি।

জবাবে জেফরি গোল্ডবার্গ বলেন, ‘হেগসেথ সত্যিকথা বলেননি। তিনি মিথ্যা বলেছেন। হেগসেথ যুদ্ধ পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলছিলেন।’

পরবর্তীতে হোয়াইট হাউস থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্ডটসসহ জাতীয় নিরাপত্তা টিমের ওপর সর্বোচ্চ আত্মবিশ্বাস আছে ট্রাম্পের।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Warning to travel to the United States is the United Kingdom and Germany

যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে সতর্কতা যুক্তরাজ্য ও জার্মানির

যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে সতর্কতা যুক্তরাজ্য ও জার্মানির যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা। ছবি: এএফপি
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণের ক্ষেত্রে সব নির্দেশনা মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে সম্প্রতি বিদেশি দর্শনার্থী আটক ও তাদের নির্বাসনের কারণে দেশটিতে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সতর্কতা জারি করেছে যুক্তরাজ্য ও জার্মানি।

স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণের ক্ষেত্রে সব নির্দেশনা মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছে।

পররাষ্ট্র দপ্তরের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‌‘যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষ প্রবেশের নিয়ম কঠোরভাবে নির্ধারণ ও প্রয়োগ করে। আপনি যদি নিয়ম ভঙ্গ করেন, তাহলে গ্রেপ্তার বা আটক হওয়ার ঝুঁকিতে পড়তে পারেন।’

পররাষ্ট্র দপ্তর জানায়, যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তর নাগরিকদের প্রবেশ, ভিসা ও অন্যান্য প্রবেশের শর্তাবলী মেনে চলতে বলেছে।

লন্ডন ও বার্লিন থেকে এএফপি শনিবার এ খবর জানায়।

এদিকে জার্মানি জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা প্রাপ্তি দেশটিতে প্রবেশের কোনো নিশ্চয়তা দেয় না। এমন অন্তত তিনটি উদাহরণ রয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। কোনো ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রের ভূখণ্ডে প্রবেশ করতে পারবেন কি না, তা চূড়ান্তভাবে নির্ভর করবে দেশটির সীমান্ত কর্তৃপক্ষের ওপর।

চলতি মাসের শুরুতে জেসমনি মুনি নামে যুক্তরাষ্ট্রে কাজ করা একজন কানাডীয় অভিনেত্রী মেক্সিকোর সীমান্ত দিয়ে দেশটিতে প্রবেশের চেষ্টাকালে তাকে আটক করে ইমিগ্রেশন এবং কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের সদস্যরা।

ওই অভিনেত্রীর মায়ের দাবি, আটকের ১২ দিন পর অত্যন্ত শোচনীয় অবস্থায় কানাডার ভ্যানকুভারের একটি ফ্লাইটে তাকে উঠিয়ে দেয়া হয়। এখানেই শেষ নয়, গত মাসে একজন ফরাসি বিজ্ঞানীর ফোনে ট্রাম্পবিরোধী খুদেবার্তা পাওয়ায় তাকেও যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অনুমতি দেয়নি কর্তৃপক্ষ।

এ আটকের ঘটনা আন্তর্জাতিকভাবে মিত্র দেশগুলোর মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। কারণ ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন বলেছে, দেশটিতে প্রবেশের নিয়মনীতি কঠোর হতে পারে। কোনো ব্যক্তি নিয়ম ভঙ্গ করলে আটক হতে পারেন।

আরও পড়ুন:
আমি যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক বন্দি: মাহমুদ খলিল
ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্প-পুতিন আলোচনা মঙ্গলবার
৪৩ দেশের নাগরিকদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার পরিকল্পনা ট্রাম্প প্রশাসনের
ইউক্রেন সংঘাত নিষ্পত্তি চুক্তিতে রাজি হবে রাশিয়া, আশা ট্রাম্পের
‘কৌশলগত বিটকয়েন রিজার্ভ’ প্রতিষ্ঠার নির্বাহী আদেশে সই ট্রাম্পের

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
I am a political prisoner in the United States Mahmood Khalil

আমি যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক বন্দি: মাহমুদ খলিল

আমি যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক বন্দি: মাহমুদ খলিল যুক্তরাষ্ট্রে আটক ফিলিস্তিনি যুবক মাহমুদ খলিল। ছবি: কাউন্টারপাঞ্চ
বিবৃতিতে খলিল বলেন, ‘আমি একজন রাজনৈতিক বন্দি। লুইজিয়ানার শীতের সকালে ঘুম ভাঙার পর আমার দীর্ঘ দিন কাটে এখানে আটক বহু মানুষদের দেখে, যারা আইনের সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত।’

যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন কর্মকর্তাদের হাতে গ্রেপ্তার কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহমুদ খলিল নিজেকে একজন রাজনৈতিক বন্দি হিসেবে দাবি করেছেন। এ সময় মার্কিন প্রশাসনের অভিবাসীদের এভাবে আটকে রাখার প্রক্রিয়াকে ইসরায়েলের বিচারবহির্ভূত আটক ব্যবস্থার সঙ্গে তুলনা করেছেন এই ফিলিস্তিনি যুবক।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানার আটককেন্দ্র থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেছেন তিনি।

গ্রেপ্তার হওয়ার পর প্রকাশ্যে দেওয়া এটিই তার প্রথম কোনো বিবৃতি। গত শনিবার (৮ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসভবন থেকে খলিলকে গ্রেপ্তার করে যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের (আইসিই) কর্মকর্তারা।

বিবৃতিতে খলিল বলেন, ‘আমি একজন রাজনৈতিক বন্দি। লুইজিয়ানার শীতের সকালে ঘুম ভাঙার পর আমার দীর্ঘ দিন কাটে এখানে আটক বহু মানুষদের দেখে, যারা আইনের সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত।’

খলিল বর্তমানে লুইজিয়ানার জেনা শহরে একটি অভিবাসী আটককেন্দ্রে রয়েছেন। সেখানেই তিনি বিচারের মুখোমুখি হওয়ার অপেক্ষায় আছেন। তাকে এভাবে আটকে রাখার ঘটনাকে তিনি ইসরায়েলের কারাগারে বিনা বিচারের বছরের পর বছর ফিলিস্তিনিদের আটকে রেখে নির্যাতনের সঙ্গে তুলনা করেছেন।

আরও পড়ুন:
ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্প-পুতিন আলোচনা মঙ্গলবার
৪৩ দেশের নাগরিকদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার পরিকল্পনা ট্রাম্প প্রশাসনের
ইউক্রেন সংঘাত নিষ্পত্তি চুক্তিতে রাজি হবে রাশিয়া, আশা ট্রাম্পের
‘কৌশলগত বিটকয়েন রিজার্ভ’ প্রতিষ্ঠার নির্বাহী আদেশে সই ট্রাম্পের
পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছেন ট্রাম্প

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Trump Putin discussion to stop the Ukraine war on Tuesday

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্প-পুতিন আলোচনা মঙ্গলবার

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্প-পুতিন আলোচনা মঙ্গলবার কুশল বিনিময় করছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ফাইল ছবি
ট্রাম্প বলেন, ‘দেখি আমরা মঙ্গলবারের মধ্যেই কোনো ঘোষণা দিতে পারি কি না। এদিন আমি প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে কথা বলব।’

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কথা বলতে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার তাদের মধ্যে এই আলোচনা হতে যাচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা থেকে রবিবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটনের উদ্দেশে এয়ার ফোর্স ওয়ানে ওঠার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এমন তথ্য দিয়েছেন ট্রাম্প।

তিনি বলেন, ‘দেখি আমরা মঙ্গলবারের মধ্যেই কোনো ঘোষণা দিতে পারি কি না। এদিন আমি প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে কথা বলব।’

শিগগিরই সংঘাত বন্ধ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে এ সপ্তাহে বেশ অগ্রগতি হয়েছে। অনেক কাজ করা হয়েছে।’

বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে দুই নেতার কথোপকথন খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি নিজের মতো ঢেলে সাজাচ্ছেন ট্রাম্প। পুতিনের সঙ্গে আলোচনা রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টের সে পদক্ষেপকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

যদিও ট্রাম্প-পুতিনের সম্প্রীতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ইউরোপীয় মিত্রদের উদ্বেগের শেষ নেই। শুরু থেকেই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে সমর্থন দিয়ে আসছিলেন তারা।

বছর তিনেক আগে অভিযানের শুরুতে ইউক্রেনকে পরাস্ত করতে রাশিয়ার প্রাথমিক লক্ষ্য ব্যর্থ হলেও প্রতিবেশী দেশটির বিশাল অংশের নিয়ন্ত্রণ নিতে পেরেছে মস্কো।

যুদ্ধ বন্ধের আলোচনায় এসব ভূমি ও বিদ্যুৎকেন্দ্রও থাকবে উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, ‘এই সম্পদগুলো ভাগাভাগি হতে পারে।’

ইউরোপের এ যুদ্ধ বন্ধ নিয়ে বেশ ঘটনাবহুল কয়েকটি দিন পার হয়েছে। শপথ নেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধ করার অঙ্গীকার করেছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু ৫৭তম দিনে এসে তিনি কেবল আশার কথা শোনাচ্ছেন।

নির্বাচনি প্রচারের সময় বেশ কয়েকবার ট্রাম্পকে এ ঘোষণা দিতে শোনা গেলেও রসিকতা করেই এমনটা বলেছিলেন বলে এখন দাবি করেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট।

স্থানীয় সময় শুক্রবার এক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে ট্রাম্প জানান, তিনি রসিকতা করে এটা বলেছিলেন।

গত ১১ মার্চ সৌদি আরবের জেদ্দায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের কর্মকর্তাদের বৈঠকে ওয়াশিংটনের দেওয়া এক মাসের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সম্মত হয় ইউক্রেন। একই প্রস্তাব রাশিয়াকেও দেওয়া হবে বলে বৈঠক শেষে জানান যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, জেদ্দার বৈঠকে যুদ্ধবিরতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের কর্মকর্তাদের মধ্যে কী আলোচনা হয়েছে, তার নানা দিক তুলে ধরতে গত বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ।

তিনি বলেন, ‘পুতিন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবকে সমর্থন করেছেন। তবে বেশ কিছু শর্তও জুড়ে দিয়েছেন। শান্তি প্রতিষ্ঠায় এসব জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন পুতিন।’

আরও পড়ুন:
ভয়েস অব আমেরিকার কর্মী ছাঁটাইয়ের পদক্ষেপ ট্রাম্পের
৪৩ দেশের নাগরিকদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার পরিকল্পনা ট্রাম্প প্রশাসনের
ইউক্রেন সংঘাত নিষ্পত্তি চুক্তিতে রাজি হবে রাশিয়া, আশা ট্রাম্পের
এক মাসের যুদ্ধবিরতিতে রাজি হবেন পুতিন?
ট্রাম্পের গলফ রিসোর্টে হামলা

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Trumps step in trimming the Voice of American workers

ভয়েস অব আমেরিকার কর্মী ছাঁটাইয়ের পদক্ষেপ ট্রাম্পের

ভয়েস অব আমেরিকার কর্মী ছাঁটাইয়ের পদক্ষেপ ট্রাম্পের ভয়েস অব আমেরিকার লোগো। ফাইল ছবি
প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক নির্বাহী আদেশে ইউএস এজেন্সি ফর গ্লোবাল মিডিয়াকে (ইউএসএজিএম) ‌‘অপ্রয়োজনীয়’ ফেডারেল আমলাতন্ত্রের অংশ হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।

ভয়েস অব আমেরিকার (ভিওএ) পাশাপাশি রেডিও ফ্রি এশিয়া, রেডিও ফ্রি ইউরোপ এবং অন্যান্য গণমাধ্যমের শত শত কর্মী ছাঁটাইয়ের উদ্যোগ নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

এরই মধ্যে এ সংক্রান্ত একটি ইমেল করা হয়েছে এসব কর্মীদের। একই সঙ্গে তাদের প্রেস পাস এবং সরঞ্জাম জমা দিতে বলা হয়েছে।

স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে শনিবার এ তথ্য জানায় সিনহুয়া।

প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক নির্বাহী আদেশে ইউএস এজেন্সি ফর গ্লোবাল মিডিয়াকে (ইউএসএজিএম) ‌‘অপ্রয়োজনীয়’ ফেডারেল আমলাতন্ত্রের অংশ হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।

ভয়েস অব আমেরিকার মূল সংস্থা ইউএসএজিএম। সংস্থাটিতে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কর্মী রয়েছে।

কংগ্রেসে পেশ করা সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংস্থাটির জন্য ২০২৪ সালে ৮৮ কোটি ৬০ লাখ ডলার বরাদ্দ ছিল।

স্থানীয় গণমাধ্যমটির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, রেডিও ফ্রি ইউরোপ ও রেডিও ফ্রি এশিয়াসহ বেসরকারিভাবে অন্তর্ভুক্ত আন্তর্জাতিক সম্প্রচার মাধ্যমের সব চুক্তি বাতিল করেছে সংস্থাটি।

ভয়েস অব আমেরিকার পরিচালক মাইকেল আব্রামোভিৎজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানান, তার অধীন ১ হাজার ৩০০ সাংবাদিক, প্রযোজক ও সহকারীকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে।

হোয়াইট হাউস বলেছে, এই কাটছাঁট নিশ্চিত করবে যে ‘করদাতারা আর উগ্রবাদী প্রচারণার শিকার হবেন না।’

প্রতিবেদনে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, সিদ্ধান্তটি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। কারণ কংগ্রেস প্রেসিডেন্টর হাতে নয়, কংগ্রেসের হাতে সাংবিধানিক ক্ষমতা রয়েছে।

আরও পড়ুন:
অবিলম্বে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের
ট্রাম্পের নিন্দা সাবেক প্রতিরক্ষাপ্রধানদের
রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান চায়, ধারণা ট্রাম্পের
পুতিনের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে শিগগিরই: ট্রাম্প
বাংলাদেশে সরকার পতনে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা ছিল না: ট্রাম্প

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
The Trump administration plans for travel ban on citizens of the country

৪৩ দেশের নাগরিকদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার পরিকল্পনা ট্রাম্প প্রশাসনের

৪৩ দেশের নাগরিকদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার পরিকল্পনা ট্রাম্প প্রশাসনের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফাইল ছবি
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বরাতে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস এ তথ্য জানায়।

নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় ৪৩টি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে বিধিনিষেধ আরোপ করার কথা ভাবছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন।

রিপাবলিকান এ প্রেসিডেন্টের আগের মেয়াদের চেয়ে নতুন এই নিষেধাজ্ঞার পরিধি বড় হবে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বরাতে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস এ তথ্য জানায়।

কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তারা এরই মধ্যে ‘লাল’, ‘কমলা’ ও ‘হলুদ’ ক্যাটাগরিতে খসড়া তালিকা তৈরি করেছে। এতে তিনটি ধাপে ৪৩টি দেশের নাম রয়েছে।

তালিকায় প্রথম ধাপের ১১টি দেশ হলো আফগানিস্তান, ভুটান, কিউবা, ইরান, লিবিয়া, উত্তর কোরিয়া, সোমালিয়া, সুদান, সিরিয়া, ভেনেজুয়েলা ও ইয়েমেন। এসব দেশের নাগরিকদের পূর্ণাঙ্গ ভিসা বাতিল হতে পারে।

দ্বিতীয় ধাপের দেশগুলোর—বেলারুশ, ইরিত্রিয়া, হাইতি, লাওস, মিয়ানমার, পাকিস্তান, রাশিয়া, সিয়েরা লিওন, দক্ষিণ সুদান ও তুর্কমেনিস্তান—ওপর আংশিক ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ হতে পারে। কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া এসব দেশের পর্যটন ভিসা, শিক্ষার্থী ভিসা, অভিবাসন ভিসায় প্রভাব পড়তে পারে।

অর্থাৎ বিধিনিষেধ আরোপ হলেও এসব দেশের ভিসা পুরোপুরি বাতিল করা হবে না। এ ১০ দেশের ধনী ব্যবসায়ীরা ভ্রমণ করতে পারলেও ভ্রমণ কিংবা অভিবাসন ভিসায় সাধারণ নাগরিকরা যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে পারবেন না।

শেষ গ্রুপে থাকা দেশগেুলোর সরকার নিরাপত্তা তথ্য সংক্রান্ত ঘাটতি মেটাতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না নিলে এসব দেশের নাগরিকদের ভিসায় আংশিক নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে ট্রাম্প প্রশাসন।

দেশগুলো হলো অ্যাঙ্গোলা, অ্যান্টিগা ও বার্বুডা, বেলারুশ, বেনিন, ভুটান, বুরকিনা ফাসো, কেপ ভার্দে, কম্বোডিয়া, ক্যামেরুন, শাদ, গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, ডোমেনিকা, নিরক্ষীয় গিনি, গাম্বিয়া, লাইবেরিয়া, মালাউই, মৌরিতানিয়া, কঙ্গো, সেন্ট কিট্‌স ও নেভিস, সেন্ট লুসিয়া, সাঁউ তুমি ও প্রিন্সিপি, সিয়েরা লিওন, পূর্ব তিমুর, তুর্কমেনিস্তান, লাইবেরিয়া, মালি, জিম্বাবুয়ে ও ভানুয়াতু।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘কয়েক সপ্তাহ আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এ তালিকা তৈরি করেছেন। হোয়াইট হাউসে পৌঁছার আগে তালিকায় কিছুটা রদবদল হতে পারে এবং এখনও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওসহ ট্রাম্প প্রশাসনের অনুমোদন মেলেনি।’

এখন খসড়া তালিকা পর্যালোচনা করছে বিভিন্ন দূতাবাস, আঞ্চলিক ব্যুরো, বিভিন্ন বিভাগ ও গোয়েন্দা সংস্থার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা।

ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদেও সাতটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন। তার ওই পদক্ষেপ অনেক আইনি লড়াই পেরিয়ে ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের অনুমোদন পায়।

দ্বিতীয় মেয়াদের শুরুতেই চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি এক নির্বাহী আদেশে ট্রাম্প জাতীয় নিরাপত্তা হুমকি শনাক্তে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ ইচ্ছুক সব বিদেশির ক্ষেত্রে নিরাপত্তা সংক্রান্ত তথ্য যাচাই-বাছাই জোরদারের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

ওই নির্দেশে ‘নিরাপত্তা যাচাই-বাছাই সংক্রান্ত পর্যাপ্ত তথ্য পাওয়া যাবে না’ এমন দেশগুলো শনাক্ত করে সেগুলোর মধ্যে কোনটির ওপর পূর্ণাঙ্গ, কোনটির ওপর আংশিক নিষেধাজ্ঞা দেওয়া যায়, তার তালিকা ২১ মার্চের মধ্যে জমা দিতে মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্যকে বলাও হয়েছিল।

এ দফায় ক্ষমতায় আসার পর ট্রাম্প অভিবাসনবিরোধী একের পর এক কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে যাচ্ছেন। ২০২৩ সালের অক্টোবরে দেওয়া এক বক্তৃতায় তিনি গাজা ভূখণ্ড, লিবিয়া, সোমালিয়া, সিরিয়া, ইয়েমেন এবং ‘আমাদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি যে কারও’ যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ আটকে দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।

আরও পড়ুন:
পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছেন ট্রাম্প
রাশিয়ার বিরুদ্ধে সাইবার হামলা বন্ধ করল যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রীয় ভাষার মর্যাদা পেল ইংরেজি
অবিলম্বে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের
ট্রাম্পের নিন্দা সাবেক প্রতিরক্ষাপ্রধানদের

মন্তব্য

p
উপরে