রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘোষণার পর ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রুশ বাহিনী। এ অভিযানের চতুর্থ দিনে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ ও আশপাশের এলাকায় লড়াই চলছে রুশ ও ইউক্রেনীয় সেনাদের। এ সংক্রান্ত সবশেষ খবর জানতে চোখ রাখুন নিউজবাংলায়।
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ ঘিরে ফেলেছে রুশ সেনাবাহিনী। এ শহর থেকে কারোরই বের হওয়ার এখন কোনো পথ নেই।
কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো রোববার বার্তা সংস্থা এএফপিকে এমন তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, রাশিয়ার সেনা সদস্যরা কিয়েভ ঘিরে রেখেছে। এই মুহূর্তে রাজধানীর বাসিন্দারা অবরুদ্ধ।
ইউক্রেনে রুশ সামরিক হামলার প্রতিবাদে জামার্নির রাজধানী বার্লিনে সমাবেশ করেছে এক লাখের বেশি মানুষ।
পূর্ব ইউরোপের দেশ ইউক্রেনের পতাকার আদলে নীল ও হলুদ রংয়ের পোশাকে ব্র্যান্ডেনবার্গ গেটে রুশ দূতাবাসের খুব কাছে জড়ো হয় তারা। ইউক্রেনীয়দের প্রতি সংহতি জানায় তারা।
এসময় প্রতিবাদকারীরা রুশ হামলাকে ধিক্কায় জানিয়ে ও তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধ শুরু না করতে মস্কোর প্রতি আহ্বান জানায়।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে লড়তে ইউক্রেনকে অস্ত্র কিনতে অর্থ সহায়তা দেবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
রোববার ইউরোপীয় ইউনিয়নের সর্বোচ্চ পদ ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেন এই ঘোষণা দেন বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
যুদ্ধরত কোনো দেশে অস্ত্র না পাঠানোর জন্য করা অঙ্গীকার ভেঙে এবার রুশ হামলার শিকার ইউক্রেনে অস্ত্র দেবে সুইডেন।
রোববার সুইডেনের কর্তৃপক্ষ এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
মস্কোর সঙ্গে শর্তহীন আলোচনা শুরু করতে ইউক্রেন-বেলারুশ সীমান্তে প্রতিনিধিদল পাঠাতে রাজি হয়েছে কিয়েভ।
এর আগে, রাশিয়ার দেয়া শর্তের কারণে বৈঠকে বসার প্রস্তাব নাকচ করে দেয় ইউক্রেন।
ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে রুশ প্রতিনিধি দল প্রতিবেশী বেলারুশের গোমেল শহরে পৌঁছে রোববার।
ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ বাধিয়ে পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েছে রাশিয়া। নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওপরও। এমন পরিস্থিতিতে অর্থসংকট তৈরি হতে পারে ভেবে ব্যাংক থেকে অর্থ তোলার চেষ্টা করছেন গ্রাহকরা।
তবে এ অবস্থায় উদ্বিগ্ন না হয়ে বরং গ্রাহকদের শান্ত থাকার পরামর্শ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তারা বলেছে, অর্থের অভাব নেই। সংকটে পড়ার সম্ভাবনাও নেই।
স্থানীয় সময় রোববার রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এক বিবৃতিতে একথা জানায় বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।
পারমাণবিক অস্ত্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকা সেনাদের এবার বিশেষভাবে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
রাশিয়ার সেনাদের রোববার খারকিভ শহর থেকে হটিয়ে দিয়েছে ইউক্রেন সেনারা। কিয়েভের এমন দাবির মুখে দেশটির বিরুদ্ধে এবার পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট।
ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রুশ প্রতিনিধিদল প্রতিবেশী বেলারুশের গোমেল শহরে পৌঁছেছে। তবে শর্তসাপেক্ষে আলোচনায় গোমেলে বসতে রাজি হয়নি ইউক্রেন।
রোববার ক্রেমলিনের মূখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভে রুশ সেনাদের সঙ্গে ইউক্রেন সেনাবাহিনীর তুমুল যুদ্ধ হয়েছে।
যুদ্ধের পর শহরটি এখন ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় গভর্নর ওলেগ সিনেগুবভ।
তিনি বলেন, ‘খারকিভ সম্পূর্ণরূপে আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ইউক্রেন সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়ে রাশিয়ার সেনা সদস্যদের হটিয়ে দিয়েছে।’
তিন দিনে হামলায় রাশিয়ার ৪ হাজার ৩০০ সেনা নিহতের দাবি করেছে ইউক্রেন। সেই সঙ্গে রাশিয়ার ২৭টি বিমান ও ২৬টি হেলিকপ্টার ধ্বংস করা হয়েছে বলেও দাবি করেছে দেশটি।
দেশটির ডেপুটি ডিফেন্স মিনিস্টার এই দাবি করেছেন।
বৃহস্পতিবার ইউক্রেনে হামলার নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
ডেপুটি ডিফেন্স মিনিস্টার কিয়েভ হান্না মালায়ার বলেন, এই হামলার পর তিন দিনে রাশিয়ার এ পরিমাণ সেনা হতাহত হয়েছে।
অবশ্য বিবিসি এর কোনো সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি।
এমনকি রাশিয়াও এখন পর্যন্ত তাদের হতাহতের কোনো সংখ্যা উল্লেখ করেনি।
কিয়েভ হান্না দাবি করেন, ইউক্রেনে হামলার পর রাশিয়ার ২৭টি বিমান ধ্বংস করেছে ইউক্রেন। এই তালিকায় আছে ২৬ হেলিকপ্টার, ১৪৬ ট্যাংক, ৭০৬ আর্মড ফাইটিং ভেহিকেল, ৪৯ ক্যানন, একটি এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, ৪ গার্ড মাল্টি রকেট লঞ্চার সিস্টেম এবং ৩০ টি গাড়ি।
বেসামরিক নাগরিক ও সাধারণ মানুষের জন্য নতুন একটি নীতিমালা জারি করেছে ইউক্রেন। তাদের সবাইকে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে রুশ বাহিনীর মোকাবিলায় কাজ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বলা হয়েছে, ‘আপনার কাছে অস্ত্র বা গোলাবারুদ থাকুক বা না থাকুক, যুদ্ধের সম্ভাব্য সব উপায় ব্যবহার করুন।’
সাধারণ মানুষকে কয়েকটি বিষয় বলা হয়েছে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে। সেগুলো হলো-
ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলের একটি শহর দখল করে নিয়েছে রুশ সেনারা।
দেশটির বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলের শহর নোভা কাকোভকা রাশিয়ার বাহিনী নিজেেদর করে নিয়েছে।
রাশিয়ান সেনারা এখন নোভা কাকোভকা বা নিউ কাকোভকা দখল করেছে। এটি খুব ছোট শহর, তবে এটি কৌশলগত দিক বিবেচনায় ইউক্রেনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়।
শহরটির অবস্থান দিনিপার নদীর পারে এবং এটি সরাসরি ক্রিমিয়ান উপদ্বীপে পানি সরবরাহ করে।
শহরটির মেয়র ভলদিমির কোভালেঙ্ক বলেন, রাশিয়ার সেনারা শহরটি দখল করে নিয়েছে এবং শহরের এক্সিকিউটিভ কমিটি বাতিল করে দিয়েছে। তারা সব ধরনের ভবন থেকে ইউক্রেনের পতাকা নামিয়ে ফেলেছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইউক্রেন দখলে দক্ষিণ দিক থেকে রাশিয়ার অগ্রগতি খুব বেশি। রুশ সেনারা এর আগেই দক্ষিণের খোরসান, মাইকোলভ এবং মেলিটোপল শহর দখলে হুমকি দিয়ে এসেছে।
সুইফট নেটওয়ার্ক থেকে রাশিয়াকে নিষিদ্ধ ঘোষণায় পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শিমিহাল।
তিনি টু্ইট করেন, ‘আজ যাদের সঙ্গে কথা বললাম, সব সহযোগীদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা।’
‘এই কঠিন সময়ে আপনাদের সহায়তা ও সমর্থন সত্যিই আমাদের অনুপ্রাণিত করে। আপনাদের এই অবদান ইউক্রেনের জনগণ কখনও ভুলবে না।’
Grateful to all our partners I talked today - 🇨🇦, 🇵🇱, 🇱🇹, 🇱🇻, 🇪🇪, 🇳🇱, 🇨🇿, 🇸🇰, 🇸🇮, 🇹🇩, 🇸🇪, 🇨🇭, 🇱🇺, @EU_Commission 🇪🇺! Appreciate your support and real help in this dark time. Ukrainian people will never forget this! Keep holding the line! We are on our land!
— Denys Shmyhal (@Denys_Shmyhal) February 26, 2022
ইউক্রেনে হামলার চতুর্থ দিনে দেশটির শহর খারকিভে একটি প্রাকৃতিক গ্যাস পাইপলাইনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রুশ সেনারা।
ইউক্রেনের বিশেষ যোগাযোগ ও তথ্য সুরক্ষা বিভাগ থেকে হামলার খবরটি জানানো হয়েছে।
সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার খবরে বলা হয়, ম্যাসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে হামলার পর সেখানে মাশরুম আকৃতির ধোঁয়া দেখা গেছে।
তবে তাৎক্ষণিকভাবে এটা জানা সম্ভব হয়নি যে, পাইপলাইনটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এতে শহর ও শহরের বাইরে গ্যাস সরবরাহে কোনো ব্যাঘাত ঘটেছে কি না।
হামলা হলেও ইউক্রেন রাশিয়ার প্রাকৃতিক গ্যাস পশ্চিমা দেশগুলোতে পাঠানো অব্যাহত রেখেছে বলে জানিয়েছে।
জাতিসংঘের মানবিক বিষয় সমন্বয় কার্যালয় ওসিএইচএ সংস্থাটির মানবাধিকার দপ্তরের বরাত দিয়ে ইউক্রেনে হতাহতের সংখ্যা জানিয়েছে।
যেকোনো সংঘাতে নিহত ও আহত ব্যক্তির সংখ্যা নিরূপণে যাচাই ও প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে কোনো ফাঁকফোকর রাখে না মানবাধিকার দপ্তর।
ওসিএইচএ আরও জানায়, অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় হাজারো মানুষ পানি, বিদ্যুৎ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এটি ইউক্রেনজুড়ে (বিশেষত উত্তর, পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চল) ‘মানবিক বিপর্যয়কর’ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেনে অন্তত ২৪০ জন বেসামরিক নাগরিক হতাহত হয়েছে বলে নিশ্চিত হয়েছে জাতিসংঘ। আন্তরাষ্ট্রীয় সংস্থাটি জানিয়েছে, তাদের মধ্যে অন্তত ৬৪ জন নিহত হয়েছে।
জাতিসংঘ মনে করছে, হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে উল্লেখযোগ্য হারে বেশি হতে পারে। কারণ অনেক জায়গায় হতাহতের খবর নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
বাগেরহাট সদরের বেমরতা ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামে জমি ও মাছের ঘের দখলকে কেন্দ্র করে মোমেনা বেগম (৬৫) নামের এক বিধবা নারীকে হত্যার উদ্দেশ্যে কাঁদা মাটিতে পুঁতে রাখার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় জেলা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেন স্বজনেরা।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সুলতানপুর এলাকার মৃত আতিয়ার রহমানের স্ত্রী মোমেনা বেগম দীর্ঘদিন ধরে সুলতানপুরের পার্শ্ববর্তী গোটাপাড়া ইউনিয়নের নওয়াপাড়া মৌজার একটি জমিতে মাছ চাষ করে আসছিলেন। ওই ঘেরের মধ্যে থাকা ১ বিঘা জমির মালিক আহত মোমেনার ভাই নওয়াপাড়া এলাকার ইউনুচ শেখ ২০০৬ সালে বিদেশে যাওয়ার জন্য মোমেনা বেগমের স্বামী মৃত আতিয়ার রহমানকে দলিল করে দিবেন মর্মে ৬০ হাজার টাকার বিনিময়ে তাদেরকে জমির দখল বুঝিয়ে দেন। তবে দলিল না দেওয়ায় বিষয়টি নিয়ে বিরোধ চলছিল। মোমেনা বেগম ও অভিযুক্ত আপন ভাই ইউনুচ শেখ এর সংগে।
গত ১৮ আগস্ট দুপুরে অভিযুক্ত ইউনুচ শেখ (৫০), আসাদ শেখ (৩৫), রব শেখ (৪০), আশ্বাব শেখ (৬৫) সহ বেশ কয়েকজন বহিরাগত লোক নিয়ে জোরপূর্বক মোমেনা বেগমের মাছের ঘেরে প্রবেশ করে। তারা জাল দিয়ে প্রায় ৫ লাখ টাকার বাগদা, গলদা, রুই, কাতলা প্রজাতির মাছ ধরে নিয়ে যায়।
সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বাধা দিলে বিবাদীরা ক্ষিপ্ত হয়ে মোমেনা বেগমকে এলোপাতাড়ি মারধর করে হত্যার উদ্দেশ্যে কাদা মাটির ভেতরে পুঁতে রাখে। পরে স্বজনেরা তাকে উদ্ধার করে বাগেরহাট ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করে।
প্রতিবেশী ইউনুস আলী খান বলেন,আমি বারবার মোমেনা বেগমকে বলেছি তোমার ভাই মাছ ধরে নিয়ে যাচ্ছে যাক, তোমার কিছু করতে হবে না, তোমার ছেলেদের বলো। এই কথা বলে আমি ভাত খেতে চলে যাই। এরপর এসে দেখি, তাকে মারপিট করে কাদায় ফেলে রেখে গেছে।
আমার কথা হলো এই ঘের যদি তারও হয়, তাহলেও কি সে তার মায়ের পেটের বোনকে এভাবে মারতে পারে? যে জমি সে তার বোনের কাছে বিক্রি করে টাকা নিয়েছে, পরবর্তীতে এসে তো আর সেই জমিতে হাত দিতে পারে না।আমি চাই, অন্তত একটা বিচার হোক। আজকে তাকে আধমরা অবস্থায় ফেলে রেখে গেছে। যদি আজকে এখানে এসে খুঁজে পাওয়া না যেত তাহলে তো সে মারা যেত!
আসমা বেগম বলেন,আমরা সবাই জানি, এই জমি তার ভাই বিদেশে যাওয়ার সময় তার বোন কে ২০০৬ সালে দিয়ে গেছে। কিন্তু সেই জমি দখলের জন্য তার ভাই সকালবেলা ১৫ থেকে ২০ জন লোক নিয়ে ঘেরে জোর করে জাল ফেলে মাছ ধরতে নামে। খবর শুনে তার বোন মোমেনা সেখানে গিয়ে বাধা দেন। এসময় তারা মোমেনার সাথে অশ্রাব্য গালাগালি করতে থাকে।আমি তখন গিয়ে তার ছেলেদের বিষয়টি জানাই। এরপর আর আমি সেখানে থাকিনি। পরে এসে দেখি, অনেক খোঁজাখুঁজির পর তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। হঠাৎ শব্দ শুনে সবাই দৌড়ে গিয়ে দেখে, তিনি বিলের পাশে পড়ে আছেন।
মোমেনা বেগমের মেজ ছেলে সাইফুল ইসলাম বলেন,
“আমাদের ঘেরে এরা যখন মাছ ধরতে যায়, তখন মা আমাকে ফোন করে বলে— ‘তোর মামা অনেক লোকজন নিয়ে মাছ ধরতে যাচ্ছে, আমি যাচ্ছি, তুইও আয়।’ এটাই ছিল মায়ের শেষ কথা।
এরপর আমি দ্রুত পুলিশকে ফোন করি এবং মাঠে গিয়ে মাকে কল করি। একবার ফোন ধরলেও মা শুধু বলেন— ‘আমাকে দুইজন ধরে রেখেছে।’ এরপর আর কোনো সাড়া মেলেনি।
পরে সবাই মিলে খুঁজতে গিয়ে দেখি, মা ঘেরের মধ্যে অজ্ঞান অবস্থায় কাদায় পড়ে আছে। আমি তখন যদি না যেতাম, হয়তো আমার মাকে আর বাঁচাতে পারতাম না।আমি প্রশাসনের কাছে এই ইউনুচ শেখের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই ।
বৃদ্ধা মোমেনা বেগম আবেগভরে বলেন, “আমার নিজের ভাই, যাকে আমি কোলে-পিঠে মানুষ করেছি, আজ সেই ভাই-ই আমার উপর হাত তুলেছে। ২০০৬ সালে সে নিজেই আমাকে এই জমি বিক্রি করে টাকা নিয়েছিল। এখন আবার সেই জমি দখল নিতে এসে আমাকে মারধর করেছে। এই কষ্ট আমি কোথায় রাখবো?
অন্য কেউ যদি আমাকে মারতো, হয়তো এতটা কষ্ট লাগতো না। কিন্তু আমার নিজের ভাই-ই যখন এমন করে, তখন সেটা সহ্য করা বড়ই কঠিন। আমার আর কোনো ভাই নেই। আমি এই জালিম ভাইয়ের বিচার চাই।
তিনি আরও বলেন আমি তিল তিল করে কষ্টের টাকা জমিয়ে ওর কাছ থেকে এই এক বিঘা জমি কিনেছি । আজ সে-ই আমাকে আমার নিজের জমি থেকে উচ্ছেদ করতে চাইছে। আমি এর সঠিক বিচার চাই।
অভিযুক্ত ইউনুচ শেখ কে বার বার ফোনে কল দেওয়ার পর ও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বাগেরহাট সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মাহমুদুল উল-হাসান বলেন, ঘটনাটির বিষয়ে আমরা অভিযোগ পেয়েছি। সুষ্ঠু তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ ঘিরে ফেলেছে রুশ সেনাবাহিনী। এ শহর থেকে কারোরই বের হওয়ার এখন কোনো পথ নেই।
কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো রোববার বার্তা সংস্থা এএফপিকে এমন তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, রাশিয়ার সেনা সদস্যরা কিয়েভ ঘিরে রেখেছে। এই মুহূর্তে রাজধানীর বাসিন্দারা অবরুদ্ধ।
ইউক্রেনে রুশ সামরিক হামলার প্রতিবাদে জামার্নির রাজধানী বার্লিনে সমাবেশ করেছে এক লাখের বেশি মানুষ।
পূর্ব ইউরোপের দেশ ইউক্রেনের পতাকার আদলে নীল ও হলুদ রংয়ের পোশাকে ব্র্যান্ডেনবার্গ গেটে রুশ দূতাবাসের খুব কাছে জড়ো হয় তারা। ইউক্রেনীয়দের প্রতি সংহতি জানায় তারা।
এসময় প্রতিবাদকারীরা রুশ হামলাকে ধিক্কায় জানিয়ে ও তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধ শুরু না করতে মস্কোর প্রতি আহ্বান জানায়।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে লড়তে ইউক্রেনকে অস্ত্র কিনতে অর্থ সহায়তা দেবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
রোববার ইউরোপীয় ইউনিয়নের সর্বোচ্চ পদ ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেন এই ঘোষণা দেন বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
যুদ্ধরত কোনো দেশে অস্ত্র না পাঠানোর জন্য করা অঙ্গীকার ভেঙে এবার রুশ হামলার শিকার ইউক্রেনে অস্ত্র দেবে সুইডেন।
রোববার সুইডেনের কর্তৃপক্ষ এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
মস্কোর সঙ্গে শর্তহীন আলোচনা শুরু করতে ইউক্রেন-বেলারুশ সীমান্তে প্রতিনিধিদল পাঠাতে রাজি হয়েছে কিয়েভ।
এর আগে, রাশিয়ার দেয়া শর্তের কারণে বৈঠকে বসার প্রস্তাব নাকচ করে দেয় ইউক্রেন।
ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে রুশ প্রতিনিধি দল প্রতিবেশী বেলারুশের গোমেল শহরে পৌঁছে রোববার।
ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ বাধিয়ে পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েছে রাশিয়া। নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওপরও। এমন পরিস্থিতিতে অর্থসংকট তৈরি হতে পারে ভেবে ব্যাংক থেকে অর্থ তোলার চেষ্টা করছেন গ্রাহকরা।
তবে এ অবস্থায় উদ্বিগ্ন না হয়ে বরং গ্রাহকদের শান্ত থাকার পরামর্শ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তারা বলেছে, অর্থের অভাব নেই। সংকটে পড়ার সম্ভাবনাও নেই।
স্থানীয় সময় রোববার রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এক বিবৃতিতে একথা জানায় বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।
পারমাণবিক অস্ত্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকা সেনাদের এবার বিশেষভাবে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
রাশিয়ার সেনাদের রোববার খারকিভ শহর থেকে হটিয়ে দিয়েছে ইউক্রেন সেনারা। কিয়েভের এমন দাবির মুখে দেশটির বিরুদ্ধে এবার পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট।
ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রুশ প্রতিনিধিদল প্রতিবেশী বেলারুশের গোমেল শহরে পৌঁছেছে। তবে শর্তসাপেক্ষে আলোচনায় গোমেলে বসতে রাজি হয়নি ইউক্রেন।
রোববার ক্রেমলিনের মূখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভে রুশ সেনাদের সঙ্গে ইউক্রেন সেনাবাহিনীর তুমুল যুদ্ধ হয়েছে।
যুদ্ধের পর শহরটি এখন ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় গভর্নর ওলেগ সিনেগুবভ।
তিনি বলেন, ‘খারকিভ সম্পূর্ণরূপে আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ইউক্রেন সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়ে রাশিয়ার সেনা সদস্যদের হটিয়ে দিয়েছে।’
তিন দিনে হামলায় রাশিয়ার ৪ হাজার ৩০০ সেনা নিহতের দাবি করেছে ইউক্রেন। সেই সঙ্গে রাশিয়ার ২৭টি বিমান ও ২৬টি হেলিকপ্টার ধ্বংস করা হয়েছে বলেও দাবি করেছে দেশটি।
দেশটির ডেপুটি ডিফেন্স মিনিস্টার এই দাবি করেছেন।
বৃহস্পতিবার ইউক্রেনে হামলার নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
ডেপুটি ডিফেন্স মিনিস্টার কিয়েভ হান্না মালায়ার বলেন, এই হামলার পর তিন দিনে রাশিয়ার এ পরিমাণ সেনা হতাহত হয়েছে।
অবশ্য বিবিসি এর কোনো সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি।
এমনকি রাশিয়াও এখন পর্যন্ত তাদের হতাহতের কোনো সংখ্যা উল্লেখ করেনি।
কিয়েভ হান্না দাবি করেন, ইউক্রেনে হামলার পর রাশিয়ার ২৭টি বিমান ধ্বংস করেছে ইউক্রেন। এই তালিকায় আছে ২৬ হেলিকপ্টার, ১৪৬ ট্যাংক, ৭০৬ আর্মড ফাইটিং ভেহিকেল, ৪৯ ক্যানন, একটি এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, ৪ গার্ড মাল্টি রকেট লঞ্চার সিস্টেম এবং ৩০ টি গাড়ি।
বেসামরিক নাগরিক ও সাধারণ মানুষের জন্য নতুন একটি নীতিমালা জারি করেছে ইউক্রেন। তাদের সবাইকে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে রুশ বাহিনীর মোকাবিলায় কাজ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বলা হয়েছে, ‘আপনার কাছে অস্ত্র বা গোলাবারুদ থাকুক বা না থাকুক, যুদ্ধের সম্ভাব্য সব উপায় ব্যবহার করুন।’
সাধারণ মানুষকে কয়েকটি বিষয় বলা হয়েছে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে। সেগুলো হলো-
ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলের একটি শহর দখল করে নিয়েছে রুশ সেনারা।
দেশটির বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলের শহর নোভা কাকোভকা রাশিয়ার বাহিনী নিজেেদর করে নিয়েছে।
রাশিয়ান সেনারা এখন নোভা কাকোভকা বা নিউ কাকোভকা দখল করেছে। এটি খুব ছোট শহর, তবে এটি কৌশলগত দিক বিবেচনায় ইউক্রেনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়।
শহরটির অবস্থান দিনিপার নদীর পারে এবং এটি সরাসরি ক্রিমিয়ান উপদ্বীপে পানি সরবরাহ করে।
শহরটির মেয়র ভলদিমির কোভালেঙ্ক বলেন, রাশিয়ার সেনারা শহরটি দখল করে নিয়েছে এবং শহরের এক্সিকিউটিভ কমিটি বাতিল করে দিয়েছে। তারা সব ধরনের ভবন থেকে ইউক্রেনের পতাকা নামিয়ে ফেলেছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইউক্রেন দখলে দক্ষিণ দিক থেকে রাশিয়ার অগ্রগতি খুব বেশি। রুশ সেনারা এর আগেই দক্ষিণের খোরসান, মাইকোলভ এবং মেলিটোপল শহর দখলে হুমকি দিয়ে এসেছে।
সুইফট নেটওয়ার্ক থেকে রাশিয়াকে নিষিদ্ধ ঘোষণায় পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শিমিহাল।
তিনি টু্ইট করেন, ‘আজ যাদের সঙ্গে কথা বললাম, সব সহযোগীদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা।’
‘এই কঠিন সময়ে আপনাদের সহায়তা ও সমর্থন সত্যিই আমাদের অনুপ্রাণিত করে। আপনাদের এই অবদান ইউক্রেনের জনগণ কখনও ভুলবে না।’
Grateful to all our partners I talked today - 🇨🇦, 🇵🇱, 🇱🇹, 🇱🇻, 🇪🇪, 🇳🇱, 🇨🇿, 🇸🇰, 🇸🇮, 🇹🇩, 🇸🇪, 🇨🇭, 🇱🇺, @EU_Commission 🇪🇺! Appreciate your support and real help in this dark time. Ukrainian people will never forget this! Keep holding the line! We are on our land!
— Denys Shmyhal (@Denys_Shmyhal) February 26, 2022
ইউক্রেনে হামলার চতুর্থ দিনে দেশটির শহর খারকিভে একটি প্রাকৃতিক গ্যাস পাইপলাইনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রুশ সেনারা।
ইউক্রেনের বিশেষ যোগাযোগ ও তথ্য সুরক্ষা বিভাগ থেকে হামলার খবরটি জানানো হয়েছে।
সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার খবরে বলা হয়, ম্যাসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে হামলার পর সেখানে মাশরুম আকৃতির ধোঁয়া দেখা গেছে।
তবে তাৎক্ষণিকভাবে এটা জানা সম্ভব হয়নি যে, পাইপলাইনটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এতে শহর ও শহরের বাইরে গ্যাস সরবরাহে কোনো ব্যাঘাত ঘটেছে কি না।
হামলা হলেও ইউক্রেন রাশিয়ার প্রাকৃতিক গ্যাস পশ্চিমা দেশগুলোতে পাঠানো অব্যাহত রেখেছে বলে জানিয়েছে।
জাতিসংঘের মানবিক বিষয় সমন্বয় কার্যালয় ওসিএইচএ সংস্থাটির মানবাধিকার দপ্তরের বরাত দিয়ে ইউক্রেনে হতাহতের সংখ্যা জানিয়েছে।
যেকোনো সংঘাতে নিহত ও আহত ব্যক্তির সংখ্যা নিরূপণে যাচাই ও প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে কোনো ফাঁকফোকর রাখে না মানবাধিকার দপ্তর।
ওসিএইচএ আরও জানায়, অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় হাজারো মানুষ পানি, বিদ্যুৎ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এটি ইউক্রেনজুড়ে (বিশেষত উত্তর, পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চল) ‘মানবিক বিপর্যয়কর’ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেনে অন্তত ২৪০ জন বেসামরিক নাগরিক হতাহত হয়েছে বলে নিশ্চিত হয়েছে জাতিসংঘ। আন্তরাষ্ট্রীয় সংস্থাটি জানিয়েছে, তাদের মধ্যে অন্তত ৬৪ জন নিহত হয়েছে।
জাতিসংঘ মনে করছে, হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে উল্লেখযোগ্য হারে বেশি হতে পারে। কারণ অনেক জায়গায় হতাহতের খবর নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
রাশিয়ার নেতা ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের সঙ্গে শান্তির পথে এগিয়ে না এলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে সোমবার নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ। ওয়াশিংটন থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
হোয়াইট হাউসে আলোচনার পর ম্যাখোঁ সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিশ্বাস করেন, আমরা একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে পারি এবং তিনি বিশ্বাস করেন যে, প্রেসিডেন্ট পুতিনও একটি শান্তি চুক্তি চান।’
‘কিন্তু যদি শেষ পর্যন্ত এই প্রক্রিয়া প্রত্যাখ্যানের মাধ্যমে শেষ হয়, তাহলে আমরাও বলতে প্রস্তুত যে আমাদের নিষেধাজ্ঞা বৃদ্ধি করা দরকার।’
তিনি ভারতের ওপর ট্রাম্প প্রশাসন আরোপিত সাম্প্রতিক দ্বিতীয় নিষেধাজ্ঞার দিকে ইঙ্গিত করেন। পুতিনের ইউক্রেন আক্রমণের ফলে পশ্চিমা দেশগুলো নিষেধাজ্ঞার কারণে জ্বালানি খরচ কমিয়ে দেওয়ার পর ভারত রাশিয়ার জ্বালানির একটি প্রধান ক্রেতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
ম্যাখোঁ বলেন, ‘ভারতের ওপর দ্বিতীয় নিষেধাজ্ঞার ‘অনেক প্রভাব পড়েছে’।
আলাস্কায় আলোচনার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট পুতিনকে স্বাগত জানানোর তিন দিন পর ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে হোয়াইট হাউসে আমন্ত্রণ জানান।
সপ্তাহান্তে ট্রাম্প আবারও প্রকাশ্যে ইউক্রেনকে অঞ্চল ছেড়ে দেওয়ার জন্য চাপ দেন। তিনি জেলেনস্কি নয় পুতিনের পক্ষ নেন, যিনি রাশিয়ার জোর করে দখল করা সমস্ত অঞ্চল রক্ষা করার জন্য জোর দিয়েছেন।
মার্কিন নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেওয়ার আগে ইউক্রেনকে ছাড় দেওয়া প্রয়োজন ট্রাম্প এমন কিছু বলেছেন কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ম্যাখোঁ বলেন, ‘না, এটি মোটেও আলোচনা করা হয়নি। আমরা এ থেকে অনেক দূরে।’
তিনি বলেন, ট্রাম্প এবং ইউরোপীয় নেতারা একমত হয়েছেন যে রাশিয়ার সঙ্গে ভবিষ্যতের চুক্তিতে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর আকারের ওপর কোনও বিধিনিষেধ থাকতে পারে না।
ওয়াশিংটনে বৈঠকে থাকা সমস্ত নেতা ‘যে কোনও আক্রমণের চেষ্টা প্রতিহত করতে পারার মতো একটি শক্তিশালী ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর’ প্রয়োজনীয়তাকে সমর্থন করেন।
রাশিয়া ও ইউক্রেন ‘আগামী দিনে’ পুনরায় যোগাযোগ শুরু করবে এবং দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে’ ট্রাম্প, ‘ পুতিন ও জেলেনস্কির একটি সম্ভাব্য ত্রি-পক্ষীয় শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে বলে ম্যাখোঁ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ ঘিরে ফেলেছে রুশ সেনাবাহিনী। এ শহর থেকে কারোরই বের হওয়ার এখন কোনো পথ নেই।
কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো রোববার বার্তা সংস্থা এএফপিকে এমন তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, রাশিয়ার সেনা সদস্যরা কিয়েভ ঘিরে রেখেছে। এই মুহূর্তে রাজধানীর বাসিন্দারা অবরুদ্ধ।
ইউক্রেনে রুশ সামরিক হামলার প্রতিবাদে জামার্নির রাজধানী বার্লিনে সমাবেশ করেছে এক লাখের বেশি মানুষ।
পূর্ব ইউরোপের দেশ ইউক্রেনের পতাকার আদলে নীল ও হলুদ রংয়ের পোশাকে ব্র্যান্ডেনবার্গ গেটে রুশ দূতাবাসের খুব কাছে জড়ো হয় তারা। ইউক্রেনীয়দের প্রতি সংহতি জানায় তারা।
এসময় প্রতিবাদকারীরা রুশ হামলাকে ধিক্কায় জানিয়ে ও তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধ শুরু না করতে মস্কোর প্রতি আহ্বান জানায়।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে লড়তে ইউক্রেনকে অস্ত্র কিনতে অর্থ সহায়তা দেবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
রোববার ইউরোপীয় ইউনিয়নের সর্বোচ্চ পদ ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেন এই ঘোষণা দেন বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
যুদ্ধরত কোনো দেশে অস্ত্র না পাঠানোর জন্য করা অঙ্গীকার ভেঙে এবার রুশ হামলার শিকার ইউক্রেনে অস্ত্র দেবে সুইডেন।
রোববার সুইডেনের কর্তৃপক্ষ এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
মস্কোর সঙ্গে শর্তহীন আলোচনা শুরু করতে ইউক্রেন-বেলারুশ সীমান্তে প্রতিনিধিদল পাঠাতে রাজি হয়েছে কিয়েভ।
এর আগে, রাশিয়ার দেয়া শর্তের কারণে বৈঠকে বসার প্রস্তাব নাকচ করে দেয় ইউক্রেন।
ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে রুশ প্রতিনিধি দল প্রতিবেশী বেলারুশের গোমেল শহরে পৌঁছে রোববার।
ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ বাধিয়ে পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েছে রাশিয়া। নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওপরও। এমন পরিস্থিতিতে অর্থসংকট তৈরি হতে পারে ভেবে ব্যাংক থেকে অর্থ তোলার চেষ্টা করছেন গ্রাহকরা।
তবে এ অবস্থায় উদ্বিগ্ন না হয়ে বরং গ্রাহকদের শান্ত থাকার পরামর্শ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তারা বলেছে, অর্থের অভাব নেই। সংকটে পড়ার সম্ভাবনাও নেই।
স্থানীয় সময় রোববার রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এক বিবৃতিতে একথা জানায় বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।
পারমাণবিক অস্ত্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকা সেনাদের এবার বিশেষভাবে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
রাশিয়ার সেনাদের রোববার খারকিভ শহর থেকে হটিয়ে দিয়েছে ইউক্রেন সেনারা। কিয়েভের এমন দাবির মুখে দেশটির বিরুদ্ধে এবার পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট।
ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রুশ প্রতিনিধিদল প্রতিবেশী বেলারুশের গোমেল শহরে পৌঁছেছে। তবে শর্তসাপেক্ষে আলোচনায় গোমেলে বসতে রাজি হয়নি ইউক্রেন।
রোববার ক্রেমলিনের মূখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভে রুশ সেনাদের সঙ্গে ইউক্রেন সেনাবাহিনীর তুমুল যুদ্ধ হয়েছে।
যুদ্ধের পর শহরটি এখন ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় গভর্নর ওলেগ সিনেগুবভ।
তিনি বলেন, ‘খারকিভ সম্পূর্ণরূপে আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ইউক্রেন সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়ে রাশিয়ার সেনা সদস্যদের হটিয়ে দিয়েছে।’
তিন দিনে হামলায় রাশিয়ার ৪ হাজার ৩০০ সেনা নিহতের দাবি করেছে ইউক্রেন। সেই সঙ্গে রাশিয়ার ২৭টি বিমান ও ২৬টি হেলিকপ্টার ধ্বংস করা হয়েছে বলেও দাবি করেছে দেশটি।
দেশটির ডেপুটি ডিফেন্স মিনিস্টার এই দাবি করেছেন।
বৃহস্পতিবার ইউক্রেনে হামলার নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
ডেপুটি ডিফেন্স মিনিস্টার কিয়েভ হান্না মালায়ার বলেন, এই হামলার পর তিন দিনে রাশিয়ার এ পরিমাণ সেনা হতাহত হয়েছে।
অবশ্য বিবিসি এর কোনো সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি।
এমনকি রাশিয়াও এখন পর্যন্ত তাদের হতাহতের কোনো সংখ্যা উল্লেখ করেনি।
কিয়েভ হান্না দাবি করেন, ইউক্রেনে হামলার পর রাশিয়ার ২৭টি বিমান ধ্বংস করেছে ইউক্রেন। এই তালিকায় আছে ২৬ হেলিকপ্টার, ১৪৬ ট্যাংক, ৭০৬ আর্মড ফাইটিং ভেহিকেল, ৪৯ ক্যানন, একটি এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, ৪ গার্ড মাল্টি রকেট লঞ্চার সিস্টেম এবং ৩০ টি গাড়ি।
বেসামরিক নাগরিক ও সাধারণ মানুষের জন্য নতুন একটি নীতিমালা জারি করেছে ইউক্রেন। তাদের সবাইকে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে রুশ বাহিনীর মোকাবিলায় কাজ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বলা হয়েছে, ‘আপনার কাছে অস্ত্র বা গোলাবারুদ থাকুক বা না থাকুক, যুদ্ধের সম্ভাব্য সব উপায় ব্যবহার করুন।’
সাধারণ মানুষকে কয়েকটি বিষয় বলা হয়েছে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে। সেগুলো হলো-
ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলের একটি শহর দখল করে নিয়েছে রুশ সেনারা।
দেশটির বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলের শহর নোভা কাকোভকা রাশিয়ার বাহিনী নিজেেদর করে নিয়েছে।
রাশিয়ান সেনারা এখন নোভা কাকোভকা বা নিউ কাকোভকা দখল করেছে। এটি খুব ছোট শহর, তবে এটি কৌশলগত দিক বিবেচনায় ইউক্রেনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়।
শহরটির অবস্থান দিনিপার নদীর পারে এবং এটি সরাসরি ক্রিমিয়ান উপদ্বীপে পানি সরবরাহ করে।
শহরটির মেয়র ভলদিমির কোভালেঙ্ক বলেন, রাশিয়ার সেনারা শহরটি দখল করে নিয়েছে এবং শহরের এক্সিকিউটিভ কমিটি বাতিল করে দিয়েছে। তারা সব ধরনের ভবন থেকে ইউক্রেনের পতাকা নামিয়ে ফেলেছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইউক্রেন দখলে দক্ষিণ দিক থেকে রাশিয়ার অগ্রগতি খুব বেশি। রুশ সেনারা এর আগেই দক্ষিণের খোরসান, মাইকোলভ এবং মেলিটোপল শহর দখলে হুমকি দিয়ে এসেছে।
সুইফট নেটওয়ার্ক থেকে রাশিয়াকে নিষিদ্ধ ঘোষণায় পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শিমিহাল।
তিনি টু্ইট করেন, ‘আজ যাদের সঙ্গে কথা বললাম, সব সহযোগীদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা।’
‘এই কঠিন সময়ে আপনাদের সহায়তা ও সমর্থন সত্যিই আমাদের অনুপ্রাণিত করে। আপনাদের এই অবদান ইউক্রেনের জনগণ কখনও ভুলবে না।’
Grateful to all our partners I talked today - 🇨🇦, 🇵🇱, 🇱🇹, 🇱🇻, 🇪🇪, 🇳🇱, 🇨🇿, 🇸🇰, 🇸🇮, 🇹🇩, 🇸🇪, 🇨🇭, 🇱🇺, @EU_Commission 🇪🇺! Appreciate your support and real help in this dark time. Ukrainian people will never forget this! Keep holding the line! We are on our land!
— Denys Shmyhal (@Denys_Shmyhal) February 26, 2022
ইউক্রেনে হামলার চতুর্থ দিনে দেশটির শহর খারকিভে একটি প্রাকৃতিক গ্যাস পাইপলাইনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রুশ সেনারা।
ইউক্রেনের বিশেষ যোগাযোগ ও তথ্য সুরক্ষা বিভাগ থেকে হামলার খবরটি জানানো হয়েছে।
সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার খবরে বলা হয়, ম্যাসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে হামলার পর সেখানে মাশরুম আকৃতির ধোঁয়া দেখা গেছে।
তবে তাৎক্ষণিকভাবে এটা জানা সম্ভব হয়নি যে, পাইপলাইনটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এতে শহর ও শহরের বাইরে গ্যাস সরবরাহে কোনো ব্যাঘাত ঘটেছে কি না।
হামলা হলেও ইউক্রেন রাশিয়ার প্রাকৃতিক গ্যাস পশ্চিমা দেশগুলোতে পাঠানো অব্যাহত রেখেছে বলে জানিয়েছে।
জাতিসংঘের মানবিক বিষয় সমন্বয় কার্যালয় ওসিএইচএ সংস্থাটির মানবাধিকার দপ্তরের বরাত দিয়ে ইউক্রেনে হতাহতের সংখ্যা জানিয়েছে।
যেকোনো সংঘাতে নিহত ও আহত ব্যক্তির সংখ্যা নিরূপণে যাচাই ও প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে কোনো ফাঁকফোকর রাখে না মানবাধিকার দপ্তর।
ওসিএইচএ আরও জানায়, অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় হাজারো মানুষ পানি, বিদ্যুৎ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এটি ইউক্রেনজুড়ে (বিশেষত উত্তর, পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চল) ‘মানবিক বিপর্যয়কর’ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেনে অন্তত ২৪০ জন বেসামরিক নাগরিক হতাহত হয়েছে বলে নিশ্চিত হয়েছে জাতিসংঘ। আন্তরাষ্ট্রীয় সংস্থাটি জানিয়েছে, তাদের মধ্যে অন্তত ৬৪ জন নিহত হয়েছে।
জাতিসংঘ মনে করছে, হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে উল্লেখযোগ্য হারে বেশি হতে পারে। কারণ অনেক জায়গায় হতাহতের খবর নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি চাইলে তার দেশে রাশিয়ার যুদ্ধ থামাতে পারেন। তবে এর বিনিময়ে ইউক্রেনকে ক্রিমিয়া ফিরে পাওয়ার আশা ছেড়ে দিতে হবে, ন্যাটোতে যোগ দিতে পারবে না। আর এটাই হবে শান্তিচুক্তির একটি অংশ। হোয়াইট হাউসে ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের কয়েক ঘণ্টা আগে ট্রাম্প এ কথা বলেছেন। গত রোববার রাতে নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প এ সংক্রান্ত পোস্ট দেন।
ইউক্রেনে রাশিয়া পুরোদমে হামলা শুরুর আগে ২০১৪ সালে ইউক্রেনের কাছ থেকে ক্রিমিয়া অঞ্চল দখল করে নেয় মস্কো। এর আগে গত শুক্রবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলাস্কায় হওয়া বৈঠকে ট্রাম্প ইউক্রেনে সাময়িক যুদ্ধবিরতির দাবি থেকে সরে এসে স্থায়ী শান্তিচুক্তির আহ্বান জানান।
ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে যোগ দিতে রোববার রাতে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছেন জেলেনস্কি। তিনি কার্যকর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আবারও মিত্রদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
গতকাল সোমবার হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে জেলেনস্কির বৈঠক হওয়ার কথা। চলতি বছরের শুরুর দিকে ওয়াশিংটনে উত্তপ্ত বাগ্বিতণ্ডার পর এটা তাদের প্রথম বৈঠক। তবে এবার জেলেনস্কি একা নন। তার ইউরোপীয় মিত্ররাও ওয়াশিংটনে আলোচনায় রয়েছেন। ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুটে ও যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারসহ আরও কয়েকজন নেতা জেলেনস্কির সঙ্গে ওয়াশিংটনে আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক হওয়ার দুই দিন পরই জেলেনস্কির সঙ্গে আলোচনায় বসছেন ট্রাম্প।
গত রোববার এক মার্কিন দূত বলেছেন, ইউক্রেনের সঙ্গে ন্যাটোর মতো একটি নিরাপত্তা চুক্তিতে পৌঁছানোর বিষয়ে পুতিন সম্মত হতে পারেন।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট শুরু থেকেই ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগদানের প্রস্তাবটির বিরোধিতা করে আসছেন।
রোববার রাতে ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি চাইলে তাৎক্ষণিকভাবে রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধ করতে পারেন, অথবা চাইলে লড়াই চালিয়ে যেতে পারেন। মনে রাখুন, কীভাবে সবকিছু শুরু হয়েছিল। ওবামার আমলে ক্রিমিয়া চলে গিয়েছিল (১২ বছর আগে, একটিও গুলি ছোড়া হয়নি!), আর ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগদান, সেটা একেবারেই হবে না। কিছু বিষয় কখনোই বদলায় না!’
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্ৎস, ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার স্টাব ও ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েনও ওয়াশিংটনে সোমবারের আলোচনায় যোগ দেবেন। তবে তাদের মধ্যে কতজন হোয়াইট হাউসে যাবেন, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, ট্রাম্প কিছু শর্ত মানতে জেলেনস্কিকে চাপ দিতে পারেন বলে ইউরোপীয় কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বিবিসির সহযোগী প্রতিষ্ঠান সিবিএসকে বলেছেন, জেলেনস্কিকে ট্রাম্প শান্তিচুক্তি মানতে বাধ্য করবেন—এমন ধারণাটি পুরোপুরি ‘মিডিয়ার গালগল্প’ ছাড়া আর কিছুই নয়।
গত ফেব্রুয়ারিতে ওভাল অফিসে জেলেনস্কির সফরের মতো পরিস্থিতি যেন আর না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে এবার ন্যাটো নেতারাও সচেষ্ট। তখন ট্রাম্প ও মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্সের সঙ্গে জেলেনস্কি তীব্র তর্কে জড়িয়ে পড়লে আলোচনা ভন্ডুল হয়ে যায়।
ওই ঘটনা ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্কে টানাপোড়েন তৈরি করে।
গত এপ্রিল মাসে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইউক্রেন একটি খনিজসম্পদ চুক্তিতে সই করে। পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আগে ভ্যাটিকানে ট্রাম্প ও জেলেনস্কি ব্যক্তিগতভাবেও বৈঠক করেছিলেন। সেখানে ইউক্রেন স্পষ্ট জানায়, তারা মার্কিন অস্ত্রের জন্য অর্থ পরিশোধ করতে প্রস্তুত।
গত জুলাইয়ে দুই নেতার মধ্যে টেলিফোনে কথা হয়। ওই আলাপকে জেলেনস্কি বর্ণনা করেছিলেন, ‘এটাই আমাদের মধ্যে হওয়া সেরা আলাপ।’
সূত্র: বিবিসি
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ ঘিরে ফেলেছে রুশ সেনাবাহিনী। এ শহর থেকে কারোরই বের হওয়ার এখন কোনো পথ নেই।
কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো রোববার বার্তা সংস্থা এএফপিকে এমন তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, রাশিয়ার সেনা সদস্যরা কিয়েভ ঘিরে রেখেছে। এই মুহূর্তে রাজধানীর বাসিন্দারা অবরুদ্ধ।
ইউক্রেনে রুশ সামরিক হামলার প্রতিবাদে জামার্নির রাজধানী বার্লিনে সমাবেশ করেছে এক লাখের বেশি মানুষ।
পূর্ব ইউরোপের দেশ ইউক্রেনের পতাকার আদলে নীল ও হলুদ রংয়ের পোশাকে ব্র্যান্ডেনবার্গ গেটে রুশ দূতাবাসের খুব কাছে জড়ো হয় তারা। ইউক্রেনীয়দের প্রতি সংহতি জানায় তারা।
এসময় প্রতিবাদকারীরা রুশ হামলাকে ধিক্কায় জানিয়ে ও তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধ শুরু না করতে মস্কোর প্রতি আহ্বান জানায়।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে লড়তে ইউক্রেনকে অস্ত্র কিনতে অর্থ সহায়তা দেবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
রোববার ইউরোপীয় ইউনিয়নের সর্বোচ্চ পদ ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেন এই ঘোষণা দেন বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
যুদ্ধরত কোনো দেশে অস্ত্র না পাঠানোর জন্য করা অঙ্গীকার ভেঙে এবার রুশ হামলার শিকার ইউক্রেনে অস্ত্র দেবে সুইডেন।
রোববার সুইডেনের কর্তৃপক্ষ এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
মস্কোর সঙ্গে শর্তহীন আলোচনা শুরু করতে ইউক্রেন-বেলারুশ সীমান্তে প্রতিনিধিদল পাঠাতে রাজি হয়েছে কিয়েভ।
এর আগে, রাশিয়ার দেয়া শর্তের কারণে বৈঠকে বসার প্রস্তাব নাকচ করে দেয় ইউক্রেন।
ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে রুশ প্রতিনিধি দল প্রতিবেশী বেলারুশের গোমেল শহরে পৌঁছে রোববার।
ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ বাধিয়ে পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েছে রাশিয়া। নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওপরও। এমন পরিস্থিতিতে অর্থসংকট তৈরি হতে পারে ভেবে ব্যাংক থেকে অর্থ তোলার চেষ্টা করছেন গ্রাহকরা।
তবে এ অবস্থায় উদ্বিগ্ন না হয়ে বরং গ্রাহকদের শান্ত থাকার পরামর্শ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তারা বলেছে, অর্থের অভাব নেই। সংকটে পড়ার সম্ভাবনাও নেই।
স্থানীয় সময় রোববার রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এক বিবৃতিতে একথা জানায় বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।
পারমাণবিক অস্ত্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকা সেনাদের এবার বিশেষভাবে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
রাশিয়ার সেনাদের রোববার খারকিভ শহর থেকে হটিয়ে দিয়েছে ইউক্রেন সেনারা। কিয়েভের এমন দাবির মুখে দেশটির বিরুদ্ধে এবার পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট।
ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রুশ প্রতিনিধিদল প্রতিবেশী বেলারুশের গোমেল শহরে পৌঁছেছে। তবে শর্তসাপেক্ষে আলোচনায় গোমেলে বসতে রাজি হয়নি ইউক্রেন।
রোববার ক্রেমলিনের মূখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভে রুশ সেনাদের সঙ্গে ইউক্রেন সেনাবাহিনীর তুমুল যুদ্ধ হয়েছে।
যুদ্ধের পর শহরটি এখন ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় গভর্নর ওলেগ সিনেগুবভ।
তিনি বলেন, ‘খারকিভ সম্পূর্ণরূপে আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ইউক্রেন সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়ে রাশিয়ার সেনা সদস্যদের হটিয়ে দিয়েছে।’
তিন দিনে হামলায় রাশিয়ার ৪ হাজার ৩০০ সেনা নিহতের দাবি করেছে ইউক্রেন। সেই সঙ্গে রাশিয়ার ২৭টি বিমান ও ২৬টি হেলিকপ্টার ধ্বংস করা হয়েছে বলেও দাবি করেছে দেশটি।
দেশটির ডেপুটি ডিফেন্স মিনিস্টার এই দাবি করেছেন।
বৃহস্পতিবার ইউক্রেনে হামলার নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
ডেপুটি ডিফেন্স মিনিস্টার কিয়েভ হান্না মালায়ার বলেন, এই হামলার পর তিন দিনে রাশিয়ার এ পরিমাণ সেনা হতাহত হয়েছে।
অবশ্য বিবিসি এর কোনো সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি।
এমনকি রাশিয়াও এখন পর্যন্ত তাদের হতাহতের কোনো সংখ্যা উল্লেখ করেনি।
কিয়েভ হান্না দাবি করেন, ইউক্রেনে হামলার পর রাশিয়ার ২৭টি বিমান ধ্বংস করেছে ইউক্রেন। এই তালিকায় আছে ২৬ হেলিকপ্টার, ১৪৬ ট্যাংক, ৭০৬ আর্মড ফাইটিং ভেহিকেল, ৪৯ ক্যানন, একটি এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, ৪ গার্ড মাল্টি রকেট লঞ্চার সিস্টেম এবং ৩০ টি গাড়ি।
বেসামরিক নাগরিক ও সাধারণ মানুষের জন্য নতুন একটি নীতিমালা জারি করেছে ইউক্রেন। তাদের সবাইকে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে রুশ বাহিনীর মোকাবিলায় কাজ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বলা হয়েছে, ‘আপনার কাছে অস্ত্র বা গোলাবারুদ থাকুক বা না থাকুক, যুদ্ধের সম্ভাব্য সব উপায় ব্যবহার করুন।’
সাধারণ মানুষকে কয়েকটি বিষয় বলা হয়েছে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে। সেগুলো হলো-
ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলের একটি শহর দখল করে নিয়েছে রুশ সেনারা।
দেশটির বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলের শহর নোভা কাকোভকা রাশিয়ার বাহিনী নিজেেদর করে নিয়েছে।
রাশিয়ান সেনারা এখন নোভা কাকোভকা বা নিউ কাকোভকা দখল করেছে। এটি খুব ছোট শহর, তবে এটি কৌশলগত দিক বিবেচনায় ইউক্রেনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়।
শহরটির অবস্থান দিনিপার নদীর পারে এবং এটি সরাসরি ক্রিমিয়ান উপদ্বীপে পানি সরবরাহ করে।
শহরটির মেয়র ভলদিমির কোভালেঙ্ক বলেন, রাশিয়ার সেনারা শহরটি দখল করে নিয়েছে এবং শহরের এক্সিকিউটিভ কমিটি বাতিল করে দিয়েছে। তারা সব ধরনের ভবন থেকে ইউক্রেনের পতাকা নামিয়ে ফেলেছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইউক্রেন দখলে দক্ষিণ দিক থেকে রাশিয়ার অগ্রগতি খুব বেশি। রুশ সেনারা এর আগেই দক্ষিণের খোরসান, মাইকোলভ এবং মেলিটোপল শহর দখলে হুমকি দিয়ে এসেছে।
সুইফট নেটওয়ার্ক থেকে রাশিয়াকে নিষিদ্ধ ঘোষণায় পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শিমিহাল।
তিনি টু্ইট করেন, ‘আজ যাদের সঙ্গে কথা বললাম, সব সহযোগীদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা।’
‘এই কঠিন সময়ে আপনাদের সহায়তা ও সমর্থন সত্যিই আমাদের অনুপ্রাণিত করে। আপনাদের এই অবদান ইউক্রেনের জনগণ কখনও ভুলবে না।’
Grateful to all our partners I talked today - 🇨🇦, 🇵🇱, 🇱🇹, 🇱🇻, 🇪🇪, 🇳🇱, 🇨🇿, 🇸🇰, 🇸🇮, 🇹🇩, 🇸🇪, 🇨🇭, 🇱🇺, @EU_Commission 🇪🇺! Appreciate your support and real help in this dark time. Ukrainian people will never forget this! Keep holding the line! We are on our land!
— Denys Shmyhal (@Denys_Shmyhal) February 26, 2022
ইউক্রেনে হামলার চতুর্থ দিনে দেশটির শহর খারকিভে একটি প্রাকৃতিক গ্যাস পাইপলাইনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রুশ সেনারা।
ইউক্রেনের বিশেষ যোগাযোগ ও তথ্য সুরক্ষা বিভাগ থেকে হামলার খবরটি জানানো হয়েছে।
সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার খবরে বলা হয়, ম্যাসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে হামলার পর সেখানে মাশরুম আকৃতির ধোঁয়া দেখা গেছে।
তবে তাৎক্ষণিকভাবে এটা জানা সম্ভব হয়নি যে, পাইপলাইনটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এতে শহর ও শহরের বাইরে গ্যাস সরবরাহে কোনো ব্যাঘাত ঘটেছে কি না।
হামলা হলেও ইউক্রেন রাশিয়ার প্রাকৃতিক গ্যাস পশ্চিমা দেশগুলোতে পাঠানো অব্যাহত রেখেছে বলে জানিয়েছে।
জাতিসংঘের মানবিক বিষয় সমন্বয় কার্যালয় ওসিএইচএ সংস্থাটির মানবাধিকার দপ্তরের বরাত দিয়ে ইউক্রেনে হতাহতের সংখ্যা জানিয়েছে।
যেকোনো সংঘাতে নিহত ও আহত ব্যক্তির সংখ্যা নিরূপণে যাচাই ও প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে কোনো ফাঁকফোকর রাখে না মানবাধিকার দপ্তর।
ওসিএইচএ আরও জানায়, অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় হাজারো মানুষ পানি, বিদ্যুৎ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এটি ইউক্রেনজুড়ে (বিশেষত উত্তর, পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চল) ‘মানবিক বিপর্যয়কর’ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেনে অন্তত ২৪০ জন বেসামরিক নাগরিক হতাহত হয়েছে বলে নিশ্চিত হয়েছে জাতিসংঘ। আন্তরাষ্ট্রীয় সংস্থাটি জানিয়েছে, তাদের মধ্যে অন্তত ৬৪ জন নিহত হয়েছে।
জাতিসংঘ মনে করছে, হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে উল্লেখযোগ্য হারে বেশি হতে পারে। কারণ অনেক জায়গায় হতাহতের খবর নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
জিম্মিদের ছবি হাতে, হলুদ পতাকা নেড়ে, ঢোল বাজিয়ে এবং বন্দি ইসরায়েলিদের ঘরে ফিরিয়ে আনার দাবিতে স্লোগান দিতে দিতে গত রোববার গাজায় যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে হাজার হাজার মানুষ তেল আবিবের রাস্তায় নেমে আসে।
তেল আবিব থেকে এএফপি জানায়, ৫০ বছর বয়সি আরবি শিক্ষক ওফির পেনসো বলেন, ‘আমরা এখানে ইসরাইলি সরকারকে এটা স্পষ্ট করে বলতে এসেছি যে, প্রায় ৭০০ দিন ধরে হামাসের সুড়ঙ্গে বন্দী থাকা জিম্মিদের উদ্ধার করার এটাই সম্ভবত শেষ মুহূর্ত।’
২০২৩ সালে হামাসের হামলার পর ২২ মাসের যুদ্ধের বেশিরভাগ সময়ে নিয়মিত বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে, তবে গত রোববারের বিক্ষোভ এখনো পর্যন্ত সবচেয়ে বড় বিক্ষোভগুলোর মধ্যে একটি বলে মনে হচ্ছে।
এক সপ্তাহেরও বেশি সময় আগে সরকার গাজা সিটি এবং আশেপাশের ক্যাম্পগুলো দখল করে নতুন আক্রমণ চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর আন্দোলন নতুন করে শক্তি সঞ্চার করে।
গাজা উপত্যকার সর্বাধিক জনবহুল এলাকা জয় করার প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর অঙ্গীকার আন্তর্জাতিকভাবে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে, অন্যদিকে সাহায্য সংস্থা এবং জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা এই অঞ্চলে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন।
ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের প্রকাশিত সাম্প্রতিক ভিডিও ফুটেজে জিম্মিদের অত্যন্ত ক্ষীণ এবং ফ্যাকাশে দেখা গেছে, যা বন্দিদের স্বাস্থ্যের অবস্থা আগের চেয়ে আরও নাজুক হওয়ার আশঙ্কা জাগিয়ে তুলেছে।
২০২৩ সালের অক্টোবরে ফিলিস্তিনের হামাসের হাতে জিম্মি হওয়া ২৫১ জনের মধ্যে ৪৯ জন এখোনো গাজা উপত্যকায় রয়ে গেছে, যার মধ্যে ২৭ জন নিহত বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
শহরের রাস্তা ধরে, জনতা আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু তেল আবিবে অবস্থিত কাঁচের টাওয়ারে ঢাকা, হোস্টেজ স্কোয়ারে জড়ো হয়।
আইনভ জাঙ্গাউকারের ছেলে মাতান গাজায় বন্দী রয়েছে। তিনি জনতাকে বলেন, ‘ইসরায়েলি সরকার কখনও একটি চুক্তি ও যুদ্ধের অবসানের জন্য একটি প্রকৃত উদ্যোগের প্রস্তাব দেয়নি।’
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ ঘিরে ফেলেছে রুশ সেনাবাহিনী। এ শহর থেকে কারোরই বের হওয়ার এখন কোনো পথ নেই।
কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো রোববার বার্তা সংস্থা এএফপিকে এমন তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, রাশিয়ার সেনা সদস্যরা কিয়েভ ঘিরে রেখেছে। এই মুহূর্তে রাজধানীর বাসিন্দারা অবরুদ্ধ।
ইউক্রেনে রুশ সামরিক হামলার প্রতিবাদে জামার্নির রাজধানী বার্লিনে সমাবেশ করেছে এক লাখের বেশি মানুষ।
পূর্ব ইউরোপের দেশ ইউক্রেনের পতাকার আদলে নীল ও হলুদ রংয়ের পোশাকে ব্র্যান্ডেনবার্গ গেটে রুশ দূতাবাসের খুব কাছে জড়ো হয় তারা। ইউক্রেনীয়দের প্রতি সংহতি জানায় তারা।
এসময় প্রতিবাদকারীরা রুশ হামলাকে ধিক্কায় জানিয়ে ও তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধ শুরু না করতে মস্কোর প্রতি আহ্বান জানায়।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে লড়তে ইউক্রেনকে অস্ত্র কিনতে অর্থ সহায়তা দেবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
রোববার ইউরোপীয় ইউনিয়নের সর্বোচ্চ পদ ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেন এই ঘোষণা দেন বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
যুদ্ধরত কোনো দেশে অস্ত্র না পাঠানোর জন্য করা অঙ্গীকার ভেঙে এবার রুশ হামলার শিকার ইউক্রেনে অস্ত্র দেবে সুইডেন।
রোববার সুইডেনের কর্তৃপক্ষ এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
মস্কোর সঙ্গে শর্তহীন আলোচনা শুরু করতে ইউক্রেন-বেলারুশ সীমান্তে প্রতিনিধিদল পাঠাতে রাজি হয়েছে কিয়েভ।
এর আগে, রাশিয়ার দেয়া শর্তের কারণে বৈঠকে বসার প্রস্তাব নাকচ করে দেয় ইউক্রেন।
ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে রুশ প্রতিনিধি দল প্রতিবেশী বেলারুশের গোমেল শহরে পৌঁছে রোববার।
ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ বাধিয়ে পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েছে রাশিয়া। নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওপরও। এমন পরিস্থিতিতে অর্থসংকট তৈরি হতে পারে ভেবে ব্যাংক থেকে অর্থ তোলার চেষ্টা করছেন গ্রাহকরা।
তবে এ অবস্থায় উদ্বিগ্ন না হয়ে বরং গ্রাহকদের শান্ত থাকার পরামর্শ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তারা বলেছে, অর্থের অভাব নেই। সংকটে পড়ার সম্ভাবনাও নেই।
স্থানীয় সময় রোববার রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এক বিবৃতিতে একথা জানায় বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।
পারমাণবিক অস্ত্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকা সেনাদের এবার বিশেষভাবে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
রাশিয়ার সেনাদের রোববার খারকিভ শহর থেকে হটিয়ে দিয়েছে ইউক্রেন সেনারা। কিয়েভের এমন দাবির মুখে দেশটির বিরুদ্ধে এবার পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট।
ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রুশ প্রতিনিধিদল প্রতিবেশী বেলারুশের গোমেল শহরে পৌঁছেছে। তবে শর্তসাপেক্ষে আলোচনায় গোমেলে বসতে রাজি হয়নি ইউক্রেন।
রোববার ক্রেমলিনের মূখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভে রুশ সেনাদের সঙ্গে ইউক্রেন সেনাবাহিনীর তুমুল যুদ্ধ হয়েছে।
যুদ্ধের পর শহরটি এখন ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় গভর্নর ওলেগ সিনেগুবভ।
তিনি বলেন, ‘খারকিভ সম্পূর্ণরূপে আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ইউক্রেন সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়ে রাশিয়ার সেনা সদস্যদের হটিয়ে দিয়েছে।’
তিন দিনে হামলায় রাশিয়ার ৪ হাজার ৩০০ সেনা নিহতের দাবি করেছে ইউক্রেন। সেই সঙ্গে রাশিয়ার ২৭টি বিমান ও ২৬টি হেলিকপ্টার ধ্বংস করা হয়েছে বলেও দাবি করেছে দেশটি।
দেশটির ডেপুটি ডিফেন্স মিনিস্টার এই দাবি করেছেন।
বৃহস্পতিবার ইউক্রেনে হামলার নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
ডেপুটি ডিফেন্স মিনিস্টার কিয়েভ হান্না মালায়ার বলেন, এই হামলার পর তিন দিনে রাশিয়ার এ পরিমাণ সেনা হতাহত হয়েছে।
অবশ্য বিবিসি এর কোনো সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি।
এমনকি রাশিয়াও এখন পর্যন্ত তাদের হতাহতের কোনো সংখ্যা উল্লেখ করেনি।
কিয়েভ হান্না দাবি করেন, ইউক্রেনে হামলার পর রাশিয়ার ২৭টি বিমান ধ্বংস করেছে ইউক্রেন। এই তালিকায় আছে ২৬ হেলিকপ্টার, ১৪৬ ট্যাংক, ৭০৬ আর্মড ফাইটিং ভেহিকেল, ৪৯ ক্যানন, একটি এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, ৪ গার্ড মাল্টি রকেট লঞ্চার সিস্টেম এবং ৩০ টি গাড়ি।
বেসামরিক নাগরিক ও সাধারণ মানুষের জন্য নতুন একটি নীতিমালা জারি করেছে ইউক্রেন। তাদের সবাইকে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে রুশ বাহিনীর মোকাবিলায় কাজ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বলা হয়েছে, ‘আপনার কাছে অস্ত্র বা গোলাবারুদ থাকুক বা না থাকুক, যুদ্ধের সম্ভাব্য সব উপায় ব্যবহার করুন।’
সাধারণ মানুষকে কয়েকটি বিষয় বলা হয়েছে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে। সেগুলো হলো-
ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলের একটি শহর দখল করে নিয়েছে রুশ সেনারা।
দেশটির বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলের শহর নোভা কাকোভকা রাশিয়ার বাহিনী নিজেেদর করে নিয়েছে।
রাশিয়ান সেনারা এখন নোভা কাকোভকা বা নিউ কাকোভকা দখল করেছে। এটি খুব ছোট শহর, তবে এটি কৌশলগত দিক বিবেচনায় ইউক্রেনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়।
শহরটির অবস্থান দিনিপার নদীর পারে এবং এটি সরাসরি ক্রিমিয়ান উপদ্বীপে পানি সরবরাহ করে।
শহরটির মেয়র ভলদিমির কোভালেঙ্ক বলেন, রাশিয়ার সেনারা শহরটি দখল করে নিয়েছে এবং শহরের এক্সিকিউটিভ কমিটি বাতিল করে দিয়েছে। তারা সব ধরনের ভবন থেকে ইউক্রেনের পতাকা নামিয়ে ফেলেছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইউক্রেন দখলে দক্ষিণ দিক থেকে রাশিয়ার অগ্রগতি খুব বেশি। রুশ সেনারা এর আগেই দক্ষিণের খোরসান, মাইকোলভ এবং মেলিটোপল শহর দখলে হুমকি দিয়ে এসেছে।
সুইফট নেটওয়ার্ক থেকে রাশিয়াকে নিষিদ্ধ ঘোষণায় পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শিমিহাল।
তিনি টু্ইট করেন, ‘আজ যাদের সঙ্গে কথা বললাম, সব সহযোগীদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা।’
‘এই কঠিন সময়ে আপনাদের সহায়তা ও সমর্থন সত্যিই আমাদের অনুপ্রাণিত করে। আপনাদের এই অবদান ইউক্রেনের জনগণ কখনও ভুলবে না।’
Grateful to all our partners I talked today - 🇨🇦, 🇵🇱, 🇱🇹, 🇱🇻, 🇪🇪, 🇳🇱, 🇨🇿, 🇸🇰, 🇸🇮, 🇹🇩, 🇸🇪, 🇨🇭, 🇱🇺, @EU_Commission 🇪🇺! Appreciate your support and real help in this dark time. Ukrainian people will never forget this! Keep holding the line! We are on our land!
— Denys Shmyhal (@Denys_Shmyhal) February 26, 2022
ইউক্রেনে হামলার চতুর্থ দিনে দেশটির শহর খারকিভে একটি প্রাকৃতিক গ্যাস পাইপলাইনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রুশ সেনারা।
ইউক্রেনের বিশেষ যোগাযোগ ও তথ্য সুরক্ষা বিভাগ থেকে হামলার খবরটি জানানো হয়েছে।
সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার খবরে বলা হয়, ম্যাসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে হামলার পর সেখানে মাশরুম আকৃতির ধোঁয়া দেখা গেছে।
তবে তাৎক্ষণিকভাবে এটা জানা সম্ভব হয়নি যে, পাইপলাইনটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এতে শহর ও শহরের বাইরে গ্যাস সরবরাহে কোনো ব্যাঘাত ঘটেছে কি না।
হামলা হলেও ইউক্রেন রাশিয়ার প্রাকৃতিক গ্যাস পশ্চিমা দেশগুলোতে পাঠানো অব্যাহত রেখেছে বলে জানিয়েছে।
জাতিসংঘের মানবিক বিষয় সমন্বয় কার্যালয় ওসিএইচএ সংস্থাটির মানবাধিকার দপ্তরের বরাত দিয়ে ইউক্রেনে হতাহতের সংখ্যা জানিয়েছে।
যেকোনো সংঘাতে নিহত ও আহত ব্যক্তির সংখ্যা নিরূপণে যাচাই ও প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে কোনো ফাঁকফোকর রাখে না মানবাধিকার দপ্তর।
ওসিএইচএ আরও জানায়, অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় হাজারো মানুষ পানি, বিদ্যুৎ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এটি ইউক্রেনজুড়ে (বিশেষত উত্তর, পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চল) ‘মানবিক বিপর্যয়কর’ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেনে অন্তত ২৪০ জন বেসামরিক নাগরিক হতাহত হয়েছে বলে নিশ্চিত হয়েছে জাতিসংঘ। আন্তরাষ্ট্রীয় সংস্থাটি জানিয়েছে, তাদের মধ্যে অন্তত ৬৪ জন নিহত হয়েছে।
জাতিসংঘ মনে করছে, হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে উল্লেখযোগ্য হারে বেশি হতে পারে। কারণ অনেক জায়গায় হতাহতের খবর নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
কায়রোতে অবস্থানরত হামাসের আলোচকরা গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে একটি নতুন প্রস্তাব পেয়েছেন। এ প্রস্তাবে প্রাথমিকভাবে ৬০ দিনের জন্য যুদ্ধবিরতি এবং দুই ধাপে জিম্মি মুক্তির পরিকল্পনা রাখা হয়েছে।
সোমবার ফিলিস্তিনের এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এএফপিকে এ তথ্য জানান।
গোপনীয়তা রক্ষার শর্তে ওই কর্মকর্তা বলেন, এই প্রস্তাবটি একটি কাঠামোগত চুক্তি, যা স্থায়ী যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার সূচনা করবে।
তিনি আরও বলেন, মধ্যস্থতাকারীদের দেওয়া এই প্রস্তাব পর্যালোচনার জন্য হামাস তাদের নেতাদের সঙ্গে এবং অন্যান্য ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীর নেতাদের সঙ্গে পরামর্শ করবে।
গত সপ্তাহে হামাস জানায়, তাদের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল কায়রোতে রয়েছে, যারা গাজায় যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে মিশরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করছে। গাজা যুদ্ধ এখন ২৩তম মাসে প্রবেশ করেছে।
কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি মিশরও ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে মধ্যস্থতায় জড়িত। তবে এ বছরের শুরুর দিকে স্বল্পস্থায়ী যুদ্ধবিরতির পর থেকে পরববর্তী পদক্ষেপ নিয়ে এখনো কোনো অগ্রগতি হয়নি।
মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর আবদেলাত্তি সোমবার গাজার রাফাহ সীমান্ত পরিদর্শনে গিয়ে বলেন, আমরা যখন এখানে কথা বলছি, তখন ফিলিস্তিনি ও কাতারি প্রতিনিধিরা মিশরে অবস্থান করছেন এবং তারা পদ্ধতিগত হত্যাকাণ্ড ও অনাহার বন্ধে প্রচেষ্টা জোরদার করছেন।
গত সপ্তাহে আবদেলাত্তি বলেন, কায়রো কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মিলে একটি ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তি করার জন্য কাজ করছে, যার আওতায় ‘কিছু জিম্মি এবং কিছু ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হবে এবং কোনো বাধা ছাড়া গাজায় মানবিক ও চিকিৎসা সহায়তা চালু হবে।’
গত মাসে কাতারের রাজধানী দোহায় টানা দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলা আলোচনায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি।
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ ঘিরে ফেলেছে রুশ সেনাবাহিনী। এ শহর থেকে কারোরই বের হওয়ার এখন কোনো পথ নেই।
কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো রোববার বার্তা সংস্থা এএফপিকে এমন তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, রাশিয়ার সেনা সদস্যরা কিয়েভ ঘিরে রেখেছে। এই মুহূর্তে রাজধানীর বাসিন্দারা অবরুদ্ধ।
ইউক্রেনে রুশ সামরিক হামলার প্রতিবাদে জামার্নির রাজধানী বার্লিনে সমাবেশ করেছে এক লাখের বেশি মানুষ।
পূর্ব ইউরোপের দেশ ইউক্রেনের পতাকার আদলে নীল ও হলুদ রংয়ের পোশাকে ব্র্যান্ডেনবার্গ গেটে রুশ দূতাবাসের খুব কাছে জড়ো হয় তারা। ইউক্রেনীয়দের প্রতি সংহতি জানায় তারা।
এসময় প্রতিবাদকারীরা রুশ হামলাকে ধিক্কায় জানিয়ে ও তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধ শুরু না করতে মস্কোর প্রতি আহ্বান জানায়।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে লড়তে ইউক্রেনকে অস্ত্র কিনতে অর্থ সহায়তা দেবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
রোববার ইউরোপীয় ইউনিয়নের সর্বোচ্চ পদ ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেন এই ঘোষণা দেন বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
যুদ্ধরত কোনো দেশে অস্ত্র না পাঠানোর জন্য করা অঙ্গীকার ভেঙে এবার রুশ হামলার শিকার ইউক্রেনে অস্ত্র দেবে সুইডেন।
রোববার সুইডেনের কর্তৃপক্ষ এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
মস্কোর সঙ্গে শর্তহীন আলোচনা শুরু করতে ইউক্রেন-বেলারুশ সীমান্তে প্রতিনিধিদল পাঠাতে রাজি হয়েছে কিয়েভ।
এর আগে, রাশিয়ার দেয়া শর্তের কারণে বৈঠকে বসার প্রস্তাব নাকচ করে দেয় ইউক্রেন।
ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে রুশ প্রতিনিধি দল প্রতিবেশী বেলারুশের গোমেল শহরে পৌঁছে রোববার।
ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ বাধিয়ে পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েছে রাশিয়া। নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওপরও। এমন পরিস্থিতিতে অর্থসংকট তৈরি হতে পারে ভেবে ব্যাংক থেকে অর্থ তোলার চেষ্টা করছেন গ্রাহকরা।
তবে এ অবস্থায় উদ্বিগ্ন না হয়ে বরং গ্রাহকদের শান্ত থাকার পরামর্শ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তারা বলেছে, অর্থের অভাব নেই। সংকটে পড়ার সম্ভাবনাও নেই।
স্থানীয় সময় রোববার রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এক বিবৃতিতে একথা জানায় বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।
পারমাণবিক অস্ত্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকা সেনাদের এবার বিশেষভাবে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
রাশিয়ার সেনাদের রোববার খারকিভ শহর থেকে হটিয়ে দিয়েছে ইউক্রেন সেনারা। কিয়েভের এমন দাবির মুখে দেশটির বিরুদ্ধে এবার পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট।
ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রুশ প্রতিনিধিদল প্রতিবেশী বেলারুশের গোমেল শহরে পৌঁছেছে। তবে শর্তসাপেক্ষে আলোচনায় গোমেলে বসতে রাজি হয়নি ইউক্রেন।
রোববার ক্রেমলিনের মূখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভে রুশ সেনাদের সঙ্গে ইউক্রেন সেনাবাহিনীর তুমুল যুদ্ধ হয়েছে।
যুদ্ধের পর শহরটি এখন ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় গভর্নর ওলেগ সিনেগুবভ।
তিনি বলেন, ‘খারকিভ সম্পূর্ণরূপে আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ইউক্রেন সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়ে রাশিয়ার সেনা সদস্যদের হটিয়ে দিয়েছে।’
তিন দিনে হামলায় রাশিয়ার ৪ হাজার ৩০০ সেনা নিহতের দাবি করেছে ইউক্রেন। সেই সঙ্গে রাশিয়ার ২৭টি বিমান ও ২৬টি হেলিকপ্টার ধ্বংস করা হয়েছে বলেও দাবি করেছে দেশটি।
দেশটির ডেপুটি ডিফেন্স মিনিস্টার এই দাবি করেছেন।
বৃহস্পতিবার ইউক্রেনে হামলার নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
ডেপুটি ডিফেন্স মিনিস্টার কিয়েভ হান্না মালায়ার বলেন, এই হামলার পর তিন দিনে রাশিয়ার এ পরিমাণ সেনা হতাহত হয়েছে।
অবশ্য বিবিসি এর কোনো সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি।
এমনকি রাশিয়াও এখন পর্যন্ত তাদের হতাহতের কোনো সংখ্যা উল্লেখ করেনি।
কিয়েভ হান্না দাবি করেন, ইউক্রেনে হামলার পর রাশিয়ার ২৭টি বিমান ধ্বংস করেছে ইউক্রেন। এই তালিকায় আছে ২৬ হেলিকপ্টার, ১৪৬ ট্যাংক, ৭০৬ আর্মড ফাইটিং ভেহিকেল, ৪৯ ক্যানন, একটি এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, ৪ গার্ড মাল্টি রকেট লঞ্চার সিস্টেম এবং ৩০ টি গাড়ি।
বেসামরিক নাগরিক ও সাধারণ মানুষের জন্য নতুন একটি নীতিমালা জারি করেছে ইউক্রেন। তাদের সবাইকে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে রুশ বাহিনীর মোকাবিলায় কাজ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বলা হয়েছে, ‘আপনার কাছে অস্ত্র বা গোলাবারুদ থাকুক বা না থাকুক, যুদ্ধের সম্ভাব্য সব উপায় ব্যবহার করুন।’
সাধারণ মানুষকে কয়েকটি বিষয় বলা হয়েছে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে। সেগুলো হলো-
ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলের একটি শহর দখল করে নিয়েছে রুশ সেনারা।
দেশটির বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলের শহর নোভা কাকোভকা রাশিয়ার বাহিনী নিজেেদর করে নিয়েছে।
রাশিয়ান সেনারা এখন নোভা কাকোভকা বা নিউ কাকোভকা দখল করেছে। এটি খুব ছোট শহর, তবে এটি কৌশলগত দিক বিবেচনায় ইউক্রেনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়।
শহরটির অবস্থান দিনিপার নদীর পারে এবং এটি সরাসরি ক্রিমিয়ান উপদ্বীপে পানি সরবরাহ করে।
শহরটির মেয়র ভলদিমির কোভালেঙ্ক বলেন, রাশিয়ার সেনারা শহরটি দখল করে নিয়েছে এবং শহরের এক্সিকিউটিভ কমিটি বাতিল করে দিয়েছে। তারা সব ধরনের ভবন থেকে ইউক্রেনের পতাকা নামিয়ে ফেলেছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইউক্রেন দখলে দক্ষিণ দিক থেকে রাশিয়ার অগ্রগতি খুব বেশি। রুশ সেনারা এর আগেই দক্ষিণের খোরসান, মাইকোলভ এবং মেলিটোপল শহর দখলে হুমকি দিয়ে এসেছে।
সুইফট নেটওয়ার্ক থেকে রাশিয়াকে নিষিদ্ধ ঘোষণায় পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শিমিহাল।
তিনি টু্ইট করেন, ‘আজ যাদের সঙ্গে কথা বললাম, সব সহযোগীদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা।’
‘এই কঠিন সময়ে আপনাদের সহায়তা ও সমর্থন সত্যিই আমাদের অনুপ্রাণিত করে। আপনাদের এই অবদান ইউক্রেনের জনগণ কখনও ভুলবে না।’
Grateful to all our partners I talked today - 🇨🇦, 🇵🇱, 🇱🇹, 🇱🇻, 🇪🇪, 🇳🇱, 🇨🇿, 🇸🇰, 🇸🇮, 🇹🇩, 🇸🇪, 🇨🇭, 🇱🇺, @EU_Commission 🇪🇺! Appreciate your support and real help in this dark time. Ukrainian people will never forget this! Keep holding the line! We are on our land!
— Denys Shmyhal (@Denys_Shmyhal) February 26, 2022
ইউক্রেনে হামলার চতুর্থ দিনে দেশটির শহর খারকিভে একটি প্রাকৃতিক গ্যাস পাইপলাইনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রুশ সেনারা।
ইউক্রেনের বিশেষ যোগাযোগ ও তথ্য সুরক্ষা বিভাগ থেকে হামলার খবরটি জানানো হয়েছে।
সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার খবরে বলা হয়, ম্যাসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে হামলার পর সেখানে মাশরুম আকৃতির ধোঁয়া দেখা গেছে।
তবে তাৎক্ষণিকভাবে এটা জানা সম্ভব হয়নি যে, পাইপলাইনটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এতে শহর ও শহরের বাইরে গ্যাস সরবরাহে কোনো ব্যাঘাত ঘটেছে কি না।
হামলা হলেও ইউক্রেন রাশিয়ার প্রাকৃতিক গ্যাস পশ্চিমা দেশগুলোতে পাঠানো অব্যাহত রেখেছে বলে জানিয়েছে।
জাতিসংঘের মানবিক বিষয় সমন্বয় কার্যালয় ওসিএইচএ সংস্থাটির মানবাধিকার দপ্তরের বরাত দিয়ে ইউক্রেনে হতাহতের সংখ্যা জানিয়েছে।
যেকোনো সংঘাতে নিহত ও আহত ব্যক্তির সংখ্যা নিরূপণে যাচাই ও প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে কোনো ফাঁকফোকর রাখে না মানবাধিকার দপ্তর।
ওসিএইচএ আরও জানায়, অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় হাজারো মানুষ পানি, বিদ্যুৎ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এটি ইউক্রেনজুড়ে (বিশেষত উত্তর, পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চল) ‘মানবিক বিপর্যয়কর’ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেনে অন্তত ২৪০ জন বেসামরিক নাগরিক হতাহত হয়েছে বলে নিশ্চিত হয়েছে জাতিসংঘ। আন্তরাষ্ট্রীয় সংস্থাটি জানিয়েছে, তাদের মধ্যে অন্তত ৬৪ জন নিহত হয়েছে।
জাতিসংঘ মনে করছে, হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে উল্লেখযোগ্য হারে বেশি হতে পারে। কারণ অনেক জায়গায় হতাহতের খবর নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান সোমবার আর্মেনিয়ার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। সেখানে তিনি ইরান সীমান্তের কাছে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত করিডোর ব্যবহার করে আজারবাইজানের একটি বিচ্ছিন্ন ভূখণ্ড যুক্ত করার ইস্যু নিয়ে আলোচনা করবেন।
করিডোরটি যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হোয়াইট হাউসে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে স্বাক্ষরিত এক শান্তি চুক্তির অংশ।
তেহরান থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, আর্মেনিয়ায় রওনা হওয়ার আগে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত বক্তব্যে পেজেশকিয়ান বলেন, এ অঞ্চলে মার্কিন কোম্পানিগুলোর (সম্ভাব্য) উপস্থিতি উদ্বেগজনক। আমরা এ বিষয়ে (আর্মেনীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে) আলোচনা করব এবং আমাদের উদ্বেগ প্রকাশ করব।
‘আন্তর্জাতিক শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য ট্রাম্প রুট (ট্রিপ)’ নামে পরিচিত এই স্থল করিডোরটি চলতি মাসের শুরুর দিকে ওয়াশিংটনে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির অংশ।
চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবিত রুটটির উন্নয়নাধিকার লাভ করবে, যা আজারবাইজানকে তার নাখচিভান এক্সক্লেভের সঙ্গে যুক্ত করবে এবং রুটটি ইরানের সীমান্তের কাছ দিয়ে অতিক্রম করবে।
ইরান দীর্ঘদিন ধরে এ পরিকল্পিত করিডরের বিরোধিতা করে আসছে, যা ‘জাঙ্গেজুর করিডোর’ নামেও পরিচিত।
তেহরানের আশঙ্কা, এটি ইরানকে আর্মেনিয়া ও ককেশাসের অন্যান্য অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে এবং এর ফলে সম্ভাব্য শত্রুভাবাপন্ন বিদেশি বাহিনী ইরানের সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থান নিতে পারবে।
চুক্তি স্বাক্ষরের পর থেকে ইরানি কর্মকর্তারা আর্মেনিয়াকে সতর্কবার্তা বাড়িয়েছেন।
তারা বলছেন, এ প্রকল্পটি ককেশাস অঞ্চলে ‘যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্যবাদী লক্ষ্য পূরণের ষড়যন্ত্র’ হতে পারে।
রোববার ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি এ করিডোরকে ‘সংবেদনশীল’ ইস্যু বলে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, তেহরানের মূল উদ্বেগ হলো, এর ফলে এ অঞ্চলে ভূ-রাজনৈতিক পরিবর্তন হতে পারে।
তিনি সরকারি বার্তা সংস্থা ইরনাকে বলেন, আর্মেনীয় কর্মকর্তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন যে, এই রুটের অজুহাতে কোনো মার্কিন সেনা বা মার্কিন নিরাপত্তা কোম্পানি আর্মেনিয়ায় আসতে পারবে না।
চলতি মাসের শুরুতে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার এক জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা বলেন, তেহরান প্রস্তাবিত এই করিডোর গড়ে উঠতে দেবে না এবং সতর্ক করে দেন যে, এ এলাকা ‘ট্রাম্পের ভাড়াটে সেনাদের কবরস্থানে পরিণত হবে।’
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ ঘিরে ফেলেছে রুশ সেনাবাহিনী। এ শহর থেকে কারোরই বের হওয়ার এখন কোনো পথ নেই।
কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো রোববার বার্তা সংস্থা এএফপিকে এমন তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, রাশিয়ার সেনা সদস্যরা কিয়েভ ঘিরে রেখেছে। এই মুহূর্তে রাজধানীর বাসিন্দারা অবরুদ্ধ।
ইউক্রেনে রুশ সামরিক হামলার প্রতিবাদে জামার্নির রাজধানী বার্লিনে সমাবেশ করেছে এক লাখের বেশি মানুষ।
পূর্ব ইউরোপের দেশ ইউক্রেনের পতাকার আদলে নীল ও হলুদ রংয়ের পোশাকে ব্র্যান্ডেনবার্গ গেটে রুশ দূতাবাসের খুব কাছে জড়ো হয় তারা। ইউক্রেনীয়দের প্রতি সংহতি জানায় তারা।
এসময় প্রতিবাদকারীরা রুশ হামলাকে ধিক্কায় জানিয়ে ও তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধ শুরু না করতে মস্কোর প্রতি আহ্বান জানায়।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে লড়তে ইউক্রেনকে অস্ত্র কিনতে অর্থ সহায়তা দেবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
রোববার ইউরোপীয় ইউনিয়নের সর্বোচ্চ পদ ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেন এই ঘোষণা দেন বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
যুদ্ধরত কোনো দেশে অস্ত্র না পাঠানোর জন্য করা অঙ্গীকার ভেঙে এবার রুশ হামলার শিকার ইউক্রেনে অস্ত্র দেবে সুইডেন।
রোববার সুইডেনের কর্তৃপক্ষ এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
মস্কোর সঙ্গে শর্তহীন আলোচনা শুরু করতে ইউক্রেন-বেলারুশ সীমান্তে প্রতিনিধিদল পাঠাতে রাজি হয়েছে কিয়েভ।
এর আগে, রাশিয়ার দেয়া শর্তের কারণে বৈঠকে বসার প্রস্তাব নাকচ করে দেয় ইউক্রেন।
ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে রুশ প্রতিনিধি দল প্রতিবেশী বেলারুশের গোমেল শহরে পৌঁছে রোববার।
ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ বাধিয়ে পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েছে রাশিয়া। নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওপরও। এমন পরিস্থিতিতে অর্থসংকট তৈরি হতে পারে ভেবে ব্যাংক থেকে অর্থ তোলার চেষ্টা করছেন গ্রাহকরা।
তবে এ অবস্থায় উদ্বিগ্ন না হয়ে বরং গ্রাহকদের শান্ত থাকার পরামর্শ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তারা বলেছে, অর্থের অভাব নেই। সংকটে পড়ার সম্ভাবনাও নেই।
স্থানীয় সময় রোববার রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এক বিবৃতিতে একথা জানায় বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।
পারমাণবিক অস্ত্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকা সেনাদের এবার বিশেষভাবে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
রাশিয়ার সেনাদের রোববার খারকিভ শহর থেকে হটিয়ে দিয়েছে ইউক্রেন সেনারা। কিয়েভের এমন দাবির মুখে দেশটির বিরুদ্ধে এবার পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট।
ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রুশ প্রতিনিধিদল প্রতিবেশী বেলারুশের গোমেল শহরে পৌঁছেছে। তবে শর্তসাপেক্ষে আলোচনায় গোমেলে বসতে রাজি হয়নি ইউক্রেন।
রোববার ক্রেমলিনের মূখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভে রুশ সেনাদের সঙ্গে ইউক্রেন সেনাবাহিনীর তুমুল যুদ্ধ হয়েছে।
যুদ্ধের পর শহরটি এখন ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় গভর্নর ওলেগ সিনেগুবভ।
তিনি বলেন, ‘খারকিভ সম্পূর্ণরূপে আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ইউক্রেন সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়ে রাশিয়ার সেনা সদস্যদের হটিয়ে দিয়েছে।’
তিন দিনে হামলায় রাশিয়ার ৪ হাজার ৩০০ সেনা নিহতের দাবি করেছে ইউক্রেন। সেই সঙ্গে রাশিয়ার ২৭টি বিমান ও ২৬টি হেলিকপ্টার ধ্বংস করা হয়েছে বলেও দাবি করেছে দেশটি।
দেশটির ডেপুটি ডিফেন্স মিনিস্টার এই দাবি করেছেন।
বৃহস্পতিবার ইউক্রেনে হামলার নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
ডেপুটি ডিফেন্স মিনিস্টার কিয়েভ হান্না মালায়ার বলেন, এই হামলার পর তিন দিনে রাশিয়ার এ পরিমাণ সেনা হতাহত হয়েছে।
অবশ্য বিবিসি এর কোনো সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি।
এমনকি রাশিয়াও এখন পর্যন্ত তাদের হতাহতের কোনো সংখ্যা উল্লেখ করেনি।
কিয়েভ হান্না দাবি করেন, ইউক্রেনে হামলার পর রাশিয়ার ২৭টি বিমান ধ্বংস করেছে ইউক্রেন। এই তালিকায় আছে ২৬ হেলিকপ্টার, ১৪৬ ট্যাংক, ৭০৬ আর্মড ফাইটিং ভেহিকেল, ৪৯ ক্যানন, একটি এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, ৪ গার্ড মাল্টি রকেট লঞ্চার সিস্টেম এবং ৩০ টি গাড়ি।
বেসামরিক নাগরিক ও সাধারণ মানুষের জন্য নতুন একটি নীতিমালা জারি করেছে ইউক্রেন। তাদের সবাইকে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে রুশ বাহিনীর মোকাবিলায় কাজ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বলা হয়েছে, ‘আপনার কাছে অস্ত্র বা গোলাবারুদ থাকুক বা না থাকুক, যুদ্ধের সম্ভাব্য সব উপায় ব্যবহার করুন।’
সাধারণ মানুষকে কয়েকটি বিষয় বলা হয়েছে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে। সেগুলো হলো-
ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলের একটি শহর দখল করে নিয়েছে রুশ সেনারা।
দেশটির বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলের শহর নোভা কাকোভকা রাশিয়ার বাহিনী নিজেেদর করে নিয়েছে।
রাশিয়ান সেনারা এখন নোভা কাকোভকা বা নিউ কাকোভকা দখল করেছে। এটি খুব ছোট শহর, তবে এটি কৌশলগত দিক বিবেচনায় ইউক্রেনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়।
শহরটির অবস্থান দিনিপার নদীর পারে এবং এটি সরাসরি ক্রিমিয়ান উপদ্বীপে পানি সরবরাহ করে।
শহরটির মেয়র ভলদিমির কোভালেঙ্ক বলেন, রাশিয়ার সেনারা শহরটি দখল করে নিয়েছে এবং শহরের এক্সিকিউটিভ কমিটি বাতিল করে দিয়েছে। তারা সব ধরনের ভবন থেকে ইউক্রেনের পতাকা নামিয়ে ফেলেছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইউক্রেন দখলে দক্ষিণ দিক থেকে রাশিয়ার অগ্রগতি খুব বেশি। রুশ সেনারা এর আগেই দক্ষিণের খোরসান, মাইকোলভ এবং মেলিটোপল শহর দখলে হুমকি দিয়ে এসেছে।
সুইফট নেটওয়ার্ক থেকে রাশিয়াকে নিষিদ্ধ ঘোষণায় পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শিমিহাল।
তিনি টু্ইট করেন, ‘আজ যাদের সঙ্গে কথা বললাম, সব সহযোগীদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা।’
‘এই কঠিন সময়ে আপনাদের সহায়তা ও সমর্থন সত্যিই আমাদের অনুপ্রাণিত করে। আপনাদের এই অবদান ইউক্রেনের জনগণ কখনও ভুলবে না।’
Grateful to all our partners I talked today - 🇨🇦, 🇵🇱, 🇱🇹, 🇱🇻, 🇪🇪, 🇳🇱, 🇨🇿, 🇸🇰, 🇸🇮, 🇹🇩, 🇸🇪, 🇨🇭, 🇱🇺, @EU_Commission 🇪🇺! Appreciate your support and real help in this dark time. Ukrainian people will never forget this! Keep holding the line! We are on our land!
— Denys Shmyhal (@Denys_Shmyhal) February 26, 2022
ইউক্রেনে হামলার চতুর্থ দিনে দেশটির শহর খারকিভে একটি প্রাকৃতিক গ্যাস পাইপলাইনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রুশ সেনারা।
ইউক্রেনের বিশেষ যোগাযোগ ও তথ্য সুরক্ষা বিভাগ থেকে হামলার খবরটি জানানো হয়েছে।
সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার খবরে বলা হয়, ম্যাসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে হামলার পর সেখানে মাশরুম আকৃতির ধোঁয়া দেখা গেছে।
তবে তাৎক্ষণিকভাবে এটা জানা সম্ভব হয়নি যে, পাইপলাইনটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এতে শহর ও শহরের বাইরে গ্যাস সরবরাহে কোনো ব্যাঘাত ঘটেছে কি না।
হামলা হলেও ইউক্রেন রাশিয়ার প্রাকৃতিক গ্যাস পশ্চিমা দেশগুলোতে পাঠানো অব্যাহত রেখেছে বলে জানিয়েছে।
জাতিসংঘের মানবিক বিষয় সমন্বয় কার্যালয় ওসিএইচএ সংস্থাটির মানবাধিকার দপ্তরের বরাত দিয়ে ইউক্রেনে হতাহতের সংখ্যা জানিয়েছে।
যেকোনো সংঘাতে নিহত ও আহত ব্যক্তির সংখ্যা নিরূপণে যাচাই ও প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে কোনো ফাঁকফোকর রাখে না মানবাধিকার দপ্তর।
ওসিএইচএ আরও জানায়, অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় হাজারো মানুষ পানি, বিদ্যুৎ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এটি ইউক্রেনজুড়ে (বিশেষত উত্তর, পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চল) ‘মানবিক বিপর্যয়কর’ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেনে অন্তত ২৪০ জন বেসামরিক নাগরিক হতাহত হয়েছে বলে নিশ্চিত হয়েছে জাতিসংঘ। আন্তরাষ্ট্রীয় সংস্থাটি জানিয়েছে, তাদের মধ্যে অন্তত ৬৪ জন নিহত হয়েছে।
জাতিসংঘ মনে করছে, হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে উল্লেখযোগ্য হারে বেশি হতে পারে। কারণ অনেক জায়গায় হতাহতের খবর নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে সুপার মার্কেট থেকে বিপুল পরিমাণ গুঁড়াদুধ, ওষুধ, ভিটামিন, প্রসাধনী ও টয়লেট্রিজ চুরির অভিযোগে ১৯ জনকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের চুরি করা পণ্যের বাজার মূল্য প্রায় এক কোটি অস্ট্রেলীয় ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ৭৯ কোটি টাকারও বেশি।
পুলিশ বলছে, অভিযুক্তদের মধ্যে বেশির ভাগই ভারতীয় নাগরিক। এরা অস্থায়ী, স্টুডেন্ট বা ব্রিজিং ভিসায় অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করছিল।
পুলিশের দাবি, গত পাঁচ মাস ধরে এই চক্র বিভিন্ন সুপারমার্কেট থেকে শিশু খাদ্য, ওষুধ, স্কিন কেয়ার পণ্য, ইলেকট্রিক টুথব্রাশসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র চুরি করে ‘রিসিভারদের’ হাতে তুলে দিত। পরে এসব পণ্য আবার বাজারে বিক্রি হতো।
আটকদের মধ্যে তিনজন যুবক (২০-এর ঘরে বয়স) প্রত্যেকে এক লাখ ডলারেরও বেশি মূল্যের জিনিস চুরি করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক চুরির মামলা করা হয়েছে এবং আদালতে হাজির না হওয়া পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখা হবে।
অপারেশন সুপারনোভা নামে তদন্তটি পরিচালনা করেছে বক্স হিল ডিভিশনাল রেসপন্স ইউনিট। এতে বড় খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো ও অস্ট্রেলিয়ান বর্ডার ফোর্স সহযোগিতা করেছে।
অস্ট্রেলীয় পুলিশ জানায়, খুচরা চুরি এখন ভিক্টোরিয়া অঙ্গরাজ্যের সবচেয়ে দ্রুত বাড়তে থাকা অপরাধগুলোর একটি। গত এক বছরে এ ধরনের ৪১ হাজার ২৭০টি অপরাধ রেকর্ড হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৩৮ শতাংশ বেশি।
ডিটেকটিভ অ্যাক্টিং ইন্সপেক্টর রাচেলে সিয়াভারেলা বলেন, এটি সাম্প্রতিক সময়ে সংগঠিত খুচরা চুরি মোকাবিলায় আমাদের অন্যতম বড় অভিযান।
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ ঘিরে ফেলেছে রুশ সেনাবাহিনী। এ শহর থেকে কারোরই বের হওয়ার এখন কোনো পথ নেই।
কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো রোববার বার্তা সংস্থা এএফপিকে এমন তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, রাশিয়ার সেনা সদস্যরা কিয়েভ ঘিরে রেখেছে। এই মুহূর্তে রাজধানীর বাসিন্দারা অবরুদ্ধ।
ইউক্রেনে রুশ সামরিক হামলার প্রতিবাদে জামার্নির রাজধানী বার্লিনে সমাবেশ করেছে এক লাখের বেশি মানুষ।
পূর্ব ইউরোপের দেশ ইউক্রেনের পতাকার আদলে নীল ও হলুদ রংয়ের পোশাকে ব্র্যান্ডেনবার্গ গেটে রুশ দূতাবাসের খুব কাছে জড়ো হয় তারা। ইউক্রেনীয়দের প্রতি সংহতি জানায় তারা।
এসময় প্রতিবাদকারীরা রুশ হামলাকে ধিক্কায় জানিয়ে ও তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধ শুরু না করতে মস্কোর প্রতি আহ্বান জানায়।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে লড়তে ইউক্রেনকে অস্ত্র কিনতে অর্থ সহায়তা দেবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
রোববার ইউরোপীয় ইউনিয়নের সর্বোচ্চ পদ ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেন এই ঘোষণা দেন বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
যুদ্ধরত কোনো দেশে অস্ত্র না পাঠানোর জন্য করা অঙ্গীকার ভেঙে এবার রুশ হামলার শিকার ইউক্রেনে অস্ত্র দেবে সুইডেন।
রোববার সুইডেনের কর্তৃপক্ষ এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
মস্কোর সঙ্গে শর্তহীন আলোচনা শুরু করতে ইউক্রেন-বেলারুশ সীমান্তে প্রতিনিধিদল পাঠাতে রাজি হয়েছে কিয়েভ।
এর আগে, রাশিয়ার দেয়া শর্তের কারণে বৈঠকে বসার প্রস্তাব নাকচ করে দেয় ইউক্রেন।
ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে রুশ প্রতিনিধি দল প্রতিবেশী বেলারুশের গোমেল শহরে পৌঁছে রোববার।
ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ বাধিয়ে পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েছে রাশিয়া। নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওপরও। এমন পরিস্থিতিতে অর্থসংকট তৈরি হতে পারে ভেবে ব্যাংক থেকে অর্থ তোলার চেষ্টা করছেন গ্রাহকরা।
তবে এ অবস্থায় উদ্বিগ্ন না হয়ে বরং গ্রাহকদের শান্ত থাকার পরামর্শ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তারা বলেছে, অর্থের অভাব নেই। সংকটে পড়ার সম্ভাবনাও নেই।
স্থানীয় সময় রোববার রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এক বিবৃতিতে একথা জানায় বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।
পারমাণবিক অস্ত্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকা সেনাদের এবার বিশেষভাবে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
রাশিয়ার সেনাদের রোববার খারকিভ শহর থেকে হটিয়ে দিয়েছে ইউক্রেন সেনারা। কিয়েভের এমন দাবির মুখে দেশটির বিরুদ্ধে এবার পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট।
ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রুশ প্রতিনিধিদল প্রতিবেশী বেলারুশের গোমেল শহরে পৌঁছেছে। তবে শর্তসাপেক্ষে আলোচনায় গোমেলে বসতে রাজি হয়নি ইউক্রেন।
রোববার ক্রেমলিনের মূখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভে রুশ সেনাদের সঙ্গে ইউক্রেন সেনাবাহিনীর তুমুল যুদ্ধ হয়েছে।
যুদ্ধের পর শহরটি এখন ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় গভর্নর ওলেগ সিনেগুবভ।
তিনি বলেন, ‘খারকিভ সম্পূর্ণরূপে আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ইউক্রেন সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়ে রাশিয়ার সেনা সদস্যদের হটিয়ে দিয়েছে।’
তিন দিনে হামলায় রাশিয়ার ৪ হাজার ৩০০ সেনা নিহতের দাবি করেছে ইউক্রেন। সেই সঙ্গে রাশিয়ার ২৭টি বিমান ও ২৬টি হেলিকপ্টার ধ্বংস করা হয়েছে বলেও দাবি করেছে দেশটি।
দেশটির ডেপুটি ডিফেন্স মিনিস্টার এই দাবি করেছেন।
বৃহস্পতিবার ইউক্রেনে হামলার নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
ডেপুটি ডিফেন্স মিনিস্টার কিয়েভ হান্না মালায়ার বলেন, এই হামলার পর তিন দিনে রাশিয়ার এ পরিমাণ সেনা হতাহত হয়েছে।
অবশ্য বিবিসি এর কোনো সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি।
এমনকি রাশিয়াও এখন পর্যন্ত তাদের হতাহতের কোনো সংখ্যা উল্লেখ করেনি।
কিয়েভ হান্না দাবি করেন, ইউক্রেনে হামলার পর রাশিয়ার ২৭টি বিমান ধ্বংস করেছে ইউক্রেন। এই তালিকায় আছে ২৬ হেলিকপ্টার, ১৪৬ ট্যাংক, ৭০৬ আর্মড ফাইটিং ভেহিকেল, ৪৯ ক্যানন, একটি এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, ৪ গার্ড মাল্টি রকেট লঞ্চার সিস্টেম এবং ৩০ টি গাড়ি।
বেসামরিক নাগরিক ও সাধারণ মানুষের জন্য নতুন একটি নীতিমালা জারি করেছে ইউক্রেন। তাদের সবাইকে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে রুশ বাহিনীর মোকাবিলায় কাজ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বলা হয়েছে, ‘আপনার কাছে অস্ত্র বা গোলাবারুদ থাকুক বা না থাকুক, যুদ্ধের সম্ভাব্য সব উপায় ব্যবহার করুন।’
সাধারণ মানুষকে কয়েকটি বিষয় বলা হয়েছে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে। সেগুলো হলো-
ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলের একটি শহর দখল করে নিয়েছে রুশ সেনারা।
দেশটির বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলের শহর নোভা কাকোভকা রাশিয়ার বাহিনী নিজেেদর করে নিয়েছে।
রাশিয়ান সেনারা এখন নোভা কাকোভকা বা নিউ কাকোভকা দখল করেছে। এটি খুব ছোট শহর, তবে এটি কৌশলগত দিক বিবেচনায় ইউক্রেনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়।
শহরটির অবস্থান দিনিপার নদীর পারে এবং এটি সরাসরি ক্রিমিয়ান উপদ্বীপে পানি সরবরাহ করে।
শহরটির মেয়র ভলদিমির কোভালেঙ্ক বলেন, রাশিয়ার সেনারা শহরটি দখল করে নিয়েছে এবং শহরের এক্সিকিউটিভ কমিটি বাতিল করে দিয়েছে। তারা সব ধরনের ভবন থেকে ইউক্রেনের পতাকা নামিয়ে ফেলেছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইউক্রেন দখলে দক্ষিণ দিক থেকে রাশিয়ার অগ্রগতি খুব বেশি। রুশ সেনারা এর আগেই দক্ষিণের খোরসান, মাইকোলভ এবং মেলিটোপল শহর দখলে হুমকি দিয়ে এসেছে।
সুইফট নেটওয়ার্ক থেকে রাশিয়াকে নিষিদ্ধ ঘোষণায় পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শিমিহাল।
তিনি টু্ইট করেন, ‘আজ যাদের সঙ্গে কথা বললাম, সব সহযোগীদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা।’
‘এই কঠিন সময়ে আপনাদের সহায়তা ও সমর্থন সত্যিই আমাদের অনুপ্রাণিত করে। আপনাদের এই অবদান ইউক্রেনের জনগণ কখনও ভুলবে না।’
Grateful to all our partners I talked today - 🇨🇦, 🇵🇱, 🇱🇹, 🇱🇻, 🇪🇪, 🇳🇱, 🇨🇿, 🇸🇰, 🇸🇮, 🇹🇩, 🇸🇪, 🇨🇭, 🇱🇺, @EU_Commission 🇪🇺! Appreciate your support and real help in this dark time. Ukrainian people will never forget this! Keep holding the line! We are on our land!
— Denys Shmyhal (@Denys_Shmyhal) February 26, 2022
ইউক্রেনে হামলার চতুর্থ দিনে দেশটির শহর খারকিভে একটি প্রাকৃতিক গ্যাস পাইপলাইনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রুশ সেনারা।
ইউক্রেনের বিশেষ যোগাযোগ ও তথ্য সুরক্ষা বিভাগ থেকে হামলার খবরটি জানানো হয়েছে।
সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার খবরে বলা হয়, ম্যাসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে হামলার পর সেখানে মাশরুম আকৃতির ধোঁয়া দেখা গেছে।
তবে তাৎক্ষণিকভাবে এটা জানা সম্ভব হয়নি যে, পাইপলাইনটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এতে শহর ও শহরের বাইরে গ্যাস সরবরাহে কোনো ব্যাঘাত ঘটেছে কি না।
হামলা হলেও ইউক্রেন রাশিয়ার প্রাকৃতিক গ্যাস পশ্চিমা দেশগুলোতে পাঠানো অব্যাহত রেখেছে বলে জানিয়েছে।
জাতিসংঘের মানবিক বিষয় সমন্বয় কার্যালয় ওসিএইচএ সংস্থাটির মানবাধিকার দপ্তরের বরাত দিয়ে ইউক্রেনে হতাহতের সংখ্যা জানিয়েছে।
যেকোনো সংঘাতে নিহত ও আহত ব্যক্তির সংখ্যা নিরূপণে যাচাই ও প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে কোনো ফাঁকফোকর রাখে না মানবাধিকার দপ্তর।
ওসিএইচএ আরও জানায়, অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় হাজারো মানুষ পানি, বিদ্যুৎ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এটি ইউক্রেনজুড়ে (বিশেষত উত্তর, পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চল) ‘মানবিক বিপর্যয়কর’ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেনে অন্তত ২৪০ জন বেসামরিক নাগরিক হতাহত হয়েছে বলে নিশ্চিত হয়েছে জাতিসংঘ। আন্তরাষ্ট্রীয় সংস্থাটি জানিয়েছে, তাদের মধ্যে অন্তত ৬৪ জন নিহত হয়েছে।
জাতিসংঘ মনে করছে, হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে উল্লেখযোগ্য হারে বেশি হতে পারে। কারণ অনেক জায়গায় হতাহতের খবর নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
মন্তব্য