× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

আন্তর্জাতিক
Russias attack is still possible Biden
google_news print-icon

রাশিয়ার হামলা ‘এখনও খুবই সম্ভব’: বাইডেন

রাশিয়ার-হামলা-এখনও-খুবই-সম্ভব-বাইডেন
বাইডেনের মতে, এখনও ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে রাশিয়া। ছবি: এএফপি
জার্মান চ্যান্সেলরের মস্কো সফরে তৈরি হওয়া শান্তিপূর্ণ অগ্রগতি সন্তুষ্ট করতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে। তিনি বলেন, ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার হামলা ‘এখনও খুবই সম্ভব’ এবং মানবিক ক্ষয়ক্ষতি হবে অত্যন্ত ব্যাপক।

জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের মস্কো সফরের পরই কমে এসেছে ইউক্রেন-রাশিয়ার চলমান উত্তেজনা। প্রেসিডেন্ট পুতিন সংকট নিরসনে কূটনৈতিক আলোচনা চালিয়ে যেতে রাজি হয়েছেন। এরই মধ্যে রাশিয়ার পক্ষ থেকে একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে, যেখানে দেখা গেছে ইউক্রেন সীমান্ত অঞ্চল থেকে ভারী অস্ত্রশস্ত্র সরিয়ে নিচ্ছে দেশটির সেনারা।

কিন্তু পরিস্থিতির এই শান্তিপূর্ণ অগ্রগতি সন্তুষ্ট করতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে। তিনি বলেন, ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার হামলা ‘এখনও খুবই সম্ভব’ এবং মানবিক ক্ষয়ক্ষতি হবে অত্যন্ত ব্যাপক।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় টেলিভিশনে দেয়া একটি মন্তব্যে বাইডেন বলেন, রাশিয়ার এ ধরনের (ইউক্রেনে হামলা) পদক্ষেপের ক্ষেত্রে যথাযথ প্রতিক্রিয়া দেখাতে প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্র।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, এখনও রাশিয়া ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় দেড় লাখ সেনা মোতায়েন করে রেখেছে।

যদিও রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, কিছু বাহিনীকে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। জবাবে বাইডেন বলেছেন, ‘(রুশ সেনাদের চলে যাওয়া) ভালো হবে, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তা এখনও যাচাই করা হয়নি।’

বাইডেন বলেন ‘প্রকৃতপক্ষে, আমাদের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখনও হুমকি রয়েছে।’

জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে পুতিন মস্কোর নিরাপত্তা উদ্বেগকে গুরুত্ব দেয়া উচিত বলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বাইডেনের পক্ষ থেকে এ বক্তব্য এলো।

যদিও ইউক্রেন সীমান্তে সেনা মোতায়েন ও একের পর এক সামরিক মহড়া চালালেও রাশিয়া চলমান সংকটের শুরু থেকেই বলে আসছে, ইউক্রেনে হামলার কোনো পরিকল্পনা নেই দেশটির।

প্রেসিডেন্ট পুতিন বরাবরই বলে আসছেন, সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। তিনি নিশ্চয়তা চান, দেশটি যাতে কখনোই পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোতে যোগদান না করে।

যদিও ন্যাটো জোট বরাবরই রাশিয়ার দাবি প্রত্যাখ্যান করে আসছে।

এদিকে প্রেসিডেন্ট বাইডেন জানিয়েছেন, কূটনৈতিক সমাধানে আসার জন্য রাশিয়ার একটি প্রস্তাবে তিনি একমত হয়েছেন।

ন্যাটো মঙ্গলবার রাশিয়ার সামরিক বাহিনী প্রত্যাহারের ঘোষণার বিষয়ে ‘সতর্ক আশাবাদ’ ব্যক্ত করেছে। তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভকে ফোনে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই যাচাইযোগ্য, বিশ্বাসযোগ্য ও অর্থপূর্ণ সেনা প্রত্যাহার দেখতে হবে।

এর আগে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন টুইট করেছিলেন যে রাশিয়া থেকে ‘মিশ্র সংকেত’ আসছে, কারণ যুক্তরাজ্যের গোয়েন্দারা দেখিয়েছে যে রাশিয়ান ফিল্ড হাসপাতালগুলো ইউক্রেন সীমান্তের কাছেই তৈরি করা হচ্ছে, যা ‘কেবল হামলার প্রস্তুতি হিসেবে ধরা যেতে পারে।’

আরও পড়ুন:
ইউক্রেনে এবার সাইবার হামলা
ইউক্রেন প্রবাসীদের ফিরতে বাধ্য করবে না সরকার
ইউক্রেন সীমান্ত থেকে সেনা সরাচ্ছে রাশিয়া
বাংলাদেশিদের ইউক্রেন ছাড়ার অনুরোধ
যুদ্ধের দামামা এড়াতে মস্কো যাচ্ছেন জার্মান চ্যান্সেলর

মন্তব্য

আরও পড়ুন

আন্তর্জাতিক
Bangladeshis are being transferred from Tehran Foreign Secretary

তেহরান থেকে বাংলাদেশিদের স্থানান্তর করা হচ্ছে: পররাষ্ট্র সচিব

তেহরান থেকে বাংলাদেশিদের স্থানান্তর করা হচ্ছে: পররাষ্ট্র সচিব

ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ইরানের রাজধানীর পরিস্থিতি বিবেচনা করে বাংলাদেশ মিশনের কর্মকর্তাসহ বাংলাদেশিদের তেহরানের নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রুহুল আলম সিদ্দিক সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে, ইরান ছেড়ে (বিমানপথে) যাওয়ার কোনো উপায় নেই। আমরা তাদের (বাংলাদেশিদের) নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরের নির্দেশনা দিয়েছি।’

মিশনের কাছে থাকা তহবিল দিয়ে স্থানান্তর প্রক্রিয়া ইতোমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে বলে জানান তিনি।

ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব বলেন, তারা তেহরানে ৪০০ বাংলাদেশি সম্পর্কে উদ্বিগ্ন, কারণ তারা মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছেন।

তবে সিদ্দিক বলেন, প্রত্যাবাসন ও স্থানান্তরের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত আর্থিক সম্পৃক্ততা রয়েছে এবং ইরানের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থায় আর্থিক সহায়তা পাঠানোর ক্ষেত্রে কিছু অসুবিধাও রয়েছে।

ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব বলেন, এই কারণেই প্রত্যাবাসন ও স্থানান্তরে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে।

সিদ্দিক বলেন, নিরাপত্তার বিষয়গুলো বিবেচনা করে ইরানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ইতোমধ্যেই তার বাসস্থান ছেড়ে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ স্থানে চলে গেছেন।

এক প্রশ্নের জবাবে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব বলেন, তেহরানে প্রায় ৪০০ বাংলাদেশি রয়েছেন। এর মধ্যে ১০০ জন বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।

সিদ্দিক বলেন, নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া এবং আবাসনের খরচ তাদের সরকার বহন করবে। এছাড়া যদি কেউ স্থলপথে ইরান ছাড়তে চায় সেক্ষেত্রে তাদের পাকিস্তান বা তুরস্ক হয়ে বাইরে পাঠানো যাবে কিনা তা তারা খতিয়ে দেখবে। তেহরানে বাংলাদেশ মিশনে ৪০ জন কর্মী রয়েছেন।

ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘আমরা সকল উপায় অনুসন্ধান করছি।’ তারা ইরানসহ বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলোর সহায়তা চাইছেন। এই বিষয়ে মিশন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করছে।

চ্যান্সেরিটি নিরাপদ নয় এবং এর এক কিলোমিটারের মধ্যে সংবেদনশীল অবকাঠামো (তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্র) অবস্থিত। গত কয়েকদিনে এটি ধ্বংস করার চেষ্টা করা হয়েছিল।

তেহরানের দুটি যোগাযোগ (ইন্টারনেট) কেন্দ্রের মধ্যে একটি চ্যান্সারির খুব কাছে অবস্থিত।

দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মীরা আশঙ্কা করছেন, এই অবকাঠামোগুলোতে যেকোনো আক্রমণের ফলে ক্ষতি হতে পারে।

এদিকে, ইরানে বসবাসকারী বাংলাদেশি নাগরিক ও বাংলাদেশে তাদের আত্মীয়স্বজনদের জানানো হয়েছে যে, তেহরানে বাংলাদেশ দূতাবাস এবং ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বর্তমান পরিস্থিতিতে জরুরি যোগাযোগের জন্য একটি হটলাইন চালু করেছে।

ইরানে বসবাসকারী সব বাংলাদেশি নাগরিক ও বাংলাদেশে তাদের আত্মীয়স্বজন জরুরি পরিস্থিতিতে দূতাবাস এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিম্নলিখিত মোবাইল ফোন নম্বরগুলিতে (হোয়াটসঅ্যাপ সহ) সরাসরি যোগাযোগ করতে পারবেন। বাংলাদেশ দূতাবাস, তেহরান হটলাইন: +৯৮৯৯০৮৫৭৭৩৬৮ ও +৯৮৯১২২০৬৫৭৪৫ এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ঢাকা হটলাইন: +৮৮০১৭১২০১২৮৪৭

ইরানে বসবাসকারী বাংলাদেশির সংখ্যা ২০০০ এরও কম এবং তাদের অনেকেই সেখানে বিয়ে করেছেন।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Israel Iran conflict is intensifying the counter injury

ইসরায়েল-ইরান সংঘাত তীব্রতর হচ্ছে পাল্টাপাল্টি আঘাত

ইসরায়েল-ইরান সংঘাত তীব্রতর হচ্ছে পাল্টাপাল্টি আঘাত ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ইসরায়েলের রাজধানী তেল আবিবের ভবনে আগুন। কাজ করছে দমকল বাহিনী ও উদ্ধারকর্মীরা।  ছবি: সংগৃহীত 

ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে প্রাণঘাতী সংঘাত ক্রমশই তীব্রতর হচ্ছে। হামলা ও পাল্টা হামলা যেন এক মুহূর্তের জন্যও থেমে নেই। রাতভর দুই পক্ষই নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়তে থাকে। এতে বেসামরিক লোকজন নিহত ও আহত হচ্ছেন।

ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আইআরএনএ জানিয়েছে, পশ্চিম ইরানের কেরমানশাহ শহরে ফারাবি হাসপাতাল ও মেডিকেল সেন্টারকে লক্ষ্য করে ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে। এর ফলে হাসপাতালটি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

গতকাল সোমবার এক প্রতিবেদনে আইআরএনএ জানায়, স্থানীয় সময় সকাল ৯টার দিকে ইহুদিবাদী সরকার ফারাবি হাসপাতাল ও মেডিকেল সেন্টার এবং আশেপাশের ভবনগুলোতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এই হামলার পর ফারাবি হাসপাতালের বিভিন্ন অংশে মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে।

ছবিতে দেখা গেছে, হাসপাতালের ভেতরে রক্তাক্ত মেঝেতে ভাঙা কাঁচ এবং ধ্বংসাবশেষে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।

এছাড়া ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ভবনে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। কিছুক্ষণ আগে এই হামলা হয়েছে বলে জানিয়েছে আল-জাজিরা। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সংক্ষেপে প্রচারিত ঘোষণায় বলা হয়েছে, ‘রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম বর্তমানে ইসরায়েলি হামলার লক্ষ্যবস্তু।’ হামলার বিস্তারিত বা ক্ষয়ক্ষতির তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি।

ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, ইরানের পারমাণবিক ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি ধ্বংস করার ঘোষণা দিয়ে ইসরায়েল যে হামলাগুলো চালাচ্ছে, তার ফলে চার দিনে তেহরানে কমপক্ষে ২২৪ জন নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে ৯০ শতাংশই বেসামরিক নাগরিক।

এদিকে গতকাল সোমবার ইরান ইসরায়েলে পাল্টা হামলা চালিয়েছে। গতকাল সকালে চালানো ইরানের হামলাকে বলা হচ্ছে এ পর্যন্ত চালানো হামলার মধ্যে সবচেয়ে তীব্র এবং বড় আকারের। ইরানের সর্বশেষ এ হামলায় অন্তত ৮ জন নিহত এবং বহু আহত হয়েছেন।

চলমান পরিস্থিতি ‘নিরাপদে’ থাকতে অভ্যস্ত তেল আবিবের বাসিন্দাদের এক নজিরবিহীন আতঙ্ক ও উদ্বেগে দিন কাটাতে বাধ্য করেছে। গতকাল সিএনএনের প্রতিবেদনে ইসরায়েলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহর তেল আবিবের এই চিত্র ফুটে উঠেছে।

সর্বত্র বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি লক্ষ্য করেন সিএনএনের জেরুজালেম সংবাদদাতা জেরেমি ডায়মন্ড। জেরেমি জানান, তিনি তেল আবিবের রাস্তাগুলোতে ভেঙে পড়া স্থাপনা ও অন্যান্য আবর্জনা দেখতে পেয়েছেন। একটি অবস্থানে চারটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানার পর সেখানে উদ্ধারকারী দল ও সামরিক বাহিনীর সদস্যরা ধ্বংসস্তূপের ভেতর আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধারে ব্যস্ত ছিলেন।

এ সময় এক নারী জানান, ঘরের বেসমেন্টে লুকিয়ে থেকে প্রাণে বেঁচে গেছেন তিনি ও তার পরিবার। তবে মাটির নিচের বেসমেন্টে থেকেও ‘ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রভাব’ টের পাওয়ার অভিজ্ঞতার বর্ণনা দেন ওই নারী।

তিনি আরও বলেন, ‘পোড়া ধোঁয়ার গন্ধ পাচ্ছিলাম…আমি টি-শার্ট দিয়ে নিজের নাক ঢেকে রাখতে বাধ্য হই। রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে খেয়াল রাখছিলাম যাতে নিঃশ্বাসের সঙ্গে ওই ধোঁয়া ফুসফুসে ঢুকে না যায়।’

জানা গেছে, ইসরায়েলের উপর সর্বশেষ ইরানি হামলায় নিহত আটজনের মধ্যে দুইজন নারী। তিনজন পুরুষ এবং উত্তরাঞ্চলীয় হাইফা শহরে ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আরও তিনজনের মৃতদেহ পাওয়া গেছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, সোমবার ইরানের সর্বশেষ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের কয়েকটি স্থান ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানকার দমকল বাহিনী জানিয়েছে, ভূমধ্যসাগর উপকূলে একটি আবাসিক ভবন ধ্বংস হয়ে গিয়েছে।

সাধারণ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার ঠিক পরপরই সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, হোমফ্রন্ট কমান্ড সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ টিমগুলোকে ইসরায়েলের এসব ক্ষতিগ্রস্ত স্থানে পাঠানো হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিস বলেছে, উদ্ধারকর্মীরা উপকূলবর্তী একটি ভবনের দিকে যাচ্ছেন, যেটি সরাসরি আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে।

ইসরায়েলের জরুরি সেবা সংস্থা, মাগেন ডেভিড আদম- এমডিএ একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে তাদের দল উপকূলীয় শহর হাইফাতে মোতায়েন রয়েছে এবং সেখানে কয়েকটি গাড়িতে আগুন লেগেছে এবং একটি আবাসিক ভবনের সামনের অংশ বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে।

ইরানের ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ডস কর্পসের (আইআরজিসি) একজন সিনিয়র কমান্ডার বলেছেন, অপারেশন ‘ট্রু প্রমিজ ৩’-এর মাধ্যমে ইসরায়েলি শাসনব্যবস্থার ওপর যে ক্ষতি হয়েছে, তা শাসকগোষ্ঠীর প্রত্যাশার চেয়ে অনেক বেশি।

গতকাল সোমবার মেহের নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, এক সাক্ষাৎকারে আইআরজিসির রাজনৈতিকবিষয়ক ডেপুটি কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইয়াদোল্লাহ জাভানি বলেন, শত্রুদের প্রাথমিক আক্রমণের প্রায় ২০ ঘণ্টা পর অপারেশন ‘ট্রু প্রমিজ ৩’ পরিচালিত হয়, যখন ইহুদিবাদী সরকার প্রতিরক্ষামূলক প্রস্তুতির শীর্ষে ছিল। ইরানের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়ার পূর্বাভাস পেয়ে তারা তাদের সমস্ত বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করে এবং এমনকি প্রতিবেশী দেশগুলোর ওপর আকাশসীমা নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করে।

সংঘাত বন্ধে মধ্যস্থতা করতে প্রস্তুত পুতিন-এরদোয়ান

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান পাল্টাপাল্টি বন্ধে মধ্যস্থতা করার আগ্রহ দেখিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইপ এরদোয়ান। উভয়ই আলাদাভাবে জানিয়েছেন, সংঘাত বন্ধের লক্ষ্যে তারা মধ্যস্থতা করতে প্রস্তুত রয়েছেন।

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, ‌‘সংঘাত নিরসনের জন্য রাশিয়ার আগের প্রস্তাব এখনও বহাল রয়েছে। যদিও পরিস্থিতি এখন আরও জটিল হয়ে পড়েছে।’

সমস্যার সমাধানে রাশিয়া বিবাদমান পক্ষগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে বলেও জানিয়েছে ক্রেমলিন।

এদিকে, তুরস্কের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, গতকাল সোমবার রেচেপ তাইপ এরদোয়ান ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন।

ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাতের অবসান ঘটাতে তুরস্ক মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালনে প্রস্তুত বলে ইরানকে জানিয়েছেন এরদোয়ান।

তেহরান থেকে সরে যাচ্ছেন সাধারণ মানুষ

দখলদার ইসরায়েলের হামলার জেরে ইরানের রাজধানী তেহরান থেকে সরে যাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, তেহরানের পেট্রোল স্টেশনগুলোতে লম্বা লাইন তৈরি হয়েছে। অনেক মানুষ শহর ছেড়ে আরও প্রত্যন্ত অঞ্চলে চলে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।

কিন্তু তেহরান থেকে বের হওয়ার রাস্তায় ব্যাপক ট্রাফিক জ্যাম থাকায় অনেকেই যেতে পারেননি।

তেহরান থেকে অন্য একটি প্রদেশে চলে যাওয়া এক ব্যক্তি বিবিসি পার্সিয়ানকে বলেছেন, ‘আমি সত্যিই বুঝতে পারছি না আমি এখন যুদ্ধক্ষেত্রে আছি। আমি জানি না কখন আমি এর সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারব।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই যুদ্ধ আমার যুদ্ধ নয়। আমি অন্য পক্ষেরও না। আমি শুধুমাত্র আমার পরিবারকে নিয়ে বাঁচতে চাই।’

অপর একজন বলেছেন, ‘কোনো না কোনোভাবে সবাই তেহরান থেকে পালানোর চেষ্টা করছে।’

আরেকজন বলেছেন, ‘তেহরান সত্যিই নিরাপদ নয়। ইসরায়েলি হামলা সম্পর্কে আমরা সরকার থেকে কোনো সতর্কতা বা বার্তা পাই না। আমরা শুধুমাত্র বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পাই এবং আশা করতে থাকি যেন আমাদের জায়গায় যেন কোনো হামলা না হয়। কিন্তু আমরা কোথায় যাব? কোনো জায়গাই নিরাপদ নয়।’

বিবিসি পার্সিয়ানের সাংবাদিক গোনচেহ হাবিবিয়াজাদ জানিয়েছেন, তেহরানের বাসিন্দারা বিভিন্ন ম্যাসেজিং অ্যাপে গ্রুপ খুলেছেন। তারা একে অপরের সঙ্গে সমন্বয় করে রাজধানী ছাড়ার চেষ্টা করছেন। তিনি বলেছেন, যারা তেহরান ছাড়ার চেষ্টা করছেন তাদের ইসরায়েলের সম্ভাব্য হামলা সম্পর্কেও এসব গ্রুপে সতর্ক করা হচ্ছে।

তেহরানের আকাশসীমা পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের দাবি ইসরায়েলের

ইরানের রাজধানী তেহরানের আকাশসীমায় পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার দাবি করেছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। গতকাল সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে আইডিএফ মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফি ডেফরিন এই দাবি করেন।

আইডিএফ মুখপাত্র বলেন, আমরা তেহরানের ওপর পূর্ণ বিমান নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছি। ইরানের এক-তৃতীয়াংশ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র লঞ্চার ধ্বংস করে দিয়েছি। তাদের বড় অংশের হামলা ব্যাহত করা সম্ভব হয়েছে।

ডেফরিন জানান, গত রোববার রাত ও সোমবার ভোরে ইরান থেকে ইসরায়েলের দিকে দুই ধাপে ৬৫টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ডজনখানেক ড্রোন ছোড়া হয়। এর বেশিরভাগই মাঝপথে ভূপাতিত হলেও তিনটির আঘাতে আটজন নিহত হন।

আইডিএফ মুখপাত্রের দাবি, ইরান ওই রাতে এর দ্বিগুণ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের পরিকল্পনা করেছিল। তবে ইসরায়েলি বিমানবাহিনী আগেভাগেই ইরানের অভ্যন্তরে ২০টি ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্য করে হামলা চালায়। সেগুলো তখনও ছোড়া হয়নি।

আইডিএফ আরও জানায়, প্রায় ৫০টি যুদ্ধবিমান ও ড্রোন একযোগে অভিযান চালিয়ে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র গুদাম, নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র ও সেনাদের অবস্থান লক্ষ্য করে হামলা চালায়। এর মধ্যে অনেকগুলো নিশানা ছিল ইরানের ইস্পাহান শহরে। সেখানেও শতাধিক সামরিক স্থাপনায় হামলা হয়েছে বলে জানায় ইসরায়েলি বাহিনী।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
The Hormuz system may be in Irans Trump card

হরমুজ প্রণালি হতে পারে ইরানের ‘ট্রাম্প কার্ড’

হরমুজ প্রণালি হতে পারে ইরানের ‘ট্রাম্প কার্ড’

মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই চড়ছে। ইরান হরমুজ প্রণালি বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিয়েছে। এটিই এখন বিশ্বজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রে। বৈশ্বিক জ্বালানি পরিবহনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই জলপথ বন্ধ হয়ে গেলে সম্ভাব্য ভয়াবহ অর্থনৈতিক পরিণতি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। ন্যাশনাল ইরানিয়ান আমেরিকান কাউন্সিলের (এনআইএসি) প্রেসিডেন্ট জামাল আবদি এই হুমকিকে ইরানের ‘ট্রাম্প কার্ড’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

আল-জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে জামাল আবদি বলেন, ‘এটি প্রতিরোধের একটি প্রধান রূপ হতে পারে। অবশ্য ইরান আগেও এ ধরনের হুমকি দিয়েছে। কিন্তু স্পষ্টতই কখনো কার্যকর করেনি। ধারণা করা হয়, হরমুজ প্রণালি বন্ধ করে দেয়া মানে বিশ্ব অর্থনীতির শ্বাসরোধ করা। অর্থনীতিতে এর ব্যাপক প্রভাব পড়বে। এটি খুব ছোট একটা জলপথ, তাই এটিকে একটি চোকপয়েন্ট বানানোর জন্য যে ধরনের সক্ষমতা ও আক্রমণ দরকার, ইরানের পক্ষে সম্ভবত তা সম্ভব।’

আবদি আরও বলেন, ‘আমরা বছরের পর বছর ধরে যে খারাপ ব্যাপারগুলোর বিষয়ে সতর্ক করে আসছি, এই যুদ্ধ কেমন হতে পারে সেগুলোর একটি চেকলিস্ট এখন বাস্তবে রূপ নিতে দেখছি। হরমুজ প্রণালির বিষয়টি, আমি মনে করি, এমন একটি পদক্ষেপ হবে যা অনেক বিশ্বনেতা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মনে এই ধারণা তৈরি করবে যে, 'ঠিক আছে, এখন আপনাদের ইরানিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলিদের সহায়তায় নামতে হবে।’

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, হরমুজ প্রণালি বন্ধ হয়ে গেলে বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের সরবরাহ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে। এতে তেলের দাম আকাশচুম্বী হবে এবং বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। এর ফলে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে মন্দার ঝুঁকি আরও প্রকট হবে। যেখানে ইসরায়েল, ইরানে হামলার পরই বিশ্ব বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে।

হরমুজ প্রণালি বন্ধে ইরানের এই হুমকিকে একটি কৌশলগত চাল হিসেবে দেখা হচ্ছে। এর মাধ্যমে তারা আঞ্চলিক সংঘাতের গতিপথ পরিবর্তন করতে চাচ্ছে। সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে ছাড় আদায় করারও একটি কৌশল এটি। তবে এই ‘ট্রাম্প কার্ড’ শেষ পর্যন্ত কী পরিণতি নিয়ে আসে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও অধ্যাপক এড হিরস আল-জাজিরাকে বলেন, হরমুজ প্রণালি বন্ধ হলে বিশ্ব অর্থনীতির ওপর এর দ্রুত এবং মারাত্মক প্রভাব পড়বে।

আল জাজিরাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে হিরস বলেন, ‘এই প্রণালি দিয়ে প্রতিদিন ১৮ থেকে ২০ মিলিয়ন ব্যারেল তেল পরিবাহিত হয়, যা বিশ্বব্যাপী তেলের বাজারের প্রায় ২০ শতাংশ। সৌদি আরব বা কুয়েতের জন্য ওই এলাকা থেকে বের হওয়ার কোনো সহজ বিকল্প পথ নেই।’

হিরস ব্যাখ্যা করেন, এই পরিবহন অর্ধেক কমিয়ে দিলে বিশ্বব্যাপী তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ১২০ ডলারের বেশি বেড়ে যাবে—এই প্রভাব খুব দ্রুত বিশ্বের সবার ওপর পড়বে।

হিরস আরও যোগ করেন, হরমুজ প্রণালি বন্ধ করে দিলে ট্রাম্প ইরানে হামলা করার একটি অজুহাত পেয়ে যাবেন।

হিরসের মতে, বিশ্ব অর্থনীতিতে আঘাত করা, বৈশ্বিক বাজারে তেলের প্রবাহ বন্ধ করে দিয়ে সরাসরি মার্কিন অর্থনীতিতে আঘাত করা, সম্ভবত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সরাসরি ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার প্রয়োজনীয় অনুঘটক হিসেবে কাজ করবে।

উল্লেখ্য, ইরানের আইআরআইএনএন সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, ইরানের সংসদের নিরাপত্তা কমিশনের সদস্য ইসমাইল কোসারি বলেছেন, ‘ইসরায়েলের হামলার জবাবে হরমুজ প্রণালি বন্ধ করার বিষয়টি ইরান গুরুত্ব সহকারে পর্যালোচনা করছে।’

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Thousands of people protests in Gaza

গাজায় গণহত্যা বন্ধে হেগে হাজারো মানুষের বিক্ষোভ

গাজায় গণহত্যা বন্ধে হেগে হাজারো মানুষের বিক্ষোভ

গাজায় গণহত্যা বন্ধে ডাচ সরকারকে আরও পদক্ষেপ নেওয়ার দাবিতে গতকাল হেগ শহরের রাস্তায় লাল পোশাক পরে কয়েক হাজার মানুষ বিক্ষোভ মিছিল করেছে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও অক্সফামের মতো মানবাধিকার সংগঠনগুলো হেগ শহরের আন্তর্জাতিক বিচার আদালত অভিমুখে এ বিক্ষোভের আয়োজন করে। সেখানে বিক্ষোভকারীরা সারিবদ্ধ হয়ে প্রতীকী ‘লাল রেখা’ তৈরি করেন।

বিক্ষোভকারীদের অনেকে ফিলিস্তিনি পতাকা উড়িয়ে এবং কেউ কেউ ‘স্টপ দ্য জেনোসাইড’ স্লোগান দিয়ে গতকাল বিকালে শহরের একটি কেন্দ্রীয় পার্কে লাল সমুদ্রে পরিণত করেন।

বিক্ষোভকারীরা ‘দৃষ্টি ফেরাবেন না, কিছু করুন’, ‘কুকর্মে ডাচ সহযোগিতা বন্ধ করুন’ এবং ‘শিশুরা ঘুমানোর সময় নীরব থাকুন, তাদের মৃত্যুর সময় নয়’ ইত্যাদি লেখা ব্যানার প্রদর্শন করেন।

বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজকরা ডাচ সরকারকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আরও পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

তারা তাদের বক্তব্যে বলেন, গাজার মানুষের অপেক্ষার সময় নেই। গণহত্যা বন্ধ করতে নেদারল্যান্ডসের যথাসাধ্য চেষ্টা করার কর্তব্য রয়েছে। ৬৭ বছর বয়সি ডোডো ভ্যান ডের স্লুইস এএফপিকে বলেন, গণহত্যা থামাতে হবে। যথেষ্ট হয়েছে। আমি আর এটা নিতে পারছি না।

এর আগে ১৮ মে হেগে এক বিক্ষোভে এক লাখেরও বেশি লোক অংশ নেন। আয়োজকরা এটাকে ২০ বছরের মধ্যে দেশের সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ হিসেবে বর্ণনা করেন।

ইসরায়েলে হামাসের হামলার জের ধরে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা যুদ্ধের সূত্রপাত হয়। সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে এএফপির হিসাব অনুযায়ী, এই যুদ্ধে ইসরায়েলের ১ হাজার ২১৯ জন নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক। হামাস ২৫১ জনকে জিম্মি করেছে, যাদের মধ্যে ৫৪ জন এখনো গাজায় আটক রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মতে, জিম্মিদের মধ্যে ৩২ জন মারা গেছেন।

হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ৫৫ হাজার ২০৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক। জাতিসংঘ এই পরিসংখ্যানকে নির্ভরযোগ্য বলে মনে করে। আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার করা একটি মামলার বিচার চলছে। সেখানে যুক্তি দেওয়া হয়েছে, ইসরায়েল গাজায় তাদের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ১৯৪৮ সালের জাতিসংঘের গণহত্যা কনভেনশন লঙ্ঘন করেছে। ইসরায়েল এই অভিযোগ দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করে।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
The G 4 Conference begins in the Israeli Iran conflict

ইসরায়েল-ইরান সংঘাতের মধ্যেই শুরু জি-৭ সম্মেলন

ইসরায়েল-ইরান সংঘাতের মধ্যেই শুরু জি-৭ সম্মেলন

ইসরায়েল-ইরান সংঘাত ও চলমান বৈশ্বিক বাণিজ্য বিরোধের মধ্যেই জি-৭ সম্মেলনে যোগ দিতে কানাডার রকি পর্বতমালায় একত্রিত হয়েছেন গোষ্ঠীটির বিভিন্ন নেতারা।

স্থানীয় সময় রবিবার (১৫ জুন) ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে উত্তেজনার মধ্যেই এই সম্মেলন শুর হয়।

এদিকে, এক মার্কিন কর্মকর্তাই বার্তা সংস্থা এপিকে জানান, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল ইসরায়েল, কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভেটোয় সেই পরিকল্পনা আলোর মুখ দেখেনি। তবে নিঃসন্দেহে এ তথ্যটি ইসরায়েলের হামলার তীব্রতা নির্দেশ করে।

চলমান এই সংঘাত নিয়ে সম্মেলনে তীব্র আলোচনা হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। তাছাড়া সম্মেলনের আগেও তিনি ট্রাম্প ও ইসরায়েলে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে আলোচনা করেছেন বকলে জানান।

এবারের সম্মেলনের আয়োজক ও কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি জানান, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে মতপার্থক্য থাকায় কোনো সম্মেলন নিয়ে কোনো যৌথ বিবৃতি দেওয়া হবেনা। যদিও এই বিবৃতি জি-৭-এর দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য।

এ ছাড়া,সম্মেলনের আগে গ্রিনল্যান্ড সফর করেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁখো। এ সময় ট্রাম্পের গ্রিনল্যান্ড কিনতে চাওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখান করেন তিনি। ম্যাঁখো বলেন, ‘গ্রিনল্যান্ড বিক্রির জন্য নয় এবং তা ছিনিয়ে নেওয়ার জন্যও নয়।’

রবিবার সন্ধ্যায় আলবার্টায় পৌঁছান ট্রাম্প। আজ (সোমবার) কার্নির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসার কথা রয়েছে ট্রাম্পের। এরপর শুরু হবে আনুষ্ঠানিক সেশন।

ব্যাপক অংশগ্রহণ, পুরনো উত্তেজনা

ভারত, ইউক্রেন, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া, মেক্সিকো ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের নেতারাও সম্মেলনে আমন্ত্রিত হয়েছেন। এবার বাণিজ্য ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসী শুল্ক কৌশল আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে, ওয়াশিংটন ছাড়ার আগে ট্রাম্প বলেন, সম্মেলনে নতুন বাণিজ্য চুক্তির ঘোষণা আসতে পারে।

তবে ট্রাম্পের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক কিছু নেতার জন্য কঠিন হয়ে উঠেছে। এর আগে ইউক্রেন ও দক্ষিণ আফ্রিকার নেতাদের ওপর চাপ প্রয়োগের অভিযোগ রয়েছে তার ওপর।

ট্রাম্প সম্পর্কে সাবেক কানাডিয়ান প্রধানমন্ত্রী জ্যাঁ ক্রেতিয়ান নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘যদি ট্রাম্প মনোযোগ আকর্ষণে কোনো দৃশ্য তৈরি করতে চান, করতে দিন। শান্ত থাকুন ও নিজের কাজ চালিয়ে যান।’

গত মাসে যানবাহন, ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর শুল্ক কমাতে প্রাথমিক বাণিজ্য চুক্তি করে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র, তবে তা এখনও বাস্তবায়িত হয়নি।

এদিকে, কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম রাজ্য হওয়া উচিত— ট্রাম্পের এমন মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া নার জানানোয় কানাডিয়ানদের কাছ থেকে সমালোচিত হয়েছেন স্টারমার।

এর জবাবে স্টারমার বলেন, ‘কানাডা একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ এবং কমনওয়েলথের একজন গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।’ এ ছাড়া, সম্মেলনের আগে ওটোয়ায় কার্নির সঙ্গে বাণিজ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ে আলোচনা করেন স্টারমার।

অন্যদিকে, চলতি বছরের শুরুর দিকে ওভাল অফিসের বিতর্কিত বৈঠকের পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের আবার বৈঠকের কথা রয়েছে।

উল্লেখ্য, ইরানে ইসরায়েলি হামলার পর বিশ্ববাজার ও ওয়াল স্ট্রিটে পতন হয়েছে ও তেলের দাম বেড়েছে।

জার্মান কর্মকর্তারা জানান, সম্মেলনটি ‘জি-৬ বনাম ট্রাম্প’ হয়ে উঠবে এমন জল্পনা ভিত্তিহীন, কারণ সদস্য দেশগুলোর মধ্যেও মতপার্থক্য বিদ্যমান।

তবে ক্রেতিয়ান বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট কী করবেন, তা তার মেজাজ বা সংবাদ শিরোনামে থাকার ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে—এটাই সবচেয়ে অপ্রত্যাশিত দিক।’

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Israel Iran conflict is possible to easily end Trump

ইসরায়েল-ইরান সংঘাত সহজেই শেষ করা সম্ভব: ট্রাম্প

ইসরায়েল-ইরান সংঘাত সহজেই শেষ করা সম্ভব: ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের কোনো লক্ষ্যবস্তুতে তেহরান হামলা না চালালে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলমান সংঘাত সহজেই শেষ করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের ওপর হামলা হলে ইরানের ওপর সেনাবাহিনীর ‘পূর্ণশক্তি’ প্রয়োগ করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।

স্থানীয় সময় রবিবার (১৫ জুন) নিজস্ব সামাজিকমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে এসব বলেন ট্রাম্প।

তিনি বলেন, ‘ইরান যদি আমাদের (যুক্তরাষ্ট্র) ওপর কোনোভাবে আক্রমণ করে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের সশস্ত্র বাহিনীর পূর্ণশক্তি ও ক্ষমতা তোমাদের (ইরান) ওপর এমনভাবে নেমে আসবে, যা পৃথিবী আগে কখনও দেখেনি।’

ট্রাম্প আরও বলেন, ‘তবে আমরা সহজেই ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে একটি চুক্তি সম্পন্ন করতে পারি এবং এই রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসান ঘটাতে পারি।’

যদিও চুক্তি নিয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য দেননি তিনি। এর আগে, রবিবার রাতে ইরানের বোমা হামলায় ইসরায়েলে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১০ জনে পৌঁছেছে বলে জনিয়েছে ইসরায়েলি উদ্ধারকারী দল। এছাড়া ১৪০ জনের বেশি আহত হয়েছেন বলে জানানো হয়েছে।

একাধিক ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ও জরুরি সেবা সংস্থার বরাত দিয়ে বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, রবিবার ভোরে দুই দফায় ইসরায়েলের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান।

অন্যদিকে, ইসরায়েলের অভিযানে ইরানে প্রথম দিন ৭৮ জন নিহত হয়েছেন ও দ্বিতীয় দিনে আরও বহু মানুষ নিহত হয়েছেন বলে জানায় তেহরান। এর মধ্যে একটি ১৪ তলা আবাসিক ভবনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ২৯টি শিশুসহ ৬০ জন মারা যাওয়ার তথ্য দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, ইরানের অস্ত্র স্থাপনার আশপাশে বসবাসকারী নাগরিকদের সেখান থেকে সরে যাওয়ার জন্য সতর্ক করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ‘ আগামী দিনে ইরান যা দেখবে, ইসরায়েলের এ যাবতকালের হামলা তার কাছে কিছুই না।’

শুক্রবার (১৩ জুন) রাজধানী তেহরানসহ দেশটির শতাধিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালায় ইসরায়েল। আজ (রবিবার) ওমানে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের নির্ধারিত পারমাণবিক আলোচনাকে বানচাল করতেই ইসরায়েল এই হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি।

তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বৈঠক বাতিল করা হয়েছে। তাছাড়া ইসরায়েলের এই হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন রয়েছে এবং ইরান কেবল আত্মরক্ষার্থে জবাব দিচ্ছে বলেই মত দেন তিনি।


এর আগে, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ইসরায়েলের বর্বরোচিত হামলার মধ্যে ওমানের আলোচনা সম্ভব নয়।’

তাছাড়া, ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে কেউ সহায়তা করলে, ওই দেশের সামরিক ঘাঁটিগুলোকেও হামলার লক্ষ্যবস্তু করা হবে বলে সতর্ক করেছে তেহরান।

ইসরায়েলের দাবি, ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি থেকে বিরত রাখা এবং এর ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতাকে অকার্যকর করার জন্য এই সামরিক অভিযান চালানো হয়েছে।

এই অভিযান ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে পুরোপুরি থামাতে না পারলেও একটি পূর্ণাঙ্গ যুক্তরাষ্ট্র-ইরান চুক্তির পথ খুলে দেবে বলে আশা প্রকাশ করেন ইসরায়েলি কর্মকর্তারা।

এদিকে, ইরান-সমর্থিত ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা রবিবার জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় তারা ইসরায়েলের কেন্দ্রীয় এলাকা জাফায় একাধিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। ইরানের কোনো মিত্রের এটিই ছিল প্রথম সরাসরি হামলা।

তবে গাজায় ২০ মাসের যুদ্ধ এবং গত বছর লেবাননের সংঘর্ষে ইরানের সবচেয়ে শক্তিশালী আঞ্চলিক মিত্র হিজবুল্লাহকে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, যার ফলে ইরানের পাল্টা জবাবের ক্ষমতা কমে এসেছে বলে মনে করছেন অনেকে।

এ ছাড়া, ইসরায়েলের হামলার কারণে বিশ্বের বৃহত্তম গ্যাসক্ষেত্র ‘সাউথ পার্সের’ উৎপাদন আংশিকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে ইরান। এতে তেলের দাম বাড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

সাউথ পার্স ক্ষেত্রটি ইরানের দক্ষিণ বুশেহর প্রদেশে অবস্থিত এবং এটি ইরানে উৎপাদিত গ্যাসের প্রধান উৎস।

তাছাড়া, ইসরায়েল জানিয়েছে, তাদের অভিযান কয়েক সপ্তাহ চলতে পারে। এমনকি ইরানের জনগণকে তাদের ইসলামি ধর্মীয় শাসকদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন নেতানিয়াহু। এর ফলে এই সংঘাত আঞ্চলিক পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়বে এবং বাইরের শক্তিগুলোকেও জড়িয়ে ফেলবে—এমন আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে।

ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি তাদের অস্তিত্বের জন্য হুমকি মনে করে ইসরায়েল। ইরান যাতে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির শেষ ধাপ পর্যন্ত না পৌঁছাতে পারে, তা নিশ্চিত করতেই এই হামলা চালানোর কথা জানিয়েছে তেল আবিব।

তবে এ অভিযানকে সম্পূর্ণরূপে বেসামরিক বলে আখ্যা দিয়েছে ইরান। এ ছাড়া, তেহরান পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টা করছে না বলে দাবি করেছে তারা। অবশ্য জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষক সংস্থার তথ্যমতে, ইরান বৈশ্বিক পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তির আওতায় থাকা বাধ্যবাধকতাগুলো লঙ্ঘন করেছে।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
The plane crashed in India was already a problem

ভারতে বিধ্বস্ত বিমানে আগে থেকেই সমস্যা ছিল

বিমান থেকে বের হওয়ার বর্ণনা দিলেন বেঁচে যাওয়া একমাত্র যাত্রী
ভারতে বিধ্বস্ত বিমানে আগে থেকেই সমস্যা ছিল

দিল্লি থেকে আহমেদাবাদে যাত্রার সময় এক এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইটে উঠে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন এক যাত্রী। তিনি বিমানের ভেতরের অস্বাভাবিক অবস্থার কথা তুলে ধরে ভিডিও করেন এবং সেটি পোস্ট করেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। যান্ত্রিক ত্রুটির বিষয়ে ভিডিও করার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই সেই বোয়িং ৭৮৭-৮ বিমানটি আহমেদাবাদের মেঘানিনগর এলাকায় বিধ্বস্ত হয়।

আকাশ বাত্সা নামের ওই যাত্রী দিল্লি থেকে আহমেদাবাদে গিয়েছিলেন এআই-১৭১ ফ্লাইটে।

বিমানের মধ্যে প্রবল অস্বস্তিকর অবস্থা নিয়ে তিনি পোস্ট করা ভিডিওটিতে বলেন, ‘আমরা ট্যাক্সি করার অপেক্ষায়, কিন্তু এসি একেবারেই কাজ করছে না। চারপাশে যাত্রীরা গরমে অস্থির হয়ে পড়েছেন। এর ওপর টিভি স্ক্রিন, লাইট–কোনোটাই কাজ করছে না। এটি কি যাত্রীদের জন্য গ্রহণযোগ্য?’ তিনি এসব দৃশ্য ভিডিও করে এক্স-এ পোস্ট করেন।

ভিডিওতে দেখা যায়, বিমানের অভ্যন্তরে যাত্রীরা অস্বস্তিতে রয়েছেন এবং নানা যন্ত্রাংশ বিকল হয়ে আছে।

অকাশের ভিডিও পোস্ট করার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই এআই-১৭১ ফ্লাইটটি আহমেদাবাদ থেকে উড্ডয়নের পরপরই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। লন্ডনের গ্যাটউইকগামী এই বোয়িং ৭৮৭-৮ বিমানে তখন ২৪২ জন যাত্রী ও ক্রু সদস্য ছিলেন। এদের মধ্যে ১৬৯ জন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ, ১ জন কানাডীয় এবং ৭ জন পর্তুগিজ নাগরিক ছিলেন।

ঘটনার পর অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, তাহলে কি বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটির ইঙ্গিত ছিল আগেই? আকাশের ভিডিও ও অভিজ্ঞতা দেখে অনেকেই বলছেন, ফ্লাইটটি হয়তো উড্ডয়নের জন্য পুরোপুরি উপযুক্ত অবস্থায় ছিল না। এমন অবস্থা সত্ত্বেও বিমানের যাত্রা চালিয়ে যাওয়াটাই বড় প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।

আহমেদাবাদ নামায় প্রাণে বেঁচে যাওয়া আকাশ বাত্সা অপর একটি পোস্টে লেখেন, ‘আজ রাতে আর এয়ার ইন্ডিয়াতে ফিরছি না। যথেষ্ট হয়েছে।’

বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে একজন যাত্রীর পূর্ব-অভিজ্ঞতা থেকেই যদি দুর্ঘটনার সম্ভাবনার ইঙ্গিত পাওয়া যায়, তাহলে প্রশ্ন উঠবে নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনায় গাফিলতির বিষয়েও।

এখন দেখার বিষয়, আকাশের অভিজ্ঞতা ও ভিডিও ভবিষ্যতে তদন্তের কোনো দিকনির্দেশনা দিতে পারে কি না।

ভারতের ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় ২৪১ জন আরোহীসহ ২৯৪ জন নিহত হয়েছেন। বিমানটি ২৪২ জন আরোহী নিয়ে গুজরাটের আহমেদাবাদে বিজে মেডিকেল কলেজের একটি ছাত্রাবাসে আছড়ে পড়ে। এতে ওই মেডিকেল কলেজের অন্তত ৫০ জন শিক্ষার্থীও প্রাণ হারান।

বিধ্বস্ত লন্ডনগামী বিমানটির ২৪২ জন আরোহীর মধ্যে একজন ছাড়া সবারই মৃত্যু হয়েছে। প্রাণে বেঁচে যাওয়া একমাত্র ব্যক্তিটি হলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক বিষ্ণু কুমার রমেশ। বয়স ৪০ বছর।

আগুনের গোলার মতো বিস্ফোরিত হওয়া ওই উড়োজাহাজের ধ্বংসাবশেষ থেকে অলৌকিকভাবে বের হয়ে আসেন বিষ্ণু কুমার। গতকোল শুক্রবার হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে ভারতের জাতীয় সম্প্রচারমাধ্যম ডিডি নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সেই বিভীষিকাময় মুহূর্তের কথা বর্ণনা করেছেন রমেশ।

জ্বালানিতে পরিপূর্ণ এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজটি লন্ডনের উদ্দেশে রওনা করেছিল। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরই এটি বিস্ফোরিত হয়।

বিভিন্ন সংবাদ প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, উড়োজাহাজের ১১এ নম্বর আসনে বসেছিলেন রমেশ। তার ভাইও ছিলেন একই উড়োজাহাজে। যুক্তরাজ্যে থাকা পরিবারের অন্য সদস্যরা সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

রমেশ বলেন, ‘উড্ডয়নের এক মিনিটের মধ্যেই হঠাৎ মনে হলো কিছু একটা আটকে গেছে। আমি বুঝতে পারলাম, কিছু একটা ঘটেছে। তারপর হঠাৎ করে উড়োজাহাজের সবুজ আর সাদা আলো জ্বলে উঠল। এরপর মনে হলো উড়োজাহাজটি আরও জোরে ছুটছে। এটি সোজা গিয়ে একটা হাসপাতালের হোস্টেলে গিয়ে ধাক্কা খেল। আমার চোখের সামনেই উড়োজাহাজটা বিধ্বস্ত হলো।’

রমেশ এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সেখানে তার শরীরের পোড়া ক্ষত ও আঘাতের চিকিৎসা চলছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গতকাল শুক্রবার হাসপাতালে রমেশকে দেখতে যান। মোদির ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে।

বার্তা সংস্থা প্রেস অ্যাসোসিয়েশনের খবরে বলা হয়েছে, রমেশের বয়স ৪০ বছর। তিনি যুক্তরাজ্যের লেস্টার শহরের বাসিন্দা। বার্তা সংস্থাটি রমেশের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছে।

রমেশ বলেন, ‘শুরুতে ভেবেছিলাম, আমিও মারা যাচ্ছি। কিন্তু পরে যখন চোখ খুললাম, বুঝলাম, এখনো বেঁচে আছি।’

রমেশ আরও বলেন, ‘আমি সিটবেল্ট খুলে বেরোনোর চেষ্টা করলাম এবং পারলামও। আমার মনে হয়, আমি উড়োজাহাজের যে পাশটায় ছিলাম, সেটি হোস্টেলের দিকে ছিল না। আমি যেখানে নামলাম, সেটি মাটির কাছাকাছি ছিল এবং সেখানে ফাঁকা জায়গাও ছিল। আমার পাশের দরজাটা ভেঙে পড়ার পর দেখলাম, বাইরে জায়গা আছে। আর তখনই ভাবলাম, চেষ্টা করলে বেরিয়ে যেতে পারি।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, দুর্ঘটনার কিছুক্ষণ পর বিষ্ণু রক্তমাখা টি-শার্ট পরে পা টেনে টেনে হাঁটছেন এবং নিজেই অ্যাম্বুলেন্সের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন।

বিষ্ণু বলেন, ‘আগুনে আমার বাঁ হাতটা সামান্য পুড়ে গেছে। একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে আমাকে হাসপাতালে আনা হয়। এখানকার লোকজন খুব ভালোভাবে আমার দেখভাল করছে।’

মন্তব্য

p
উপরে