নির্বাচনে জিতে পশ্চিমবঙ্গের চারটি পৌরসভা নিজেদের দখলে রেখেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
এর আগে কলকাতা পৌরসভায়ও জয় পেয়েছিল দলটি। সেই জয়ের ধারা অব্যাহত রেখে তৃণমূল কংগ্রেস বিধাননগর, চন্দননগর, আসানসোল, শিলিগুড়ি- এই চারটি পৌরসভার ভোটের ফলাফলে বিপুলসংখ্যক আসনে জয় পেয়ে তাদের পৌর বোর্ড গঠন করতে চলেছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনপ্রিয়তার মুখে বিরোধীদের খুঁজে পাওয়া যায়নি এবারের নির্বাচনে। শিলিগুড়িতে বামেরা নির্বাচনে কোনো লড়াই করতে পারেনি। এমনকি প্রবীণ সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্যও পরাজিত হয়েছেন। শিলিগুড়ি পৌরসভায় এই প্রথম নির্বাচিত হয়ে পৌর বোর্ড গঠন করতে চলেছে তৃণমূল।
সোমবার শিলিগুড়ির প্রশাসনিক বৈঠকে যাওয়ার আগে দলের এই জয়ে খুশি তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘আমি খুশি, শিলিগুড়িতে জয়ের খবর নিয়ে যাচ্ছি। এটা আমাদের কাছে বড় ব্যাপার। গৌতম দেব শিলিগুড়ির মেয়র হবেন। কারণ তিনি প্রবীণ নেতা। অন্য জায়গাগুলো দল সিদ্ধান্ত নেবে।’
শিলিগুড়ির জয় রাজ্যের উন্নয়নের হাত ধরে এসেছে বলে জানিয়ে তৃণমূল নেত্রী বলেন, 'শিলিগুড়িতে আজ কত উন্নয়ন হচ্ছে। শিলিগুড়ি থেকে নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ সরাসরি যোগাযোগ হয়। সেখানে রাস্তা, ফ্লাইওভার, ভোরের আলো এ রকম নানা প্রকল্প আমরা হাতে নিয়েছি।'
বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগের সুর চড়িয়ে মমতা বলেন, ‘দার্জিলিং, শিলিগুড়ির জন্য কাজ করার কথা ছিল, তা করেনি বিজেপি। কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরেও কোনো কাজ করেনি।’
মানুষের এই রায়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে মমতা বলেন, ‘এই জয়, মানুষের জয় । তবে যেকোনো জয় আমাদের আরও বেশি নম্র এবং মানবিক হতে সাহায্য করে।’
সোমবারের চার পৌর ভোটের ফলাফলে বিধাননগর পৌরসভার ৪১টি আসনের মধ্যে ৩৯টিতে জয় পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। কংগ্রেস একটি আসন পেলেও বিজেপি এবং বামেরা কোনো আসন পায়নি। শিলিগুড়ির ৪৭টি আসনের মধ্যে ৩৭টিতে জয় পেয়েছে তৃণমূল। বিজেপি ৫টিতে, বামেরা ৪টি এবং কংগ্রেস ১টি আসনে জয়লাভ করেছে। চন্দননগর পৌরসভার ৩২টি আসনের ৩০টিতে জয় পেয়েছে তৃণমূল। বাকি ২টি আসন পেয়েছে বামেরা। আসানসোল পৌরসভার ১০৬টি আসনের মধ্যে ৯০টি আসনে জয়লাভ করেছে তৃণমূল।
তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের মধ্যেও পশ্চিমবঙ্গের শাসকদলের এই জয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনপ্রিয়তার কাছে বিরোধীদের হার বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
শিলিগুড়ির সদ্য সাবেক মেয়র সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য সিপিএমের এই বিপর্যয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, ‘একটা বিপর্যয় হয়েছে। আমাদের যে ভোট বিজেপিতে গিয়েছিল, সেই ভোট আমাদের কাছে ফেরত আসার বদলে তৃণমূলের বাক্সে ঢুকেছে। আমাদের পলিটিক্যাল রিজেকশন হয়েছে।’
আরও পড়ুন:উপজেলা নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সব পর্যায়ের কমিটি গঠন ও সম্মেলন বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
আওয়ামী লীগের সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে শনিবার এক বিফ্রিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচন শুরু হতে যাচ্ছে, আগামী ৮ মে প্রথম পর্যায়ের নির্বাচন হবে। এ নির্বাচন চলাকালে উপজেলা বা জেলা পর্যায়ে কোনো সম্মেলন, মেয়াদোত্তীর্ণ সম্মেলন, কমিটি গঠন এই প্রক্রিয়া বন্ধ থাকবে।’
মন্ত্রী-এমপির নিকটাত্মীয়দের উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘নিকটজনেরা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে হবে। যারা ভবিষ্যতে করতে চায় তাদেরও নির্বাচনি প্রক্রিয়া থেকে দূরে থাকতে বলা হয়েছে। যারা আছে তাদের তালিকা তৈরি করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।’
নির্দেশনা দেয়া হলেও অনেকেই এখনও নির্বাচনে আছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রত্যাহারের তারিখ শেষ হোক, তার আগে এ বিষয়ে কীভাবে বলা যাবে।’
দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলছে দাবদাহ। এ সময়ে অগ্নিকাণ্ড থেকে বাঁচতে করণীয় কী কী, তা জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস মিডিয়া সেলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহজাহান শিকদার।
এক ভিডিওবার্তায় তিনি বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন, যা তার ভাষায় তুলে ধরা হলো নিউজবাংলার পাঠকের জন্য।
বিদ্যুৎ ব্যবহারে সতর্কতা
সম্মানিত দর্শকমণ্ডলী, প্রচণ্ড তাপদাহ চলছে এবং এটি আরও কিছুদিন ধরে কন্টিনিউ করতে পারে। এ সময় কিন্তু অগ্নিদুর্ঘটনার ঝুঁকি মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সে জন্য এই তাপদাহের সময় অগ্নিদুর্ঘটনা থেকে বেঁচে থাকার জন্য আমাদের আরও বেশি সতর্ক হওয়া লাগবে।
বিশেষ করে বিদ্যুৎ ব্যবহারের ক্ষেত্রে অধিক সতর্ক হওয়া লাগবে। বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম এবং যন্ত্রাংশ ব্যবহারের সময় এটি একটানা দীর্ঘসময় ব্যবহার না করে মাঝে মাঝে বিরতি দেয়া লাগবে এবং এগুলো যারা পরিচালনা করেন, শ্রমিক যারা তাদেরও কিন্তু দীর্ঘসময় ধরে একটানা কাজ না করিয়ে মাঝে মাঝে তাদেরকেও বিরতি দিতে হবে। তাহলে কিন্তু অগ্নিদুর্ঘটনার শঙ্কা হ্রাস পাবে এবং সীমিত থাকবে।
বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ত্রুটিমুক্ত রাখা
সকল ধরনের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ত্রুটিমুক্ত আছে কি না, এখনই চেক করতে হবে। ত্রুটিপূর্ণ থাকলে তা বদলে ফেলতে হবে। একটি বৈদ্যুতিক লাইন থেকে অথবা একটি মাল্টিপ্লাগ থেকে অতিরিক্ত সংযোগ নেয়া যাবে না। এই জাতীয় সংযোগ থেকে কিন্তু দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে।
বৈদ্যুতিক লাইন ব্যবহারে সতর্কতা
বৈদ্যুতিক লাইন ব্যবহারের ক্ষেত্রে যখন ব্যবহার বন্ধ হয়ে যাবে, সব ধরনের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রাখতে হবে। অফ করে রাখতে হবে।
রান্নার ক্ষেত্রে সতর্কতা
এ ছাড়া আমরা আবাসিক ভবনে যারা রান্নার কাজ করি, রান্না রেখে দূরে সরে যাওয়া যাবে না। রান্না শেষে অবশ্যই চুলা পুরোপুরি নিভিয়ে ফেলতে হবে এবং গ্রামেগঞ্জে রান্না করছি যেখানে ছাই যেন উত্তপ্ত না থাকে, ছাইও নিশ্চিন্তভাবে নিভিয়ে ফেলতে হবে।
ধূমপান পরিহার
আবাসিক ভবন ও কারখানায় কোনোভাবেই কিন্তু ধূমপান করা যাবে না। অপরিহার্য ক্ষেত্রে বাইরে যারা ধূমপান করবেন, বিড়ি-সিগারেটের শেষ অংশ সতর্কভাবে, সচেতনভাবে নিভিয়ে ফেলতে হবে এবং গাড়িতে চলাচলের সময় ধূমপান করে যেখানে সেখানে কিন্তু সিগারেটের অংশ ফেলা যাবে না।
বারবিকিউ পার্টি না করা
বাড়ির ছাদে, বারান্দায় অথবা আশপাশে দাহ্য বস্তু আছে, এমন খোলা জায়গায় এ সময় বারবিকিউ পার্টি করবেন না। কারণ একটি স্ফূলিঙ্গ উড়ে গিয়ে ভয়াবহ অগ্নিদুর্ঘটনার সৃষ্টি করতে পারে। এই সময় ক্যাম্প ফায়ার, ফানুস ওড়ানো অথবা আতশবাজিকে পুরোপুরি না বলুন।
গাড়িতে অবস্থান ও পার্কিংয়ে সতর্কতা
ফিলিং স্টেশন থেকে তেল ও গ্যাস সংগ্রহের সময় অনুগ্রহপূর্বক কেউ গাড়িতে অবস্থান করবেন না। সবাই সচেতন থাকবেন। বিশেষ করে ফিলিং স্টেশনের মালিক এবং যারা কর্মরত আছেন, তাদের এ ব্যাপারে অধিক মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন।
এ সময় সরাসরি রোদ পড়ে এমন জায়গায় গাড়ি পার্কিং করবেন না। গাড়ি ছায়ার মধ্যে পার্কিং করবেন বা যেখানে ছায়া আছে, এমন জায়গায় গাড়ি পার্ক করবেন।
আগুন নিয়ে খেলা পরিহার
এ সময় বাচ্চাদের আগুন নিয়ে খেলতে দেবেন না এবং আপনার হাতের কাছে অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জাম সংরক্ষণ করুন। সরঞ্জাম ত্রুটিমুক্ত আছে কি না, তা পরীক্ষা করুন এবং এগুলোর সামনে কোনো ব্যারিয়ার তৈরি করবেন না।
ফায়ার সার্ভিসের সহায়তা পেতে
আপনার সতর্কতা এবং আপনার প্রতিবেশীকে সতর্ক করার মধ্য দিয়ে কিন্তু নিরাপদ থাকা সম্ভব। এ ছাড়া আপনার এবং আপনার পরিবারের সকল সদস্যের মোবাইলে নিকটস্থ ফায়ার স্টেশনের ফোন নম্বর সেভ করে রাখুন। যেকোনো সময় ফায়ার সার্ভিসকে দ্রুত রেসপন্স করার জন্য ১৬১৬৩ হটলাইন অথবা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ কিংবা নিকটতম ফায়ার স্টেশনের ফোন নম্বরে দ্রুত কল করুন এবং ফায়ার সার্ভিসের সেবা গ্রহণ করুন।
আরও পড়ুন:নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে গাড়ির চাপায় দুইজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন একজন।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কেওডালা এলাকায় শনিবার সকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো দুজন হলেন ঝালকাঠি সদর উপজেলার খেজুরা এলাকার সুরেশ ডাকুয়া (৩৫) ও তার ছেলে লোকেশ ডাকুয়া (৯)। এ ঘটনায় আহত লোকেশ ডাকুয়ার মা নিপু রায় (৩০) বলে জানিয়েছেন কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের পরিদর্শক রেজাউল হক।
তিনি জানান, শুক্রবার রাতে স্বামী-সন্তানসহ নারায়ণগঞ্জে ‘বাবা লোকনাথ ব্রহ্মচারী’ মন্দিরে পূজা করতে যান তারা। সেখান থেকে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে স্বামী স্ত্রী ও সন্তান ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কেওঢালা এলাকা পার হচ্ছিলেন। এ সময় একটি গাড়ি তাদের চাপা দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়।
তিনি আরও জানান, আহত অবস্থায় তিনজনকে স্থানীয়রা একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে লোকেশকে চিকিৎসক মৃত বলে জানান। সুরেশ ও নিপু রায়কে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হলে সেখানে সুরেশ ডাকুয়ার মৃত্যু হয়।
কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের পরিদর্শক রেজাউল হক বলেন, ‘নিপু রায় ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি শঙ্কামুক্ত বলে জানা গেছে। নিহত দুইজনের মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে।’
এ ঘটনায় মামলাসহ গাড়ি ও চালককে শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:নওগাঁয় সামাজিক সংগঠন একুশে পরিষদ নওগাঁর উদ্যোগে ১৯৭১ সালের অসহায় শরণার্থীদের দুর্ভোগ স্মরণে ‘রোড টু বালুরঘাট’ প্রতীকী পদযাত্রায় ফুটে উঠেছে নওগাঁয় রোড ধরে ভারতে পাড়ি দেয়া শরণার্থীদের দুর্দশার চিত্র।
ঐতিহাসিক ২০ এপ্রিলের এ দিনে ‘রোড টু বালুরঘাট’ স্মরণ করল নওগাঁবাসী। প্রায় ৬০ মিনিটে ৩ কিলোমিটার পদযাত্রায় যুদ্ধকালীন নওগাঁ রোডের শরণার্থীদের যুদ্ধ বিভীষিকা ও অবর্ণনীয় দুর্দশা তুলে ধরা হয়।
মুক্তিযুদ্ধের ৫৩ বছর পর শনিবার বেলা ১১টার দিকে পাঁচ শতাধিক মানুষ নওগাঁ রোডে এ প্রতীকী পদযাত্রায় অংশ নেন। শহরের তাজের মোড় শহিদ মিনার পাদদেশ থেকে পদযাত্রা শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জলিল মুক্ত মঞ্চ চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।
একুশে পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট ডি এম আব্দুল বারীর সভাপতিত্বে শরণার্থীদের প্রতীকী পদযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন উপদেষ্টা মইনুল হক দুলদুল, সাবেক অধ্যক্ষ শরিফুল ইসলাম খান, সিদ্দিকুর রহমান, অধ্যক্ষ বিন আলী পিন্টু, অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ, সাইমা ফেরদৌসী, নাইস পারভীন, বিষ্ণু কুমার দেবনাথ, গুলশানারাসহ অনেকে।
এ সময় বক্তারা জানান, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসরদের বর্বরোচিত অত্যাচার-নিপীড়ন ও গণহত্যা থেকে বাঁচতে যুদ্ধের শুরু থেকে বিশেষ করে ২০ এপ্রিল এই দিনে পায়ে হেঁটে নওগাঁর সড়ক পথে হাজার হাজার মানুষ শরণার্থী হিসেবে ভারতের বালুরঘাটে আশ্রয় নেন। চলার পথে সেই সময় পাকহানাদার ও দোসরদের আক্রমণে অনেকের মৃত্যু হয়। সে সব শরণার্থীদের ক্লান্তি ও দুর্ভোগ স্মরণে একুশে পরিষদ নওগাঁ ‘রোড টু বালুরঘাট’ প্রতীকী পদযাত্রার আয়োজন করা হয়েছে।
একুশে পরিষদ নওগাঁর সভাপতি অ্যাডভোকেট ডি এম আব্দুল বারী বলেন, ‘আমরা অনেকেই একাত্তরের ইতিহাস ভুলে গেছি। ৫৩ বছরের আগে কী ঘটেছিল। লাখ লাখ মানুষ নওগাঁ শহরের ওপর দিয়ে দেশ ছেড়েছিল দেশকে মুক্ত করার জন্য। চলার পথে সে সময় পাকহানাদার ও দোসরদের আক্রমণে অনেকেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। নওগাঁর মূল ইতিহাস ও ঐতিহ্যবাহী এ জেলার সব তরুণ প্রজন্ম ও শিক্ষার্থীদের জানানোর লক্ষ্যেই আয়োজনটি করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:টাঙ্গাইলের গোপালপুরে ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে জোর করে ধান কাটা বন্ধে উদ্যোগ নেয়ায় সন্ত্রাসীদের হামলায় পুলিশের এক উপপরিদর্শক তথা এসআইসহ চারজন আহত হয়েছেন।
উপজেলার হাদিরা ইউনিয়নের পলশিয়া গ্রামে শুক্রবার এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করে শনিবার আদালতে পাঠায় পুলিশ।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হোসেন বলেন, ‘পলশিয়া পূর্বপাড়া গ্রামের কাজিম মন্ডল একদল সন্ত্রাসী নিয়ে একই গ্রামের সানু মিয়ার ডুব বিলের দুই বিঘা পাকা বোরো ধান কাটা শুরু করেন। সানু মিয়া ৯৯৯ নম্বরে কল দিলে গোপালপুর থানার এসআই সাইফুল ইসলাম একজন কনস্টেবল নিয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন। পুলিশ দেখে সস্ত্রাসীরা ক্ষিপ্ত হয়।
‘তারা রামদা, লাঠি ও লোহার রড নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এতে সাব-ইন্সপেক্টর সাইফুল ইসলামের মাথা ফেটে যায়। কনস্টেবল শফিকুল ইসলামসহ সানু মিয়ার দুই আত্মীয় আহত হয়। আহতরা সবাই গোপালপুর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।’
গোপালপুর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা প্রিয়াঙ্কা বলেন, ‘সাব-ইন্সপেক্টর সাইফুল ইসলামের মাথায় বেশ কয়েকটি সেলাই দেয়া হয়েছে।’
গোপালপুর থানার ওসি ইমদাদুল হক তৈয়ব বলেন, ‘এ ঘটনায় থানায় একাধিক মামলা হয়েছে। হামলার অভিযোগে ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।’
আরও পড়ুন:দেশে চলমান দাবদাহের পরিপ্রেক্ষিতে প্রাথমিক, মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের উপপরিচালক (কলেজ-১) মো. ওয়াহিদুজ্জামান শনিবার বিকেলে মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজ সাত দিন বন্ধ থাকার সিদ্ধান্তের কথা নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন।
এর আগে শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ২১ থেকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত সাত দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তের কথা জানায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার মাহবুবুর রহমান তুহিন স্বাক্ষরিত শনিবারের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘চলমান তাপদাহে শিশু শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা বিবেচনায় আগামী ২১ এপ্রিল, ২০২৪ থেকে ২৭ এপ্রিল, ২০২৪ পর্যন্ত সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শিশু কল্যাণ ট্রাস্টের বিদ্যালয়সমূহ ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর লার্নিং সেন্টারগুলো বন্ধ থাকবে।’
তারও আগে দেশজুড়ে চলমান দাবদাহের কারণে সরকারি প্রাথমিক স্কুলে অ্যাসেম্বলি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘দেশজুড়ে বহমান তাপদাহের ওপর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় তীক্ষ্ণ নজর রাখছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় দেশের সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অ্যাসেম্বলি পরবর্তী নির্দেশনা দেয়া না পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।’
গত কয়েক দিন ধরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলছে দাবদাহ। কোনো কোনো জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র দাবদাহ।
ভারত সীমান্তবর্তী জেলা চুয়াডাঙ্গায় শুক্রবার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এমন বাস্তবতায় দৈনন্দিন কাজকর্ম করা কঠিন হয়ে গেছে বিভিন্ন বয়সীদের।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামের পটিয়ার সড়কে শুক্রবার বিকেল ও রাতে দুটি দুর্ঘটনায় তিনজন নিহত ও চারজন আহত হয়েছেন।
বাস উল্টে হেলপার নিহত
পটিয়ার মনসা বাদামতলা থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামমুখী একটি মিনিবাস বিপরীত দিক থেকে আসা আরেকটি বাসকে সাইড দিতে গিয়ে শুক্রবার বেলা সাড়ে পাঁচটার দিকে মহাসড়কের পাশে উল্টে যায়। ওই সময় বাসটির হেলপার রফিক (২৩) লাফ দিলে বাসের নিচে চাপা পড়ে প্রাণ হারান তিনি।
পটিয়া ক্রসিং হাইওয়ে থানার ওসি তৌফিকুল ইসলাম দুর্ঘটনার বিষয়টি জানিয়েছেন।
অটোরিকশায় বাসের ধাক্কায় দুজন নিহত
উপজেলার খরনা চেয়ারম্যান ঘাট এলাকায় শুক্রবার রাত ১০টার দিকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় বাসের ধাক্কায় দুজন নিহত ও চারজন আহত হয়েছেন।
নিহত দুজন হলেন চন্দনাইশ উপজেলার বৈলতলী এলাকার আবু বক্কর তাসিফ (১৮) ও কক্সবাজারের ঈদগাহ মধ্যম মাইজপাড়া এলাকার নুরুল আমিন (২৭)।
আহত চারজন হলেন বৈলতলীর রাকিব হোসেন (২০), মোহাম্মদ জাবেদ (১৯), মোহাম্মদ সিহাব (২২) ও চকরিয়ার অটোরিকশার চালক লিটন (৩৫)।
পটিয়া ক্রসিং হাইওয়ে থানার ওসি তৌফিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার রাত ১০টার দিকে চট্টগ্রাম অভিমুখী দ্রুতগামী মারসা পরিবহনের একটি বাস নম্বরবিহীন সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয়। এতে অটোরিকশাটি দুমড়েমুচড়ে যায়।
তিনি আরও জানান, স্থানীয়রা অটোরিকশার যাত্রীদের উদ্ধার করে চন্দনাইশের বিজিসি ট্রাস্ট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত চারজনকে হাসপাতালেই চিকিৎসা দেয়া হয়।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য