ভারতের উত্তর প্রদেশে গত নভেম্বরের এক সকালে বাড়িতে বসে আয়েশ করে চা পান করছিলেন রাম রাজ। আচমকা বেওয়ারিশ এক গরু তাকে আক্রমণ করে বসে।
বিষয়টির এখানেই শেষ হয়নি। এর পরপর আক্রমণের শিকার হয় তার নাতি। এ ঘটনায় ৫৫ বছরের কৃষক রাম প্রাণ হারান। হাসপাতাল পর্যন্ত নেয়া যায়নি তাকে।
রামের পুত্রবধূ আনিতা কুমারী বলেন, ‘আমাদের জীবনের ভয়াবহ ঘটনা ছিল এটি। শোকে থেকে আমার শাশুড়ির খাওয়া-দাওয়া প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।’
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ভারতের জনবহুল রাজ্য উত্তর প্রদেশে এমন ঘটনা সম্প্রতি বেড়েছে। রাজ্যটিতে গো-হত্যা নিষিদ্ধ করার পর বেওয়ারিশ গরুর সংখ্যা বেড়েছে আশঙ্কাজনক হারে। আর এটি যোগী আদিত্যনাথ সরকারের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
হিন্দু মতে, গরু পবিত্র, পূজনীয়। তারপরও অনেক কৃষক তাদের বুড়ো হয়ে যাওয়া গরুগুলোকে কসাইখানায় বিক্রি করে দেয়।
কৃষক শিব পুজান বলেন, ‘গরু যখন দুধ দেয়া বন্ধ করে দেয় অথবা বৃদ্ধ হয়ে যায় (চাষাবাদের অনুপযুক্ত হয়ে পড়ে) তখন আমরা তা বিক্রি করে দিই।’
কিন্তু কেন্দ্রে আসীন ক্ষমতাসীন দল বিজেপি গো-হত্যার চরম বিরোধী। উত্তর প্রদেশসহ ১৮ রাজ্যে গো-হত্যা অবৈধ ঘোষণা করেছে মোদি সরকার।
কট্টর মতাদর্শের উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ২০১৭ সালে ক্ষমতায় এসেই কসাইখানা বন্ধ করে দেন; যদিও এটি রাজ্যের অন্যতম বড় খাত।
গরু ব্যবসায়ীরা বেশির ভাগ মুসলিম, আছে কিছু দলিত সম্প্রদায়ের লোক। রাজ্য সরকারের আদেশ অমান্যে তাদের অনেকের ওপর হামলা হয়েছে। খুন হয়েছেন অনেকেই। স্থানীয় বিজেপি নেতা-কর্মীরা অনেকটা প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েই এসব নিপীড়ন চালিয়েছে।
সংখ্যাগরিষ্ঠের চাপে অনেকেই ব্যবসা গুটিয়ে নেয়। খাবারের জোগান দিতে না পারায় বাধ্য হয়ে বুড়ো গরুগুলোকে পাশের জঙ্গলে ছেড়ে দিয়ে আসে তারা।
কৃষক পুজান বলেন, ‘এখানে গরুর কোনো ক্রেতা নেই। আমাদের বাধ্য করা হয়েছে বুড়ো গরুগুলোকে জঙ্গলে পাঠিয়ে দিতে।’
জঙ্গলে খাবার না পেয়ে এসব গরু ঢুকে পড়ে শহর কিংবা গ্রামের লোকালয়ে। ক্ষুধার যন্ত্রণায় কাতর গরুগুলো তখন হয়ে ওঠে বেপরোয়া।
পুজান বলেন, ‘এমন কোনো একটি গরু সেদিন রাম রাজের বাড়িতে খাবারের সন্ধানে ঢুকে পড়েছিল। তার পরিবার গরুটিকে দেখে চিৎকার চেঁচামেচি করলে আক্রমণ করে বসে গরুটি।
ক্ষেতের ফসল বাঁচাতে সম্প্রতি এমন দুটি গরুর আক্রমণের শিকার হয়েছিলেন পুজান নিজেও।
তিনি বলেন, ‘গরু দুটি আমাকে গুঁতো দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়ার চেষ্টা করছিল। কোনোরকমে দৌড়ে জীবন বাঁচাই। তারকাঁটার বেড়ায় হাত কেটে যায়। এখন ব্যান্ডেজ নিয়ে ঘুরছি।’
পুজান নিজেও ধর্মভীরু। কিন্তু তাতেও সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছেন না তিনি। তার দাবি, বেওয়ারিশ এসব গরু ফসল নষ্ট করছে, সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা মানুষ হত্যা করছে।
এসব বেওয়াশির গরুর কারণে জীবন পুরোপুরি এলোমেলো হয়ে গেছে পুনম বোল নামের এক বিধবার। গরুর আক্রমণে প্রাণ গেছে তার স্বামীর, সন্তান হয়ে গেছে শারীরিক প্রতিবন্ধী।
করোনার কারণে ২০২০ সালে চাকরি খুইয়েছিলেন ৩৬ বছরের যুবক ভূপেন্দ্র দুবে। গ্রামে ফেরার কিছুদিনের মাথায় গরুর আক্রমণে প্রাণ হারান তিনি। স্থানীয় বাজারে ছেলের জন্য মিষ্টি কিনতে গিয়েছিলেন ভূপেন্দ্র। সেখানেই বেওয়ারিশ এক গরু আক্রমণ করেছিল তাকে।
চার বছরের বেশি সময়ে এমন ঘটনার নজির অনেক। ২০১৯ সালে রাম খালি নামে ৮০ বছরের এক ব্যক্তি গরুর আক্রমণের শিকার হয়ে কোমায় চলে যান।
আগামী ২২ মার্চ উত্তর প্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন। রাজ্যের বেশির ভাগ বাসিন্দা কৃষক। ভোটার টানতে তাই এই ইস্যুটিকে সামনে তুলে আনছে বিরোধীরা।
বিষয়টি উপলব্ধি করতে পেরেছে ক্ষমতাসীন বিজেপি। তাদের শীর্ষ নেতারা বলছেন, এই সংকট সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।
রাজ্যে ক্ষমতাসীন বিজেপির মুখপাত্র সমির সিং বলেন, ‘হিন্দু রীতিতে বৃদ্ধ গরুকে জঙ্গলে পাঠানোর কোনো নিয়ম নেই। আমরা কখনও পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠদের সঙ্গে এমন করি না। তবে গরুকে কীভাবে মরার জন্য রাস্তায় ছেড়ে আসা হয়?
‘এসব গরুর জন্য লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এমন হাজার হাজার আশ্রয়কেন্দ্রের খরচ জোগাতে মদের ওপর কর বাড়ানো হয়েছে।’
কিন্তু এই উদ্যোগ যে কার্যকরী না তার প্রমাণ পেয়েছে বিবিসি। অযোধ্যায় সরকার পরিচালিত একটি গরু আশ্রয়কেন্দ্র বিবিসি হিন্দির শত্রুঘ্ন তিওয়ারি সরেজমিনে ঘুরে দেখতে পান, কানায় কানায় ঠাসা প্রতিটি কেন্দ্র।
তিনি বলেন, ‘এখানে ২০০ গরু আছে। এটাই সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতা। আরও ৭০০ থেকে ১০০০ গরু আশপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে।’
ফসল বাঁচাতে কেন্দ্রে আশ্রয় না পাওয়া এসব বেওয়ারিশ গরু নজরে রাখছে স্থানীয় কৃষকরা। ঠাণ্ডা আর সাপের ছোবল উপেক্ষা করে পালাক্রমে ২৪ ঘণ্টা পাহারা দিয়ে যাচ্ছে তারা।
৬৪ বছরের কৃষক বিমলা কুমারী বলেন, ‘সকালে একদল এসে পাহারা দেয়, রাতে অন্য দল। এই বিষয়টা নিয়ে আমরা চরম বিরক্ত। ভাবছি নির্বাচন বয়কট করব।’
দিনা নাথ নামে আরেকজন বলেন, ‘কেন এমন নির্বাচনে ভোট দেব, যেখানে নির্বাচিতরা সাধারণের কষ্ট বুঝবে না।’
চলতি গ্রীষ্ম মৌসুমের শুরু থেকেই উচ্চ তাপমাত্রায় আলোচনায় রয়েছে চুয়াডাঙ্গা জেলা। মৃদু, মাঝারি, তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপমাত্রা দেখছে জেলাবাসী। মাঝে তাপমাত্রা সামান্য কমলেও ফের অতি তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে দেশের পশ্চিমের এই জেলা।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানায়, বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তার মানে জেলায় আবারও অতি তীব্র তাপপ্রবাহের কবলে পড়েছে এই জেলা।
আগের দিন বুধবারও এখানে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে। ওইদিন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তার আগের দিন তাপমাত্রা নেমেছিল ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। সেই তীব্র তাপপ্রবাহ বৃহস্পতিবার এসে অতি তীব্র তাপপ্রবাহে রূপ নিয়েছে।
জেলা জুড়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহে জনজীবনে অস্বস্তি আরও বেড়েছে। স্বস্তি মিলছে না কোথাও। তীব্র গরমে একটু স্বস্তি পেতে দিনের অধিকাংশ সময় মানুষ গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিচ্ছে।
গরমের প্রভাবে বাড়ছে রোগবালাই। গরমজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে হাসপাতালে। তীব্র তাপদাহে ব্যাহত হচ্ছে কৃষিকাজ। শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষ কাজে যেতে পারছে না। নষ্ট হচ্ছে ধান, কলা, আম, লিচুসহ মৌসুমী ফসল।
গোপালপুর গ্রামের কৃষক হান্নান আলী বলেন, ‘এই তাপে মাটে উঠতি ফসল নষ্ট হয়ি যাচ্চি। আর রোদির তাতে মাটে দাঁড়ানু যাচ্চি না। ধানের ক্ষেতে বেশি সেচ লাগচি। তাও আবার দিনের বেলায় পাম্পে পানি উটচি না। রাতি দিতি হচ্চি।’
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, ‘আজ (বৃহস্পতিবার) তাপমাত্রা কয়েক ডিগ্রি বেড়েছে। জেলায় তীব্র তাপপ্রবাহ রূপ নিয়েছে অতি তীব্র তাপপ্রবাহে। সহসা বৃষ্টি হওয়ার কোনো পূর্বাভাস নেই। চলতি এপ্রিল মাসের শেষ দিন পর্যন্ত আবহাওয়ার এমন পরিস্থিতি থাকতে পারে।
আরও পড়ুন:কক্সবাজারের টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপে ঘরে ঢুকে এক নারী ও তার মেয়েকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
গত সোমবারের ঘটনায় বৃহস্পতিবার টেকনাফ মডেল থানায় অভিযোগটি করেন ছেনুয়ারা বেগম নামের নারী।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, গত সোমবার রাত দুইটার দিকে শাহপরীর দ্বীপের পূর্ব উত্তরপাড়া এলাকার নুর মোহাম্মদের স্ত্রী ছেনুয়ারা বেগমের ঘরের দরজা ভেঙে আয়ুব খানের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জন প্রবেশ করেন। তারা ছেনুয়ারা ও তার মেয়ের হাত-পা বেঁধে মুখে কাপড় ঢুকিয়ে এলোপাতাড়ি লাথি ও ঘুষি মারেন। একপর্যায়ে মা ও মেয়ে উভয়কে বিবস্ত্র করেন আইয়ুব ও তার লোকজন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, হামলাকারীরা ভয়ভীতি প্রদর্শন করে স্বর্ণ ও টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যান। যাওয়ার সময় তাদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের বিষয়ে কাউকে জানানো হলে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চলে যান৷
এ বিষয়ে ছেনুয়ারা বেগম বলেন, ‘সন্ত্রাসী আয়ুব খানের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জন যুবক আমার বাড়িতে ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রবেশ করে। পরে বাড়ি থেকে আমাকে জোরপূর্বক কয়েকজন লোক বের করে রশি দিয়ে বেঁধে রাখে এবং আমার মেয়েকে নির্যাতন করে স্বর্ণ ও টাকা নিয়ে যায়। তাদের বিরুদ্ধে ঘটে যাওয়া বিষয়ে কাউকে বললে মেরে ফেলা হবে বলে চলে যায়।’
থানায় অভিযোগের পর আয়ুব হুমকি দিয়েছে জানিয়ে ছেনুয়ারা বলেন, ‘সেই আয়ুব খান মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বলে, মামলা হলে কী হবে? জামিন নিয়ে বাহির হয়ে আমাকে আর আমার মেয়েকে মেরে ফেলা হবে বলে প্রাণনাশের হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। এ বিষয়ে আমি টেকনাফ মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি।’
এ বিষয়ে সাবরাং ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রেজাউল করিম রেজু বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি এবং সঠিক তদন্ত করে পুলিশকে সহযোগিতা করব।’
অভিযোগ তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ সোহেল বলেন, ‘আমি ঘটনার সত্যতা পেয়েছি এবং আমি মামলা করার জন্য ওসি বরাবর সুপারিশ করেছি।’
টেকনাফ মডেল থানার ওসি ওসমান গণি বলেন, ‘আরও গভীরভাবে তদন্ত করে দোষীদের গ্রেপ্তার করা হবে।’
আরও পড়ুন:চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে সোনামসজিদ স্থলবন্দরে দায়িত্ব পালনকালে রুহুল আমিন নামে এক ট্রাফিক ইন্সপেক্টরের মৃত্যু হয়েছে। তার বাড়ি যশোরের বেনাপোলে। বাবার নাম কোরবান আলী।
নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের অধীন সোনামসজিদ স্থলবন্দরে ট্রাফিক ইন্সপেক্টরের দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি।
শিবগঞ্জ থানার ওসি সাজ্জাদ হোসেন জানান, সোনামসজিদ স্থলবন্দরের পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের মধ্যে ট্রাক পরিদর্শন শেষে দুপুর পৌনে ১টার অফিস কক্ষে ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়েন রুহুল আমিন। সহকর্মীরা তাকে দ্রুত শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিভিল সার্জন এসএম মাহমুদুর রশিদ জানান, ট্রাফিক ইন্সপেক্টর রুহুল আমিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার আগেই মারা যান। হাসপাতালে যারা নিয়ে এসেছিলেন তারা বলেছেন যে তিনি তৃষ্ণার্ত ছিলেন, পানি খেতে চেয়েছিলেন।
তবে তার মৃত্যু যে হিট স্ট্রোকে হয়েছে এটা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাবে না। অন্য কোনো রোগেও তার মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। তবে এখন যেহেতু প্রচণ্ড গরম চলছে তাই এটার প্রভাব থাকতে পারে।
রাজশাহীর বাগমারায় ভাড়া বাসায় আটকে রেখে এক মাস ধরে এক তরুণীকে ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার রাতে উপজেলার তাহেরপুর পৌর এলাকার হরিফলার মোড়ের একটি বাসা থেকে ওই তরুণীকে উদ্ধার ও এ ঘটনায় অভিযুক্ত একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
আটক রাজু হোসেন (২৫) পেশায় চা দোকানি। তিনি তাহেরপুর পৌরসভার হরিফলা মহল্লার আবদুর রাজ্জাক শাহের ছেলে।
পুলিশ জানায়, অসুস্থ অবস্থায় তরুণীকে বাগমারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়ার পর রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) স্থানান্তর করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, ওই তরুণীর বাড়ি ফরিদপুর জেলায়। ফোনে রাজুর সঙ্গে তার পরিচয় ও প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত ২৪ মার্চ বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ফোনে ভুক্তভোগী তরুণীকে তাহেরপুরে নিয়ে আসেন রাজু। পরে তাকে নিয়ে ভাড়া বাসায় ওঠেন রাজু। সেখানে আটকে রেখে এক মাস ধরে রাজু ওই তরুণীকে ভয় দেখিয়ে ও মারধর করে ধর্ষণ করেন।
এক পর্যায়ে নির্যাতনের শিকার তরুণী অসুস্থ হয়ে পড়লে পাশের বাড়ির লোকজন টের পেয়ে স্থানীয় কাউন্সিলরকে জানান। তিনি থানায় খবর দিলে বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশ ওই বাসা থেকে তরুণীকে উদ্ধার করে। পরে ওই এলাকা থেকে রাজুকে আটক করে পুলিশ। রাতেই তরুণী বাদী হয়ে অপহরণ, ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা করেন।
রাজশাহী জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও মুখপাত্র রফিকুল আলম জানান, মেয়েটার ওপর পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। আটক তরুণের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ তদন্ত করছে। তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নতুন তিন বিচারক শপথ গ্রহণ করেছেন।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান তাদের শপথ পাঠ করান। খবর বাসসের
সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. গোলাম রব্বানী পরিচালনায় শপথ অনুষ্ঠানে সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতি, শপথ পাঠকারী তিন বিচারপতির পরিবারের সদস্য, অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, সম্পাদক শাহ মঞ্জুরুল হক এবং সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রিার কার্যালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বুধবার রাষ্ট্রপতি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৫(১)-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্ট বিভাগের তিন বিচারক ১) বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুল হাফিজ ২) বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম ৩) বিচারপতি কাশেফা হোসেনকে আপিল বিভাগের বিচারক হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেন।
মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে পদ্মা নদীতে বুধবার রাতের আঁধারে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সময় দুটি ড্রেজার জব্দ করেছে নৌ-পুলিশ।
মাওয়া নৌ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, রাতের আঁধারে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের খবর পেয়ে উপজেলার মেদিনীমণ্ডল ইউনিয়নের যশিলদিয়ায় বুধবার রাত দেড়টার দিকে পদ্মা নদীতে অভিযান চালানো হয়। ওই সময় নিয়ম অমান্য করে বালু উত্তোলন করায় ওই দুটি ড্রেজার জব্দ করা হয়।
তিনি আরও জানান, ড্রেজার জব্দ করার সময় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। জব্দকৃত ড্রেজার দুটির বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মেহেরপুরের গাংনীতে সেচ পাম্পের সুইচ দিতে গিয়ে বিদুৎস্পৃষ্ট হয়ে আবদুল হান্নান (৭৫) নামের কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার বামন্দী ইউনিয়নের দেবীপুর দক্ষিণপাড়ায় বৃহস্পতিবার সকাল নয়টার দিকে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে।
প্রাণ হারানো আবদুল হান্নান দেবীপুর দক্ষিণপাড়ার খোদা বক্সের ছেলে।
এসব তথ্য নিশ্চিত করে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য হিরোক আহমেদ বলেন, ‘আজ সকালে আবদুল হান্নান নিজ গ্রামের মাঠে অবস্থিত সেচ পাম্পের সুইচ দিতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টের শিকার হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন। পরে স্থানীয়রা মরদেহটি ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে নিজ বাড়ি দেবীপুরে নিয়ে আসে।’
বামন্দী পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) শরীফুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘বিদুৎস্পৃষ্টে মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসে প্রাথমিক তদন্ত শেষ করেছি। বতর্মানে মরদেহটি পরিবারের কাছে রয়েছে।’
মন্তব্য