প্রায় তিন বছর পর ফের সিরিয়ায় মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সদস্যরা। কারাগারে আইএসের হামলাকে কেন্দ্র করে জঙ্গিদের সঙ্গে কুর্দি নেতৃত্বাধীন বাহিনীর তুমুল সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় হাসাকেহ শহরে।
কুর্দি বাহিনী-আইএসের চলমান সহিংসতায় নিহত হয়েছে অন্তত ১২০ জন।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক যুদ্ধ ও সংঘাত পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে অন্তত ৭৭ আইএস সদস্য ও ৩৯ কুর্দি যোদ্ধা রয়েছে। সাত বেসামরিক নাগরিক ছাড়াও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য, কারারক্ষীরাও রয়েছেন নিহত ব্যক্তিদের তালিকায়।
দেশটির হাসাকেহ শহরে কুর্দি পরিচালিত ঘোয়রান কারাগারের ভেতর ও বাইরে চলা সহিংসতায় এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।
পর্যবেক্ষণকারী এই সংগঠন জানিয়েছে, আইএসের সশস্ত্র জঙ্গিরা ঘোয়রান কারাগারে তাদের বন্দি সদস্যদের মুক্ত করার পাশাপাশি কারাগারের নিয়ন্ত্রণ নিতে প্রথমে কারা ফটকে গাড়িবোমা হামলা চালায়। এ সময় অনেক আইএস বন্দি সেখান থেকে পালিয়ে যায়। পরে জঙ্গিরা কারাগারের অস্ত্রাগারও দখলের চেষ্টা করে।
কারাগারে শতাধিক আইএস সদস্যের বিদ্রোহের মধ্য দিয়ে এ সংঘর্ষ শুরু হয়।
যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত কুর্দি বাহিনী (এসডিএফ) জানায়, পালিয়ে যাওয়ার সময় অন্তত ১০৪ বন্দিকে আটক করা হয়েছে।
কুর্দি ও আইএসের মধ্যে সংঘর্ষ থেমে থেমে চলছে।
কারাগারের ওপর নিয়ন্ত্রণ ও আশপাশের এলাকায় লুকিয়ে থাকা জঙ্গিদের হটানোর চেষ্টা করছে কুর্দি বাহিনী।
আইএসের মুখপত্র হিসেবে পরিচিত সংবাদমাধ্যম আমাক জানিয়েছে, আইএস সদস্যরা ঘোয়রান কারাগারের একটি অস্ত্রাগার দখলের পর দুটি আত্মঘাতী বোমা হামলার মধ্য দিয়ে ওই অভিযান শুরু করে। এই সফল অভিযানে তারা তাদের কয়েক শ সদস্যকে কারাগার থেকে মুক্ত করতে পেরেছে।
আরও পড়ুন:আল জাজিরার সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহকে যেদিন হত্যা করা হয়, সেদিন তার মাথায় ছিল হেলমেট, গায়ে ছিল ভেস্ট। যেখানে স্পষ্ট লেখা ছিল ‘প্রেস’।
গুলি হেলমেট ও ভেস্টের ঠিক মাঝখান দিয়ে শিরিনের ঘাড়ে বিদ্ধ হয়। এ সময় শিরিনের সহকর্মীরা এবং পথচারীরা তাকে সাহায্য করার চেষ্টা করলে গুলি চলতে থাকে। তাই তারা এগিয়ে আসতে পারেননি। নিথর পড়ে ছিল শিরিনের দেহ।
শুরুতে ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা এই মৃত্যুর জন্য দায়ী। বিষয়টি প্রমাণে একটি ভিডিও প্রকাশ করে তেল আবিব। যেখানে দেখা যায়, একদল ফিলিস্তিনি গুলি ছুড়তে ছুড়তে একটি সরু গলি পার হচ্ছে।
ইসরায়েলের প্রভাবশালী মানবাধিকার সংস্থা- বিটস্লেম ওই ভিডিও ধারণের স্থানটি খুঁজে পেয়েছেন। তারা বলছে, ওই ভিডিওটি শিরিন হত্যাকাণ্ডের স্থান থেকে ৩০০ মিটার (৯৮৫ ফুট) দূরের একটি স্থান।
শিরিনের কর্মস্থল আল জাজিরার সানাদ নিউজ ভেরিফিকেশন অ্যান্ড মনিটরিং ইউনিটও বিষয়টি খতিয়ে দেখেছে। তারাও দাবি করেছেন ভিডিওটি ভুয়া।
প্রপাগান্ডায় কাজ না হওয়ায় আগের অবস্থান থেকে সরে আসে ইসরায়েল সরকার। তারা এই হত্যার তদন্ত করার আশ্বাস দেয়। তবে শেষমেশ আগের রূপেই ফিরেছে ইসরায়েল সরকার। তদন্ত না করার ইঙ্গিত দিয়েছে তেল আবিব। অতীতে ইসরায়েলি সেনাদের হাতে ফিলিস্তিনি নিহতের ঘটনায় তদন্ত করে নিজ দেশে সমালোচিত হয়েছিল দেশটির সরকার।
পশ্চিম জেরুজালেম থেকে আল জাজিরার প্রতিবেদক ইমরান খান বলেন, ‘আসলে সক্রিয় সামরিক অভিযানে একজন চাকরিরত ইসরায়েলি সেনা অফিসার বা সৈনিকের বিরুদ্ধে একটি ফৌজদারি তদন্ত খুলতে হবে। ইসরায়েলের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিষয়টা এখন একেবারেই অসম্ভব।
‘তদন্ত হলে সরকারের ওপর হামলা হবে। বিরোধীরা এটিকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করবে। এ ছাড়া সাধারণত ইসরায়েলিরা সেনাবাহিনীকে অন্য চোখে দেখে। তারা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে সেনারা তাদের রক্ষক।’
ইসরায়েলের জনপ্রিয় দৈনিক হারেটজের প্রতিবেদনে বলা হয়, এ ঘটনায় ফৌজদারি আইন লঙ্ঘনের কোনো প্রমাণ নেই। ইসরায়েলি সেনারা জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, তারা ভেবেছিল ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের দিকে গুলি ছোড়া হচ্ছিল। যদিও প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, সাংবাদিক শিরিনের আশপাশে কোনো গুলি চলেনি।
শিরিনের শরীর থেকে বের করা বুলেটের টুকরা প্রমাণ হিসেবে রেখেছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। তদন্তের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস।
তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
ইসরায়েলের সামরিক পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ বলছে, তদন্ত হলে ইসরায়েলি সেনাদের সন্দেহভাজন হিসেবে বিবেচনা করা হবে। বিষয়টি ইসরায়েলি সমাজে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
ইসরায়েলি দৈনিক হারেটজের বরাতে বৃহস্পতিবার এ খবর ছেপেছে জেরুজালেম পোস্ট।
সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহ দুই দশকের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা করেছেন। ২০০০ সালে শুরু হওয়া দ্বিতীয় ইন্তিফাদা বা বিদ্রোহের সময় পশ্চিম তীরের প্রধান শহরগুলোতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বড় বড় হামলাগুলো কভার করে ফিলিস্তিনিদের মধ্যে তুমুল জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন শিরিন।
পশ্চিম তীরের শহর জেনিনে গত ১১ মে ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের খবর কভার করার সময় গুলিতে নিহত হন ৫১ বছরের শিরিন। প্রত্যক্ষদর্শী এবং তার সহকর্মীদের দাবি, ইসরায়েলি স্নাইপারের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন শিরিন।
হারেটজের প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় শিরিনের পরিবার জানিয়েছে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী মৃত্যুর তদন্ত না করায় তারা বিস্মিত নয়।
‘আমরা এটিই আশা করছিলাম। এ কারণেই আমরা চাইনি তারা (ইসরায়েল) তদন্তে অংশ নিক। আমরা এই কাজের জন্য দায়ী যে কাউকেই জবাবদিহি করতে চাই।
‘যেহেতু তিনি একজন আমেরিকান নাগরিক, তাই আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে বিশেষভাবে অনুরোধ করছি। সেই সঙ্গে একটি ন্যায্য ও স্বচ্ছ তদন্ত শুরুর পাশাপাশি এসব হত্যাকাণ্ড বন্ধ করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।’
জবাব দিয়েছে ওয়াশিংটন। নিজের নাগরিকের হত্যার তদন্তে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন।
আরও পড়ুন:ইসরায়েলি আগ্রাসনে পশ্চিম তীরে ‘সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধ’ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘ। সংস্থাটির মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাসাফের ইয়াত্তায় অন্তত ১২০০ ফিলিস্তিনিকে উচ্ছেদ করার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তেল আবিব, তা যুদ্ধাপরাধের সামিল।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফিলিস্তিনি বাসিন্দাদের জোরপূর্বক স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক মানবিক ও মানবাধিকার আইনের গুরুতর লঙ্ঘন। এ বিষয়ে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত করা উচিত।
এক যৌথ বিবৃতিতে সোমবার জাতিসংঘের তিন বিশেষজ্ঞ জানান, মাসাফের ইয়াত্তা থেকে ফিলিস্তিনিদের তাড়িয়ে দেয়ার নীতি বহাল রেখেছে ইসরায়েল। ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে পদ্ধতিগত নিপীড়নের চর্চাকে স্থায়ী করতে ইসরায়েলি বিচার ব্যবস্থাও সহায়ক ভূমিকা রাখছে।
জোরপূর্বক উচ্ছেদের অনুমতি দেয়ার জন্য আদালতের সিদ্ধান্তটি ‘আরও বেশি উদ্বেগজনক’। কারণ অঞ্চলটি ইসরায়েলি সামরিক প্রশিক্ষণের জন্য নেয়া হচ্ছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, কীভাবে ফিলিস্তিনিদের অধিকারের ওপর অগ্রাধিকার দেয়া যেতে পারে? ইসরায়েল এলাকাটি খালি করার জন্য কোনো ‘অবশ্যকীয় সামরিক প্রয়োজনীয়তা’ দেখায়নি।
ইসরায়েলি হাইকোর্ট অফ জাস্টিস চলতি মাসের শুরুতে ফিলিস্তিনি অধ্যুষিত অঞ্চলটি অধিগ্রহণের পক্ষে রায় দেয়। এতে অন্তত ৫০০ শিশুসহ ১২০০ ফিলিস্তিনি আশ্রয়হীন হওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন।
গত ৪ মে ইসরায়েলের হাইকোর্ট উচ্ছেদ ঠেকাতে মাসাফের ইয়াত্তার বাসিন্দাদের আপিল খারিজ করে দেয়। এই রায়ে কার্যকরভাবে ফিলিস্তিনিদের দুই দশকের আইনি লড়াইয়ের অবসান ঘটেছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী হেব্রনের দক্ষিণের এই অঞ্চলকে সামরিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ঘোষণা করেছে। নাম দিয়েছে-ফায়ারিং জোন ৯১৮।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ইসরায়েলি বাহিনী ইতোমধ্যে খ্রিবেত আল ফাখিয়েত এবং আল-মারকেজের মাসাফের ইয়াত্তা সম্প্রদায়ের কাঠামো ভেঙে দিয়েছে।
ফিলিস্তিন ইস্যুতে জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক ফ্রান্সেস্কা আলবানিজ বলেন, ‘১৯০৭ হেগ রেজ্যুলেশন এবং চতুর্থ জেনেভা কনভেনশন লঙ্ঘন করেছে ইসরায়েল।
‘তার বদলে অধিকৃত অঞ্চলে ইহুদি বসতি স্থাপনে জোর দিচ্ছে ইসরায়েল। সেখানে বাস করা ফিলিস্তিনের তাড়িয়ে আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘনের চেষ্টা চলছে। এটা যুদ্ধাপরাধের পর্যায়ে পড়ে।’
জাতিসংঘের হিসাবে, ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের মে পর্যন্ত আবাসিক, শিক্ষা, ব্যবসায়িক এবং চিকিৎসা অবকাঠামোসহ অন্তত ৮ হাজার ৪১৩টি ফিলিস্তিনি ভবন ধ্বংস করেছে ইসরায়েল। এসবের কারণে ১২ হাজারের বেশি বাসিন্দা বাস্তচ্যুত হয়েছেন; পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১ লাখ ৩৬ হাজার ৪৯৪ জন ফিলিস্তিনি।
এ ছাড়া ২০০৮ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের এপ্রিলের মধ্যে অন্তত ৬ হাজার ৩০ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। পাল্টা হামলায় প্রাণ গেছে ২৬৮ ইসরায়েলির।
আসিরি ম্যাগপাই নামের একটি দোয়েলের প্রজাতি বিলুপ্তির পথে। এটি সৌদি আরবের দক্ষিণ-পশ্চিম পাহাড়ে থাকে। এই প্রজাতি করভিডে পরিবারের সদস্য।
তায়েফ বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা কমিটির সদস্য মোহাম্মদ শোব্রাক বলেছেন, ‘এর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাচ্ছে। কেউ যদি এটিকে সংরক্ষণ পদক্ষেপ না নেয় তাহলে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে।’
শোব্রাক আফ্রিকা ও ইউরেশিয়ায় পরিযায়ী পাখির সংরক্ষণ সম্পর্কিত সমঝোতা স্মারক বিষয়ক কমিটির সদস্য।
বিলুপ্তপ্রায় দোয়েলটির বৈজ্ঞানিক নাম পিকা এ্যসিরেনসিস। ২০০৩ সালে প্রকাশিত পাখিদের জিনের উপর একটি গবেষণার মাধ্যমে এটিকে আলাদা প্রজাতি হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। গবেষণায় বলা হয়, ম্যাগপাই অন্যান্য পাখির প্রজাতি থেকে আলাদা এবং বিশ্বের কোথাও এটিকে পাওয়া যাবে না।
শোব্রাক বলেছেন, ‘স্যাটেলাইটের মাধ্যমে চিহ্নিত করা পাখিটি উঁচু অঞ্চলে বাস করে। এটি অন্য পাখিদের মত শীতকালে জায়গা বদলায় না।’
ন্যাশনাল সেন্টার ফর ওয়াইল্ডলাইফের সাথে সৌদি আরামকোর স্পনসর করা এটিই সর্বশেষ গবেষণা। এর বসবাসের জন্য পরিবেশের ৮০ শতাংশই অনুপযুক্ত হয়ে গেছে এবং ২০ শতাংশ বাকি রয়েছে।
দোয়েলটির সংখ্যা এভাবে কমে যাওয়াই এটিকে বিশ্বের বিরল পাখিদের কাতারে ফেলেছে।
শোব্রাক বলেন, ‘সংখ্যা কমে যাওয়ার বিভিন্ন কারণ, যেমন- শহরের অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং পাখির বাসস্থানের ওপর এর প্রভাব, গাছের মৃত্যু। এসবই এই পাখির বেঁচে থাকার ওপর প্রভাব ফেলে।’
শোব্রাক আরও বলেন, ‘অন্য সব পাখির মতোই আসিরি ম্যাগপাইয়ের প্রজনন এবং পুষ্টি গ্রহণ করে বেঁচে থাকার জন্য উপযোগী পরিবেশের প্রয়োজন। পাখিটিকে বিলুপ্তির হাত থেকে বাঁচাতে হবে।’
তিনি জানান, এটি একমাত্র সৌদি পাখি; যা পৃথিবীর আর কোথাও পাওয়া যায় না।’
সংযুক্ত আরব আমিরাতের নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন দেশটির দীর্ঘ দিনের শাসক শেখ মোহামেদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান। তিনি আরব বিশ্বে শক্তিশালী শাসক এবং 'এমবিজেড' নামে সমধিক পরিচিত।
দেশটির প্রেসিডেন্ট এবং আবুধাবির শাসক শেখ খলিফা বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের মৃত্যুর পরের দিন শনিবারই মোহামেদ বিন আল জায়েদকে এই দায়িত্ব দেয়া হলো।
দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদসংস্থা ডাব্লিউএএম-এর বরাতে আলজাজিরার খবরে বলা হয়, শেখ মোহম্মদকে ফেডারেল সুপ্রিম কাউন্সিল থেকে নির্বাচিত করা হয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, শেখ মোহম্মদ এতোদিন পর্দার আড়ালেই ছিলেন। তার স্বাস্থ্যের ভঙ্গুর অবস্থার জন্য তাকে পাশ কাটিয়ে প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন তার সৎ ভাই সদ্য প্রয়াত খালিফা বিন জায়েদ আল নাহিয়ান।
আমিরাতের সাত শাসক এলাকার শেখদের একটি সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। শেখ খলিফা শুক্রবার ৭৩ বছর বয়সে মারা যাওয়ার পরের দিনেই তারা এমন সিদ্ধান্ত নেয়।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর তার ওপর ‘আস্থা ও বিশ্বাস’ রাখায় কাউন্সিলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছেন মোহামেদ বিন জায়েদ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখদের ভোটাভুটির মাধ্যমেই মোহম্মদ বিন জায়েদকে নির্বাচিত করা হয়েছে। যারা ভোট দিয়েছেন তাদের মধ্যে দুবাইয়ের শাসকও ছিলেন।
ভোটের পর দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম টুইটারে লেখেন, ‘আমরা তাকে অভিনন্দন জানাই। আমরা তার প্রতি আনুগত্যেরও অঙ্গীকার করছি এবং আমাদের জনগণ তার প্রতি আনুগত্যের অঙ্গীকার করেছে।’
‘ঈশ্বরের কৃপায়, তার নেতৃত্বে পুরো দেশকে গৌরব ও সম্মানের পথে নিয়ে যাবেন তিনি।’
শুক্রবার দেশটির রাজধানী আবুধাবির আল বাতিন কবরস্থানে প্রেসিডেন্ট খলিফা আল নাহিয়ানকে দাফন করা হয়।
আবুধাবির শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান আবুধাবির মসজিদে প্রথম জানাজায় অংশ নেন। এ সময় প্রয়াত প্রেসিডেন্টের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন।
এ ছাড়া মাগরিবের নামাজের পর দেশজুড়ে মসজিদে মসজিদে প্রেসিডেন্টের জন্য দোয়া করা হয়।
শেখ খলিফা বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের মৃত্যুতে দেশজুড়ে ৪০ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করে আরব আমিরাত। একই সঙ্গে জাতীয় পতাকা রাখা হবে অর্ধনমিত। মন্ত্রণালয়সহ সব ধরনের অফিস বন্ধ থাকবে তিন দিন।
১৯৪৮ সালের ৭ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেছিলেন প্রেসিডেন্ট জায়েদ আল নাহিয়ান। তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতের দ্বিতীয় প্রেসিডেন্ট। ২০০৪ সালের ৩ নভেম্বর থেকে প্রেসিডেন্টের পাশাপাশি আবুধাবির শাসকের দায়িত্ব পালন করছিলেন।
আরও পড়ুন:আল জাজিরার সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহ ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে নিহত হওয়ার একদিন পর ফিলিস্তিনের রামাল্লায় রাষ্ট্রীয় সম্মান জানানো হয় তাকে।
অধিকৃত পশ্চিম তীরের শহরে বৃহস্পতিবার দুপুরে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের (পিএ) প্রেসিডেন্ট ভবনে আয়োজনে অংশ নেন কয়েক হাজার ফিলিস্তিনি।
জেনিন শহরে বুধবার ভোরে সামরিক অভিযান কভার করার সময় ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে নিহত হন শিরিন।
ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস শিরিনকে সম্মান জানানোর পর, ভবন প্রাঙ্গনে ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যরা তাকে শ্রদ্ধা জানান।
এ সময় সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন মাহমুদ আব্বাস। তিনি বলেন, ‘এই মৃত্যুর জন্য ইসরায়েল দায়ী। ঘটনা তদন্তে ইসরায়েলের সঙ্গে যৌথ তদন্তের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করছি। আমরা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) যাব।’
শিরিনের হত্যাকাণ্ড ফিলিস্তিন ও আরব বিশ্বে শোকের ছায়া ফেলেছে।
৫১ বছরের শিরিন আল জাজিরা আরবি টেলিভিশনের একজন সিনিয়র সংবাদদাতা ছিলেন। চ্যানেলটি চালু হওয়ার এক বছর পর ১৯৯৭ সালে সেখানে যোগ দেন তিনি।
ফিলিস্তিনের অনেকেই শিরিনকে ২০০০ সালে শুরু হওয়া দ্বিতীয় ইন্তিফাদা বা বিদ্রোহের সময় পশ্চিম তীরের প্রধান শহরগুলোতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বড় বড় হামলাগুলো কভার করার জন্য মনে রাখবে।
সাংবাদিকতার ছাত্র আজহার খালাফ বলেন, ‘তার শাহাদাতের খবরটি প্রত্যেক ফিলিস্তিনির মুখে চড় মারার মতো ছিল।’
বিরজাইট বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র শিরিনকে ‘মিডিয়া আইকন’ এবং ‘মডেল’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
‘তিনি প্রতিটি বাড়িতে ছিলেন, প্রতিটা ফিলিস্তিনিদের ব্যথা অনুভব করেছিলেন। তিনি ছিলেন সত্য ও ন্যায়ের কণ্ঠস্বর।’
শিরিনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পরপর রামাল্লা শহরের কেন্দ্র আল-মানারা স্কোয়ারে তার একটি বিশাল ছবি টাঙানো হয়।
৩৭ বছরের রাজনৈতিক ও সামাজিককর্মী হাজেম আবু হেলাল বলেন, ‘শিরিন জনগণের কাছাকাছি ছিলেন।
‘সবাই তাকে শুধু তার কাজের জন্যই নয়, সমাজে তার সম্পৃক্ততার জন্যও জানত। তিনি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশপাশি বিভিন্ন সংগঠনের অনেক উদ্যোগের অংশ ছিলেন।’
সাংবাদিক, সহকর্মী এবং বন্ধুরা বৃহস্পতিবার সকালে ইস্তিশারি হাসপাতালে শিরিনকে দেখতে ভিড় করেন। তবে কেবল ঘনিষ্ঠদের হাসপাতালের মর্গে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছিল। তাদের কান্নায় তখন ভারী হয়ে উঠে আশপাশ।
এরপর তার মরদেহ সেখান থেকে পিএ ন্যাশনাল গার্ডের গাড়িতে নেয়া হয় প্রেসিডেন্ট কম্পাউন্ডে। সেখানে আয়োজন শেষ করে শিরিনের মরদেহ একটি অ্যাম্বুলেন্স এবং পরে একটি কাফেলায় করে রামাল্লা এবং জেরুজালেমের মাঝে অবস্থিত কালান্দিয়া চেকপয়েন্টে নেয়া হয়।
সেখান থেকে অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমের শেখ জারাহর সেন্ট লুইস ফ্রেঞ্চ হাসপাতালে তার পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। শুক্রবার ওল্ড সিটিতে শিরিনের দাফন হবে।
আরও পড়ুন:আল জাজিরার সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহের হত্যার ঘটনায় পশ্চিমা মিডিয়ার কড়া সমালোচনা চলছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ব্যবহারকারীরা বলছে, মিডিয়া আউটলেটগুলো শিরিন হত্যায় ইসরায়েলের ভূমিকা উপেক্ষা করেছে।
৫১ বছরের শিরিন ফিলিস্তিনি-আমেরিকান সাংবাদিক, কাজ করতেন আল জাজিরার আরবি টেলিভিশনের হয়ে। বুধবার সকালে ইসরায়েলি সেনার গুলিতে নিহত হন তিনি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, অধিকৃত পশ্চিম তীরের জেনিনে একটি ইসরায়েলি সামরিক অভিযান কভার করার সময় গুলিবিদ্ধ হন শিরিন।
দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে নিয়মিত তাকে দেখা যেত আল জাজিরা টেলিভিশনের পর্দায়। শিরিনের এই অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুতে শোকে কাতর ফিলিস্তিনবাসী। শিরিনের কর্মজীবনের প্রতি সম্মান জানানোর পাশাপাশি ফিলিস্তিনিদের অভিযোগ, অনেক মিডিয়া এই হত্যাকাণ্ডে ইসরায়েলকে না জড়ানোর বিষয়ে সতর্ক ছিল।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীরা এই বিষয়ে চটেছেন পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমগুলোর ওপর। টুইটে একজন লেখেন, “ওদের গল্প ‘অবিশ্বাস্য”।
ইহুদি ভয়েস ফর পিস-এর রাজনৈতিক পরিচালক বেথ মিলার এ ঘটনায় নিউ ইয়র্ক টাইমসের একটি শিরোনামের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। নিউ ইয়র্ক টাইমসের শিরোনাম ছিল, ‘৫১ বছর বয়সে মারা গেছেন’। সেখানে মৃত্যুর কারণ তারা উল্লেখ করেনি।
টুইটে মিলার লেখেন, ‘শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের রিপোর্ট করার সময় একজন ইসরায়েলি স্নাইপার শিরিন আবু আকলেহকে গুলি করে হত্যা করেছিল।
‘৫১ বছর বয়সে মারা যায়’। অবিশ্বাস্য, এনওয়াইটি।’
Shireen Abu Akleh was shot and killed by an Israeli sniper while reporting on an Israeli military raid of a refugee camp.
— beth miller (@bethavemiller) May 11, 2022
"Dies at 51". Unbelievable, NYT. pic.twitter.com/H8kxCqFubi
একই শিরোনাম উল্লেখ করে নিউ ইয়র্ক টাইমসের আইনি মানবাধিকার ও বেসরকারীকরণ প্রকল্পের সহপরিচালক বাসাম খাজা টুইটে লেখেন, ‘৫১ বছর বয়সে মৃত্যু’ বলা সত্যিই অদ্ভুত। যেখানে একজন সাংবাদিককে মাথায় গুলি করা হয়েছিল।
Hey @NYTimes, "Dies at 51" is a really strange way to say a journalist was shot in the head. pic.twitter.com/YoqzHRoDsS
— Bassam Khawaja (@Bassam_Khawaja) May 11, 2022
শিরিন হত্যার খবরে ভুল তথ্য দেয়ার বিষয়টি নিউ ইয়র্ক টাইমসকে জানিয়েছিল আল জাজিরা। পরে এনওয়াইটি সংশোধন করে খবরটি। আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছিল, শিরিন ‘সংঘর্ষে’ নিহত হয়েছেন।
Shireen Abu Akleh, a Palestinian American journalist for Al Jazeera, was shot and killed in the West Bank early Wednesday, the Palestinian Health Ministry said. The circumstances surrounding the shooting were not immediately clear. https://t.co/k45YD1MJRe
— The New York Times (@nytimes) May 11, 2022
ইসরায়েলি ‘আখ্যান’
সমালোচিত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসও (এপি)। এপির শিরোনাম ছিল, “আইকনিক ফিলিস্তিনি সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহ ‘বন্দুকের গুলিতে নিহত হয়েছেন’। টুইটে এক ব্যবহারকারী লেখেন, এপির এ ধরনের আচরণ ‘অনৈতিক সাংবাদিকতা’।
“তিনি এলিয়েনদের (ভিনগ্রহের প্রাণী) হাতে খুন হননি। ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে খুন হয়েছেন। মৌলিক সত্য নিয়ে ‘বিকল্প তথ্য' প্রচারের জন্য প্রতিক্রিয়া জানানো উচিত।”
ফাতিমা সাইদ নামে এক ব্যবহারকারী অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) শব্দ চয়নের নিন্দা করেছেন। বলেছেন, এক বছর আগে গাজায় তাদের কার্যালয় বোমা মেরে উড়িয়ে দিয়েছিল ইসরায়েলি বাহিনী।
টুইটে তিনি লেখেন, “মৃত্যুতেও ফিলিস্তিনিদের জন্য কোনো মর্যাদা বা ন্যায়বিচার নেই। ইসরায়েলের হাতে একজন প্রবীণ সাংবাদিকের হত্যাকাণ্ডকে এলোমেলো ‘বন্দুকযুদ্ধ’ বলে বর্ণনা করেছে একটি মূলধারার সংবাদ আউটলেট।
“এটি সেই একই এপি যার অফিসগুলো গত বছর ইসরায়েলি বোমায় চ্যাপ্টা হয়েছিল।”
গাজা উপত্যকায় গত বছরের মে মাসে ইসরায়েলি বিমান হামলায় একটি টাওয়ার ধ্বংস হয়। এই টাওয়ারে আল জাজিরা এবং দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের ব্যুরোসহ অনেক আবাসিক অ্যাপার্টমেন্ট এবং অফিস ছিল।
ইউক্রেন এবং ফিলিস্তিনের সংঘাতে দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্যের কারণে পশ্চিমা মিডিয়া আউটলেটগুলোর সমালোচনা করেছেন আমেরিকান সাংবাদিক কেভিন গোসজটোলা। তিনি বলেছেন, শিরিনের মৃত্যুর খবরটি আরও ভালো কভারেজের দাবি রাখত।
টুইটে তিনি লেখেন, ‘ইউক্রেনে যদি একজন সাংবাদিককে রাশিয়ান সামরিক বাহিনী লক্ষ্যবস্তু করে হত্যা করে, তবে যুক্তরাষ্ট্রের মিডিয়া এটিকে একটি হত্যাকাণ্ড হিসেবে প্রতিবেদন করবে এবং ক্ষোভের সৃষ্টি করবে।
‘আল জাজিরার সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহকে ইসরায়েলি সেনারা হত্যা করেছে। এ খবরটি আরও ভালো কভারেজের দাবি রাখে।’
আল জাজিরাকে হামাদ বিন খলিফা ইউনিভার্সিটির মিডল ইস্ট স্টাডিজের সহকারী অধ্যাপক মার্ক ওয়েন জোনস বলেন, “ইসরায়েলের সোশ্যাল মিডিয়ায় মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে দেয়ার ট্র্যাক রেকর্ড রয়েছে। শিরিনের মৃত্যুকে ঘিরে তারা ‘জল ঘোলা’ করার চেষ্টা করছে।”
জোনস বলেন, ‘ইসরায়েল এ ধরনের সংকট মোকাবিলায় দারুণ অভ্যস্ত। তারা ফিলিস্তিনি নাগরিক বা সাংবাদিকদের হত্যা করে। সুতরাং তারা যা করেছে তার একটি বর্ণনা ইতোমধ্যেই রয়েছে। আর সেই বর্ণনাটি হলো শিরিনের হত্যার বিষয়ে অস্পষ্টতা রয়েছে।
‘আমরা জানি এটি অকল্পনীয়। তবে এই বর্ণনাটি খুব তাড়াতাড়ি প্রকাশ করা হয়েছিল। যদি তারা শিরিনের মৃত্যুর চারপাশে জল ঘোলা করতে পারে, তাহলে সম্ভবত তারা এটাও প্রচার করতে পারে যে ফিলিস্তিনিরাই শিরিনকে হত্যা করেছে এবং এতে তারা সফলও হয়েছে৷
‘বাস্তবে এটিই ঘটেছে। যুক্তরাজ্যের দৈনিক গার্ডিয়ান এবং বিবিসি ইতোমধ্যেই তাদের প্রতিবেদনে ইসরায়েলি সংস্করণের ঘটনাগুলোকে গুরুত্বসহকারে প্রচার করে।’
আরও পড়ুন:ইসরায়েলের দখলকৃত পশ্চিম তীরে দেশটির বাহিনীর গুলিতে শিরিন আবু আকলেহ নামের আল জাজিরার এক সাংবাদিক নিহত হয়েছেন।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ওই মন্ত্রণালয় ও আল জাজিরার সাংবাদিকরা জানান, বুধবার পশ্চিম তীরের জেনিন শহরের কাছে ইসরায়েলি বাহিনীর তল্লাশির খবর সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন শিরিন। ওই সময় গুলিবিদ্ধ হন তিনি। পরে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে নেয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
আল জাজিরার সাংবাদিক নিদা ইব্রাহিম জানান, শিরিনের মৃত্যুর সময়কার পরিস্থিতি এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি, তবে ঘটনার ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, তিনি মাথায় গুলিবিদ্ধ হন।
ফিলিস্তিনের রামাল্লা শহর থেকে নিদা বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা জানতে পেরেছি, ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তাকে মৃত ঘোষণা করেছে। জেনিনের ঘটনাগুলো বিশেষত দখলকৃত পশ্চিম তীরের উত্তরাঞ্চলে জেনিনে ইসরায়েলি বাহিনীর তল্লাশির খবর সংগ্রহ করছিলেন শিরিন আবু আকলেহ। ওই সময় গুলি এসে তার মাথায় লাগে।’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে নিদা আরও বলেন, খুবই প্রশংসিত একজন সাংবাদিক ছিলেন শিরিন। ২০০০ সালে ফিলিস্তিনে দ্বিতীয় ইন্তিফাদা শুরুর সময় থেকে তিনি আল জাজিরার সঙ্গে যুক্ত।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য