ইউক্রেন ইস্যুতে দুই পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার উত্তেজনা বাড়ছে। সীমান্তে রুশ সেনা জমায়াতের জবাবে এবার হুঁশিয়ারি নয়, সরাসরি ইউক্রেনে অস্ত্র পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, প্রথম চালানে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়ভে প্রায় ৯০টন সামরিক সহায়তা পাঠানো হয়েছে। এসবের মধ্যে আছে সম্মুখসারির প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।
চলতি সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্টনি ব্লিনকেনের কিয়ভে সফরের পর এই সহযোগিতা পাঠালো যুক্তরাষ্ট্র। সফরে ব্লিনকেন জানিয়েছিলেন, কিয়ভ আক্রান্ত হলে শক্ত জবাব দেবে ওয়াশিংটন।
ইউক্রেন সংকট নিরসনে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের আলোচনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এই চালান পৌঁছায় কিয়ভে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত বছরের ডিসেম্বরে ইউক্রেনে ২০০ মিলিয়ন ডলারের সহায়তার প্যাকেজ অনুমোদন করেছিলেন। এরই অংশ হিসেবে প্রথম চালানটি ইউক্রেনে পৌঁছাল।
কিয়ভে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস বলছে, ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় প্রতিশ্রুত সহায়তা এটি। তাদের ফেসবুক পেজে বলা হয়েছে, রাশিয়ার আগ্রাসন মোকাবিলায় ইউক্রেনের সেনাবাহিনীকে শক্তিশালী করতে এ ধরনের সহায়তা অব্যাহত থাকবে।
বিবৃতিতে সহায়তার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওলেক্সি রেজনিকভ।
২০১৪ সালে ইউক্রেনের ক্রিমিয়ান উপত্যকা দখলে দেয় রাশিয়া। শুরু হয় ইউক্রেন সেনাবাহিনীর সঙ্গে মস্কো মদদপুষ্ট ইউক্রেনিয়ান বিদ্রোহীদের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। এতে কমপক্ষে ১৪ হাজার মানুষ নিহত হন। দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান অন্তত ২০ লাখ নাগরিক।
২০১৫ সালে সরকারের সঙ্গে বিদ্রোহীদের সঙ্গে শান্তিচুক্তি কার্যকর হলে, পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে ইউক্রেন সীমান্তে সেনা জড় করা শুরু করে রাশিয়া। উত্তর আটলান্টিক নিরাপত্তা জোট ন্যাটো বলছে, সীমান্তে এখন এক লাখ রুশ সেনা অবস্থান করছে। তাদের উপস্থিতি ইউরোপে সংকটময় পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা করছে ন্যাটো।
জবাবে মস্কো বলছে, কোনো ধরনের আগ্রাসন চালানোর পরিকল্পনা নেই তাদের। যদিও ন্যাটোতে ইউক্রেনের যোগদানের বিষয়টিকে রাশিয়ার জন্য হুমকি হিসেবে দেখছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। পূর্ব ইউরোপে ন্যাটোর সামরিক মহড়া ও অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ চাইছেন তিনি।
আরও পড়ুন:ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ এবং পশ্চিমা দেশগুলোর প্রবল নিষেধাজ্ঞার মাঝেও নাটকীয় উত্থান ঘটেছে রুশ মুদ্রা রুবলের। যুদ্ধ শুরু করার আগ মুহূর্তে এই মুদ্রার মান যে অবস্থায় ছিল সোমবার পর্যন্ত তার থেকে ৩০ শতাংশ উন্নীত হয়েছে। দেশটির মূলধন প্রবাহে কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপের ফলেই এমনটি হয়েছে বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
ব্লুমবার্গের বরাতে সোমবার এক প্রতিবেদনে আল-জাজিরা জানিয়েছে, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ শুরুর পর রাশিয়ার ওপর যুক্তরাষ্ট্রসহ এর মিত্র দেশগুলো একের পর এক নিষেধাজ্ঞা এবং অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করে। কিন্তু এই নিষেধাজ্ঞাও কিছু ক্ষেত্রে রাশিয়ার জন্য শাপেবর হয়েছে।
নিষেধাজ্ঞা আরোপের ফলে দেশটির আমদানিও কমে যায়, ফলে কমে যায় দেশটির আমদানি ব্যায় এবং বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদাও।
এ ছাড়া রাশিয়ার কাছ থেকে ইউরোপের দেশগুলো যে গ্যাস ও তেল ক্রয় করে তার মূল্য চুক্তি অনুযায়ী আগে ইউরোতেই পরিশোধ করা হতো। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর রাশিয়া ওই দেশগুলোকে রুবলে মূল্য পরিশোধের বাধ্যবাধকতা দেয়। ইউরোকে রুবলে কনভার্ট করে রাশিয়ার জ্বালানি ক্রয় করতে হচ্ছে বলে রুবলের চাহিদাও বেড়েছে। এর ফলে রুবলের দামও বেড়েছে।
জ্বালানি বিক্রি করে এভাবে মাত্র চারটি লেনদেনের পরই ইউরো মুদ্রার বিপরীতে রুবল এক লাফে ১৩ শতাংশ শক্তিশালী হয়ে ওঠে। এর মধ্যে ৬.২ শতাংশই হয়েছে সোমবার।
সোমবার বিকেলে রুশ অর্থমন্ত্রী দেশটির মুদ্রার মান এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে জানান। এ ছাড়া দেশটির মূলধন প্রবাহ ও আমদানি ব্যায়ের মধ্যে খুব বেশি বৈসাদৃশ্য না থাকায় অর্থনীতির ওপরও চাপ কম বলে জানান তিনি।
ভারত ও চীনের কাছে জ্বালানি বিক্রি করে বৈদেশিক মুদ্রাও আয় করছে রাশিয়া। দেশটির রপ্তানি আয়ের আয়ের ৪০ শতাংশই আসে তেল ও গ্যাস বিক্রি করে।
অক্সফোর্ড ইকোনমিক্সের তাতিয়ানা অরলোভা বলেন, ‘মূলধন নিয়ন্ত্রণ তুলে নেয়ার পর ডলারের বিপরীতে রুবলকে ৭০ থেকে ৮০ রেঞ্জে ফিরিয়ে দেবে, যা দেশটির অর্থনীতির জন্য আরও আরামদায়ক হবে।’
এ আগে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর নিষেধাজ্ঞার মুখে রুবলের মান দ্রুত পড়ে যেতে শুরু করলে টানা দুই সপ্তাহ মস্কোর শেয়ার বাজার বন্ধ রেখেছিল দেশটি। কিন্তু মার্চ মাসের শেষের দিক থেকে রুবল আবারও ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে।
তাতিয়ানা রোমানোভা বলেন, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ার তেল-গ্যাস রপ্তানির পরিমাণ কমেছে এ কথা ঠিক। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে তেল-গ্যাসের দাম বেড়ে যাওয়ায় রাশিয়া তা পুষিয়ে নিচ্ছে।’
এদিকে, ফেব্রুয়ারি মাসের শেষদিকে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার দ্বিগুণ করে। বিদেশি মুদ্রা না কিনে যারা রুবল সঞ্চয় করবেন, তাদের জন্য প্রণোদনা ঘোষণা করা হয়। আর রুশ কোম্পানিগুলো বিদেশে ব্যবসা করে যে আয় করবে তার ৮০ শতাংশ রুবলে কনভার্ট করে নিতে হবে। এর ফলে রাশিয়ার মুদ্রা রুবলের একটি বড় চাহিদা তৈরি হয়েছে।
সোমবার মধ্যরাতে দেখা গেছে, আমেরিকান এক ডলার সমান ৫৯ রুবল। অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, রুশ মুদ্রা যেভাবে শক্তিশালী হচ্ছে তাতে কিছু দিনের মধ্যে এক ডলার সমান ৫০ রুবল হয়ে যাওয়াও অসম্ভব কিছু নয়।
আরও পড়ুন:পাকিস্তানে তীব্র দাবদাহে পুড়ছে উত্তর পাঞ্জাবের মরু অঞ্চল চোলিস্তান। তাপে শুকিয়ে গেছে সব জলাধার। খাওয়ার পানির দেখা দিয়েছে তীব্র সংকট। আর এই সংকটের মুখে এলাকা ছেড়ে যাচ্ছেন বাসিন্দারা। পানির অভাবে দিন দিন বাড়ছে গবাদিপশুর মৃত্যু। পাকিস্তানের দরিদ্রতম এ অঞ্চলের বাসিন্দাদের জীবিকা এই গবাদিপশুর ওপর নির্ভর করে।
চোলিস্তানের বাসিন্দাদের দুরবস্থা দেখতে সেখানে চষে বেড়িয়েছে ভাইস নিউজ। মধ্য দুপুরে তারা দেখতে পান, বৃদ্ধ এক খামারি লুটিয়ে পড়েছেন কাদামাটিতে। আশপাশের লোকজন তাকে টেনে তোলার চেষ্টা করছিলেন। তবে দাঁড়ানোর সক্ষমতা ছিল না বৃদ্ধের।
এ ঘটনার মাত্র কিছু আগে নিজের মারা যাওয়া পশুদের দেহ নিয়ে আসার জন্য ওই কর্দমাক্ত জলাশয়ের কাছে গিয়েছিলেন বৃদ্ধ ব্যক্তিটি।
একপর্যায়ে তিনি চিৎকার করে বলতে থাকেন, ‘হে ঈশ্বর, তাদের (পাকিস্তান সরকার) ধ্বংস করুন। আমার গবাদিপশু তৃষ্ণায় মারা গেছে। আমাদের কোনো রক্ষক নেই। তারা যা করেছে তার জন্য ঈশ্বরের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।’
ওই বৃদ্ধের আবেগঘন দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। যেখানে নিজ দেশের সরকারকে অভিশাপ দিতে দেখা যাচ্ছে অসহায় এই খামারিকে। তার অভিযোগ, সরকারের উদাসীনতার জন্যই চোলিস্তানের মরু অঞ্চলের দরিদ্র কৃষকদের ওপর বিপর্যয় নেমে এসেছে।
سیف سٹی کے ساتھ ساتھ سیف چولستان کے بارے میں بھی سوچیں۔ ایک کیمرہ چولستان پر بھی لگائیں۔۔جہاں بے زبان جانور پانی ہی قلت اور شدید گرمی کی وجہ سے کررہے ہیں۔#چولستان_کو_پانی_دو pic.twitter.com/lsw9UMtpFy
— Valentina Reece (@reece_valentina) May 11, 2022
মার্চের মাঝামাঝি থেকে শুরু হওয়া তাপপ্রবাহে পাকিস্তানের ২২০ মিলিয়ন জনসংখ্যার সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অংশে তীব্রতর হয়েছে, চালিয়ে যাচ্ছে ধ্বংসযজ্ঞ।
স্থানীয় বাসিন্দা শাহজাদ জুগনু বলেন, ‘যদি পরিস্থিতি না বদলায়, তবে আমরা মারা যাব। আপনি খবরে দেখতে পাবেন চোলিস্তানের বাসিন্দারা মারা গেছে।
‘ঈশ্বরের ভালোবাসার জন্য, সরকারকে চোলিস্তান সম্পর্কে ভাবতে হবে। আমাদের পানি দেয়া উচিত। অন্যথায় আমরা মারা যাব।’
বিশ্বের মোট গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনে ১ শতাংশেরও কম নিঃসরণ করে পাকিস্তান। তবে জার্মানওয়াচের ২০২১ সালের সমীক্ষা বলছে, আবহাওয়ায় পরিবর্তনের কারণে দেশটি এখনও ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় অষ্টম অবস্থানে আছে।
সাম্প্রতিক দিনগুলোয় পাকিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলে তাপমাত্রা অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। এই অঞ্চলের মানুষ এবং প্রাণীরা পানিশূন্যতায় ভুগছে, হিটস্ট্রোকের বড় ঝুঁকিতে আছে।
চোলিস্তানে তীব্র তাপমাত্রা এবং কম বৃষ্টিপাতের ফলে কূপগুলো শুকিয়ে গেছে। নষ্ট হয়েছে ফসল। বাধ্য হয়ে অঞ্চল ছেড়ে যাচ্ছে বহু মানুষ।
রেহাই পাচ্ছে না পশু-পাখিরাও। এই অঞ্চলে বাস করা দুই লাখ মানুষের আয়ের অন্যতম উৎস গবাদিপশু। গত কয়েক দিনে অন্তত ৫০ প্রাণী মারা গেছে। তবে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে, সংখ্যাটা ২০০-র কাছাকাছি।
জুগনু বলেন, ‘চোলিস্তানের পরিস্থিতি ভয়াবহ। এবার বৃষ্টি না হওয়ায় চারদিকে খরা। অনেক প্রাণী মারা গেছে। কিছুর অবস্থা আশঙ্কাজনক।’
বিষয়টি আমলে নিয়েছে প্রশাসন। জরুরি ত্রাণ ও চিকিৎসা শিবির স্থাপন করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। বিশুদ্ধ পানি আছে এমন জায়গায় সরিয়ে নেয়া হচ্ছে মানুষ ও গবাদিপশুকে। বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে আরও পরিকল্পনা নিচ্ছে পাকিস্তান সরকার।
তবে ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই ব্যবস্থা আগেই নিতে পারত সরকার। এতে ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপকতা কমানো যেত অনেক। গ্রীষ্মে যখন থেকে তাপদাহ বাড়তে শুরু করেছিল, সে সময় ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে কর্তৃপক্ষ।
ভূগর্ভস্থ পানির জন্য ডিস্যালিনেশন প্ল্যান্টের অভাবকে দায়ী করছেন বাসিন্দারা। বৃষ্টির পানি সংগ্রহের জন্য পুকুরের ওপর নির্ভরশীল হয়ে থাকতে হতো না তাদের। সরকার প্রতিবেশী অঞ্চল থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে চোলিস্তানে পানি সরবরাহ করতে লাখ লাখ টাকা খরচ করলেও, পাইপগুলো শুকিয়ে গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মুহাম্মদ সোহেল বলেন, ‘আমরা সরকারের কাছে খরা মৌসুমে পানি সরবরাহের জন্য নিয়মিত পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।’
আরও পড়ুন:অস্ট্রিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন, বিয়েতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে নেচে এসেছিলেন সংবাদের শিরোনামে। পরে যোগ দেন পুতিনের দেশেরই এক প্রতিষ্ঠানে। এবার সে চাকরি ছাড়লেন তিনি।
আলোচিত কারিন নেইসলের রাশিয়ার তেল কোম্পানি রোসনেফ্ট ছাড়ার তথ্য নিশ্চিত করেছে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি।
প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে এক বিবৃতি দিয়ে কারিনের চাকরি ছাড়ার তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন তিনি। শুক্রবার থেকে এই কর্মকর্তা আর দায়িত্বে নেই।
৫৭ বছর বয়সী কারিন ২০১৮ সালে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন। সে সময় ‘বন্ধু’ পুতিনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন তিনি। বিয়ের অনুষ্ঠানে পুতিনের সঙ্গে নাচেন কারিন। এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে বিশ্বের প্রথম শ্রেণির গণমাধ্যমগুলো।
নিজ দেশের সরকারের দায়িত্ব ছেড়ে বিয়ের পরের বছরই রুশ কোম্পানি রোসনেফ্টে যোগ দেন কারিন। গত জুনে পান প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকের দায়িত্ব।
জার্মানির সাবেক চ্যান্সেলর গেরহার্ড শ্রোডার রোসনেফ্টে ছেড়ে যাচ্ছেন বলে তথ্য প্রকাশের পরদিনই নিজের পদত্যাগের কথা জানান সাবেক এই মন্ত্রী। অবশ্য শুক্রবারই তিনি জানিয়েছিলেন, আরও বছরখানেক কোম্পানিতে থাকতে চান।
চার বছর আগে অস্ট্রিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী কারিন যখন বিয়েতে পুতিনকে আমন্ত্রণ জানান, তখন বেশ সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি।
বিরোধী দলীয় রাজনীতিকরা অভিযোগ করেছিলেন, কারিন তার বিয়েতে পুতিনকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছেন।
তৎকালীন মন্ত্রী কারিনের বিয়ের অনুষ্ঠানে ফুলের তোড়া নিয়ে প্রবেশ করেন পুতিন। তার সঙ্গে ছিল রাশিয়ার সংগীত শিল্পীদের একটি দল। তারা বিয়েতে গানও পরিবেশন করে। অস্ট্রিয়ার স্টাইরিয়া রাজ্যে হওয়া অনুষ্ঠানে কারিনের সঙ্গে কোমর দুলিয়ে নাচেন পুতিন। এ নিয়ে বিতর্ক হলে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগও দাবি করা হয়।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর পর থেকেই পশ্চিমাদের বাধা উপেক্ষা করে পূর্ব ইউরোপের দেশটিতে চলছে রুশ সেনাদের সামরিক অভিযান।
বাসিন্দাদের রক্ষা করার জন্যই এমন সামরিক পদক্ষেপ বলে দাবি করে আসছে রাশিয়া। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সম্পূর্ণ বিনা উসকানিতে রাশিয়া হামলা চালিয়েছে। দেশটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে আসছে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর এখন পর্যন্ত দেশটির ৮০ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। একই সঙ্গে দেশ ছেড়েছেন প্রায় ৫০ লাখ মানুষ। কারিনের পদ ছাড়ার সঙ্গে ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর হামলার কোনো সংশ্লিষ্টতা আছে কিনা, তা অবশ্য এখনই স্পষ্ট হওয়া যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন:বিশ্বজুড়ে মাঙ্কিপক্স নিয়ে উদ্বেগের মাঝে সংক্রমণ মোকাবিলায় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
বিদেশ থেকে আসা কোনো ব্যক্তির মাঙ্কিপক্স উপসর্গ থাকলে কলকাতার বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে আইসোলেশনে থাকতে হবে তাকে।
ভারত সরকারের নির্দেশ মেনে এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
রাজ্যটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী বলেন, ‘এখনও আমাদের দেশে মাঙ্কিপক্সে শনাক্তের খবর পাওয়া যায়নি। তবে আগাম প্রস্তুতি নিয়েছে রাজ্য সরকার। মাঙ্কিপক্সের উপসর্গ দেখা দিলে ওই ব্যক্তির রক্তের নমুনা পুনেতে পাঠানো হবে পরীক্ষার জন্য।’
২১ দিনের মধ্যে মাঙ্কিপক্স শনাক্ত হয়েছে এমন দেশ থেকে কোনো ব্যক্তি যদি পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করেন, সে ক্ষেত্রে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে আইসোলেশনে রেখে তার চিকিৎসা করা হবে।
ওই ব্যক্তি কাদের সংস্পর্শে এসেছেন, তাও খতিয়ে দেখা হবে বলে রাজ্যটির স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এখন পর্যন্ত ১২টি দেশের ৯২ জনের শরীরে মাঙ্কিপক্স ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
প্রাণঘাতী না হলেও সপ্তাহ তিনেক জ্বর, ব্যথাসহ নানা উপসর্গ থাকছে এই রোগে।
যদিও বলা হচ্ছে, এই ভাইরাস ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি কম।
মাঙ্কিপক্স ভাইরাস সাধারণত মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকার প্রত্যন্ত অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।
যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের মতে, এই ভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্ত বেশির ভাগ মানুষই কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সুস্থ হয়ে যান।
আরও পড়ুন:যুদ্ধাপরাধের দায়ে রাশিয়ার এক সেনাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দিয়েছে ইউক্রেনের একটি আদালত।
সোমবার এই রায় ঘোষণা করা হয় বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।
৬২ বছর বয়সী এক বেসামরিক নাগরিককে হত্যার দায়ে এ সাজা দেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রথমবারের মতো ইউক্রেন রাশিয়ার কোনো সেনাকে সাজা দিল।
ইউক্রেনের একটি গ্রামে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ওই হত্যার ঘটনা ঘটে। হত্যার দায় স্বীকার করেছেন দণ্ডপ্রাপ্ত ২১ বছর বয়সী ট্যাঙ্ক কমান্ডার ভাদিম সিসিমারিন। তবে তিনি বলেছেন, আদেশ পেয়ে গুলি ছুড়েছিলেন।
রাশিয়ার এই সেনার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধে আরও অভিযোগের তদন্ত হচ্ছে।
রাশিয়া বলছে, কোনো বেসামরিক নাগরিকের ওপর তাদের সেনারা কোনো হামলা চালাচ্ছে না। তবে ইউক্রেনের দাবি, এরই মধ্যে ১১ হাজারের বেশি যুদ্ধাপরাধের ঘটনা ঘটিয়েছে রুশ সেনারা।
এমন প্রেক্ষাপটে রুশ সেনাদের বিচার করতে কিয়েভে আদালত বসিয়েছে ইউক্রেন। রাশিয়ার পক্ষ থেকে তাদের সেনার দণ্ড পাওয়া নিয়ে কোনো মন্তব্য আসেনি।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর পর থেকেই পশ্চিমাদের বাধা উপেক্ষা করে পূর্ব ইউরোপের দেশটিতে চলছে রুশ সেনাদের সামরিক অভিযান।
বাসিন্দাদের রক্ষা করার জন্যই এমন সামরিক পদক্ষেপ বলে দাবি করে আসছে রাশিয়া। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সম্পূর্ণ বিনা উসকানিতে রাশিয়া হামলা চালিয়েছে। দেশটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে আসছে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর এখন পর্যন্ত দেশটির ৮০ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। একই সঙ্গে দেশ ছেড়েছেন প্রায় ৫০ লাখ মানুষ।
যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। এ যুদ্ধ বন্ধ না হলে বিশ্বজুড়ে বড় ধরনের খাদ্যসংকট তৈরি হবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।
আরও পড়ুন:প্রচলিত খ্রিষ্টীয় মতবাদবিরোধী, নারীবাদী ধর্মতত্ত্বের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ক্যাথলিক ধর্মতাত্ত্বিক রোজমেরি র্যাডফোর্ড রুথার মারা গেছেন।
ন্যাশনাল পাবলিক রেডিওর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তার পরিবারের পক্ষ থেকে ধর্মতাত্ত্বিক মেরি হান্ট এক বিবৃতিতে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় ৮৫ বছর বয়সে তিনি মারা যান।
ড. রুথার ছিলেন একজন সমাজকর্মী, পরিবেশবাদী, মুক্তিবাদী ধর্মতত্ত্বের অনুসারী। বর্ণবাদের বিরুদ্ধে ছিল তার অবস্থান। তিনি নারী-গির্জা এবং আরও অনেক নারীবাদী কর্মকাণ্ডের জন্য সারা বিশ্বে পরিচিত। তাকে এই সময়ে একজন গুরুত্বপূর্ণ খ্রিষ্টীয় নারীবাদী ধর্মতাত্ত্বিক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তার অনুসারীদের কাছেও তিনি ছিলেন অত্যন্ত সম্মানিত।
একজন ধর্মতত্ত্ববিদ হিসেবেই যিনি কথিত ও প্রচলিত মতবাদকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন।
তিনি গর্ভপাত, জন্মনিয়ন্ত্রণ ও পুরুষ যাজকদের সম্পর্কে শিক্ষার বিষয়ে ক্যাথলিক চার্চকেও চ্যালেঞ্জ করেছিলেন। চার্চের সঙ্গে দ্বন্দ্বের কারণে এক ক্যাথলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও তার চাকরির প্রস্তাব ফিরিয়ে নেয়া হয়।
জলবায়ু ন্যায়বিচার নিয়েও কাজ করেছিলেন তিনি। এ বিষয়ে তার লেখা বই ‘গাইয়া অ্যান্ড গড: অ্যান ইকোফেমিনিস্ট থিওলজি অফ আর্থ হিলিং’ ১৯৯৪ সালে প্রকাশিত হয়।
আরও পড়ুন:ইউরোপের দেশ বেলজিয়ামে তিন জনের দেহে মাঙ্কিপক্স শনাক্ত হওয়ার পরেই পরিস্থিতি যাতে খারাপের দিকে যেতে না পারে তার জন্য বেলজিয়ামের রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট গ্রুপ আক্রান্তদের জন্য ২১ দিনের কোয়ারেন্টিন ঘোষণা করেছে।
এদিকে রাশিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভাইরোলজিস্ট মার্ক ভ্যান রানস্ট রোববার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া এক পোস্টে দেশটিতে চতুর্থ রোগীর বিষয়টি জানিয়েছেন।
তিনি জানিয়েছেন যে আগের তিন জন আক্রান্তের মত চতুর্থজনও সমকামী ফেটিশ উৎসব ডার্কল্যান্ডসের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, যা মে মাসের প্রথম দিকে এন্টওয়ার্পে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
তিনি বলেন, ‘এটি গুরুত্বপূর্ণ যে প্রত্যেকে যারা ডার্কল্যান্ডস ফেস্টিভ্যালে অংশ নিয়েছিলেন তারা যেন উপসর্গের বিষয়ে সজাগ থাকেন।’
এরই মধ্যে আফ্রিকার বাইরে ১৫টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে মাঙ্কিপক্স। ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও ইসরায়েলে ৮০ জনের বেশি সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে। যদিও বলা হচ্ছে, এই ভাইরাস ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি কম।
মাঙ্কিপক্স ভাইরাস সাধারণত মধ্য ও পশ্চিমা আফ্রিকার প্রত্যন্ত অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। তবে এই ভাইরাসের মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ার প্রবণতা কম।
যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের মতে, ভাইরাসে আক্রান্ত বেশির ভাগ মানুষই কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সুস্থ হয়ে যান।
আফ্রিকার বাইরে মাঙ্কিপক্সের বর্তমান প্রাদুর্ভাব বিজ্ঞানীদের অবাক করে দিয়েছে এবং যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা নতুন পরামর্শ জারি করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের তিন সপ্তাহের জন্য সেলফ- কোয়ারেন্টিনে থাকা উচিত।
বেলজিয়াম প্রথম দেশ হিসেবে শুক্রবার মাঙ্কিপক্স সংক্রমিত ব্যক্তিদের জন্য তিন সপ্তাহের কোয়ারেন্টিন ঘোষণা করেছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য