আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর রেখে যাওয়া অস্ত্র ও গোলাবারুদ এখন কাশ্মীর উপত্যকার সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর কাছে।
একটি সশস্ত্র সংগঠনের প্রকাশিত সাম্প্রতিক ভিডিওতে তাদের যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি রাইফেল এবং পিস্তল সন্ত্রাসীরা ব্যবহার করতে দেখা গেছে।
পিপলস অ্যান্টি-ফ্যাসিস্ট ফ্রন্ট (পিএএফএফ) নামের একটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর প্রকাশিত ভিডিওতে কয়েকজন সন্ত্রাসীকে এম ২৪৯ স্বয়ংক্রিয় রাইফেল, ৫০৯ ট্যাকটিক্যাল বন্দুক, এম ১৯১১ পিস্তল এবং এম৪ কারবাইন রাইফেল ব্যবহার করতে দেখা যায়।
সম্প্রতি জম্মু ও কাশ্মীরের নিরাপত্তা বাহিনী কয়েকটি অভিযানে ৬ জন অস্ত্রধারীকে হত্যা করেছে। কর্তৃপক্ষের দাবি, তারা বিদেশি নাগরিক। তাদের সবার কাছেই যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এম৪১৬ কার্বাইন পাওয়া গেছে। উল্লেখ্য, এম৪১৬ কার্বাইন যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর স্ট্যান্ডার্ড অ্যাসল্ট রাইফেল।
ভারতীয় গোয়েন্দাদের ধারণা, যুক্তরাষ্ট্রের ফেলে যাওয়া অস্ত্র ও গোলাবারুদের একটা অংশ আফগানিস্তানে তালেবানরা প্রকাশ্যে বিক্রি করছে।
পাকিস্তানের সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো তালেবানদের কাছ থেকে এই অস্ত্র ও গোলাবারুদ কিনে সীমান্ত পেরিয়ে কাশ্মীর উপত্যকায় পাঠাচ্ছে।
ভারতের প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকরা আগেই ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে যুক্তরাষ্ট্রের ফেলে যাওয়া অস্ত্র ও গোলাবারুদ কাশ্মীরের সশস্ত্র গোষ্ঠীর হাতে পড়বে। নিরাপত্তা বাহিনীর মতে, কাশ্মীর উপত্যকায় প্রায় ৮৫ জন বিদেশি রয়েছেন। এই বিদেশি অস্ত্রধারীরা যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাসল্ট রাইফেল বহন করছেন।
ড্রোনের সাহায্যে সীমান্তের ওপার থেকে এই রাইফেল, পিস্তল, গ্রেনেড ইত্যাদি পাঠানো হচ্ছে বলেও মনে করেন নিরাপত্তা বাহিনী। তবে কয়েকবার সীমান্তে নিরাপত্তা বাহিনী এভাবে অস্ত্র পাচারের অনেক ঘটনা নস্যাৎও করেছে।
কাশ্মীর উপত্যকায় নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য সশস্ত্র সংগঠনগুলোর হাতে আসা এসব অত্যাধুনিক অস্ত্র একটি নতুন এবং বড় চ্যালেঞ্জ। তাই ভারতীয় সরকারও জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশকে দেশের প্রথম পুলিশ বাহিনী হিসেবে তাদের মার্কিন তৈরি সিগ সাউয়ার ৭১৬ রাইফেলস এবং সিগ সাউয়ার এমপিএক্স ৯ এমএম পিস্তল দেবে।
আরও পড়ুন:পুরুষ সেজে প্রতারণার অভিযোগে যশোরে ফারহানা আক্তার স্নেহা নামে এক তরুণীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার সকালে যশোর শহরের দড়াটানা মোড় থেকে স্নেহাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি শহরের লোন অফিস পাড়ার শাহাজান আলীর মেয়ে।
যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জানান, আটক স্নেহা দীর্ঘদিন ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে পুরুষ সেজে প্রতারণা করে আসছেন।
ওসি আরও জানান, সম্প্রতি চৌগাছা উপজেলার বেড় গোবিন্দপুর গ্রামের চা দোকানি হাবিবুর রহমানের সঙ্গে পুরুষ বেশে স্নেহার পরিচয় হয়। পরে হাবিবুরের মেয়ের সঙ্গে তিনি প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন।
প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে ওই মেয়ের কাছ থেকে মোবাইলসহ বিকাশের মাধ্যমে নগদ টাকা নিয়ে সটকে পড়েন স্নেহা।
এ ঘটনায় হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে গত বৃহস্পতিবার যশোর কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। পুলিশ অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করে সকালে স্নেহাকে শহরের দড়াটানা মোড় থেকে গ্রেপ্তার করে।
মনিরুজ্জামান আরও জানান, স্নেহার নামে দেশের বিভিন্ন থানায় মাদক ও প্রতারণার একাধিক মামলা রয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন:ঢাকা থেকে সরাসরি ভুটানে পুনরায় ফ্লাইট ঘোষণা করেছে দেশটির পতাকাবাহী ড্রুক এয়ার। এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করে প্রতিষ্ঠানটি।
বিজ্ঞপ্তিতে তোলা হয়, আগামী ১ জুলাই থেকে ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ভুটানের পারো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। প্রাথমিকভাবে সপ্তাহে দুই দিন প্রতি রোববার ও বুধবার ফ্লাইট যাবে পারোর উদ্দেশে।
করোনা মহামারির শুরুর পর থেকে অন্যান্য অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও ফ্লাইট স্থগিত করে ড্রুক। বাংলাদেশের কোনো এয়ারলাইনস দেশটিতে ফ্লাইট পরিচালনা না করায় কার্যত আকাশপথে দেশটির সাথে যোগাযোগ বন্ধই ছিল।
পারো বিমানবন্দর পৃথিবীর ঝুঁকিপূর্ণ বিমানবন্দরগুলোর একটি। এই বিমানবন্দরে ফ্লাইট পরিচালনার জন্য পাইলটদের বিশেষ প্রশিক্ষণ ও অনুমোদনের প্রয়োজন। হাতে দেনা কয়েকজন পাইলটেরই সে প্রশিক্ষণ ও অনুমোদন রয়েছে।
ভুটানে বাংলাদেশ নাগরিকরা অন অ্যরাইভাল ভিসার সুযোগ পেয়ে থাকেন।
বগুড়ার কাহালুতে ট্রাকের চাপায় মোটরসাইকেলের দুই বন্ধু নিহত হয়েছেন। উপজেলার নওগাঁ-বগুড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের বীরবেদার এলাকায় শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত দুজনের নাম আব্দুল্লাহ ও সৈকত। এ ঘটনায় সাগর সাখিদার নামে আরও এক বন্ধু আহত হন।
তাদের সবার বয়স ২২ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে। হতাহত তিনজনই নওগাঁর বাসিন্দা এবং একই বাইকের আরোহী ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
কাহালু থানার উপপরিদর্শক (এসআই) এরশাদ আলী জানান, সাগর নওগাঁ সদরের তিলোকপুর এলাকার হবিবর সাখিদারের ছেলে। তাকে গুরুতর অবস্থায় বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অন্যদের পরিচয় এখনও বিস্তারিত জানা যায়নি।
স্থানীয়রা জানান, মোটরসাইকেলে চড়ে তিন জন নওগাঁর দিকে যাচ্ছিলেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে বীরকেদার বারোপুর এলাকায় বিপরীতমুখী একটি ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষ ঘটে। এতে সৈকত নামে এক বাইক আরোহী ট্রাকের চাপায় ঘটনাস্থলেই মারা যান। আর বাকি দুজনকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে দুপচাঁচিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যায়।
সেখানে নিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই আব্দুল্লাহ মারা যান। আর গুরুতর আহত হওয়ায় সাগর সাখিদারকে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এসআই এরশাদ আলী আরও জানান, দুর্ঘটনার পর সৈকতের মরদেহ কাহালু থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। আর আব্দুল্লাহকে দুপচাঁচিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার জন্য সেখানেই রয়েছে।
কাহালু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমবার হোসেন বলেন, ‘হতাহত তিনজনই মোটরসাইকেলের ছিলেন। দুর্ঘটনা কবলিত ট্রাক ও মোটরসাইকেল হেফাজতে নেয়া হয়েছে। ঘটনার পরপরই ট্রাকের চালক-সহকারী পালিয়ে গেছেন।’
আরও পড়ুন:করোনাভাইরাস মহামারির অভিঘাত ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে যে মন্দা পরিস্থিতি এবং খাদ্য ঘাটতি ও সরবরাহে যে সংকট তৈরি হয়েছে, সেখানে থেকে উত্তরণে বিশ্বসংহতি ও সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বাড়ানোসহ চার দফা প্রস্তাব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে খাদ্য, জ্বালানি ও অর্থবিষয়ক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় গঠিত প্লাটফর্ম ‘চ্যাম্পিয়নস গ্রুপ অফ গ্লোবাল ক্রাইসিস রেসপন্স’ (জিসিআরজি)-এর উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে শুক্রবার রাতে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী এ প্রস্তাব রাখেন।
ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের কারণে বিশ্বজুড়ে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ঠেকানো, খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তা এবং আর্থিক ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে জিসিআরজি গঠনে এগিয়ে আসে জাতিসংঘ।
এই গ্রুপের মূল্য উদ্দেশ্য যুদ্ধ-পরবর্তী পরিস্থিতিতে বিশ্বের দরিদ্র ও ভঙ্গুর জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেয়া। জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশসহ পাঁচটি দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা এই গ্রুপে যোগ দিতে সম্মত হয়েছেন।
গত ২৩ মার্চ আনুষ্ঠানিক বক্তব্যের মধ্য দিয়ে জিসিআরজি গঠনের কথা জানান অ্যান্তোনিও গুতেরেস।
এ বছরের ১৩ এপ্রিল জিসিআরজিতে যুক্ত হতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোন দিয়ে আহ্বান জানান জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে এই প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হতে সম্মতি জানান প্রধানমন্ত্রী।
যুক্তরাষ্ট্রে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের সভাপতিত্বে এদিন জিসিআরজির প্রথম উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
বৈশ্বিক মন্দা মোকাবিলায় শেখ হাসিনার চার প্রস্তাব
প্রথম প্রস্তাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই বিশ্ব সংহতি জোরদার করতে হবে এবং একটি সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।’
এ ক্ষেত্রে জি সেভেন, জি টোয়েন্টি ও ওইসিডি এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘এটা দেখে আমি খুশি হয়েছি যে, এই গ্রুপের স্টিয়ারিং কমিটি সব বড় আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে গঠিত। সংকট মোকাবিলায় কার্যকর সুপারিশ গ্রহণে তাদের উদ্যোগে আমাদের পূর্ণ সমর্থন থাকবে।’
দ্বিতীয় প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বৈশ্বিক সহযোগিতা এবং সাপ্লাই চেইনের ঘাটতি মোকাবিলা সবচেয়ে জরুরি, যা পণ্যের ক্রমবর্ধমান মূল্য নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখবে। স্বল্পোন্নত দেশ এবং অন্যান্য দুর্বল অর্থনীতির দেশগুলোকে রক্ষায় বিশ্ব বাণিজ্য ও রপ্তানি আয় ঠিক রাখতে আন্তর্জাতিক সমর্থন প্রয়োজন।’
উন্নত অর্থনীতি ও বহুপাক্ষিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে বলেও জানান তিনি। বলেন, ‘শুল্কমুক্ত-কোটামুক্ত বাজার প্রবেশাধিকার এবং আরও সহজলভ্য অর্থায়ন নিশ্চিত করতে হবে।’
তৃতীয় প্রস্তাবে সরকারপ্রধান বলেন, ‘খাদ্য মজুত ও বিতরণ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে কৃষি খাতের জন্য প্রযুক্তি সহায়তা এবং বিনিয়োগের ওপর আরও বেশি মনোযোগ দেয়া জরুরি।’
স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বাণিজ্য সম্প্রসারণের সুযোগ রয়েছে বলেও জানান তিনি। বলেন, ‘জিসিআরজিকে এগিয়ে নিতে আমরা উত্তর-দক্ষিণ, দক্ষিণ-দক্ষিণ এবং ত্রিভুজাকার সহযোগিতামূলক সম্পর্কের সুবিধা নিতে পারি। এ ক্ষেত্রে বেসরকারি খাতের সঙ্গে সম্পৃক্ততাও গুরুত্বপূর্ণ বলে আমি মনে করি।’
চতুর্থ প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘৪৮টি সদস্য রাষ্ট্রের সংগঠন ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের সভাপতি হিসাবে আমরা অনেক দ্বীপ রাষ্ট্র এবং জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। সেসব দেশে কৃষি ও খাদ্যব্যবস্থা গুরুতর চাপের মধ্যে রয়েছে।’
তাই সবার কল্যাণে জলবায়ু পরিবর্তন, জীব-বৈচিত্র্যের ক্ষতি এবং পরিবেশগত অবক্ষয়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় অর্জিত জ্ঞান, বোঝাপড়া এবং অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেয়াটা দরকার বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরবর্তী পরিস্থিতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ইউক্রেনের যুদ্ধ এমন এক সময়ে আমাদের সামনে এসেছে যখন বিশ্ব কোভিড-১৯ মহামারি থেকে পুনরুদ্ধার করতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। আর এই যুদ্ধ ইতিমধ্যে ভঙ্গুর বিশ্ব অর্থনীতিতে গুরুতর প্রভাব ফেলেছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘গ্লোবাল সাউথের একজন প্রতিনিধি হিসাবে আমি এই সংকটের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত লাখো মানুষের কণ্ঠস্বর নিয়ে এখানে যোগ দিয়েছি। স্বল্পোন্নত এবং দ্বীপ রাষ্ট্রগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। এই পরিস্থিতি উত্তরণে তাদের জন্য দ্রুত সহযোগিতা প্রয়োজন।’
এ সময় এই গ্রুপে যোগ দিতে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানানোয় জাতিসংঘ মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ বহুপাক্ষিকতায় দৃঢ় বিশ্বাসী। আমরা সবসময় বিশ্ব শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং উন্নয়নে অবদান রাখতে জাতিসংঘের আহ্বানে সাড়া দিয়েছি। এই গ্রুপটিকে সমর্থন করার জন্য আমাদের প্রতিশ্রুতি সেই প্রত্যয় থেকে এসেছে।’
করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলা করে অর্থনৈতিক অগ্রগতি ধরে রাখার ক্ষেত্রে সরকারের নেয়া পদক্ষেপের কথাও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘মহামারি থেকে পুনরুদ্ধারে আমাদের প্রচেষ্টা ছিল জীবন এবং জীবিকার সুরক্ষায় সতর্ক থেকে ভারসাম্য রক্ষা করা। পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়ায় সবচেয়ে দুর্বল মানুষদের আমরা সামনে রেখেছি।
‘পেছনে পড়ে থাকা মানুষগুলোর সুরক্ষায় সামাজিক সুরক্ষা কাঠামোকে আমরা প্রসারিত করেছি। সময়মতো ভ্যাকসিন সংগ্রহ করতে পারা আমাদের বড় ধরনের স্বাস্থ্য সংকট কাটাতে সাহায্য করেছে এবং প্রাণ বাঁচিয়েছে।’
রপ্তানি খাত এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি বিনিয়োগকে রক্ষায় সরকারের নেয়া পদক্ষেপকে বাস্তবসম্মত বলেও উল্লেখ করেন তিনি। বলেন, ‘২৩ বিলিয়ন ডলারের প্রণোদনা প্যাকেজ চালু করা হয়। এই পদক্ষেপগুলো আমাদের গত অর্থবছরে ৬ দশমিক ৯৪ ভাগ জিডিপি প্রবৃদ্ধির অর্জনে সহায়তা করেছে।’
প্রধানমনন্ত্রী বলেন, ‘খাদ্য উৎপাদনে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি এবং নিশ্চিত করেছি জ্বালানি নিরাপত্তা। তবে ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতিকে অত্যন্ত অস্থিতিশীল করে তুলেছে। সরবরাহ ঘাটতি এবং খাদ্য, জ্বালানি এবং অন্যান্য পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ইতিমধ্যেই সাধারণ মানুষের জীবনে মারাত্মক চাপ সৃষ্টি করেছে।’
এই সংকট কাটাতে বিলাসী পণ্য আমদানি বন্ধ রাখা, সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর বন্ধ রাখা, কৃষি উৎপাদন বাড়ানো, এক কোটি পরিবারকে স্বল্পমূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ করা, বৈধপথে আসা রেমিট্যান্সের সঙ্গে ২ দশমিক ৫ শতাংশ নগদ সহায়তাসহ সরকারের নেয়া নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
এমন বাস্তবতায় জিসিআরজিকে এগিয়ে নিতে সবার সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে বাংলাদেশ প্রস্তুত বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন:ঢাকার ধামরাইয়ে পূর্ব বিরোধের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে একজন নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ সময় দুই পক্ষের চারজন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ একজনকে আটক করেছে।
উপজেলার গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়নের গাঙ্গুটিয়া বাজার এলাকায় শুক্রবার রাত ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতের নাম ফরহাদ হোসেন। আর আটক হয়েছেন মো. জাকারিয়া।
ধামরাই থানার কাওয়ালীপাড়া বাজার তদন্ত কেন্দ্রের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) ফয়েজ উদ্দিন এসব নিশ্চিত করেছেন।
তিনি স্থানীয়দের বরাতে জানান, গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়নের গাজিখালী নদীর মাটি খনন নিয়ে একই ইউনিয়নের অর্জুন নালাই এলাকার মো. জাকারিয়া ও কাওয়ালীপাড়া গ্রামের মতিয়ার রহমানের মধ্যে বিরোধ চলছিল অনেকদিন ধরে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় মতিয়ার গাঙ্গুটিয়া বাজার এলাকায় গেলে খবর পেয়ে তাকে মারতে আসে জাকারিয়া ও তার লোকজন। দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে তখন লাঠিসোটা ও রড নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়। এ সময় রডের আঘাতে আহত হন ফরহাদ। তাকে ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
গাঙ্গুটিয়া বাজারের পল্লী চিকিৎসক মনতোষ চন্দ্র সাহা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দুপক্ষের মারামারি থামাতে গিয়ে ফরহাদ মাঝে পড়ে যায়। এ সময় রডের আঘাতে গুরুতর আহত হয় সে।’
কাওয়ালীপাড়া বাজার তদন্ত কেন্দ্রের এএসআই ফয়েজ জানান, ঘটনা তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও পড়ুন:ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ সরকারি মাহতাব উদ্দিন কলেজের সহকারী অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসাইনকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার (এসপি) মোমতাসিরুল ইসলামকে বৃহস্পতিবার বিকেলে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন কলেজের অধ্যক্ষ মাহাবুবুর রহমান।
লিখিত অভিযোগে অধ্যক্ষ জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার কলেজে প্রবেশ করে গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসাইনকে তুই শিবির করিস বলে কানে-মুখে চড়-থাপ্পড় মারেন। পরে তিনি শিক্ষকদের কমনরুমে গিয়ে নানা হুমকি-ধামকি দিয়ে চলে যান।
অভিযোগে আরও বলা হয়, নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষক সুব্রত, সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মজিদ মণ্ডল, খাতা চুরি মামলার আসামি রকিবুল ইসলাম মিল্টন, কর্মচারী তাপস ও সবুজ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোশাররফকেও লাঞ্ছিত করেন। তারা কলেজের কিছু নথি হাতিয়ে নিয়ে মোশাররফকে একটি কক্ষে আটকে রাখেন। এ সময় কলেজের কর্মচারী তাপস ও সবুজ তাকে টানাহেঁচড়া করেন।
অধ্যক্ষ মাহাবুবুর রহমান বলেন, ‘কলেজ থেকে সরকারি খাতা চুরির বিষয় নিয়ে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশে মামলা করা হয় আদালতে। মামলাটি বর্তমান সিআইডি তদন্ত করছে। মামলার সাক্ষী গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসেন।
‘এ কারণে তার ওপর ক্ষুব্ধ আসামিরা। তারাও ওই কলেজে চাকরি করেন। বহিরাগতদের ডেকে খাতা চুরি মামলার আসামি রকিবুল ইসলাম মিল্টনসহ অন্যরা তাকে চড়-থাপ্পড় মারেন।’
অধ্যক্ষ আরও বলেন, ‘কলেজের কাজে সহকারী অধ্যাপক মোশাররফ হোসেনকে সাময়িক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেয়া হয়। নন-এমপিও ৬১ নম্বর সিরিয়ালের জুনিয়র প্রভাষক সব্রত কুমার নন্দী ও খাতা চুরির মামলার আসামি সাবেক উপাধ্যক্ষ আব্দুল মজিদ মণ্ডল চুরির ঘটনা ধামাচাপা দিতে বহিরাগত, কলেজের স্টাফ সবুজ ও পিয়ন তাপসের সহায়তায় ত্রাস সৃষ্টিসহ মোশাররফ হোসেনকে লাঞ্ছিত করে।’
অভিযোগকারী শিক্ষক সাজ্জাদ হোসাইন বলেন, ‘এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার এসে শিক্ষক রুমের সবাইকে বের করে দেন। এরপর আমাকে শিবির করিস বলে থাপ্পড় মারেন। গ্রুপিং করিস কেন বলেই পরপর পাঁচ-ছয়টি থাপ্পড় মারেন। কিছু বুঝে ওঠার আগেই এমপি মারধর করেন।’
তিনি জানান, এমপি মারধরের আগে কিছু বহিরাগত দুষ্কৃতি তুই শিবির করিস বলে চড়-থাপ্পড় মারে। এতে তিনি কানে গুরুতর আঘাত পান।
এখন তিনি হাসপাতালে ভর্তি আছেন বলে জানান।
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘একটি ফাইল হাতিয়ে নিতে সুব্রত ও অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল মজিদ মণ্ডল আটকে রেখে অপমান-অপদস্ত, এমনকি মারধর করতে উদ্যত হন। এ ধরনের একটি সরকারি ডকুমেন্ট নিতে হলে কালীগঞ্জ ইউএনওর সম্মতি ছাড়া দিতে পারব না বলে তাদের সাফ জানিয়ে দিই।’
বিকেল পৌনে ৫টার দিকে আটক অবস্থা থেকে তারা ছেড়ে দেন বলে জানান মোশাররফ।
এ ব্যাপারে জানতে ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারকে কল করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
কালীগঞ্জ থানার ওসি আব্দুর রহিম মোল্লা জানান, কলেজের বিষয়টি তাকে কেউ জানায়নি। এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।
অধ্যক্ষ তাকে জানানোর পরও ব্যবস্থা নেয়া হয়নি- এমন প্রশ্নের জবাব না দিয়ে তিনি ফোন কেটে দেন।
মোবাইল ফোন রিসিভ না করায় অধ্যক্ষের অভিযোগ বিষয়ে এসপি মোমতাসিরুল ইসলামের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
নওগাঁয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় আব্দুল্লাহ আল মামুন নামে প্রশ্নফাঁস চক্রের সক্রিয় সদস্য ও পরীক্ষার্থীকে এক মাসের সাজা দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পরীক্ষা চলার সময় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. নাহারুল ইসলাম ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা প্রদান করেন। এর আগে জাতীয় গোয়েন্দো সংস্থার গোপন তথ্যের ভিত্তিতে মামুনকে আটক করা হয়।
দণ্ডপ্রাপ্ত মামুন জেলার পোরশা উপজেলার বিষ্ণপুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে।
ঘটনার সময় উপস্থিত ব্যক্তিদের বরাতে জানা গেছে, নওগাঁ শহরের জনকল্যাণ মডেল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই কেন্দ্রের ২১০ নম্বর কক্ষ থেকে মামুনকে আটক করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন, দুটি সিম ও একটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. নাহারুল ইসলাম বলেন, ‘আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রশ্নফাঁস চক্রের অন্য সদস্যদের সহযোগিতায় এসএমএসের মাধ্যমে সরবরাহ করা উত্তরপত্র দেখে পরীক্ষা দেয়ার জন্য হলে মোবাইল নিয়ে প্রবেশ করে। পরে তাকে আটক করা হয়। তার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি আইন ১৮৬০ এর ১৮৮ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়।’
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জানান, মামুনের পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া তাকে যারা উত্তরপত্র সরবরাহ করছিল তাদেরও আটকের চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য