জনসংখ্যার ভারসাম্য রক্ষা ও শ্রমিক সংকট কাটাতে প্রতি বছর বাইরের দেশ থেকে চার লাখ কর্মী নেবে জার্মানির নতুন জোট সরকার।
দেশটির ক্ষমতাসীন জোটের শরীক দল ফ্রি ডেমোক্র্যাটসের (এফডিপি) পার্লামেন্টারি নেতা ক্রিস্টিয়ান ডুয়ের এ ঘোষণা দিয়েছেন বলে শুক্রবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতি বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় প্রভাব ফেলেছে। সংকটের মুখোমুখি হয়েছে জার্মানিও। এমন প্রেক্ষাপটে শিল্পকারখানাসহ নানা ক্ষেত্রে উন্নয়নে বিদেশ থেকে কর্মী নেয়ার পদক্ষেপ নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
ক্রিস্টিয়ান ডুয়ের বলেন, ‘দক্ষ কর্মীর সংকট এতটাই মারাত্মক যে, আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থার নাটকীয়ভাবে অবনতি হচ্ছে।’
‘যতদ্রুত সম্ভব আমরা বিদেশ থেকে চার লাখ কর্মী আনার ব্যবস্থা নেব।’
কর্মীবান্ধব জার্মান ইকোনোমিক ইনস্টিটিউটের ধারণা, দেশে চলতি বছর তিন লাখের বেশি কর্মী সংকট হবে। এই মুহূর্তে যে সংখ্যক তরুণ কর্মী শ্রমবাজারে প্রবেশ করছেন তার তুলনায় অবসরে যাচ্ছেন অনেক বয়স্ক কর্মী।
কর্মী সংকটের এই ব্যবধান সাড়ে ছয় লাখ ছাড়িয়ে যাবে ২০২৯ সালে। ২০৩০ সালে ঘাটতি হবে প্রায় ৫০ লাখ মানুষের।
জার্মানিতে করোনা মহামারির মধ্যেও গত বছর কাজের সুযোগ তৈরি হয়েছে চার কোটি ৫০ লাখ মানুষের। কয়েক দশক ধরে কম জন্মহার এবং অসম অভিবাসন প্রক্রিয়া একানে কর্মী সংকটে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের হারকোর্ট শহরের একটি গির্জায় পদদলিত হয়ে ৩১ জন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।
সংবাদসংস্থা রয়টার্সে খবরে বলা হয়, শনিবার গির্জাটিতে খাবার নিয়ে গেলে হুড়োহুড়িতে এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
রিভার রাজ্যের পুলিশের মুখপাত্র ইরিঞ্জ কোকো জানান, সেখানে একটি গির্জায় কয়েক শ মানুষ খাবারের জন্য ভিড় করে। এক পর্যায়ে হুড়োগুড়িতে গির্জার গেট ভেঙে গেলে সেখানে পদদলিত হয়ে কমপক্ষে ৩১ জন নিহত হন।
তিনি আরও বলেন, ‘সেখানে আগে থেকেই শয়ে শয়ে লোকজন ভিড় করছিল। একটা সময় তারা অধৈর্য্য হয়ে পড়েন এবং ছুটতে শুরু করেন। তখনই পদদললেন ঘটনা ঘটে। পুলিশ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রেখেছে, সেই সঙ্গে ঘটনার তদন্তও শুরু করেছে।’
নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু বলেও জানান পুলিশের ওই কর্মকর্তা।
রাশিয়ার সঙ্গে সংঘাতের কারণে নিজেদের সার্বভৌমত্ব ‘সম্পূর্ণ ধ্বংসের’ মুখোমুখি হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ইউক্রেনের সাবেক প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ এই সাবেক কিয়েভ শাসক বলেন, ‘ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব ক্ষতির মুখে। সম্ভবত পোল্যান্ডের সঙ্গে একীভূত হতে চলেছে।’
‘চলমান অশান্তির শিকড় এবং দেশের সম্ভাব্য ভাগ্য সম্পর্কে আমি আমার চিন্তাভাবনা ভাগ করেছি। কিছু পশ্চিমা রাষ্ট্র কিয়েভ-মস্কো সম্পর্কে ছেদ ধরাতে ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে একটা প্রেক্ষাপট তৈরি করেছিল।
‘রাশিয়াকে দুর্বল করতে কিছু পশ্চিমা দেশ ইউক্রেনকে একটি অঞ্চল হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল। সুনির্দিষ্টভাবে একটি অঞ্চল, স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে নয়।
‘এই সংঘাত দেশের জন্য মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে। দক্ষিণ ও পূর্বের বিস্তীর্ণ অঞ্চল হারানোর পাশাপাশি সার্বভৌমত্ব ধ্বংসের ঝুঁকিতে আছে ইউক্রেন।’
হুমকিটি কেবল সামরিক সংঘাত প্রশ্নে নয়, দেশটির পশ্চিম প্রতিবেশী রাষ্ট্র পোল্যান্ডের সঙ্গে কিয়েভ শাসকদের সম্পর্ক আরও জোরদার আভাস মিলছে।
পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ ডুদা এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কি চলতি মাসের শুরুতে জানিয়েছিলেন, দুই দেশের মধ্যে ‘আর কোনো সীমান্ত থাকবে না’। সে সময় পোলিশ নাগরিকদের বিশেষ আইনি মর্যাদা দেয়ার পরিকল্পনার ঘোষণা দিয়েছিল কিয়েভ।
ইয়ানুকোভিচ সতর্ক করে বলেন, “সম্পর্ক জোরদার করলেই কথিত ‘ইউরোপীয় স্বপ্ন’ বাস্তব হবে না। বরং পোল্যান্ডের সঙ্গে ‘একত্রীকরণের’ হুমকি বাড়বে।”
রাশিয়ার জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম আরটির খবরে বলা হয়, ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রুশপন্থি অনেক। এই অঞ্চলগুলো রাশিয়া কেড়ে নিতে পারে আশঙ্কা ছিল আগেই। আর তাই জার্মানি এবং ফ্রান্সের মতো পশ্চিমা দালালরা ইউক্রেনের বিদ্রোহী অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোকে বিশেষ মর্যাদা দেয়ার নকশা করেছিল।
তবে পাশা পাল্টে যায় ইউক্রেনে রাশিয়ার আকস্মিক অভিযানে। মিনস্ক চুক্তির শর্তাবলি অমান্য করায় গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে ‘বিশেষ অভিযান’ শুরু করে রাশিয়া। ইউক্রেনের পূর্বের দুটি বিদ্রোহী অধ্যুষিত অঞ্চলকে স্বাধীন রাষ্ট্রের মর্যাদা দেয়ার কিছু পর কিয়েভ অভিযান শুরু হয়।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে গুলি করে শিক্ষার্থীদের হত্যার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার দেশটির আরেকটি অঙ্গরাজ্যে জনতার ওপর গুলি ছুড়েছে এক বন্দুকধারী। তবে সাধারণ মানুষ নয়, নাটকীয়ভাবে প্রাণ গেছে বন্দুকধারীরই।
ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার চার্লেস্টনে ওই ব্যক্তি যখন বেশ কিছু মানুষের ওপর গুলি ছোড়েন, তখন তার দিকে বন্দুক তাক করে গুলি ছোড়েন এক নারী। বেঁচে যায় বহু মানুষ। তবে হামলাকারী নিহত হন।
স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে শনিবার এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি। বাহিনীটির মুখপাত্র টনি হাজেলেট বলেন, ওই নারীর এমন দ্রুত সিদ্ধান্ত অনেক মানুষের জীবন বাঁচিয়েছে।
বন্দুকধারীর হামলায় টেক্সাসে সম্প্রতি একটি প্রাথমিক স্কুলে ১৯ শিশু শিক্ষার্থী ও ২ জন শিক্ষক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনার প্রেক্ষাপটে দেশজুড়ে আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া এসেছে।
বন্দুকের সহজপ্রাপ্যতাসহ বিভিন্ন কারণে যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলার ঘটনা প্রায়ই ঘটে থাকে। বার্তা সংস্থা সিএনএনের তথ্য মতে, দেশটির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চালানো এই বন্দুক হামলাটি চলতি বছরের ৩০তম হামলা।
২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে ফ্লোরিডার পার্কল্যান্ডের স্টোনম্যান ডগলাস হাই স্কুলে বন্দুকধারীর হামলায় নিহত হন ১৭ জন। ২০১২ সালের ডিসেম্বরে কানেকটিকাটের একটি এলিমেন্টারি স্কুলে বন্দুকধারীর হামলায় নিহত হন ২৬ জন।
বিবিসি বলছে, গত বুধবার সন্ধ্যায় বন্দুকধারী যখন দ্রুতগতিতে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিলেন তখন শিশুরা ওই এলাকায় খেলাধুলা করছিল। এ কারণে তাকে গতি কমাতে বলা হয়। একপর্যায়ে তিনি গাড়ি থেকে বন্দুক বের করে গুলি ছুড়তে শুরু করেন।
এ সময় বন্দুকধারীকে গুলি করে অন্যদের প্রাণ রক্ষা করেন একজন নারী। গোলাগুলির পর ঘটনাস্থল থেকে ৩৭ বছর বয়সী ডেনিশ বাটলারের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তার বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে।
বন্দুকধারীকে গুলি করে অন্যদের প্রাণ বাঁচানো নারীর পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি জানিয়ে পুলিশের মুখপাত্র টনি হাজেলেট বলেন, তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা হবে না।
তিনি বলেন, ওই নারী বৈধভাবেই তার অস্ত্র বহন করছিলেন। পালিয়ে না গিয়ে তিনি অন্যদের জীবন বাঁচিয়েছেন। তদন্তে পুলিশকে সহায়তা করছেন এ নারী।
আরও পড়ুন:নেদারল্যান্ডসে ফ্রান্সের দূতাবাসকর্মীদের জিম্মি করে রাখার ঘটনায় ২০ বছর পর কারামুক্ত হয়েছেন সশস্ত্র সংগঠন জাপানিজ রেড আর্মির সহপ্রতিষ্ঠাতা ফুসাকো শিগেনোবু।
টোকিওর পশ্চিমাঞ্চলীয় আকিশিমার কারাগার থেকে স্থানীয় সময় শনিবার মুক্তি পান তিনি।
কারাফটকে তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান মেয়ে মেই শিগেনোবু ও আইনজীবী।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়, অবরোধের ঘটনার পর দীর্ঘদিন পলাতক ছিলেন বর্তমানে ৭৬ বছর বয়সী ফুসাকো। ২০০০ সালে জাপানের ওসাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
উচ্চপর্যায়ের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বৈশ্বিক সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব চেয়েছিল তৎকালীন ত্রাস সৃষ্টিকারী সংগঠন জাপানিজ রেড আর্মি। তারা বেশ কিছু জিম্মি ও অপহরণের ঘটনা ঘটায়। পাশাপাশি ইসরায়েলের বিমানবন্দরে প্রাণঘাতী হামলাও চালায় সংগঠনটি।
ফিলিস্তিনিদের স্বাধিকার আন্দোলনে সমর্থন ছিল ফুসাকোর। তিন দশকের বেশি সময় মধ্যপ্রাচ্যে ছিলেন তিনি।
ফুসাকোর সংগঠনের তিন সদস্য ১৯৭৪ সালে নেদারল্যান্ডসের হেগে ফ্রান্সের দূতাবাসে হামলা চালায়। ওই সময় তারা ফ্রান্সের দূতসহ আরও কয়েকজন দূতাবাসকর্মীকে ১০০ ঘণ্টা জিম্মি রাখেন।
ফ্রান্স রেড আর্মির এক সদস্যকে মুক্তি দিলে এই জিম্মিদশার অবসান হয় এবং সংগঠনটির সদস্যরা বিমানে করে সিরিয়ায় চলে যায়।
ওই হামলায় ফুসাকো সরাসরি অংশ নেননি, তবে জাপানের একটি আদালত ২০০৬ সালে হামলায় তার সম্পৃক্ততা খুঁজে পায়।
হামলার সমন্বয়ে ফুসাকো সহায়তা করেছেন জানিয়ে আদালত তাকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেয়। যদিও বিচার শুরুর পাঁচ বছর আগেই জাপানিজ রেড আর্মি বিলুপ্ত করে দিয়ে ফুসাকো জানান, আইনি সীমায় থেকেই নতুন লড়াই শুরু করবেন তিনি।
বিলুপ্ত হওয়ার আগে রেড আর্মি সর্বশেষ ১৯৮৮ সালে ইতালিতে যুক্তরাষ্ট্রের একটি সামরিক ক্লাবে গাড়ি বোমা হামলা চালায়।
কারামুক্ত হওয়ার পর লক্ষ্য অর্জনে ‘নিরাপরাধ লোকজনের ক্ষতির জন্য’ দুঃখ প্রকাশ করেন ফুসাকো।
তাকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘অর্ধশতাব্দী আগের ঘটনা…আমরা লড়াইকে অগ্রাধিকার দিয়ে জিম্মি রাখার মতো কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নিরীহ লোকজনের ক্ষতি করেছি, যারা আমাদের কাছে অপরিচিত ছিল।’
এর আগে ১৯৭২ সালে ইসরায়েলের তেল আবিবের লোদ বিমানবন্দরে হামলায় ২৬ জন নিহতের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন রেড আর্মির সহপ্রতিষ্ঠাতা।
আরও পড়ুন:পারস্য উপসাগর থেকে গ্রিসের দুটি তেলবাহী ট্যাংকার আটক করেছে ইরান।
আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (আইজিআরসি) বরাতে শনিবার জানিয়েছে আল জাজিরা।
সম্প্রতি ইরানের ছয় লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল জব্দ করে যুক্তরাষ্ট্র। গ্রিসের উপকূলে একটি ট্যাংকার থেকে এই তেল জব্দ করা হয়।
পেগাস নামের ইরানের ট্যাংকারটি রাশিয়ার মালিকানাধীন; গ্রিস এটিকে আটক করে ইরান ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে দেয়া নিষেধাজ্ঞার অধীনে।
আইজিআরসির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আরব উপসাগরে গ্রিসের দুটি তেলবাহী জাহাজ আটক করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনের কারণে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
তবে ঠিক কোনো সীমা বা এর পেছনে স্পষ্ট কারণ কী তা নিয়ে কিছু জানানো হয়নি বিবৃতিতে।
গ্রিক সরকার ইরানি ট্যাংকার আটক করলে তেহরানে নিযুক্ত সে দেশের রাষ্ট্রদূত ডেকে প্রতিবাদ জানানো হয়। ট্যাংকারটিকে ছেড়ে দেয়ারও আহ্বান জানানো হয়।
তবে গ্রিস ইরানি তেল ট্যাংকারটির তেল অন্য একটি ট্যাংকারে স্থানান্তর করে তা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করেছে বলে সংবাদমাধ্যমে খবর এসেছে।
তেল জব্দের ঘটনায় গ্রিসের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছিল ইরান। এরই প্রেক্ষাপটে দুটি ট্যাংকার আটক করল তারা।
গ্রিসের পক্ষ থেকে দুটি তেলবাহী ট্যাংকার আটকের তথ্য নিশ্চিত করে বলা হয়েছে, ইরানের সঙ্গে এখনও এ নিয়ে কোনো যোগাযোগ হয়নি।
আরও পড়ুন:
দেশভাগে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার ৭৫ বছর পর ভারতীয় দুই ভাইয়ের সঙ্গে পুনর্মিলন হয়েছে পাকিস্তানি নারীর।
১৯৪৭ সালের পর গত মাসে তিন সহোদরের সাক্ষাৎ হয় বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
পাকিস্তানের কারতারপুর সাহিব গুরুদুয়ারায় এপ্রিলে দুই ভাই গুরমুখ সিং ও বালদেব সিংয়ের সঙ্গে দেখা হয় শিখ পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া মুসলিম নারী মমতাজ বিবির।
এ নিয়ে মমতাজের সহোদর গুরমুখ বিবিসিকে বলেন, ‘আমরা খুবই খুশি যে, জীবদ্দশায় আমাদের বোনের সঙ্গে দেখা করতে পেরেছি।’
১৯৪৭ সালে দেশভাগের ফলে ভারত ও পাকিস্তান আলাদা দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র হয়। ফলে যুদ্ধ ও দুর্ভিক্ষের বাইরে সবচেয়ে বড় বাস্তুচ্যুতির ঘটনা ঘটে।
সে সময় প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ শরণার্থী হয়। ধর্মীয় সহিংসতায় প্রাণ হারায় ৫ থেকে ১০ লাখ মানুষ।
এ সংঘাতের বলি হয় মমতাজ, গুরমুখদের পরিবারও। এ নিয়ে গুরমুখ সিং বলেন, ‘সহিংসতা আমাদেরও সর্বনাশ করে দিয়েছে।’
সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার মধ্যে গুরমুখ, মমতাজদের মা পাকিস্তানে খুন হন। এরপর তাদের বাবা পালা সিং পাকিস্তান ছেড়ে আশ্রয় নেন ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের পাতিয়ালা জেলায়।
মমতাজ কীভাবে পাকিস্তানে থেকে গেলেন সে বিষয়টি বিবিসিকে জানান তার দুই ভাইয়ের মধ্যে কনিষ্ঠ বালদেব সিং।
তিনি বলেন, ‘তিনি (তাদের বাবা) স্ত্রী নিহতের খবর পাওয়ার পর ভাবলেন তার মেয়েও খুনের শিকার হয়েছে। এরপর রীতি অনুযায়ী, শ্যালিকাকে বিয়ে করলেন তিনি।’
বিয়ের পর স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে ভারতে থাকা শুরু করেন পালা সিং। অন্যদিকে পাকিস্তানের এক মুসলিম দম্পতি খুঁজে পান তার মেয়ে মমতাজ বিবিকে।
ওই দম্পতি দত্তক নিয়ে বড় করেন মমতাজকে।
যেভাবে মিলল খোঁজ
তিন সহোদরের পুনর্মিলন নিয়ে বালদেব সিং বিবিসিকে বলেন, ‘প্রায় দুই বছর আগে আমাদের ছেলেরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফুফুর খোঁজ পায়।’
পাকিস্তান থেকে মমতাজও তার বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া পরিবারের সদস্যদের খুঁজছিলেন। তিনি পাকিস্তানি ইউটিউবার নাসির ধিলনের সঙ্গে কথা বলেন। নাসিরের চ্যানেল পাঞ্জাব লেহার দেশভাগে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া অনেক পরিবারকে আপনজন খুঁজে পেতে সাহায্য করেছে।
গুরমুখ সিং বলেন, পাকিস্তানে থাকা নারী তাদের বোন কি না, সে বিষয়টি নিশ্চিত হতে জন্মভিটা পাকিস্তানের শেখুপুরা জেলার গ্রামের এক দোকানদারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
‘তিনি (দোকানদার) মমতাজের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ করিয়ে দেন’, বলেন গুরমুখ।
তিনি জানান, মমতাজ তাদের বোন কি না, সে বিষয়ে শুরুতে সন্দেহ ছিল, যা পরবর্তী সময়ে কেটে যায়।
‘(আমাদের মধ্যে সন্দেহ ছিল) সে কি অন্য কেউ হতে পারে? কিন্তু ধীরে ধীরে আমরা শূন্যস্থান পূরণ করেছি, প্রমাণ পেয়েছি এবং প্রতিষ্ঠিত করেছি সে-ই আমাদের বোন, তখন আমাদের খুশি কে দেখে’, বলেন গুরমুখ।
তার ভাই বালদেব বলেন, ‘এর পর থেকে আমরা চেয়েছি যেকোনো মূল্যে তার সঙ্গে দেখা করতে, কিন্তু ভিসার একটি বিষয় ছিল।’
তিনি জানান, দুই দেশে থাকা পরিবারের সদস্যরা আলোচনা করে সাক্ষাতের স্থান হিসেবে নির্ধারণ করে কারতারপুর সাহিব গুরুদুয়ারাকে। এ গুরুদুয়ারাতেই সমাহিত করা হয়েছে শিখ ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা গুরু নানককে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২৪ এপ্রিল কারতারপুর সাহিব গুরুদুয়ারায় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে আসেন দুই ভাই। নিজ পরিবার নিয়ে আসেন মমতাজও।
এ বিষয়ে বালদেব সিং বলেন, ‘আমরা পরস্পরকে জড়িয়ে ধরে কেঁদেছি।’
সে সময়টাতে অতীতে ফিরে যাওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা আর বিচ্ছিন্ন হতে চাইনি।’
বালদেব আরও বলেন, ‘আমরা একে অপরকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম যে, আমরা যত দ্রুত সম্ভব ভিসা পাওয়ার চেষ্টা করব। ভিসা পেতে সে (মমতাজ) তার কাগজপত্র জমা দিয়েছে এবং আমরা আশা করছিলাম, সে দ্রুতই আমাদের সঙ্গে দেখা করতে আসবে।’
পাকিস্তানে মুসলিম হিসেবে বেড়ে উঠেছেন মমতাজ। সাক্ষাতের সময় বিষয়টি মেনে নিয়েছেন বলে জানান গুরমুখ সিং।
তিনি বলেন, ‘দেখা হওয়ার পর পর আমরা বাকি সবকিছু ভুলে গেছি।
‘আমাদের বোন মুসলিম তো কী হয়েছে? তার ধমনিতে একই রক্তধারা প্রবাহিত হয়েছে এবং সবকিছুর ঊর্ধ্বে এটাই আমাদের কাছে মুখ্য বিষয়।’
যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে সহায়তা পাঠানোর আগে বরং নিজ দেশের স্কুলের নিরাপত্তায় সরকারের অর্থ ব্যয় করা উচিত বলে মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।
টেক্সাসের হিউস্টনে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে চলমান ন্যাশনাল রাইফেল অ্যাসোসিয়েশনের (এনআরএ) সম্মেলনে স্থানীয় সময় শুক্রবার তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিবিসি জানিয়েছে, বন্দুকধারীর হামলায় টেক্সাসে সম্প্রতি একটি প্রাথমিক স্কুলে ১৯ শিশু শিক্ষার্থী ও ২ জন শিক্ষক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনার প্রেক্ষাপটে কথা বলেন ট্রাম্প।
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার সহায়তা পাঠাতে পারে, তবে এর আগে আমাদের শিশুদের নিরাপদ রাখতে যা যা করা দরকার তা করতে আমাদের সক্ষম হওয়া উচিত।’
ইরাক ও আফগানিস্তানের যুদ্ধ প্রসঙ্গ তুলে ট্রাম্প বলেন, ‘ইরাক-আফগানিস্তানে ট্রিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে। বিনিময়ে আমরা কিছুই পাইনি।’
যুক্তরাষ্ট্রের এই সাবেক প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘বিশ্বের কাছে নিজেদের একটা জাতি হিসেবে দেখানোর আগে, আমাদের দেশে নিজেদের সন্তানদের জন্য নিরাপদ স্কুল তৈরি করা উচিত।’
ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর হামলা শুরুর পর এখন পর্যন্ত দেশটিতে ৫৪ বিলিয়ন ডলার অর্থ সহায়তা পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আরও ৩১ বিলিয়ন ডলার পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
অস্ত্র নিয়ে কড়া আইনের বিপক্ষে মত দিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘শয়তানের বিরুদ্ধে লড়তে ভদ্র নাগরিকদের আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দেয়া উচিত।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য