করোনাভাইরাসের সংক্রমণে গোটা বিশ্ব বিপর্যস্ত। করোনাকে রুখতে চলছে নানা গবেষণা। একদল গবেষক এবার দাবি করেছেন, গাঁজার ভেতরে থাকা দুটি রাসায়নিক যৌগ করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে কাজ করে।
ওরেগন স্টেট ইউনিভার্সিটি এবং ওরেগন হেলথ অ্যান্ড সায়েন্সেস ইউনিভার্সিটির গবেষক দলটির গবেষণাপত্রটি আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সাময়িকী ‘জার্নাল অফ ন্যাচারাল প্রডাক্টস’-এ প্রকাশিত হয়েছে। এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভাইস ডটকম।
গাঁজায় থাকা ওই দুটি রাসায়নিক যৌগ প্রকৃতপক্ষে দুটি অ্যাসিড। একটির নাম ক্যানাবিগেরোলিক অ্যাসিড (সিবিজিএ) ও অন্যটি ক্যানাবিডায়োলিক অ্যাসিড (সিবিডিএ)।
গবেষকদের দাবি, গাঁজার এ দুটি যৌগকে ব্যবহার করে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে নতুন ওষুধ আবিষ্কার করা যেতে পারে।
তারা বলছেন, গাঁজার ওই দুটি যৌগ ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনের বিভিন্ন অংশকে দ্রুত অকার্যকর করে ফেলতে সক্ষম। এর ফলে করোনাভাইরাস শ্বাসতন্ত্রের কোষে ঢুকতে পারে না। এতে থমকে যায় করোনা সংক্রমণ।
তবে গাঁজা সেবন করলেই যে করোনার সংক্রমণ ঘটবে না, তা কিন্তু নয়। গবেষকরা বলছেন, করোনার টিকার সঙ্গে সিবিজিএ ও সিবিডিএ যৌগ দুটি মিলিয়ে চিকিৎসা করা গেলে এটি বেশি কার্যকর হতে পারে।
ওরেগন স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও গবেষক দলের সদস্য রিচার্ড ব্রিমেন বলেন, ‘গাঁজায় যে দুটি যৌগকে আমরা করোনা সংক্রমণ রুখে দিতে দেখেছি, দীর্ঘদিন ধরেই সেগুলো অন্য চিকিৎসায় ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে এই দুটি যৌগ যে করোনার সংক্রমণও রুখে দিতে পারে, তা এই প্রথম জানা গেল।’
রিচার্ড ব্রিমেনের দাবি, করোনাভাইরাসের আলফা ও বিটা ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে গাঁজার যৌগ দুটি সমানভাবে কার্যকর।
এই দুটি অ্যাসিডের মাধ্যমে করোনা প্রতিরোধে নতুন ওষুধ আবিষ্কার করা সম্ভব বলে জানান রিচার্ড ব্রিমেন। তবে এ বিষয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন।
করোনার নতুন নতুন ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধেও গাঁজায় থাকা দুটি অ্যাসিড কার্যকর হবে বলে আশাবাদী এই গবেষক।
আরও পড়ুন:দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি। এ নিয়ে টানা ২৭ দিন মৃত্যুশূন্য দেশ। এ সময়ে করোনা শনাক্ত হয়েছেন আরও ৩২ জন। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগেই ২৯ জন।
মঙ্গলবার বিকেলে বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এর আগে সর্বশেষ গত ২০ এপ্রিল এক জনের মৃত্যুর খবর এসেছিল।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নতুন করে এক দিনে কোনো মৃত্যু না থাকায় মৃতের সংখ্যা ২৯ হাজার ১২৭ জনে রয়ে গেছে।
সব মিলিয়ে করোনা শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ৫৩ হাজার ৮১। নতুন করে করোনা শনাক্তদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ২৯ জন। এ ছাড়া চট্টগ্রাম, ঠাকুরগাঁও ও সিলেটে এক জন করে নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৪ হাজার ২৯০টি নমুনা পরীক্ষায় ৩২ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। পরীক্ষা বিবেচনায় রোগী শনাক্তের নতুন হার শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ। গতকাল এই হার ছিল শূন্য দশমিক ৭৭ শতাংশ।
সরকারি হিসাবে গত এক দিনে সুস্থ হয়েছেন আরও ২৫৮ জন। এ পর্যন্ত ১৮ লাখ ৯৯ হাজার ৮৯৭ জন সুস্থ হয়ে উঠলেন।
২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনার সংক্রমণ ধরা পড়ে। ধীরে ধীরে সংক্রমণ বাড়তে থাকে। প্রথম ঢেউ নিয়ন্ত্রণে আসে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে।
একই বছরের মার্চে ডেল্টা ধরনে ভর করে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসে। এ পর্যায়ে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হয় গত জুলাইয়ে। সংক্রমণ এতটাই বেড়ে যায় যে শনাক্তের হার ৩৩ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়।
দেশে করোনার ওমিক্রন ধরন শনাক্ত হয় গত বছরের ১১ ডিসেম্বর। এরপর দ্রুতগতিতে বাড়তে থাকে সংক্রমণ। ২০ জানুয়ারি করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে প্রবেশ করে দেশ। ২৮ জানুয়ারি করোনা শনাক্তের হার ৩৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ দাঁড়ায়, যা দেশে করোনা সংক্রমণ ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি। তবে তৃতীয় ঢেউয়ে মৃত্যু ছিল তুলনামূলক কম। এই ঢেউ নিয়ন্ত্রণেও আসে তুলনামূলক দ্রুত।
আরও পড়ুন:করোনা মহামারির মধ্যে দেশে উচ্চ রক্তচাপের রোগী বেড়েই চলেছে। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যারা মারা গেছেন তাদের অর্ধেকের বেশি উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ছিলেন।
উদ্বেগের আরও একটি বিষয় উঠে এসেছে একটি জরিপে যে, এই রোগে আক্রান্তদের আজীবন ওষুধ সেবন করতে হলেও আক্রান্তের ৩১ শতাংশ রোগীই মাঝপথে এসে ওষুধ সেবন বন্ধ করে দিচ্ছেন।
সম্প্রতি ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্স ইনস্টিটিউট এই জরিপ চালিয়েছে। মাঝপথে ওষুধ সেবন বন্ধ রাখছেন- এমন সাড়ে ৬ হাজার রোগীর সাক্ষাৎকার নিয়েছে তারা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও প্রতিষ্ঠানটির তথ্য বলছে, বর্তমানে দেশের ৫ শতাংশ মানুষ অসংক্রামক এ রোগে ভুগছেন। এই রোগে আক্রান্তে ঝুঁকিতে রয়েছেন ২১ শতাংশ।
যারা আক্রান্ত তাদের একটি বড় অংশ নিয়মিত ওষুধ সেবন করে না। রোগীর সেবা ও ওষুধ নিশ্চিতে সরকারের উদ্যোগে ৮০টি উপজেলায় এই রোগের ওষুধ বিনা মূল্যে দেয়া হচ্ছে। তবে ৩১ শতাংশ রোগী নিয়মিত ওষুধ নিতে আসেন না।
কারণ জানতে সাড়ে ৬ হাজার রোগীকে ফোন করা হয়। ৮০ শতাংশের উত্তর ছিল টাকার অভাব ও দূরত্বের কারণে জেলা শহরে এসে এই রোগের বিনা মূল্যে দেয়া ওষুধও গ্রহণ করছেন না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাঝপথে ওষুধ সেবন বন্ধ করে দেয়ায় মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ছে। একই সঙ্গে হৃদরোগ, স্ট্রোক ও কিডনি রোগে আক্রান্তের ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। এখনই এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।
আরও উদ্বেগের বিষয় আক্রান্তের ৫০ শতাংশ মানুষ জানেনই না তিনি উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত। আবার অসচেতনতার কারণে অনেকে আক্রান্ত হচ্ছেন।
এমন পরিস্থিতিতে রোগটি সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়াতে সারা বিশ্বের মতো আজ বাংলাদেশে বিশ্ব উচ্চ রক্তচাপ দিবস পালিত হচ্ছে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘মেজার ইয়োর ব্লাড প্রেশার অ্যাকিউরেটলি, কন্ট্রোল ইট, লিভ লঙ্গার। অর্থাৎ উচ্চ রক্তচাপ: সঠিকভাবে পরিমাপ করুন, নিয়ন্ত্রণে রাখুন, দীর্ঘদিন বাঁচুন।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, দেশে প্রতি পাঁচজনে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন। এই রোগ অসংক্রামক রোগের প্রকোপ ক্রমে বাড়িয়ে তুলছে। এটি নিয়ন্ত্রণে সরকারি উদ্যোগে উপজেলা পর্যায়ে বিনা মূল্যে ওষুধ সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রাথমিক পর্যায়ে ৮০টি উপজেলায় বিনা মূল্যে এই ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে। আগামী বছরের মধ্যে ২০০ উপজেলায় এবং ২০২৪ সালে ৪০০ উপজেলায় এর আওতা বাড়ানো হবে। প্রথম পর্যায়ে উপজেলায় দেয়া হলেও ভবিষ্যতে প্রান্তিক পর্যায়ে কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে ওষুধ সরবরাহ করা হবে।
করোনায় আক্রান্তের ৪০ শতাংশ উচ্চ রক্তচাপের রোগী
সারা দেশে সাড়ে ১৯ লাখ মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছে বেশির ভাগেরই শরীরে আগে থেকে অন্য রোগ ছিল। এর ৪০ শতাংশই উচ্চ রক্তচাপের রোগী ছিলেন বলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কভিড-১৯ সম্পর্কিত টেলিহেলথ সেন্টার মাধ্যমে এই তথ্য জানানো হয়।
টেলিহেলথ সেন্টারের তথ্যানুযায়ী, বাকি ডায়াবেটিসে, অ্যাজমা, হার্টের সমস্যা, কিডনির সমস্যায় ভুগছেন। করোনা আক্রান্তদের মধ্যে যাদের অন্য রোগ বা কো-মরবিডিটি ছিলেন তারাই বেশি মারা গেছেন।
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্স ইনস্টিটিউটের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির প্রোগ্রাম ম্যানেজার মাহফুজুর রহমান ভূঁইয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ বিনামূল্য দিলেও নিয়মিত এই ওষুধ নিতে যাচ্ছেন না রোগীরা। এ বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে এই রোগ শনাক্ত হলে প্রতিরোধ করা সম্ভব। এই কারণে নিজ উদ্যোগে ১৮ বছর বয়স হলে বছর দুই-একবার পরীক্ষা করতে হবে। শনাক্ত হলে নিয়ম মেনে জীবনযাপন করতে হবে। মোবাইলে আসক্ত না হলে কায়িক পরিশ্রম করতে হবে।’
শিশুরাও উচ্চ রক্তচাপের রোগী
বেসরকারি সংস্থা প্রজ্ঞার ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার শামীম জোয়ার্দ্দার বলেন, ‘আগে শুধু এই রোগটি বয়স্ক মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হলেও সম্প্রতি শিশুদের মধ্যেও এই রোগের প্রকোপ দেখা দিচ্ছে। সম্প্রতি ১৫ বছরের একটি শিশু ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের চিকিৎসা নেয়ার জন্য এসেছে। তাই এখন থেকে এটি প্রতিরোধে জোর দিতে হবে। তাই ১৮ বছর বয়স হলে প্রতিনিয়ত ব্লাড পেশার মাপবেন। ছয় মাস এক বছরের মধ্যে একবার মাপলে হবে না।’
বাইপোলার ডিজঅর্ডার বিশেষ এক মানসিক সমস্যা। পূর্ণবয়স্ক মানুষের তিন শতাংশ এ সমস্যায় ভোগেন। যৌন জীবনের ওপরেও প্রভাব ফেলে বাইপোলার ডিজঅর্ডার।
এ ধরনের সমস্যার বেশ কয়েকটি দৃশ্যমান ধরন রয়েছে। তবে সাধারণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে হুট করে মেজাজ পরিবর্তন ও বিষণ্নতা বা উন্মত্ত আচরণ। বিষণ্নতার সময় ইচ্ছা থাকার পরেও অনেকে কামশক্তি, যৌনতার অনুপ্রেরণা ও উত্তেজিত হওয়া বা আনন্দ অনুভব করা এবং অর্গাজমের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন। বিপরীতে ম্যানিয়া বা উন্মত্ততার সময় অনেকে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি মাত্রায় ও বেশি সময় ধরে যৌনতা চান।
স্বাভাবিক অবস্থায় তারা যেটা করতে চান না ম্যানিয়ার সময় সে যৌনতা নিয়েও তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষায় আগ্রহী হতে পারেন। এ সময়ে খুব কম ব্যক্তি সম্পূর্ণ সন্তুষ্টি লাভ করেন। বাইপোলার ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত অনেকে উন্মত্ততার অধ্যায় পার হওয়ার পর সক্রিয় যৌনতার জন্য অনুশোচনাও বোধ করেন।
বাইপোলার ডিজঅর্ডারের ধরন ও এর লক্ষণের ধারাবাহিকতা, সময়কাল ও তীব্রতা একেকজনের ক্ষেত্রে একেক রকম। প্রায় ক্ষেত্রে এগুলো সময়ের সঙ্গে পরিবর্তিত হয়। বেশির ভাগ ব্যক্তির মেজাজের পরিবর্তন কোনো ধারাবাহিক ছন্দ অনুসরণ করে না। যেমন, ম্যানিয়ার আগে তাদের বিষণ্নতার একাধিক পর্ব থাকতে পারে। প্রতিটি পর্বের সময়সীমাও আলাদা। কেউ কেউ এক পর্ব থেকে আরেক পর্বে যাওয়ার সময় মাঝামাঝি একটি অবস্থানে আসেন। অন্যদের ক্ষেত্রে সেটি নাও ঘটতে পারে।
হাই এনার্জির পাশাপাশি শূন্যতার অনুভূতির মতো বিষণ্নতা ও ম্যানিয়ার মিশ্র পর্ব থাকাও সম্ভব। এ কারণে বেশির ভাগ মানুষের পক্ষে বাইপোলার ডিজঅর্ডারের লক্ষণের পূর্বাভাস দেয়া বা হিসাব রাখা বেশ কঠিন। এ জন্য প্রায়ই তাদের ক্ষেত্রে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়ে।
কোন বিষয়গুলো মেজাজ পরিবর্তনে অনুঘটক হিসেবে কাজ করে, কী করে পরিবর্তনগুলো আগে থেকে চিহ্নিত করা যায় সে বিষয়ে বাইপোলার ডিজঅর্ডারে ভোগা ব্যক্তিদের পরামর্শ দেন মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তবে বাইপোলার ডিজঅর্ডার ও যৌন সম্পর্কের ওপর প্রভাব নিয়ে খুব বেশি গবেষণা হয়নি। ফলে মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বিষয়টিকে এড়িয়ে যেতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।
অধিকাংশ সময়ে উপসর্গ নিয়ন্ত্রণে প্রধান ভূমিকা পালন করে ওষুধ। তবে অনেক ওষুধ রোগীর যৌন জীবনকেও প্রভাবিত করে। তাদের কাম বা আনন্দ ও অর্গাজম অনুভবের ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। যৌন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তৈরিতে এসব ওষুধের প্রভাব জানা থাকলেও তা দূর করতে খুব বেশি গবেষণা হয়নি।
বাইপোলার ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত কয়েকজন সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এ বিষয়ক সচেতনতা বাড়াতে কাজ করছেন। এ-সংক্রান্ত আলোচনা উৎসাহিত করতে নিজেদের যৌনতার অভিজ্ঞতাও প্রকাশ করতে শুরু করেছেন। এমন এক নারী কেসি ও তার সঙ্গী ক্যামেরনের সঙ্গে কথা বলেছে কারেন্ট অ্যাফেয়ার্সভিত্তিক সাইট ভাইস। কেসি কিশোর বয়সেই টাইপ ওয়ান বাইপোলার ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত হন। এরপর থেকে সচেতনভাবেই সমস্যাটির মোকাবিলা করছেন তিনি। কেসি ও ক্যামেরনের আলাপচারিতা বাংলায় ভাষান্তর করেছেন রুবাইদ ইফতেখার।
কেসি: অল্প বয়সেই আমার মধ্যে লক্ষণ দেখা দিয়েছিল। তবে হাইস্কুলে যাওয়ার সময় আমি নিজে ও আমার মা সেটা লক্ষ করি। এখন জানি, আমি তখন হাইপোম্যানিয়ায় আক্রান্ত ছিলাম। হাইপোম্যানিয়া হচ্ছে কিছুটা মৃদু ধরনের ম্যানিয়া। টানা কয়েক সপ্তাহ ঘুম কম হতো, মাথায় একের পর এক আইডিয়া আসত। তবে কোনো কাজ শুরু করে আর শেষ করতাম না। ম্যানিয়া শেষ হয়ে গেলে, আমার সব শক্তি নিঃশেষ হয়ে আসত, আমি বিধ্বস্ত বোধ করতাম। মানুষজনের সঙ্গে কথা বলতে ভালো লাগত না। আমার জটিলতার গ্রেড এ থেকে ডি ও এফ-এ নেমে গিয়েছিল।
আমরা আর্থিকভাবে অসচ্ছল ছিলাম, রোগটি সম্পর্কেও জানাশোনার অভাব ছিল। পরিবারের ধারণা ছিল, আমি কিশোর বয়সের হরমোনজনিত সমস্যায় ভুগছি। যদিও আমার আচরণ সাধারণ কিশোর-কিশোরীর মতো ছিল না।
বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার পর লক্ষণগুলো আবারও প্রকাশ পেতে শুরু করে। একদিন ক্লাসে যাওয়ার সময় আমি ম্যানিয়ার একটি বড় ধাক্কা অনুভব করতে শুরু করি। চারদিকের সবকিছু আমার পরিচিত, অথচ বিল্ডিংগুলো ঠিক মনে হচ্ছিল না। মনে হচ্ছিল পৃথিবী গলে যাচ্ছে। আমার মনে একের পর এক চিন্তা আসছিল। এক পর্যায়ে আজেবাজে বকতে শুরু করি। লোকে ভাবছিল আমি নেশা করেছি। এরপর কয়েকজন বন্ধু থেরাপিস্টের কাছে নিয়ে যায়। এর মাধ্যমেই শুরু হয় চিকিৎসা। সেই প্রথম জানতে পারি, আমার বাইপোলার ডিজঅর্ডার রয়েছে।
এখন যে ওষুধ খাচ্ছি সেগুলো বেশ কার্যকর। বহু বছর ধরে থেরাপি নিচ্ছি। এমন ওষুধও খেয়েছি যেগুলোর কারণে আমার যৌন চাহিদা প্রায় ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। আক্ষরিকভাবেই কোনো কামনা অনুভব করতাম না। বর্তমান ওষুধের ক্ষেত্রে তেমনটা হচ্ছে না। আমাকে এখনও হাইপোম্যানিক ও বিষণ্নতার অধ্যায়গুলোর মধ্য দিয়ে যেতে হয়। থেরাপিস্ট বলেছেন, বাকি জীবন আমাকে এ অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়েই যেতে হবে। কারণ ওষুধের ডোজ বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আমি অনুভূতিশূন্য হয়ে পড়ি।
আমার পরিবার বাইপোলার ডিজঅর্ডারের চিকিৎসার বিষয়ে খুবই সহায়তা করেছে। অন্য যেকোনো স্বাস্থ্যগত সমস্যা যেমন হাঁপানি বা এ-জাতীয় কিছু যেভাবে চিকিৎসার মাধ্যমে সমাধান করা দরকার, এটিকেও তারা সেভাবে সমাধানের চেষ্টা করেছে।
একপর্যায়ে আমি এমন একজনের সঙ্গে ডেট শুরু করি যার আচরণ ছিল সহিংস। সে আমাকে আমার বাইপোলার ডিজঅর্ডার নিয়ে লজ্জা দিয়েছে। সে বলত, আমি খুব সমস্যাজনক এবং আমাকে কেউ সত্যিই ভালোবাসতে পারবে না।
ও আমার বিষণ্নতা ও ম্যানিয়াকে নিজের সুবিধার জন্যও ব্যবহার করেছে। ছেলেটি জানত, যখন আমি হাইপোম্যানিক থাকি তখন এমন সব ঝুঁকি নিতে পারি, যা অন্য সময় অসম্ভব। সে আমার সঙ্গে প্রচুর যৌন সম্পর্ক করেছে, স্বাভাবিক থাকলে আমি হয়তো তাতে সম্মতি দিতাম না। আমার বিষণ্ণতা নিয়ে সে আমাকে অপরাধবোধে ভোগাত এবং সেক্স করতে চাপ দিত, যেটা আমি আসলে চাইতাম না।
থেরাপিস্টরা বাইপোলার ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত রোগীদের সঙ্গে যৌনতা নিয়ে খুব কম কথা বলেন। যখন তারা বলেন তখন শুধু ঝুঁকির ওপর জোর দেন। যেমন, যদি হাইপোম্যানিক হন এবং ওষুধ না খান তাহলে আপনার কনডম ব্যবহার না করার সম্ভাবনা বেশি। আর তাতে আপনার যৌনবাহিত রোগ বেশি হতে পারে কিংবা নিজের বিপদ ডেকে আনতে পারেন, এমনকি অপমানিত হতে পারেন।
এটি অনেকটা ভয় দেখানোর কৌশলের মতো। তারা বলতে চান ওষুধ না খেলে এবং নিয়ম না মানলে আপনি যৌনরোগে আক্রান্ত হবেন। তারা অধিকাংশ সময়ে বাইপোলার ডিজঅর্ডার সত্ত্বেও সম্মতিমূলক সুস্থ যৌন সম্পর্ক বজায় রাখার পদ্ধতি নিয়ে কথা বলেন না।
ক্যামেরনের সঙ্গে সম্পর্কের আগে আমি এ বিষয়টি পুরোপুরি বুঝে উঠতে পারিনি। তার সঙ্গে এমন একটি সুস্থ সম্পর্কের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি যে আমার মধ্যে মর্যাদাবোধ ও ভেবেচিন্তে সম্মতি দেয়ার ধারণা তৈরি করেছে।
ক্যামেরন: আমাদের দেখা হয় বাম্বলে (ডেটিং অ্যাপ)। আমরা কয়েক দিন কথা বলি ও দেখা করি। দুজনের পছন্দের একটি ভিডিও গেম-বারে আমরা দেখা করি এবং শুরুতেই একে অপরকে পছন্দ করে ফেলি।
কেসি: কোভিড মহামারির সময়ে লকডাউনে এলাকার সবকিছু বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগের দিন আমাদের প্রথম ডেট ছিল। আমি যে প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করি তারা ফান্ডিং হারায় এবং আমাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে। ক্যামেরনের প্রতিষ্ঠানও বন্ধ হয়ে যায়।
আমি একা থাকতাম। তবে আমি জানতাম, ওই সময়ে একা থাকাটা আমার মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ভালো হবে না। ক্যামেরন এমন একজনের সঙ্গে থাকত, যার সঙ্গী সব সময় তাদের বাসায় আসত। মহামারির তিন সপ্তাহের মাথায় আমরা একসঙ্গে কোয়ারেন্টিনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। আমি একসঙ্গে থাকতে শুরু করলেও, ক্যামেরনকে আমার বাইপোলার ডিজঅর্ডার সম্বন্ধে জানাইনি। আগের সম্পর্কের ক্ষত আমাকে ভীত করে রেখেছিল।
ক্যামেরনের সঙ্গে থাকাটা কিছুটা ভয়েরও ছিল। কারণ এর আগে আমি যতজনের সঙ্গে ডেট করেছি, তাদের অধিকাংশই ছিলেন সমাজসেবাকর্মী ও মনোবিজ্ঞানে পড়াশোনা করা। তারা বাইপোলার ডিজঅর্ডার সম্বন্ধে জানতেন।
ক্যামেরন: দীর্ঘদিন বিষণ্ণতায় ভুগেছে এমন ব্যক্তিদের আমি চিনতাম। তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য কী ধরনের সাহায্য ও স্বাধীনতা প্রয়োজন সেটাও জানতাম। তবে কেসির সঙ্গে পরিচয় হওয়ার আগে বাইপোলার ডিজঅর্ডার নিয়ে তেমন কিছু জানা ছিল না।
কেসি: আমার চিন্তা ছিল, ‘ধুর এই মেয়েকে নিয়ে যথেষ্ট হয়েছে’ বলে ও চলে যায় কি না!
ক্যামেরন: আমার জননাঙ্গে হার্পিস হয়েছে। বিষয়টি আগে সঙ্গীদের বলতে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগতাম। তবে আমার মতে প্রকাশ করাটা গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাপারটা এমন যে, তুমি এটা মেনে নিতে না পারলে আমাদের সম্পর্ক টিকবে না। কেসির সঙ্গে একসঙ্গে বসবাস ও প্রথম যৌন সম্পর্কের আগে আমি ওকে হার্পিসের কথা বলেছি।
কেসি: ও আমার সঙ্গে গোপনে এ বিষয়টি শেয়ার করার পর আমি অনুভব করি, ওকেও আমি নিজের কথা বলতে পারি। প্রায় দুই বা তিন সপ্তাহ পরে ওকে আমার বাইপোলার ডিজঅর্ডারের কথা খুলে বলি। আমি খুব নার্ভাস ছিলাম, তাই সেই কথোপকথনের খুব বেশি কিছু মনে নেই। একসঙ্গে থাকা শুরুর আগে তাকে বিষয়টি খুলে না বলার কারণে আমার মধ্যে অপরাধবোধ কাজ করছিল। আমার মনে আছে ওকে বলার সময় চোখের সামনে সবকিছু ঘোলা হয়ে এসেছিল। ‘আমার বাইপোলার ডিজঅর্ডার আছে’- এটা বলেই আমি রুম থেকে ছুটে বেরিয়ে গিয়েছিলাম।
ক্যামেরন: আমার স্মৃতিটা একটু ভিন্ন। মনে আছে, তুমি (কেসি) হালকাভাবে একদিন বলেছিলে, ‘ও হ্যাঁ আরেকটা ব্যাপার, আমি বাইপোলার...’। এরপর যা করছিলে সেটাই করতে থাকলে। আমি এরপর কয়েকটি প্রশ্ন করেছি। যেমন, কখন রোগ ধরা পড়েছে, ওষুধ খাচ্ছ কি না, কোনো লক্ষণে আছি কি না। আমি মনে করেছিলাম, বিষয়টি যদি আমাদের জীবনের একটি অংশ হয় তাহলে বাইপোলার ডিজঅর্ডার সম্পর্কে আরও ভালো করে জানতে চাই। তবে শুরুর আলোচনায় আমি অনেক কিছু জানাতে তোমাকে চাপ দিইনি।
কেসি: বিষয়টি হাস্যকর শোনাতে পারে, কিন্তু ওই সময় আমার একটা বিড়াল খুব অল্প বয়সে হুট করে মারা যায়। এতে আমি বিষণ্ণতায় ভুগতে শুরু করি। অবশ্য এতে করে ক্যামেরন সম্পর্কের শুরুতেই পুরো বিষয়টি দেখার একটা সুযোগ পেয়ে যায়। আমি জানি বিষয়টি ওর জন্য খুব কঠিন ছিল।
ক্যামেরন: ক্যাসি আমাকে তার আগের নিপীড়নের কথা জানিয়েছিল। সম্পর্কের প্রথম দিন থেকে আমি জানতাম, বাহ্যিক জিনিসগুলো তাকে প্রভাবিত করতে পারে। এমনও সময় আসতে পারে যখন ঘনিষ্ঠ হওয়া সম্ভব নয়। তবে ওই সময়গুলো আমার বা আমাদের সম্পর্কের প্রতিফলন নয়। কখনও কখনও যৌন ঘনিষ্ঠতা ছাড়াই আমাদের সবার সময় ও নিজস্ব জায়গা প্রয়োজন। যৌনতা আরও আনন্দের হয় যখন সবাই সহজ থাকে। আমি কখনই চাই না, কেউ মনে করুক সে যৌন সম্পর্কে যেতে বাধ্য।
কেসি: ছয় মাস পর বুঝতে পারি, এর আগের সম্পর্কগুলোতে আমি সাধারণত যতবার যৌন সম্পর্ক করেছি এখন ততটা হচ্ছে না। আমি নিজের সঙ্গে কথা চালিয়ে যাই এবং বোঝার চেষ্টা করি কেন এমন হচ্ছে। আমার ধারণা ছিল নতুন জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির কারণে আমার কামনা কমে গেছে অথবা আমি হয়তো মহামারি-সংক্রান্ত স্ট্রেসে ভুগছি। তবে পরে বুঝলাম, যখন কোনো সঙ্গী আমার সীমানাকে শ্রদ্ধা করে তখন এটিই স্বাভাবিক।
একটি স্বাস্থ্যকর সম্পর্কের মধ্যে থাকায় আমার নতুন উপলব্ধি হয়েছে। একটি অস্থির সম্পর্কের ক্ষেত্রে আমি নিজেকে ‘ভালো বাইপোলার ব্যক্তি’, ‘পাগল বা সারাক্ষণ বিষণ্ণ নই’ এমন ভাবতে থাকার চাপ অনুভব করেছি। ফলে সেটা আমার নিজের আবেগকে লুকিয়ে রাখতে বাধ্য করেছে। এ অবস্থা যৌনতা ও ঘনিষ্ঠতার সময় নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দেয়া, সত্যিই দুর্বল হওয়া ও সঙ্গীর সঙ্গে খোলামেলা হওয়ার বিষয়টিকে কঠিন করে তোলে।
ক্যামেরন: আমি এখানে কেসির তথ্য উন্মোচন করতে আসিনি। আমি ওকে প্রশ্ন করি এবং পাশে থাকার চেষ্টা করি। এমন একটি অবস্থা তৈরির চেষ্টা করি যেখানে ও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবে। সে যা বলবে সেটা আমি গ্রহণ করে নিতে প্রস্তুত থাকি।
কেসি: আমি যখন একেবারে নিঁখুত আচরণের ভাব করি সেটা ক্যামেরন লক্ষ করে। সে আমার দেহের ভাষা পড়তে শিখেছে এবং জানতে শিখেছে কখন তার সরে যাওয়া উচিত। আমরা যত বেশি সেক্স করি, ততই নিজেকে খুঁজে পেতে ও ছেড়ে দিতে এবং উন্মুক্ত হওয়ার বিষয়ে আরও ভালোভাবে শিখতে পারছি।
ক্যামেরন: কেসি কেমন আছে সেটা বোঝার জন্য ওর দেহের ভাষা পড়ার চেষ্টা করি। সে কেমন আছে এবং কখন সেক্স করতে পারে বা করবে না বুঝতে চাই। আমি ঠাট্টার ছলে সব কিছু হালকা করি। যৌনতার ক্ষেত্রে আমি প্রায়ই বলি (একটি নকল কোমল কণ্ঠে), ‘এই তুমি কেমন আছ? আজ রাতে কি একটু সেক্সি টাইম কাটানো যায়?’
কেসি: (হাসি)
ক্যামেরন: ও সেক্স করতে চাইছে কি না বিষয়টি পরিষ্কার থাকে। সে হয় সাড়া দেয় বা দেয় না।
কেসি: আমি আসলে একেবারেই এ বিষয়ে পরিষ্কার। হয় আমি করতে চাই অথবা চাই না।
ক্যামেরন: আমি আগে যৌনতায় আরও ইতিবাচক ও স্বতঃস্ফূর্ত ছিলাম। এমন সঙ্গীদের সঙ্গে ছিলাম যারা চাইত আমি তাদের দেয়ালের সঙ্গে ধাক্কা দিয়ে চুম্বন করি। তবে এখনকার এই সম্পর্কের ক্ষেত্রে আমার ঝুলি থেকে আকস্মিক শারীরিক ঘনিষ্ঠতার বিষয়টি সরিয়ে নিয়েছি।
কেসি: আসলে আকস্মিক শারীরিক সংযোগের বিষয়টি আমার ভালো লাগে না। বন্ধুরা জানে, আমি জড়িয়ে ধরা পছন্দ করি না। ক্যামেরনের পরিবারের সবাই আবার জড়িয়ে ধরতে খুব পছন্দ করে। তবে ক্যামেরনের ক্ষেত্রে যে ব্যাপারটা ভালো তা হচ্ছে, ও জিজ্ঞেস করে, ‘আমি যদি তোমাকে জড়িয়ে ধরি সেটা কি তোমার ভালো লাগবে?’ বা ‘আমি তোমার পায়ের ওপর আমার পা উঠিয়ে দিই?’
বন্ধুরা খুব শক্তভাবে আমাকে সমর্থন করে। ওদের বেশির ভাগ সামাজকর্মী। আমি কখন হাইপোম্যানিক সেটা বুঝতে ওরা আমাকে সাহায্য করে। তারা বুঝতে সাহায্য করে, আসলেই কি আমি এতটা যৌনতা চাই, নাকি বাইপোলার ম্যানিয়া আমার মস্তিষ্ককে চালিত করার কারণে এটা ঘটছে?
ক্যামেরন যখন আশপাশে থাকে তখন আমি ও আমার বন্ধুরা প্রায়ই আলোচনা করি। এতে আসলেই অনেক লাভ হয়। ক্যামেরন জানে, কখনও কোনো বিষয়ে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়লে ও আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের ফোন করতে পারবে। তাদের বলতে পারবে, ‘আরে, কেসি সত্যিই এখন অনেক প্রাণবন্ত হয়ে আমার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে! আমি জানি না এই মুহূর্তে তার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করার উপযুক্ত সময় কি না।’
ক্যামেরন: আমরা আমাদের যৌনজীবন নিয়ে সব সময় অন্য মানুষের সঙ্গে কথা বলি না। তবে কাছের বন্ধুদের একটা সার্কেল থাকা উচিত, যারা জানে কী ঘটনা ঘটছে। যাদের ফোন করলে আসলেই অনেক সাহায্য পাওয়া যাবে।
কেসি: আমি কিছুটা হাইপোম্যানিক বোধ করলে এবং যতটা যৌনতা চাচ্ছি সেটা আমার আসল চাহিদা না- এটা বুঝতে পারলে ক্যামেরন ও আমি কয়েক সপ্তাহ যৌনতা ছাড়া থাকার সিদ্ধান্ত নিই। তবে অন্তরঙ্গ মুহূর্তগুলো বজায় রাখতে আমরা একে অপরকে জড়িয়ে ধরি বা চুমু খাই।
নিজের খারাপ লাগতে শুরু করলে দ্রুত সম্ভব ক্যামেরনকে জানাতে চেষ্টা করি। ও হালকা ঠাট্টা করে আমাকে সহজ করে তোলে। আমি জানি, আমার সীমানাগুলোকে ও সম্মান করবে। এ বিশ্বাস থেকে আমি ডিজঅর্ডারের পর্বগুলোতে আরও মনোযোগ দেয়ার সময় পাই। ক্যামেরন জানে কীভাবে আমাকে সাহায্য করতে হয়।
আমাদের সম্পর্কের মাধ্যমে যৌনতার ওপর ধীরে ধীরে নিজস্ব নিয়ন্ত্রণের অনুভূতি ফিরে পাই। যেমন, আগে যৌনতার সময়ে কোনো কিছু অনুভব না করলেও আমি শেষ পর্যন্ত যেতাম। আর এখন জানি, আমি যদি বলি ‘আমাদের শেষ করতে হবে’, আমরা সেটাই করব।
আমি যখন বিষণ্ণতায় ভুগি তখন এটা খুবই সহায়ক। যৌনতার চাহিদা থাকলেও আমি হয়তো দীর্ঘ সময় তা উপভোগ করতে পারি না। কদিন ধরে আমি যৌন মিলনের সময় জোকস বলছি, যাতে করে যে কথাগুলো বলতে আমি দ্বিধা করি সেগুলো সহজে বলতে পারি। এতে ক্যামেরন বিরক্ত ও বিব্রত হয়।
ক্যামেরন: আমি বিব্রত কারণ ওই মুহূর্তগুলো দুনিয়ার কারও সঙ্গে শেয়ার করতে পারিনি।
কেসি: (হেসে) আসলে ক্যামেরন আমার উন্মত্ত অবস্থার চরম রূপটা দেখেনি। থেরাপিস্টের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভালো এবং এখন ওষুধগুলো চমৎকার কাজ করছে বলে আশা করি, সেই চেহারা ওকে আর দেখতে হবে না। উন্মত্ত অবস্থায় পৌঁছালে দশবারের মধ্যে নয়বারই আমাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে। কারণ ওই সময় আমাকে পর্যবেক্ষণ ও বিশেষায়িত চিকিৎসা দেয়া প্রয়োজন।
ক্যামেরন: আমার কাছে কোনো কিছু ঠিক মনে না হলে, কী করতে হবে সেটা ঠিক করে রেখেছি। কোন হাসপাতালে যাব, যেতে কতক্ষণ লাগবে, কাকে ফোন করব এগুলো সব ঠিক করা আছে।
কেসি: বাইপোলার ডিজঅর্ডারের কারণে আপাতত আমাদের সম্পর্কে বড় কোনো সমস্যা হচ্ছে না। ক্যামেরনের হার্পিস বা আমাদের পোষা বিড়ালের মতোই এটা আমাদের জীবনের অংশ।
ক্যামেরন: পুরো বিষয়টি নিয়ে কথা বললেই তার ফল ইতিবাচক হবেই।
আরও পড়ুন:দুই মাস নিয়ন্ত্রণে থাকার পর ফের ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করেছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। সপ্তাহের ব্যবধানে শনাক্ত ১৫৬ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে শনাক্ত ৪৮ দশমিক ১ শতাংশ কমলেও গত এক সপ্তাহে তা বেড়েছে।
৯ থেকে ১৫ মে এক সপ্তাহে নুমনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৫ হাজার ৯০৮টি। এ মধ্যে করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন ২১৩ জন। এর আগের সপ্তাহে এই সংখ্যা ছিল মাত্র ৮৩। সেই হিসাবে গত এক সপ্তাহে রোগী শনাক্ত বেড়েছে ১৫৬ দশমিক ৬ শতাংশ।
তবে চলতি মাসে করোনায় কারও মৃত্যুর সংবাদ দেয়নি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে শনাক্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি। এ নিয়ে টানা ২৬ দিন মৃত্যুশূন্য দেশ। এ সময়ে করোনা শনাক্ত হয়েছেন আরও ৩৭ জন। রোববার এই সংখ্যা ছিল ৩৩ জন। এর আগে সর্বশেষ গত ২০ এপ্রিল এক জনের মৃত্যুর খবর এসেছিল।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নতুন করে এক দিনে কোনো মৃত্যু না থাকায় মৃতের সংখ্যা ২৯ হাজার ১২৭ জনে রয়ে গেছে।
সব মিলিয়ে করোনা শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ৫৩ হাজার ৪৯। নতুন করে করোনা শনাক্তদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ২৮ জন। চট্টগ্রামের দুই জন, সিলেটের চার জন; জামালপুর, কক্সবাজার ও দিনাজপুরের একজন করে নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে।
সোমবার সকাল পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৪ হাজার ৭৯০টি নমুনা পরীক্ষায় ৩৭ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। পরীক্ষা বিবেচনায় রোগী শনাক্তের হার শূন্য দশমিক ৭৭ শতাংশ। গতকাল এই হার ছিল শূন্য দশমিক ৮৬ শতাংশ।
সরকারি হিসাবে গত এক দিনে সুস্থ হয়েছেন আরও ২২০ জন। এ পর্যন্ত ১৮ লাখ ৯৯ হাজার ৬৩৯ জন সুস্থ হয়ে উঠলেন।
২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনার সংক্রমণ ধরা পড়ে। ধীরে ধীরে সংক্রমণ বাড়তে থাকে। প্রথম ঢেউ নিয়ন্ত্রণে আসে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে।
একই বছরের মার্চে ডেল্টা ধরনে ভর করে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসে। এ পর্যায়ে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হয় গত জুলাইয়ে। সংক্রমণ এতটাই বেড়ে যায় যে শনাক্তের হার ৩৩ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়।
দেশে করোনার ওমিক্রন ধরন শনাক্ত হয় গত বছরের ১১ ডিসেম্বর। এরপর দ্রুতগতিতে বাড়তে থাকে সংক্রমণ। ২০ জানুয়ারি করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে প্রবেশ করে দেশ। ২৮ জানুয়ারি করোনা শনাক্তের হার ৩৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ দাঁড়ায়, যা দেশে করোনা সংক্রমণ ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি। তবে তৃতীয় ঢেউয়ে মৃত্যু ছিল তুলনামূলক কম। এই ঢেউ নিয়ন্ত্রণেও আসে তুলনামূলক দ্রুত।
আরও পড়ুন:দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে শনাক্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি। এ নিয়ে টানা ২৫ দিন মৃত্যুশূন্য দেশ। এ সময়ে করোনা শনাক্ত হয়েছেন আরও ৩৩ জন।
রোববার বিকেলে বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এর আগে সর্বশেষ গত ২০ এপ্রিল এক জনের মৃত্যুর খবর এসেছিল।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নতুন করে এক দিনে কোনো মৃত্যু না থাকায় মৃতের সংখ্যা ২৯ হাজার ১২৭ জনে রয়ে গেছে।
সব মিলিয়ে করোনা শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ৫৩ হাজার ১২। নতুন করে করোনা শনাক্তদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ২৮ জন।
রোববার সকাল পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৩ হাজার ৮১৮টি নমুনা পরীক্ষায় ৩৩ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। পরীক্ষা বিবেচনায় রোগী শনাক্তের নতুন হার শূন্য দশমিক ৮৬ শতাংশ। গতকাল এই হার ছিল শূন্য দশমিক ৫৫ শতাংশ।
সরকারি হিসাবে গত এক দিনে সুস্থ হয়েছেন আরও ২৬৯ জন। এ পর্যন্ত ১৮ লাখ ৯৯ হাজার ৪১৯ জন সুস্থ হয়ে উঠলেন।
২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনার সংক্রমণ ধরা পড়ে। ধীরে ধীরে সংক্রমণ বাড়তে থাকে। প্রথম ঢেউ নিয়ন্ত্রণে আসে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে।
একই বছরের মার্চে ডেল্টা ধরনে ভর করে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসে। এ পর্যায়ে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হয় গত জুলাইয়ে। সংক্রমণ এতটাই বেড়ে যায় যে শনাক্তের হার ৩৩ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়।
দেশে করোনার ওমিক্রন ধরন শনাক্ত হয় গত বছরের ১১ ডিসেম্বর। এরপর দ্রুতগতিতে বাড়তে থাকে সংক্রমণ। ২০ জানুয়ারি করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে প্রবেশ করে দেশ। ২৮ জানুয়ারি করোনা শনাক্তের হার ৩৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ দাঁড়ায়, যা দেশে করোনা সংক্রমণ ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি। তবে তৃতীয় ঢেউয়ে মৃত্যু ছিল তুলনামূলক কম। এই ঢেউ নিয়ন্ত্রণেও আসে তুলনামূলক দ্রুত।
আরও পড়ুন:বগুড়ায় করোনাভাইরাসের বুস্টার ডোজ না থাকায় টিকা দেয়া বন্ধ রয়েছে। তবে প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজের ভ্যাকসিন পাচ্ছেন জেলার সাধারণ মানুষ।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় বলছে, নতুন করে বুস্টার ডোজের চাহিদা পাঠানো হয়েছে। চলতি সপ্তাহের মধ্যে এই চালান আসবে।
শনিবার সকালে শহরের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, করোনাভাইরাসের বুস্টার ডোজ বন্ধ রয়েছে।
দুপুর ১২টার দিকে সদর উপজেলার বাঘোপাড়া থেকে বুস্টার ডোজ টিকা নিতে এক নারী আসেন মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে। রোজিনা ইসলাম নামের এই নারীর ডোজের তারিখ ছিল ২৮ এপ্রিল।
তিনি জানান, ঈদের জন্য বুস্টার ডোজ নেয়া হয়নি। আজ (শনিবার) হাসপাতালে এলে জানানো হয়, বুস্টার ডোজ শেষ হয়ে গেছে। কয়েক দিন পর আবার আসতে বলছেন তারা।
বুস্টার ডোজ শেষ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বগুড়া সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিক্যাল অফিসার সাজ্জাদুল হক শাহী।
তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার ৪০ হাজার ডোজের চাহিদা পাঠানো হয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে। এর মধ্যে ৩০ হাজার ডোজ অ্যাস্ট্রাজেনেকার। এই চাহিদার মধ্যে ৫ হাজার মডার্না এবং ৫ হাজার ফাইজারের ডোজ রয়েছে।’
ডা. সাজ্জাদ জানান, জেলায় প্রায় ২ লাখ ৬৪ হাজার ২৯১ জন করোনাভাইরাসের বুস্টার ডোজ পেয়েছেন। এখনও ২৩ লাখ ৪১ হাজার ১৪৭ জন বুস্টার ডোজের অপেক্ষায় রয়েছেন।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সামির হোসেন মিশু বলেন, বুস্টার ডোজ বন্ধ রয়েছে। কিন্তু এতে শঙ্কার কোনো কারণ নেই। রমজান মাসে মানুষের মাঝে ভ্যাকসিন নেয়ার চাহিদা কম ছিল। যে জন্য নতুন করে বুস্টার ডোজ আনা ছিল না। বৃহস্পতিবার চাহিদাপত্র দেয়া হয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যে চলে আসবে।
আরও পড়ুন:একদিনের ব্যবধানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্তের সংখ্যা কিছুটা কমে এসেছে। বৃহস্পতিবার ৫১ জনের দেহে করোনা শনাক্তের সংবাদ জানা গেলেও গত ২৪ ঘণ্টায় তা কমে ১৮ জনে নেমেছে।
শুক্রবার বিকেলে এক বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত একদিনে করোনা শনাক্তদের মধ্যে কেউ মারা যাননি। কয়েকদিন সংক্রমণ বাড়তে থাকলেও করোনায় টানা ২৩ দিনে কারও মৃত্যু হয়নি। সর্বশেষ গত ২০ এপ্রিল একজনের মৃত্যুর খবর এসেছিল।
২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনা শনাক্ত হওয়ার পর এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ২৯ হাজার ১২৭ জন।
নতুন করে করোনা শনাক্তদের মধ্যে ঢাকা বিভাগেই সবচেয়ে বেশি ১২ জন। বাকিদের মধ্যে সিলেটে দুইজন; চট্টগ্রাম, রংপুর, কুষ্টিয়া ও নড়াইলে একজন করে নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে।
একদিনে রোগী শনাক্তের সঙ্গে কমেছে শনাক্তের হারও। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৪ হাজার ৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। শনাক্তের হার শূন্য দশমিক ৪৫ শতাংশ। বৃহস্পতিবার এই হার ছিল শূন্য দশমিক ৮৯ শতাংশ। সব মিলিয়ে করোনা শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ৫২ হাজার ৯৫৭।
সরকারি হিসাবে গত এক দিনে সুস্থ হয়েছেন আরও ৩২৭ জন। এখন পর্যন্ত ১৮ লাখ ৯৮ হাজার ৯৩০ জন সুস্থ হয়ে উঠলেন।
২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনার সংক্রমণ ধরা পড়ে। ধীরে ধীরে সংক্রমণ বাড়তে থাকে। প্রথম ঢেউ নিয়ন্ত্রণে আসে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে।
একই বছরের মার্চে প্রাণঘাতি ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে ভর করে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসে। এ পর্যায়ে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হয় গত জুলাইয়ে। সংক্রমণ এতটাই বেড়ে যায় যে শনাক্তের হার ৩৩ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়। সে সময় দেশে মৃত্যু হারও ছিল বেশি। এই ভ্যারিয়েন্ট নিয়ন্ত্রণে আসার পর তুলনামূলক দুর্বল ওমিক্রন শনাক্ত হয় গত বছরের ১১ ডিসেম্বর। এরপর দ্রুতগতিতে বাড়তে থাকে সংক্রমণ।
২০ জানুয়ারি করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে প্রবেশ করে দেশ। ২৮ জানুয়ারি করোনা শনাক্তের হার ৩৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ দাঁড়ায়, যা দেশে করোনা সংক্রমণ ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি। তবে তৃতীয় ঢেউয়ে মৃত্যু ছিল তুলনামূলক কম। এই ঢেউ নিয়ন্ত্রণেও আসে তুলনামূলক দ্রুত।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য