যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছে যে রাশিয়া সাইবার হ্যাকারদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে দেশটির কর্তৃপক্ষ এবার সাইবার অপরাধীদের বিরুদ্ধে বড় পদক্ষেপ নিল।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী র্যানসমওয়্যারভিত্তিক হ্যাকার গ্রুপ আরইভিলের সদস্যদের আটক করেছে।
রাশিয়ার ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর (এফএসবি) পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। গ্রুপটি এখন শুধুই ইতিহাস।
তবে গ্রুপের কোনো রাশিয়ান সদস্যকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করা হবে না।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম তাসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আরইভিল ম্যালওয়্যার তৈরি করত। এইগুলো ব্যবহার করে তারা বিদেশিদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ চুরি করত। এ ছাড়া তারা র্যানসমওয়্যারের মাধ্যমে ব্ল্যাকমেইল করেও অর্থ আদায় করত।
ম্যালওয়্যার মূলত ক্ষতিকর কম্পিউটার সফটওয়্যার (ম্যালিশিয়াস সফটওয়্যার)। সাইবার অপরাধীরা অন্য কম্পিউটার সিস্টেমে অবৈধভাবে প্রবেশের জন্য এ ধরনের সফটওয়্যার ব্যবহার করে থাকে।
এই গ্যাংটির বিষয়ে তথ্য দেয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ থেকে এক কোটি ডলার পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছিল।
এফএসবি জানিয়েছে, তারা গ্যাংটির কাছ থেকে ৪ লাখ ৪০ হাজার পাউন্ড সমমূল্যের ক্রিপ্টোকারেন্সিসহ ৪২ কোটি ৬০ লাখ রুবল (৪ মিলিয়ন পাউন্ড) উদ্ধার করেছে।
এ ছাড়া গ্রুপটির কাছ থেকে অনলাইনে প্রতারণা ও চুরির মাধ্যমে কেনা ২০টি বিলাসবহুল গাড়িও জব্দ করা হয়েছে।
রাশিয়ার এই ঘোষণা এমন সময় এলো যখন দেশটির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের স্থবিরতা চলছে।
আরইভিলের বিরুদ্ধে পরিচালিত এই অভিযান সাইবার অপরাধ ও সাইবার সম্পর্কের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার নতুন যুগের শুরু হলো।
অনেক বছর ধরেই রাশিয়া অস্বীকার করে আসছিল যে র্যানসমওয়্যার আক্রমণকারীরা দেশটিতে নিরাপদে লুকিয়ে বিভিন্ন পশ্চিমা লক্ষ্যে আক্রমণ পরিচালনা করে থাকে।
গত গ্রীষ্মে জেনেভা সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট পুতিন ও প্রেসিডেন্ট বাইডেন আলোচনা করেছিলেন, র্যানসমওয়্যারের মতো সাইবার অপরাধের বিরুদ্ধে একসঙ্গে কিভাবে লড়াই করা যায়।
রাশিয়ায় আন্তর্জাতিক সাইবার অপরাধীদের আনাগোনার দিন শেষ। আরইভিলের মতো হাইপ্রোফাইল হ্যাকার গ্রুপের সদস্যদের আটক করার মাধ্যমে রাশিয়া বিশ্বের কাছে হয়তো এই বার্তাই দিয়েছে।
আরও পড়ুন:এক্স সিরিজের নতুন মডেলের স্মার্টফোন উন্মোচন করেছে চীনা প্রতিষ্ঠান ভিভো। দেশের বাজারে শুক্রবার তারা ভিভো এক্স৮০ ফাইভজি স্মার্টফোন উন্মোচন করেছে। সে সঙ্গে শুরু হয়েছে প্রি-অর্ডার।
ফ্ল্যাগশিপ ফোনটি দেশের বাজারে আগামী ৫ জুন থেকে পাওয়া যাবে।
এক্স৮০ ফাইভজি স্মার্টফোনটিতে রয়েছে ৩২ মেগাপিক্সেলের ফ্রন্ট ক্যামেরা, ৫০ মেগাপিক্সেলের ট্রিপল ক্যামেরা। উন্নতমানের ফটোগ্রাফি-সিনেমাটোগ্রাফি অভিজ্ঞতা দিতে প্রথমবারের মতো ব্যবহার করা হয়েছে ভি১+চিপ।
মিডিয়াটেক ডাইমেনসিটি ৯০০০ পরিচালিত কুলিং প্রযুক্তিও যুক্ত করেছে ভিভো। বাষ্প চেম্বারের মাধ্যমে ডিভাইসটি ঠান্ডা থাকে। ৪৫০০ এমএএইচের ব্যাটারির সঙ্গে ৮০ ওয়াটের ফ্ল্যাশ চার্জার প্রযুক্তি। ফলে ৩৫ মিনিটেই শতভাগ চার্জ হবে ফোনটি।
এক্স৮০ ফাইভজি স্মার্টফোনটি পাওয়া যাবে কসমিক ব্ল্যাক ও আরবান ব্লু রঙে। দেশে ফোনটির দাম হবে ৭৬ হাজার ৯৯০ টাকা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন নাহার হলে অনুষ্ঠিত হয়েছে নারীদের সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ে সেমিনার।
গত বৃহস্পতিবার হলের দেড় শতাধিক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
হলের প্রভোস্ট ড. লাফিফা জামালের সভাপতিত্বে বিশেষজ্ঞ প্যানেল সেমিনারে অংশ নেন।
সেমিনারে আলোচক হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের স্পেশাল পুলিশ সুপার (ইন্টারনাল অ্যাফেয়ার্স) মাহফুজা লিজা।
তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা যদি ম্যাসেজের মাধ্যমে আপত্তিকর অথবা হুমকির বার্তা পায়, অনলাইনে যদি তাদের ব্যাপারে গুজব ছড়ানো হয়, সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং ওয়েবসাইটে যদি হুমকিস্বরূপ পোস্ট অথবা মেসেজ ছড়ানো হয় তবে তারা অবশ্যই যেন থানায় জিডি করেন এবং সম্ভব হলে অনলাইনে রিপোর্ট করেন।’
এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মেখলা সরকার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন নাহার হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. লাফিফা জামাল, টেইক ব্যাক দ্য টেক (টিবিটিটি) বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের সমন্বয়ক মাহবুবা সুলতানা এবং বাংলাদেশ উইমেন ইন টেকনোলজির (বিডব্লিউআইটি) সহ-সভাপতি কানিজ ফাতেমা।
শিক্ষা, বিনোদন ও জীবনযাপনে বর্তমান শিক্ষার্থীরা অনেক বেশি অনলাইনের উপর নির্ভরশীল। যত বেশি অনলাইন মাধ্যম ব্যবহার হয়, ততই সাইবার ওয়ার্ল্ডের সমস্যাগুলো বেড়ে যায়। এ জন্য সেমিনার আয়োজনের মাধ্যমে সাইবার নিরাপত্তা সম্পর্কিত বিষয়গুলো আলোচনা করা হয়।
এই আয়োজনে উঠে আসে- ফেক লিঙ্ক এবং সাইবার ক্রাইম থেকে সুরক্ষা, সাইবার নিরাপত্তা, অনলাইন হয়রানি, অপরাধ এবং সমাধান, সাইবার বুলিং, সাইবার অপরাধীদের মনোবিজ্ঞান, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাষা ব্যবহারের পদ্ধতির মতো বিষয়গুরো।
ইন্টারনেট সুবিধাসহ প্রযুক্তির নানামাত্রিক ব্যবহার যতোই সহজলভ্য হচ্ছে ততোই সাইবার জগতে নারীদের সহিংসতার ঘটনা বাড়ছে। সাইবার জগতের ৬৮ শতাংশ নারী সাইবার অপরাধের শিকার হয়।
বাংলাদেশে সাধারণত ১৬ থেকে ২৪ বছরের নারীরা সবচেয়ে বেশি সাইবার অপরাধের শিকার হয়। অনলাইনে নারীদের ৭৩ শতাংশ বুলিংয়ের শিকার হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নারীরা তাদের এ সমস্যা প্রকাশ করে না; বরং মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে বলে সেমিনারে তুলে ধরা হয়।
প্যানেল ডিসকাশনটি যৌথভাবে আয়োজন করে বাংলাদেশ উইমেন ইন টেকনোলজি এবং বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক।
ভেন্যু সহযোগিতায় ছিল শামসুন নাহার হল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
আরও পড়ুন:দেশের বাজারে জনপ্রিয় ফোন বিক্রেতা কোম্পানি রিয়েলমির ট্রেডমার্ক লোগোসহ ওয়েবসাইট থেকে বিশাল ছাড়ে মোবাইল বিক্রি হচ্ছে।
৩২ হাজার টাকা দামের একটি ফোন ১৮ হাজার টাকায়, আর ২২ হাজার ৯৯০ টাকার ফোন ১২ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রির প্রলোভন দেখানো হচ্ছে।
এই ফাঁদকে বিশ্বাসযোগ্য করতে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা ‘নগদ’ এর নাম জুড়ে দেয়া হয়েছে। বলা হচ্ছে ‘নগদ’ অ্যাপ ব্যবহার করে টাকা পরিশোধ করলেই কেবল এই ছাড় মিলবে।
সম্প্রতি realme.pro ওয়েবসাইট থেকে রিয়েলমির জনপ্রিয় সবগুলো মডেলের মোবাইল অর্ধেকের কম দামে অফার দেয়া হচ্ছে।
তবে নিউজবাংলা রিয়লমি এবং নগদ- দুই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেই যোগাযোগ করে নিশ্চিত হয়েছে, এই ধরনের কোনো অফার দেয়া হয়নি। এটি প্রতারণার চেষ্টা উল্লেখ করে ক্রেতাদেরকে সাবধানও করা হয়েছে।
নিউজবাংলার পক্ষ থেকে রিয়েলমির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানিয়েছে, যে ওয়েবসাইট থেকে এই অফারটি দেয়া হয়েছে, সেটি তাদের নয়।
অন্যদিকে ‘নগদ’ বলছে, realme.pro ওয়েবসাইটের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
বিষয়টি নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগও করেছে রিয়েলমি।
ভুক্তভোগী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান থেকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে পুলিশ এসব প্রতারকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের সিনিয়র সহাকারী কমিশনার আবু তালেব।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি সাইবার সার্ভিলেন্সের মাধ্যমেও এসব প্রতারকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে ডিএমপি।’
রিয়েলমির নাম ব্যবহার করে ওয়েবসাইটটি নতুন
চীনা মোবাইল নির্মাতা প্রতিষ্ঠান রিয়েলমি বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করে জনপ্রিয় হয়েছে। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে দেশে কার্যক্রম শুরু করা কোম্পানিটির ওয়েবসাইটের ঠিকানা www.realme.com/bd
অন্যদিকে রিয়েলমির নাম ব্যবহার করে realme.pro ঠিকানাটা খোলা হয়েছে গত ১৫ মে। এরপর সাইটটি ডেভেলপ করে সেই সাইটের লিংক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্পন্সর করে গ্রাহকের কাছে ছড়িয়ে দিচ্ছে।
বলা হয়েছে, এই ওয়েবসাইট থেকে নির্ধারিত অফারটি নিতে হলে নগদে সেন্ড মানি করতে হবে। একটি নগদ পার্সোনাল নম্বর দেয়া আছে, যা 01745443626। এই নম্বরে সেন্ড মানি করার পর ট্রানজেকশন আইডিটি নির্ধারিত বক্সে তা বসিয়ে কনফার্ম করতে হয়।
ফুল পেমেন্ট করে অর্ডার করতে হবে- এমন শর্ত দিয়ে বলা হচ্ছে, অর্ডার করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আরইডিক্স কুরিয়ারের মাধ্যমে গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দেয়া হবে নির্ধারিত ফোন।
তবে কোনো কোম্পানি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে যে পণ্য বিক্রি করে, সেখানে সেন্ড মানির কোনো সুযোগ থাকে না। মোবাইল ব্যাংকিং সেবা ব্যবহার করে টাকা পরিশোধ করতে হলে পেমেন্ট অপশনের মাধ্যমে টাকা দিতে হয়।
আবার যে নম্বরটিতে টাকা পাঠানোর জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে, তা ট্রু কলারের মাধ্যমে যাচাই করতে গিয়ে দেখা গেছে, নাম হিসেবে কেউ একজন লিখে রেখেছেন ‘বাটপারি কেয়ার’।
বিয়েলমির বক্তব্য
রিয়েলমির সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে যোগাযোগ করে নিউজবাংলা। বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠানটির মুখপাত্র হিসেবে কাজ করে এশিয়াটিক ৩৬০ এর ব্ল্যাকবোর্ড স্ট্র্যাটেজিক।
প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘আমরা লক্ষ্য করেছি যে কিছু ফেসবুক পেজ রিয়েলমি অফিসিয়াল ফেসবুক পেজের নকল করে পেজ বানিয়ে রিয়েলমির নাম ব্যবহার করে মিথ্যা অফার ছড়াচ্ছে। আমরা এই ফেসবুক পেজগুলোর নামে রিপোর্ট করেছি এবং এই সমস্যাটি সমাধানের লক্ষ্যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি৷’
গ্রাহকদের রিয়েলমির প্রকৃত অফার জানতে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ (https://www.facebook.com/realmeBD) ফলো করার পরামর্শও দেয়া হয়।
যে কোনো প্রশ্নের জন্য এই পেজে আমাদের ম্যাসেজ করার জন্য অথবা আমাদের কল সেন্টারে ০৯৬১০৫৫৫৫৫৫ নম্বরে যোগাযোগের পরামর্শও দেয়া হয়েছে।
রিয়েলমির একজন কর্মকর্তা জানান, তারা এই বিষয়টি নিয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। পুলিশ এই বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে।
কী বলছে ‘নগদ’
নগদের জনসংযোগ বিভাগের প্রধান জাহিদুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এগুলো আমাদের নজরে এসেছে। এদের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই।’
আরও পড়ুন:বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ক্লাউড-নেটিভ সিকিউরিটি প্ল্যাটফর্ম সোফোস সম্প্রতি তাদের ‘স্টেট অফ র্যানসমওয়্যার ২০২২’ রিপোর্ট প্রকাশ করেছে।
রিয়েল-ওয়ার্ল্ড র্যানসমওয়্যার অভিজ্ঞতার বার্ষিক পর্যালোচনা করে এই রিপোর্ট প্রকাশ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। রিপোর্টে দাবি করা হয়, জরিপে অংশ নেয়া ৬৬ শতাংশ সংস্থা ২০২১ সালে র্যানসমওয়্যারের শিকার হয়েছিল।
এশিয়া-প্যাসিফিক, মধ্য এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ, আমেরিকা এবং আফ্রিকা জুড়ে প্রায় ৩১টি দেশের ৫ হাজার ৬০০টি সংস্থার জরিপ করার পর সোফোস প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে। সমীক্ষা চলাকালীন ৯৬৫টি কোম্পানি তাদের র্যানসমওয়্যার পেমেন্টের বিবরণ শেয়ার করেছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, র্যানসমওয়্যার আক্রমণে ডেটা এনক্রিপ্ট করা সংস্থাগুলো তাদের ডেটা ফেরত পেতে মোটামুটিভাবে ৮ লাখ ১২ হাজার ৩৬০ ডলার বা প্রায় ৭ কোটি টাকা খেসারত দিয়েছে।
আর ৪৬ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানের ডেটা এনক্রিপ্টেড ছিল এবং ব্যাকআপসহ অন্য ডেটা পুনরুদ্ধারের পদ্ধতি থাকা সত্ত্বেও তারা মুক্তিপণ পরিশোধ করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দিন দিন মুক্তিপণ দেয়ার মাত্রা বাড়ছে, কারণ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভুক্তভোগীর সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এ ছাড়া অনেক বৈশ্বিক সংস্থা র্যানসমওয়্যার আক্রমণ থেকে তাদের ডেটা পুনরুদ্ধার করতে সহায়তা করার জন্য সাইবার বিমার উপর নির্ভর করে।
ক্রমবর্ধমান সাইবার নিরাপত্তা হুমকির পাশাপাশি র্যানসমওয়্যার আক্রমণগুলো সংস্থার উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে, যেহেতু সাধারণত ডেটা পুনরুদ্ধার করতে এবং আক্রমণ পরবর্তী জটিলতাগুলো দূর করতে প্রায় এক মাস সময় লাগে ৷
সম্ভাব্য র্যানসমওয়্যার এবং সাইবার আক্রমণ থেকে সুরক্ষিত থাকতে বেশ কিছু কার্যকরী পদক্ষেপের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- নিয়মিতভাবে সিকিউরিটি কন্ট্রোল পর্যালোচনা করা, যাতে তারা সংস্থার অন্যান্য সব সিস্টেমের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে। অযাচিত যেকোনো তথ্য ফাঁস আটকাতে সব তথ্যের ব্যাকআপ রাখা।
আরও পড়ুন:রংপুরে এম এ ওয়াজেদ মিয়া হাইটেক পার্কের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। ভারত ও বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় দশ একর জমিতে ১৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হবে এই পার্ক।
সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের খলিশাকুড়ি এলাকায় হাইটেক পার্কের ভিত্তিপ্রস্তরের ফলক উন্মোচন করেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক।
এ আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।
স্পিকার বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানাই কারণ তারই প্রচেষ্টায় এই পার্ক হচ্ছে। তিনি রংপুরের উন্নয়নে সদা সর্বদা সচেষ্ট রয়েছেন। তার গৃহীত বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্যে দিয়ে সেটা লক্ষ্য করে থাকি।
‘আজকের বাংলাদেশে ডিজিটাল ও আইসিটির যে প্রসার তা গত ১২-১৪ বছরে আমরা দেখেছি। শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে একটি উন্নত অবস্থানে নিয়ে গেছেন।’
প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, ‘রংপুরকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অসংখ্য উপহার দিয়েছেন। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, বিভাগ ও সিটি করপোরেশন দিয়েছেন।
‘সজীব ওয়াজেদ জয় রংপুরের সন্তান হিসেবে এখানকার সামগ্রিক উন্নয়নের দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নিয়েছেন। তারই প্রতিশ্রুতি ছিল, রংপুরের তরুণ প্রজন্মের জন্য একটি অত্যাধুনিক পার্ক নির্মাণ করে দেবেন। আজ সেটি বাস্তবায়নের পথে কাজ শুরু করেছি।’
পলক আরও বলেন, ‘আমরা বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ওয়াজেদ মিয়ার নামে নামকরণ করে কাজ শুরু করছি। আশা করছি দুই বছরের মধ্যে কাজ শেষ হবে। প্রতি বছর এখানে ৩ হাজারের বেশি তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারব।
‘এই অঞ্চলের তরুণদের যেন ঢাকামুখী, বিদেশমুখী হতে না হয় সে জন্য কাজ করছি। আশা করছি, তরুণরা এই সুযোগ কাজে লাগাবে।’
ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রংপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার আব্দুল আলীম মাহমুদ ও জেলা প্রশাসক আসিব আহসান।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, হাইটেক পার্কের তিনটি ভবনের মধ্যে একটি হবে স্টিল স্ট্রাকচারে তৈরি সাত তলা ভবন। বাকি দুটি তিন তলা ভবনে ক্যানটিন, অ্যাম্ফিথিয়েটার ও ডরমেটরি থাকবে।
২০১৭ সালের ২৫ এপ্রিল জেলা পর্যায়ে ১২টি হাইটেক পার্ক প্রকল্পের জন্য ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। তারই একটি রংপুরের এম এ ওয়াজেদ মিয়া হাইটেক পার্ক।
যাত্রার চার বছরের মধ্যে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে ক্লাউড সেবায় এগিয়ে যাচ্ছে চীনা প্রযুক্তি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ের ক্লাউড। চীন, থাইল্যান্ড ও এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের বাজারে এখন তাদের অবস্থান যথাক্রমে দুই, তিন ও চারে।
সেই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকেও তারা সেবা দিয়ে যাচ্ছে। নতুন নতুন অনেক প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ের এই সেবা নিতে যুক্তি হচ্ছে বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে।
বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি সরকারও ডিজিটাল সল্যুশন সংক্রান্ত চাহিদা পূরণে হুয়াওয়ে ক্লাউড ব্যবহার করছে বলে জানায় হুয়াওয়ে।
সরকারের বিসিসি ক্লাউডের মাধ্যমে অর্থ মন্ত্রণালয়ের জন্য সমন্বিত বাজেট ও অ্যাকাউন্ট সিস্টেম, ভ্যাকসিন সিস্টেম ও ই-গভর্নমেন্ট ইআরপি প্রকল্পও শেষ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্যান জুনফেং বাংলাদেশের বাজারে ক্লাউড সেবার মাধ্যমে তাদের ডিজিটাল রূপান্তরকে ত্বরান্বিত করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
হুয়াওয়ে বাংলাদেশের এন্টারপ্রাইজ বিজনেস গ্রুপের প্রেসিডেন্ট জর্জ লিন বলেন, ‘হুয়াওয়ে ক্লাউড এ অঞ্চলে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি বাড়াতে সাহায্য করেছে। এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে হুয়াওয়ে ক্লাউড ছয়টি কৌশল গ্রহণ করেছে। সে অনুযায়ী কাজ করা হচ্ছে।’
আরও পড়ুন:বিজ্ঞান, শিক্ষা, সংস্কৃতি ও সমাজের টেকসই উন্নয়নের জন্য ডিজিটাল তথ্যের দীর্ঘমেয়াদী সংরক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ আলী খান খসরু।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বুধবার ওয়াই ডব্লিউ সিএ কনফারেন্স হলে পঞ্চম ডব্লিউ এস ডব্লিউ ডি সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
কমিউনিটি সোশ্যাল ওয়ার্ক প্র্যাকটিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের অ্যাসোসিয়েশনের আয়োজনে ডব্লিউ এস ডব্লিউ ডি ২০২২: ‘কো-বিল্ডিং এ নিউ ইকো-সোশ্যাল ওয়ার্ল্ড : কাউকে পিছিয়ে না-এসডিজি এবং কমিউনিটি স্থিতিস্থাপকতা অর্জন’ শীর্ষক তিন দিনের এ সম্মেলন হচ্ছে।
সম্মেলনে ৩৫টি দেশের ১২০ জনেরও বেশি ব্যক্তিরা অংশ নেন। সেখানে তাদের ধারণা ও মতামত উত্থাপন করেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সম্মেলনের শিরোনাম বা থিম আমাদের সবার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের একজন সদস্য হিসেবে আমি দেখতে পাচ্ছি, এ আয়োজন বিবেকবান সমাজ পরিবর্তনে বিশ্বজুড়ে একটি বিশাল জ্ঞানভিত্তিক আয়োজন। টেকসই সমাজ ব্যবস্থা গঠনে আমি সুশীল সমাজের সঙ্গে এ বিষয়ে একযোগে কাজ করতে চাই।
‘একটি নতুন টেকসই সামাজিক বিশ্ব গড়তে এবং সমাজ উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে এমন গঠনমূলক সামাজিক দক্ষতার সঙ্গে আমাদের মতামত ও ধারণা বিনিময় করতে হবে। বর্তমান সময়ে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি বক্তব্য দেন কোরিয়ার ডিএএসডব্লিউ’র সভাপতি সুগ পিয়ো কিম, ফিলিপাইন সাউদার্ন লেইট স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক আইভি জি ইয়েপেস, দ্য পিপলস ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবদুল মান্নান চৌধুরী।
মন্তব্য