কাজাখস্তানের চলমান সহিংস সংঘাতকে সরকার পতনের উদ্দেশ্যে সৃষ্ট অস্থিরতা হিসেবে দাবি করেছেন কাজাখস্তানের প্রেসিডেন্ট কাসেম-জোকার্ট তোকায়েভ।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর সামরিক সংগঠনকে (সিএসটিও) তিনি জানিয়েছেন, এই অস্থিরতার উৎপত্তি একটি নির্দিষ্ট কেন্দ্র থেকে। তবে তিনি সরাসরি কাউকে দায়ী করেননি।
তোকায়েভ বলেন, কিছু অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী আন্দোলনের মাঝে যুক্ত হয়। তাদের মূল লক্ষ্য ছিল সাংবিধানিক মূল্যবোধ নষ্ট করা, সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংসের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে সরকার উৎখাত করা।
এদিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, কাজাখস্তান আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের লক্ষ্যবস্তু হয়ে গেছে এবং রাশিয়া এই অঞ্চলে কোনো অভ্যুত্থান মেনে নেবে না।
দেশের অবকাঠামো রক্ষায় যতদিন কাজাখস্তান সরকার চাইবে, ততদিন সে দেশে তাদের উপস্থিতি থাকবে।
তিনি আরও বলেন, রাশিয়া ও অন্যান্য দেশের বাহিনী কাজাখস্তানে মোতায়েন হয়েছে আইনের শাসন ফিরিয়ে আনার জন্য।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়েরলান টুরগুমবায়েভ জানিয়েছেন, অবস্থা স্থিতিশীল। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অভিযান চালানো হচ্ছে। এ ছাড়া কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোও পাহারা দিচ্ছে সেনারা।
জরুরি অবস্থা ও পুরো দেশে কারফিউ এখনো জারি রয়েছে। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগে এখন পর্যন্ত প্রায় ৮ হাজার জন আটক হয়েছে। প্রেসিডেন্টের কার্যালয় জানিয়েছে, সহিংসতার ঘটনায় আটক ব্যক্তিদের মধ্য উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বিদেশিও রয়েছেন।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছেন ১৬৪ জন। এর মাঝে আলমাতি শহরেই মারা গিয়েছেন ১০৩ জন।
এর আগে জ্বালানির দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে গত ২ জানুয়ারি বিক্ষোভ শুরু হয় কাজাখস্তানে। পরে আরও কিছু দাবি আন্দোলনে যুক্ত হয়। একপর্যায়ে তা রূপ নেয় সহিংসতায়।
বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগে বাধ্য হন প্রধানমন্ত্রী আসকার মামিন। দেশজুড়ে জারি হয় দুই সপ্তাহের জরুরি অবস্থা। এতেও দমানো যায়নি বিক্ষুব্ধদের। এমন পরিস্থিতিতে আলমাতি শহরে চালানো হয়েছে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ।
বলা হচ্ছে, ১৯৯১ সালে স্বাধীনতা লাভের পর এমন পরিস্থিতি দেখেনি দেশটির জনগণ।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত কয়েকটি দেশের সামরিক জোট কালেকটিভ সিকিউরিটি ট্রিটি অর্গানাইজেশনের (সিএসটিও) সহায়তা চান কাজাখস্তান প্রেসিডেন্ট। রাশিয়ার নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার সেনা নামে দেশে।
তারা জানায়, দেশের অবকাঠামো রক্ষায় যতদিন কাজাখস্তান সরকার চাইবে, ততদিন সে দেশে তাদের উপস্থিতি থাকবে। আর বিক্ষোভকারীদের প্রশিক্ষিত সন্ত্রাসী অ্যাখ্য দিয়ে দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট তোকায়েভ।
আরও পড়ুন:ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী গাজা উপত্যকায় নতুন করে হামলা চালানোয় তীব্র নিন্দা ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ।
আজ এক বিবৃতিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই হামলায় নারী ও শিশুসহ নিরীহ বেসামরিক মানুষের প্রাণহানি ঘটছে, যা ইতোমধ্যে ভয়াবহ মানবিক সংকটকে আরও গভীর করেছে। এতে বলা হয়েছে যে, নতুন করে এই সহিংসতা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং প্রতিষ্ঠিত যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রতি গুরুতর অবজ্ঞার প্রতিফলন।
বাংলাদেশ দ্ব্যর্থহীনভাবে ঘনবসতিপূর্ণ বেসামরিক এলাকায় ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর অব্যাহত নির্বিচার বিমান হামলার নিন্দা জানিয়েছে, যা মানবিক দুর্ভোগকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে এবং অসহায় ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর ভয়াবহ পরিণতি ডেকে এনেছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ সরকার ইসরায়েলকে অবিলম্বে সকল সামরিক অভিযান বন্ধ করার, সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন করার এবং আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের অধীনে তার বাধ্যবাধকতাগুলোর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করার আহ্বান জানিয়েছে।’
এছাড়াও, বাংলাদেশ যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করতে, বেসামরিক মানুষের জীবন রক্ষা করতে এবং গাজার অবরুদ্ধ জনগণের কাছে মানবিক সহায়তা নিরবচ্ছিন্নভাবে পৌঁছে দিতে জরুরি ও সিদ্ধান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।
ন্যায়বিচার ও মানবাধিকার বিষয়ে এর নীতিগত অবস্থানের সাথে সামঞ্জস্য রেখে, বাংলাদেশ ফিলিস্তিনি জনগণের বৈধ অধিকারের প্রতি তার অটল সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে, যার মধ্যে রয়েছে তাদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার এবং পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে ১৯৬৭ সালের পূর্ববর্তী সীমান্ত বরাবর একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা।
বাংলাদেশ মধ্যপ্রাচ্যে একটি ব্যাপক, ন্যায়সঙ্গত ও স্থায়ী শান্তির লক্ষ্যে পুনরায় সংলাপ শুরু করার প্রয়োজনীয়তার উপরও জোর দিয়েছে, যা আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার জন্য জরুরি।বাংলাদেশ সকল পক্ষকে ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর অব্যাহত অর্থহীন সহিংসতা ও দুর্ভোগের অবসান ঘটাতে কূটনীতির পথ ও শান্তিপূর্ণ উপায় অবলম্বন করার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
আন্তর্জাতিক আইনের নীতিমালা, জাতিসংঘ প্রস্তাব এবং শান্তি, মর্যাদা ও ন্যায়বিচারের জন্য ফিলিস্তিনি জনগণের আকাঙ্ক্ষার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ফিলিস্তিনি প্রশ্নের একটি টেকসই সমাধান অর্জনের জন্য বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
পরিবার নিয়ে ভোর রাতে সেহরি খাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল গাজার বাসিন্দারা, তখনই মুহুর্মুহু বোমা বর্ষণে কেঁপে ওঠে উপত্যকা। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর (আইডিএফ) হামলা থেকে আবাসিক ভবন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে শরণার্থী শিবির—কিছুই রেহাই পায়নি।
অন্তত চার শতাধিক ফিলিস্তিনি মঙ্গলবারের এই বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে বহু নারী ও শিশু রয়েছে। এছাড়া ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়েছে আরও অনেকে। ফলে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের।
ইউনিসেফের মুখপাত্র রোসালিয়া বোলেন বলেছেন, ‘ইসরায়েলি হামলায় ১০ লাখের বেশি (ফিলিস্তিনি)শিশুর জীবন ঝুঁকিতে পড়েছে। তাদের যুদ্ধের ধকল সহ্য করতে হচ্ছে। শিশুদের জীবন এভাবে হুমকিতে পড়ায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’
গাজা সিটির কেন্দ্রস্থলে আত-তলিবিন নামের একটি স্কুলে বাস্তুহারা নারী ও শিশুরা আশ্রয় নিয়েছিল। ইসরায়েলি বিমান হামলায় মাটিতে মিশে গেছে স্কুলটি। এ সময় ঘটনাস্থলেই নারী-শিশুসহ অন্তত ২৫ জন প্রাণ হারান বলে মিডল ইস্ট আইয়ের খবর থেকে জানা গেছে।
গাজায় ইসরায়েল নতুন করে হামলা শুরু করায় দুমাসের অস্ত্রবিরতি চুক্তি ভেঙে গেছে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে।
খবর বলছে, হামাসের কাছ থেকে জিম্মিদের মুক্ত করতে আরও বলপ্রয়োগের হুমকি দিয়েছে ইসরায়েল।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর আকস্মিক হামলা চালিয়ে ২৫০ ইসরায়েলিকে জিম্মি করে হামাস, তাদের মধ্যে ৫৯ জন এখনও সশস্ত্র গোষ্ঠীটির কাছে রয়েছে। হামাস অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্তি দিতে অস্বীকার করার পর এই ঘটনা ঘটল।
এই হামলার পর ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অস্ত্রবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে হামাস। এর মাধ্যমে স্থায়ী শান্তি চুক্তির জন্য মধ্যস্থতাকারীদের প্রচেষ্টা আরও অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি তাদের।
এদিকে, হামাসের বিরুদ্ধে জোরালো পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এই হামলাকে ‘নিবৃত্তিমূলক’ বলে আখ্যায়িত করেছে আইডিএফ।
হামাসের ‘মাঝারি সারির’ সামরিক কমান্ডার, শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা ও বিভিন্ন অবকাঠামো হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হয়েছে।
পুরোনো শত্রু হামাসকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার শপথ নিয়েছেন নেতানিয়াহু। স্থল হামলার পাশাপাশি আকাশ থেকে অবিরত বোমা ফেলা হচ্ছে।
গাজা সিটি ছাড়াও উপত্যকার উত্তর ও দক্ষিণে অবস্থিত বেসামরিক নাগরিকদের বাড়ি ও শরণার্থী শিবিরেও নতুন করে হামলা শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
গাজা সিটির বাসিন্দা রাবিহা জামাল (৬৫) বলেন, ‘এটা যেন রাতের গভীরতা ভেদ করে নরকের আগুন জ্বলে উঠেছে। যুদ্ধের প্রথম দিনের মতোই হামলা করা হয়েছে।’
পাঁচ সন্তানের মা এই নারী বলেন, ‘সেহরি খাওয়ার জন্য আমরা যখন প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, তখন বিস্ফোরণ শুরু হয় এবং ভবনগুলো কেঁপে উঠতে শুরু করে। ভেবেছিলাম যুদ্ধ শেষ, কিন্তু তা আবার ফিরে এলো!’
নতুন দফায় এই হামলায় নিহতদের মধ্যে হামাসের রাজনৈতিক শাখার দীর্ঘদিনের সদস্য ইসাম আল-দালিসও রয়েছেন। গাজার সরকারের প্রশাসনিক কমিটির প্রধান ছিলেন তিনি। এছাড়া উপ-বিচারমন্ত্রী আহমেদ আল-হাত্তা, উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আবু ওয়াতফাও নিহত হয়েছেন।
ব্যাপক পরিসরে এই হামলায় রমজান মাসেও নতুন করে প্রাণ সংকটে পড়ে গেল গাজাবাসী।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন কর্মকর্তাদের হাতে গ্রেপ্তার কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহমুদ খলিল নিজেকে একজন রাজনৈতিক বন্দি হিসেবে দাবি করেছেন। এ সময় মার্কিন প্রশাসনের অভিবাসীদের এভাবে আটকে রাখার প্রক্রিয়াকে ইসরায়েলের বিচারবহির্ভূত আটক ব্যবস্থার সঙ্গে তুলনা করেছেন এই ফিলিস্তিনি যুবক।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানার আটককেন্দ্র থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেছেন তিনি।
গ্রেপ্তার হওয়ার পর প্রকাশ্যে দেওয়া এটিই তার প্রথম কোনো বিবৃতি। গত শনিবার (৮ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসভবন থেকে খলিলকে গ্রেপ্তার করে যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের (আইসিই) কর্মকর্তারা।
বিবৃতিতে খলিল বলেন, ‘আমি একজন রাজনৈতিক বন্দি। লুইজিয়ানার শীতের সকালে ঘুম ভাঙার পর আমার দীর্ঘ দিন কাটে এখানে আটক বহু মানুষদের দেখে, যারা আইনের সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত।’
খলিল বর্তমানে লুইজিয়ানার জেনা শহরে একটি অভিবাসী আটককেন্দ্রে রয়েছেন। সেখানেই তিনি বিচারের মুখোমুখি হওয়ার অপেক্ষায় আছেন। তাকে এভাবে আটকে রাখার ঘটনাকে তিনি ইসরায়েলের কারাগারে বিনা বিচারের বছরের পর বছর ফিলিস্তিনিদের আটকে রেখে নির্যাতনের সঙ্গে তুলনা করেছেন।
ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কথা বলতে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার তাদের মধ্যে এই আলোচনা হতে যাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা থেকে রবিবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটনের উদ্দেশে এয়ার ফোর্স ওয়ানে ওঠার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এমন তথ্য দিয়েছেন ট্রাম্প।
তিনি বলেন, ‘দেখি আমরা মঙ্গলবারের মধ্যেই কোনো ঘোষণা দিতে পারি কি না। এদিন আমি প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে কথা বলব।’
শিগগিরই সংঘাত বন্ধ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে এ সপ্তাহে বেশ অগ্রগতি হয়েছে। অনেক কাজ করা হয়েছে।’
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে দুই নেতার কথোপকথন খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি নিজের মতো ঢেলে সাজাচ্ছেন ট্রাম্প। পুতিনের সঙ্গে আলোচনা রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টের সে পদক্ষেপকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
যদিও ট্রাম্প-পুতিনের সম্প্রীতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ইউরোপীয় মিত্রদের উদ্বেগের শেষ নেই। শুরু থেকেই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে সমর্থন দিয়ে আসছিলেন তারা।
বছর তিনেক আগে অভিযানের শুরুতে ইউক্রেনকে পরাস্ত করতে রাশিয়ার প্রাথমিক লক্ষ্য ব্যর্থ হলেও প্রতিবেশী দেশটির বিশাল অংশের নিয়ন্ত্রণ নিতে পেরেছে মস্কো।
যুদ্ধ বন্ধের আলোচনায় এসব ভূমি ও বিদ্যুৎকেন্দ্রও থাকবে উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, ‘এই সম্পদগুলো ভাগাভাগি হতে পারে।’
ইউরোপের এ যুদ্ধ বন্ধ নিয়ে বেশ ঘটনাবহুল কয়েকটি দিন পার হয়েছে। শপথ নেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধ করার অঙ্গীকার করেছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু ৫৭তম দিনে এসে তিনি কেবল আশার কথা শোনাচ্ছেন।
নির্বাচনি প্রচারের সময় বেশ কয়েকবার ট্রাম্পকে এ ঘোষণা দিতে শোনা গেলেও রসিকতা করেই এমনটা বলেছিলেন বলে এখন দাবি করেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট।
স্থানীয় সময় শুক্রবার এক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে ট্রাম্প জানান, তিনি রসিকতা করে এটা বলেছিলেন।
গত ১১ মার্চ সৌদি আরবের জেদ্দায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের কর্মকর্তাদের বৈঠকে ওয়াশিংটনের দেওয়া এক মাসের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সম্মত হয় ইউক্রেন। একই প্রস্তাব রাশিয়াকেও দেওয়া হবে বলে বৈঠক শেষে জানান যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, জেদ্দার বৈঠকে যুদ্ধবিরতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের কর্মকর্তাদের মধ্যে কী আলোচনা হয়েছে, তার নানা দিক তুলে ধরতে গত বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ।
তিনি বলেন, ‘পুতিন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবকে সমর্থন করেছেন। তবে বেশ কিছু শর্তও জুড়ে দিয়েছেন। শান্তি প্রতিষ্ঠায় এসব জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন পুতিন।’
আরও পড়ুন:ইউক্রেনের সংঘাত নিষ্পত্তির শর্তাবলীতে রাশিয়া একমত হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ফ্লোরিডা যাওয়ার আগে ওয়াশিংটনের নিকটস্থ জয়েন্ট বেজ অ্যান্ড্রুজে সাংবাদিকদের ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা রাশিয়া থেকে বেশ কিছু ভালো খবর পেয়েছি। আমি মনে করি, রাশিয়া আমাদের সঙ্গে একটি চুক্তি করতে চলেছে, আমি এটা আশা করি।’
ওয়াশিংটন থেকে বার্তা সংস্থা তাস জানায়, কী খবর পেয়েছেন, তা স্পষ্ট করেননি ট্রাম্প।
মস্কোতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের মধ্যে কথোপকথনের বিষয়টি উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা অনেক মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি এবং ইউক্রেন অপেক্ষা করছে।’
তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘যুদ্ধবিরতি এবং শেষ পর্যন্ত একটি চুক্তি নিয়ে আমি রাশিয়া থেকে বেশ কিছু ভালো অনুভূতি পাচ্ছি।’
এর আগে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, পুতিন বৃহস্পতিবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফকে অভ্যর্থনা জানান এবং তাকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে একটি বার্তা পৌঁছে দিতে বলেন।
আরও পড়ুন:মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) নির্দেশে ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ম্যানিলার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মঙ্গলবার তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ফিলিপাইন সরকার তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে।
দেশটির প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোসের কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, হংকং থেকে দেশে আসার পর আইসিসির নির্দেশে পুলিশ দুতার্তেকে গ্রেপ্তার করেছে। অবৈধ মাদকের বিরুদ্ধে সাবেক এ প্রেসিডেন্টের চালানো অভিযানে ব্যাপক হত্যাকাণ্ডের তদন্ত চলছে।
আইসিসি দুতার্তের শাসনামলে মাদক নির্মূলের নামে চালানো অভিযানে হত্যাকাণ্ডগুলোকে সম্ভাব্য মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে তদন্ত করছে। এর মধ্যে ২০১১ সালের ১ নভেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ১৬ মার্চ পর্যন্ত দেশটির প্রেসিডেন্ট ও দক্ষিণাঞ্চলের শহর দাভাওয়ের মেয়র থাকার সময় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, হত্যাকাণ্ডের দায় এড়াতে ২০১৯ সালে ফিলিপাইনকে রোম সংবিধি থেকে প্রত্যাহার করে নেন দুতার্তে।
দুতার্তে প্রশাসন ২০২১ সালের শেষের দিকে আন্তর্জাতিক আদালতের তদন্ত স্থগিত করার পদক্ষেপ নিয়েছিল। আইসিসির আদালত হলো সর্বশেষ অবলম্বন।
আইসিসির আর বিচার করার এখতিয়ার নেই—এমন যুক্তি দিয়ে সে সময় তার প্রশাসন বলেছিল, ফিলিপাইন কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে একই অভিযোগ খতিয়ে দেখছে।
আরও পড়ুন:সিরিয়ার নিরাপত্তা বাহিনী ও দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের অনুগতদের মধ্যে সংঘর্ষ এবং প্রতিশোধমূলক হত্যাকাণ্ডে এক হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
স্থানীয় সময় শনিবার যুদ্ধ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণকারী একটি গোষ্ঠী এমন তথ্য দিয়েছে।
বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) খবর অনুসারে, মধ্যপ্রাচ্যের দেশটির ১৪ বছরে গৃহযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর সবচেয়ে প্রাণঘাতী সংঘর্ষের ঘটনা এটি।
ব্রিটিশভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানায়, ৭৪৫ বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার পাশাপাশি নিরাপত্তা বাহিনীর ১২৫ সদস্য ও আসাদসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন গোষ্ঠীর ১৪৮ জন নিহত হন। খুব কাছ থেকে গুলি করে তাদের হত্যা করা হয়।
এ ছাড়া লাতাকিয়া শহরের অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ ও খাবার পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার এ সংঘাতের শুরু হয়েছে, যা সরকারের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।
আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করে মাস তিনেক আগে সিরিয়ার কর্তৃত্ব গ্রহণ করে বিদ্রোহীরা।
সরকার জানিয়েছে, আসাদ বাহিনীর অবশিষ্টাংশের হামলার জবাব দিচ্ছে তারা। আর ক্রমবর্ধমান সহিংসতার জন্য ব্যক্তিগত হামলার ঘটনাকে দায়ী করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য