অ্যাপল এক বিস্ময়ের নাম। স্টিভ জবসের হাতে জন্ম নেয়া প্রতিষ্ঠানটি উদ্ভাবনে যেমন চমক লাগিয়ে বেড়ায়, তেমনি কর্পোরেট জগতেও তৈরি করে যাচ্ছে একের পর এক রেকর্ড।
ওয়ালমার্ট, ডিজনি, নেটফ্লিক্স, নাইকি, এক্সন মোবিল, কোকা-কোলা, কমক্যাস্ট, মর্গান স্টানলি, ম্যাকডোনাল্ডস, এটিএন্ডটি, গোল্ডম্যান স্যাক্স, বোয়িং, আইবিএম ও ফোর্ডের মতো বিখ্যাত কোম্পানির সম্মিলিত মূল্যের থেকেও এখন অ্যাপলের দাম বেশি।
দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের প্রথম কোম্পানি হিসেবে এর মূল্যমান তিন ট্রিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে। বিশ্বের কোনো কোম্পানি এমন নজির এর আগে দেখাতে পারেনি।
অ্যাপল একটি কম্পিউটার কোম্পানি। ১৯৭৬ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার একটি গ্যারেজ থেকে যার যাত্রা শুরু হয়। অথচ গ্যারেজে জন্ম নেয়া অ্যাপল এখন ৩ ট্রিলিয়ন ডলারের কোম্পানি। গত সোমবার কোম্পানিটির শেয়ার ১৮২.৮৬ ডলার স্পর্শ করলেই এর মূল্যমান ৩ ট্রিলিয়ন ছাড়িয়ে যায়।
২০১৮-এর আগস্টে অ্যাপল প্রথম আমেরিকান কোম্পানি হিসেবে ১ ট্রিলিয়ন ডলার ভ্যালু অতিক্রম করে। এই যাত্রা পাড়ি দিতে কোম্পানিটি সময় নেয় ৪২ বছর। তার ঠিক ২ বছর পরই কোম্পানিটির ভ্যালু দাঁড়ায় ২ ট্রিলিয়ন ডলারে। আর পরবর্তী ১ ট্রিলিয়ন ডলার বাড়তে সময় নিল ১৬ মাস ১৫ দিন।
একটি কোম্পানির ভ্যালু এই পর্যায়ে যেতে পারে তা কয়েক বছর আগেও অসম্ভব ভাবা হতো। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে মাইক্রোসফটও অ্যাপলের পথ ধরে ৩ ট্রিলিয়ন ডলার কোম্পানিতে পরিণত হতে পারে।
অ্যাপল ইনকর্পোরেটেড যুক্তরাষ্ট্রের একটি বহুজাতিক প্রযুক্তি কোম্পানি, যারা ভোক্তাদের জন্য ইলেকট্রিক গ্যাজেট ও স্মার্ট ডিভাইস বানিয়ে থাকে। এ ছাড়া তারা বিভিন্ন সফটওয়্যারকেন্দ্রিক সেবা ডিজাইনও ডেভেলপ করে থাকে। তাদের হার্ডওয়্যার গেজেটের মধ্যে রয়েছে স্মার্টফোন, আইপ্যাড, ল্যাপটপ, মিডিয়া প্লেয়ার ও স্মার্টওয়াচ। সফটওয়্যার পণ্যের মধ্যে রয়েছে ম্যাক অপারেটিং সিস্টেম, আইওএস অপারেটিং সিস্টেম ও সাফারি ওয়েব ব্রাউজার। যোগাযোগের জন্য এদের রয়েছে ফেসটাইম অ্যাপ। বিনোদন জগতের জন্য রয়েছে অ্যাপল টিভি। ভবিষ্যতে কোম্পানিটি ইলেকট্রিক গাড়িও আনতে চায়।
দেশের বাজারে মিব্রো লাইট ২ ব্লুটুথ কলিং স্মার্টওয়াচ এনেছে বাংলাদেশে ব্র্যান্ডটির বিপণন প্রতিষ্ঠান মোশন ভিউ।
মঙ্গলবার ফেসবুক লাইভে এসে দেশের বাজারে স্মার্টওয়াচটির উন্মোচন করে প্রতিষ্ঠানটি।
যা আছে স্মার্টওয়াচে
মিব্রো লাইট ২ স্মার্টওয়াচে রয়েছে ১ দশমিক ৩ ইঞ্চির অ্যামোলেড অলওয়েজ অন ডিসপ্লে, যার রেজ্যুলেশন ৩৬০*৩৬০ পিক্সেল। বৃত্তাকার ডিভাইসটিতে অ্যামোলেড ডিসপ্লে থাকায় রোদেও খুব পরিষ্কারভাবে ডিসপ্লে দেখা যায়। এতে নিজের পছন্দমতো ওয়াচফেস সেট করা যায়।
কলিং স্মার্টওয়াচ হওয়ায় মিব্রো লাইট ২ ডিভাইসটিতে রয়েছে উন্নতমানের ব্লুটুথ সংযোগ। সে জন্য স্মার্টওয়াচটিতে দেয়া হয় ৫.১ ব্লুটুথ সংস্করণ। ফোন কল করা কিংবা রিসিভ করে কথা বলার জন্য মিব্রো লাইট ২ স্মার্টওয়াচটিতে রয়েছে মাইক্রোফোন ও স্পিকার।
দীর্ঘ ব্যাটারি ব্যাকআপ দিতে স্মার্টওয়াচটিতে রয়েছে ৩৫০ এমএএইচের ব্যাটারি। ব্যাটারি ফুল চার্জ হতে প্রায় ২ ঘণ্টা সময় লাগে। আর একবার ফুল চার্জে স্মার্টওয়াচটি চলে ১২ দিন। ফোনে আসা সব নোটিফিকেশন স্মার্টওয়াচ থেকেই দেখা যাবে এবং প্রয়োজনে মেসেজের রিপ্লাইও করা যাবে। হরেক রকম সেন্সরযুক্ত মিব্রো লাইট ২ ব্রান্ডের স্মার্টওয়াচে ৬০টির বেশি নানা স্পোর্টস মোড যুক্ত করা আছে।
মিব্রো লাইট ২ স্মার্টওয়াচটিতে রয়েছে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন ফিচার। এতে দেখা যাবে হার্ট রেট, রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা, ঘুমের পরিমাণ, শ্বাস-প্রশ্বাস। হাঁটাচলা ও চলাচলের সব ধরনের রেকর্ড এই স্মার্টওয়াচে পাওয়া যাবে। এর সঙ্গে রয়েছে লেদার ও সিলিকন স্ট্র্যাপ।
৫৪ দশমিক ২ গ্রাম ওজনের স্মার্টওয়াচটিতে রয়েছে ২এটিএম গ্রেডের ওয়াটার রেজিস্ট্যান্স। ফলে এটি হাতে থাকা অবস্থায় পানির নিচে টানা ২০ মিনিট থাকা যাবে, এমনকি এটি পরে সাঁতার কাটাও যাবে।
দাম
স্মার্টওয়াচটির দাম ৫ হাজার ৫৯০ টাকা। সেই সঙ্গে মিলবে ১২ মাসের ওয়ারেন্টি সেবা, তবে ঈদের আগে ওয়াচটি কিনলে ক্রেতারা মোশন ভিউয়ের ওয়েবসাইটে একটি ভাউচার পাবেন এবং সেটি দিয়ে অনলাইনে অর্ডার করার ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ ছাড় মিলবে।
দেশব্যাপী ৬৪ জেলায় মোশন ভিউয়ের বিপণন চালু আছে। নিজস্ব ৪৫টি ব্র্যান্ড আউটলেট, ২ হাজারের বেশি রিটেইল ও অনলাইনে প্রতিষ্ঠানটির পণ্য পাওয়া যায়।
বিভিন্ন ধরনের ব্র্যান্ডের অরিজিনাল স্মার্ট গ্যাজেট (যেমন: স্মার্ট ওয়াচ, ইয়ারফোন, স্মার্ট টিভি, স্মার্ট হোম অ্যাপ্লায়েন্স ইত্যাদি) গ্রাহকের দোড়গোড়ায় পৌঁছে দিতে এবং সেগুলোর পূর্ণ বিক্রয়োত্তর সেবা নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
বাবা-মায়ের সম্মতি ছাড়াই শিশুদের কাছ থেকে ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করার দায়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকার মাইক্রোসফটকে ২০ মিলিয়ন ডলার জরিমানা করেছে।
ফেডারেল ট্রেড কমিশন (এফটিসি) অভিযোগ করেছে, ২০১৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত মার্কিন বহুজাতিক কম্পিউটার প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফট ১৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের কাছ থেকে তাদের বাবা-মায়ের অনুমতি ছাড়াই ব্যক্তিগত ডেটা সংগ্রহ করেছে। তাদের অনুমতি ছাড়াই মাইক্রোসফট এই শিশুদের এক্সবকস গেমিং সিস্টেমে সাইন আপ করেছে এবং এই তথ্যটি ধরে রেখেছে।
একটি অ্যাকাউন্ট খুলতে ব্যবহারকারীদের তাদের প্রথম এবং শেষ নাম, একটি ইমেল ঠিকানা এবং জন্ম তারিখ দিতে হয়েছিল। এফটিসি বলেছে, মাইক্রোসফট চিলড্রেনস অনলাইন প্রাইভেসি প্রোটেকশন অ্যাক্ট বা সিওপিপিসি নামে একটি আইন লঙ্ঘন করেছে।
এফটিসির ব্যুরো অফ কনজিউমার প্রোটেকশনের প্রধান স্যামুয়েল লেভিন বলেছেন, ‘আমাদের প্রস্তাবিত আদেশটি অভিভাবকদের জন্য এক্সবকস-এ তাদের বাচ্চাদের গোপনীয়তা রক্ষা করা সহজ করে তোলে এবং মাইক্রোসফট বাচ্চাদের সম্পর্কে কী তথ্য সংগ্রহ করতে এবং ধরে রাখতে পারে তা সীমিত করে।’
সিওপিপিএ আইনের অধীনে, ১৩ বছরের কম বয়সী বাচ্চাদের লক্ষ্য করে অনলাইন পরিষেবা এবং ওয়েবসাইটগুলোকে অবশ্যই তাদের সংগ্রহ করা ব্যক্তিগত তথ্য সম্পর্কে অভিভাবকদের অবহিত করতে হবে এবং শিশুদের কাছ থেকে সংগৃহীত কোনো ব্যক্তিগত তথ্য সংরক্ষণ ও ব্যবহার করার আগে পিতামাতার যাচাইযোগ্য সম্মতি নিতে হবে। সূত্র: বাসস
ভিডিও শেয়ার করার প্ল্যাটফর্ম টিকটকে অ্যাকাউন্ট খুলেছে আওয়ামী লীগ।
শুক্রবার ফেসবুকে দলের ভেরিফায়েড পেজ থেকে এই ঘোষণা দেয়া হয়।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের টিকটক অ্যাকাউন্ট ফলো করুন। একই সাথে বন্ধুদের ইনভাইটেশন দিন।
পোস্টে আওয়ামী লীগের টিকটক অ্যাকাউন্টের লিঙ্ক (https://www.tiktok.com/@albdofficial) যুক্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে দেয়া হয়েছে কিউআর কোডও।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিশ্বায়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এগিয়ে যেতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার স্মার্ট বাংলাদেশ ও মানবিক রাষ্ট্র গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে ‘স্বপ্নের স্মার্ট বাংলাদেশ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’ বইয়ের প্রকাশনা উৎসবে মঙ্গলবার অনলাইনে যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদের ডিন এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু গ্রন্থিত বইটির ২৩টি অধ্যায়ে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার বিভিন্ন দিক বিধৃত হয়েছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাছান মাহমুদ বলেন, “প্রথমত তিনটি শিল্প বিপ্লব থেকে আমরা বহু বছর পিছিয়ে ছিলাম। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এবং প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের ধারণা থেকে আমরা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে বাংলাদেশকে সম্পৃক্ত করতে সক্ষম হয়েছি। আর এ জন্যই আমরা ২০০৮ সালে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ স্লোগান দিয়েছিলাম, মানুষের সামনে উপস্থাপন করেছিলাম।”
ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সুবিধার উদাহরণ তুলে ধরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘২০২০ সালে করোনা মহামারি দেখা দেয়ার পর যখন পুরো পৃথিবীর জনজীবন থমকে গিয়েছিল, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়েছিল, তখন বাংলাদেশ থমকে যায়নি। সরকার পরিচালনা থেকে শুরু করে শিক্ষার্থীদের পাঠদানসহ সবকিছু চালু ছিল।
‘সে কারণে ২০২০-২১ অর্থবছরে বিশ্বের ধনাত্মক জিডিপি অর্জনকারী মাত্র ২০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ তৃতীয়। সেই অর্থবছরেই আমরা মাথাপিছু আয়ে ভারতকে ছাড়িয়েছি। নিক্কি ইনস্টিটিউট ও ব্লুমবার্গের যৌথ জরিপে করোনা মহামারি মোকাবিলার ক্ষেত্রেও বিশ্বে আমরা পঞ্চম এবং উপমহাদেশে প্রথম। ডিজিটাল বাংলাদেশ রচনা এবং প্রত্যন্ত জনপদের মানুষের কাছেও ইন্টারনেট সুবিধা পৌঁছার ফলে এসব সম্ভব হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘সরকার পরিচালনায় ডিজিটাল প্রযুক্তি সর্বতোভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। সেই প্রেক্ষাপটে আমরা আগামী নির্বাচন সামনে রেখে যে নতুন ধারণা মানুষের সামনে উপস্থাপন করতে চাই সেটি হচ্ছে স্মার্ট বাংলাদেশ।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট সমাজ, স্মার্ট সরকার এবং স্মার্ট ব্যবসা দরকার। সেই চারটি মূল প্রতিপাদ্যের ওপর গ্রন্থটির রচয়িতা অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবুকে ধন্যবাদ জানাই।’
গ্রন্থকার ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. ছাদেকুল আরেফিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম মাকসুদ কামাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভুঁইয়া এবং জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন:‘র্যাপিড ক্যাশ’ নামে চীনের তৈরি একটি মোবাইল অ্যাপস আতঙ্কের নামান্তর হয়ে উঠেছে। এই অ্যাপ ব্যবহার করে অনলাইনে চলছে ঋণ দেয়ার নামে প্রতারণা। বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে সাধারণ মানুষকে টার্গেট এই প্রতারণার ফাঁদ পেতেছে একটি চক্র।
র্যাপিড ক্যাশ হলো একটি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশন। অ্যাপটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল সেটে ডাউনলোড করার সঙ্গে সঙ্গে সেটটির পুরোপুরি এক্সেস নিয়ে নেয় অপর পক্ষ। একইসঙ্গে প্রতারক চক্রের হাতে চলে যায় ওই মোবাইল সেট ব্যবহারকারীর সব কন্ট্যাক্ট নম্বর, গ্যালারির তথ্য, ছবি, ভিডিও এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
বাংলাদেশে ব্যবহারযোগ্য যে কোনো মোবাইল সিমের নম্বরের মাধ্যমে অ্যাপটি রেজিস্ট্রেশন করতে হয়। রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে র্যাপিড ক্যাশ ব্যবহারকারীকে অযাচিতভাবে পাঁচশ’ বা এক হাজার টাকার একটি ক্ষুদ্র ঋণ দেয়া হয়। আর ঋণ দেয়ার সময় থেকেই ওই টাকার ওপর উচ্চ হারে সুদ আরোপ করা হয়।
ঋণ দেয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই সুদ-আসল বা কমপক্ষে সুদের টাকা পরিশোধের জন্য র্যাপিড ক্যাশ তাদের হটলাইন নম্বরের মাধ্যমে হোয়াটসঅ্যাপে ফোন দেয়। কোনো গ্রাহক তা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সংশ্লিষ্টরা তাকে বিভিন্নভাবে প্রতারণা বা ব্ল্যাকমেইল করা শুরু করে।
ভুক্তভোগীদের তথ্যে জানা যায়, কেউ কেউ সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধের পরও তাদেরকে জোর করে আবার ঋণ গছিয়ে দেয়া হয়। একইভাবে ঋণের টাকা ও সুদ পরিশোধে বাধ্য করা হয়। ক্ষেত্রবিশেষে ভয়-ভীতিও দেখানো হয়।
চক্রের সদস্যরা বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের নাগরিকদের ফাঁদে ফেলে এই প্রতারণা করে আসছিল।
বাংলাদেশে চক্রটি অ্যাপসের একাউন্ট খোলার মাধ্যমে ৫০০ থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ দিতো। সময়মতো টাকা পরিশোধ না করলে অ্যাপসের মাধ্যমে গ্রাহকের মোবাইল ফোন থেকে ব্যক্তিগত তথ্য ও ছবি হাতিয়ে নিয়ে সেগুলোকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে হুমকি দিতো। এমনকি গ্রাহকের ছবি এডিট করে আপত্তিকর ছবির সঙ্গে জুড়ে দিয়ে ছড়িয়ে দিতো।
এই প্রতারক চক্রের খপ্পড়ে পড়া এক ব্যক্তি সম্প্রতি রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলার তদন্ত করতে গিয়ে চক্রটির সন্ধান পায় এন্টি টেররিজম ইউনিট (এটিউ)। মঙ্গলবার রাজধানীর উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টরে একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে র্যাপিড অ্যাপের কাজে ব্যবহৃত কল সেন্টারটির পরিচালক মহিউদ্দিন মাহিসহ ২৬ জনকে আটক করেছে এটিউ’র সাইবার ক্রাইম উইং। তবে এই চক্রের মাস্টারমাইন্ড চীনা নাগরিক বলে দাবি মাহির। তাকে পায়নি এটিইউ। ওই বাড়ি থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ১০টি ল্যাপটপ ও ৬টি ডেস্কটপ কম্পিউটার জব্দ করা হয়েছে।
রাজধানীর বারিধারায় এটিইউ’র প্রধান কার্যালয়ে বুধবার সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির সাইবার ক্রাইম উইং-এর পুলিশ সুপার (এসপি) ফারহানা ইয়াসমিন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে এই চক্রের সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করে আসছিলেন মহিউদ্দিন মাহি। এই যুবক চীনের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে চার বছর পড়াশোনা করেছেন। চীনা ভাষায় কথা বলতে পারদর্শী। আর ওই ভাষার ওপর এমন দখল থাকায় এটিকে তিনি প্রতারণার কাজে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে আসছিলেন।
‘বাংলাদেশে বসেই চক্রটি প্রতিবেশী দেশ ভারত এবং পাকিস্তানের নাগরিকদেরও একইভাবে ঋণের ফাঁদে ফেলে প্রতারণা করে আসছিল। আর ঋণের টাকা ও উচ্চ হারের সুদ আদায় করাতো মোবাইল ব্যাংকিয়ের মাধ্যমে।’
ফারহানা ইয়াসমিন বলেন, ‘প্রতারক চক্রটি তাদের শিকার হিসেবে সহজ-সরল সাধারণ মানুষকে টার্গেট করে এগুতো। প্রথমে টার্গেট ব্যক্তি থেকে মোবাইলের মাধ্যমে একাউন্ট খোলার নামে ভোটার আইডি ও ছবি নিত। গ্রাহকরা এই কাজগুলো করার সময় চক্রটি কৌশলে মোবাইলের কল লিস্ট, গ্যালারির ছবি, ভিডিওসহ সব তথ্য হাতিয়ে নিত।
‘এভাবে শিকারকে কব্জায় নেয়ার পর অযাচিতভাবে ঋণ গছিয়ে দিয়ে উচ্চ হারে সুদ আদায় শুরু করত। কেউ দিতে আপত্তি জানালেই তাকে ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশের হুমকি দিত। এই অ্যাপটি বানিয়েছে চীনারা। তারা এটাকে এভাবে বানিয়েছে যে ডাউনলোড করলেই সব তথ্য হাতিয়ে নেয়া যায়।’
গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যে উল্লেখ করে এটিইউ’র এই কর্মকর্তা বলেন, মূলত চক্রটি সহজে লোন দেয়ার ফাঁদে ফেলে আসছিল সাধারণ মানুষকে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রচার করা এই ফাঁদে মানুষ সহজে টাকা পাওয়ার জন্য পা দিত। এরপর আর চাইলেও বের হতে পারত না। এমন কি বাড়ি-ঘর বিক্রি করে হলেও তাদের টাকা দিতে হতো।
চক্রটি মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা আদায় করত। ওরা যোগাযোগের জন্য হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রাম ব্যবহার করত। আর একটি নাম্বর ব্যবহার করার পর সেটি বন্ধ করে দিত। এমনকি কোনো গ্রাহককে হুমকি দিয়ে আপত্তিকর ছবি পাঠিয়েও তা ডিলিট করে দিত। কোনো আপত্তিকর তথ্য নিজেদের কম্পউটারে রাখত না। আর ফটোশপে এসব ছবি বানানোর জন্য আলাদা একটি দল রয়েছে।
এসপি ফারহানা আরও বলেন, ‘অভিযানে গিয়ে আমরা দেখতে পাই যে চক্রটি একটি বাসার ভেতরে অবস্থান নিয়ে গোপনে এই প্রতারণার নেটওয়ার্ক চালাচ্ছে। সেখানে এক দল তরুণ-তরুণী হিন্দি ও উর্দু ভাষায় ভারতীয় এবং পাকিস্তানি নাগরিকদের সঙ্গে কথা বলছে।
ভারত ও পাকিস্তানে একই অ্যাপস থেকে ভিন্ন নামে ঋণ দেয়া হচ্ছে। একই কায়দায় সেখানে ঋণগ্রহীতাদের সঙ্গে করা হচ্ছে প্রতারণা। ওই দুই দেশে ৫০০ টাকা থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত ক্ষুদ্র ঋণ দিয়েছে তারা। আর সময় গড়িয়ে এর বিপরীতে তারা আদায় করছে ২০ থেকে ২২ লাখ টাকা।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই প্রতারক চক্রে কর্মী হিসেবে জড়িতদের ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা করে বেতন দেয়া হতো। পাশাপাশি গ্রাহকের কাছ থেকে আদায় করা টাকার একটি অংশ বোনাস হিসেবে পায় তারা। এভাবে একেকজন কর্মী মাসে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা করে পেতো। আমরা ধারণা করছি এই চক্রের এমন আরও একাধিক কল সেন্টার রয়েছে।’
আরও পড়ুন:বেশ বিড়ম্বনায় পড়েছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ব্যবহারকারীরা। কারো প্রোফাইলে শখের বশে একটু ঢুঁ মারতে গিয়ে রীতিমতো গণ্ডগোল পাকিয়ে ফেলছেন কেউ কেউ। স্বয়ংক্রিয়ভাবেই চলে যাচ্ছে বন্ধুত্বের আবেদন গ্রহণের অনুরোধ।
শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে এমন তথ্য শেয়ার করছেন অনেকে। কেউ বলছেন, প্রচুর ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাচ্ছেন, কেউ বা বলছেন, অটো রিকোয়েস্ট চলে যাচ্ছে কারো কাছে।
ফেসবুক অবশ্য এখনও বিবৃতি দিয়ে এ ব্যাপারে কিছু জানায়নি। কথা বলেনি কোনো গণমাধ্যমের সঙ্গেও। তবে ফেসবুক ব্যবহারকারীরা বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করতে দিচ্ছেন স্ক্রিন শটও।
ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটার ওয়েবসাইটে কমিউনিটি ক্যাটাগরিতে গিয়ে প্রশ্ন রেখে আসছেন ব্যবহারকারীদের অনেকে। সেখানেও এ নিয়ে চলছে আলোচনা।
বাংলাদেশ ছাড়াও আরও কয়েকটি দেশে এমন সমস্যার কথা শোনা যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে এসেছে এ তথ্য।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অনাকাঙিক্ষত ‘বাগ’ এই সমস্যা সৃষ্টি করছে। তবে আসলে কী ঘটেছে তা অবশ্য কর্তৃপক্ষই জানাতে পারবে ঠিকঠাক।
আরও পড়ুন:ফ্রিল্যান্সাররা কাজ করে নিজে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি দেশের জন্য বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছেন। কিন্তু পেশা হিসেবে এটি এখনও অত বেশি প্রতিষ্ঠিত হয়নি। যার কারণে ফ্রিল্যান্সারদের নানা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয়। এ কারণে ফ্রিল্যান্সারদেরকে সরকারিভাবে পরিচয়পত্র দেয়া হবে। সেই সঙ্গে খুব অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশে ইন্টারন্যাশনাল পেমেন্ট গেটওয়ে পে-পাল চালু করা হবে। ফ্রিল্যান্সারদের প্রাণের দাবি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী এটা চালুর উদ্যোগ নিয়েছেন।
শুক্রবার দুপুরে বাগেরহাট জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত স্মার্ট কর্মসংস্থান মেলায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এ সব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, স্মার্ট বাগেরহাট গড়ার জন্য যা যা প্রয়োজন প্রধানমন্ত্রী তা করবেন। বাগেরহাটের শিক্ষিত যুবকদের কর্মসংস্থানের জন্য জেলা সদরে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন করা হবে। সেই সঙ্গে প্রতিটি উপজেলায়ও তথ্য প্রযুক্তি ও ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ে প্রশিক্ষণ সেন্টার করা হবে। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতি বছর কয়েক হাজার দক্ষ ফ্রিল্যান্সার বের হবে। যারা নিজেরা আয় করার পাশাপাশি অন্যদেরও কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করতে পারবেন।
এর আগে বাগেরহাট-২ (কচুয়া-সদর) আসনের সংসদ সদস্য শেখ তন্ময় দিনব্যাপি এই স্মার্ট কর্মসংস্থান মেলার উদ্বোধন করেন। বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমানের সভাপতিত্বে স্মার্ট মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) আসনের সংসদ সদস্য আমিরুল আলম মিলন, পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল ইসলাম, ব্রাক-কুমন-এর প্রধান নেহাল বিন হাসান প্রমুখ।
আইসিটি ডিভিশন, ডিজিটাল বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর, এটুআই, আইডিয়া, ইডিজিই আয়োজিত দিনব্যাপি ৩৫টি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান তাদের স্টল রয়েছে। শিক্ষিত ও দক্ষ তরুণ-তরুণীরা চাকরির জন্য নিবন্ধন করেছেন এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্টলে তাদের জীবন বৃত্তান্ত দিয়েছেন। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের চাহিদা অনুযায়ী অনেক প্রার্থীদের চাকরি দিয়েছে।
এ ছাড়া মেলা উপলক্ষে আইসিটি ডিভিশনের পক্ষ থেকে ২০ জন ফ্রিল্যান্সারকে ২০টি ল্যাপটপ এবং ৪০ জন উদ্যোক্তাকে নগদ ৫০ হাজার টাকা করে দেয়া হয়।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য