ভারতে এক দিনের ব্যবধানে করোনাভাইরাস শনাক্তের হার বেড়েছে ৩৫ শতাংশ।
দেশটিতে শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে শনিবার একই সময় পর্যন্ত করোনা শনাক্ত হয়েছে ২২ হাজার ৭৭৫ জনের দেহে। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় ভারতে করোনা শনাক্তের সংখ্যা ছিল ১৬ হাজার ৭৬৪।
দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম দেশটিতে করোনার অতি সংক্রামক আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন শনাক্তের সংখ্যাও বাড়ছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের শনিবারের ডেটা অনুযায়ী, ভারতে ওমিক্রন শনাক্তের সংখ্যা ১ হাজার ৪৩১। ভ্যারিয়েন্টটি সবচেয়ে বেশি (৪৫৪) শনাক্ত হয়েছে মহারাষ্ট্রে।
দেশটির পাঁচ রাজ্যে ওমিক্রন শনাক্তের সংখ্যা বেশি। এ তালিকায় মহারাষ্ট্রের পরের অবস্থানে আছে দিল্লি। সেখানে শনাক্তের সংখ্যা ৩৫১। তামিলনাড়ু, গুজরাট ও কেরালায় ওমিক্রন শনাক্তের সংখ্যা যথাক্রমে ১১৮, ১১৫ ও ১০৯।
করোনায় বড় প্রাণহানি দেখা ভারতে গত ২ ডিসেম্বর প্রথম ওমিক্রন শনাক্ত হয়। ভ্যারিয়েন্টটি এখন ২৩টি রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে।
ভারতে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৪০৬ জনের। দেশটির বেশ কয়েকটি রাজ্যে নতুন বছরের শুরুতে করোনা শনাক্তের সংখ্যা বেড়েছে।
মহারাষ্ট্রে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৮ হাজার ৬৭ জনের শরীরে। পশ্চিমবঙ্গ ও নয়াদিল্লিতে এ সংখ্যা যথাক্রমে ৩ হাজার ৪৫১ ও ১ হাজার ৭৯৬।
এমন বাস্তবতায় ভারতের স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বিজ্ঞানী ড. সৌম্য স্বামীনাথান।
তার আশঙ্কা, করোনা অত্যন্ত দ্রুতগতিতে ছড়াবে। এত বেশি মানুষ অসুস্থ হবে যে, হাসপাতালের সাধারণ বেড থেকে আইসিইউ ও আউটডোর ভরে যাবে।
এ অবস্থা মোকাবিলায় ভারতের স্বাস্থ্য অবকাঠামো ঢেলে সাজানোর পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
এদিকে করোনার সংক্রমণ মোকাবিলার অংশ হিসেবে শনিবার ‘কোউইন’ পোর্টালে ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের জন্য করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকার রেজিস্ট্রেশন চালু করেছে।
এ নিয়ে দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী মানসুখ মান্দাভিয়া বলেন, ‘শিশুরা নিরাপদ থাকলে দেশের ভবিষ্যৎ নিরাপদ। আমি টিকা দেয়ার জন্য ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের নাম নথিভুক্ত করতে তাদের পরিবারের সদস্যদের অনুরোধ করছি।’
দেশের পরিস্থিতি চিন্তা করে রমজান মাসেও দলের কর্মসূচি চলবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রাজধানীর বেইলি রোডের একটি ক্লাবে ওলামা-মাশায়েখ এবং এতিমদের সম্মানে বিএনপি আয়োজিত ইফতার মাহফিলে শুক্রবার তিনি এ কথা জানান।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই রমজান মাসেও যেসব কারণে মানুষের কষ্ট হচ্ছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির চলমান আন্দোলন অব্যাহত রাখব। যদিও রমজান মাসে আমাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি দেয়ার কথা নয়।’
বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও নানা ঘটনার প্রতিবাদে এবং পূর্বঘোষিত ১০ দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আবারও নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন বিএনপি মহাসচিব।
এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘আজকে দেশের যে অবস্থা তৈরি হয়েছে, আমরা বাধ্য হয়েছি এ রমজান মাসেও সাধারণ মানুষকে, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার যে আন্দোলন তা চলমান রাখতে এ কর্মসূচি দিয়েছি। আমরা আশা করব, সেই কর্মসূচিতে সাধারণ মানুষ অংশ নেবে।’
মির্জা ফখরুল ঘোষিত কর্মসূচিগুলো হলো- ১ এপ্রিল সারা দেশের সব মহানগর ও জেলায় বেলা ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি; ৮ এপ্রিল সারা দেশের সব মহানগরের থানা পর্যায়ে ও জেলার উপজেলা পর্যায়ে বেলা ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি; ৯ থেকে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত বিভাগীয় শহরগুলোতে বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সারা দেশের সব ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রচারপত্র বিলি ও মানববন্ধন করা হবে।
এর মধ্যে ৯ এপ্রিল রংপুর ও চট্টগ্রাম বিভাগ, ১০ এপ্রিল রাজশাহী ও সিলেট বিভাগ, ১১ এপ্রিল খুলনা ও কুমিল্লা বিভাগ, ১২ এপ্রিল ঢাকা ও বরিশাল বিভাগ, ১৩ এপ্রিল ময়মনসিংহ ও ফরিদপুর বিভাগে এসব কর্মসূচি পালন করা হবে।
এ ছাড়া ২৮ মার্চ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত সারা দেশের সব জেলা/মহানগর, উপজেলা, থানা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় সভা, দুস্থ, অসহায় ও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সহায়তাসহ বিভিন্ন গণসংযোগমূলক কর্মসূচিতে বিএনপির সব পর্যায়ের নেতা-কর্মী অংশগ্রহণ করবেন।
ইফতারে অংশ নেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমানউল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার ও শায়রুল কবির খান প্রমুখ।
আরও পড়ুন:রাজধানীর তুরাগে মাদক মামলার আসামি ধরতে গিয়ে ছুরিকাঘাতে এক পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন।
শুক্রবার রাত সাড়ে সাতটার দিকে তুরাগের ফুলবাড়িয়া বাজার এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
আহত তুরাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ৪৫ বছর বয়সী শাহিনুর রহমানকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ভর্তি করা হয়েছে।
তুরাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুদ হাওলাদার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ফুলবাড়িয়া এলাকার একটি বাসায় রাত সাড়ে সাতটার দিকে মাদক মামলার আসামি রশিদকে গ্রেপ্তার করতে গিয়ে আসামির ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন এসআই শাহিনুর। তিনি বুক এবং পেটের মাঝামাঝি স্থানে আঘাতপ্রাপ্ত হন।
ওসি জানান, গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিক্যালের জরুরি বিভাগে নেয়া হয়।
পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, আসামি রশিদের বিরুদ্ধে মাদক মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
আরও পড়ুন:আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভা হবে শনিবার।
এদিন সকাল সাড়ে ১১টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে।
দলের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
এতে বলা হয়, সভায় সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সংশ্লিষ্ট সবাইকে স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধি মেনে যথাসময়ে সভায় উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।
ঢাকার পুলিশ পরিদর্শক মামুন ইমরান খান হত্যা মামলার আসামি দুবাইয়ের স্বর্ণ ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম ওরফে আরাব খান ওরফে আপনের বিশ্বস্ত দুই সহযোগীর ওপর নজর রাখছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
ওই দুজন কক্সবাজারে থাকেন। তারা সম্পর্কে শ্যালক-দুলাভাই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তাদের পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন আরাব। এ সংক্রান্ত ভিডিও এখন ছড়িয়ে পড়েছে।
আরাব যে দুজনকে পরিচয়ে করিয়ে দেন তারা হলেন কক্সবাজার শহরের বাহারছড়ার বাসিন্দা শেফায়েত হোসেন জয় ও জসিম উদ্দিন নাহিদ। তাদের ওপর নজর রাখা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
একটি ভিডিওতে দেখা যায়, আরাব খান ওই দুই যুবককে পরিচয় করিয়ে দেন। তিনি ওই ভিডিওতে বলেন, জয় ও জসিম কক্সবাজারের মাফিয়া। জয় ‘কিলার’, নাহিদ আগামী নির্বাচনের ‘এমপি প্রার্থী’।
তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০২২ সালের ৮ জুলাই আরাব খানের তার ফেসবুক আইডি থেকে লাইভ ভিডিওটি পোস্ট করেন।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, কক্সবাজার শহরের বাহারছড়ার বাসিন্দা ও জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোশাররফ হোসেন দুলালের ছেলে জয় ও তার ভগ্নিপতি নাহিদ প্রতিমাসে দুবাই আসা-যাওয়া করেন। তাদের দৃশ্যমান কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান না থাকলেও হঠাৎ করে আলিশান গাড়িতে চলাফেরা, বিলাসবহুল জীবন যাপন এলাকার মানুষের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, কয়েক বছর আগেও নাহিদ কক্সবাজারের রিগ্যাল প্যালেস নামের একটি আবাসিক হোটেলে ফ্রন্ট ডেস্ক ম্যানেজার পদে চাকরি করতেন। কিন্তু কয়েক বছরে তিনি রাজধানী ঢাকার অভিজাত এলাকায় দুটি ফ্ল্যাট কিনেছেন।
আরাব খানের সঙ্গে নাহিদ-জয়ের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশের পর তাদের নিয়ে এ প্রতিবেদকের কাছে আরও তথ্য দিয়েছেন ফেনীর আবু তৈয়ব রকি নামের ব্যবসায়ী।
ট্রাভেলিং এজেন্সির ব্যবসা করা এই ব্যক্তির অভিযোগ, কাতার বিশ্বকাপ দেখে ফেরার পথে প্রবাসে থাকা পরিবারের সদস্যদের ৬০ ভরি স্বর্ণ নিয়ে ফিরছিলেন ফেনীর চার বাসিন্দা। তাদের সঙ্গে যোগ দেন জয় ও নাহিদ। ঢাকার বিমানন্দরে নামার পর নাহিদ ও জয় তাদের রাজধানীর বসুন্ধরার ফ্ল্যাটে বিশ্রামের অজুহাতে নিয়ে যান। পরে তারা সেখান থেকে ওই স্বর্ণ নিয়ে সটকে পড়েন।
তিনি আরও জানান, যেসব বাংলাদেশি দুবাইতে স্বর্ণ কিনতে যান, নাহিদ ও জয় তাদের টার্গেট করেন। দেশে ফেরার পর সেই স্বর্ণ লুট করে তা বিক্রি করে দেন শ্যালক-দুলাভাই।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত নাহিদ ও জয়ের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তারা কল রিসিভ করেননি।
এ নিয়ে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলাম বলেন, ‘’সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভিযুক্ত দুজনের নানা তথ্য এসেছে। এসব বিষয়ে পুলিশ কাজ শুরু করেছে। অভিযুক্ত দুজন পুলিশের নজরদারিতে রয়েছে।’
রেড নোটিশ
পুলিশ কর্মকর্তা হত্যা মামলার পলাতক আসামি সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে অবস্থানরত আরাব খান ওরফে রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করেছে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোল।
রেড নোটিশ পাওয়া বাংলাদেশিদের তালিকায় ছবিসহ যুক্ত করা হয়েছে তার নাম।
ইন্টারপোলের তালিকায় আরাব নামটি উল্লেখ করা হয়নি। সংস্থাটির ওয়েবসাইটে তার পূর্ণ নাম রবিউল ইসলাম ও ডাকনাম রবিউল লেখা হয়েছে। জন্মস্থান দেখানো হয়েছে বাগেরহাট; বয়স উল্লেখ করা হয়েছে ৩৫ বছর।
বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে আরাবের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছে ইন্টারপোল।
এর আগে ১৮ মার্চ পুলিশ কর্মকর্তা হত্যা মামলার ফেরারি আসামি আরাব খান ওরফে রবিউল ইসলামকে দেশে ফিরিয়ে আনতে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলকে চিঠি দেয়ার খবর জানায় বাংলাদেশ পুলিশ।
ইন্টারপোল বাংলাদেশ ডেস্কের এক কর্মকর্তা ওই দিন বিকেলে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা এই বিষয়ে (আরাবকে দেশে ফেরানো) ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ইন্টারপোলকে মেইল করেছি। তারা আমাদের দেয়া তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে।’
আরাবকে নিয়ে আলোচনার শুরু যেখান থেকে
পুলিশ পরিদর্শক মামুন এমরান খান হত্যা মামলার আসামি আরাব খান ওরফে রবিউল ইসলাম আলোচনায় আসেন মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে গোল্ড জুয়েলারি শপ ‘আরাব জুয়েলার্স’ উদ্বোধন ঘোষণাকে কেন্দ্র করে এই আলোচনা শুরু হয়। শপটির লোগো বানানো হয় ৬০ কেজি স্বর্ণ দিয়ে।
আরাবের এই জুয়েলারি শপের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ পান বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান, ইউটিউবার হিরো আলমসহ বেশ কয়েকজন। েএ নিয়ে সাকিব আল হাসানের ভিডিও বার্তার পর বিষয়টি ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) নজরে আসে।
ফেরারি আসামি আরাব খানের মালিকানাধীন আরাব জুয়েলার্স উদ্বোধন হয় ১৫ মার্চ রাতে। দুবাইয়ে নিউ গোল্ড সোক হিন্দ প্লাজার ৫ নম্বর ভবনের ১৬ নম্বর দোকানটি তার। সাকিবসহ অন্যরা এই আয়োজনে অংশ নেন।
ডিবি মতিঝিল বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘পুলিশ পরিদর্শককে হত্যা মামলার চার্জশিট হয়েছে অনেক আগেই। রবিউল চার্জশিটভুক্ত পলাতক আসামি। জুয়েলারি শপ উদ্বোধনের ঘোষণার পর আমরা আইডেন্টিফাই করি, যে ব্যক্তি আরাব খান নামে আইডিটি পরিচালনা করছেন, তিনি পুলিশ পরিদর্শক মামুন এমরান খাঁন হত্যা মামলার আসামি রবিউল ইসলাম। তার ভারতীয় একটি পাসপোর্ট ও বাংলাদেশি পাসপোর্ট আমাদের কাছে রয়েছে।’
আরও পড়ুন:সব ধরনের বৈষম্য ও সাম্প্রদায়িকতামুক্ত সমতা ভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে দেশবাসীসহ বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা যুদ্ধ ও সংঘাত চাই না, নর-নারী-শিশু হত্যা আমাদের তীব্রভাবে ব্যথিত করে।
শনিবার ‘গণহত্যা দিবস’ উপলক্ষে শুক্রবার দেয়া এক বাণীতে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। খবর বাসসের
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা যুদ্ধ ও সংঘাত চাই না, নর-নারী-শিশু হত্যা আমাদের তীব্রভাবে ব্যথিত করে। আমরা শান্তিতে বিশ্বাস করি।
‘টেকসই শান্তি বিরাজমান থাকলে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়। রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর শান্তির নীতি অনুসরণ করি।’
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তান হানাদার বাহিনী বাংলাদেশে বিশ্বের বর্বরতম হত্যাযজ্ঞ পরিচালনা করে।
অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে প্রধানমন্ত্রী স্মরণ করেন একাত্তরের ২৫ মার্চের কালরাতে আত্মোৎসর্গকারী শহীদদের, যাদের তাজা রক্তের শপথ বীর বাঙালিদের অস্ত্রধারণ করে স্বাধীনতা অর্জন না করা পর্যন্ত জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করেছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হাজার বছর ধরে শৃঙ্খলিত বাঙালি জাতিকে মুক্ত করার প্রয়াসে সারাজীবন ত্যাগ স্বীকার করেছেন। আন্দোলন-সংগ্রামে অত্যন্ত দূরদর্শীতার সঙ্গে নেতৃত্ব প্রদান করেছেন।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমরা ২০০৮ সাল থেকে সবকটি নির্বাচনে জনগণের অকুণ্ঠ সমর্থন নিয়ে গত ১৪ বছরের বেশি সময় একটানা তাদের ভাগ্যোন্ননের জন্য কাজ করছি। এরই মধ্যে আমরা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মানবতা বিরোধী অপরাধী ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছি।
‘সংবিধানে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করেছি, ফলে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পথ বন্ধ হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেছি। প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারে গণহত্যা এড়াতে ভীত-সন্ত্রস্ত ১১ লাখের বেশি বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়েছি। আমরা জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে জিরো টলারেন্স নীতিতে কাজ করে যাচ্ছি।
‘ইতোমধ্যেই বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত করেছি। ২০৪১ সালের বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। আমরা বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০'প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করছি, ভবিষ্যত প্রজন্ম এই পরিকল্পনাকে সময়োপযোগী করে বাস্তবায়ন করতে পারবে।’
প্রধানমন্ত্রী ‘গণহত্যা দিবস’ উপলক্ষে নেয়া সব কর্মসূচির সাফল্য কামনা করেন।
আরও পড়ুন:বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল আলমগীরের মর্মবেদনা বোঝেন জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মির্জা ফখরুলদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা বিএনপির আভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নেই।
গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে শুক্রবার তিনি এ কথা বলেন। বিএনপি মহাসচিবের সাম্প্রতিক বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাতে এই বিবৃতি দেয়া হয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মির্জা ফখরুল আলমগীরের মর্মবেদনা আমরা বুঝি! প্রকৃতপক্ষে বিএনপির আভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে মির্জা ফখরুলদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই। সুদূর লন্ডন থেকে যে ওহি নাযিল হয়, যে সিদ্ধান্ত আসে মুখ বন্ধ করে তা মেনে নিতে বাধ্য হন ফখরুল সাহেবরা।’
তিনি বলেন, ‘দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামির প্রেসক্রিপশনে পরিচালিত হয় বিএনপি; অগণতান্ত্রিক ও অগঠনতান্ত্রিকভাবে কমিটি ভাঙে-গড়ে, বহিষ্কার-পুরস্কার নির্ধারিত হয় এবং কমিটি ও মনোনয়ন নিয়ে বাণিজ্য চলে।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আয়নার সামনে নিজের অসহায়-নিরুপায়-পরাধীন চেহারা দেখতে দেখতে বিএনপি মহাসচিব ফখরুল সাহেব জনগণের বাক-স্বাধীনতাকে ওই একই ফ্রেমে বন্দি করে ফেলেছে! তাই মির্জা ফখরুল সাহেব তোতা পাখির মতো সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগারে লিপ্ত থাকেন।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মানুষের বাক, ব্যক্তি ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলেছেন। মির্জা ফখরুলের এমন বক্তব্য ভূতের মুখে রাম নাম ছাড়া কিছু নয়! কারণ বিএনপি কখনোই জনগণের বাক-স্বাধীনতা ও জনমতকে ধারণ করেনি। বিএনপির জন্মই হয়েছিল বন্দুকের নলের মুখে জনগণকে জিম্মি করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের মধ্য দিয়ে।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সবসময় জনগণের বাক-স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের অবাধ সুযোগ প্রতিষ্ঠায় অবিরাম আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে আসছে। সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশে মানুষের বাক, ব্যক্তি ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা সুসংহত হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের মধ্য দিয়ে মতপ্রকাশের অনিরুদ্ধ দ্বার উন্মোচিত হয়েছে।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘অর্ধশতাধিক বেসরকারি টেলিভিশন, এফএম রেডিও, কমিউনিটি রেডিও এবং সহস্রাধিক সংবাদপত্রের নিবন্ধন দিয়ে সরকার মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সম্প্রসারিত করেছে। সেই সঙ্গে ডিজিটাল বাংলাদেশের কল্যাণে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাক, ব্যক্তি ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার দুয়ার উন্মুক্ত হয়েছে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মত প্রকাশের স্বাধীনতার সুযোগের অপব্যবহার করে মির্জা ফখরুলসহ বিএনপি নেতারা প্রতিনিয়ত চিরায়ত ভঙ্গিতে সরকারের বিরুদ্ধে নিলর্জ্জভাবে মিথ্যাচার করে যাচ্ছে। শুধু বাক-স্বাধীনতা ভোগ করাই নয়, নিজেদের ইচ্ছা মতো মনগড়া অপপ্রচার চালাতেও তারা কুণ্ঠাবোধ করে না।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘শেখ হাসিনা জনগণের কল্যাণে, গণ-আকাঙক্ষা ও প্রত্যাশাকে ধারণ করেই সরকার পরিচালনা করে আসছে। মানুষকে নির্বাক করে রাখতে নয় বরং গণমানুষের আশা-আকাঙক্ষা প্রতিধ্বনিকে প্রতিষ্ঠা করতেই পরিচালিত হয় সরকারের সকল উদ্যোগ।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি আমলে জনগণের বাক-স্বাধীনতা এবং ন্যূনতম নাগরিক অধিকারও ছিল না। বিএনপি রাষ্ট্রযন্ত্রকে অপব্যবহার করে গোষ্ঠীতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিল। এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল।
‘রাষ্ট্রযন্ত্রকে অপব্যবহার করে বিরোধীদলকে নিশ্চিহ্ন করতে ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের নারকীয় গ্রেনেড হামলার মতো ভয়াবহ গণহত্যা সংঘটিত করেছিল বিএনপি।’
আরও পড়ুন:যুক্তরাজ্যভিত্তিক সাংবাদিক জুলকার নাইন সায়ের খান সামির ভাই মাহিনুর আহমেদ খানের ওপর হামলার অভিযোগ নিয়ে বিবৃতি দিয়েছে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস।
শুক্রবার দূতাবাসের ভারপ্রাপ্ত মুখপাত্র ব্রায়ান সিলার সংবাদমাধ্যমে এ বিবৃতি পাঠান।
এতে বলা হয়েছে, ‘সাংবাদিক জুলকার নাইন সায়ের খান সামির ভাই মাহিনুর আহমেদ খান গত সপ্তাহে তার মিরপুরের বাসার সামনে যে আক্রমণের শিকার হয়েছেন সে ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস অবগত আছে। আমরা আশা করছি সঠিক বিচারের মাধ্যমে দোষীদের বিচারের আওতায় আনা হবে।’
ফেসবুকে শুক্রবার এক পোস্টে সামি লিখেছেন, গত ১৭ মার্চ চারজন দুষ্কৃতিকারী আমার ছোট ভাই মাহিনুরকে তার পশ্চিম শেওড়াপাড়ার বাসার সামনে রড দিয়ে পিটিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করে। ব্যক্তিগতভাবে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট এবং যুক্তরাজ্যের ফরেন অফিসকেও জানিয়েছি।
এ বিষয়ে মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন বলেন, ১৭ মার্চ রাতে ঘটনার সংবাদ পেয়েই পুলিশ পাঠানো হয়। মাহিনুর আহমেদ খানের কাছে ঘটনাটি বিস্তারিত জানার পর আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তাকে লিখিত অভিযোগ করতে বলা হয়। তবে তিনি তখন অভিযোগ করেননি।
তিনি বলেন, তারপরও আমরা খোঁজে বের করার চেষ্টা করছি কে বা কারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত। শুক্রবার শাহিনুর আহমেদ খান লিখিত অভিযোগ করবেন বলে জানিয়েছেন। উনি আসলেই অভিযোগ নেয়া হবে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য