গত এক মাসে তিনটি বড় চালান আটকের মধ্য দিয়ে সৌদি আরবে মাদক সমস্যার আসল চিত্রটি ফুটে উঠেছে।
এর মধ্যে প্রথম চালানে সিরিয়ান সরকারের বিরল সহযোগিতায় ক্যাপটাগন নামে ৫০০ কেজিরও বেশি অ্যামফেটামাইনের একটি চালান বাজেয়াপ্ত করা হয়। একটি পাস্তার চালানে লুকিয়ে এই মাদক সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের উদ্দেশ্যে পাঠানো হচ্ছিল।
পরে আমদানি করা এলাচের একটি চালান থেকে উদ্ধার করা হয় আরও তিন কোটি নেশার ট্যাবলেট। সবশেষ ডিসেম্বরের মাঝামাঝিতে জর্ডান থেকে সৌদি আরবের উদ্দেশ্যে পাচারের সময় ক্যাপটাগন মাদকের ৪০ লাখ পিল আটক করেছে লেবাননের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বাহিনী। এই পিল একটি কফির চালানে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল।
ক্যাপটাগনের মতো ভয়ঙ্কর মাদক উদ্ধারের ঘটনা সৌদি আরবে এখন একটি নিয়মিত ঘটনা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব পিল আকারে অনেক ছোট এবং তৈরি করাও সহজ। সৌদি আরবে এই পিলের বিপুল চাহিদা থাকায় সিরিয়া ও লেবাননে এগুলো তৈরি করা হচ্ছে।
ফরেন পলিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাদক পাচারকারীদের কাছে সৌদি আরব এখন অনেক বড় একটি বাজার। বর্তমানে দেশটি মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যে মাদকের রাজধানী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে।
আরবের সবচেয়ে ধনী এই রাষ্ট্রটিতে ক্যাপটাগন পিল এখন এক নতুন উন্মাদনা। মন ফুরফুরে করার জন্য মাদকসেবীরা এটি গ্রহণ করেন। মূলত এটি আমাদের দেশের বহুল পরিচিত ইয়াবারই আরেকটি রূপ। এই পিল গ্রহণ করলে সহজে ঘুম আসে না এবং মানুষের মাঝে উন্মাদনারও সৃষ্টি করে। সবশেষে এটি স্বাস্থ্যেরও বড় ক্ষতি করে।
জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধ বিভাগের তথ্যমতে, ২০১৫ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যে যত ক্যাপটাগন পিল উদ্ধার হয়েছে তার অর্ধেকেরও বেশি হয়েছে সৌদি আরব থেকে।
সিরিয়ার সংকট শুরু হলে মধ্যপ্রাচ্যে ক্যাপটাগন খুব জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। মূলত বিভিন্ন পক্ষে যুদ্ধরত সৈন্যরাই এই পিল গ্রহণ করতে শুরু করেন, যেন দীর্ঘ সময় ধরে যুদ্ধ করা যায়।
পরে সিরিয়ার বাশার আল-আসাদের সরকার ও তার পক্ষের বিভিন্ন গোষ্ঠীর ওপর জাতিসংঘ বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেও ক্যাপটাগন মাদকের ব্যবসা তার নিজস্ব ছায়া অর্থনীতি তৈরি করে নিয়েছে।
অভিযোগ আছে, এই মাদক পাচারের সঙ্গে সিরিয়ার সরকারের গভীর সংযোগ রয়েছে। মোটা অঙ্কের অর্থ পেয়ে থাকে বলেই সিরিয়ার সরকার এই ব্যবসা দেখেও না দেখার ভান করে থাকে।
সিরিয়া ছাড়াও লেবাননের যেসব অঞ্চল ইরানপন্থি হিজবুল্লাহ গেরিলাদের নিয়ন্ত্রণে, সেসব এলাকায়ই ক্যাপটাগন পিল ব্যাপক পরিসরে উৎপাদন করা হয়।
গত বছর সিরিয়ায় উৎপন্ন হওয়া যত ক্যাপটাগন পিল উদ্ধার করা হয়েছে, তার মূল্য অন্তত ৩ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার। ২০১৯ সালেও সিরিয়া ও লেবানন থেকে প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলারের পিল পাচার করা হয়েছে।
চিত্তবিনোদনের যথেষ্ট ক্ষেত্র না থাকা সৌদি আরবে ক্যাপটাগনের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। তবে এই মাদকের ব্যবহার বাড়লেও দেশটিতে তা কোনোভাবেই গাঁজা ও খাট মাদকের চাহিদা কমাতে পারেনি।
সৌদি আরবে গাঁজা প্রবেশ করার বেশ কয়েকটি পথ রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত পথটি হলো আফগানিস্তান থেকে প্রথমে ইরানে প্রবেশ করে বিপুল পরিমাণ গাঁজা। পরে এই গাঁজা ইরাক হয়ে সৌদি আরবে প্রবেশ করে। এ ছাড়া লেবানন, সিরিয়া ও জর্ডান হয়েও গাঁজা প্রবেশ করানো হয় দেশটিতে।
অতি সাম্প্রতিককালে ইয়েমেন হয়েও সৌদি আরবে গাঁজা প্রবেশ করছে। আর খাট নামের মাদকের প্রায় সব চালানই ইয়েমেন থেকে সৌদি আরবে প্রবেশ করে। চতুর্দশ শতকে এই মাদকটি সুফি-সাধকরা গ্রহণ করতেন বলে ইয়েমেনে এর একটি সামাজিক স্বীকৃতিও রয়েছে।
সৌদি সরকার আশঙ্কা করছে, এসব মাদক থেকে সুবিধা পাচ্ছে এই রাজতন্ত্রের বিরোধী সামারিক শক্তি ও সংগঠনগুলো। বলা হচ্ছে, দেশটিতে সব ধরনের মাদক পাচারের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করছে ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহ গেরিলারা।
এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, সৌদি আরবে ১২ থেকে ২২ বছর বয়সীদের মধ্যে মাদকের ব্যবহার বাড়ছে। আর দেশটিতে যারা মাদক সেবন করেন, তাদের ৪০ শতাংশই ক্যাপটাগন পিল গ্রহণ করেন।
মাদকের চালান ঠেকাতে সৌদি আরব এখন কূটনৈতিকভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া লেবানন থেকে কৃষিপণ্য আমদানি বন্ধ করা ছাড়াও সিরিয়ার আসাদ সরকারকেও নিয়মিত হুমকিধমকি দিচ্ছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। তবে সবচেয়ে বড় সমস্যা এখন সৌদি আরবেই, যেখানে এখন বিপুলসংখ্যক মাদকসেবী অবস্থান করছে।
আরও পড়ুন:ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে দেশটির একটি সামরিক স্থাপনায় বুধবার হামলা চালিয়েছে লেবাননভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ।
ওই হামলায় কমপক্ষে ১৪ ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছেন বলে আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
হামলার দায় স্বীকার করে হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় হিজবুল্লাহর কয়েকজন সদস্য নিহত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ইহুদি রাষ্ট্রটিতে প্রতিশোধমূলক আক্রমণ করা হয়েছে।
ইরান সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীটির ভাষ্য, লেবানন সীমান্তবর্তী উত্তর ইসরায়েলের আরব সংখ্যাগরিষ্ঠ গ্রাম আরব আল-আরামশেতে ইসরায়েলের নতুন একটি সামরিক পর্যবেক্ষণ কমান্ড সেন্টারে দূর নিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্র ও বিস্ফোরক ড্রোন দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে।
ইসরায়েলের সেনাবাহিনী জানায়, গতকালের হামলায় তাদের ১৪ সেনা আহত হন, যাদের মধ্যে ছয়জনের অবস্থা গুরুতর।
সেনাবাহিনী আরও জানায়, পূর্ব লেবাননে ‘সন্ত্রাসীদের অবকাঠামোতে’ হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলের যুদ্ধবিমান।
দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় মঙ্গলবার হিজবুল্লাহর একজন ফিল্ড কমান্ডারসহ তিনজন নিহত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ইসরায়েলে পাল্টা হামলা চালায় সশস্ত্র গোষ্ঠীটি।
ওই সময় ইসরায়েলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, তাদের হামলায় হিজবুল্লাহর স্থানীয় দুই কমান্ডার ও অন্য একজন সদস্য নিহত হন।
আরও পড়ুন:গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল ২৫ হাজার টন বিস্ফোরকদ্রব্য ছুড়েছে বলে জানিয়েছেন ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডগুলোর জন্য নিয়োজিত জাতিসংঘের বিশেষ দূত ফ্রান্সিসকা আলবানিজ।
তার ভাষ্য, এসব বিস্ফোরকের বেশির ভাগ ছোড়া হয়েছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) ব্যবহার করে।
আল জাজিরা বৃহস্পতিবার জানায়, ইসরায়েলে হামাসের হামলার জবাবে গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় শুরু হওয়া হামলার প্রথম সপ্তাহে গড়ে ২৫০ জন নিহত হন বলে জানান আলবানিজ।
জাতিসংঘের বিশেষ দূতের ভাষ্য, গাজায় হামলার শুরুর সপ্তাহে ‘ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায়’ ইসরায়েল দুই হাজার পাউন্ড বাঙ্কার বাস্টার বোমা ছোড়ে।
যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত জিপি হটভলির এক মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে উল্লিখিত কথাগুলো বলেন আলবানিজ।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম স্কাই নিউজকে হটভলি বলেন, ‘শুধু ভাবুন, জেরুজালেমের মতো কোনো শহরের মাঝখানে বিশাল একটি ক্ষেপণাস্ত্র পড়লে বিষয়গুলো কেমন ঠেকত।
‘শুধু ভাবুন, এটি লোকালয় এবং জনগণ ও শিশুদের ওপর আঘাত করছে।’
গত শনিবার রাতে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ইরানের ছোড়া ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিষয়ে সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রদূত এসব কথা বলেন।
জিপির দাবি, ইরানের হামলায় ক্ষতি হয়নি বললেই চলে।
আরও পড়ুন:ফিলিস্তিনের গাজায় অসম যুদ্ধে লিপ্ত ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ সাইয়েদ আলি খামেনি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক্সে (একসময়ের টুইটার) বুধবার দেয়া পোস্টে তিনি এ আহ্বান জানান।
ইসরায়েলের হামলায় গাজায় ৩৩ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনির প্রাণহানি ও ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের মধ্যে ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন সৌদি আরব, ইরানসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মুসলিমরা।
ইহুদি রাষ্ট্রটির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার বিষয়ে এক্সে ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে বেশ কয়েকটি পোস্ট দেন খামেনি, যার একটিতে তিনি বলেন, এটা পরিতাপের যে, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কিছু দেশের সরকার গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলকে সহায়তা করছে। এ ধরনের অংশীদারত্ব সহায়তাকারী দেশগুলোর ধ্বংস ডেকে আনবে।
একটি পোস্টে ইসরায়েলের সঙ্গে অন্তত সাময়িকভাবে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক ছিন্নের আহ্বান জানান আয়াতুল্লাহ।
আরেক পোস্টে তিনি বলেন, ‘জায়নবাদী (ইসরায়েল) সরকারের সঙ্গে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর সম্পর্ক ছিন্ন করা শুধু আমাদের প্রত্যাশার বিষয় নয়। এটি মুসলিম উম্মাহর প্রত্যাশা।
‘মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলো গণভোট আয়োজন করলে প্রত্যেকে সন্দেহাতীতভাবে সম্পর্ক ছিন্ন করার পক্ষে সরকারগুলোকে ভোট দেবেন।’
আরও পড়ুন:পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেয়া বার্তায় ফিলিস্তিনের জনগণের ওপর ইসরায়েলি হামলা অবিলম্বে বন্ধের প্রয়োজনীয়তার ওপর সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুলআজিজ আল সৌদ জোর দিয়েছেন বলে জানিয়েছে সৌদি গেজেট।
সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, ঈদবার্তায় ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নিরাপদ মানবিক ও ত্রাণ করিডর স্থাপন, স্বাধীন ফিলিস্তিন প্রতিষ্ঠাসহ ফিলিস্তিনিদের ন্যায্য সব অধিকার অর্জনে সক্ষমতা তৈরির মাধ্যমে তাদের দুর্ভোগের অবসানের আহ্বান জানিয়েছেন পবিত্র দুই মসজিদের জিম্মাদার।
মাসব্যাপী সিয়াম সাধনার পর ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মুসলিমরা। অন্য অনেক ভূখণ্ডের মতো ঈদ এসেছে ফিলিস্তিনের গাজাতেও, তবে ১৮০ দিনের বেশি সময় ধরে ইসরায়েলের হামলায় থাকা অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে আনন্দের উপলক্ষ হয়ে আসেনি বিশেষ দিনটি।
বার্তায় রমজান শেষ করতে পারায় আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করেন সৌদি বাদশাহ। একই সঙ্গে সবার রোজা ও ইবাদত কবুলের জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন তিনি।
বাদশাহ সালমান তার বার্তায় জাতীয় ঐক্য, পবিত্র দুই মসজিদের জিম্মাদারি এবং হজ ও ওমরাহ যাত্রীদের স্বাগত জানানোর মতো অনেক নিয়ামত সৌদি আরবকে দেয়ায় আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।
মাসব্যাপী সিয়াম সাধনার পর ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মুসলিমরা। অন্য অনেক ভূখণ্ডের মতো ঈদ এসেছে ফিলিস্তিনের গাজাতেও, তবে ১৮০ দিনের বেশি সময় ধরে ইসরায়েলের হামলায় থাকা অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে আনন্দের উপলক্ষ হয়ে আসেনি বিশেষ দিনটি।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, গাজাবাসী নিজেদের মতো করে ঈদুল ফিতরের ঐতিহ্য চর্চার চেষ্টা করলেও যুদ্ধের ছায়া সর্বত্র, যা উদযাপনকে কঠিন করে তুলেছে।
গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহ শহরের দোকানি আহমেদ ইসমাইল আল জাজিরাকে বলেন, ‘কোনো আনন্দ নেই। পবিত্র উপলক্ষটি উদযাপনের কোনো ক্ষুধাও নেই।
‘এমনকি শিশুরাও খেলনার প্রতি আগ্রহ হারিয়েছে, যেমনটা অতীতে ছিল। আমাদের জীবদ্দশায় সবচেয়ে খারাপ সময় পার করছি।’
রাফাহর বাস্তুচ্যুত বাসিন্দা জাবর হাসান বলেন, ‘আমরা সব দিক থেকে দুর্ভোগ পোহাচ্ছি। লোকজন কোনো রকমে বেঁচে আছে।
‘তারা পরিবারের সদস্যদের খাওয়াতে পারছে না বললেই চলে। আমরা ঈদ, উদযাপন কিংবা অন্য কোনো ধরনের আনন্দের কথা চিন্তা করতে পারছি না।’
ইসরায়েলে ঢুকে গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজার শাসক দল হামাসের প্রাণঘাতী হামলার পরিপ্রেক্ষিতে উপত্যকায় প্রায় বিরামহীন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে সামরিকভাবে বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী রাষ্ট্রটি।
ইসরায়েলের হামলায় গাজায় প্রাণ গেছে ৩৩ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনির, যাদের বড় অংশ নারী ও শিশু। অন্যদিকে হামাসের হামলায় নিহত ইসরায়েলির সংখ্যা এক হাজার ১৩৯।
বিরামহীন হামলার পাশাপাশি গাজায় বড় পরিসরে ত্রাণসামগ্রীও ঢুকতে দিচ্ছে না ইসরায়েল, যা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলসহ অনেক অংশে দুর্ভিক্ষের কাছাকাছি পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে, তবে ছয় মাসের বেশি সময় ধরে গাজায় ব্যাপক মৃত্যু ও ধ্বংসযজ্ঞ এবং ইসরায়েলি অনেক সেনার প্রাণহানির পরও টেকসই যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে পারেনি হামাস ও ইসরায়েল।
আরও পড়ুন:সিরিয়ার দারা প্রদেশে রোববার সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছে। বিস্ফোরণে বেশ কিছু শিশু নিহত হওয়ার একদিন পর ঘটনাটি ঘটল।
‘দ্য সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস’ এ কথা জানিয়েছে। খবর বাসসের
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বিরুদ্ধে ২০১১ সালে শুরু হওয়া বিক্ষোভের মূল কেন্দ্র ছিল এ দারা প্রদেশ। সরকার ২০১৮ সালে প্রদেশটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। তখন থেকে দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশটিতে অস্থিরতা চলছে।
সূত্র মতে, একটি সশস্ত্র গ্রুপের নেতৃত্বদানকারী আহমাদ আল লাব্বাদের প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপ অভিযোগ করেছে, শনিবার সিরিয়ার আল সানামাইন জেলায় লাব্বাদের পুঁতে রাখা বিস্ফোরণে ৮ শিশু প্রাণ হারিয়েছে।
পূর্বে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা সংস্থায় কাজ করা লাব্বাদ এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
এদিকে রোববার প্রতিদ্বন্দ্বী সশস্ত্র গ্রুপটি সানামাইন শহরে প্রবেশের পর সংঘর্ষ শুরু হয়। হামলাকারীরা লাব্বাদের বাড়িতে হামলা চালায় এবং সেখানে বসবাসরতদের হত্যা করে।
পর্যবেক্ষক সংস্থাটি বলেছে, নিহত ২০ জনের মধ্যে তিনজন লাব্বাদের পরিবারের এবং ১৪ জন তার যোদ্ধা সিরিয়ার সরকারি সংবাদ মাধ্যম তাৎক্ষণিকভাবে এ সংঘর্ষের বিষয়ে কিছু জানায়নি।
দারায় প্রায়ই হামলা, সশস্ত্র সংঘর্ষ এবং হত্যার ঘটনা ঘটছে।
এদিকে সিরিয়ায় ২০১১ সালে গৃহযুদ্ধ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত পাঁচ লাখেরও বেশি লোক নিহত হয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়েছে লাখ লাখ মানুষ।
আরও পড়ুন:গাজায় ইসরায়েলের হামলার ষষ্ঠ মাসে এসে দেশজুড়ে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুবিরোধী বিক্ষোভ করেছেন ইসরায়েলিরা।
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে জানানো হয়, হাজার হাজার বিক্ষোভকারী শনিবার সড়কে নেমে প্রতিবাদ জানান।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ঢুকে গাজার শাসক দল হামাসের প্রাণঘাতী হামলার জবাবে ওই দিন থেকেই উপত্যকায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এ হামলার ছয় মাস পূর্তি হয় রোববার।
আয়োজকরা জানান, প্রায় এক লাখ ইসরায়েলি তেল আবিবের একটি মোড়ে জড়ো হন। বিচার ব্যবস্থায় সংস্কারের প্রতিবাদে গত বছর শুরু হওয়া বিক্ষোভের সময় থেকে মোড়টি ‘গণতন্ত্র চত্বর’ হিসেবে পরিচিতি পায়।
‘এখনই নির্বাচন’ স্লোগান দেয়া বিক্ষোভকারীরা ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর পদত্যাগ দাবি করেন।
তেল আবিবের পাশাপাশি বিক্ষোভ হয়েছে অন্য শহরগুলোতেও। আলোচনার জন্য ওয়াশিংটনের উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে কাফার সাবা এলাকার বিক্ষোভে অংশ নেন ইসরায়েলের বিরোধীদলীয় নেতা ইয়াইর লাপিদ।
তিনি নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন সরকারের বিষয়ে বলেন, ‘তারা কিছুই শেখেনি, তারা বদলায়নি।’
লাপিদ আরও বলেন, ‘আমরা তাদের বাড়ি পাঠানোর আগে দেশকে সামনে এগোতে দেবে না তারা।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য