ভারতের অমৃতসরে শিখ ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র স্বর্ণমন্দির অপবিত্র করার চেষ্টার অভিযোগ তুলে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নিয়মিত প্রার্থনার সময় শনিবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাঞ্জাবের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুখজিন্দর সিং।
প্রতক্ষ্যদর্শীর বরাতে ইন্ডিয়া টুডের খবরে বলা হয়েছে, সন্ধ্যার প্রার্থনার সময় এক যুবক প্রাচীর টপকে ভেতরে ঢোকেন। তিনি শিখ সম্প্রদায়ের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ ‘গ্রন্থ সাহেব’-এর সামনে রাখা তলোয়ার ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন।
তখন কাছাকাছি থাকা ব্যক্তিরা যুবককে বের করে দেন। বাইরে উত্তেজিত জনতা তাকে পিটুনি দেয়। এতেই মৃত্যু হয় যুবকের।
ঘটনার পরই মন্দিরের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা শুরু করে পুলিশ। যুবক কীভাবে ভেতরে ঢুকেছিলেন, তার সঙ্গে আরও কেউ ছিল কি না… জানার চেষ্টা করছেন তদন্ত কর্মকর্তারা।
অমৃতসর পুলিশের ডেপুটি কমিশনার পরমিন্দর সিংহ ভিন্দাল বলেন, ‘২৪-২৫ বছরের যুবক প্রাচীর টপকে ঢুকে পড়েছিলেন। ভেতরের লোকজন তাকে ধরে বের করে দেন। বাইরে লোকজনের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের পর ধস্তাধস্তিতে ওই যুবকের মৃত্যু হয়।
‘ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে। মনে হচ্ছে তিনি একাই এসেছিলেন। তার পরিচয় এখনও শনাক্ত করা যায়নি।’
এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিংহ চন্নী। বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
দেশের অর্থনীতি এবং রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনতে ঐক্যবদ্ধভাবে সব সংকট সমাধানে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এই আহ্বান জানিয়েছেন।
রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিজিএমইএ উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলটির নেতৃত্ব দেন সংগঠনের সভাপতি রফিকুল ইসলাম।
বৈঠকে বিজিএমইএ নেতারা বিএনপির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে একটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী গার্মেন্ট শিল্পে এক ধরনের অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করছে। তবে সব জায়গায় তাৎক্ষণিকভাবে বিএনপির স্থানীয় নেতাসহ দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা সার্বক্ষণিক আমাদেরকে সহযোগিতা করেছেন। কোথাও কোথাও তারা পাহারা দিচ্ছেন।’
তারা বলেন, ‘বিএনপির স্থানীয় নেতারা আমাদের জানিয়েছেন যে দলের সিদ্ধান্ত মোতাবেক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে তারা গার্মেন্টস শিল্প রক্ষায় এগিয়ে এসেছেন।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম ব্যবসায়ীদের বক্তব্য মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং গার্মেন্টস শিল্পের নিরাপত্তা জোরদারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে কথা বলবেন বলে ব্যবসায়ীদের আশ্বস্ত করেন।
এ সময় বিজিএমইএ নেতাদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দেশের অর্থনীতি এবং রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনতে ঐক্যবদ্ধভাবে সব সংকট সমাধানে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’
সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ও বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সাবেক বাণিজ্য উপদেষ্টা ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, বিজিএমইর সিনিয়র সহ-সভাপতি আবদুল্লাহ হিল রাকিব, সহ-সভাপতি রকিবুল আলম, পরিচালক শোভন ইসলাম, নুরুল ইসলাম ও আবসার হোসেন, সাবেক সভাপতি এস এম ফজলুল হক, কাজী মুনির, মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস বিজিএমইএ স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান কফিল উদ্দিন, আবুল কালাম প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:চাঁদপুরে অগ্রণী ব্যাংকের ভল্ট থেকে ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছেন ব্যাংকটির ক্যাশিয়ার। মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর বাজার শাখায় এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ব্যাংকটির ওই শাখার ব্যবস্থাপক ইউসুফ মিয়া সোমবার বাদী হয়ে মতলব উত্তর থানায় মামলা করেছেন।
অভিযুক্ত দীপংকর ঘোষ ছেংগারচর বাজার শাখার অফিসার (ক্যাশ) হিসেবে কর্মরত। তিনি মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটি গ্রামের বলাই ঘোষের ছেলে।
দীপংকর ঘোষ ২০১৯ সালে অগ্রণী ব্যাংকের মতলব উত্তর থানার ছেংগারচর বাজার শাখায় যোগদান করেন। তিনি ছেংগারচর সরকারি ডিগ্রি কলেজের পাশে একটি ভাড়া বাসায় একাকী থাকতেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ২৯ আগস্ট বৃহস্পতিবার দীপংকর ঘোষ কর্মস্থলে না এলে তার মোবাইল ফোনে ব্যাংকের ব্যবস্থাপক কল করেন। ফোনে দীপংকর ঘোষ বলেন, ‘বাবা অসুস্থ, আসতে দেরি হবে।’
ব্যাংক থেকে পরে আবারও দীপংকর ঘোষের মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। এক পর্যায়ে তার প্রকৃত অবস্থান জানার জন্য দীপংকরের স্ত্রী আঁখি সাহার মোবাইল ফোনে কল দিলে তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী দুপুর ১২টার সময় অফিসের উদ্দেশে ঢাকার বাসা ত্যাগ করেছেন।’
তবে বিকেল হয়ে গেলেও দীপংকর ব্যাংকে না যাওয়ায় ব্যাংকের ভল্ট খোলা সম্ভব হয়নি। পরে তার কার্যকলাপে সন্দেহ হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপক।
দীপংকর ঘোষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ার পর ব্যাংকের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা এবং ব্যাংকের ভল্টে থাকা নগদ টাকার পরিমাণ যথাযথ আছে কি না তা যাচাইয়ের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরামর্শে ৩০ আগস্ট মতলব উত্তর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়।
১ সেপ্টেম্বর জিডির পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও থানা পুলিশের উপস্থিতিতে মিস্ত্রি দিয়ে ভল্ট খোলা হয়। পরে গণনা করে ভল্টে ২৭ লাখ ৭৯ হাজার ৬৮ টাকা ৭১ পয়সা পাওয়া যায়। তবে ক্যাশে এক কোটি দুই লাখ ৯৯ হাজার ৬৮ টাকা ৭১ পয়সা থাকার কথা ছিল। অর্থাৎ গণনার সময় ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা কম পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে অগ্রণী ব্যাংক পিএলসি লিমিটেড ছেংগারচর বাজার শাখা ব্যবস্থাপক মো. ইউসুফ মিয়া বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি বাদী হয়ে মতলব উত্তর থানায় মামলা করেছি। ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসে অডিট করে গেছেন। থানা পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে।’
মতলব উত্তর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সানোয়ার হোসেন জানান, ব্যাংকের ক্যাশিয়ার দীপংকর ঘোষ ও অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে থানায় মামলা হয়েছে। মামলার তদন্ত চলছে।
ব্যাংকের ব্যবস্থাপক ও থানার ওসি আরও জানান, অর্থ আত্মসাতের ঘটনা তদন্তে ঢাকার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের উদ্যোগে চার সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে। বর্তমানে থানা ও ব্যাংকের উদ্যোগে ঘটনাটির তদন্ত চলছে।
চট্টগ্রামে সরকারি খাস ও ব্যক্তি মালিকানাধীন পাহাড়ের পাদদেশে অবৈধভাবে বসবাসকারীদের উচ্ছেদসহ তাদের পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস করতে যারা সহযোগিতা ও উৎসাহিত করে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ও ফৌজদারি মামলা করার হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির ২৯তম সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে এ সভায় সভাপতিত্ব করেন পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম।
কমিশনার বলেন, খাস ও ব্যক্তিগত পাহাড়ের কোনো ধরনের ক্ষতি করা যাবে না। অবৈধ বসতি উচ্ছেদসহ স্থায়ীভাবে সরকারি সম্পত্তি রক্ষা করতে হবে।
এজন্য জেলা প্রশাসন, সিটি করপোরেশন, রেলওয়ে, ওয়াসা, বিদ্যুৎ ও পরিবেশ অধিদপ্তরের মধ্যে আন্তঃদপ্তর আলোচনা করে উচ্ছেদ-পরবর্তী করণীয় নির্ধারণের নির্দেশনা দেন তিনি।
তোফায়েল ইসলাম বলেন, সরকারি, ব্যক্তিগত ও বিভিন্ন সংস্থার পাহাড়ে অবৈধ বসবাসকারীদের সরিয়ে নিতে হবে। কোন দুর্ঘটনা ঘটলে পাহাড় মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার মালিকানাধীন পাহাড় থেকে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করার পর যাতে বেদখল না হয় সেই ব্যবস্থা করতে হবে।
পাহাড়ের পাদদেশে অবৈধভাবে বসবাসকারীদের উচ্ছেদসহ পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ বিছিন্নকরণ কার্যক্রমের অগ্রগতি কতটুকু তা ১৫ দিন পর পর প্রতিবেদন আকারে জানাতে সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশনা দেন বিভাগীয় কমিশনার।
শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের মেজরিটি হুইপ ডিক ডারবিন।
মঙ্গলবার ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি উল্লেখ করে বাসস জানায়, হুইপ সোমবার ওয়াশিংটন ডিসিতে সিনেটে ফ্লোর নিয়ে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে কয়েক দশক ধরে হয়রানির শিকার হওয়া ড. ইউনূসের প্রতি সমর্থন জানান।
ডারবিন তার মন্তব্যে উন্নয়নশীল দেশগুলোর নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোকে জীবিকা নির্বাহের সুযোগ করে দেয়া ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচির বিকাশে ড. ইউনূসের জীবনব্যাপী কাজ বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা করেন।
তিনি ড. ইউনূসের সঙ্গে প্রথম সাক্ষাতের লক্ষ্যে তার প্রথম বাংলাদেশ সফরের কথা স্মরণ করে বক্তব্য শুরু করেন।
ডিক ডারবিন বলেন, ‘আমি আজ তাকে (ড. ইউনূস) আমার পূর্ণ সমর্থন দিতে যাচ্ছি। আমি তাকে বিশ্বাস করি। আমি ২০ বছর আগেও করেছি এবং আজও করছি। আমি প্রেসিডেন্ট বাইডেনকেও তাকে সমর্থন করার জন্য অনুরোধ করছি।
‘আমি ড. ইউনুসকে চিনি। তিনি তার হৃদয়ে বাংলাদেশি জনগণের জন্য সর্বোত্তম কল্যাণ লালন করেন এবং এই চ্যালেঞ্জিং সময়ে তিনি সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন।’
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান এবং দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান। তার ক্ষমতাচ্যুতির কয়েকদিন পর অধ্যাপক ড. ইউনূস নতুন নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বের শপথ নেন।
ডারবিন বলেন, ‘গত মাসে আমার বিস্ময়ের কথা কল্পনা করুন..., জনগণের ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে হাসিনা অবশেষে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন। যে ছাত্ররা বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিয়েছে তারা দাবি করে যে তাদের দেশের নেতা হবেন কেবলমাত্র ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেই একই অর্থনীতির অধ্যাপক, যার সঙ্গে ২০ বছরেরও বেশি সময় আগে আমার দেখা হয়েছিল।
’আমি তার সৌভাগ্যের কথা শুনে তাকে (ড. ইউনূস) ফোন করি। তিনি উচ্ছ্বসিত ছিলেন। তিনি বিশ্বাস করেন যে দেশের মানুষ এখন এই ঐতিহাসিক সুযোগ কাজে লাগাতে প্রস্তুত।’
ডারবিন জুলাই মাসে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে হয়রানির নিন্দা জানিয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশে তিন সহকর্মীর নেতৃত্ব দেন। এতে তিনি তৎকালীন বাংলাদেশ সরকারের প্রতি ড. ইউনূসের সঙ্গে দুর্ব্যবহার বন্ধ করতে এবং তার বিরুদ্ধে আনা সন্দেহজনক অভিযোগগুলো প্রত্যাহারের আহ্বান জানান।
ড. ইউনূসকে হয়রানি বন্ধ করতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আহ্বান জানিয়ে ডারবিন ও তার সহকর্মীদের একটি চিঠি পাঠানোর পর এই বিবৃতি দেয়া হয়।
এ গ্রীষ্মের শুরুতেও ডারবিন সিনেট ফ্লোরে এক বক্তব্যে ড. ইউনূসের প্রতি তার সমর্থন ব্যক্ত করেন।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাসহ ১০০ জনেরও বেশি নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক প্রচারণার নিন্দা জানিয়েছেন।
ডারবিন ২০১০ সালে বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অগ্রণী ভূমিকার স্বীকৃতিস্বরূপ ড. ইউনূসকে কংগ্রেসনাল গোল্ড মেডেল প্রদানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে একটি প্রচেষ্টার নেতৃত্ব দেন। পরে ২০১৩ সালে ইউনূসকে এই পদক প্রদান করা হয়।
আরও পড়ুন:সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদের ভাষাকে বাংলাদেশ আরও শক্তিশালী করেছে এবং এ ধরনের কর্মকাণ্ডের স্পষ্টভাবে নিন্দা জানিয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
সাম্প্রতিক সীমান্ত হত্যাকাণ্ড নিয়ে মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। সূত্র: ইউএনবি
উপদেষ্টা তৌহিদ বলেন, ‘আমরা আমাদের প্রতিবাদের ভাষাকে আরও শক্তিশালী করেছি। আমরা প্রতি মুহূর্তে যা বলছি তা খুবই স্পর্শকাতর একটি বিষয়। আমরা আশা করি ভারত বিষয়টি বিবেচনায় নেবে।’
সীমান্ত হত্যা বন্ধে বাংলাদেশের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘দুই দেশের স্বার্থে এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসা দরকার। কারণ এতে কোনো লাভ হয় না। বরং সম্পর্কের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
‘তাদেরকে পরিষ্কারভাবে বলেছি, আমরা এই ঘটনার নিন্দা জানাই। এসব ঘটনা বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রে খুবই নেতিবাচক ভূমিকা রাখছে। আমি কখনও কাউকে বলতে শুনিনি যে এটি ভারতের জন্য সুফল বয়ে আনে।’
বাংলাদেশ সরকার এর আগে ভারত সরকারকে এ ধরনের জঘন্য কর্মকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি বন্ধ করতে এবং সীমান্ত হত্যাকাণ্ড তদন্তের মাধ্যমে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছে।
মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার স্বর্ণা দাশ নামে এক কিশোরী ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নিহত হওয়ার ঘটনায় ১ সেপ্টেম্বর ভারত সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনে পাঠানো প্রতিবাদলিপিতে বাংলাদেশ এ ধরনের নির্মম ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে এবং গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
বাংলাদেশ সরকার স্মরণ করিয়ে দিয়েছে, সীমান্ত হত্যার এ ধরনের ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত ও অপ্রত্যাশিত। এ ধরনের কর্মকাণ্ড সীমান্ত কর্তৃপক্ষের জন্য যৌথ ভারত-বাংলাদেশ নির্দেশিকা, ১৯৭৫ এর বিধানের লঙ্ঘন।
আরও পড়ুন:বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিক্ষোভ করে শাস্তি পাওয়া প্রবাসীদের মধ্যে আরও ১০ জন দেশে ফিরেছেন। এ নিয়ে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে মোট ২২ প্রবাসী দেশে ফিরলেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আহ্বানে দণ্ডপ্রাপ্ত ৫৭ প্রবাসী বাংলাদেশিকে সাধারণ ক্ষমা করে দেয় সে দেশের সরকার। ক্ষমা পাওয়া এসব প্রবাসীকে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দিচ্ছে আমিরাত সরকার।
সোমবার সন্ধ্যা ও রাতে পৃথক দু’টি বিমানে করে তারা শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন।
বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন শেখ আবদুল্লাহ আলমগীর বলেন, বিমানবন্দরে আসা শ্রমিকদের ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের কর্মকর্তারা অভ্যর্থনা জানান।
চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা ইব্রাহিম খলিল বলেন, সোমবার বিকেলে ও রাতে পৃথক বিমানে করে মোট ১০ জন শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেছেন। এর আগে শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) ১২ জন চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে পৌঁছান।
পূর্ববিরোধের জের ধরে বগুড়া সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান মিজানকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় লেদু নামে এক যুবককে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করে গণপিটুনি দিলে তিনিও মারা যান।
সোমবার রাত ৯টার দিকে বগুড়া সদরের গোকুল ইউনিয়ন পরিষদের সামনে এ দুটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। বগুড়া সদর থানা পুলিশ মরদেহ দুটি উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পাঠায়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বগুড়া সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মিজানুর রহমান নেতাকর্মী নিয়ে রাত ৯টার দিকে ওই ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের সামনে কথা বলছিলেন। ওই সময় বিদ্যুৎ ছিল না। এ সুযোগে কয়েকজন দুর্বৃত্ত মোটরসাইকেলযোগে এসে মিজানুর ও তার নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা মিজানুরকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাত করে চলে যায়।
স্থানীয়রা আহত মিজানুরকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তিনি গোকুল উত্তরপাড়ার আফসার আলীর ছেলে।
এ ঘটনার পরপরই হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে গোকুল মধ্যপাড়া এলাকার বুলু মিয়ার পুত্র সালমান হোসেনে লেদুকে আটক করে গণপিটুনি দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গুরুতর আহত লেদুকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে ভর্তির আগেই উপস্থিত বিক্ষুব্ধ কয়েকজন তাকে আবারও মারধর করে। এরপর রাত আনুমানিক ১১টায় লেদু মারা যান।
পূর্ব শত্রুতার জের ধরে তাকে হত্যা করা হয় বলে প্রাথমিক তথ্যে স্থানীয়রা জানান।
বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ জানান, হাসপাতালে ভর্তি করার আগেই মিজানুর মারা যান। অপরদিকে হাসপাতালে নেয়ার সময় মারা যান লেদু।
সদর থানার ওসি সাইহান ওলিউল্লাহ বলেন, ‘দুজনের মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের ধরতে চেষ্টা করছে পুলিশ।’
বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুর রশিদ হাসপাতালে উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, হত্যাকাণ্ড তদন্তের বিষয়টি প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা কাজ শুরু করেছেন। হত্যাকারীদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশ তৎপর রয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
এদিকে মিজানুর নিহত হওয়ার খবর পেয়ে বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা, সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার হেনা, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি মোশারফ হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দল, যুবদল, ছাত্রদলসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ হাসপাতালে যান।
মন্তব্য