অনলাইনে গুজব ছড়ানোর ক্ষেত্রে ফেসবুক ব্যবহার হচ্ছে- এমন অভিযোগ পুরোনো। ফেসবুকের এলগরিদম গুজব শনাক্তের ক্ষেত্রে যথেষ্ট নয় বলেও দাবি করে আসছেন অনেক বিশেষজ্ঞ।
সম্প্রতি বিষয়টিকে গুরুত্বসহকারে নিয়েছে ফেসবুক। ভুয়া ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে এমন পাঁচ শতাধিক অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলেছে ফেসবুক। বলা হচ্ছে, এসব অ্যাকাউন্ট নিয়ন্ত্রণ করত চীনের একটি সংঘবদ্ধ চক্র।
ব্যবহারকারীদের অভিযোগের ভিত্তিতে ইতোমধ্যে ৫২৪টি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, ২০টি পেজ, ৪টি গ্রুপ ও ৮৬টি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছে ফেসবুক।
বিবিসির খবরে বলা হচ্ছে, উইলসন এডওয়ার্ডস নামে এক ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট থেকে প্রচার হয় করোনার উৎস খুঁজতে যে তদন্ত দল কাজ করছে তাদের ওপর হস্তক্ষেপ করছে যুক্তরাষ্ট্র। আর চীনের গণমাধ্যমগুলো সেটা ফলাও করে প্রচার করছে।
ওই প্রোফাইল ঘেঁটে জানা যায়, সুইজারল্যান্ডের নাগরিক এডওয়ার্ডস একজন জীববিজ্ঞানী। তবে সুইস সরকার বলছে, এ নামে তাদের দেশে কারও অস্তিত্ব নেই।
গত জুলাইয়ে উইলসন এডওয়ার্ডস নামের অ্যাকাউন্ট থেকে নিজেকে সুইস জীববিজ্ঞানী দাবি করে বলা হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার যে দলটি করোনার উৎস খুঁজছে, তাদের ওপর যুক্তরাষ্ট্র চাপ প্রয়োগ করছে, যেন দায় চীনের ওপর চাপানো হয়।
সিজিটিএন, সাংহাই ডেইলি, গ্লোবাল টাইমসসহ চীনের প্রায় সব সরকারি গণমাধ্যম ওই পোস্টটিকে গুরুত্বসহকারে প্রচার করে। যদিও ওই পোস্টের মাত্র দুই সপ্তাহ আগে অ্যাকাউন্টটি খোলা হয়েছিল।
ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা বলছে, এই অপপ্রচারগুলো চালানো হয়েছে চীনের সিচুয়ান সাইলেন্স ইনফরমেশন টেকনোলজি কোম্পানি থেকে।
সিচুয়ান সাইলেন্স ইনফরমেশন টেকনোলজি কোম্পানি লিমিটেড একটি তথ্যপ্রযুক্তি নিরাপত্তাবিষয়ক প্রতিষ্ঠান। চীনের জননিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রযুক্তিসংক্রান্ত বিষয়গুলোর দেখভাল করে তারা।
ফেসবুক বলছে, ভুয়া অ্যাকাউন্টগুলোর উৎপত্তিস্থল আড়াল রাখতে চীনা প্রতিষ্ঠানটি ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (ভিপিএন) প্রযুক্তির সহায়তা নেয়। ভুয়া আইডির চরিত্রকে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে তারা ব্যবহার করেছে ‘মেশিন লার্নিং’ প্রযুক্তি।
করোনার উৎস এখনও অজানা। বিজ্ঞানীরা জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন রহস্য উদ্ঘাটনের। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, চীনের উহান থেকেই ছড়িয়েছে করোনার নতুন গোত্রটি। এ নিয়ে টানাপড়েন চলছে ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে।
আরও পড়ুন:গাজায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সহায়তায় পরিচালিত ত্রাণকেন্দ্র এবং অন্যান্য মানবিক সহায়তা গোষ্ঠীর ত্রাণ নিতে গিয়ে গত ৬ সপ্তাহে অন্তত ৭৯৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কার্যালয় (ওএইচসিএইচআর) এ তথ্য জানিয়েছে।
গতকাল শুক্রবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি এ কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ২৭ মে থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত আমাদের নথিভুক্ত তথ্য অনুযায়ী, ৭৯৮ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৬১৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ (জিএইচএফ)-এর ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রের আশপাশে, এবং ১৮৩ জন নিহত হয়েছেন অন্যান্য ত্রাণবিতরণ কেন্দ্রের আশেপাশে।’
জিএইচএফ গাজায় মে মাসের শেষ দিকে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ শুরু করে। সংস্থাটি জাতিসংঘের নেতৃত্বাধীন ত্রাণ ব্যবস্থাকে পাশ কাটিয়ে নিজস্ব ব্যবস্থায় কাজ করছে। ইসরায়েল দাবি করেছে, জাতিসংঘ-নেতৃত্বাধীন ব্যবস্থায় হামাস ত্রাণ সরিয়ে নিচ্ছিল।
ইসরায়েলি বাহিনী যেসব জায়গায় তৎপর সেই জায়গাগুলোতে ত্রাণ বিতরণ করে আসছে জিএইচএফ। সেখানে ত্রাণ নেওয়ার চেষ্টা করা শত শত ফিলিস্তিনির মৃত্যুর পর জাতিসংঘ জিএইচএফ-এর ত্রাণ বিতরণ পদ্ধতিকে ‘মূলত ঝুঁকিপূর্ণ’ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রে নিরপেক্ষতার নীতিমালার লঙ্ঘন আখ্যা দিয়েছে। তবে জিএইচএফ গতকাল শুক্রবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছে, জাতিসংঘ নিহতের যে পরিসংখ্যান দিয়েছে তা মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিপূর্ণ।
জিএইচএফ তাদের ত্রাণ বিতরণস্থলগুলোতে এমন প্রাণঘাতী কিছু হওয়ার কথা বরাবরই অস্বীকার করে এসেছে। জিএইচএফ এর মুখপাত্র বলেছেন, আসলে জাতিসংঘের ত্রাণবহরের কাছেই বেশিরভাগ প্রাণঘাতী হামলা হয়েছে।
তবে জাতিসংঘের ওএইচসিএইচআর- এর মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি বলেছেন, ফিলিস্তিনি নিহতের পরিসংখ্যান তারা দিয়েছেন গাজার হাসপাতাল, কবরস্থান, স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ, এনজিও এবং ফিলিস্তিনিদের পরিবারের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে। ২৭ মে থেকে ওএইচসিএইচআর এর রেকর্ড অনুযায়ী, ত্রাণবিতরণ কেন্দ্রগুলোর কাছে হামলায় বেশির ভাগ ফিলিস্তিনিই গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে জানান তিনি।
গাজা যুদ্ধ থেকে ফিরে আরেক ইসরায়েলি সেনার আত্মহত্যা
ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলীয় সদের তেইমান সামরিক ঘাঁটিতে এক ইসরায়েলি সেনা আত্মহত্যা করেছেন। নিজেকে গুলি করে আত্মহত্যা করেন ওই সেনা। সম্প্রতি তিনি গাজা যুদ্ধ থেকে ইসরায়েলি ঘাঁটিতে ফিরে এসেছিলেন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো এ তথ্য জানিয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানায় বার্তা সংস্থা আনাদোলু।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজ পত্রিকার তথ্য অনুযায়ী, নিহত ওই সেনা গোলানি ব্রিগেডের সদস্য ছিলেন। তিনি গাজা থেকে ফিরে ঘাঁটিতে বিশ্রামে ছিলেন এবং সেখানে সামরিক পুলিশের জেরার মুখে পড়েন। মাসখানেক আগে তার বিরুদ্ধে একটি তদন্ত শুরু হয় এবং তার অস্ত্র জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
তবে হারেৎজ জানায়, তিনি ঘুমন্ত বন্ধুর অস্ত্র ব্যবহার করে নিজেকে গুলি করেন। আত্মহত্যার কারণ হিসেবে তদন্তের বিষয়টি ‘ব্যক্তিগত আচরণের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়’ বলেই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, তবে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি।
জানা গেছে, ওই সেনার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু গত মাসে গাজার একটি বিস্ফোরণে নিহত হন। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীতে আত্মহত্যার হার বেড়েছে।
গত রোববার এক রিজার্ভ সেনা মানসিক চাপের কারণে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় শহর সাফেদের কাছে জঙ্গলে আত্মহত্যা করেন। ইসরায়েল হায়োম পত্রিকার তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালেই ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ২১ জন আত্মহত্যা করেছেন। আর মে মাসে হারেৎজ জানিয়েছিল, গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে অন্তত ৪২ ইসরায়েলি সেনা আত্মহত্যা করেছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন যে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ করবে ন্যাটোর মাধ্যমে এবং তিনি আগামী সোমবার রাশিয়া নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দেবেন।
ট্রাম্প সাম্প্রতিক সময়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি হতাশা প্রকাশ করেছেন ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে অগ্রগতির ঘাটতির কারণে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আগ্রাসনের পর থেকেই এই যুদ্ধ চলছে।
এনবিসি নিউজকে ট্রাম্প বলেন, আমি আগামী সোমবার রাশিয়া নিয়ে একটি বড় ঘোষণা দিতে যাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, আমরা অস্ত্র ন্যাটোতে পাঠাচ্ছি এবং ন্যাটো সেই অস্ত্রের সম্পূর্ণ মূল্য পরিশোধ করবে। তারপর ন্যাটো সেগুলো ইউক্রেনকে দেবে। তিনি ব্যাখ্যা করেন, যুক্তরাষ্ট্র অস্ত্র সরবরাহ করবে, কিন্তু সেই খরচ ন্যাটো বহন করবে।
তিনি ইউক্রেনকে সরাসরি মার্কিন অস্ত্র পাঠাবেন প্রেসিডেনশিয়াল ড্রডাউন অথরিটি ব্যবহার করে। এর মাধ্যমে প্রেসিডেন্টদের নিজস্ব অস্ত্র মজুত থেকে জরুরি ভিত্তিতে মিত্র দেশকে সহায়তা দেওয়ার সুযোগ দেয়।
দুই সূত্র জানায়, এই প্যাকেজের মূল্য হতে পারে প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ডলার এবং এতে থাকতে পারে প্রতিরক্ষামূলক প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ও আক্রমণাত্মক মাঝারি পাল্লার রকেট।
এই পদক্ষেপের আগে ট্রাম্প প্রশাসন শুধু সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অনুমোদিত অস্ত্রই পাঠিয়েছে ইউক্রেনে। তবে এখন নিজ ক্ষমতা অনুযায়ী সরাসরি অস্ত্র সহায়তা পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন ট্রাম্প।
ট্রাম্প এর আগে ইউক্রেনে অর্থ ও অস্ত্র সহায়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন, কিন্তু সাম্প্রতিক বক্তব্যে তিনি কিয়েভের প্রতি সমর্থনও জানিয়েছেন এবং রাশিয়ার নেতৃত্বের ওপর অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
ইসরাইলি হামলায় শুক্রবার ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের উত্তরাঞ্চলে কমপক্ষে ছয় জন নিহত এবং আরো অনেকেই আহত হয়েছে ।
গাজার নাগরিক প্রতিরক্ষা সংস্থার বরাত দিয়ে গাজা সিটি থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
সংস্থাটি এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘উত্তর গাজার জাবালিয়া আল-নাজলায় বাস্তুচ্যুতদের আশ্রয়দানকারী হালিমা আল-সাদিয়া স্কুলে ইসরাইলি হামলায় পাঁচ জন শহীদ এবং অনেকেই আহত হয়েছেন।’
সংস্থাটি জানিয়েছে, দক্ষিণাঞ্চলীয় গাজা শহরে আরেকটি পৃথক হামলায় কমপক্ষে এক ব্যক্তি নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।
শুক্রবার মধ্য গাজার নুসাইরাতের আল-আওদা হাসপাতাল জানিয়েছে, ইসরাইলি বাহিনী একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গুলি চালিয়েছে ফলে বেশ কয়েকজন হতাহত হয়েছে।
ইসরাইলি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। গাজা উপত্যকায় সম্প্রতি অভিযান জোরদার করেছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী।
গাজায় গণমাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং অনেক এলাকায় প্রবেশের অসুবিধার কারণে এএফপি স্বাধীনভাবে বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা এবং অন্যান্য পক্ষের দেওয়া মৃতের সংখ্যা এবং বিবরণ যাচাই করতে পারেনি।
দক্ষিণ গাজা থেকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এএফপি’র সঙ্গে কথা বলা এক ফিলিস্তিনি বলেছেন, খান ইউনিস শহরের কাছে ইসরাইলি ট্যাঙ্ক দেখা গেছে, সেখানে আক্রমণ ও ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চলছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, ‘এই এলাকায় পরিস্থিতি অত্যন্ত কঠিন। এখানে ব্যাপক গুলিবর্ষণ, প্রায়ই বিমান হামলা ও কামানের গোলাবর্ষণ এবং আল-মাসলাখের দক্ষিণ, পশ্চিম ও উত্তরাঞ্চলে বুলডোজার দিয়ে বাস্তুচ্যুত শিবির ও কৃষিজমি ধ্বংস করা হচ্ছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্রাজিলের রপ্তানিপণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। এর জবাবে পাল্টা একই হারে মার্কিন পণ্যে শুল্ক বসানোর হুমকি দিয়েছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) ব্রাজিলের একটি সংবাদমাধ্যমের বরাতে ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের খবরে জানানো হয়, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র আমাদের পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক বসালে আমরাও তাদের পণ্যে ৫০ শতাংশ বসাবো।’
ট্রাম্প সম্প্রতি এক বিবৃতিতে ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর বিরুদ্ধে চলমান বিচার কার্যক্রমকে ইঙ্গিত করে দেশটিকে ‘উইচ-হান্ট’ চালানোর অভিযোগে অভিযুক্ত করেন।
শুল্ক আরোপের বিষয়ে তিনি আরও জানান, ব্রাজিল সরকার বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) কাছে আপিল করে আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান এবং ব্যাখ্যা দাবি করতে পারে।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সকালে লুলা তার মন্ত্রিসভার সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন। ট্রাম্পের ঘোষণার জবাব কীভাবে দেওয়া হবে—তা নির্ধারণে একটি স্টাডি গ্রুপ গঠন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ওই বৈঠকে।
অন্যদিকে, ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, ব্রাজিল পাল্টা শুল্ক আরোপ করলে আরও বেশি হারে শুল্ক বসানো হবে।
চলতি সপ্তাহে ট্রাম্প বাংলাদেশ, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়াসহ একাধিক দেশকে নতুন শুল্কের বিষয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন। চুক্তি না হলে ১ আগস্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে।
ভারতের সবচেয়ে ধনী রাজ্য মহারাষ্ট্রে হিন্দি ভাষা শিক্ষা বাধ্যতামূলক করাকে কেন্দ্র করে কয়েক সপ্তাহ ধরে উত্তেজনা চলছে। সম্প্রতি রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে মারাঠি ভাষা অধিকার রক্ষার দাবিতে বিক্ষোভ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
খবরে বলা হয়, ভাষা নিয়ে চলমান এই বিতর্কের সূত্রপাত এপ্রিল মাসে। সে সময় মহারাষ্ট্র সরকার ঘোষণা দেয়, রাজ্য পরিচালিত প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ইংরেজি ও মারাঠির পাশাপাশি তৃতীয় ভাষা হিসেবে হিন্দি ভাষাও শেখানো হবে। রাজ্য সরকারের দাবি, এটি কেন্দ্রীয় সরকারের জাতীয় শিক্ষানীতির (এনইপি) অংশ।
১৯৬৮ সালে চালু হওয়া এনইপি দেশটির শিক্ষাব্যবস্থাকে উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যেই প্রণয়ন করা হয়। সময়ে সময়ে এই নীতিতে সংশোধন আনা হয়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার পাঁচ বছর আগে এর সর্বশেষ সংস্করণ চালু করেন, যা ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। তবে এটি নিয়ে এর আগেও বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল।
রাজ্যটির ভাষা ও সংস্কৃতি নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠন, বিরোধী দল ও নাগরিক সমাজ এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন। তাদের অভিযোগ, এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে মারাঠি ভাষা ও সংস্কৃতির ওপর হিন্দিকে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
চলমান যুদ্ধবিরতি আলোচনা ও রাফায় ফিলিস্তিনিদের বিতর্কিত পুনর্বাসন পরিকল্পনার মধ্যেই ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অন্তত ৮২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এদিন শিশুদের খাবার সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়ে প্রাণ গেছে ৯টি শিশুর।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) ভোর থেকে চালানো হামলায় এসব হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে কাতার ভিত্তিক মার্কিন সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কেন্দ্রীয় গাজার দেইর আল-বালাহ এলাকায় শিশুদের জন্য পুষ্টি সহায়তা সংগ্রহ করতে আসা ফিলিস্তিনিদের ওপর চালানো বিমান হামলায় ১৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন। তাদের মধ্যে ৯টি শিশু ও ৪ জন নারী রয়েছেন। এ ঘটনায় আরও অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ১৯টিই শিশু।
জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল হামলাটিকে ‘অমার্জনীয়’ বলে অভিহিত করে বলেন, ‘সাহায্যের অপেক্ষায় থাকা পরিবারগুলোর ওপর এমন হামলা অত্যন্ত নির্মম ঘটনা। এটি গাজায় চলমান ভয়াবহতার বাস্তব প্রতিচ্ছবি।’
তিনি বলেন, ‘অপর্যাপ্ত সহায়তার কারণে গাজায় শিশুদের না খেয়ে থাকার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে এবং বর্তমানে সেখানে দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি বাড়ছে। জরুরি সহায়তা ও সেবা পূর্ণমাত্রায় চালু না হলে অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের সংখ্যা বাড়তেই থাকবে।’
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বর্বরতা অব্যাহত রয়েছে। এদিকে গাজায় হামাস যদি অস্ত্র ত্যাগ করে তাহলে ইসরায়েল সাময়িক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেবে। তবে হামাস সাড়া না দিলে সামরিক অভিযান অব্যাহত থাকবে। ইসরায়েলের এক সিনিয়র কর্মকর্তা এ কথা জানিয়েছেন।
গাজায় একটি অভিযানে খান ইউনিসে এক আইডিএফ সেনা নিহত হয়েছেন। হামাস যোদ্ধারা তাকে অপহরণের চেষ্টা করেছিল। ইসরায়েলি নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির এই ঘটনার জন্য হামাসের সঙ্গে চলমান যুদ্ধবিরতি আলোচনা দায়ী করেছেন। এছাড়া পশ্চিম তীরে এক ইসরায়েলি সেনা ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছেন এবং গাজায় কেরেম শালোম ক্রসিং দিয়ে ১ লাখ ৫২ হাজার লিটার জ্বালানি সরবরাহ করা হয়েছে।
অন্যদিকে, ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়েছেন, হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি আলোচনায় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকেও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। সৌদি আরব এই দাবিকে সমর্থন জানিয়েছে।
যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার মধ্যে গাজায় নিহত ২৪
যুদ্ধবিরতির আলোচনার মধ্যেই গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। অবরুদ্ধ এই উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নতুন করে আরও ২৪ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছে। এরই মধ্যে সেখানে ৫৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনিকে নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির সময়সীমা বাড়িয়ে বলেছেন, এই সপ্তাহে বা আগামী সপ্তাহে গাজায় একটি চুক্তির ‘খুব ভালো সম্ভাবনা’ রয়েছে। তবে হামাস বলছে, ইসরায়েলের একগুঁয়েমির কারণে কাতারে আলোচনা ‘কঠিন’ হয়ে পড়েছে।
বেশ কিছু চিকিৎসা সূত্র আল জাজিরাকে জানিয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় বিমান হামলা আরও তীব্র করেছে। বৃহস্পতিবার ভোর থেকে এই উপত্যকাজুড়ে কমপক্ষে ২৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সেখানে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় কমপক্ষে ৫৭ হাজার ৫৭৫ জন নিহত এবং ১ লাখ ৩৬ হাজার ৮৭৯ জন আহত হয়েছেন। অপরদিকে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামাসের হামলায় ইসরায়েলে আনুমানিক ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত এবং ২০০ জনেরও বেশি মানুষকে জিম্মি হিসেবে অপহরণ করা হয়েছিল।
গাজায় ত্রাণকেন্দ্রে ৭৭০ জনের বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা
গত মে মাসের শেষের দিক থেকে মানবিক ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলোতে হামলার ফলে গাজা উপত্যকায় ৭৭০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) স্থানীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, মানবিক সাহায্য বিতরণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতায় ইসরায়েলের প্রতিষ্ঠিত গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)-এর কেন্দ্রগুলোতে ২৭ মে থেকে নিহতের সংখ্যা ৭৭০ ছাড়িয়ে গেছে।
আল জাজিরা এর আগে জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে, অস্থিতিশীলভাবে ত্রাণ সরবরাহের মধ্যে ২১ লাখ গাজাবাসী খাদ্যের সন্ধানে মরিয়া হয়ে আছে। দিনকে দিন অবরুদ্ধ অঞ্চলে ক্ষুধার্ত মানুষের মাঝে হতাশা বাড়ছেই।
১৮ মে ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী গাজা উপত্যকার উত্তর ও দক্ষিণ অঞ্চলে তাদের বৃহৎ স্থল আক্রমণ ‘গিডিওনস চ্যারিয়টস’-এর অংশ হিসেবে গণহত্যা শুরু করে। এর ঘোষিত লক্ষ্য হলো হামাসের সম্পূর্ণ পরাজয় এবং সেখানে আটক সমস্ত ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, এই অভিযানের পর তাদের বাহিনী সমগ্র গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পরিকল্পনা করছে।
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৮ শিশু নিহত
গাজার মধ্যাঞ্চলে একটি মেডিকেল পয়েন্টের কাছে ইসরায়েলি হামলায় ৮ শিশু ও দুই নারীসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছে বলে সেখানকার এক হাসপাতাল জানিয়েছে। আল-আকসা মার্টায়ার্স হাসপাতাল বলছে, দেইর আল-বালাহ এলাকায় পুষ্টিকর সাপ্লিমেন্টের জন্য লাইন দাঁড়ানো লোকদের ওপর ওই হামলা হয়েছে।
হাসপাতাল থেকে পাওয়া এক ভিডিওতে একাধিক শিশুর মরদেহ এবং আরও কিছু আহত শিশুকে চিকিৎসা দেওয়ার দৃশ্য দেখা গেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, তারা এ খবরের সত্যতা যাচাই করে দেখছে।
পুষ্টিকর সাপ্লিমেন্ট বলতে সাধারণত ভিটামিন ডি ট্যাবলেট, আয়রন ট্যাবলেট, ওমেগা সাপ্লিমেন্ট ও গুড়ো প্রোটিনের মতো নানা সহায়ক পথ্যকে বোঝায়। গাজার ওই মেডিকেল পয়েন্ট থেকে কী কী পাওয়া যাচ্ছিল তা জানা যায়নি।
নতুন যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি নিয়ে দোহায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনা চলাকালেও ফিলিস্তিনি এ ভূখণ্ডটিতে তেল আবিবের হামলা থেমে নেই। প্রতিদিনই তাদের হামলায় গাজায় ডজন ডজন মানুষের মৃত্যুর খবর মিলছে।
দোহার এ আলোচনায় কাতার ও মিসরের পাশাপাশি মধ্যস্থতা করছে যুক্তরাষ্ট্রও। আলোচনায় শিগগিরই ফল আসবে বলে ওয়াশিংটন আশাবাদ ব্যক্ত করলেও হামাস ও ইসরায়েলের কর্মকর্তাদের সাম্প্রতিক মন্তব্যে দ্রুত কোনো ‘ব্রেক থ্রুর’ আশা দেখা যাচ্ছে না। গত বুধবার (৯ জুলাই) রাতে ঊর্ধ্বতন এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা ওয়াশিংটনে সাংবাদিকদের বলেছেন, যুদ্ধবিরতি নিয়ে চুক্তিতে পৌঁছাতে এক-দুই সপ্তাহ লেগে যেতে পারে।
এমন এক সময়ে তিনি এ কথা বললেন যখন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর যুক্তরাষ্ট্র সফর চলছে। ইসরায়েলি ওই কর্মকর্তা আরও বলেছেন, দুই পক্ষ ৬০ দিনের কোনো যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছালে, ইসরায়েল ওই সময়টাকে যুদ্ধের একটি স্থায়ী সমাপ্তির প্রস্তাব দেওয়ার জন্য কাজে লাগাতে চায়, সেখানে অবশ্যই হামাসকে নিরস্ত্র হওয়ার শর্ত দেওয়া হবে। যদি হামাস অস্ত্র সমর্পণে রাজি না হয়, তাহলে ইসরায়েলি সামরিক অভিযান ‘অব্যাহত থাকবে’। এর আগে হামাস বলেছিল, আলোচনা ‘কঠিন’ হয়ে উঠেছে, এজন্য ইসরায়েলি ‘একগুঁয়েমিকেও’ দায়ী করেছে তারা।
ফিলিস্তিনি এ সশস্ত্র গোষ্ঠীটি বলছে, ১০ জন জিম্মিকে মুক্তি দিতে রাজি হয়ে তারা নমনীয়তার পরিচয় দিয়েছে। তারা ইসরায়েলি হামলার অবসান ঘটাবে এমন ‘বিস্তৃত’ চুক্তির দাবিও পুনর্ব্যক্ত করেছে।
মন্তব্য