সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) ক্ষমতার আওতা বাড়ানোর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাস হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায়। এর ফলে পাঞ্জাবের পর দ্বিতীয় রাজ্যে হিসেবে এ রকম কোনো প্রস্তাব পাস করল পশ্চিমবঙ্গ।
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে মঙ্গলবার বিএসএফের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সরব হন তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়করা।
তৃণমূলের আনা প্রস্তাবের আলোচনায় দলের বিধায়ক উদয়ন গুহ তুলেছেন গুরুতর অভিযোগ। তার দাবি, ‘তল্লাশির সময় নারীদের যৌনাঙ্গে হাত দেয় বিএসএফ।’
হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিএসএফকে ‘নৃশংস বাহিনী’ আখ্যায়িত করেন দিনহাটা থেকে নির্বাচিত বিধায়ক উদয়ন। তিনি বলেন, ‘সীমান্তে বিএসএফ নৃশংস নির্যাতন চালায়। কখনও ছেলের সামনে বাবাকে কান ধরে ওঠবস করায়। কখনও আবার নারীদের গোপনাঙ্গে হাত দিয়ে পরীক্ষা করে।’
অন্যদিকে তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায় বলেন, ‘বিএসএফ মানুষ মেরে কাঁটাতারে ঝুলিয়ে দেয়।’
তৃণমূল বিধায়কদের এমন কঠোর সমালোচনার পাল্টা সমালোচনা করেন বিজেপির সদস্যরা। দেশের কোনো বাহিনী নিয়ে এমন আলোচনা করা যায় কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তারা।
কেন্দ্রের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে বিজেপির বিধায়করা দাবি করেন, সীমান্তে দিন দিন চোরাচালান বাড়ছে। গরু পাচার ও অন্যান্য সামগ্রী পাচার নিয়ন্ত্রণের জন্য বিএসএফ পুলিশকে জানালেও তারা তৎপর হয় না। এ জন্যই তাদের এখতিয়ার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বিধানসভায় বিরোধী দলের নেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেন, ৫০ কিলোমিটারের পরিবর্তে বিএসএফের এখতিয়ার বাড়িয়ে ৮০ কিলোমিটার করা উচিত।
বিএসএফের ক্ষমতার আওতা বাড়িয়ে ১১ অক্টোবর একটি নোটিশ জারি করে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। এর ফলে পাঞ্জাব, পশ্চিমবঙ্গ আর অসমের আন্তর্জাতিক সীমান্তে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত ভারতীয় অংশে তল্লাশি, বাজেয়াপ্ত আর গ্রেপ্তার করার ক্ষমতা পেয়েছে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী। তবে এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছে তৃণমূল কংগ্রেস।
তৃণমূলের অভিযোগ, রাজ্য পুলিশের এলাকার মধ্যে গিয়ে কাজ করার ছাড়পত্র দেয়া হচ্ছে বিএসএফকে। এর ফলে রাজ্য পুলিশের এলাকার মধ্যে নাক গলাতে পারে বিএসএফ।
পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভায় মঙ্গলবার এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রস্তাব উত্থাপন করে তৃণমূল কংগ্রেস। তুমুল হট্টগোল ও আলোচনা শেষে প্রস্তাবটি ১১২ ভোটে পাস হয়, এর বিপক্ষে পড়েছে ৬৩ ভোট।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ৪০০০ কোটি টাকার হায়ার এডুকেশন এক্সিলারেশন অ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন (হিট) প্রকল্পের আওতায় সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ডিজিটাল নেটওয়ার্ক অবকাঠামো স্থাপনে ইউজিসি, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং ব্র্যাকনেট লিমিটেডের মধ্যে একটি চুক্তি সই হয়েছে।
গতকাল বুধবার মহাখালীর ব্র্যাক নেট কার্যালয়ে “সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আধুনিক নেটওয়ার্ক উপকরণ ও ওয়াই-ফাই অবকাঠামো স্থাপন” প্রকল্পের আওতায় সই করা হয়েছে। এতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সহ প্রাথমিকভাবে মোট ২৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নত ডিজিটাল নেটওয়ার্ক অবকাঠামো ও ক্লাউড-ভিত্তিক ওয়াইফাই সুবিধা স্থাপন করা হবে বলে জানা গেছে।
প্রকল্পের আওতাধীন অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে- মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি।
চুক্তির সময় হিট প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ড. আসাদুজ্জামান এবং ব্র্যাকনেট লিমিটেডের পক্ষ থেকে জেনারেল ম্যানেজার ও হেড অব অপারেশনস মো. মুকাররাম হুসাইন এবং প্রকল্পের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, পরিচালনা পর্ষদ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ব্র্যাকনেট লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার মো. মুকাররাম হুসাইন জানান, ‘ব্র্যাকনেট বাংলাদেশের শিক্ষাক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত সক্ষমতা উন্নয়নে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘স্মার্ট ক্যাম্পাস’সহ একাধিক উদ্ভাবনী প্রকল্প বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায়, হিট প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও বিশ্বমানের নেটওয়ার্ক সুবিধা পৌঁছে দিতে পারা আমাদের জন্য সম্মানের।নির্দেশনা পেলে যেকোনো সময় কাজ শুরু করে দিব।’
প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ড. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘এই চুক্তি বাস্তবায়িত হলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা গবেষণা ও শিক্ষায় আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশের মান সমুন্নত রাখতে সক্ষম হবে। ব্র্যাকনেট কোম্পানি থেকে আমরা কিছু ইকুয়েপমেন্ট নিব। পুরোপুরি তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে না।’
কতদিনের মধ্যে কার্যক্রম শুরু হতে পারে; জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা ধীরে ধীরে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে যুক্ত করে নিব। আগামী ৩ মাসের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। তবে কম-বেশি হতে পারে।’
গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ নার্সিং কলেজে শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবিতে শিক্ষার্থীরা আজ বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এক শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, কলেজের শিক্ষক মোঃ জামাল উদ্দিন ভূঁইয়া, মোঃ তাজুল ইসলাম এবং মোঃ মোখলেছুর রহমান নিয়মিতভাবে নারী শিক্ষার্থীদের প্রতি অশোভন আচরণ করছেন এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছেন। এসব কর্মকাণ্ডে কলেজে একটি অস্বাস্থ্যকর ও আতঙ্কিত পরিবেশ তৈরি হয়েছে, যা শিক্ষার স্বাভাবিক ধারাকে ব্যাহত করছে।
শিক্ষার্থীদের দাবি, বিষয়টি কলেজ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হলেও গত সাত কার্যদিবসেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বরং, কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে প্রহসনমূলক ক্লাস রুটিন প্রণয়ন করে আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তারা।
তারা দ্রুত অভিযুক্ত তিন শিক্ষকের অপসারণ এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিরাপদ ও শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রশাসনের কার্যকর হস্তক্ষেপ দাবি করেন। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
মানববন্ধনে কলেজের বিভিন্ন বর্ষের শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। তারা প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন প্রদর্শনের মাধ্যমে তাদের দাবির কথা জানান।
শিক্ষার্থীরা আরও জানান, দীর্ঘদিন ধরেই তারা সুষ্ঠু শিক্ষার পরিবেশ প্রতিষ্ঠার জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আসছেন, কিন্তু কোনো সমাধান পাওয়া যায়নি। তাই এবার তারা প্রশাসনের সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
এ বিষয়ে গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সোহেল রানা বলেন, শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি নিয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছেন। বিষয়টি আমরা গুরুত্বসহকারে দেখছি এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি)-কে অবহিত করা হবে।
গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ নার্সিং কলেজে শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবিতে শিক্ষার্থীরা আজ বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এক শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, কলেজের শিক্ষক মোঃ জামাল উদ্দিন ভূঁইয়া, মোঃ তাজুল ইসলাম এবং মোঃ মোখলেছুর রহমান নিয়মিতভাবে নারী শিক্ষার্থীদের প্রতি অশোভন আচরণ করছেন এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছেন। এসব কর্মকাণ্ডে কলেজে একটি অস্বাস্থ্যকর ও আতঙ্কিত পরিবেশ তৈরি হয়েছে, যা শিক্ষার স্বাভাবিক ধারাকে ব্যাহত করছে।
শিক্ষার্থীদের দাবি, বিষয়টি কলেজ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হলেও গত সাত কার্যদিবসেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বরং, কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে প্রহসনমূলক ক্লাস রুটিন প্রণয়ন করে আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তারা।
তারা দ্রুত অভিযুক্ত তিন শিক্ষকের অপসারণ এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিরাপদ ও শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রশাসনের কার্যকর হস্তক্ষেপ দাবি করেন। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
মানববন্ধনে কলেজের বিভিন্ন বর্ষের শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। তারা প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন প্রদর্শনের মাধ্যমে তাদের দাবির কথা জানান।
শিক্ষার্থীরা আরও জানান, দীর্ঘদিন ধরেই তারা সুষ্ঠু শিক্ষার পরিবেশ প্রতিষ্ঠার জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আসছেন, কিন্তু কোনো সমাধান পাওয়া যায়নি। তাই এবার তারা প্রশাসনের সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
এ বিষয়ে গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সোহেল রানা বলেন, শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি নিয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছেন। বিষয়টি আমরা গুরুত্বসহকারে দেখছি এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি)-কে অবহিত করা হবে।
“এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই” এই প্রতিপাদ্য নিয়ে মাগুরায় ৫ দিনব্যাপী জাতীয় বি দাবা প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের আয়োজনে এবং জেলা ক্রীড়া সংস্থা, মাগুরা’র সহযোগিতা বৃহস্পতিবার জেলা ইনডোর স্টেডিয়ামে ৩৬ জুলাই, জাতীয় ‘বি’ দাবা প্রতিযোগিতা ২০২৫ (অঞ্চল-৩: খুলনা ও বরিশাল) আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন করা হয়।
বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের কার্যনির্বাহী সদস্য আরিফুজ্জামান আরিফের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথির বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ শামীম কবির, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য সচিব মো. ইলিয়াসুর রহমান, মাগুরা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শফিক ও ডা: জুলি চৌধুরী। এ সময় বিভিন্ন জেলা থেকে অংশ নিতে আসা দাবাড়ু, ক্রীড়া কর্মকর্তা এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।
এই প্রতিযোগিতা পাঁচ দিনব্যাপী ২১ থেকে আগামী ২৫ আগস্ট পর্যন্ত চলবে। এতে খুলনা ও বরিশাল বিভাগের মোট ১৮ জেলার ৫০ জন দাবাড়ু অংশগ্রহণ করবেন।
প্রতিযোগিতাটি ঘিরে মাগুরায় ক্রীড়াপ্রেমীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যায়।
পিআর পদ্ধতি, বিচার ও সংস্কারের দোহায় দিয়ে নির্বাচনকে বিলম্ব করতে এক চক্র উঠে পড়ে লেগেছে। তারা চাই না এদেশের মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগ দেশে যোগ্য জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করুক। জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতেই দেশ থেকে স্বৈরাচারকে বিতারিত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ভৈরব শহরের পৌর আ. আজিজ মাতৃ সদন চত্বরে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৫ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলম।
তিনি আরো বলেন, ৭১ কে বাদ দিয়ে শুধু ২৪ কে মূল্যায়ন করলে চলবে না। তিনি সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে তিনি বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দেশবাসীর কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন।
উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা আহ্বায়ক নিয়াজ মোর্শেদ আঙ্গুর। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফুল ইসলাম, পৌর বিএনপির সভাপতি হাজী মো. শাহিন ও সাধারণ সম্পাদক ভিপি মো. মুজিবুর রহমান।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আরিফুল ইসলাম সুজন। আলোচনা সভা শেষে একটি শোভাযাত্রা বের হয়ে ভৈরব বাজারের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সমাপ্ত হয়।
মাগুরা সহ সারাদেশে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগায় মৃৎশিল্প প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। রান্না বান্নাই আধুনিক জিনিসপত্র তৈরি হওয়াতে এখন আর সচরাচর দেখা যায় না মাটির কলস, হাড়ি, বাসন ইত্যাদি। ফলে পাল বংশের পূর্ব পুরুষদের ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে তারা হিমশিম খাচ্ছে। সীমিত কিছু মাটির জিনিসপত্র তৈরি করে সংসার চালানো তাদের জন্য কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।
একটা সময় পাল বংশ স্থাপত্য ও শিল্পকলার জন্য অনেক জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল। আনুমানিক ৭৮১ থেকে ১১৮০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত পাল বংশ বাংলায় প্রায় ৪০০ বছর রাজত্ব করেছে। পাল বংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন গোপাল। পরবর্তীতে ধর্মপাল ও দেবপাল এসে এই বংশের প্রসার ঘটান। দ্বাদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময় পাল বংশের রাজত্বের অবসান ঘটে। পাল বংশের সেই রাজত্ব এখন আর না থাকলেও তাদের উত্তরশূরিরা এখনো অনেক জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। তাদের হাতের নিপুন কারু কাজের মাধ্যমে তারা বংশের নাম অক্ষুন্ন রেখেছেন।
মাগুরার বিভিন্ন এলাকায় পাল বংশের বসবাস থাকলেও অভাবের তাড়নায় তারা এ কাজ ছেড়ে অন্য পেশায় নিযুক্ত হচ্ছেন। সদর উপজেলার শ্রীকুন্ডি গ্রামে পাল বংশের হাতের তৈরি মৃৎশিল্প প্রায় বিলুপ্তির পথে। এক সময় এই গ্রামে ৩০-৪০ ঘর পাল বংশের লোকজন বাস করত। কিন্তু প্রয়োজনের তাগিদে অনেকে গ্রাম ছেড়ে শহরে পাড়ি জমিয়েছে। একটা সময় এই গ্রামের পালদের হাতে তৈরি মাটির জিনিসপত্রের খুব কদর ছিল। তাদের বাপ-দাদার আমলের ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে তারা এখনো এই কাজ করে যাচ্ছে। এমনকি তাদের ছেলে মেয়ে ও ঘরের বউদেরকেউ এই কাজ শেখানো হয়। তারা মাটি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের খেলনা, হাড়ি, কলস, মাটির ব্যাংক, ফুলের টব, বাসন, ফুলদানি, দইয়ের হাড়ি, ল্যাট্রিন এর চারি ইত্যাদি জিনিসপত্র বানাতো। শুধু তাই নয় এগুলো তৈরি করার পর হাতে সুন্দর করে নকশা কেটে রোদে শুকিয়ে মনের মাধুরী মিশিয়ে সেগুলিকে রং করে বাজারে বিক্রি করতো। নিজেদের জেলার চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি এগুলো তারা বড় বড় শহরে বিক্রি করতো। আগে সবকিছুর দাম কম থাকায় তাদের সংসার ভালোভাবেই চলে যেত।
আগের দিনে দাদি নানীরা মাটির চুলায় মাটির হাঁড়িতে ভাত রান্না করত মাটির কলসে পানি রাখতো বাসনে ভাত খেত। কিন্তু বর্তমানে শহরের পাশাপাশি অনেক গ্রামেও আধুনিকতার ছোঁয়া লাগাই এসব হাড়ি, কলস, বাসন এখন আর কেউ ব্যবহার করে না। এখন শুধুমাত্র মাটির চারি দইয়ের হাড়ি আর ব্যাংক তৈরি করেই তারা জীবিকা নির্বাহ করছেন।
সবকিছুতে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগলেও ছোঁয়া লাগেনি মাটির জিনিসপত্র তৈরি করার ক্ষেত্রে। সেই মান্ধাতার আমলের মাটির চুল্লি, কাঠের জালানী ও মাটির ছাঁচ দিয়েই কাজ সারতে হয় তাদের।
বর্তমানে জ্বালানি এবং রঙের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেকেই অভাবের তাড়নায় এ কাজ ছেড়ে দিয়ে অন্য কাজ করছে। বর্তমানে এই গ্রামে ১৪-১৫ ঘর পাল বাস করে।
মাগুরা শ্রীকুন্ডি গ্রামে সরেজমিনে গেলে সঞ্জয় কুমার পাল দৈনিক বাংলাকে জানান, আমাগের বাপ-দাদার আমলের ব্যবসা আমরা ছাড়তে পারবো না। সরকার যদি আমাগের একটু সাহায্য করতেন তাহলে আমরা এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখতি পারতাম । আমরা এ ব্যাপারে সরকারের কাছ থেকে কোনদিন কোন অনুদান পায়নি।
সঞ্জয় কুমার পালের মত একই এলাকার দিলিপ পাল, সুভাষ পাল, নির্মলপাল, হিমপাল, নিমাই পাল, সোনাপাল এরকম আরো অনেকেই এই একই কথা বলেছেন।
একই এলাকার রানী পাল বলেন, আমার স্বামী অসুস্থ এখন আমি মাটির জিনিসপত্র বানায়ে সংসার চালাই। কিন্ত খরি আর রঙের দাম অনেক বেশি সেই সাথে এগুলো বাজারে আনানিয়ার খরচও অনেক হওয়ায় আমাগের অনেক কষ্ট হয়ে যায়। তাই সংসার চালাতি কষ্ট হয়। টাকার জন্যি আমরা ঠিক মত ওষুধ কিনতি পারিনি।
সঠিক তদারকির অভাবে একদিন হয়তো পাল বংশের এই ঐতিহ্য ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে যাবে। গ্রামবাসীরা এ ব্যাপারে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
রাঙামাটি শহরের শিশু পার্কে কাপ্তাই লেকের মাঝখানে নির্মিত আধুনিক ওয়াচ টাওয়ার ইতিমধ্যেই পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পরিচালিত এই শিশু পার্কে টাওয়ারটি ঘিরে এখন বাড়ছে পর্যটকের ভিড়। স্থানীয়রা এবং দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা ভ্রমণপিপাসুরা বলছেন, ওয়াচ টাওয়ার রাঙামাটির পর্যটনে নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২০২৬ অর্থবছরে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় তিনতলা বিশিষ্ট ওয়াচ টাওয়ার ও ওয়াকওয়ে। এর দৈর্ঘ্যে ২৭৮ ফুট ও প্রস্থে ৮ ফুটের এই টাওয়ারে উঠে চোখ মেলে দেখা যায় এশিয়ার বৃহত্তম কৃত্রিম কাপ্তাই হ্রদ ও আশপাশের পাহাড়ি সৌন্দর্য।
শিশু পার্কে পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসা স্থানীয় বাসিন্দা মো. জাকির হোসেন বলেন, “সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে পরিবার ও বাচ্চাদের নিয়ে শিশু পার্কে আসি। কিন্তু আজ ওয়াচ টাওয়ারে উঠে কাপ্তাই লেকের অপার সৌন্দর্য দেখে বিমোহিত হয়ে গেলাম। এটি রাঙামাটির পর্যটনের জন্য এক নতুন সংযোজন।”
স্থানীয় পর্যটক রিয়া সেন বলেন, “আমি আগে অনেকবার কাপ্তাই লেকে ঘুরেছি, কিন্তু এত সুন্দর ভিউ একসাথে কখনো দেখিনি। এখানে দাঁড়িয়ে মনে হয় পুরো রাঙামাটিই চোখের সামনে।”
চট্টগ্রাম থেকে বেড়াতে আসা শাহেদুল ইসলাম জানান, “ওয়াচ টাওয়ারে দাঁড়িয়ে কাপ্তাই লেকের দৃশ্য ক্যামেরায় বন্দি করেছি। এটি শুধু পর্যটকদের নয়, পুরো রাঙামাটির জন্যই এক নতুন সংযোজন।”
এদিকে, পাহাড়ের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সিএইচটি ট্যুরিজম অ্যান্ড কালচার রিসার্চ সেন্টার-এর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সোলায়মান বলেন, “ওয়াচ টাওয়ারটি শুধু রাঙামাটির নয়, পুরো পাহাড়ি অঞ্চলের পর্যটন খাতকে আরও এগিয়ে নেবে। এতে দেশি-বিদেশি পর্যটক আকর্ষণ বাড়বে।”
রাজশাহী থেকে আসা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী মোহনা আক্তার বলেন, “রাঙামাটির পাহাড়-নদী-লেকের সমন্বয় সবসময় আমাকে টানে। ওয়াচ টাওয়ারে উঠে মনে হলো আমি যেন আকাশের আরও কাছে চলে এসেছি।”
এ প্রসঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তুষিত চাকমা বলেন, “শিশু পার্কে ওয়াকওয়ে ও ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ করা হয়েছে পর্যটন শিল্পকে আরও সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে। এখানে দাঁড়িয়ে পর্যটকেরা কাপ্তাই লেক ও পাহাড়ের প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন, যা রাঙামাটির পর্যটন বিকাশে বড় ভূমিকা রাখবে।”
পর্যটন সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, শিশু পার্কের ভেতরে লেকের মাঝখানে নির্মিত এই ওয়াচ টাওয়ার রাঙামাটিকে নতুনভাবে পরিচিত করবে দেশি-বিদেশি ভ্রমণপিপাসুদের কাছে।
মন্তব্য