মানবদেহে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ প্রতিস্থাপনে আধুনিক বিজ্ঞানে বড় অবদান রাখছে জেনোট্রান্সপ্ল্যান্টেশন। তবে এ চিকিৎসাপদ্ধতি নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব রয়েছে ধর্মবিশ্বাসীদের। বিশেষত অন্য প্রাণীর অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নিজ দেহে ধারণ নিয়ে মুসলিম বিশেষজ্ঞদের মধ্যে চলছে বিতর্ক।
জেনোট্রান্সপ্ল্যান্টেশন হলো এমন এক ধরনের পদ্ধতি, যার মাধ্যমে অন্য প্রাণীর অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, কোষ, টিস্যু বা দেহজ তরল মানবদেহে প্রতিস্থাপন করা হয়।
সম্প্রতি প্রথমবারের মতো মানুষের দেহে শূকরের কিডনি সফলভাবে প্রতিস্থাপনে সক্ষম হয়েছেন চিকিৎসকরা। জিনগতভাবে পরিবর্তিত একটি শূকরের কিডনি ব্যবহার করা হয়েছে এ কাজে।
টার্কিশ রেডিও অ্যান্ড টেলিভিশনের (টিআরটি) প্রতিবেদনে বলা হয়, একদিকে বিষয়টি চিকিৎসাবিজ্ঞানে মাইলফলক হিসেবে আখ্যায়িত হচ্ছে; অন্যদিকে শূকরের অঙ্গ ব্যবহারে ধর্মীয় নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বর্ষপুরোনো বিতর্ক নতুন করে উসকে উঠেছে।
ইসলাম ও ইহুদি ধর্মে স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে শূকরের মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ।
আবার, ইনসুলিন থেকে শুরু করে হামের টিকা পর্যন্ত বিভিন্ন ওষুধে শূকরের দেহ থেকে সংগৃহীত নানা উপাদানের ব্যবহার রয়েছে। এমনকি ষাটের দশকে প্রথম অঙ্গ প্রতিস্থাপন শুরুর পর থেকে অনেক মুসলিমের হৃৎপিণ্ডকেই সচল রেখেছে শূকরের ভাল্ভ।
কাতারের হামাদ বিন খলিফা ইউনিভার্সিটির ইসলাম ও জৈবচিকিৎসাবিষয়ক নীতিশাস্ত্রের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ঘালি বলেন, ‘মূলধারার ধর্মীয় শিক্ষাবিদদের দৃষ্টিতেও কোনো বিকল্প না থাকলে শূকরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ব্যবহারে মুসলিমদের বাধা নেই।
‘ইসলাম ধর্মে নির্দেশিত বিধানে বলা আছে, চিকিৎসার কারণে প্রয়োজন হলে নিষিদ্ধ বস্তুও অনুমোদনযোগ্য। কারণ ইসলামে মানুষের প্রাণ বাঁচানো ফরজ।’
মৃত্যুশয্যায় থাকা লাখো রোগীর প্রাণ বাঁচানোর সম্ভাব্য শেষ পথ অঙ্গ প্রতিস্থাপন। শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই অঙ্গ প্রতিস্থাপনের অপেক্ষায় আছেন এক লাখের বেশি রোগী। কিডনি ও যকৃতের জোগান না থাকায় বেশির ভাগই মৃত্যুর অপেক্ষায় দিন গুনছেন।
এমন পরিস্থিতিতে সফল জেনোট্রান্সপ্ল্যান্টেশন এখনও গবেষকদের কাছে অনেকটা এক মরীচিকার নাম। অন্য প্রাণীর আস্ত একটি অঙ্গ বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে মানবদেহে প্রতিস্থাপনের প্রথম চেষ্টার ৪০ বছর পেরিয়েছে, কিন্তু এখনও শতভাগ ক্ষেত্রে সাফল্য আসেনি।
অন্য প্রাণীর অঙ্গ মানবদেহে প্রতিস্থাপনে প্রথম বাধা হলো, গ্রহীতার দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এই অঙ্গকে তাৎক্ষণিক প্রত্যাখ্যান করে। এমনকি নতুন কোনো টিস্যু মানবদেহের সংস্পর্শে এলে নেতিবাচক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় রোগীর মৃত্যুও হতে পারে।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে এনওয়াইইউ ল্যাঙ্গোন হেলথে ৫৪ ঘণ্টার অস্ত্রোপচার শেষে একটি শূকরের কিডনি এক রোগীর দেহে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। শূকরের কিডনিগ্রহীতা একজন ‘ব্রেন-ডেড’ রোগী, অর্থাৎ যার মস্তিষ্ক কার্যক্ষমতা হারিয়েছে। লাইফ সাপোর্ট থাকা ওই নারীর কিডনিও সম্প্রতি বিকল হতে বসেছিল।
তার দেহে শূকরের কিডনিটি যুক্ত করার পর কমপক্ষে তিন দিন কোনো ধরনের নেতিবাচক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি, চিকিৎসাবিজ্ঞানে যা নজিরবিহীন।
প্রতিস্থাপিত কিডনিটি যাতে রোগীর দেহ প্রত্যাখ্যান না করে, সেটি নিশ্চিতে জিনগতভাবে পরিবর্তিত একটি শূকরের অঙ্গ নেয়া হয়েছিল। ফলে ওই কিডনির টিস্যুতে তাৎক্ষণিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টিকারী ক্ষুদ্র জীবাণুর উপস্থিতি ছিল না।
কেন শূকর? ছাগল বা ভেড়া নয় কেন?
জেনোট্রান্সপ্ল্যান্ট গবেষণার প্রায় শুরু থেকেই বিজ্ঞানীদের প্রথম পছন্দ শূকর।
ইউনিভার্সিটি অফ মেরিল্যান্ড স্কুল অফ মেডিসিনের কার্ডিয়াক জেনোট্রান্সপ্ল্যান্টেশন প্রোগ্রামের পরিচালক ড. মুহাম্মদ মনসুর মহিউদ্দিন বলেন, ‘মুসলিম হিসেবে আমাদের জন্য শূকর একটি সমস্যা, কিন্তু বিশ্বের বাকিদের জন্য তা নয়। তারা শূকরের মাংস তো খাচ্ছেই।’
পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত মহিউদ্দিন দৈনন্দিন জীবনে ইসলামের অনুশাসন চর্চা করেন। জেনোট্রান্সপ্ল্যানটেশন খাতে পৃথিবীর খ্যাতিমান গবেষকদেরও তিনি একজন।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউটস অফ হেলথে ড. মহিউদ্দিন ও তার সহকর্মীরা ২০১৪ সালে কয়েকটি বেবুনের দেহে শূকরের হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপন করেন। এর মধ্যে একটি হৃৎপিণ্ড কার্যকর ছিল প্রায় তিন বছর।
ড. মহিউদ্দিন বলেন, ‘আমরা শূকরের জিনোমের পরিপূর্ণ নকশা নির্ণয় করতে পেরেছি। একজন মানুষের সঙ্গে একটি শূকরের জৈবিক পার্থক্য আমরা জানি। শূকরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ মানুষের দেহের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে কী কী পরিবর্তন আনা দরকার, তাও জানি। তবে গরু-ছাগলের দেহের জিনগত তথ্য আমাদের খুব একটা জানা নেই।’
মানুষ নয়, কিন্তু কাছাকাছি প্রজাতির- এমন প্রাণীর মধ্যে প্রতিস্থাপনযোগ্য অঙ্গ সংগ্রহের জন্য সবচেয়ে আদর্শ হলো গরিলা। জিনগত দিক থেকেও মানুষের সঙ্গে সবচেয়ে মিল এ প্রজাতির। বানরের ওপর সর্বাধুনিক জেনোট্রান্সপ্ল্যান্ট পরীক্ষা-নিরীক্ষার অন্যতম কারণ এটি।
তবে বেবুন, গরিলা আর শিম্পাঞ্জি বিপন্ন প্রজাতির প্রাণী বলে এদের নিয়ে খুব বেশি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা সম্ভব নয়। করোনাভাইরাসের মতো প্রাণীদেহ থেকে মানুষে সংক্রমণযোগ্য ভাইরাসের কারণেও বেবুন, গরিলা আর শিম্পাঞ্জি উদ্বেগের কারণ।
এমন পরিস্থিতিতে গবেষকদের কাছে শূকর প্রাধান্য পায় বেশ কয়েকটি কারণে। এই প্রাণীটি তাড়াতাড়ি বেড়ে ওঠে, ঘন ঘন শাবক জন্ম দেয় এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ- আকার-আকৃতির দিক থেকে এদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ মানুষের অঙ্গপ্রত্যঙ্গের মতোই।
ইসলামে শূকর নিকৃষ্ট প্রাণী
শূকরের হৃৎপিণ্ডের ভাল্ভ প্রতিস্থাপন বা অগ্ন্যাশয় থেকে সংগৃহীত উপাদান থেকে ওষুধ তৈরি একটি বিষয়, আর শূকরের আস্ত একটি প্রত্যঙ্গ মানবদেহে প্রতিস্থাপন ভিন্ন বিষয়। দ্বিতীয় বিষয়টি নিয়ে বিতর্কের অন্ত নেই।
জিনগত পরিবর্তনের মাধ্যমে মানবদেহের কিছু জেনেটিক উপাদান শূকরের দেহে প্রতিস্থাপন করা হয়। তবে বাস্তবতা হলো, এতে শূকরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ মানুষের অঙ্গপ্রত্যঙ্গে রূপ নেয় না, শূকরেরই থাকে।
এমন পরিস্থিতিতে মুসলিম বিশ্বের বড় অংশই স্বাভাবিক কারণেই স্বেচ্ছায় শূকরের অঙ্গ মানবদেহে প্রতিস্থাপনে আপত্তি জানাচ্ছে। তবে কারো জীবন ঝুঁকিতে থাকলে বাধ্য হয়ে স্বজনদের মত দেয়ার বিষয়টি একেবারেই আলাদা।
নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির বিশেষজ্ঞরা গত মাসে সফল কিডনি প্রতিস্থাপনের ঘোষণা দেয়ার পরই মিসরের বিখ্যাত আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাবিদরা বিষয়টির নিন্দা জানান। তাদের যুক্তি, শূকর ইসলামে নিষিদ্ধ।
১৮৫৭ সালে ব্রিটিশ উপনিবেশের বিরুদ্ধে তখনকার ভারতীয় সৈনিকদের একাংশ বিদ্রোহ করেছিল। এই বিদ্রোহের নেতৃত্বে ছিলেন মূলত মুসলিম পদাতিক সেনারা। লি-এনফিল্ড রাইফেলের কার্তুজ দাঁত দিয়ে কাটতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন তারা, কারণ কার্তুজগুলো সিল করা থাকত শূকরের চর্বি দিয়ে।
এমনকি মুসলিম মা-বাবাদের আপত্তির কারণে শিশুদের জন্য নির্মিত পেপ্পা পিগ কার্টুনকে ঘিরেও তৈরি হয়েছিল তুমুল বিতর্ক।
মুসলিমদের স্বাস্থ্য বৈষম্য ও ইসলামিক জৈবনীতিশাস্ত্র বিষয়ে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিশেষজ্ঞ ড. আসিম পাদেলা বলেন, ‘পবিত্র কোরআনে যে শূকরকে অপবিত্র বলা হয়েছে, সে বিষয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। বিতর্কের বিষয় হচ্ছে, কখন এটি নিষিদ্ধ নয়, কিন্তু ইসলামে সবচেয়ে আগে এটি নিষিদ্ধ।
‘এটা অনেকটা ওয়াইনের মতো। অনাহারে মরতে বসার অবস্থা থাকলে তখন সামনে মদ থাকলে তা পান করে প্রাণ বাঁচানোর অনুমতি আছে, কিন্তু এটা ব্যতিক্রমী পরিস্থিতি।’
ব্যতিক্রমী পরিস্থিতি কোনগুলো, তা নিয়েও ইসলামিক বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিতর্ক চলছে। কারণ, শূকরের দেহ থেকে সংগৃহীত উপাদানে তৈরি পণ্য ব্যবহার কিছু ক্ষেত্রে অনুমোদিত বলে অনেকে মনে করেন।
মিসরের সর্বোচ্চ ধর্মীয় সংস্থা দার আল-ইফতা আল-মিসিরিয়াহ একটি ডিক্রি জারি করে বলেছে, শূকরের হৃৎপিণ্ডের ভাল্ভ রাসায়নিকভাবে প্রক্রিয়াজাত করা হলে মানবদেহে প্রতিস্থাপন ইসলামের বিধিবহির্ভূত নয়। শূকরের মৌলিক উপাদানগুলো বদলে যাওয়ার মতো পর্যাপ্ত রূপান্তরের পর এর ভাল্ভ মানবদেহে প্রতিস্থাপন করা যেতে পারে।
ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ইসলামে নিষিদ্ধ ওয়াইনকে প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে শরিয়তসম্মত ভিনেগার তৈরির উদাহরণ দেয়া হয়েছে ডিক্রিতে।
মুসলিম সম্প্রদায়ের দায় কতটা?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জেনোট্রান্সপ্ল্যানটেশন গবেষণায় অঙ্গদাতা প্রাণী হিসেবে শূকর প্রাধান্য পাওয়ার কারণ পশ্চিমা বিশ্বে শূকরের মাংস খাওয়ায় কোনো বিধিনিষেধ নেই।
হামাদ বিন খলিফা ইউনিভার্সিটির ঘালি বলেন, ‘যদি আমি ইহুদি বা মুসলিম না হই, সে ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক গবেষণায় শূকর ব্যবহার না করার কি কোনো কারণ আছে?
‘যদি এই বিজ্ঞানের জন্ম ইসলামি সভ্যতার স্বর্ণযুগে হতো এবং বিকাশ ঘটত, তাহলে শূকর নয়, অন্য কোনো প্রাণীই অগ্রাধিকার পেত।’
মুসলিম দেশগুলো নিজেদের জাতীয় বাজেটের খুব ক্ষুদ্র অংশ গবেষণা ও উন্নয়নে ব্যবহার করে। এমনকি ধনী পশ্চিমা দেশগুলোর সমান মাথাপিছু আয় যেসব মুসলিম দেশের, তাদের ক্ষেত্রেও বাস্তবতা একই।
পাদেলার মতে, খুব প্রয়োজন হলেও শূকরের মাধ্যমে সংগৃহীত কাঁচামাল প্রক্রিয়াজাত করা ছাড়া ব্যবহার একজন আদর্শ মুসলিমের কাজ নয়।
তিনি বলেন, ‘পশ্চিমাদের উন্নয়ন কার্যক্রম নিয়ে মুসলিম বিশ্ব ও মুসলিম শিক্ষাবিদরা প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন। অথচ বাস্তবতা হলো, আমরা বিনিয়োগ করছি না বলেই আমাদের হালাল গবেষণা বা শরিয়তসম্মত উন্নয়নকাঠামো নেই।’
আধুনিক চিকিৎসাপদ্ধতির উদ্ভাবকরাও অনেক সময় বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের বিশ্বাস বিবেচনায় নেন এবং নিজেদের উদ্ভাবনে তার ছাপও রাখেন।
উদাহরণ হিসেবে পাদেলা ‘জিহোভাহ’র উইটনেসেস’ নামের খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীদের একটি গোত্রের কথা তুলে ধরেন। কয়েক লাখ অনুসারীর এই গোত্রটিতে ধর্মীয় কারণে রক্তদান নিষিদ্ধ। এ কারণে তাদের জন্য পুরোপুরি রক্তবিহীন পূর্ণাঙ্গ অস্ত্রোপচারের প্রক্রিয়া উদ্ভাবন করা হয়েছে।
মুসলিম বিশ্বের প্রতি প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে পাদেলা বলেন, ‘জ্বালানি তেলের মাধ্যমে অর্জিত অর্থ আমরা খরচ করি নতুন ভবন তৈরির পেছনে। অথচ আমাদের দরকার বিশাল এক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা। নিজেদের মূল্যবোধের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কেন এই কাজটি আমরা করি না?’
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর র্যাডার ইউনিট বগুড়ায় বুধবার (১৮-৬-২০২৫) নব স্থাপিত জিএম ৪০৩এম আকাশ প্রতিরক্ষা র্যাডার এর উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মানিত বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন, বিবিপি, ওএসপি, জিইউপি, এনএসডব্লিউসি, পিএসসি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে আকাশ প্রতিরক্ষা র্যাডার এর উদ্বোধন করেন।
বিমান বাহিনীকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করে গড়ে তোলার জন্য নতুন নতুন স্থাপনা ও যুদ্ধোপকরণ সংযোজন চলমান রয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় আকাশ প্রতিরক্ষা র্যাডারটি আনুষ্ঠানিকভাবে বিমান বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত হলো। ‘বাংলার আকাশ রাখিব মুক্ত’ এই অঙ্গীকারে আরো এক ধাপ এগিয়ে গেল বাংলাদেশ বিমান বাহিনী। নতুন অন্তর্ভুক্ত র্যাডারটি বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর আকাশ প্রতিরক্ষার সক্ষমতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এছাড়াও, অত্যাধুনিক এ র্যাডারটি বিমান বাহিনীর প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধিতেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করবে।
এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তাগণসহ অন্যান্য সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এ বছর ঈদুল আজহায় তরুণ নির্মাতা, পরিবার ও ভ্লগারদের জন্য দারুণ সুযোগ নিয়ে এসেছে বৈশ্বিক প্রযুক্তি ব্র্যান্ড অপো। ঐতিহ্যবাহী গরুর হাটের প্রাণবন্ত ও উষ্ণ পরিবেশকে আরও বেশি উৎসবমুখর করে তুলতে নিয়ে আসা হয়েছে ‘অপো হাটে কী?’ ক্যাম্পেইন।
৩০ মে থেকে আগামী ৬ জুন পর্যন্ত বন্ধু-বান্ধব বা পরিবারের সাথে কাছাকাছি যেকোনো গরুর হাটে গিয়ে বিশেষ মুহূর্তগুলোকে ক্যামেরায় ধারণ করার অনুরোধ জানিয়েছে অপো। হোক সেটা নিখুঁত গরু খোঁজা, দরকষাকষি, হাস্যরসাত্মক কোনো ঘটনা বা পছন্দের গরু বা ছাগলের সাথে মজার কোনো মুহূর্ত! যেখানে প্রতিটি মুহূর্তই গুরুত্বপূর্ণ।
প্রয়োজনে অংশ নিতে আপনার নিকটস্থ ‘হাটে’ যান। ঈদুল আজহা উপলক্ষে নিয়ে আসা স্পেশাল ইফেক্ট ব্যবহার করতে, টিকটকের ফিল্টার অপশন থেকে ‘অপো হাটে কী’ সার্চ করে অপোর এক্সক্লুসিভ ঈদ এআর ফিল্টার ব্যবহার করুন। হাটে আপনার অভিজ্ঞতা ছবি, রিল বা স্টোরি আকারে ধারণ করুন। আপনার পছন্দের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে #HaateKi ব্যবহার করুন এবং @OPPOBangladesh ট্যাগ করে পোস্ট দিন।
আপনার ঈদের আনন্দ উদযাপনকে আরও বহুগুণ বাড়িয়ে তুলতে সবচেয়ে সৃজনশীল, আবেগঘন ও বিনোদনপূর্ণ এন্ট্রিটি জিতে নিবে অপোর আকর্ষণীয় স্মার্টফোন।
এটি কেবল কনটেন্ট তৈরির ব্যাপার নয়; একইসাথে, ঐতিহ্যকে আধুনিকতার সাথে যুক্ত করার একটি প্রচেষ্টা। সর্বাধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে আসা অপোর এই ক্যাম্পেইনে সবাই তাদের সংস্কৃতি, গল্প ও উৎসবকে নতুনভাবে উপস্থাপন করার সুযোগ পাবে।
এ বিষয়ে অপো বাংলাদেশ অথোরাইজড এক্সক্লুসিভ ডিস্ট্রিবিউটরের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ড্যামন ইয়াং বলেন, “ঈদুল আজহার প্রকৃত অনুভূতি তুলে ধরতেই ‘অপো হাট ডায়েরিজ’ নিয়ে আসা হয়েছে, যেন আনন্দ, ঐতিহ্য ও স্মরণীয় মুহূর্তগুলো মানুষ তাদের প্রিয়জনের সাথে ভাগাভাগি করে নিতে পারে। এ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে আমরা তরুণদের সৃজনশীল অভিজ্ঞতাকে বিকশিত করতে চাই, যেখানে সংস্কৃতি আর প্রযুক্তির সমন্বয় ঘটবে। স্মৃতিময় মুহূর্ত ও একসাথে আনন্দ ভাগাভাগি করার সুযোগ নিয়ে এসেছে এ উৎসব।”
তাই, এবারের ঈদুল আজহায় আনন্দ উদযাপনকে আরও বেশি রঙিন করে তুলুন অপো’র সাথে। ক্যামেরা হাতে সৃজনশীলতাকে বিকশিত করুন, আর ঐতিহ্যকে রাখুন প্রাণবন্ত; কারণ, অপো’র সাথে প্রতিটি মুহূর্তই যেন হয়ে ওঠে অনন্য সৃষ্টি!
ডিজিটাল যুগে পণ্য কিংবা সেবা খাতে দেশের অন্যতম বৃহৎ থার্ড পার্টি মেইনটেন্যান্স প্রতিষ্ঠান ‘সার্ভিসিং২৪’ নিয়ে এসেছে সর্বাধুনিক ও সমন্বিত আইটি অবকাঠামো সমাধান—‘ইনফ্রাস্ট্যাক’ ও ‘এইচসিআই’। আরে এতে খরচ কমবে প্ইরায় ৭০ শতাংশ। ইনফ্রাস্ট্যাক হচ্ছে ইনফ্রাস্ট্রাকচার ও স্ট্যাক এর সংক্ষিপ্ত রূপ, যেটির মাধ্যমে সম্পূর্ণ ও সমন্বিত অবকাঠামোগত আইটি সেবা প্রদান করা হবে। আর ‘এইচসিআই’ এর অর্থ হাইপার কনভারজড ইনফ্রাস্টাকচার এটি স্টোরেজ ও নেটওয়ার্কিং এর সমন্বয়ে সফ্টওয়্যার-ভিত্তিক ডিস্ট্রিবিউটেড ও কম্পিউট ফ্রেমওয়ার্ক।
সার্ভিসিং২৪ বলছে, এই ইনফ্রাস্ট্যাক এইচসিআই সল্যুশনে গ্রাহকরা মোট ৪টি মডেলে ‘সার্ভিসিং২৪’-এর এর কাছ থেকে সেবা গ্রহণ করতে পারবেন। এগুলো হচ্ছে- সার্ভার রেন্টাল সার্ভিস, হার্ডওয়্যার রেন্টাল সাপোর্ট, ম্যানেজড আইটি সার্ভিস এবং বান্ডেল রেন্টাল সার্ভিস।
গ্রাহকদের জন্য আরো সুখবর হলো- পুরো সল্যুশনটি সম্পূর্ণ ওপেন সোর্স হওয়ায় কোনো ধরনের অতিরিক্ত লাইসেন্সিং খরচ প্রয়োজন হবে না। পাশাপাশি মাসিক ভাড়া-ভিত্তিক সেবার ফলে বড় অংকের প্রাথমিক বিনিয়োগও লাগবে না। এই সাশ্রয়ী প্রাইভেট ক্লাউড সল্যুশনটি বিশেষভাবে উপযোগী ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠান, স্টার্টআপ, মূলধন সীমাবদ্ধ সরকারি সংস্থা, শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান, বড় শহরের ডেটা সেন্টার এবং পরিবেশবান্ধব আইটি প্রকল্পগুলোর জন্য।
এ বিষয়ে সার্ভিসিং২৪ এর সিইও নাসির ফিরোজ বলেন, “আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে, প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং গ্রাহকদের জন্য সাশ্রয়ী, টেকসই ও আধুনিক আইটি সল্যুশন নিশ্চিত করা। ইনফ্রাস্ট্যাক এইচসিআই এর মাধ্যমে তা সম্ভব। এটি গ্রাহকদের সর্বোচ্চ ৭০% পর্যন্ত খরচ সাশ্রয় করবে।”
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হবার পর হতে ‘সার্ভিসিং২৪’ বাংলাদেশের আইটি সাপোর্ট সার্ভিস ল্যান্ডস্কেপের অন্যতম শীর্ষ উদ্ভাবক-এ পরিণত হয়েছে। প্রযুক্তিখাতে বেড়ে চলা চাহিদা অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটি নিজেকে থার্ড-পার্টি মেইনটেন্যান্স(টিপিএম), ম্যানেজড আইটি সার্ভিসেস, এন্টারপ্রাইজ আইটি সাপোর্ট ইত্যাদি বিষয়ে বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছে। কোম্পানিটি হার্ডওয়্যারের লাইফ বর্ধিত করে সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ কার্বন ইমিশন কমিয়ে আনার পাশাপাশি টেকসই ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় অগ্রণী ভূমিকা রাখছে।
‘সার্ভিসিং২৪’-এর প্রধান প্রধান সেবাগুলো হচ্ছে, থার্ড-পার্টি মেইনটেন্যান্স(টিপিএম), এন্টারপ্রাইজ সার্ভার অ্যান্ড স্টোরেজ সাপোর্ট, ম্যানেজড আইটি সার্ভিসেস, আইটি ইনফ্রাস্ট্র্যাকচার মনিটরিং, এএমসি অ্যান্ড স্পেয়ার পার্টস লাইফসাইকেল ম্যানেজমেন্ট, ক্লাউড সল্যুশন্স অ্যান্ড সাইবার সিকিউরিটি, আইটিএসএম সফ্টওয়্যার অ্যান্ড মোবাইল প্ল্যাটফর্ম ইত্যাদি। প্রতিষ্ঠানটি ব্যাংক, ফার্মাসিউটিক্যালস, অটোমোবাইলস, এফএমসিজি, হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট এবং অন্যান্য কোম্পানিকে আইটি সেবা দিয়ে থাকে।
স্মার্টফোন এখন আর শুধু যোগাযোগের মাধ্যম নয়, বরং কাজ, বিনোদন ও স্বাস্থ্যসহ দৈনন্দিন জীবনের নানা গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যবহৃত একটি অপরিহার্য প্রযুক্তি। এসব কাজে নিরবিচ্ছিন্ন ব্যবহার নিশ্চিতে স্মার্টফোনের ব্যাটারি পারফরম্যান্স গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ব্যবহারকারীদের চাহিদা অনুযায়ী ডিভাইস যেন অতিরিক্ত গরম না হয়, হ্যাং না করে এবং দীর্ঘক্ষণ কার্যকর থাকে—এই সবকিছু মাথায় রেখেই বাজারে এসেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক স্মার্ট ব্যাটারি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম।
স্মার্ট ব্যাটারি: আধুনিক চাহিদার সমাধান
আগে ভালো ব্যাটারি মানে ছিল উচ্চ মিলিঅ্যাম্পিয়ার ক্ষমতা। কিন্তু এখন ব্যাটারি মূল্যায়নে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক বিবেচনায় নেওয়া হয়। অ্যাডাপটিভ পাওয়ার এলোকেশন, ইউজার বিহেভিয়ার অ্যানালাইসিস এবং তাপ নিয়ন্ত্রণ—এই আধুনিক প্রযুক্তিগুলো ব্যাটারির পারফরম্যান্সকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে। যারা বাইরে দীর্ঘ সময় থাকেন, ভিডিও কল, সোশ্যাল মিডিয়া বা নেভিগেশনের মতো ব্যাটারি-নির্ভর কাজে স্মার্টফোন ব্যবহার করেন, তাদের জন্য এসব প্রযুক্তি কার্যকর সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছে।
এআই: শক্তির নতুন চালিকাশক্তি
বর্তমান বাজারের বেশিরভাগ স্মার্টফোনেই এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) প্রযুক্তি সংযোজন করা হয়েছে। এটি অ্যাপ প্রিডিকশন, ব্যাকগ্রাউন্ড টাস্ক সীমিতকরণ এবং স্ক্রিন-অফ অপ্টিমাইজেশনের মাধ্যমে অপ্রয়োজনীয় শক্তি খরচ কমিয়ে দেয়। ব্যবহারকারীরা চাইলে নির্দিষ্ট অ্যাপকে অগ্রাধিকার দিতে পারেন কিংবা ব্যাটারি কমে গেলে ‘আল্ট্রা পাওয়ার সেভিং মোড’ চালু করতে পারেন। ফলে ব্যাটারি ব্যাকআপ যেমন বৃদ্ধি পায়, তেমনি ডিভাইস ব্যবহারে ব্যবহারকারীর নিয়ন্ত্রণও বাড়ে।
চার্জিং প্রযুক্তিতে বিপ্লব
শুধু ব্যাটারি ব্যবস্থাপনাই নয়, স্মার্ট চার্জিং প্রযুক্তিতেও এসেছে দারুণ অগ্রগতি। এর উল্লেখযোগ্য উদাহরণ ইনফিনিক্সের নতুন নোট ৫০ সিরিজ। এই সিরিজের প্রতিটি মডেলে রয়েছে ৫২০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ার ব্যাটারি, যার চার্জিং ক্ষমতা ৪৫ ওয়াট থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১০০ ওয়াট পর্যন্ত। সেই সঙ্গে রয়েছে ম্যাগচার্জ প্রযুক্তি-ভিত্তিক ৫০ ওয়াটের ওয়্যারলেস চার্জিং সুবিধা।
চার্জিং প্রযুক্তিতেও ব্যবহৃত হয়েছে এআই, যা চার্জিং স্পিড ও ব্যাটারির তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে, ফলে ব্যাটারির দীর্ঘস্থায়িত্ব ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।
স্মার্টফোন ব্যবহারে নতুন মাত্রা
নোট ৫০ সিরিজে যুক্ত হয়েছে ইনফিনিক্সের নিজস্ব এআই♾️ প্রযুক্তি, যা ব্যবহারকারীর আচরণ বিশ্লেষণ করে ডিভাইস পারফরম্যান্স ও অভিজ্ঞতা আরও উন্নত করে। অন্যান্য উল্লেখযোগ্য ফিচারের মধ্যে রয়েছে ডিপ সিক এআই, ওয়ান-ট্যাপ এআই ক্যামেরা এবং এআই নয়েস মিউট।
এছাড়া রয়েছে বায়ো-এক্টিভ হ্যালো লাইট নোটিফিকেশন—যা কাজের বিঘ্ন না ঘটিয়ে প্রয়োজনীয় বার্তা পৌঁছে দেয়।
সব মিলিয়ে ইনফিনিক্স নোট ৫০ সিরিজ শক্তিশালী ব্যাটারি, কার্যকর চার্জিং প্রযুক্তি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সমন্বয়ে স্মার্টফোন ব্যবহারে নতুন এক অভিজ্ঞতা উপহার দিচ্ছে, যা ব্যবহারকারীর আধুনিক চাহিদা পূরণে সক্ষম।
অ্যাস্টন মার্টিন ফরমুলা ওয়ান টিমের সাথে আজ যুগান্তকারী তিন বছর মেয়াদী কৌশলগত অংশীদারিত্বের ঘোষণা দিলো রিয়েলমি। আর এই সহযোগিতার মাইলফলক হিসেবে জিটি ৭ ড্রিম এডিশনের আকর্ষণীয় কো-ব্র্যান্ডেড সংস্করণ নিয়ে এসেছে ব্র্যান্ডটি।
এ বিষয়ে রিয়েলমি’র সিইও স্কাই লি বলেন, “অ্যাস্টন মার্টিন আরামকোর মতো কিংবদন্তি রেসিং টিমের সঙ্গে সহযোগিতা, আমাদের জন্য উদ্ভাবনের সীমানা অতিক্রম করে যাওয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। কেবল আমাদের নিখুঁত পণ্যগুলোই টিকে থাকার মতো সক্ষমতা অর্জন করে। আমরা আমাদের নতুন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে বিশ্বব্যাপী ব্যবহারকারীদের কাছে অসাধারণ ডিজাইন ও প্রিমিয়াম কারিগরি দক্ষতা নিয়ে যেতে চাই।”
এ বিষয়ে অ্যাস্টন মার্টিন আরামকো ফর্মুলা ওয়ান টিমের হেড অব লাইসেন্সিং অ্যান্ড মার্চেন্ডাইজ ম্যাট চ্যাপম্যান বলেন, “আমাদের প্রথম কো-ব্র্যান্ডেড ফোন উন্মোচনের পাশাপাশি, রিয়েলমিকে টিমে স্বাগত জানাতে পেরে আমরা উচ্ছ্বসিত। জিটি ৭ ড্রিম এডিশনে উচ্চ সক্ষমতা ও উদ্ভাবনী ডিজাইনের সমন্বয় রয়েছে; আগামীর মডেলগুলোতে একযোগে কাজ করার জন্য আমরা অধীর আগ্রহে রয়েছি।”
বৈশ্বিকভাবে দ্রুতবর্ধনশীল স্মার্টফোন ব্র্যান্ড হিসেবে রিয়েলমি, বিশ্বজুড়ে তরুণ ব্যবহারকারীদের প্রত্যাশা ছাড়িয়ে প্রযুক্তিগত অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। নির্ভুল প্রকৌশল, অসাধারণ কর্মদক্ষতা ও অনন্য ডিজাইনের জন্য বিখ্যাত অ্যাস্টন মার্টিন ফর্মুলা ওয়ানের সাথে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে রিয়েলমি আগামী প্রজন্মের জন্য অনবদ্য প্রযুক্তি অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করছে।
এই সহযোগিতার মাধ্যমে রিয়েলমি জিটি ৭ ড্রিম এডিশনের মতো একটি অসাধারণ কো-ব্র্যান্ডেড সিরিজ উন্মোচন করা হয়েছে। এই স্মার্টফোনটি কেবল রিয়েলমি’র জিটি সিরিজের ফ্ল্যাগশিপ পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতাই নয়; একইসাথে, এতে আইকনিক দুই পাখার ডিজাইন ও অ্যাস্টন মার্টিনের বিশেষ গ্রিন কালার রয়েছে। এ সহযোগিতার অংশ হিসেবে, দু’পক্ষ প্রতিবছর দুইটি মডেল একযোগে নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছে, যা এই অংশীদারিত্বকে আরও বেশি আকর্ষণীয় ও প্রত্যাশিত করে তুলেছে।
রিয়েলমি জিটি ৭ সিরিজের বৈশ্বিক উন্মোচন অনুষ্ঠান আজ ফ্রান্সের প্যারিসে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যেখানে জিটি ৭ সিরিজ ও ড্রিম এডিশন সম্পর্কে আরও বিস্তারিত সব তথ্য উন্মোচিত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
তরুণদের প্রিয় প্রযুক্তি ব্র্যান্ড রিয়েলমি বাংলাদেশে তাদের বিশেষ ঈদ ক্যাম্পেইন ঘোষণা করেছে। ব্যবহারকারীদের মাঝে ঈদের আনন্দ ছড়াতে প্রস্তুত ব্র্যান্ডটি। সীমিত সময়ের এ ক্যাম্পেইনটি কেবল বড় কিছু জেতার সুযোগই দিচ্ছে না, বরং প্রত্যেক অংশগ্রহণকারীর জন্যই নিশ্চিত করছে আকর্ষণীয় উপহার।
লটারির মাধ্যমে সৌভাগ্যবান বিজয়ীদের জন্য ৪টি গ্র্যান্ড প্রাইজ নিয়ে এসেছে রিয়েলমি। এতে প্রথম পুরস্কার বিজয়ী পাবেন ১,০০,০০০ টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার বিজয়ী পাবেন ৬০,০০০ টাকা। তৃতীয় পুরস্কারে রয়েছে নির্দিষ্ট রিয়েলমি পণ্যের ক্ষেত্রে আকর্ষণীয় বাই ওয়ান গেট ওয়ান (বোগো) অফার এবং চতুর্থ পুরস্কার হিসেবে থাকছে রিয়েলমি টি২০০ লাইট এয়রবাডস।
এসব পুরস্কার ছাড়াও আরও কিছু নিশ্চিত উপহার নিয়ে এসেছে রিয়েলমি; যেন লটারি যারা জিতবেন না তারাও এ উদযাপনে অংশ নিতে পারেন। ক্রেতাদের মানসিক প্রশান্তি নিশ্চিত করতে রিয়েলমি সি৭৫ বা রিয়েলমি সি৭৫এক্স কেনার ক্ষেত্রে ২ বছরের বাড়তি ওয়ারেন্টি পাওয়া যাবে।
রিয়েলমি ১২ স্মার্টফোনের ক্ষেত্রে ক্রেতারা পাবেন ২,০০০ টাকার ইনস্ট্যান্ট ক্যাশব্যাক; ফলে, ২৭,৯৯৯ টাকার এই ডিভাইসটি পাওয়া যাবে মাত্র ২৫,৯৯৯ টাকায়।
রিয়েলমি ১৪ সিরিজ কেনার ক্ষেত্রে রিয়েলমি ব্র্যান্ডের আকর্ষণীয় টি-শার্ট পাবেন ক্রেতারা। পাশাপাশি, ক্যাম্পেইনে অংশ নেয়া সকল ক্রেতা বাংলালিংকের অংশীদারিত্বে বিশেষ অফার উপভোগ করার সুযোগ পাবেন।
কেবল সর্বাধুনিক প্রযুক্তি নিশ্চিত করাই নয়, একইসাথে, ব্যবহারকারীদের জন্য আকর্ষণীয় পুরস্কার ও সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতা নিয়ে আসার ক্ষেত্রে রিয়েলমি’র ধারাবাহিক প্রচেষ্টার বহিঃপ্রকাশ এই ঈদ ক্যাম্পেইন। উৎসবের এ সময়ে প্রত্যেক ক্রেতাই যেন নিজেকে বিজয়ী মনে করেন, তা নিশ্চিত করতেই দুর্দান্ত সব পুরস্কার ও নিশ্চিত উপহার নিয়ে এসেছে ব্র্যান্ডটি।
ক্যাম্পেইন ও এতে কীভাবে অংশ নিবেন, তা আরও বিস্তারিত জানতে রিয়েলমি বাংলাদেশের অফিসিয়াল সোশ্যাল মিডিয়া পেইজ ও ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।
তরুণদের পছন্দের টেক ব্র্যান্ড রিয়েলমি বাংলাদেশের বাজারে তাদের সর্বশেষ স্মার্টফোন রিয়েলমি সি৭১ নিয়ে এসেছে। নিরবচ্ছিন্ন ব্যাটারি পারফরম্যান্স চাইছেন এমন ব্যবহারকারীদের জন্য এই ডিভাইসটি ডিজাইন করা হয়েছে। রিয়েলমি’র নতুন এই ফোনে দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি লাইফ, এআই-সক্ষম ফিচার ও প্রাণবন্ত ডিসপ্লেসহ আধুনিক ও স্টাইলিশ ডিজাইন ব্যবহার করা হয়েছে।
রিয়েলমি সি৭১-এ রয়েছে সুবিশাল ৬,৩০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ার ব্যাটারি ও ৪৫ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং সুবিধা, যা সারাদিন নিরবচ্ছিন্ন সক্ষমতা প্রদান করে। মাত্র ১ ঘণ্টার চার্জেই ব্যবহারকারীরা দুই দিনের জন্য ফোনটি নির্বিঘ্নে ব্যবহার করতে পারবেন, যা এখনকার ব্যস্ত জীবনযাপনের সাথে মানিয়ে যাবে। একইসাথে, এই ব্যাটারি ও চার্জিং দীর্ঘস্থায়ী ও কার্যকর সক্ষমতা নিশ্চিত করে ব্যবহারকারীকে নিশ্চিন্ত রাখতে সহায়তা করে।
রিয়েলমি সি৭১-এর নান্দনিক ও প্রাণবন্ত ডিজাইন তরুণ ব্যবহারকারীদের পছন্দের সঙ্গে মানানসই। এর ‘লাইট পালস’ নোটিফিকেশন ফিচারটি বিশেষ করে, মিটিং বা গুরুত্বপূর্ণ আলাপ চলাকালে কল বা মেসেজ আসার সময় নিঃশব্দে চোখে পড়বে। ফোনটির ১২০ হার্জ রিফ্রেশ রেট ডিসপ্লের ক্ষেত্রে আরামদায়ক ও স্বাচ্ছন্দ্যদায়ক অনুভূতি নিশ্চিত করে। এই দামের অন্যান্য ফোনের ক্ষেত্রে এই রিফ্রেশ রেট সাধারণত দেখা যায় না; ফলে রিয়েলমি’র এই ফোনটি গেম খেলা, সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্রল করা বা ভিডিও দেখার অভিজ্ঞতাকে আরও সমৃদ্ধ করবে।
রিয়েলমি সি৭১-এ এআই-সক্ষম একাধিক ফিচার রয়েছে, যা দৈনন্দিন কাজগুলো আরও সহজ ও সাবলীল করে। এর মধ্যে রয়েছে এআই নয়েজ রিডাকশন কল ২.০, যা কলের ব্যাকগ্রাউন্ডের নয়েজ কমায়। এআই ক্লিয়ার ফেস যা ক্যামেরা পারফরম্যান্সকে আরও সমৃদ্ধ করে। এআই ইমেজ ম্যাটিং, যা সহজেই ব্যাকগ্রাউন্ড এডিট করতে সহায়তা করে। এআই ইরেজার, যা ছবি থেকে অপ্রয়োজনীয় বিষয় অপসারণ করে। এছাড়াও, গুগল জেমিনি ও সার্কেল-টু-সার্চ ব্যবহারকারীদের জন্য এআই সার্চের সুবিধা নিশ্চিত করে। এসব ফিচার একত্রে স্মার্টফোন ব্যবহারে নতুন মাত্রা যোগ করে।
ফোনটিতে রয়েছে ৫০ মেগাপিক্সেলের একটি এআই ক্যামেরা, যা ব্যবহারকারীদের নিখুঁত ও ঝকঝকে ছবি তুলতে সহায়তা করে। এই ডিভাইসে প্রাইমারি ক্যামেরার সাথে রয়েছে- একটি ফ্লিকার লেন্স, যেটি পারিপার্শ্বিক আলো থেকে ফ্লিকার ফ্রিকোয়েন্সি নির্ণয় করে এবং ছবি তোলার সময় ফ্লিকার নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়া- রিয়ার প্যানেলে আছে ‘পালস লাইট’ অর্থ্যাৎ আলোর ভিন্ন একটি প্যানেল, যার মাধ্যমে ভাইব্রেশন কিংবা শব্দ ছাড়াই এক ধরনের নোটিফিকেশন পাবেন গ্রাহকরা।
পাশাপাশি, স্মৃতিময় মুহূর্ত ধারণ করার জন্য রয়েছে ৫ মেগাপিক্সেল সেলফি ক্যামেরা। অ্যান্ড্রয়েড ১৫ ভিত্তিক রিয়েলমি’র ইউজার ইন্টারফেস ব্যবহারকারীদের জন্য অনবদ্য অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে। এছাড়া, এর আইপি৬৪ রেটিংয়ের ওয়াটার অ্যান্ড ডাস্ট রেজিজট্যান্স ও সনিকওয়েভ ওয়াটার ইজেকশন প্রযুক্তি ফোনটিকে যেকোনো পরিবেশের জন্য সহনীয় ও টেকসই করে তোলে।
রিয়েলমি সি৭১ দুটি ভ্যারিয়েন্টে পাওয়া যাবে। ৪ জিবি র্যাম ও ১২৮ জিবি স্টোরেজের মূল্য মাত্র ১৪,৯৯৯ টাকা এবং ৬ জিবি র্যাম ও ১২৮ জিবি স্টোরেজের মূল্য মাত্র ১৫,৯৯৯ টাকা। স্মুথ মাল্টিটাস্কিং ও অনবদ্য পারফরম্যান্স নিশ্চিত করতে এতে ডায়নামিক মেমরি এক্সপানশন ব্যবহার করা হয়েছে, যা ২ টেরাবাইট পর্যন্ত বৃদ্ধি করে নেয়া সম্ভব।
মন্তব্য