বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ও বহুল ব্যবহৃত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের প্রাতিষ্ঠানিক বা কোম্পানির নতুন নাম মেটা প্ল্যাটফর্মস, সংক্ষেপে মেটা। অর্থাৎ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাপ বা সাইটটি আগের, তথা ফেসবুক নামেই থাকছে; কিন্তু ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ ইত্যাদি এখন থেকে সামগ্রিকভাবে পরিচালনা করবে মেটা, যা আগে ছিল ফেসবুকের অধীনে।
ফেসবুক, তথা মেটার সহ-প্রতিষ্ঠাতা, চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ বৃহস্পতিবার এ ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি জানান, ভার্চুয়াল বিশ্ব গড়ার মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে ‘কোম্পানি রিব্র্যান্ডিং’-এর এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
রিব্র্যান্ডিং হলো এক ধরনের বিপণন কৌশল। আগে থেকেই বাণিজ্যিকভাবে সুপ্রতিষ্ঠিত একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রিব্র্যান্ডিংয়ের মাধ্যমে নতুন নাম, প্রতীক, ধারণা ইত্যাদি গ্রহণ করে। রিব্র্যান্ডিংয়ের লক্ষ্য হলো গ্রাহক, বিনিয়োগকারী, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠান ও অন্য শেয়ারহোল্ডারদের মনে একটি নতুন ও ভিন্ন পরিচয়ে জায়গা তৈরি করা।
এর আগে এমনই একটি কাঠামো গ্রহণ করেছিল গুগলও। ইন্টারনেটভিত্তিক পণ্য উৎপাদন-বিক্রয় ও সেবাদানকারী বহুজাতিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানটি ২০১৫ সালে অ্যালফাবেট নামের একটি হোল্ডিং কোম্পানির অধীনে পুনর্গঠিত হয়।
এবিসি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, জাকারবার্গ রিব্র্যান্ডিংয়ের অংশ হিসেবে ফেসবুকের প্রাতিষ্ঠানিক নাম পরিবর্তনের দাবি করলেও তা মানতে নারাজ সমালোচকরা। তারা বলছেন, সাম্প্রতিক কিছু বিতর্ক থেকে নজর ঘোরাতে এবং ব্যবসায়িক চর্চার ধরন নিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও আইনপ্রণেতাদের তোপের মুখে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফেসবুক।
এ অবস্থায় জনমনে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে, সাধারণ সংগঠন হিসেবে ফেসবুক নাম পাল্টে মেটা হলে আদতে কী লাভ হবে।
ফেসবুকের নাম পরিবর্তনের অর্থ কী
ফেসবুক কোম্পানি আগের নাম পাল্টে নতুন নাম মেটায় পরিচিত হবে। কিন্তু সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং অ্যাপের নাম থাকবে আগেরটাই- ফেসবুক।
নতুন নাম গ্রহণের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি নতুন প্রতীক বা লোগোও নির্ধারণ করেছে মেটা।
এক বিবৃতিতে মেটা জানিয়েছে, নতুন নাম গ্রহণের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির মালিকানাধীন বর্তমান ও ভবিষ্যতের সব অ্যাপ ও প্রযুক্তি একটি সাধারণ কোম্পানি ব্র্যান্ডের অধীনে পরিচালনা করা হবে।
২০০৪ সালে চালু হয় ফেসবুক। এরপর প্রতিষ্ঠানটি ব্যবসা সম্প্রসারণের অংশ হিসেবে ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপ নামের আরও দুটি সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং অ্যাপ কিনে নেয়।
এ ছাড়া গত কয়েক বছরে অন্যান্য প্রযুক্তিতেও বড় অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগ করে প্রতিষ্ঠানটি। যেমন ডিজিটাল ওয়ালেট ‘নোভি’, ভিডিও-কলিং ডিভাইস ‘পোর্টাল’ ও ভার্চুয়াল রিয়েলিটি সিস্টেম ‘অকুলাস’।
এই সবগুলো প্রতিষ্ঠানের ‘মাদার অর্গানাইজেশন’, অর্থাৎ সাধারণ মালিক বা পরিচালনাকারী মূল ও একক প্রতিষ্ঠান এখন মেটা, যা আগে ছিল ফেসবুক।
জাকারবার্গের এ রিব্র্যান্ডিং কৌশলের বড় অংশজুড়ে থাকবে ‘মেটাভার্স’ নামের একটি উচ্চাভিলাষী প্রকল্প। মেটাভার্সকে বলা হচ্ছে এমন এক ডিজিটাল বিশ্ব বা ভার্চুয়াল বাস্তবতা, যেখানে মানুষের পক্ষে বিভিন্ন ডিভাইসের মাধ্যমে স্থান পরিবর্তন করা সম্ভব হবে এবং তারা এক ধরনের ভার্চুয়াল পরিবেশে যোগাযোগ করতে পারবে।
কিন্তু সমালোচকদের সন্দেহ, অভ্যন্তরীণ নথি ফাঁসের পর তুমুল বিতর্কের মুখে সাধারণ মানুষের নজর ঘোরাতে এ পদক্ষেপ নিয়েছে ফেসবুক।
সম্প্রতি এসব নথি ফাঁস করেন ফেসবুকের সাবেক কর্মকর্তা ফ্রান্সেস হাওগেন। সেসব নথি বিশ্লেষণ করে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম খবর প্রকাশ করে, সারা বিশ্বের ব্যবহারকারীদের ওপর নেতিবাচক ও ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে মাথাব্যথা নেই ফেসবুকের। এ সংক্রান্ত সব সতর্কতা বারবার উপেক্ষা করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
মেটাভার্স কী
বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তিখাতে এখন সবচেয়ে আলোচিত শব্দ ‘মেটাভার্স’।
মেটাভার্স একটি ভার্চুয়াল বিশ্ব, যেখানে যন্ত্রের মাধ্যমে নিজেকে যুক্ত করে, অন্তত তাত্ত্বিকভাবে, যেকোনো কাজই করতে পারবেন একজন ব্যক্তি।
দ্য ম্যাট্রিক্স, রেডি প্লেয়ার ওয়ান ও ট্রনের মতো বিশ্বখ্যাত চলচ্চিত্রগুলোতে এমন ভার্চুয়াল বিশ্বের সঙ্গে পরিচিত হয়েছে মানুষ।
জাকারবার্গের মতে, মেটাভার্সের মাধ্যমে যোগাযোগ, উদ্ভাবনসহ সব ধরনের কাজ করতে পারবে মানুষ। আগামী কয়েক দশকের মধ্যে ১০০ কোটি মানুষের কাছে পৌঁছাবে এ প্রযুক্তি।
স্বল্পমেয়াদে এ প্রকল্প থেকে কোনো আয় আসবে না এবং জীবদ্দশায় ব্যক্তিগতভাবে জাকারবার্গের লাভবান হওয়ার সুযোগ নেই বলেও দাবি করেন প্রযুক্তিসম্রাট।
বিশ্লেষকদের তিনি বলেন, ‘বর্তমান তো দূর, নিকট ভবিষ্যতেও এ খাতে বিনিয়োগ আমাদের জন্য লাভজনক নয়। কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি যে মোবাইল ইন্টারনেটের উত্তরসূরী হতে যাচ্ছে মেটাভার্স।’
মেটাভার্সের ‘মেটা’ শব্দটির অর্থ কী
ইংরেজি ভাষায় ‘মেটা’ শব্দটি একটি উপসর্গ, যা অন্য একটি অর্থপূর্ণ শব্দের আগে যুক্ত হয়ে নতুন অর্থ তৈরি করে। যেমন- মেটাকারপাস (কব্জি ও পাঁচ আঙুলের মধ্যবর্তী হাতের তালুর পাঁচটি হাড়), মেটাল্যাঙ্গুয়েজ (আরেকটি ভাষার ব্যাখ্যা করা হয় যে ভাষায়) এবং মেটামোরফোসিস (রূপ পরিবর্তন) ইত্যাদি।
গ্রিক ভাষায় মেটা শব্দের অর্থ ‘গণ্ডির বাইরে’ বা ‘প্রচলিত রীতিকে ভাঙা’।
আবার গণমানুষের সংস্কৃতিতে মেটা শব্দটি ভিন্ন অর্থ বহন করে। আত্মসচেতনতা বা পূর্ববর্তী ধারণাকে ভেঙে এগিয়ে যাওয়া বা নতুন ধারণা গ্রহণের বিষয়টিকে বলা হয় মেটা। সৃজনশীল কাজে শব্দটি বহুল ব্যবহৃত।
কীভাবে কাজ করবে জাকারবার্গের মেটাভার্স
বার্তা সংস্থা এপির প্রতিবেদনে বলা হয়, মেটাভার্স প্রকল্পের অংশ হিসেবে এরই মধ্যে ভার্চুয়াল বাস্তবতা (ভিআর) ও অগমেন্টেড বাস্তবতার (এআর) ওপর বিপুল বিনিয়োগ করেছেন জাকারবার্গ।
বাস্তব জগতের মতো কিংবা সম্পূর্ণ ভিন্ন কৃত্রিম অভিজ্ঞতা হলো ভার্চুয়াল বাস্তবতা।
অন্যদিকে, অগমেন্টেড বাস্তবতা বলতে বোঝানো হয় বাস্তব শারীরিক বিশ্বের একটি সম্প্রসারিত সংস্করণকে। প্রযুক্তির মাধ্যমে ডিজিটাল ভিজুয়াল উপকরণ, শব্দ ও অন্যান্য সংবেদনশীল উদ্দীপনা ব্যবহারের মাধ্যমে অগমেন্টেড বাস্তবতা অর্জন করা সম্ভব। মোবাইল কম্পিউটিং ও ব্যবসায়িক অ্যাপ্লিকেশনসের সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলোতে অগমেন্টেড বাস্তবতার ধারণা দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে।
ভার্চুয়াল ও অগমেন্টেড বাস্তবতাকে দৈনন্দিন জীবনে পরিচিত করতে অকুলাস ভিআর হেডসেট, এআর চশমা, প্রযুক্তি যুক্ত রিস্টব্যান্ডসহ নানা পণ্য তৈরিতে গবেষণা করছে ফেসবুক।
বলা হচ্ছে, মেটাভার্সের সৃষ্ট ভার্চুয়াল বিশ্বের কোনো সীমা-পরিসীমা থাকবে না। এটা এমন এক ‘ভার্চুয়াল পরিবেশ’ যেখানে কেবল স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে না থেকে আপনি তার ভেতরে ঢুকে চলে যেতে পারবেন যেকোনো স্থানে।
ভিআর হেডসেট, এআর চশমা, প্রযুক্তি যুক্ত রিস্টব্যান্ড, স্মার্টফোন অ্যাপ ও আরও অনেক ডিভাইস ব্যবহারের মাধ্যমে বৈঠক-আড্ডা, খেলাধুলা, কর্মস্থল যেকোনো জায়গায় যোগ দিতে পারবেন আপনি।
এমনকি কেনাকাটা, সোশ্যাল নেটওয়ার্কিংসহ অনলাইনভিত্তিক আমাদের বর্তমান কর্মকাণ্ডও আসবে মেটাভার্সের আওতায়। বাদ থাকবে না কনসার্টে যোগ দেয়া, বেড়াতে যাওয়া, ডিজিটাল পোশাকের ট্রায়ালসহ কোনোকিছুই।
করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে ঘরে বসে অফিসের কাজ করার ক্ষেত্রেও গেম-চেঞ্জার হতে পারে মেটাভার্স। ভিডিও কলের মাধ্যমে মোবাইল বা ল্যাপটপের স্ক্রিনে সহকর্মীদের দিকে তাকিয়ে থাকার দিন শেষ হবে; এর বদলে কর্মীরা একে অপরের সঙ্গে ভার্চুয়ালি বসে কাজ করতে পারবেন, আলোচনা করতে ও কথা বলতে পারবেন- ঠিক যেমন অফিসে করেন।
হরাইজন ওয়ার্করুমসসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে এ ধরনের সফটওয়্যার চালু করেছে সাবেক ফেসবুক, বা বর্তমান মেটা। অকুলাস ভিআর হেডসেট দিয়ে কাজ করছেন কর্মীরা, যার একেকটির মূল্য শুরুই ৩০০ ডলার থেকে। এখনও পণ্যটির সুবিধার বিষয়ে খুব একটা ইতিবাচক সাড়া মেলেনি।
প্রতিটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানকেও বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মকে সংযুক্ত করার উপায় খুঁজতে হবে। এজন্য আগে তাদের সম্মিলিতভাবে বিভিন্ন নীতিমালা ও কর্মপরিকল্পনাও গ্রহণ করতে হবে।
ফেসবুক কী পরিপূর্ণভাবে মেটাভার্সেই রূপ নেবে?
জাকারবার্গ জানিয়েছেন, ইন্টারনেটের ভবিষ্যৎ অনেক আশাব্যঞ্জক। এটি ডিজিটাল অর্থনীতির কেন্দ্রে পরিণত হবে।
তাই আগামীতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হিসেবে নয়, ফেসবুককে মেটাভার্স প্রতিষ্ঠান হিসেবেই দেখতে শুরু করবে মানুষ।
মেটাভার্স দাঁড় করাতে একজোট হবে অনেক প্রতিষ্ঠান
শুধু তাই নয়, একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে মেটাভার্স কাজ করবে না বলেও জানিয়েছেন জাকারবার্গ। এরই মধ্যে সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফট, চিপনির্মাতা ভিডিয়া আর ভিডিও গেম প্রতিষ্ঠান এপিক গেমস, রোবলক্সের সঙ্গে মেটাভার্সকে এগিয়ে নেয়ার বিষয়ে আলোচনাও শুরু হয়েছে।
জনপ্রিয় ভিডিও গেইম ফর্টনাইটের কারিগর প্রতিষ্ঠান এপিক গেমস এরই মধ্যে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ১০০ কোটি ডলারের তহবিল সংগ্রহ করেছে। মেটাভার্স প্রতিষ্ঠায় দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা প্রণয়নে ব্যয় হবে এ অর্থ।
শিখন কার্যক্রম, খেলাধুলা, সামাজিকতা রক্ষা ও সাধারণ কাজকর্মের জন্য মেটাভার্সে ত্রিমাত্রিক (থ্রিডি) অভিজ্ঞতা যুক্ত করতে কাজ করছে রোবলক্স।
ইতালিভিত্তিক জনপ্রিয় ফ্যাশন হাউজ গুচি চলতি বছরের জুনে রোবলক্সের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছে। চুক্তি অনুযায়ী ডিজিটাল আনুষঙ্গিক পণ্যও বিক্রি করবে তারা।
মেটাভার্সে ঢোকার টিকিট হিসেবে ডিজিটাল টোকেন বিক্রি করেছে কোকা-কোলা ও ক্লিনিক।
আরও পড়ুন:সুন্দরবনের লোনা পানির চারটি কুমিরের শরীরে স্যাটেলাইট ট্যাগ লাগানোর পর দেখা যাচ্ছে, এর তিনটি সুন্দরবনে ফিরে গেলেও একটি বহু পথ ঘুরে এখন বরিশাল বিভাগের জেলা পিরোজপুরের নদীতে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
কুমিরের আচরণ ও গতিবিধি জানতে সম্প্রতি চারটি কুমিরের গায়ে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসিয়ে সুন্দরবনে ছেড়ে দেয়া হয়েছিল। এর মধ্যে তিনটি সুন্দরবনের বিশাল এলাকায় চলে যায়। তবে একটি কুমির বন ছেড়ে মংলা, বাগেরহাট, মোড়েলগঞ্জ হয়ে পিরোজপুরে ঢুকে পড়েছে।
মাত্র ১১ দিনে প্রায় একশ’ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছে কুমিরটি। গায়ে বসানো স্যাটেলাইটের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, কুমিরটি বুধবার সকালে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার তুষখালির একটি নদীতে রয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের আশা, নির্দিষ্ট সময় পর আবারও সুন্দরবনে ফিরে আসবে। তবে আপাতত সে তার নিজের জন্য নিরাপদ পরিবেশ খুঁজছে।
স্যাটেলাইট ট্যাগ বসিয়ে ১৬ মার্চ কুমিরটি অবমুক্ত করা হয়েছিল সুন্দরবনের হারবাড়িয়া পয়েন্টে। এরপর এটি মংলা, রামপাল, বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ হয়ে পিরোজপুরে ঢুকেছে।
বন সংরক্ষক ও বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ ইমরান আহমেদ বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘আমরা মূলত এই গবেষণার মাধ্যমে তাদের আচরণ ও বসবাসের পরিবেশ বোঝার চেষ্টা করেছি। যে কুমিরটি বনের বাইরে গেছে সে হয়তো তার বসবাসের জন্য সুবিধাজনক জায়গা খুঁজছে।’
কুমিরের গায়ে স্যাটেলাইট ট্যাগ বসিয়ে নদীতে অবমুক্ত করার কাজটি যৌথভাবে করছে বন বিভাগ ও ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচার (আইইউসিএন)। তাদের সহযোগিতা করছে, জার্মান ফেডারেল মিনিস্ট্রি ফর ইকনোমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (জিআইজেড)।
আইইউসিএন-এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার সারোয়ার আলম দীপু বলেন, ‘সুন্দরবনের কুমির কোথায় কিভাবে বিচরণ করে তা নিয়ে বিস্তারিত কোনো গবেষণা হয়নি। সে কারণেই স্যাটেলাইট ট্যাগ বসিয়ে গবেষণাটি করা হচ্ছে।’
বিশ্বে পাখি, কচ্ছপ, নেকড়েসহ বিভিন্ন প্রাণীর শরীরে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসিয়ে তাদের আচরণ নিয়ে গবেষণার নজির রয়েছে। তবে বাংলাদেশের কুমির নিয়ে এভাবে গবেষণা এই প্রথম।
গবেষণাটি যেভাবে শুরু
লোনা পানির মোট চারটি কুমিরের গায়ে ১৩ থেকে ১৬ মার্চের মধ্যে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসানো হয়। এর মধ্যে দুটি পুরুষ ও দুটি স্ত্রী কুমির।
এদের মধ্যে পুরুষ কুমির ‘জুলিয়েট’ সুন্দরবনের করমজলে অবস্থিত দেশের একমাত্র সরকারি কুমির প্রজনন কেন্দ্রের পুকুরে ছিল। আর স্ত্রী কুমির ‘মধু’কে সম্প্রতি যশোরের কেশবপুর উপজেলার সাগরদাঁড়ির মাইকেল মধুসূদন দত্তের বাড়ির এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়।
এছাড়া বাকি দুটি কুমির ফাঁদ পেতে ধরা হয় সুন্দরবনের খাল থেকে। এই চারটি কুমিরের গায়ে স্যাটেলাইট ট্যাগ স্থাপন করে ছেড়ে দেয়া হয় সুন্দরবনের খালে।
আইইউসিএন এই কাজের জন্য অস্ট্রেলিয়া থেকে বাংলাদেশে নিয়ে আসে কুমির গবেষক ড. সামারাভিরা ও পল বেরিকে।
আইইউসিএন-এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার সারোয়ার আলম দীপু বলেন, ‘গবেষক টিমের পরিকল্পনা ছিল মোট পাঁচটি কুমিরের গায়ে স্যাটেলাইট ট্যাগ বসানোর। সে অনুযায়ী কাজ শুরু করি আমরা। তবে শেষ পর্যন্ত একটি বাদে মোট চারটি কুমিরের গায়ে বসানো হয় স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার।’
যেভাবে বসানো হল স্যাটেলাইট ট্যাগ
১৩ মার্চ সুন্দরবনের করমজলের কুমির প্রজনন কেন্দ্র থেকে বাছাই করা হয় জুলিয়েট নামের একটি কুমিরকে। সকালেই সেটির শরীরে ট্যাগ বসানোর কাজ শুরু হয়। ট্যাগ বসানো শেষে কুমিরটিকে ছেড়ে দেয়া হয় সুন্দরবনে করমজলের খালে।
যশোরের চিড়িয়াখানা থেকে আনা ‘মধু’ নামের কুমিরটি আনা হয়েছিলো আগেই। একই দিনে সেটির গায়েও স্যাটেলাইট ট্যাগ বসিয়ে ছাড়া হয় একই খালে।
গবেষক দল জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াইল্ড লাইফ কম্পিউটার নামে একটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছে এই স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার কিট। এটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে এটি পানির নিচে গেলেও ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
কুমিরের গায়ে বসানো এই ট্রান্সমিটার কিটটির মেয়াদ এক বছর। ব্যাটারিচালিত এই যন্ত্রে থাকে একটি ক্ষুদ্র অ্যান্টেনা, যেটি সরাসরি যুক্ত থাকে স্যাটেলাইটের সঙ্গে। ট্যাগ লাগানোর পরই চালু হয়ে যায় এর লোকেশন অপশন। সেটি প্রতি ঘণ্টার আপডেট তথ্য ম্যাপের মাধ্যমে শেয়ার করে।
গবেষক দলের সদস্য দীপু বলেন, ‘কিটটির মেয়াদ এক বছর হলেও চাইলে তা আরও বাড়ানো যাবে।’
এর পরের দুদিন রাতের অন্ধকারে সুন্দরবনের খাল থেকে ফাঁদ পেতে ধরা হয় আরও দু’টি কুমির। সেই দুটির গায়েও একইভাবে বসানো হয় এই স্যাটেলাইট ট্যাগ।
কুমিরের মাথার উপরের অংশে আঁশের মতো স্কেল থাকে। স্যাটেলাইট ট্যাগটি বসানোর জন্য সেখানে ছোট একটি ছিদ্র করতে হয়। ওই ছিদ্রের মধ্যেই বসানো হয় স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার।
বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ ইমরান আহমেদ বলেন, ‘এই ট্রান্সমিটার চিপ খুব হালকা। ওজন দুই গ্রামেরও কম। এ ধরনের চিপ বসানো হলে তাতে কুমিরের কোনো ক্ষতি হয় না।’
ট্যাগ বসানো কুমিরগুলো এখন কোথায়?
কুমির প্রজনন কেন্দ্রের জুলিয়েট, যশোরের চিড়িয়াখানা থেকে আনা মধু এবং সুন্দরবনের খাল থেকে ফাঁদ পেতে ধরা আরও দুটি কুমিরের গতিপথ পর্যালোচনা করা হচ্ছে অবমুক্ত করার দিন থেকেই।
গতিপথ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে এর মধ্যে তিনটি কুমিরই আছে সুন্দরবনের মধ্যে। কিন্তু একটি কুমির অন্য পথে চলতে শুরু করেছে।
১৬ মার্চ যে কুমিরটিকে সুন্দরবনের জংলা খাল থেকে ধরে গায়ে স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসানো হয়, এর পরদিন থেকেই কুমিরটি সুন্দরবন ছেড়ে ছুটছে লোকালয়ের দিকে।
গত দশ দিনে গতিপথ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, কুমিরটি সুন্দরবনের হারবাড়িয়া পয়েন্ট থেকে মংলা, রামপাল, বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ হয়ে বরিশাল বিভাগের পিরোজপুর জেলায় পৌঁছেছে।
স্যাটেলাইট তথ্য বলছে, বাকি তিনটি কুমিরই এখন অবস্থান করছে সুন্দরবনের মধ্যে নদী ও খালে। এর মধ্যে জুলিয়েট ও মধু হারবাড়িয়া পয়েন্টের কাছাকাছি নদীতে রয়েছে গত কয়েকদিন ধরে। অন্য কুমিরটিকে করমজল থেকে ধরে ট্যাগ বসিয়ে সেখানকার খালে ছাড়া হয়েছিলো। সেটি এখন আশপাশের খালেই ঘুরে বেড়াচ্ছে।
তিনটি কুমির সুন্দরবনের মধ্যে থাকলেও একটি কেন এত পথ পাড়ি দিয়ে লোকালয়ের নদীগুলোতে ঢুকে পড়েছে সেটি নিয়ে কিছুটা প্রশ্ন আছে গবেষক দলেরও।
গবেষক সারোয়ার আলম দীপু বলছেন, ‘লোনা পানির কুমিরগুলো আসলে কোন দিকে মুভ করে সেটা আমরা জানতে চেয়েছিলাম। স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া তথ্য আমাদের এক গবেষণার ধারণাকে স্পষ্ট করছে।’
বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, নিচের দিকে সমুদ্রের কাছে নদীতেও অনেক স্যালাইন থাকে। আবার কোনো কুমির যদি কম লবণাক্ততা পছন্দ করে, সে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে আশপাশের নদী-খালগুলোতে যায়।
বিশেষজ্ঞ ইমরান আহমেদ বলেন, ‘ওই এলাকার পানিতে লবণাক্ততা কম বলে হয়তো কুমিরটি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছে। কিংবা সে যা খায় সেগুলো হয়তো সে বেশি পাচ্ছে। আর সে কারণে কুমিরটি ওদিকে অগ্রসর হচ্ছে।’
কুমির নিয়ে এ ধরনের গবেষণা কেন?
বর্তমানে বাংলাদেশে কেবল সুন্দরবন এলাকাতেই প্রাকৃতিক পরিবেশে লোনা পানির কুমির দেখা যায়। তারপরও এই পরিবেশে লোনা পানির কুমিরের এই প্রজাতির প্রজনন খুব একটা হচ্ছে না।
আইইউসিএন-এর গবেষক দলটি বলছে, কুমির নিয়ে এর আগে কিছু গবেষণা হলেও বিশদ কোনো কাজ হয়নি। এ কারণেই কুমিরের অভ্যাস আচরণ জানার জন্য এই গবেষণা করা হচ্ছে।
গবেষক দীপু বলেন, ‘কুমির কোন অঞ্চলে ডিম পাড়ে, কোন অঞ্চলে স্ত্রী-পুরুষের সংখ্যা কেমন সেটা জানার জন্য এমন গবেষণার পরিকল্পনা অনেক দিন আগে থেকেই ছিল। এবার প্রথমবারের মতো তা শুরু হয়েছে।’
বিশেষজ্ঞ ও বন কর্মকর্তারা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তন কিংবা লবণাক্ততা বাড়া-কমার কারণেও জীবন-জীবিকায় এক ধরণের প্রভাব পড়ছে। হুমকির মুখে পড়ছে এই বন্যপ্রাণীটি। কুমিরগুলোকে বাঁচাতে তাই এ ধরনের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
জিআইজেড-এর ‘ইন্টিগ্রেটেড ম্যানেজমেন্ট অব সুন্দরবন ম্যানগ্রোভস অ্যান্ড দ্য মেরিন প্রোটেকটেড এরিয়া সোয়াস অফ নো গ্রাউন্ড বাংলাদেশ’ প্রকল্পের আওতায় গবেষণাটি চলছে।
বন সংরক্ষক ইমরান আহমেদ বলেন, ‘লোনা পানির কুমির নিয়ে এই গবেষণা ফলপ্রসূ হলে মিঠা পানির কুমির নিয়েও এভাবে গবেষণা করা দরকার বলে মনে করি আমরা।’
কেন হুমকির মুখে কুমির?
বাংলাদেশে লোনা পানির কুমির সুন্দরবনের বাইরে দেখা যায় না। প্রকৃতি সংরক্ষণ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা আইইউসিএন ২০১৫ সালে বাংলাদেশে বিপন্ন প্রাণীর একটি তালিকা তৈরি করে। ‘আইউসিএন রেড লিস্ট’ নামে পরিচিত ওই তালিকায় লোনা পানির কুমিরকে বাংলাদেশে বিপন্ন প্রজাতি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
এই মুহূর্তে বাংলাদেশে কেবল সুন্দরবনের প্রাকৃতিক পরিবেশেই লোনা পানির কুমির দেখা যায়। এর বাইরে অন্য যেসব কুমির রয়েছে তার অধিকাংশই চিড়িয়াখানাগুলোতে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লোনা পানির কুমিরের এই প্রজাতির প্রজনন তেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে না।
তাই কুমিরের প্রজনন বৃদ্ধি ও লালন-পালনের জন্য ২০০০ সালে সুন্দরবনের করমজলে বন বিভাগের উদ্যোগে কুমির প্রজনন কেন্দ্র স্থাপন করা হয়।
কুমির প্রজনন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক আজাদ কবীর বলেন, ‘এ পর্যন্ত কয়েক দফায় এই প্রজনন কেন্দ্রে জন্ম নেয়া লোনা পানির দুই শতাধিক কুমির ছাড়া হয়েছে সুন্দরবনের খালগুলোতে। এর মধ্যে লোনা পানির কুমির ১০৭টি আর মিষ্টি পানির কুমির আছে মাত্র তিনটি।’
গবেষক ও বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তন, পানিতে লবণাক্ততা হ্রাস-বৃদ্ধি, নদীতে জাল দিয়ে মাছ ধরা, নৌযান চলাচল বৃদ্ধিসহ বেশ কিছু কারণে সুন্দরবনে কুমিরের সংখ্যা দিন দিন কমছে।
বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ ইমরান আহমেদ বলেন, ‘আমাদের নদীগুলোর মধ্যে এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে জাল ফেলে মাছ ধরা হয় না। মিঠা পানির কুমিরগুলো জালে ধরা পড়ে। অনেক কুমির এ কারণে হারিয়ে গেছে। একই কারণে হুমকিতে আছে লোনা পানির কুমিরও।’
বর্তমানে সুন্দরবনে কতগুলো কুমির আছে তা নিয়ে নানা ধরনের তথ্য পাওয়া গেলেও এ নিয়ে সঠিক কোনো জরিপ বা তথ্য নেই বন বিভাগ কিংবা গবেষকদের কাছে। কেননা বিভিন্ন সময় যে গবেষণা হয়েছে সেসব তথ্যে বেশ গরমিল রয়েছে।
গবেষক সারোয়ার আলম দীপু বলেন, ‘একটি গবেষণা তথ্য বলছে সুন্দরবনে কুমির আছে দেড়শ’ থেকে দুশ’টি। আরেক গবেষণার তথ্য বলছে আড়াইশ’ থেকে তিনশ” লোনা পানির কুমির আছে সুন্দরবনে। সঠিক কোনো তথ্য কারও কাছে নেই।’
এই গবেষক একটি ধারণা দিয়ে বলেন, ‘সুন্দরবনে কুমির বসবাসের পরিবেশ ও ধারণ ক্ষমতা অনুযায়ী কুমির অনেক কম রয়েছে।’
তবে প্রাথমিক তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে তিনি বলছেন, ‘সুন্দরবনের নদী ও খালে বর্তমানে দুশ’র বেশি কুমির নেই।’
কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘পর্যটক বৃদ্ধি, মাছ ধরাসহ নানা কারণে আস্তে আস্তে কুমির যে বন থেকে সরে যাচ্ছে তার একটি উদাহরণ হতে পারে এই গবেষণা। যেমনটি দেখা গেছে স্যাটেলাইটের তথ্যেও।’
আরও পড়ুন:ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গের নেতৃত্বাধীন মেটার প্ল্যাটফর্মগুলো স্ন্যাপচ্যাট, ইউটিউব এবং অ্যামাজন ব্যবহারকারীদের তথ্য গোপনে নজরদারি করছে বলে অভিযোগ করে নতুন তথ্য প্রকাশ করেছে ক্যালিফোর্নিয়ার একটি ফেডারেল আদালত।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম টেকক্রাঞ্চের বরাত দিয়ে বুধবার এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়, ফেসবুক ২০১৬ সালে ‘ঘোস্টবাস্টারস’ নামে একটি গোপন প্রজেক্ট চালু করেছিল যাতে স্ন্যাপচ্যাট ও এর সার্ভার ব্যবহারকারীদের মধ্যে নেটওয়ার্ক ট্রাফিক এনক্রিপ্ট এবং ডিক্রিপ্ট করা যায়।
স্ন্যাপচ্যাটের ভূতের (ঘোস্ট) মতো লোগোর সঙ্গে মিল রেখে ফেসবুক এটির নাম দিয়েছে ‘প্রজেক্ট ঘোস্টবাস্টারস’।
আদালতের নথি অনুসারে, ঘোস্টবাস্টারস প্রজেক্টটি স্ন্যাপচ্যাটের প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা অর্জন ও ব্যবহারকারীর আচরণ বোঝার জন্য তৈরি করা হয়েছে।
নথিতে প্রকল্পটি নিয়ে আলোচনা করা সে সময়ের অভ্যন্তরীণ ফেসবুক ইমেইলগুলোও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ২০১৬ সালের জুনে মার্ক এমন একটি ইমেইলে বলেন, স্ন্যাপচ্যাট তাদের সিস্টেম এনক্রিপট (যে পদ্ধতির মাধ্যমে তথ্য গোপন কোডে রূপান্তরিত হয় যা তথ্যের প্রকৃত অর্থ লুকিয়ে রাখে) করার কারণে অ্যাপটির অভ্যন্তরীণ কোনো তথ্য ফেসবুকের কাছে নেই।
তাই তাদের সম্পর্কে নির্ভরযোগ্য তথ্য পেতে একটি নতুন উপায় বের করা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন মার্ক। এর জন্য একটি কাস্টম সফটওয়্যার তৈরির কথা জানান তিনি।
এর পরিপ্রেক্ষিতেই পরবর্তীতে ফেসবুকের প্রকৌশলীরা ঘোস্টবাস্টারস তৈরি করেন। পরে অ্যামাজন এবং ইউটিউবকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রকল্পটি প্রসারিত করা হয়ে।
ক্যালিফোর্নিয়ার আদালতের তথ্য অনুসারে, ফেসবুকের সিনিয়র এক্সিকিউটিভদের একটি দল এবং প্রায় ৪১ জন আইনজীবী প্রজেক্ট ঘোস্টবাস্টারে কাজ করেছেন, তবে ফেসবুকের কিছু কর্মী এ প্রকল্পের বিপক্ষে ছিলেন। তারা এটি নিয়ে তাদের উদ্বেগও প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন:তরুণদের স্মার্টফোন ব্যবহারের অভিজ্ঞতাকে বদলে দিতে বাংলাদেশের বাজারে নতুন স্মার্টফোন সিরিজ ‘নোট ৪০’ নিয়ে এসেছে ট্রেন্ডি প্রযুক্তি ব্র্যান্ড ইনফিনিক্স।
এ সিরিজে থাকছে দুটি মডেল ইনফিনিক্স নোট ৪০ ও ইনফিনিক্স নোট ৪০ প্রো।
অত্যাধুনিক চার্জিং প্রযুক্তি, চমৎকার পারফরম্যান্স এবং সফটওয়্যার আপডেটের প্রতিশ্রুতি নিয়ে বাজারে এসেছে শক্তিশালী এ ফোনগুলো।
ইনফিনিক্সের নতুন এ স্মার্টফোন সিরিজের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো অ্যান্ড্রয়েড ফোনে যুক্ত হয়েছে ম্যাগনেটিক চার্জিং। ম্যাগচার্জ নামক এই ওয়্যারলেস ম্যাগনেটিক চার্জিং প্রযুক্তিটি বাজারে নতুন মানদণ্ড স্থাপন করেছে। অলরাউন্ড ফাস্টচার্জ ২.০-এর আওতায় এই প্রযুক্তি এনেছে ইনফিনিক্স। এর সাহায্যে যেকোনো পরিস্থিতিতে ও যেকোনো আবহাওয়ায় সহজেই ফোনে চার্জ দেয়া সম্ভব হবে।
নতুন প্রযুক্তিটির মাধ্যমে অ্যান্ড্রয়েড ফোনে ম্যাগনেটিক চার্জিংয়ের যাত্রা শুরু করার মাধ্যমে সুবিধাজনক চার্জিংয়ের প্রতিশ্রুতি পূরণে আরও এক ধাপ উন্নতি হলো বলে মনে করছে ইনফিনিক্স।
নোট ৪০ সিরিজের দুটি ফোনেই আছে ২০ ওয়াটের ওয়্যারলেস ম্যাগচার্জ ও রিভার্স চার্জের সুবিধা। ঘরে ও বাইরে যেকোনো সময় স্মার্টফোন চার্জ করা যাবে সুবিধাজনক, বহনযোগ্য ও শক্তিশালী এই ম্যাগচার্জ প্রযুক্তির মাধ্যমে।
নতুন এ স্মার্টফোন সিরিজের সঙ্গে ক্রেতারা বিনা মূল্যে পাবেন ম্যাগকেস নামের ম্যাগনেটিক ব্যাক কাভার। এ ছাড়াও নোট ৪০-এর সঙ্গে উপহার হিসেবে থাকবে ম্যাগপ্যাড নামক ম্যাগনেটিক চার্জিং প্যাড এবং নোট ৪০ প্রোর সঙ্গে থাকবে ম্যাগপাওয়ার নামক ম্যাগনেটিক পাওয়ার ব্যাংক।
ইনফিনিক্স নোট ৪০ সিরিজে আরও যুক্ত করা হয়েছে ইনফিনিক্সের নিজস্ব তৈরি পাওয়ার ম্যানেজমেন্ট চিপ- চিতা এক্স১।
ব্যাটারির ব্যবস্থাপনায় বড় পরিবর্তন নিয়ে এসেছে এই চিপ। প্রচলিত চিপের চেয়ে চিতা এক্স১ এর সক্ষমতা ২০৪ শতাংশ বেশি। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ৬ ন্যানোমিটারের মিডিয়াটেক হেলিও জি৯৯ আল্টিমেট প্রসেসর। ফলে এই ফোনগুলো গেমার ও হেভি ইউজারদের দেবে অন্যরকম পারফরম্যান্স ও কার্যকারিতা।
সারা দিন ধরে ব্যবহারের সুবিধার জন্য নোট ৪০ এবং নোট ৪০ প্রো উভয় ফোনেই আছে ৫০০০ মিলি অ্যাম্পিয়ারের অল-রাউন্ড ফাস্ট-চার্জ ব্যাটারি।
৭০ ওয়াটের মাল্টি-স্পিড ফাস্ট চার্জিংয়ের মাধ্যমে স্মার্টফোন চার্জে নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে নোট ৪০ প্রো। তিনটি ভিন্ন চার্জিং মোডে ১৬ মিনিটেই শূন্য থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত চার্জ হবে এ ফোন।
অন্যদিকে নোট ৪০-এর ৪৫ ওয়াট অলরাউন্ড ফাস্ট চার্জ সব পরিস্থিতিতেই ফোনের ব্যবহারকে সহজ করে তুলবে।
ফোনের ডিসপ্লের ক্ষেত্রে এ সিরিজে নতুন কৌশল এনেছে ইনফিনিক্স। প্রাণবন্ত ভিজ্যুয়াল দিতে নোট ৪০ সিরিজের দুটি ফোনেই আছে ৬.৭৮ ইঞ্চির ফুল এইচডি প্লাস অ্যামোলেড ডিসপ্লে। ১২০ হার্টজ রিফ্রেশ রেটের রেসপন্সিভ টাচ স্ক্রিনে নিরাপত্তা জোরদারে দেয়া হয়েছে ইন-ডিসপ্লে ফিঙ্গার প্রিন্ট সেন্সর। আর ফোনের ডিজাইনে আভিজাত্যের ছোঁয়া দিতে নোট ৪০ প্রোতে আছে বেজেলবিহীন থ্রিডি কার্ভড ডিসপ্লে।
আলোকচিত্রপ্রেমীদের জন্য এ সিরিজের ফোনে প্রধান ক্যামেরা হিসেবে আছে ওআইএস সাপোর্টসহ শক্তিশালী ১০৮ মেগাপিক্সেলের সুপার-জুম ক্যামেরা এবং ৩২ মেগাপিক্সেলের সেলফি ক্যামেরা। আধুনিক ইন-সেন্সর জুম প্রযুক্তির সাহায্যে নোট ৪০ সিরিজের ফোনে উন্নতমানের ইমেজ পাওয়া যাবে। ফোনটিতে ৩ গুণ জুমেও পরিষ্কার ছবি তোলা সম্ভব হবে।
এবারের নোট ৪০ সিরিজের ফোনগুলোতে পাওয়া যাবে ২ বছরের অ্যান্ড্রয়েড আপডেটসহ ৩৬ মাসের সিকিউরিটি প্যাচ। এ ছাড়াও ফোনের পেছনের অংশ থেকে বিশেষ ধরনের লাইটিংয়ের জন্য এতে যুক্ত করা হয়েছে অ্যাকটিভ হেলো লাইটিংয়ের মতো এআই প্রযুক্তি। চমৎকার অডিওর জন্য নোট ৪০ সিরিজের ডুয়েল স্পিকারে আছে জেবিএল-এর প্রযুক্তির সমন্বয়।
৮ জিবি র্যাম ও ২৫৬ জিবি ধারণক্ষমতার নোট ৪০ প্রোর বাজারমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ হাজার ৯৯৯ টাকা এবং ১২ জিবি র্যাম ও ২৫৬ জিবি সংস্করণটির বাজারমূল্য ৩৪ হাজার ৯৯৯ টাকা। ভিন্টেজ গ্রিন ও টাইটান গোল্ড রঙে মিলছে ফোনটি।
অন্যদিকে ৮ জিবি র্যাম ও ২৫৬ জিবি ধারণক্ষমতার নোট ৪০ মডেলটির বাজারমূল্য ২৬ হাজার ৯৯৯ টাকা। এ ফোন পাওয়া যাচ্ছে টাইটান গোল্ড ও অবসিডিয়ান ব্ল্যাক রঙে।
আগামী ১ এপ্রিল থেকে দেশজুড়ে ইনফিনিক্সের অফিশিয়াল রিটেইলার ও অনলাইনে পাওয়া যাবে ইনফিনিক্স নোট ৪০ সিরিজের স্মার্টফোনগুলো।
আরও পড়ুন:আইফোনের মাধ্যমে স্মার্টফোন বাজারে অবৈধ একাধিপত্যের অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক টেক জায়ান্ট অ্যাপলের নামে মামলা করেছে দেশটির বিচার বিভাগ।
প্রতিযোগিতার পথ বন্ধ করা ও ভোক্তাদের ওপর অতিরিক্ত মূল্যের ভার চাপানোর অভিযোগে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার এ মামলা করা হয় বলে জানিয়েছে এএফপি।
বার্তা সংস্থাটির প্রতিবেদনে জানানো হয়, মামলায় ক্রেতাদের অপেক্ষাকৃত কম দামের স্মার্টফোন ও ডিভাইসে যাওয়া কঠিন করে শত শত কোটি ডলারের বাণিজ্য করার অভিযোগ আনা হয়েছে অ্যাপলের বিরুদ্ধে।
এ মামলার মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো ওয়াশিংটনের সঙ্গে মুখোমুখি অবস্থান তৈরি হলো প্রায় অর্ধশতক ধরে মোটা দাগে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কড়া নজরদারির বাইরে থাকা অ্যাপলের। স্টিভ জবসের হাত ধরে ১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল কোম্পানিটি।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অন্য তিন টেক জায়ান্ট অ্যামাজন, গুগল ও মেটার নামে একই ধরনের মামলা হয় যুক্তরাষ্ট্রে।
এদিকে মামলার খবরে বৃহস্পতিবার ওয়াল স্ট্রিটে অ্যাপলের শেয়ারের দরপতন হয় তিন দশমিক ৭৫ শতাংশ।
আরও পড়ুন:পবিত্র রমজান মাস শেষেই মুসলমানরা মেতে উঠবেন ঈদের আনন্দে। যার কেনাকাটাও শুরু হচ্ছে রমজান থেকেই।
বাংলাদেশে রমজান মাসের আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো পরিবার বা বন্ধুদের সঙ্গে ইফতার ও সেহরি করা, তবে ইফতারের সময় বা এর আগমুহূর্তে রাস্তার প্রচণ্ড জ্যামের মধ্যে গাড়ি খুঁজে পাওয়া কষ্টকর হতে পারে। আবার, সেহরির সময় রাস্তা থাকতে পারে ফাঁকা, নিরাপত্তা নিয়েও থাকতে পারে চিন্তা।
এসব সমস্যার সহজ ও নির্ভরযোগ্য সমাধান হতে পারে উবারের মতো রাইডশেয়ারিং সার্ভিসগুলো।
পুরান ঢাকায় ইফতার কিংবা মাওয়া ঘাটে তাজা ইলিশ দিয়ে সেহরি, আপনার পরিকল্পনা যাই হোক না কেন, এসব সার্ভিস আপনাকে নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছাতে সাহায্য করবে। সুবিধাজনক এসব সার্ভিস দিন রাতের যেকোনো সময়, যেকোনো জায়গা থেকে বুক করা যায়।
দ্রুত ও একা চলাচলের জন্য আছে মটো সার্ভিস। দুই বা তিনজন যাতায়াতের জন্য সিএনজি সার্ভিস উপযুক্ত। পরিবার বা বন্ধুরা মিলে একত্রে কোথাও যাওয়ার জন্য এক্স বা প্রিমিয়ার চমৎকার। বড় দল নিয়ে বেরোতে চাইলে আছে এক্সএল সার্ভিস। আবার শহরের বাইরে কোথাও ইফতার বা সেহরিতে যেতে চাইলে বেছে নিন ইন্টারসিটি সার্ভিস।
রাউন্ডট্রিপ ফিচার ব্যবহার করলে এই গাড়ি আপনার সঙ্গে নিজের ব্যক্তিগত গাড়ির মতোই অপেক্ষা করবে, আবার আপনাকে বাড়িতে ফেরতও নিয়ে যাবে।
ঈদের কেনাকাটার যাতায়াতে রাইডশেয়ারিং
মুসলিমদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল-ফিতর আসছে আর কিছুদিন পরেই। এ উপলক্ষে প্রিয়জনকে উপহার দিতে পছন্দ করেন সবাই। সেই সঙ্গে নিজের জন্যও অনেকে কেনাকাটা করেন। ব্যস্ত এ জীবনে প্রায় সবারই চেষ্টা থাকে একদিনেই যতটা সম্ভব কেনাকাটা সেরে ফেলার, কিন্তু ব্যক্তিগত গাড়ি না থাকলে বিভিন্ন শপিং মলে ঘোরাঘুরি করে কেনাকাটা করাটা বেশ ঝক্কির ব্যাপার।
এমন সমস্যার সহজ সমাধানে সহজ ও কম খরচে যাতায়াতের জন্য রাইডশেয়ারিং সার্ভিসগুলো চমৎকার। একাধিক জায়গায় গিয়ে কেনাকাটার জন্য বেছে নিতে পারেন রেন্টালস সার্ভিস। এ সার্ভিসের আওতায় ১০ ঘণ্টার জন্য রাইডশেয়ারিংয়ের গাড়ি আপনি নিজের সঙ্গে রাখার সুযোগ পাবেন। কাজেই কেনাকাটা করতে আপনি নিউমার্কেট এলাকায়ই যান কিংবা বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায়ই যান, গাড়ি আপনার জন্য অপেক্ষা করে থাকবে, ঠিক আপনার ব্যক্তিগত গাড়ির মতোই।
তা ছাড়াও, নিরাপত্তাকে রাইডশেয়ারিং সার্ভিসগুলো সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে থাকে। সার্বক্ষণিক জিপিএস ট্র্যাকিং, লাইভ লোকেশন শেয়ারিং, চালকের নাম, ছবি, রেটিং ইত্যাদি জানানো, সেইফটি টুলকিট, হটলাইন, ইন্স্যুরেন্স পলিসিসহ নানা ধরনের নিরাপত্তার ফিচার এখানে রয়েছে। তাই নিজের নিরাপত্তা নিয়েও আপনি থাকতে পারেন নিশ্চিন্ত।
আরও পড়ুন:‘নেক্সজি এন৯’ সিরিজের নতুন মডেলের স্মার্টফোন বাজারে ছেড়েছে দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি পণ্যের ব্র্যান্ড ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের মোবাইল বিভাগ।
ওয়ালটনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সাশ্রয়ী মূল্যের ফোনটির মডেল ‘নেক্সজি এন৯’।
ফিচার
৫০ মেগাপিক্সেলের ট্রিপল এআই রিয়ার ক্যামেরার ফোনটিতে রয়েছে ১২ জিবি র্যাপিড মেমোরি, পাঞ্চ-হোল এইচডি প্লাস রেজ্যুলেশনের বিশাল ডিসপ্লে, সুপারসনিক সাউন্ড কোয়ালিটি, পর্যাপ্ত স্টোরেজ ও শক্তিশালী ব্যাটারিসহ অনেক অত্যাধুনিক ফিচার।
নতুন স্মার্টফোনে দেয়া হয়েছে ৬.৮২ ইঞ্চির এইচডি প্লাস পাঞ্চ-হোল ডিসপ্লে। রয়েছে ৯০ হার্টজের রিফ্রেশ রেট ও ১৮০ হার্টজের টাচ স্যাম্পলিং রেট। ফলে বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার এবং ভিডিও দেখা, গেম খেলা, বই পড়া বা ইন্টারনেট ব্রাউজিংয়ে মোবাইল স্পর্শে অনন্য অভিজ্ঞতা পাবেন গ্রাহক।
এদিকে ফোনটির পেছনে রয়েছে এলইডি ফ্ল্যাশ, অটোফোকাস এবং পিডিএএফসহ এআই ট্রিপল ক্যামেরা, যার প্রধান সেন্সরটি ৫০ মেগাপিক্সেলের। এর পাশাপাশি আকর্ষণীয় সেলফির জন্য সামনে রয়েছে ৮ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা। দুর্দান্ত পাওয়ার ব্যাকআপের জন্য ডিভাইসটিতে রয়েছে পাঁচ হাজার এমএএইচ হাই-ক্যাপাসিটি ব্যাটারি।
এ ছাড়াও নতুন এ ফোনে রয়েছে ব্রিদিং লাইট। ব্রিদিং লাইট এক ধরনের নোটিফিকেশন অ্যালার্ট সিস্টেম।
যা বলছে ওয়ালটন
ওয়ালটন মোবাইলের ক্রিয়েটিভ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের ইনচার্জ হাবিবুর রহমান তুহিন বলেন, ‘মিরর ব্ল্যাক, ক্রোম হোয়াইট ও মিস্টিক ছাইয়ান—এই তিনটি আকর্ষণীয় রঙে ফোনটি বাজারে এসেছে। ভ্যাট ছাড়া ফোনটির দাম পড়বে ১৭ হাজার ৯৯৯ টাকা।’
ওয়ালটন মোবাইল ব্র্যান্ডিং বিভাগের ইনচার্জ মাহবুব-উল হাসান মিলটন বলেন, ‘অ্যান্ড্রয়েড ১৩ ডিডো অপারেটিং সিস্টেমে পরিচালিত এই ফোনে র্যাপিড মেমোরি টেকনোলজি ব্যবহৃত হয়েছে। ব্যবহারকারী এতে ১২৮ জিবি পর্যন্ত স্টোরেজ ব্যবহারের সুযোগ পাবেন। গ্রাফিক্স হিসেবে আছে মালি-জি৫২ এমপি২, যার ফলে এই ফোনের কার্যক্ষমতা ও গতি হবে অনেক বেশি।
‘বিভিন্ন অ্যাপ ব্যবহার, ইন্টারনেট ব্রাউজিং, থ্রিডি গেমিং, দ্রুত ভিডিও লোড ও ল্যাগ-ফ্রি ভিডিও স্ট্রিমিং সুবিধা মিলবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ফোনটিতে হিলিও জি-৮৫ গেমিং প্রসেসর ব্যবহৃত হয়েছে। মাইক্রো এসডি কার্ডের মাধ্যমে ২৫৬ জিবি পর্যস্ত স্টোরেজ পাওয়া যাবে। ব্যাটারিসহ ফোনটির ওজন মাত্র ২১৯ গ্রাম হওয়ায় ফোনটি বহন করা যাবে স্বাচ্ছন্দ্যে।’
আরও পড়ুন:শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি ব্র্যান্ড ইনফিনিক্স তাদের নতুন স্মার্টফোন লাইনআপে যুক্ত করেছে যুগান্তকারী নতুন ফিচার ‘ম্যাগচার্জ’।
সম্প্রতি মালয়েশিয়ার এফ-ওয়ান ইন্টারন্যাশনাল সার্কিটে অনুষ্ঠিত বৈশ্বিক আয়োজনে নতুন নোট ৪০ সিরিজ উদ্বোধন করে করে ব্র্যান্ডটি। সেই আয়োজনেই অ্যান্ড্রয়েড ফোনে ম্যাগনেটিক চার্জিং ফিচারের যাত্রা শুরুর কথা জানায় ইনফিনিক্স।
ম্যাগচার্জের মতো চার্জিং সিস্টেম অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন বাজারে এই প্রথম। এ প্রযুক্তি অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন ব্যবহারের ক্ষেত্রে অভাবনীয় পরিবর্তন নিয়ে আসবে বলে আশা করছে ইনফিনিক্স।
ম্যাগনেটিক চার্জিংয়ের সুবিধাজনক ব্যবহার নিশ্চিত করতে নোট ৪০ সিরিজের সঙ্গে আছে ইনফিনিক্সের ম্যাগকিট। এ কিটে ফোনের ব্যাককাভার হিসেবে দেয়া হয়েছে ম্যাগকেস। এর সঙ্গে আরও আছে ম্যাগনেটিক চার্জিং প্যাড ম্যাগপ্যাড এবং ম্যাগনেটিক পাওয়ার ব্যাংক ম্যাগপাওয়ার।
ইনফিনিক্সের নতুন নোট ৪০ সিরিজের নোট ৪০, নোট ৪০ প্রো, নোট ৪০ প্রো ফাইভজি এবং অত্যাধুনিক নোট ৪০ প্রো+ ফাইভজি স্মার্টফোনগুলোতে পাওয়া যাবে ম্যাগচার্জ ফিচারটি।
এবারের সিরিজটিতে দেয়া হয়েছে ইনফিনিক্সের অল-রাউন্ড ফাস্টচার্জ ২.০ প্রযুক্তি, ১০০ ওয়াট পর্যন্ত মাল্টি-স্পিড ফাস্টচার্জ এবং ২০ ওয়াটের ওয়্যারলেস ম্যাগচার্জ। এ ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের চার্জিং মোড ব্যবহার করতে একটি কাস্টম চিপ দেয়া হয়েছে এ সিরিজের ফোনগুলোতে।
উন্নত ভিজ্যুয়াল অভিজ্ঞতার জন্য নোট ৪০ সিরিজে আছে ১২০ হার্টজের প্রাণবন্ত থ্রিডি-কার্ভড অ্যামোলেড ডিসপ্লে। প্রধান ক্যামেরা হিসেবে সিরিজটিতে আছে ওআইএস সাপোর্টসহ শক্তিশালী ১০৮ মেগাপিক্সেলের সুপার-জুম ক্যামেরা সিস্টেম। এ ছাড়াও ফোনের পেছনের অংশ থেকে বিশেষ ধরনের লাইটিংয়ের জন্য এতে যুক্ত করা হয়েছে অ্যাকটিভ হ্যালো লাইটিংয়ের মতো এআই প্রযুক্তি।
ইনফিনিক্সের নতুন এ স্মার্টফোন সিরিজ নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির প্রোডাক্ট ডিরেক্টর উইকি নিইয়ে বলেন, ‘ইনফিনিক্স নোট ৪০ সিরিজ বাজারে আনার মাধ্যমে চার্জিং প্রযুক্তিতে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। চার্জিংয়ের অভিজ্ঞতাকেই বদলে দেবে এই সিরিজ। ‘এ ছাড়াও আমাদের নিজস্ব চিপ চিতা এক্স১-এর মাধ্যমে নতুন যুগে প্রবেশ করেছে অলরাউন্ড ফাস্টচার্জ। এখন এতে আছে মাল্টি-স্পিড চার্জিং এবং এক্সট্রিম টেম্পারেচার চার্জিংয়ের মতো ফিচার।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের উদ্ভাবনী ম্যাগচার্জ অ্যাক্সেসরি কিট ফোন ব্যবহারকারীদের দেবে নিরবচ্ছিন্ন চার্জিং ইকোসিস্টেম। এসব অগ্রগতির ফলে ব্যবহারকারীরা সারা দিন যেকোনো পরিস্থিতি ও আবহাওয়ায় পাওয়ারড-আপ থাকতে পারবেন।’
গত বছর অল-রাউন্ড ফাস্টচার্জ প্রযুক্তিসহ নোট ৩০ সিরিজ বাংলাদেশের বাজারে নিয়ে আসে ইনফিনিক্স। সিরিজটিতে আছে ৬৮ ওয়াটের ওয়্যারড চার্জিং এবং ১৫ ওয়াটের ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তি। এ ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ সময়ে মাদার বোর্ডে সরাসরি চার্জ নেয়ার জন্য এতে আছে বাইপাস চার্জিং এবং আইফোন সেভার হিসেবে পরিচিত ওয়্যারলেস রিভার্স চার্জিং প্রযুক্তি।
চার্জিং, লুক ও পারফরম্যান্সে অভূতপূর্ব আপডেট নিয়ে এখন বাংলাদেশের বাজারে আসার অপেক্ষায় আছে নোট ৪০ সিরিজ। নতুন এ নোট সিরিজের জন্য শুরু হয়ে গেছে প্রি-বুকিংও।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য