বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ও বহুল ব্যবহৃত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের প্রাতিষ্ঠানিক বা কোম্পানির নতুন নাম মেটা প্ল্যাটফর্মস, সংক্ষেপে মেটা। অর্থাৎ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাপ বা সাইটটি আগের, তথা ফেসবুক নামেই থাকছে; কিন্তু ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ ইত্যাদি এখন থেকে সামগ্রিকভাবে পরিচালনা করবে মেটা, যা আগে ছিল ফেসবুকের অধীনে।
ফেসবুক, তথা মেটার সহ-প্রতিষ্ঠাতা, চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ বৃহস্পতিবার এ ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি জানান, ভার্চুয়াল বিশ্ব গড়ার মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে ‘কোম্পানি রিব্র্যান্ডিং’-এর এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
রিব্র্যান্ডিং হলো এক ধরনের বিপণন কৌশল। আগে থেকেই বাণিজ্যিকভাবে সুপ্রতিষ্ঠিত একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রিব্র্যান্ডিংয়ের মাধ্যমে নতুন নাম, প্রতীক, ধারণা ইত্যাদি গ্রহণ করে। রিব্র্যান্ডিংয়ের লক্ষ্য হলো গ্রাহক, বিনিয়োগকারী, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠান ও অন্য শেয়ারহোল্ডারদের মনে একটি নতুন ও ভিন্ন পরিচয়ে জায়গা তৈরি করা।
এর আগে এমনই একটি কাঠামো গ্রহণ করেছিল গুগলও। ইন্টারনেটভিত্তিক পণ্য উৎপাদন-বিক্রয় ও সেবাদানকারী বহুজাতিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানটি ২০১৫ সালে অ্যালফাবেট নামের একটি হোল্ডিং কোম্পানির অধীনে পুনর্গঠিত হয়।
এবিসি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, জাকারবার্গ রিব্র্যান্ডিংয়ের অংশ হিসেবে ফেসবুকের প্রাতিষ্ঠানিক নাম পরিবর্তনের দাবি করলেও তা মানতে নারাজ সমালোচকরা। তারা বলছেন, সাম্প্রতিক কিছু বিতর্ক থেকে নজর ঘোরাতে এবং ব্যবসায়িক চর্চার ধরন নিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও আইনপ্রণেতাদের তোপের মুখে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফেসবুক।
এ অবস্থায় জনমনে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে, সাধারণ সংগঠন হিসেবে ফেসবুক নাম পাল্টে মেটা হলে আদতে কী লাভ হবে।
ফেসবুকের নাম পরিবর্তনের অর্থ কী
ফেসবুক কোম্পানি আগের নাম পাল্টে নতুন নাম মেটায় পরিচিত হবে। কিন্তু সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং অ্যাপের নাম থাকবে আগেরটাই- ফেসবুক।
নতুন নাম গ্রহণের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি নতুন প্রতীক বা লোগোও নির্ধারণ করেছে মেটা।
এক বিবৃতিতে মেটা জানিয়েছে, নতুন নাম গ্রহণের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির মালিকানাধীন বর্তমান ও ভবিষ্যতের সব অ্যাপ ও প্রযুক্তি একটি সাধারণ কোম্পানি ব্র্যান্ডের অধীনে পরিচালনা করা হবে।
২০০৪ সালে চালু হয় ফেসবুক। এরপর প্রতিষ্ঠানটি ব্যবসা সম্প্রসারণের অংশ হিসেবে ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপ নামের আরও দুটি সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং অ্যাপ কিনে নেয়।
এ ছাড়া গত কয়েক বছরে অন্যান্য প্রযুক্তিতেও বড় অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগ করে প্রতিষ্ঠানটি। যেমন ডিজিটাল ওয়ালেট ‘নোভি’, ভিডিও-কলিং ডিভাইস ‘পোর্টাল’ ও ভার্চুয়াল রিয়েলিটি সিস্টেম ‘অকুলাস’।
এই সবগুলো প্রতিষ্ঠানের ‘মাদার অর্গানাইজেশন’, অর্থাৎ সাধারণ মালিক বা পরিচালনাকারী মূল ও একক প্রতিষ্ঠান এখন মেটা, যা আগে ছিল ফেসবুক।
জাকারবার্গের এ রিব্র্যান্ডিং কৌশলের বড় অংশজুড়ে থাকবে ‘মেটাভার্স’ নামের একটি উচ্চাভিলাষী প্রকল্প। মেটাভার্সকে বলা হচ্ছে এমন এক ডিজিটাল বিশ্ব বা ভার্চুয়াল বাস্তবতা, যেখানে মানুষের পক্ষে বিভিন্ন ডিভাইসের মাধ্যমে স্থান পরিবর্তন করা সম্ভব হবে এবং তারা এক ধরনের ভার্চুয়াল পরিবেশে যোগাযোগ করতে পারবে।
কিন্তু সমালোচকদের সন্দেহ, অভ্যন্তরীণ নথি ফাঁসের পর তুমুল বিতর্কের মুখে সাধারণ মানুষের নজর ঘোরাতে এ পদক্ষেপ নিয়েছে ফেসবুক।
সম্প্রতি এসব নথি ফাঁস করেন ফেসবুকের সাবেক কর্মকর্তা ফ্রান্সেস হাওগেন। সেসব নথি বিশ্লেষণ করে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম খবর প্রকাশ করে, সারা বিশ্বের ব্যবহারকারীদের ওপর নেতিবাচক ও ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে মাথাব্যথা নেই ফেসবুকের। এ সংক্রান্ত সব সতর্কতা বারবার উপেক্ষা করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
মেটাভার্স কী
বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তিখাতে এখন সবচেয়ে আলোচিত শব্দ ‘মেটাভার্স’।
মেটাভার্স একটি ভার্চুয়াল বিশ্ব, যেখানে যন্ত্রের মাধ্যমে নিজেকে যুক্ত করে, অন্তত তাত্ত্বিকভাবে, যেকোনো কাজই করতে পারবেন একজন ব্যক্তি।
দ্য ম্যাট্রিক্স, রেডি প্লেয়ার ওয়ান ও ট্রনের মতো বিশ্বখ্যাত চলচ্চিত্রগুলোতে এমন ভার্চুয়াল বিশ্বের সঙ্গে পরিচিত হয়েছে মানুষ।
জাকারবার্গের মতে, মেটাভার্সের মাধ্যমে যোগাযোগ, উদ্ভাবনসহ সব ধরনের কাজ করতে পারবে মানুষ। আগামী কয়েক দশকের মধ্যে ১০০ কোটি মানুষের কাছে পৌঁছাবে এ প্রযুক্তি।
স্বল্পমেয়াদে এ প্রকল্প থেকে কোনো আয় আসবে না এবং জীবদ্দশায় ব্যক্তিগতভাবে জাকারবার্গের লাভবান হওয়ার সুযোগ নেই বলেও দাবি করেন প্রযুক্তিসম্রাট।
বিশ্লেষকদের তিনি বলেন, ‘বর্তমান তো দূর, নিকট ভবিষ্যতেও এ খাতে বিনিয়োগ আমাদের জন্য লাভজনক নয়। কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি যে মোবাইল ইন্টারনেটের উত্তরসূরী হতে যাচ্ছে মেটাভার্স।’
মেটাভার্সের ‘মেটা’ শব্দটির অর্থ কী
ইংরেজি ভাষায় ‘মেটা’ শব্দটি একটি উপসর্গ, যা অন্য একটি অর্থপূর্ণ শব্দের আগে যুক্ত হয়ে নতুন অর্থ তৈরি করে। যেমন- মেটাকারপাস (কব্জি ও পাঁচ আঙুলের মধ্যবর্তী হাতের তালুর পাঁচটি হাড়), মেটাল্যাঙ্গুয়েজ (আরেকটি ভাষার ব্যাখ্যা করা হয় যে ভাষায়) এবং মেটামোরফোসিস (রূপ পরিবর্তন) ইত্যাদি।
গ্রিক ভাষায় মেটা শব্দের অর্থ ‘গণ্ডির বাইরে’ বা ‘প্রচলিত রীতিকে ভাঙা’।
আবার গণমানুষের সংস্কৃতিতে মেটা শব্দটি ভিন্ন অর্থ বহন করে। আত্মসচেতনতা বা পূর্ববর্তী ধারণাকে ভেঙে এগিয়ে যাওয়া বা নতুন ধারণা গ্রহণের বিষয়টিকে বলা হয় মেটা। সৃজনশীল কাজে শব্দটি বহুল ব্যবহৃত।
কীভাবে কাজ করবে জাকারবার্গের মেটাভার্স
বার্তা সংস্থা এপির প্রতিবেদনে বলা হয়, মেটাভার্স প্রকল্পের অংশ হিসেবে এরই মধ্যে ভার্চুয়াল বাস্তবতা (ভিআর) ও অগমেন্টেড বাস্তবতার (এআর) ওপর বিপুল বিনিয়োগ করেছেন জাকারবার্গ।
বাস্তব জগতের মতো কিংবা সম্পূর্ণ ভিন্ন কৃত্রিম অভিজ্ঞতা হলো ভার্চুয়াল বাস্তবতা।
অন্যদিকে, অগমেন্টেড বাস্তবতা বলতে বোঝানো হয় বাস্তব শারীরিক বিশ্বের একটি সম্প্রসারিত সংস্করণকে। প্রযুক্তির মাধ্যমে ডিজিটাল ভিজুয়াল উপকরণ, শব্দ ও অন্যান্য সংবেদনশীল উদ্দীপনা ব্যবহারের মাধ্যমে অগমেন্টেড বাস্তবতা অর্জন করা সম্ভব। মোবাইল কম্পিউটিং ও ব্যবসায়িক অ্যাপ্লিকেশনসের সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলোতে অগমেন্টেড বাস্তবতার ধারণা দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে।
ভার্চুয়াল ও অগমেন্টেড বাস্তবতাকে দৈনন্দিন জীবনে পরিচিত করতে অকুলাস ভিআর হেডসেট, এআর চশমা, প্রযুক্তি যুক্ত রিস্টব্যান্ডসহ নানা পণ্য তৈরিতে গবেষণা করছে ফেসবুক।
বলা হচ্ছে, মেটাভার্সের সৃষ্ট ভার্চুয়াল বিশ্বের কোনো সীমা-পরিসীমা থাকবে না। এটা এমন এক ‘ভার্চুয়াল পরিবেশ’ যেখানে কেবল স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে না থেকে আপনি তার ভেতরে ঢুকে চলে যেতে পারবেন যেকোনো স্থানে।
ভিআর হেডসেট, এআর চশমা, প্রযুক্তি যুক্ত রিস্টব্যান্ড, স্মার্টফোন অ্যাপ ও আরও অনেক ডিভাইস ব্যবহারের মাধ্যমে বৈঠক-আড্ডা, খেলাধুলা, কর্মস্থল যেকোনো জায়গায় যোগ দিতে পারবেন আপনি।
এমনকি কেনাকাটা, সোশ্যাল নেটওয়ার্কিংসহ অনলাইনভিত্তিক আমাদের বর্তমান কর্মকাণ্ডও আসবে মেটাভার্সের আওতায়। বাদ থাকবে না কনসার্টে যোগ দেয়া, বেড়াতে যাওয়া, ডিজিটাল পোশাকের ট্রায়ালসহ কোনোকিছুই।
করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে ঘরে বসে অফিসের কাজ করার ক্ষেত্রেও গেম-চেঞ্জার হতে পারে মেটাভার্স। ভিডিও কলের মাধ্যমে মোবাইল বা ল্যাপটপের স্ক্রিনে সহকর্মীদের দিকে তাকিয়ে থাকার দিন শেষ হবে; এর বদলে কর্মীরা একে অপরের সঙ্গে ভার্চুয়ালি বসে কাজ করতে পারবেন, আলোচনা করতে ও কথা বলতে পারবেন- ঠিক যেমন অফিসে করেন।
হরাইজন ওয়ার্করুমসসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে এ ধরনের সফটওয়্যার চালু করেছে সাবেক ফেসবুক, বা বর্তমান মেটা। অকুলাস ভিআর হেডসেট দিয়ে কাজ করছেন কর্মীরা, যার একেকটির মূল্য শুরুই ৩০০ ডলার থেকে। এখনও পণ্যটির সুবিধার বিষয়ে খুব একটা ইতিবাচক সাড়া মেলেনি।
প্রতিটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানকেও বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মকে সংযুক্ত করার উপায় খুঁজতে হবে। এজন্য আগে তাদের সম্মিলিতভাবে বিভিন্ন নীতিমালা ও কর্মপরিকল্পনাও গ্রহণ করতে হবে।
ফেসবুক কী পরিপূর্ণভাবে মেটাভার্সেই রূপ নেবে?
জাকারবার্গ জানিয়েছেন, ইন্টারনেটের ভবিষ্যৎ অনেক আশাব্যঞ্জক। এটি ডিজিটাল অর্থনীতির কেন্দ্রে পরিণত হবে।
তাই আগামীতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হিসেবে নয়, ফেসবুককে মেটাভার্স প্রতিষ্ঠান হিসেবেই দেখতে শুরু করবে মানুষ।
মেটাভার্স দাঁড় করাতে একজোট হবে অনেক প্রতিষ্ঠান
শুধু তাই নয়, একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে মেটাভার্স কাজ করবে না বলেও জানিয়েছেন জাকারবার্গ। এরই মধ্যে সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফট, চিপনির্মাতা ভিডিয়া আর ভিডিও গেম প্রতিষ্ঠান এপিক গেমস, রোবলক্সের সঙ্গে মেটাভার্সকে এগিয়ে নেয়ার বিষয়ে আলোচনাও শুরু হয়েছে।
জনপ্রিয় ভিডিও গেইম ফর্টনাইটের কারিগর প্রতিষ্ঠান এপিক গেমস এরই মধ্যে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ১০০ কোটি ডলারের তহবিল সংগ্রহ করেছে। মেটাভার্স প্রতিষ্ঠায় দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা প্রণয়নে ব্যয় হবে এ অর্থ।
শিখন কার্যক্রম, খেলাধুলা, সামাজিকতা রক্ষা ও সাধারণ কাজকর্মের জন্য মেটাভার্সে ত্রিমাত্রিক (থ্রিডি) অভিজ্ঞতা যুক্ত করতে কাজ করছে রোবলক্স।
ইতালিভিত্তিক জনপ্রিয় ফ্যাশন হাউজ গুচি চলতি বছরের জুনে রোবলক্সের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছে। চুক্তি অনুযায়ী ডিজিটাল আনুষঙ্গিক পণ্যও বিক্রি করবে তারা।
মেটাভার্সে ঢোকার টিকিট হিসেবে ডিজিটাল টোকেন বিক্রি করেছে কোকা-কোলা ও ক্লিনিক।
আরও পড়ুন:ভুয়া তথ্য নিয়ে বিরোধের কারণে ব্রাজিলে ইলন মাস্কের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম এক্সের (সাবেক টুইটার) ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। তবে মোটা অঙ্কের জরিমানা দেয়ার পর সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।
রায়ে ব্রাজিলের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি আলেকজান্দ্রে দে মোরায়েস বলেন, ‘অবিলম্বে ব্রাজিলে এক্সের কার্যক্রম পুনরায় শুরুর অনুমতি দিতে নির্দেশ দেয়া হচ্ছে। এজন্য যোগাযোগ কর্তৃপক্ষকে ২৪ ঘণ্টা সময় দেয়া হলো।’
আল জাজিরার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, কয়েক মিলিয়ন ডলার জরিমানা দেয়ার পর আদালত এই রায় দিয়েছে।
তবে জরিমানার পরিমাণ ঠিক কত, তা প্রকাশ করা হয়নি।
এই রায়ের বিষয়ে এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি বিশ্বের সবচেয়ে ধনী এবং স্বঘোষিত ‘বাক-স্বাধীনতা নিরঙ্কুশবাদী’ ইলন মাস্ক।
এর আগে ব্রাজিলে ভুয়া তথ্য প্রচারে অভিযুক্ত অ্যাকাউন্টগুলো বন্ধ করতে এক্সকে নির্দেশ দেয় দেশটির সর্বোচ্চ আদালত। তবে বাক-স্বাধীনতা খর্ব হওয়ার কারণ দেখিয়ে আদালতের রায় মানবেন না বলে জানিয়েছিলেন মাস্ক।
এমনকি আইনি লড়াইয়ের জন্য আদালতের দেয়া সময়সীমাও লঙ্ঘন করে সামাজিক প্ল্যাটফর্মটি। এরপর ব্রাজিলে এক্সের কার্যক্রম ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।
আদালত এক্স বন্ধের নির্দেশ দেয়ার পর বিচারপতি দে মোরায়েসকে ‘শয়তান স্বৈরশাসক’ আখ্যা দেন মাস্ক। সে সময় ব্রাজিলের সাবেক ডানপন্থী প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর সমর্থকদের প্রতিও সহানুভূতি প্রকাশ করেন তিনি।
২০২২ সালের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হেরে নির্বাচন সম্পর্কে যাচাইবিহীন তথ্য প্রচারের অভিযোগ ওঠে বলসোনারোর বিরুদ্ধে। এরপর ২০২৩ সালের ৮ জানুয়ারি বলসোনারোর পরাজয় ঠেকাতে সামরিক অভ্যুত্থানের ডাক দিয়ে দেশটির গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবনগুলোর ওপর হামলা চালায় তার অনুসারীরা। পার্লামেন্ট, সুপ্রিম কোর্ট ও প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে ঢুকে ভাঙচুর করে তারা।
ওই ঘটনায় উস্কানিমূলক বক্তব্যের জন্য বলসোনারোকে দায়ী করা হয় এবং ২০৩০ সাল পর্যন্ত তাকে নির্বাচনে অংশ নেয়ায় অযোগ্য ঘোষণা করে দে মোরায়েসের আদালত। তার পর থেকে মাস্কের মতো তিনিও বিচারপতি দে মোরায়েসের সঙ্গে দ্বন্দ্বে লিপ্ত রয়েছেন।
নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ-২০২৪-এর বাংলাদেশ পর্বের ঢাকা বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি)।
এ হ্যাকাথন শুক্রবার থেকে শুরু হয়ে একটানা ৩৬ ঘণ্টা চলার পর শনিবার সন্ধ্যা ছয়টায় শেষ হয়।
গতকাল রাতে রাজধানীর আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (এআইইউবি) এবং অনলাইনে একসঙ্গে শুরু হওয়া নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ হ্যাকাথন প্রতিযোগিতার বাংলাদেশ পর্বের ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
ফলাফলে ঢাকা বিভাগীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের টিম ‘কোয়ান্টাম ভয়েজার্স’ তাদের গৌরবগাঁথা সাফল্য রচনা করে।
টিমের সদস্যরা হলেন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের নাহিদ রায়হান (টিম লিডার), ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের জাহাঙ্গীর হোসেইন ও ফারহান মাসুদ সোহাগ, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের মুয়াম্মার তাজওয়ার আসফি এবং ইউসুফ হাসান সিফাত।
গত ১০ বছর বিশ্বব্যাপী এ প্রতিযোগিতায় টানা তিনবারসহ সর্বমোট চারবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে বাংলাদেশ।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল অ্যারোনটিকস অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন-নাসা আন্তর্জাতিকভাবে বিশ্বের ১৮৫টি দেশের প্রযুক্তিবিদ, বিজ্ঞানী, ডিজাইনার, আর্টিস্ট, শিক্ষাবিদ, উদ্যোক্তাদের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রের মেধাবী তরুণদের একত্রিত করে পৃথিবীর বিভিন্ন বৈশ্বিক সমস্যা সমাধানে উদ্ভাবনী সমাধান খুঁজে বের করার লক্ষ্যে এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। এরই অংশ হিসেবে বেসিসের উদ্যোগে বাংলাদেশের ৯টি শহরে (ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, রংপুর, ময়মনসিংহ এবং কুমিল্লা) এ আয়োজন করা হয়।
নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জে এবার ১ কোটি শিক্ষার্থীকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যুক্ত করার পাশাপাশি ২ লাখ শিক্ষার্থীকে সরাসরি ও প্রতিযোগিতায় যুক্ত করার পরিকল্পনা নেয়া হয়।
এবার বাংলাদেশের ৯টি শহর থেকে ৩ হাজারেরও বেশি প্রতিযোগী অংশ নেন।
সর্বমোট ৫০০টি প্রকল্পের মধ্যে হাইব্রিড মডেলে বাছাইকৃত শীর্ষ ৫০টি নিয়ে এআইইউবিতে এবং বাকি ৪৫০টি প্রকল্প নিয়ে অনলাইনে অনুষ্ঠিত হয়েছে ২০২৪-এর দুই দিনব্যাপী নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ হ্যাকাথন।
আরও পড়ুন:তরুণ প্রজন্মের দৈনন্দিন জীবনের সৃজনশীলতা, বুদ্ধিমত্তা ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সম্প্রতি এআই∞ (Infinix AI∞) চালু করেছে ট্রেন্ডি টেক ব্যান্ড ইনফিনিক্স।
এটি পরবর্তী প্রজন্মের এআই সল্যুশনস, যার কেন্দ্রবিন্দু হলো ফোলাক্স, যা আধুনিক ভার্চুয়াল সহকারী হিসেবে কাজ করে।
ফোলাক্সটি জিপিটি-৪০, জেমিনি এবং অন্যান্য উন্নত প্রযুক্তির সঙ্গে ইনফিনিক্স-এর নিজস্ব এআই মডেল দিয়ে চালিত।
ইনফিনিক্সের এ উদ্ভাবন তরুণদের মধ্যে নতুন একটি ট্রেন্ডের শুরু করতে যাচ্ছে, যা তাদের জীবনকে সহজ ও উন্নত করবে।
টেক্সট, ভয়েস বা ইমেজ ইনপুটের মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা ইনফিনিক্স এআই∞-এর মাধ্যমে একটি নিরবচ্ছিন্ন অভিজ্ঞতা উপভোগ করেন, যেখানে রিয়েল-টাইম ফিডব্যাক এবং ব্যক্তিগত সুপারিশ পাওয়া যায়। এটি বুদ্ধিমান সৃজনশীল সহকারীর কাজ করে, যা নিত্যদিনের কাজকে আরও সহজ, উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করে মানুষের উৎপাদনশীলতাকে বাড়িয়ে দেবে।
ইনফিনিক্স এআই∞-এর অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো লাইভ টেক্সটস, যা ছবি এবং নথি থেকে মুহূর্তের মধ্যেই তথ্য নেয় এবং সেটিকে ছোট করে। শিক্ষার্থী, প্রফেশনালস এবং গবেষকদের জন্য নতুন এ প্রযুক্তি উৎপাদনশীলতা বাড়াতে সাহায্য করবে বলে আশা করা যাচ্ছে। একই সঙ্গে লাইভ টেক্সটস∞ ডেটাকে দ্রুত ও সংক্ষিপ্ত করে, যা ডেটা পুনরুদ্ধারকে আরও কার্যকর এবং দক্ষ করে তুলবে।
যারা সৃজনশীল কাজ করতে চান, তাদের জন্য আছে এআই ম্যাজিক ক্রিয়েট∞ টুল, যা ব্যবহারকারীর ধারণাকে সহজেই বাস্তবে রূপান্তর করতে সহায়তা করে। বিশেষ এ টুল আইডিয়া জেনারেশন এবং সেটি পরিমার্জনের প্রক্রিয়াও নির্দেশ করতে পারে। পাশাপাশি ম্যাজিক ক্রিয়েটের মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়ায় রিলস, স্টোরি, পোস্ট, ভিডিও বা ছবির ক্যাপশন তৈরিতে সহায়তা নেয়া যাবে।
অন্যদিকে যারা ভ্রমণপিপাসু এবং কনটেন্ট ক্রিয়েটর, তাদের জন্য ভিজ্যুয়াল লুক আপ∞ ফিচারটি একটি আদর্শ গাইডলাইন, যেখানে বিভিন্ন নিদর্শনের ছবি, দিক নির্দেশনা, ইতিহাস, সংস্কৃতি বা বিভিন্ন সাইট সম্পর্কে বিশদ তথ্য দেয়া থাকে।
ইনফিনিক্স এআই∞ নিত্যদিনের কাজ সহজ করতে অ্যাডভান্স কিছু ফিচারও সাজেস্ট করে। যেমন: এআই ওয়ালপেপার, যা ব্যবহারকারীর সাংস্কৃতিক এবং আঞ্চলিক পছন্দগুলোর সঙ্গে খাপ খায়।
এ ছাড়া এআই ইরেজার ও স্মার্ট কাটআউটের মতো টুল ইমেজ এডিটিংকে আরও উন্নত করে। এআই স্কেচ ব্যবহার করে কঠিন সব ধারণাকে পলিশ ডিজাইনে রূপান্তর করতে সাহায্য করে। আরও আছে স্মার্ট সার্চ, যা দ্রুত ও প্রয়োজনীয় ভাষায় খুঁজে বের করার সুযোগ দেয় এবং মোবাইল ডেটা ও ব্যালেন্স অনুসন্ধানও করতে সাহায্য করে।
ইনফিনিক্সের এআই∞ উদ্ভাবন স্মার্টফোন প্রযুক্তিতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে। প্রযুক্তিটি অ্যাপ, ক্লাউড পরিষেবা এবং ভয়েস রিকগনিশনকে একত্রিত করে একটি ইন্টিগ্রেটেড সিস্টেম তৈরি করেছে, যা প্রতিটি মিথস্ক্রিয়ার সঙ্গে বিকাশ লাভ করে এবং ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতাকে আরও উন্নত করে।
তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে হাজারের বেশি পুনরাবৃত্তির মাধ্যমে উন্নত হওয়া টুলটি ব্যবহারকারীদের প্রয়োজন অনুযায়ী রিয়েল টাইমে ব্যক্তিগত ফিডব্যাকও দেয়।
ইনফিনিক্স এআইয়ের ব্যবস্থাপক তুয়ানওয়ে শি বলেন, ‘ইনফিনিক্স এআই∞ প্রথমবারের মতো ১০০টির বেশি ভাষাকে সমর্থন করছে, যা আফ্রিকা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং দক্ষিণ এশিয়ার মতো অঞ্চলে ভাষা ও কমিউনিকেশনের ফাঁক রোধ করবে। এ উদ্ভাবনী এআই প্রযুক্তি সৃজনশীলতা, উৎপাদনশীলতা এবং বৈশ্বিক সংযোগকে এক জায়গায় এনেছে।’
ট্রান্সফরমার প্রযুক্তির শক্তিকে কাজে লাগিয়ে এই টুল যেকোনো প্রসঙ্গ বোঝা এবং ব্যক্তিগত তথ্য প্রদানের ক্ষেত্রে অত্যন্ত কার্যকর। উন্নত প্রশিক্ষণ পদ্ধতির মাধ্যমে এটি দ্রুত এবং সঠিক প্রতিক্রিয়া নিশ্চিত করে। পাশাপাশি কর্মক্ষমতাকে অপ্টিমাইজ করে।
ফোলাক্সের মতো বৈশিষ্ট্যগুলোর সাহায্যে এটি স্মার্টফোন এআইতে নতুন একটি মান স্থাপন করছে এবং দক্ষ ও উচ্চ স্তরের কর্মক্ষমতা নিশ্চিত করছে।
আরও পড়ুন:পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় স্টেশনে সংযুক্ত সব সার্কিটের ব্যান্ডউইথড পরিষেবা রক্ষণাবেক্ষণ কাজ করা হবে। এজন্য শনিবার রাত ২টা থেকে রোববার ভোর ৬টা পর্যন্ত চার ঘণ্টার জন্য ইন্টারনেট সেবায় বিঘ্ন বা ধীরগতি দেখা দিতে পারে।
বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শনিবার এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংস্থাটির মহাব্যবস্থাপক (চালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ) সাইদুর রহমানের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কুয়াকাটায় স্থাপিত দেশের দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল সিস্টেমের সি-মি-উই-৫ কনসোর্টিয়াম কর্তৃক শনিবার রাত ২টা থেকে পরদিন রোববার ভোর ৬টা পর্যন্ত চার ঘণ্টা সাবমেরিন ক্যাবলের লাইটিং ফিল্টার স্থাপন করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
এসময় সি-মি-উই সাবমেরিন ক্যাবলসের মাধ্যমে কুয়াকাটা ল্যান্ডিং স্টেশনে সংযুক্ত সব সার্কিটের ব্যান্ডউইথড পরিষেবা বন্ধ থাকবে। তবে একই সময়ে কক্সবাজার ল্যান্ডিং স্টেশন থেকে সি-মি-উই-৪ সাবমেরিন ক্যাবলসের সার্কিটগুলো যথারীতি চালু থাকবে। রক্ষণাবেক্ষণ কাজ চলাকালীন ইন্টারনেট গ্রাহকরা সাময়িকভাবে ইন্টারনেটের ধীরগতির সম্মুখীন হতে পারেন বা ইন্টারনেট সেবায় বিঘ্ন ঘটতে পারে।
গ্রাহকদের সাময়িক অসুবিধার জন্য কর্তৃপক্ষ আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছে।
বাংলাদেশের বাজারে আনুষ্ঠানিকভাবে নোট ৪০ সিরিজের নতুন স্মার্টফোন ‘নোট ৪০এস’ উন্মোচন করেছে ব্র্যান্ড ইনফিনিক্স।
থ্রিডি কার্ভড ডিসপ্লে ও ওয়্যারলেস চার্জিংয়ের মতো বৈশিষ্ট্যের স্মার্টফোনটিতে ব্যবহারকারীরা নিরবচ্ছিন্ন অভিজ্ঞতা পাবেন বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
ইনফিনিক্সের ভাষ্য, নোট ৪০এস স্মার্টফোনটি বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যার মাধ্যমে তরুণ, টেক-স্যাভি ব্যবহারকারী এবং পেশাদারদাররা পাবেন টপ-নচ পারফরম্যান্স ও সুবিধা।
ইনফিনিক্স নোট ৪০এস মডেলটিতে রয়েছে উজ্জ্বল ৬.৭৮-ইঞ্চি থ্রিডি কার্ভড অ্যামলয়েড ডিসপ্লে। ডিসপ্লের ফ্ল্যাগশিপ স্তরের থ্রিডি কার্ভড এজগুলো নান্দনিক আকর্ষণ সৃষ্টি করে, পাশাপাশি এটি ত্রিমাত্রিক দেখার অভিজ্ঞতা দেবে। স্মার্টফোনটির ডিসপ্লের রেজুলেশন ২৪৩৬*১০৮০ পিক্সেল এবং এতে রয়েছে ১২০ হার্টজ রিফ্রেশ রেটসহ আল্ট্রা ক্লিয়ার ভিজুয়ালস এবং ফ্লুইড অ্যানিমেশন।
ইনফিনিক্স নোট ৪০এস গেমিং, স্ট্রিমিং এবং দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য হতে পারে ভালো বিকল্প। ব্যবহারকারীদের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে এবং ডিভাইস ব্যবহারের সময় চোখের আরামের জন্য নীল রশ্মি নির্গমনের ফিচারও যুক্ত করা হয়েছে।
ডিভাইসটিতে আছে ২০ ওয়াট ওয়্যারলেস ম্যাগচার্জ এবং ৩৩ ওয়াট অলরাউন্ড ফাস্টচার্জ ২.০। এটি ম্যাগ পাওয়ার এবং ম্যাগ প্যাড ওয়্যারলেস চার্জিং সিস্টেমের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ায় ব্যবহারকারীরা একই সঙ্গে দ্রুত ও সুবিধাজনক চার্জিং প্রযুক্তির সুবিধা নিতে পারবেন।
ইনফিনিক্স নোট ৪০এস-এর প্রধান আকর্ষণ ব্যাটারি লাইফ। ডিভাইসটিতে ৫০০০ মিলি অ্যাম্পিয়ারের ব্যাটারি রয়েছে, যা একবার ফুল চার্জে দিনভর ব্যাকআপ পাওয়া যাবে। ম্যাগচার্জারে ব্যবহারকারীরা ঘরে বা বাইরে ডিভাইসটিকে দ্রুত চার্জ করার সুবিধা পাবেন।
ফটোগ্রাফি, রিলস, ভিডিওতে জেন-জিদের রয়েছে বিশেষ আকর্ষণ। তাদের কথা মাথায় রেখে ইনফিনিক্স নোট ৪০এস ডিভাইসটির ক্যামেরা ফিচারের প্রতি বিশেষ মনোযোগ দিয়েছে, যা নির্বিঘ্নে তাদের সব চাহিদা পূরণ করতে পারে।
ফোনটির প্রধান ক্যামেরা ১০৮ মেগাপিক্সেলের। এ ছাড়াও রয়েছে একটি ২ মেগাপিক্সেল ম্যাক্রো লেন্স এবং ৩২ মেগাপিক্সেল সেলফি ক্যামেরা, যা দিয়ে ঝকঝকে নিখুঁত সেলফি তোলা সম্ভব। একই সঙ্গে এতে আছে সুপার নাইট, স্লো মোশন এবং টাইম-ল্যাপসের মতো দরকারি সব মোড, যার সাহায্যে ব্যবহারকারীরা কম আলোতে দিনে বা রাতে যেকোনো পরিবেশে অসাধারণ ছবি এবং ভিডিও ক্যাপচার করতে পারবেন।
ইনফিনিক্স নোট ৪০এস স্মার্টফোনটিতে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স নিশ্চিত করতে দেয়া হয়েছে শক্তিশালী মিডিয়াটেক হেলিও জি ৯৯ চিপসেট, যা মাল্টিটাস্কিং এবং এটি উচ্চ-গতির কর্মক্ষমতার জন্য অপ্টিমাইজ করা। এটি সারা দিন ল্যাগমুক্ত ব্যবহার নিশ্চিত করে।
ডিভাইসটিতে আছে ৮ জিবি র্যাম ও ২৫৬ জিবি অভ্যন্তরীণ স্টোরেজ। নতুন স্মার্টফোনে ইনফিনিক্সের সবশেষ এক্সওএস ১৪ স্কিনের সাথে অ্যান্ড্রয়েড ১৪ এর সমন্বয় থাকায় ব্যবহারকারীরা কাস্টমাইজযোগ্য ইন্টারফেসের সুবিধা পাবেন। ডিভাইসটিতে আছে ইন-ডিসপ্লে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর এবং আইপি ৫৪ ধুলোবালি ও স্প্ল্যাশ প্রতিরোধের মতো বৈশিষ্ট্য, যা এটিকে দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য সুরক্ষিত এবং টেকসই করে তোলে।
অবসিডিয়ান ব্ল্যাক এবং ভিনটেজ গ্রিন—এ দুটি রঙে স্মার্টফোনটি বাজারে এসেছে, যার মূল্য মাত্র ২৬ হাজার ৯৯৯ টাকা। বাজেট ফ্রেন্ডলি ফোনটি ব্যবহারকারীদের একটি প্রিমিয়াম অভিজ্ঞতা দেবে বলে আশা করছে ইনফিনিক্স।
সারা দেশের যেকোনো অফিশিয়াল স্টোর থেকে গ্রাহকরা ইনফিনিক্স নোট ৪০এস স্মার্টফোনটি কিনতে পারবেন।
আরও পড়ুন:বিশ্বজুড়ে স্মার্টফোনের ডিসপ্লের ক্ষেত্রে প্রথাগত ফ্ল্যাট স্ক্রিন এবং থ্রিডি কার্ভড বা বাঁকানো ডিসপ্লের মধ্যে কোনটি সেরা, সেটি নিয়ে তর্ক চলে আসছে।
উভয় ডিসপ্লেরই বেশ কিছু সুবিধা আছে, তবে নান্দনিকতা ও কার্যকারিতার সমন্বয়ের জন্য বর্তমান তরুণদের কাছে থ্রিডি কার্ভড ডিসপ্লের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। বিশেষ করে যারা ডিভাইসে নতুনত্ব ও স্টাইল খুঁজছেন, তাদের কাছে কার্ভড ডিসপ্লে পছন্দের শীর্ষে রয়েছে।
এমন বাস্তবতাকে মাথায় রেখে টেক ব্র্যান্ড ইনফিনিক্স তাদের আসন্ন নোট ৪০ সিরিজের নতুন স্মার্টফোনে থ্রিডি কার্ভড ডিসপ্লে যুক্ত করছে।
নতুন মডেলটি তরুণ এবং টেক-স্যাভি ইউজার তথা যারা নতুন প্রযুক্তিপণ্য ও ডিজিটাল গ্যাজেট সহজে ব্যবহার করতে পারেন, ভালোভাবে বুঝতে পারেন, তাদের ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছে ইনফিনিক্স। প্রতিষ্ঠানটির মতে, এর মাধ্যমে তরুণদের ক্ষমতায়নের ইনফিনিক্স যে লক্ষ্যে কাজ করছে, তার প্রতিফলন ঘটবে।
ইনফিনিক্স জানায়. শুধু নান্দনিকতার জন্য নয়, থ্রিডি কার্ভড ডিসপ্লের বাঁকানো প্রান্তগুলো ব্যবহারকারীদের দেয় এক দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা। পড়াশোনা, গেম খেলা, মোবাইলে প্রিয় অনুষ্ঠান দেখা কিংবা কাজের সময় মাল্টিটাস্কিং করার ক্ষেত্রে মসৃণ অভিজ্ঞতা পান ব্যবহারকারীরা।
অন্যদিকে ডিভাইসের চারপাশে থাকা বাঁকানো কোণাগুলো কেবল দেখতেই দৃষ্টিনন্দন নয়, এটি এর্গোনোমিক গ্রিপ তৈরি করতে সহায়তা করে। ফলে ডিভাইসটিকে আরও হালকা মনে হয় এবং সহজেই বহন করা যায়।
অন্যদিকে ফ্ল্যাট ডিসপ্লে গতানুগতিক, সহজবোধ্য ব্যবহার অভিজ্ঞতা দিলেও থ্রিডি কার্ভড ডিসপ্লের মতো এটি ত্রিমাত্রিক নয়। ফ্ল্যাট বা সমান্তরাল ডিসপ্লের ডিভাইস হাতে নিলে একটু হার্ড মনে হতে পারে এবং ভিডিও বা গেম খেলার ক্ষেত্রে তা স্বাচ্ছন্দ্যকর অনুভূতি দেয় না।
দীর্ঘক্ষণ ব্যবহারের ক্ষেত্রে ফ্ল্যাট ডিসপ্লে টেকসই হলেও কার্ভড ডিসপ্লের মতো এটি মসৃণ, মর্ডান লুক এবং আরামদায়ক অভিজ্ঞতা দেয়ার ক্ষেত্রে অনেকাংশেই পিছিয়ে। এ ছাড়াও আসন্ন নোট ৪০ সিরিজের স্মার্টফোনের ক্ষেত্রে ইনফিনিক্স ব্যবহারকারীদের চাহিদার ওপর ভিত্তি করে তাদের ডিজাইন করা নমনীয়তা এবং কার্যকারিতার একটি পূর্ণাঙ্গ প্যাকেজ অফার করছে। নতুন নোট সিরিজের মডেলটিতে থাকছে ৩৩ ওয়াটের ফার্স্ট চার্জার।
এটি ওয়্যারলেস ম্যাগনেটিক চার্জিংয়ের সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ, যা সাধারণত প্রিমিয়াম ডিভাইসে পাওয়া যায়।
ইনফিনিক্স জানায়, ফোনের পেছনে থাকা চার্জারটি দিয়ে সইজেই স্ন্যাপ এবং পাওয়ার আপ করা যাবে, যা প্যাঁচানো ক্যাবলের ঝামেলা থেকে রেহাই দেবে।
প্রতিষ্ঠানটির ভাষ্য, দ্রুত গতিসম্পন্ন হওয়ায় একই সঙ্গে এ ডিভাইস শিক্ষার্থী এবং তরুণ পেশাদারদের দ্রুতগতির জীবনধারার সঙ্গে পুরোপুরি উপযুক্ত।
নতুন এ ডিভাইসে যোগ করা হয়েছে ১০৮ মেগাপিক্সেলের একটি মেইন ক্যামেরা এবং ৩২ মেগাপিক্সেলের সেলফি ক্যামেরা, যাতে করে ঝকঝকে, স্পষ্ট হাই-রেজুলেশনের ছবি পাওয়া যায়।
ফ্ল্যাগশিপের ট্যাগ ছাড়াই গ্রাহকরা স্মার্টফোনটিতে ফ্ল্যাগশিপ-লেভেল সব বৈশিষ্ট্য পাবেন বলে জানিয়েছে ইনফিনিক্স।
টেক ব্র্যান্ডটি জানায়, রাতে পড়াশোনা থেকে শুরু করে সপ্তাহান্তে অ্যাডভেঞ্চার পর্যন্ত জীবনের সেরা মুহূর্তগুলো ধারণের জন্য একটি নিখুঁত সঙ্গী হবে এ ডিভাইস।
ইনফিনিক্স আরও জানায়, যারা বাজেট ফ্রেন্ডলি ভালো পারফরম্যান্সের একটি ফোনের জন্য দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষা করছেন, তাদের জন্য খুব শিগগিরই বাংলাদেশের বাজারে আসতে যাচ্ছে ইনফিনিক্স নোট ৪০ সিরিজের নতুন ফোনটি।
নোট ৪০ প্রো উন্মোচনের পর যারা ইচ্ছে থাকলেও শুধু বাজেটের কারণে ডিভাইসটি কিনতে পারেননি, তাদের জন্য নতুন ডিভাইসটি চাহিদা এবং বাজেটের সম্বন্বয় ঘটাতে সক্ষম হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন:আওয়ামী লীগ সরকারের গত ১৫ বছরে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে কত দুর্নীতি হয়েছে, তা জানতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মাহবুবুর রহমানকে এ কমিটির প্রধান করা হয়েছে।
কমিটি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং এ বিভাগের অধীন সংস্থা কর্তৃক ২০০৯ থেকে ২০২৪-২৫ অর্থবছর পর্যন্ত বাস্তবায়িত এবং বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পের সামগ্রিক মূল্যায়ন করবে।
কমিটিতে হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের কার্যালয় থেকে একজন প্রতিনিধি, বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি থেকে একজন প্রতিনিধি, বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ থেকে একজন প্রতিনিধি সদস্য হিসেবে রয়েছেন।
দুর্নীতি অনুসন্ধানে প্রয়োজনে টেকনিক্যাল বিশেষজ্ঞ হিসেবে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একজন প্রতিনিধি নেয়া হবে। পরবর্তী সময়ে প্রয়োজন হলে অন্য কোনো সংস্থা থেকে আইটি বিশেষজ্ঞ নেয়া হবে।
তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ব্যাপক দুর্নীতির ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে সচিব মাহবুবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আইসিটি বিভাগের আওতায় সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক অনেক প্রকল্প নিয়েছেন। সব প্রকল্পের তথ্য আমরা চেয়েছি। এসব প্রকল্প আমরা খতিয়ে দেখব, কোথাও সমস্যা ও দুর্নীতি হয়েছে কি না।
‘প্রকল্পের আওতায় পরামর্শকসহ কিছু অপ্রয়োজনীয় খাতও দেখানো হয়েছে। সেগুলোও দেখবে। এককথায় প্রকল্পের সব বিষয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করব।’
কমিটি সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সংস্থার চলমান প্রকল্পগুলোর সর্বশেষ হালনাগাদ অগ্রগতি প্রতিবেদন যাচাই করে দেখবে মূল্যায়ন কমিটি। পাশাপাশি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং এর আওতাধীন সংস্থাগুলো থেকে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের এডিপিতে চলমান ২১টি প্রকল্পের বাস্তবায়ন অগ্রগতি, অবশিষ্ট কার্যক্রম এবং ওই কার্যক্রম সম্পাদনের অপরিহার্যতা যাচাই করা হবে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য