নগদ অর্থের চরম সংকটে থাকা আফগানিস্তানকে ফের আর্থিক সহায়তা দিতে বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই।
দক্ষিণ এশিয়ার যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটি পুনর্গঠনের স্বার্থে তিনি আন্তর্জাতিক দুই সংস্থার প্রতি ওই আহ্বান জানান বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
১৫ আগস্ট কাবুল পতনের মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে তালেবান।
এরপরই দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার জব্দ করে যুক্তরাষ্ট্র। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন আর্থিক সংস্থা আফগানিস্তানের তহবিলের প্রবেশাধিকার স্থগিত করে ।
অবশ্য পরিমাণে আগের মতো না হলেও আফগানিস্তানে বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার মানবিক সহায়তা পাঠানো অব্যাহত রয়েছে।
এমন পরিপ্রেক্ষিতে আফগানিস্তানের ব্যাংকগুলোতে নগদ অর্থের ব্যাপক সংকট দেখা দিয়েছে। ব্যাংকে অর্থাভাবে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কয়েক মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না। খাদ্যের দাম সাধারণ জনগণের নাগালের বাইরে চলে গেছে।
মঙ্গলবার আইএমএফের পক্ষ থেকে বলা হয়, চলতি বছরে আফগান অর্থনীতির ৩০ শতাংশ পর্যন্ত সংকোচন ঘটবে। আর এতে শরণার্থীসংকট প্রকট আকার ধারণ করার শঙ্কা রয়েছে।
আফগানিস্তানের প্রতিবেশী দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে ভিডিওতে আলাপের সময় চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং বলেন, ‘সব ক্ষেত্রেই আফগানিস্তানের সহযোগিতা প্রয়োজন। উন্নয়ন দেশটির সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।’
আফগানিস্তানের ওপর থেকে একতরফা নিষেধাজ্ঞা তুলতে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য পশ্চিমা দেশের প্রতি ফের আহ্বান জানান চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং।
একই সঙ্গে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় আফগানিস্তানকে আরও টিকা ও চিকিৎসাসামগ্রী দিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রতিও আহ্বান জানান তিনি।
চীনের পক্ষ থেকে সম্প্রতি বলা হয়, আফগানিস্তানে তিন কোটি ডলার মূল্যের জরুরি মানবিক সহায়তা পাঠাবে বেইজিং।
আফগানিস্তানে ক্ষমতাসীন তালেবান সরকারকে বিচ্ছিন্ন না করে বরং তাদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের উদ্যোগ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি বারবার আহ্বান জানিয়ে আসছে চীন।
এ বিষয়ে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং বলেন, ‘আমার মনে হয়েছে, বহির্বিশ্বের সঙ্গে আলোচনা ও সহযোগিতায় আগ্রহী তালেবান। এ বিষয়ে তাদের যথেষ্ট আন্তরিক লেগেছে।’
আরও পড়ুন:লাইসেন্স ছাড়া ওষুধ উৎপাদন-বিপণন এবং সরকারি ওষুধ চুরি করে বিক্রি করলে সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রেখে ঔষধ আইন-২০২২-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার হয় মন্ত্রিসভার বৈঠক। এতে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন সরকারপ্রধান।
পরে সাংবাদিকদের বৈঠকের বিস্তারিত তুলে ধরেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘লাইসেন্স ছাড়া ঔষধ উৎপাদন, বিপণন বা আমদানি করলে ১০ বছরের জেল ও ১০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। একইভাবে সরকারি ঔষধ চুরি করে বিক্রি করলেও একই শাস্তি ভোগ করতে হবে।’
বিস্তারিত আসছে…
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যুবক নিহত হয়েছেন।
বঙ্গবন্ধু মহাসড়কের কেওয়াটখালী এলাকায় বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ২৮ বছরের মো. শামীম লৌহজং উপজেলার যশলদিয়া পুনর্বাসনকেন্দ্রের সিরাজ হাওলাদারের ছেলে।
নিউজবাংলাকে তথ্য নিশ্চিত করেন হাঁসাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফজাল হোসেন।
তিনি জানান, সকালে কেওয়াটখালী এলাকায় মাওয়ামুখী রাস্তায় তার মোটরসাইকেলটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়ক বিভাজনের রেলিংয়ে সজোরে ধাক্কা লেগে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় শামীমের।
ওসি আফজাল হোসেন বলেন, ‘খবর পেয়ে হাঁসাড়া হাইওয়ে থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধারের পর ফাঁড়িতে নিয়ে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরির কাজ করছে। অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’
আরও পড়ুন:জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের জামিন শুনানি পিছিয়েছে। আগামী ২২ আগস্ট ফের জামিন শুনানির দিন ঠিক করেছেন আদালত।
একই দিন মামলার অভিযোগ গঠন শুনানিরও দিন ঠিক করেছেন বিচারক।
সম্রাটের জামিন শুনানি ও মামলার চার্জ গঠন শুনানির জন্য দিন ঠিক ছিল বৃহস্পতিবার। সম্রাট অসুস্থ থাকায় কারা কর্তৃপক্ষ তাকে আদালতে না পাঠিয়ে কাস্টডি ওয়ারেন্ট (হাজতি পরোয়ানা) পাঠানো হয়। এরপর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান তার জামিন শুনানি ও চার্জ গঠন শুনানির জন্য ২২ আগস্ট দিন ঠিক করেন।
মঙ্গলবার সম্রাটের জামিন বাতিল করে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রেখেছিল আপিল বিভাগ। বিচারপতি মো. নূরুজ্জামানসহ তিন বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
এ আদেশের ফলে তার জামিন বাতিল হয়েছিল।
এর আগে জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের মামলায় সম্রাটের জামিন বাতিল করে তাকে আত্মসমর্পণ করতে আদেশ দিয়েছিল আদালত। ২৪ মে সে আদেশেই আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেছিলেন তিনি।
গত ১১ মে সম্রাটকে জামিন দিয়েছিলেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান। পরে বিচারিক আদালতের দেয়া জামিন বাতিল চেয়ে ১৬ মে হাইকোর্টে আবেদন করে দুদক।
১৮ মে দুদকের এই মামলায় সম্রাটের জামিন বাতিল করে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজি মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ। একই সঙ্গে সাত দিনের মধ্যে তাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয়া হয়।
দুদকের মামলায় জামিন পাওয়ার আগে তার বিরুদ্ধে থাকা আরও তিন মামলায় জামিন পান সম্রাট। চার মামলার সবটিতে জামিন পাওয়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) প্রিজন সেল থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন তিনি।
সারা দেশে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান চলাকালে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর সম্রাট ও তার সহযোগী তৎকালীন যুবলীগ নেতা এনামুল হক ওরফে আরমানকে কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
ওই বছরের ১২ নভেম্বর সম্রাটের বিরুদ্ধে দুদকের করা মামলায় ২ কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। পরের বছর অর্থাৎ ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর এ মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক।
অভিযোগপত্রে সম্রাটের বিরুদ্ধে ২২২ কোটি ৮৮ লাখ ৬২ হাজার ৪৯৩ টাকা জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়।
আরও পড়ুন:প্রতি বছরের ন্যায় এবারও মৌসুম শেষে নরসিংদীর শিবপুরের কামারটেক গ্রামে ঢাকঢোল পিটিয়ে জাতীয় ফল কাঁঠালকে বিদায় জানানো হয়।
এ উপলক্ষে স্থানীয় ব্যাপারী ও কৃষকরা বুধবার সকালে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে কাঁঠাল বিক্রির মহড়া দেন। মহাসড়কের পাশে সারা দিনব্যাপী চলে কাঁঠাল বিক্রির এই মহোৎসব।
কামারটেক বাজারের ফল ব্যবসায়ীরা জানান, কাঁঠালকে বিদায় জানানোর এ প্রথা দীর্ঘদিন ধরেই জেলার বিভিন্ন জায়গায় পালন করা হয়। এ বছর কামারটেক বাজারে ব্যাপারী সোহেল আহমেদ মৌসুমের শেষ কাঁঠাল বিক্রি করেন ঢাকঢোল বাজিয়ে, বাজার মাতিয়ে।
এ বিষয়ে সোহেল আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেষ লটের কাঁঠাল বিক্রি আমাদের ঐতিহ্য। মৌসুমের শুরু থেকে শেষে জেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে কৃষকদের কাছ থেকে কাঁঠাল কিনে মজুত রেখে বিক্রি করি। আগামী মৌসুমে আরও ভালো কাঁঠাল প্রাপ্তির আশায় শেষটা জমজমাটভাবে করা হয়।’
তিনি জানান, এই দিনে সকাল থেকে শহরের ব্যান্ডদল এনে ভ্যান গাড়িতে কাঁঠাল রেখে মহাসড়কে মহড়া দেয়া হয়। এ সময় আনন্দে মেতে ওঠেন স্থানীয়রা। পরে কামারটেক বাজারে শেষবারের মতো কাঁঠাল বিক্রি করা হয়। এ বছর শেষ হাটে ১৩৫০ টাকা দিয়ে সবচেয়ে বড় কাঁঠালটি বিক্রি করা হয়েছে। ছোট কাঁঠালের সর্বনিম্ন মূল্য ছিল ৫০০ টাকা।
স্থানীয় কয়েকজন জানান, প্রতি বছর কাঁঠালকে বিদায় জানানোর এই অনুষ্ঠানের সুনির্দিষ্ট কোনো দিনক্ষণ নেই। কৃষক ও কাঁঠালের ব্যাপারীরা সময় ও স্থান নির্ধারণের পর এ আয়োজন করে থাকে।
যোশর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাসেল আহমদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শৈশব থেকে আমরা কাঁঠাল বিক্রির এ উৎসব দেখে আসছি। এ বছর কামারটেক বাজারে উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে ব্যাপারীরা কাঁঠাল বিক্রি করেছেন।’
তিনি আরও জানান, মৌসুমে ব্যাপারীরা অনেক কাঁঠাল কেনেন স্থানীয় কৃষক ও বাগান মালিকদের কাছে থেকে। ১০ লাখ টাকার কাঁঠাল কিনলে তাদের লাভ হয় অনেক। লাভের পর মৌসুম শেষে যে কাঁঠাল থাকে সেগুলো নিয়ে উৎসবে মেতে ওঠেন তারা। এ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে মৌসুমের কাঁঠাল বিক্রি বন্ধ করেন তারা।
আরও পড়ুন:সুইস ব্যাংকে অর্থ জমাকারীদের তথ্য কেন জানতে চাওয়া হয়নি, তা সরকার ও দুদককে জানাতে বলেছে হাইকোর্ট।
বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার স্বপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেয়।
সকালে বিচারকাজের শুরুতেই আদালত দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিকের বক্তব্য শোনে। পরে আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেয়।
সুইস ব্যাংকে জমা করা অর্থের বেশিরভাগই অবৈধ পথে—এ ধরনের অভিযোগের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার কোনো পদক্ষেপ নিয়েছে কি না, তা রোববারের মধ্যে জানাতে বলেছে আদালত।
হাইকোর্টের দুই বিচারকের একজন বলেন, ‘সুইস রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে পড়েছি।’
ওই সময় তিনি বিষয়টি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পেতে প্রকাশিত সংবাদের কপি জমা দিতে বলেন।
ঢাকায় সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাতালি চুয়ার্ড বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকে বাংলাদেশের নাগরিকদের জমা করা অর্থের বেশিরভাগই অবৈধপথে আয় করার অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার সুইস ব্যাংকের কাছে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য চায়নি।
আরও পড়ুন:মেঘনা নদীতে জোয়ারের পানি বেড়ে লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও কমলনগর উপজেলার উপকূলীয় অন্তত ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বুধবার বিকেল থেকে লোকালয়ে পানি ঢুকতে শুরু করলেও বেশির ভাগ এলাকা প্লাবিত হয়েছে মধ্যরাত থেকে।
নদীর তীরবর্তী এলাকার বসত বাড়িসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি উঠে গেছে। ভেসে গেছে অনেক মাছের ঘের ও পুকুরের মাছ; ডুবে গেছে ফসল। এই দুর্ভোগের মধ্যেও ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে প্রায় দু শ পরিবার।
পানি উন্নয়ন বোর্ড লক্ষ্মীপুর কার্যালয় বলছে, পূর্ণিমা ও অমাবস্যার প্রভাবে ভাটা পড়লে লোকালয় থেকে পানি নেমে যায়, আবার জোয়ার এলে পানি ঢুকে পড়ে। এমনটি আরও কয়েক দিন থাকবে।
স্থানীয়রা জানায়, মেঘনার তীরবর্তী কমলনগর উপজেলার কালকিনি, সাহেবেরহাট, পাটওয়ারীরহাট, চরফলকন, চরমার্টিন, চরলরে ইউনিয়ন এবং রামগতি উপজেলার আলেকজান্ডার, বড়খেরী, চরগাজী, চর আবদুল্লাহ ইউনিয়নের অন্তত ১৫টি গ্রাম জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকায় বেড়িবাঁধ না থাকায় অস্বাভাবিক জোয়ারের পানি সহজে লোকালয়ে ঢুকছে। এতে নদীভাঙনসহ উপকূলীয় বাসিন্দাদের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।
রামগতি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শরাফ উদ্দিন আজাদ সহেল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘জোয়ারের পানিতে রামগতি উপজেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ চর আবদুল্যা ইউনিয়নের পুরো এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়া বড়খেরী, চরগাজী, চর আলেকজান্ডারসহ কয়েকটি ইউনিয়নে দুই দিন ধরে জোয়ারের পানি ঢুকছে। এতে বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট, ফসলি জমি তলিয়ে গেছে।’
পানি উন্নয়ন বোর্ড লক্ষ্মীপুর কার্যালয় কর্মকর্তা মো. ফারুক আহমেদ বলেন, ‘সামনে পূর্ণিমা, তাই নদীতে পানি বাড়ছে। গত দুই দিনে নদীর পানি ৪-৫ ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। পূর্ণিমা ও অমাবস্যার প্রভাবে ভাটা পড়লে লোকালয় থেকে পানি নেমে যায়, আবার জোয়ার এলে পানি ঢুকে পড়ে। এটি আরও কয়েক দিন থাকবে।’
কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কয়েকটি এলাকা অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি।’
আরও পড়ুন:সায়াহ্নে এসে পদবাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির বিরুদ্ধে। সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে অর্থের বিনিময়ে অন্তত ৫০০ থেকে ৮০০ জনকে পদ দেয়ার অভিযোগ করছেন। নেতা-কর্মীরা বলছেন, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি তিন বছরের জায়গায় পাঁচ বছরে পড়েছে। তার ওপর গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে এত জনকে পদ দিয়ে কমিটির কলেবর বাড়ানো হয়েছে। স্বয়ং সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকও বলতে পারবেন না এখন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে কতসংখ্যক সদস্য রয়েছেন।
গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির আকার হওয়ার কথা ৩০১ সদস্যবিশিষ্ট। কমিটির মেয়াদ তিন বছর।
ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা জানান, গত ৩১ জুলাই সহসভাপতি, সহসম্পাদক, বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক উপসম্পাদক এবং সদস্য পদ দিয়ে অনেককে চিঠি দেয়া হয়। পদ পেয়ে অনেকেই নিজ নিজ ফেসবুক প্রোফাইলেও সে খবর পোস্ট করেন। নিউজবাংলার অনুসন্ধানেও এর প্রমাণ পাওয়া যায়। এই প্রতিবেদকের কাছে এমন পাঁচটি চিঠির কপি রয়েছে। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যও বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রলীগের কয়েকজন সহসভাপতি, দুজন সাংগঠনিক সম্পাদক ও বেশ কয়েকজন সহসম্পাদক অভিযোগ করেন, কমিটির মেয়াদের শেষ দিকে এসে বঞ্চিতদের পদ দেয়া একটি রেওয়াজ। কিন্তু এবার যা হয়েছে সেটা ন্যক্কারজনক। কেননা ছাত্রলীগে অবদান আছে সব মিলিয়ে বৈধভাবে এমন সংখ্যা ৫০ জনের বেশি হবে না। কিন্তু এবার পদ দেয়া হয়েছে আট শতাধিক।
এ বিষয়ে লেখক ভট্টাচার্য নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটা ছাত্রলীগের দীর্ঘদিনের প্র্যাকটিস। বিগত কমিটিগুলোও আকারের বাইরে অনেককে পদ দিয়ে সংযোজন করত।
‘ছাত্রলীগে হাজারও নেতা-কর্মীর অবদান রয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় কমিটিতে সবাইকে পদ দেয়া সম্ভব হয় না। বাদ পড়াদের বিভিন্ন কমিটিতে পদায়নের চেষ্টা করা হয়। তারপরও যারা বাকি রয়েছেন তাদের রাজনৈতিক স্বীকৃতি দেয়ার জন্যই এসব পদ দেয়া হয়েছে।’
তবে কোনো ধরনের পদবাণিজ্যের কথা অস্বীকার করেন লেখক।
কতজনকে ৩১ জুলাই পদ দেয়া হয়েছে জানতে চাইলে লেখক সঠিক সংখ্যা বলতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘তালিকা সংরক্ষিত আছে। সেটা দেখে বলতে হবে।’
পদবাণিজ্যের এই অভিযোগ সম্পর্কে বক্তব্য জানতে ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেননি।
২০১৮ সালের মে মাসে সম্মেলন হলেও ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয় জুলাইয়ে। এতে সংগঠনটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান রেজওয়ানুল হক চৌধুরী ও গোলাম রাব্বানী। পরবর্তী সময়ে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে পদ হারান দুজন। তাদের স্থলে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয় আল নাহিয়ান খান জয় ও লেখক ভট্টাচার্যকে। ২০২০ সালের ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে জয় ও লেখককে ‘ভারমুক্ত’ করা হয়। তাদের দুজনকে মেয়াদের বাকি সময় দায়িত্ব চালিয়ে যেতে বলা হয়।
জয়-লেখক নেতৃত্বাধীন কমিটির মেয়াদ শেষ হয় ২০২১ সালেই। কিন্তু করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে তখন সম্মেলন হয়নি। ২০২১ সালের শেষের দিকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু হলেও সম্মেলনের উদ্যোগ নেননি জয়-লেখক। এ অবস্থায় ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায় থেকে সম্মেলনের দাবি ওঠে।
নেতা-কর্মীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ বছরের মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ছাত্রলীগকে দ্রুত সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার নির্দেশ দেন অভিভাবক সংগঠন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। কিন্তু জয় ও লেখক সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা নিয়ে টালবাহানা শুরু করেন।
দ্রুত সম্মেলনপ্রত্যাশীরা গত ১৪ মে সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার দাবি নিয়ে মধুর ক্যান্টিনে জয় এবং লেখকের সঙ্গে উচ্চবাচ্যও করেন। এরপরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঘটে ছাত্রদলের ‘তথাকথিত’ আগমন। মারামারিতে লিপ্ত হয় দুই সংগঠন, হাওয়া হয়ে যায় ছাত্রলীগের সম্মেলন নিয়ে আলোচনা।
তবে সম্মেলন অচিরেই অনুষ্ঠিত হবে বলে নিউজবাংলাকে জানান অভিভাবক সংগঠন আওয়ামী লীগ থেকে ছাত্রলীগের দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত চার নেতার অন্যতম বি এম মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, ‘করোনার কারণে গত দু’বছর ছাত্রলীগের সম্মেলন করা সম্ভব হয়নি। শোকের মাস আগস্টে আওয়ামী লীগ ও সংশ্লিষ্টরা কোনো সাংগঠনিক কর্মসূচি পালন করে না।’
আগস্ট মাস পার হলে ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের আরও কিছু সহযোগী সংগঠনের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান আওয়ামী লীগের অন্যতম এই সাংগঠনিক সম্পাদক।
ছাত্রলীগের দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত চার নেতার আরেকজন আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান এ বিষয়ে কিছু জানেন না বলে নিউজবাংলাকে জানান। তিনি বলেন, ‘গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কোনোভাবেই ৩০১ জনের বেশি সদস্য ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে থাকতে পারে না।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য