১ ফেব্রুয়ারির সেনা অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত ও গ্রেপ্তার হওয়ার পর ৯ মাসে প্রথমবার আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন মিয়ানমারের জনপ্রিয় নেত্রী অং সান সু চি। সাবেক এই রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা তার বিরুদ্ধে আনীত ‘জনগণকে উসকে দেয়ার’ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন।
অভ্যুত্থানের ফলে চরম দোলাচলে থাকা মিয়ানমারের সেনাবাহিনী সু চির বিরুদ্ধে কমপক্ষে ১১টি অভিযোগ গঠন করেছে। দোষী সাব্যস্ত হলে ৭৬ বছর বয়সী এই নেত্রীকে দীর্ঘ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করতে হতে পারে।
আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, অভ্যুত্থানের পর ফেব্রুয়ারি মাসেই সু চির দল সামরিক শাসকগোষ্ঠীর নিন্দা জানিয়ে দুটি বিবৃতি দেয়। বিবৃতিতে সেনাবাহিনীর সঙ্গে কাজ না করতে আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোর প্রতি আহ্বানও জানানো হয়েছিল। এ ঘটনায় সু চির বিরুদ্ধে উসকানির অভিযোগ এনেছে জান্তা সরকার।
আদালতে মঙ্গলবারের রুদ্ধদ্বার শুনানিতে এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন সু চি।
সু চির আইনজীবীদের একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বার্তা সংস্থা মিয়ানমার নাওকে বলেন, ‘নিজেকে নির্দোষ প্রমাণে আদালতে সু চি ভালোভাবেই তার বক্তব্য উপস্থাপন করতে পেরেছেন।’
শুনানির বিষয়ে সু চির আইনজীবীদের সংবাদমাধ্যমে কথা বলায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সেনাবাহিনী। তাই এ নিয়ে বিস্তারিত কিছু জানাতে পারেননি ওই আইনজীবী।
২০২০ সালের নভেম্বরের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় অর্জনের পর নতুন সরকার পার্লামেন্ট অধিবেশনে বসার কয়েক ঘণ্টা আগেই হয় অভ্যুত্থান। এর পরই সু চিসহ বেসামরিক সরকারের জ্যেষ্ঠ নেতাদের গ্রেপ্তার করে সেনাবাহিনী। যদিও তাদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করা হয় আরও অনেক পরে।
অভ্যুত্থানের জেরে মিয়ানমারে জাতীয় পর্যায়ে নজিরবিহীন বিক্ষোভ শুরু গণতন্ত্রকামী জনতা। অস্ত্রের শক্তি প্রয়োগ করে বিক্ষোভ দমন করে সেনাবাহিনী, হত্যা করে শিশুসহ ১ হাজার ১০০ মানুষকে।
স্থানীয় পর্যবেক্ষণ সংস্থা অ্যাসিসট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স (এএপিপি) জানিয়েছে, বিরোধী মত দমনে ৯ হাজারের বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করেছে সেনাবাহিনী। ধরপাকড় চলছে এখনও।
সু চির বিরুদ্ধে আনীত বাকি ১০টি অভিযোগের মধ্যে অন্যতম হলো অবৈধভাবে ওয়াকিটকি আমদানি, করোনাভাইরাস মহামারিকালীন বিধিনিষেধ ও রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা লঙ্ঘন।
সু চির বিরুদ্ধে এসব মামলার অগ্রগতির বিষয়ে কোনো খবর প্রকাশ করেনি মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা। এ অবস্থায় চলমান বিচারের বিষয়ে তথ্যের একমাত্র উৎস ছিলেন তার আইনজীবী খিন মং জাও।
কিন্তু চলতি মাসে খিন মং জাওকেও মুখ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয় সামরিক সরকার। কারণ তিনিই ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টের আদালতে দেয়া সাক্ষ্য সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছিলেন।
আদালতে উইন মিন্ট জানিয়েছেন যে, অভ্যুত্থানের কয়েক ঘণ্টা আগেই তাকে ক্ষমতা হস্তান্তরে চাপ দিয়েছিল সেনাবাহিনী। প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় তার ক্ষতি করারও হুমকি দিয়েছিলেন মিয়ানমারের শীর্ষ সেনা কর্মকর্তারা।
গ্রেপ্তারের পর থেকে অং সান সু চিকে অজ্ঞাত স্থানে আটকে রাখা হয়েছে। রাজধানী নেইপিদোর একটি বিশেষ আদালতে চলছে তার শুনানি।
দেশে নতুন করে করোনা সংক্রমণ বাড়তে না বাড়তে এরইমধ্যে পাইকারি পর্যায়ে মাস্কের দাম বাড়িয়ে দ্বিগুণ করেছেন এক দল ব্যবসায়ী। এতে বিপাকে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। অতিরিক্ত দামে মাস্ক কিনে পরতে হচ্ছে তাদের।
সরজমিনে রাজধানীর বাবুবাজার মাস্কের পাইকারি দোকানগুলো ঘুরে এমন দৃশ্যই দেখা গেছে। করোনা সংক্রমণে মাস্কের চাহিদা বাড়ায় ভিড় বাড়ছে খুচরা ব্যবসায়ীদের।
কম দামে মাস্ক পাওয়ার প্রত্যাশা থাকলেও রীতিমতো উল্টোচিত্রের মুখোমুখি হোন তারা—প্রতি বক্স সার্জিক্যাল মাস্ক রীতিমতো দ্বিগুণ দাম বিক্রি হচ্ছে।
শাহজাহানপুর রেলওয়ের কাছে মাস্ক ব্যবসা করেন মিঠু। তিনি জানান, এতদিন ৬০-৬৫ টাকা দামে প্রতি বক্স মাস্ক কিনলেও আজকে বাজারে একই মাস্ক বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। কোনো ধরনের দামাদামির ধার ধারছেন না পাইকারি ব্যবসায়ীরা।
মালিবাগ মোড়ের আরেক মাস্ক ব্যবসায়ী শাহ আলি বলেন, ‘আগে হাজারে সার্জিক্যাল মাস্কের দাম ছিল ৯০০ টাকা। আজকে বাজারে হাজারে মাস্কের দাম বেড়ে হয়েছে ১৬০০ টাকা।’
‘পাইকারি বাজারে মাস্কের দাম বাড়ায় খুচরা বাজারেও দাম বাড়িয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে। আগে ১০ টাকায় পাঁচটি সার্জিক্যাল মাস্ক বিক্রি করলেও এখন তিনটি করে বিক্রি করতে হচ্ছে,’ বলেন তিনি।
সার্জিক্যাল মাস্কের পাশাপাশি দাম বেড়েছে এন-৯৫ মাস্কেরও। এতদিন ১০ টাকা দরে এই মাস্ক বিক্রি হলেও হঠাৎ করে প্রতি পিস মাস্কের দাম হয়েছে ১৫-২০ টাকা।
হঠাৎ করে মাস্কের দাম বাড়ায় ক্রেতাদের মধ্যে চাপা আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। তারা বলছেন, এখনই মাস্কের দাম নাগালে আনতে না পারলে সামনে দাম বেড়ে দ্বিগুণ-তিনগুণ হবে।
এ প্রসঙ্গে মগবাজারের বাসিন্দা মোহতাসিম বলেন, ‘২০২০ সালে করোনাসময়ে প্রতিপিস সার্জিক্যাল মাস্ক ১০-১৫ টাকায় কিনতে হয়েছে। তখন ১০ টাকার এন-৯৫ মাস্কের দাম বেড়ে হয়েছিল ১৫০ টাকা। এবার মাস্কের সিন্ডিকেট ভাঙতে এখনই পদক্ষেপ নেয়া উচিত।’
মতিঝিলে কাপড়ের মাস্ক কিনতে এসেছেন সুবাহ হোসেন। বলেন, ‘এতদিন কাপড়ের মাস্কের দাম ২০-৩০ টাকা হলেও এখন দাম বেড়ে ৫০-৮০ টাকা হয়েছে। হঠাৎ করে মাস্কের দাম বাড়ায় ভয় লাগছে, পরিস্থিতি আবার ২০২০ এর মতোন হবে কিনা।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সংক্রমণ বাড়ায় ইতোমধ্যে মহাখালীর কোভিড বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রস্তুত করা হয়েছে। ১৩ জন করোনা রোগী হাসপাতালে ভর্তি আছেন। ইতোমধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে শনাক্তকরণ কিট সরবরাহ শুরু করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
সূত্র: ইউএনবি
কোরবানি ঈদ উপলক্ষে টানা ১০ দিন বন্ধ থাকার পর আজ রবিবার (১৫ জুন) সকাল থেকে পঞ্চগড়ের চতুর্দেশীয় বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে পুনরায় আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
তবে এ সময়েও ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে বৈধ পাসপোর্টধারী যাত্রীদের পারাপার ছিল স্বাভাবিক। ঈদের ছুটিতেও যাত্রী চলাচলে কোনো বিঘ্ন ঘটেনি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের আহ্বায়ক রেজাউল করিম শাহীন জানান, কোরবানির ঈদ উপলক্ষে গত ৫ জুন (বৃহস্পতিবার) থেকে ১৪ জুন (শনিবার) পর্যন্ত স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ ছিল।% আজ রবিবার থেকে আবারও স্বাভাবিক নিয়মে বাণিজ্য কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এতে বন্দরে ফের প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে।
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটানের সংশ্লিষ্ট কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্টদের আগেই এ বিষয়ে চিঠির মাধ্যমে অবহিত করা হয়েছিল।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর লিমিটেডের ব্যবস্থাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ব্যবসায়ীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঈদের ছুটিতে ১০ দিন স্থলবন্দরের কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছিল। আজ থেকে চার দেশের মধ্যে পুনরায় আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম চালু হয়েছে।
ইমিগ্রেশন পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফিরোজ কবীর জানান, বাণিজ্য কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও ঈদের ছুটিতে পাসপোর্টধারী যাত্রীদের যাতায়াত স্বাভাবিক ছিল। এতে কোনো ধরনের সমস্যা হয়নি।
কক্সবাজারের চকরিয়া-লামা-আলীকদম সড়কের চকরিয়া অংশে গাছ ফেলে পর্যটকের লাশ আনতে যাওয়া স্বজনবোঝাই অ্যাম্বুলেন্সে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ডাকাতদলের এক সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এ সময় অ্যাম্বুলেন্সের ভেতরে থাকা যাত্রীদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নগদ টাকা, কয়েকটি মোবাইল ছিনিয়ে নেয় ডাকাতেরা। তবে পুলিশ দাবি করছে- এটি নিছক ছিনতাইয়ের ঘটনা ছিল।
শনিবার আনুমানিক ভোর সাড়ে ৪টার দিকে চকরিয়া থেকে আলীকদম গিয়ে পর্যটকের লাশ আনতে যাওয়ার পথে আলোচিত করইল্যারশিয়া এলাকায় অ্যাম্বুলেন্সটি ডাকাতের কবলে পড়ে।
তবে ডাকাত দলে থাকা আরাফাত নামের এক ডাকাত ঘটনার সময় লুট করে নেওয়া একটি মোবাইল সরিয়ে জঙ্গলের ভেতর লুকিয়ে রাখে। ওই মোবাইল খুঁজতে সকালে ফের ঘটনাস্থলে যায় আরাফাত। এ সময় স্থানীয় জনগণের সন্দেহ হলে তাকে আটক করে গাছের সঙ্গে বেঁধে পিটুনি দিতে থাকে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
এ সময় অ্যাম্বুলেন্সে ডাকাতির ঘটনার সঙ্গে আরাফাত নিজেসহ বেশ কয়েকজন অংশ নেয় বলে স্বীকার করে এবং তাদের নাম-ঠিকানা প্রকাশ করে।
আরাফাতের দেওয়া তথ্যানুযায়ী অ্যাম্বুলেন্স ডাকাতিতে আরও যারা অংশ নেয় তারা হলেন- ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ছড়ারকূলের ছাদেক, উচিতার বিলের ফারুক, আরিফ, সাগর ছাড়াও বেশ কয়েকজন।
গ্রেফতার আরাফাত (২৮) চকরিয়া পৌরসভার সাত নাম্বার ওয়ার্ডের মোহাম্মদীয়াপাড়ার আবুল কালামের ছেলে।
চকরিয়া থানার ওসি মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, চকরিয়া-লামা-আলীকদম সড়কের চকরিয়া অংশে অ্যাম্বুলেন্সে ডাকাতি নয়, ছিনতাই হয়েছিল। সেই ঘটনায় স্থানীয় জনতার সহায়তায় আটককৃত একজনকে গ্রেফতার দেখিয়ে মামলা রুজু করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে দুটি মোবাইল। এ ঘটনায় আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণসহ ঘটনায় জড়িত অন্যদের ধরতে পুলিশ মাঠে কাজ করছে।
ঈদের ১০ দিনের লম্বা ছুটি শেষে রবিবার লেনদেনে ফিরেছে দেশের পুঁজিবাজার। তবে ছুটি শেষে প্রথম কার্যদিবসের লেনদেন শুরু হয়েছে দরপতনের মধ্য দিয়ে। ঢাকা ও চট্টগ্রাম উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে সূচক কমেছে, পাশাপাশি বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দামও কমে গেছে।
লেনদেনের শুরুতেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দেখা যায় নিম্নমুখী প্রবণতা। প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ২৬ পয়েন্ট। পাশাপাশি শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস এবং ব্লু-চিপ বা বাছাইকৃত কোম্পানির সূচক ডিএস৩০ উভয়ই কমেছে ৮ পয়েন্ট করে।
লেনদেন শুরুর পরই ঢাকার বাজারে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দর কমে যায়। প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে মোট ২১২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে, মাত্র ৪৬টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে এবং ৫০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এই সময়ের মধ্যে ডিএসইতে মোট লেনদেনের পরিমাণ ছাড়িয়েছে ৩০ কোটি টাকা।
ঢাকার মতো চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) ঈদের পর লেনদেন শুরু হয়েছে পতনের মধ্য দিয়ে। লেনদেনের শুরুতেই সিএসইর সার্বিক সূচক কমেছে ৪৪ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় চট্টগ্রামের বাজারে ১৭টি কোম্পানির শেয়ারের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৮টি কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে, ৭টি বেড়েছে এবং ২টি কোম্পানির শেয়ারদর অপরিবর্তিত রয়েছে।
এই সময় সিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে প্রায় ৯ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় ছয় যানবাহনের সংঘর্ষে এক পুলিশ সদস্যসহ দুইজন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন অন্তত ২৫ জন।
শনিবার (১৪ জুন) দিবাগত রাতে আড়াইটার দিকে সদর উপজেলার ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোপীনাথপুর এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন— ভাটিয়াপাড়া হাইওয়ে পুলিশের সহকারী ট্রাফিক সাব-ইন্সপেক্টর রফিকুজ্জামান এবং খুলনার সোনাডাঙ্গা থানার দেবেনবাবু রোডের বাসিন্দা আব্দুল হামিদ ব্যাপারীর ছেলে ও আরমান পরিবহনের হেলপার সেলিম হোসেন ব্যাপারী।
গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মো. সাজেদুর রহমান জানান, রাত আড়াইটার দিকে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা খুলনাগামী আরমান পরিবহনের একটি বাস ঘটনাস্থলে পৌঁছে একটি ট্রাককে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে বাসটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ সময় যাত্রীদের উদ্ধারকালে দ্রুতগতিতে আসা আরও তিনটি বাস ও একটি প্রাইভেটকারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
রাত আড়াইটা থেকে সাড়ে তিনটা পর্যন্ত চলা এই সিরিজ সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই এটিএসআই রফিকুজ্জামান ও হেলপার সেলিম হোসেন ব্যাপারী প্রাণ হারান।
তিনি আরও জানান, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করে। আহতদের গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পরে দুর্ঘটনা কবলিত যানবাহনগুলো সরিয়ে নিলে প্রায় দুই ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
ঈদুল আজহায় টানা ছুটির মাঝে বৃষ্টি হওয়ায় ঢাকার বাতাস মোটামুটি স্বাস্থ্যকর ছিল। তবে গত কয়েকদিন ধরে বৃষ্টিহীন শুষ্ক পরিবেশ আর ক্রমেই রাজধানীর পুরনো ভিড় বাড়তে থাকায় দূষণও বাড়ছে সমান তালে।
রবিবার (১৫ জুন) সকাল ৯টার দিকে দেখা যায়, বিশ্বের দূষিত শহরগুলোর তালিকায় ফের শীর্ষস্থানগুলোতে জায়গা করে নিয়েছে ঢাকা। এ সময়ে ১৪২ একিউআই স্কোর নিয়ে বিশ্বের দ্বিতীয় দূষিত বাতাসের শহর ছিল বাংলাদেশের রাজধানী, সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য যা অস্বাস্থ্যকর।
এ সময় ১৫৩ স্কোর নিয়ে শীর্ষ দূষিত শহর ছিল ইন্দোনেশিয়ার মেদান। এ ছাড়া ১২৬ ও ১২৪ স্কোর নিয়ে ঢাকার পরেই ছিল যথাক্রমে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই ও মিসরের কায়রো।
কণা দূষণের একিউআই মান যদি ০ থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকে, তবে তা ‘ভালো’ হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০-এর মধ্যে হলে সেটি ‘মাঝারি’।
একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এ ছাড়া ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।
কুমিল্লায় চার জনের শরীরে নতুন ভ্যারিয়েন্টের করোনা শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে এক নারী চিকিৎসকসহ তিনজন পুরুষ রয়েছেন।
শনিবার (১৪ জুন) কুমিল্লা সিটি স্ক্যান এমআরআই স্পেশালাইজড অ্যান্ড ডায়ালাইসিস সেন্টারে করোনা পরীক্ষা শেষে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া যায়। রাত সাড়ে ৯টার দিকে কুমিল্লা সিভিল সার্জন ডা. আলী নূর বশির এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
করোনায় আক্রান্তরা হলেন, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আবদুল মোমিন (৭০), কুমিল্লা সিটি করপোরেশন এলাকার ডা. সানজিদা (৩০), বুড়িচং উপজেলার মো. হেলাল আহমেদ (৩৮) এবং সদর উপজেলার মো. ইবনে যুবায়ের (৩৯)।
সিভিল সার্জন ডা. আলী নূর বশির বলেন, গত তিন দিনে কুমিল্লায় ১৩ জন রোগীর নমুনা সংগ্রহ করা কয়। পরীক্ষা শেষে তাদের মধ্যে চারজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং বাকিদের নগরীর একটি বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নমুনা পরীক্ষায় রিপোর্ট পজিটিভ আসে।
তিনি বলেন, চারজনই বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদের মধ্যে একজন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। দুজন এরই মধ্যে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় চলে গেছেন।
তবে আরেকজনের বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি সিভিল সার্জন।
করোনার প্রথম ধাক্কা কেটে যাওয়ার পর এতদিন কুমিল্লায় নতুন করে কেউ শনাক্ত হয়নি। ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছিল। কিন্তু এখন আবার নতুন করে করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ায় জনমনে উদ্বেগ বাড়ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি দ্বিতীয় ধাপের শুরু হতে পারে এবং এখনই সতর্ক না হলে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করতে পারে।
মন্তব্য