কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু-কাশ্মীরে বেসামরিক নাগরিক হত্যায় কাশ্মীরের সাধারণ মানুষ জড়িত নয় বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল কনফারেন্সের (জেকেএনসি) প্রেসিডেন্ট ও সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আব্দুল্লাহ।
কাশ্মীরিদের নামে কুৎসা রটাতে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে সাম্প্রতিক হামলাগুলো চালানো হয় বলেও জানান তিনি।
কাশ্মীরের বর্ষীয়ান নেতা ফারুক রোববার সাংবাদিকদের কাছে এসব মন্তব্য করেন বলে এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
ফারুক আব্দুল্লাহ বলেন, ‘কেন্দ্রশাসিত জম্মু-কাশ্মীরের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনষ্ট করার চেষ্টার লক্ষ্যে সম্প্রতি এই হামলাগুলো হয়।’
তিনি বলেন, ‘সাম্প্রতিক এসব হত্যা দুঃখজনক। চক্রান্ত করে এসব ঘটানো হয়েছে। কাশ্মীরের সাধারণ জনগণ কোনোভাবেই এসব হামলায় জড়িত নয়।’
শনিবার জম্মু-কাশ্মীরের শ্রীনগর ও পুলওয়ামা জেলায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে বিহারের দুই শ্রমিক নিহত হন।
কাশ্মীরে ২ অক্টোবর থেকে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত পৃথক ঘটনায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের চার সদস্যসহ ১১ বেসামরিক নাগরিক সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণ হারান।
ওই সব ঘটনায় কাশ্মীরজুড়ে জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ে উপদেষ্টা পর্যায়ের বৈঠক বিষয়ে ফারুক জানান, দুই দেশের বন্দুত্বপূর্ণ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় যেকোনো উদ্যোগকে স্বাগতম।
তিনি বলেন, ‘ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যাতে মৈত্রীর সম্পর্ক গড়ে ওঠে, আমাদের তা প্রার্থনা ও আশা করা উচিত। এটি হলে আমরা শান্তিতে বসবাস করতে পারব।’
জি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরে জম্মু ও কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলায় ৩০ জন বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যু হয়।
সাম্প্রতিক হামলার পর জম্মু-কাশ্মীরজুড়ে এখন পর্যন্ত ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ সন্দেহে প্রায় ৯০০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ভারতীয় পুলিশ।
পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদবিরোধী অভিযান জোরদার করেছে ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী। পুলিশের ভাষ্য, গত এক সপ্তাহে ১৪ জন ‘সন্ত্রাসীকে’ হত্যা করা হয়েছে।
পুলিশের মহাপরিদর্শক বিজয় কুমার বলেন, ‘বেসামরিক নাগরিকের প্রাণহানির পর ১৩ সন্ত্রাসী পুলিশের সঙ্গে ৯টি সংঘর্ষে মারা গেছে। আমরা ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ে শ্রীনগরে পাঁচ সন্ত্রাসীর মধ্যে তিনজনকে হত্যা করতে সক্ষম হই।’
আরও পড়ুন:গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার কড়িহাতা ইউনিয়নের সরসপুর গ্রামের ‘ছায়া নীড় সেবাকেন্দ্রে’ আশ্রিত ঠিকানাহীন এক বাক ও বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী যুবতীকে ধর্ষণে অভিযুক্ত মোশারফ হোসেনকে আসামি হিসেবে মামলায় অন্তর্ভুক্ত করে গ্রেপ্তারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ওই আশ্রয়কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক পারভীন আক্তার। ১৬ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার বিকেলে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে পারভীন আক্তার অভিযোগ করেন প্রায় আট মাস ধরে গাজীপুরের পুলিশ সুপার ও কাপাসিয়া থানার ওসির কাছে ধর্ণা দিয়েও এ বিষয়ে কোনো সুরাহা পাচ্ছেন না।
পারভীন আক্তার জানান, গত বছরের ডিসেম্বরের ১২ তারিখ সন্ধ্যার পর তিনি ওই প্রতিবন্ধী যুবতীকে রাতের ভাত রান্না হয়েছে কিনা তা দেখতে পার্শ্ববর্তী রান্নাঘরে পাঠানোর পর দীর্ঘ সময় পর্যন্ত সে ঘরে ফিরে আসেনি। এ সময় তিনি রান্নাঘরে গিয়ে তাকে খুঁজে পাননি। এ সময় আশপাশের বাসা বাড়ি, রাস্তা-ঘাট ও হাট-বাজারে খোজ নিয়েও তার কোনো সন্ধান পাননি। দুদিন পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে পার্শ্ববর্তী তরুল গ্রামের কাজলের স্ত্রী নামে একজন ফোনে তাকে ওই মেয়েটি তাদের বাড়িতে আছে বলে জানান। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি তার প্রতিবেশি দেবর ও তার আশ্রমে কর্মরত দিনমজুর মোশারফ হোসেনকে ওই প্রতিবন্ধী মেয়েটিকে আশ্রমে নিয়ে আসার জন্য পাঠান।
পরে আশ্রমে নিয়ে এসে নিখোঁজের বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে ওই মেয়েটি জানায়, তরুল গ্রামের শামসুল হকের ছেলে সিয়াম (১৯), নাজিমউদ্দিনের ছেলে খোকন মিয়া (২৫) ও কামাল হোসেনের ছেলে মো. জাহাঙ্গীর (৩০) ওই রাতে তাকে রান্নাঘরের পাশ থেকে জোর করে তুলে নিয়ে সিয়ামদের বাড়ির পাশে একটি ভাঙ্গা ঘরে নিয়ে যায় এবং দুই রাতে তারা তিনজন পালাক্রমে তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। এ বিষয়ে তিনি কাপাসিয়া থানায় ওই তিনজনের নামে একটি মামলা করলে পুলিশ সিয়ামকে গ্রেপ্তার করে এবং বাকি আসামিরা পলাতক রয়েছে।
কিন্তু পরে ওই প্রতিবন্ধী তার আশ্রমের এক সাথীর কাছে জানায়, মোশারফ হোসেন আশ্রমে নিয়ে আসার সময় এক জঙ্গলে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে এ কথা কাউকে বলতে নিষেধ করেছিল। এবং বিষয়টি প্রকাশ হলে তাকে মেরেও ফেলার হুমকি দিয়েছিল। এ বিষয়টি জানতে পেরে তিনি থানা পলিশকে মোশারফের নাম আসামিদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার অনুরোধ করলেও তার কথা আমলে নিচ্ছেন না। বাধ্য হয়ে গাজীপুরের পুলিশ সুপারের কাছে হাজির হয়ে বিষয়টি জানালে তিনি থানায় ফোন করে এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। তাই সাংবাদিকদের মাধ্যমে বিষয়টির প্রতি সংশ্লিষ্ট সবার সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি। অভিযুক্ত মোশারফ পার্শ্ববর্তী কড়িহাতা ইউনিয়নের পাকিয়াব গ্রামের বাসিন্দা।
অভিযুক্ত মোশারফ হোসেনের মোবাইল নম্বারে একাধিকবার কল দিয়েও বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
কাপাসিয়া থানার ওসি জয়নাল আবেদীন মণ্ডল জানান, এ মামলাটি তিনি কাপাসিয়া থানায় যোগদানের অনেক আগেই হয়েছে। একজন আসামীকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে এবং বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ মামলার বাদি যদি আর কোনো আসামি অর্ন্তভুক্ত করার আবেদন জানান, তবে আইনগতভাবে খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
নির্বাচিত সরকার না থাকলে দেশের অর্থনীতির প্রাণচাঞ্চল্য আসবে না। তাই অতি দ্রুত দেশে জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে নির্বাচিত সরকার গঠন করতে হবে।
মঙ্গলবার দুপুর ২টায় ভৈরব কেবি মডেল পাইলট হাই স্কুল প্রাঙ্গণে ভৈরবে চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির বার্ষিক সাধারণ সভায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলম প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে এসব কথা বলেন।
এ সময় ব্যবসায়ীদের নানা সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়ে তিনি আরো বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ভৈরব বাজার থেকে মেন্দিপুর পর্যন্ত মেঘনা নদীর ভাঙন রোধে বাঁধ নির্মাণ করা হবে। পাশাপাশি পূর্বাঞ্চলকে ইকোনমিক জোন ও পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তোলা হবে।
তিনি আরও বলেন, মাদক ও ছিনতাই প্রতিরোধে পুলিশের পাশাপাশি এলাকার প্রবীণ ও যুব সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে।
সাধারণ সভার আনুষ্ঠানিকতার উদ্বোধন করেন, ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক শবনম শারমিন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শরীফুল আলম।
এছাড়া ভৈরব চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আলহাজ জাহিদুল হক জাবেদ এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ভৈরব-কুলিয়ারচর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার নাজমুস সাকিব, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এ.এইচ.এম আজিমুল হক, ভৈরব থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার ফুয়াদ রুহানী, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস্ এসোসিয়েশন সহ-সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন, চেম্বার সদস্য ও ভৈরব উপজেলা বিএনপি সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফুল ইসলাম, পৌর বিএনপির সভাপতি হাজী মো. শাহিন ও সাধারণ সম্পাদক ভিপি মো. মুজিবুর রহমান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ছিল কোরআন তেলাওয়াত। স্বাগত বক্তব্য, বিগত সভার প্রস্তাব পাঠ ও অনুমোদন, ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের বাৎসরিক নিরীক্ষিত অডিট রিপোর্ট আলোচনা ও অনুমোদন, সম্মানিত চেম্বার সদস্যবৃন্দদের সাধারণ আলোচনা ও উন্নয়ন প্রস্তাব, চেম্বারের সকল সম্মানিত সদস্যদের সম্মানে সম্মাননা স্মারক প্রদান, সেরা করদাতা, নারী উদোক্তাদের সম্মাননা প্রদান ও মধ্যাহ্নভোজের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে ।
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে গত এক মাস ধরে অবস্থান করছে একদল বন্যহাতি। ১৭ সদস্যের এই হাতির দলে সম্প্রতি দুটি নতুন শাবকেরও জন্ম হয়েছে। তবে এদের তাণ্ডবে বাগানের শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, চা গাছপালা এবং বাগানের ভেতরের কাঁচা সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে বাগানের ২ নম্বর সেকশনে বসবাসকারী বহু শ্রমিক ইতিমধ্যেই বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলী নদীর উত্তর পাড়ে আশ্রয় নিয়েছেন।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী জানান, মঙ্গলবার রাত ৩টার দিকে হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এ সময় তিনি, তার স্ত্রী ও সন্তানরা কোনোমতে ঘর থেকে পালিয়ে ইঞ্জিনচালিত বোটে কর্ণফুলী নদী পার হয়ে প্রাণে রক্ষা পান।
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, ‘মঙ্গলবার গভীর রাতে হাতির গর্জন শুনতে পাই। হঠাৎ একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা করে ভেতরে ঢুকতে চাইছিল। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে কোনোমতে ঘরের পেছন দিয়ে বের হয়ে বোটে উঠে এপারে চলে আসি।’
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা জানান, প্রায় প্রতিদিনই হাতির দল বাগানে হানা দিচ্ছে। কখনো পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ করেই আবার বাগানে নেমে এসে গাছপালা ও বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এতে শ্রমিকরা চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, ‘হাতিরা শান্তিপ্রিয় প্রাণী। তারা নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। বাদ্য-বাজনা, বাঁশির সুর কিংবা উচ্চ শব্দ তারা সহ্য করতে পারে না। গত সোমবার শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশি বাজানো হলে হাতির দল চা বাগান ছেড়ে গভীর বাঁশবনে চলে যায়।’
এ বিষয়ে কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, ‘দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার কারণে তারা খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে প্রবেশ করছে। তাই আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল সংরক্ষণ করা।’
পাবনা সদর উপজেলার বালিয়াহালট সরকারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন ভারতীয় নাগরিক সুখ রঞ্জন চক্রবর্তী। এছাড়াও জালিয়াতি করে শ্বশুরের নামে লিজ নেয়া সরকারি সম্পত্তি হাতিয়ে নেয়ার অপচেষ্টা করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
ভারতের জাতীয় পরিচয়পত্র ও আধার কার্ডে দেখা যায়, সুখ রঞ্জন চক্রবর্তী ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪পরগণা জেলার দক্ষিণ ব্যারাকপুর শহরের দমদমের সূর্যসেন পল্লি, ৪৬৭ এলাকার নির্মল কুমারের ছেলে। সুখরঞ্জন চক্রবর্তীর ভারতীয় পরিচয়পত্রের তালিকাভুক্তির নাম্বার০০০০/০০৮০২/৭৬৩৯৭ এবং আধার কার্ডের নাম্বার ৪০৫০২২৩৪৩৩৫১। তিনি পাবনা পৌরসভাধীন রাধানগর এলাকার ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা পরিচয়ে বাংলাদেশে সরকারি চাকরি করছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সুখ রঞ্জন চক্রবর্তী বাংলাদেশের সরকারি চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের চাকরি করছেন। তিনি পার্শ্ববর্তী ভারতের নাগরিক, সেখানে তার জমিজমা ও ফ্লাট বাড়ি রয়েছে। তার স্ত্রী ও বড় ছেলে ভারতে থাকেন। ছোট ছেলে বাক প্রতিবন্ধী হওয়ায় প্রতিবন্ধী ভাতা গ্রহণের জন্য তাকে পাবনায় রেখে প্রতিবন্ধী ভাতা গ্রহণ করছেন। মাঝেমধ্যে ১৫দিন/১ মাস ছুটি নিয়ে তারা ভারতে যান।
সুখ রঞ্জনের শ্বশুর দীপক কুমার রায়ের নামে লিজ নেয়া সরকারি সম্পত্তি জালিয়াতি করে তিনি নিজের নামে করে নেয়ার চেষ্টা করছেন বলেও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে সুখ রঞ্জন চক্রবর্তীর শ্যালক সুমন কুমার রায় বলেন, ‘আমার বাবা শহরের মুরগি পট্টিতে সরকারি জমি লিজ নিয়ে সেখানে বসবাস করতেন। বর্তমানে আমি সেই বাড়িতে বসবাস করি। বাবা মারা যাওয়ার পর ওই জমি আমার মায়ের নামে লিজ দেয়া হয়। মা মারা যাওয়ার পর কাউকে কিছু না জানিয়ে শুধুমাত্র আমার বোনকে (সুখ রঞ্জন চক্রবর্তীর স্ত্রী) একমাত্র উত্তরসূরি বানিয়ে পাবনা জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করা হয়েছে। যিনি বর্তমানে ভারতীয় নাগরিক এবং ভারতেই বসবাস করেন।এমনকি পৌরসভাতেও আমার একমাত্র বোনকে উত্তরসূরি বানিয়ে আবেদন দিয়েছে। আমার বাড়িতে বসবাস করে এখন আমাকেই বাড়ি ছাড়া করতে চায়’।
অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে এবিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আশরাফুল কবীর জানান, আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে, কাগজপত্রও পেয়েছি। ইতোমধ্যেই আমি সংশ্লিষ্টদের তদন্ত করতে নির্দেশ দিয়েছি। আশা করি খুব শিগগিরই তদন্ত রিপোর্ট হাতে পাবো এবং তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারব।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক সুখ রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, এসব অভিযোগ মিথ্যা, এইসব কাগজপত্র বানানো যায়। আমার স্ত্রী-সন্তানরা ওর ভাইয়ের সঙ্গে ঝামেলা করে ভারতে চলে গেছে। তাদের সঙ্গে আমার কোনো যোগাযোগ নেই। আমি আনার চেষ্টা করেছি কিন্তু তারা আসেনি। আমার বিরুদ্ধে তদন্ত হলে আমি সব ডকুমেন্টস আছে।
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের ছাত্রাবট গ্রামে হাইব্রিড লাউ ‘ডায়না’ চাষে সাফল্য পেয়েছেন কৃষক মো. জাহাঙ্গীর মিয়া, যা এলাকায় সাড়া ফেলেছে। লালতীর সীড লিমিটেডের অধিক ফলনশীল ও আকর্ষণীয় এই লাউ জাতটি চাষ করে তিনি অল্প সময়ে লাভবান হয়েছেন। তার সাফল্য দেখে এলাকার বেকার যুবকসহ অনেক কৃষক ‘ডায়না’ চাষে আগ্রহী হয়েছেন।
জাহাঙ্গীর মিয়া ও কৃষক গনি মিয়া যৌথভাবে প্রথমবারের মতো ৫৬ শতক জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে হাইব্রিড লাউ ‘ডায়না’ চাষ করেন। বর্তমানে তাদের মাঠে সারি সারি গাছে ঝুলছে অগণিত লাউ। চারা লাগানোর মাত্র ৫০-৫৫ দিনের মধ্যেই গাছে ফল আসতে শুরু করে। প্রতিটি লাউয়ের গড় ওজন ২থেকে ৩কেজি। এ জাতের লাউ টানা তিন মাস ধরে ফল দিতে সক্ষম।
চাষে খরচ হয়েছে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। এরই মধ্যে মাঠ থেকে লাউ বিক্রি করা হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা দরে। প্রথম পর্যায়ে তারা প্রায় ৫২ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছেন। কৃষকরা আশা করছেন, এই মৌসুমে লাখ টাকার বেশি আয় করতে সক্ষম হবেন।
সফল কৃষক গনি মিয়া বলেন, ‘লাউ চাষে তেমন খরচ নেই। অন্য ফসলের তুলনায় লাউ চাষে খরচ কম লাগে। বর্তমানে বাজারে লাউয়ের চাহিদা অনেক। স্থানীয় বাজার ছাড়াও ক্রেতারা সরাসরি বাগান থেকে লাউ কিনে নিচ্ছেন। উৎপাদন শেষ হলে আমরা টমেটো ও শিম চাষ করবো। সঠিক যত্নের মাধ্যমে ভালো লাভবান হওয়া সম্ভব।’
স্থানীয় কৃষক বিকাশ সরকার জানান, ‘জাহাঙ্গীর মিয়া ও গনি মিয়া খুব অল্প সময়ের মধ্যেই চাষে সফল হয়েছেন। তাদের সাফল্য দেখে আমাদেরও উৎসাহ তৈরি হয়েছে। অনেকেই এখন এই জাতের লাউ চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।’
হাইব্রিড লাউ ‘ডায়না’ বীজের উৎস প্রতিষ্ঠান লালতীর সিড লিমিটেড। ডিভিশন ম্যানেজার তাপস চক্রবর্তী বলেন, ‘হাইব্রিড ‘ডায়না’ অধিক ফলনশীল, আকর্ষণীয় এবং বাংলাদেশের আবহাওয়া ও জলবায়ুর জন্য উপযোগী। এটি বোতল আকৃতির ও উজ্জ্বল সবুজ রঙের। উচ্চ তাপমাত্রা ও লবণাক্ততা সহনশীল, লম্বায় ৩০-৩৫ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে। কৃষকদের জন্য এটি অত্যন্ত লাভজনক এবং সারা বছর চাষ করা যায়। তিনি আরো বলেন, জাহাঙ্গীর ও গনি মিয়ার সফলতা দেখেই অন্যান্য কৃষকরাও অনাবাদি জমি কাজে লাগিয়ে লাউ চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। এতে শ্রীমঙ্গলসহ সারাদেশে সবজি চাষের প্রসার ঘটবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) উজ্জ্বল সূত্রধর দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘এবার শ্রীমঙ্গল উপজেলায় প্রায় ৫২ হেক্টর জমিতে লাউ চাষ করা হচ্ছে। এখানকার আবহাওয়া ও মাটি লাউ চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। আমরা নিয়মিত কৃষকদের জমি পরিদর্শন করছি এবং কীটনাশক ব্যবস্থাপনা, নতুন জাতের প্রচার ও সম্প্রসারণে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করছি। ধানচাষের তুলনায় খরচ কম হওয়ায় কৃষকরা লাউ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।’
দেশের উত্তরাঞ্চলগামী ট্রাক, বাস ও প্রাইভেটকার প্রতিদিনই ছুটে চলে নাটোরের বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়ক ধরে। দেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান এই সড়ক এখন পরিণত হয়েছে মরণফাঁদে। নাটোরের বনপাড়া থেকে সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল পর্যন্ত ৫১ কিলোমিটার মহাসড়কে প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। প্রাণহানির পাশাপাশি স্থায়ীভাবে পঙ্গুত্ব বরণ করছেন অনেকেই।
ব্যস্ততম এই মহাসড়কে রয়েছে একাধিক ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক। সরু সড়ক, যানবাহনের বেপরোয়া গতি ও ওভারটেকিংই দুর্ঘটনার মূল কারণ বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। দ্রুত মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীত করার দাবি তাদের।
২০১৪ সালের ২০ অক্টোবর মহাসড়কের রেজুর মোড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বাকে দুটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে প্রাণ হারান ৩৮ জন। এরপর থেকে প্রতি বছরই বেড়েছে মৃত্যুর মিছিল। সর্বশেষ ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই সড়কে ঘটেছে ১১৪টি ছোট-বড় দুর্ঘটনা। এতে নিহত হয়েছেন ৩৪ জন এবং আহত হয়েছেন ১২৪ জন।
বনপাড়া বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুল হালিম বলেন, প্রতিদিনই দুর্ঘটনার খবর শুনতে হয়। আমরা দোকানে বসেও আতঙ্কে থাকি, কখন কী ঘটে যায়।’
চলনবিল এলাকার কৃষক মতিয়ার রহমান বলেন, বেপরোয়া গতি আর ওভারটেকিংই মূল সমস্যা। এভাবে দুর্ঘটনা বাড়তে থাকলে মানুষের জীবন বাঁচানো দায় হয়ে পড়বে।
স্থানীয় কলেজছাত্রী সুমাইয়া আক্তার বলেন, প্রতিদিন কলেজে আসা-যাওয়ার সময় ভয় নিয়ে পথ পাড়ি দিতে হয়। রাস্তা যদি দ্রুত চার লেনে উন্নীত হয়, আমরা অনেকটা নিশ্চিন্তে চলাচল করতে পারব।
অন্যদিকে কয়েকজন চালক জানান, অতিরিক্ত গতি ও অদক্ষ চালকদের কারণে দুর্ঘটনা বেড়ে চলছে। অনেক সময় সরু অংশে একসঙ্গে একাধিক গাড়ি ওভারটেক করতে গিয়ে সংঘর্ষ হয়।
বনপাড়া হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, দুর্ঘটনা রোধে সচেতনতামূলক কর্মসূচি চালু রয়েছে এবং নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।নাটোর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুল হাসান সরকার জানান, মহাসড়কটি চার লেনে সম্প্রসারণের জন্য প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে দুর্ঘটনার সংখ্যা অনেকটাই কমে যাবে। এলাকাবাসীর দাবি এই পথে চলাচলকারীদের একমাত্র দাবি—ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক সম্প্রসারণ, ওভারস্পিড ও ওভারটেকিং নিয়ন্ত্রণ এবং মহাসড়কটি দ্রুত চার লেনে উন্নীত করা।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স-এর পক্ষ থেকে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ)-এর সদস্যদের দুই দিনব্যাপী অগ্নি নিরাপত্তা বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। ১৫ ও ১৬ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টা থেকে প্রতিদিন বিকেল ৪টা পর্যন্ত এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। ডিআরইউ-এর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয় এবং ডিআরইউর পক্ষ থেকে পার্টিসিপেন্টদের মনোনীত করা হয়।
খবর : ফায়ার সার্ভিস মিডিয়া সেল।
মন্তব্য