অপরাধীদের প্রকাশ্যে শাস্তি না দিতে স্থানীয় কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে তালেবান সরকার। আফগানিস্তানের সর্বোচ্চ আদালত নির্দেশ দিলেই কেবল জনসমক্ষে শাস্তি দেয়া যাবে।
তালেবানের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বৃহস্পতিবার টুইটারে এসব বার্তা দেন বলে ডনের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
মুজাহিদ বলেন, ‘দেশের মন্ত্রিপরিষদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কোনো ধরনের শাস্তি প্রকাশ্যে দেয়া যাবে না। অপরাধীদের শাস্তি কার্যক্রম প্রকাশ্যে প্রচারের কিছু নেই। তবে আদালত যদি অপরাধীদের প্রকাশ্যে শাস্তি দিতে বলে, সে ক্ষেত্রে সে অনুযায়ী কাজ করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশের সর্বোচ্চ আদালত নির্দেশ দিলে জনসমক্ষে মৃত্যুদণ্ড ও লাশ ঝুলিয়ে রাখা যাবে, অন্যথায় নয়।’
তালেবান মুখপাত্র বলেন, ‘অপরাধীকে দণ্ডিত করা হলে তার শাস্তি সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে হবে। তাহলে মানুষ তার অপরাধ সম্পর্কে জানতে পারবে।’
১৫ আগস্ট কাবুল পতনের পর আফগানিস্তানের ক্ষমতা তালেবানের হাতে যায়। সেপ্টেম্বরের শুরুতে নিজেদের শীর্ষস্থানীয় ৩৩ নেতাকে নিয়ে ইসলামিক আমিরাত গঠন করে তালেবান। ইসলামিক আমিরাতের মন্ত্রিসভার নাম দেয়া হয়েছে মন্ত্রিপরিষদ।
গত মাসে আফগানিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলীয় হেরাত শহরে কথিত চার অপহরণকারীকে হত্যা করে প্রকাশ্যে তাদের লাশ ঝুলিয়ে দেন তালেবান যোদ্ধারা।
ওই ঘটনায় বিশ্বব্যাপী সমালোচনার ঝড় ওঠে। তালেবান তাদের আগের শাসনামলে ফিরে যাচ্ছে দেখে অধিকার সংগঠনসহ অনেকে উদ্বেগ জানায়।
গত মাসে তালেবানের জ্যেষ্ঠ নেতা মোল্লা নুরুদ্দিন তুরাবি বার্তা সংস্থা এপিকে জানান, তালেবান সরকার ফের অপরাধীদের অঙ্গচ্ছেদ করতে পারে। প্রকাশ্যে এ শাস্তি কার্যকর নাও হতে পারে।
তুরাবির ওই বক্তব্যের পর অবশ্য আফগানিস্তানের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে প্রকাশ্যেই লোকজনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়।
তালেবানের নব্বই দশকের শাসনামলে তুরাবি আফগানিস্তানের বিচারমন্ত্রী ছিলেন।
এদিকে শুক্রবার সর্বোচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতি হিসেবে শেখ আব্দুল হাকিমকে নিয়োগ দিয়েছে তালেবান সরকার।
তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদার বিশ্বস্ত সহযোগী ও পশতুন ধর্মীয় নেতা হাকিম এর আগে কাতারে গোষ্ঠীটির সমঝোতা দলের নেতৃত্বে ছিলেন।
আরও পড়ুন:গতকাল শনিবার পবিত্র ঈদুল আজহার দিনে বন্ধ থাকার পর আজ রোববার থেকে ফের চালু হয়েছে মেট্রোরেল। তবে মেট্রোতে কোরবানির পশুর চামড়া, কাঁচা বা রান্না করা মাংস পরিবহন করা যাবে না।
রোববার সকাল ৮টা থেকে মেট্রোরেল চলাচল শুরু হয়।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) সূত্রে জানা যায়, আজ (রোববার) প্রতি ৩০ মিনিট পরপর ট্রেন চলছে। আগামীকাল সোমবার থেকে মেট্রোরেল সরকারি ছুটির দিনের সময়সূচি অনুযায়ী চলাচল করবে।
গত মঙ্গলবার ডিএমটিসিএলের পরিচালক (প্রশাসন) এ কে এম খায়রুল আলমের স্বাক্ষর করা এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, মেট্রোরেলে কোরবানির পশুর চামড়া, কাঁচা বা রান্না করা মাংস পরিবহন করা যাবে না। মেট্রো স্টেশনের প্রতিটি গেটে যাত্রীদের যথাযথভাবে তল্লাশি করা হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কোনো যাত্রীর কাছে কাঁচা বা রান্না করা মাংস পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক তার মেট্রো স্টেশনে প্রবেশ আটকে দেওয়া হবে। মেট্রোরেলের নিরাপত্তা কর্মীদের এসব নির্দেশনা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতেও বিজ্ঞপ্তিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঈদুল আজহার দ্বিতীয় দিনেও রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় কোরবানির দৃশ্য চোখে পড়েছে।
গতকাল শনিবার ঈদের প্রথম দিন ব্যস্ততা ও চাপ সামলাতে না পেরে কিংবা কসাই সংকটের কারণে যারা কোরবানি করতে পারেননি আজ রোববার ঈদের দ্বিতীয় দিনে তারা পশু কোরবানি করছেন। নগরীর পুরান ঢাকা, লালবাগ, টিকাটুলী, মুগদা এবং বাসাবো এলাকায় সকাল থেকেই কোরবানির পশু জবাই ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের ব্যস্ত দৃশ্য চোখে পড়েছে।
পুরান ঢাকার বংশাল এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, কয়েকটি বাসার সামনে পলিথিন টানিয়ে পশু কোরবানির প্রস্তুতি চলছে। আবার অনেকেই ইতোমধ্যে পশু কোরবানি সম্পন্ন করেছেন। তার কিছু দূরেই রাস্তার পাশে কয়েকজন তরুণ মাংস কাটছেন, পাশে দাঁড়িয়ে কসাই নির্দেশনা দিচ্ছেন। কিছু দূরে শিশু-কিশোররা দাঁড়িয়ে কোরবানির দৃশ্য দেখছে। লালবাগের বউবাজার, টিকাটুলীর জনবহুল গলি, মুগদা ও বাসাবোর অভ্যন্তরীণ বেশকিছু সড়কেও একই চিত্র দেখা যায়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, গতকাল ঈদের দিন কসাই সংকট এবং সময় ও প্রস্তুতির অভাবে কোরবানি করতে না পেরে অনেকেই আজ করছেন। কারও কারও গরু হাট থেকে বাড়ি পৌঁছেছে ঈদের দিন রাতে। আবার কেউ কেউ ইচ্ছে করেই ভিড় এড়িয়ে আজ কোরবানি করছেন, যাতে সময় নিয়ে কাজ করতে পারেন।
এদিকে আজও পরিচ্ছন্নতা রক্ষায় সিটি করপোরেশনের তৎপরতা দেখা গেছে। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন জানিয়েছে, কোরবানির দ্বিতীয় দিনেও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চলছে। ডিএনসিসির পরিচ্ছন্নতা বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, যেসব এলাকায় আজ কোরবানি হচ্ছে, সেখানে আমরা নির্ধারিত পয়েন্টে কর্মী পাঠিয়ে বর্জ্য অপসারণ করছি। ঈদের তিন দিনই আমরা মাঠে থাকব।
ধর্মীয় দিক থেকে ঈদুল আজহার দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ ১১ জিলহজও কোরবানির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ইসলামের বর্ণনায় এ দিনটি মর্যাদাপূর্ণ বলে উল্লেখ রয়েছে। নবী করিম (সা.) বলেছেন, আল্লাহর কাছে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ দিন হলো কোরবানির দিন, এরপরের দিনটি। তাই অনেকেই আজও কোরবানি করছেন। শরিয়ত অনুযায়ী ১০ থেকে ১২ জিলহজ, মোট তিন দিন কোরবানি করার বিধান রয়েছে। এই সময়ের মধ্যে যে কোনো দিন কোরবানি দেওয়া বৈধ, তবে প্রথম দিন কোরবানি করা সবচেয়ে উত্তম। সময়মতো কোরবানি না হলে তার পরিবর্তে সদকা করারও নির্দেশ রয়েছে।
ঈদুল আজহায় এবার টানা ১০দিন ছুটিতে রাজধানী ছেড়ে নিজ বাড়িতে ঈদ কাটাতে গেছেন অনেকে। অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় এখন ঢাকায় মানুষজন অনেক কম। তাছাড়া, যানবাহনও কম। তবে কম মানুষ কিংবা কম যানবাহনের ধোঁয়াও ঢাকার বাতাসের মানে তেমন পরিবর্তন আনতে পারেনি।
আজ রোববার ঈদের দ্বিতীয় দিনে অনেকটা ফাঁকা ঢাকার বাতাস সংবেদনশীলদের জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১১টা ২৮ মিনিটে ঢাকার বাতাসের একিউআই স্কোর ছিল ১৩০, এই স্কোর নিয়ে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় ৫ম স্থানে অবস্থান করছে ঢাকা। তাই ঢাকায় অবস্থানরত সংবেদনশীলরা রয়েছেন ঝুঁকিতে।
প্রথমত, ঢাকায় মানুষ কম এখন, যান চলাচলও নেই তেমন। আবার মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বৃষ্টিপাতও হয়েছে টানা কয়েকদিন। তা সত্ত্বেও বাতাসের মানের অবনতি নিয়ে চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এদিন ১৬৬ স্কোর নিয়ে তালিকার শীর্ষে রয়েছে চিলির সান্তিয়াগো, দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারতের দিল্লি ও যুক্তরাষ্ট্রের ডেট্রয়েট। শহর দুটির স্কোর ১৫৩ ও ১৪৫।
কণা দূষণের একিউআই মান যদি ০ থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকে, তবে তা ‘ভালো’ হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০-এর মধ্যে হলে ‘মাঝারি’, আর ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
একিউআই সূচক ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।
ভারতের বিভিন্ন স্থানে করোনা ভাইরাসের সংক্রমন দেখা দেয়ায় বেনাপোল চেকপোষ্টে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে ভারত ফেরত পাসপোর্ট যাচ্ছিদের। জেনেটিক সিকুয়েন্স পরীক্ষার মাধ্যমে জানা গেছে, এসব স্থানে ওমিক্রন ধরনের (variant) LF.7, XFG, JN.I and NB.1.8.1 উপধরনের (Sub variant), কারণে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিবেশী দেশসমুহে সংক্রমণ বাড়লে বাংলাদেশেও সেই সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে। এই সংক্রমণ এড়াতে দেশের সকল নৌ, স্থল ও আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর সমুহে স্ক্রিনিংসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মানার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। চলতি মাসের ৪ জুন রোগ নিয়ন্ত্রণ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মহাখালীর পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. ফরহাদ হোসেন স্বাক্ষরিত এক আদেশ জারি করা হয়েছে।
এমতাবস্থায় ভারতসহ বিভিন্ন সংক্রমিত দেশ থেকে আগত সন্দেহজনক যাত্রীদের দেশের স্থল, নৌ বন্দর এবং বিমান বন্দরের ইমিগ্রেশন ও আইএইচআর হেলথ ডেস্কের সহায়তার বিষয়ে স্বাস্থ্য বার্তা প্রদান এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিবিড়ভাবে পরিচালনা করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
আজ রোববার সকাল ১১টার দিকে বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনে সরেজমিনে দেখা যায়, মেডিকেল ডেস্কে দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারি কর্মকর্তাদের ভারত থেকে ফিরে আসা যাত্রীদের করোনার উপসর্গ আছে কিনা তা যাচাই-বাছাইসহ শরীরের তাপমাত্রা মাফতে দেখা গেছে।
ভারত ফেরত যাত্রী পরিতোষ মন্ডল জানান, দশদিন আগে চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়েছিলাম। আজ দেশে ফিরলাম। বাংলাদেশের মতো ভারতের কোথাও করোনা বা ওমিক্রনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেনি।
ভারত ফেরত যাত্রী সীমা রানি বলেন, একমাস চিকিৎসার পর আজ দেশে ফিরে আসলাম। ভারতের কোথাও নতুন করে করোনার প্রভাব ছড়িয়েছে শুনিনি। দেশে আসার পর দেখছি করোনার পরীক্ষা করছে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশনের উপ-সহকারি মেডিকেল অফিসার আব্দুল মজিদ বলেন, ভারতে জেনেটিক সিকুয়েন্স পরীক্ষার মাধ্যমে জানা গেছে ভারতের কিছু কিছু স্থানে ওমিক্রন ধরনের (variant) LF.7, XFG, JN.I and NB.1.8.1 উপধরন (Sub variant) সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশে করোনার এ ধরনটি যাতে ছড়াতে না পারে সেজন্য স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে সতর্কতার জন্য ভারত ফেরত প্রত্যেক যাত্রীকে আমরা স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছি। আমাদেরকে পরিচালক স্যার নির্দেশনা দিয়েছেন যদি কারও শরীরে করোনা বা ওমিক্রনের উপধারার উপসর্গ পাওয়া যায় তাহলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আইসোলেশন করার পরামর্শ দিয়েছেন।
ভারতের বিভিন্ন স্থানে করোনা ভাইরাসের সংক্রমন দেখা দেয়ায় বেনাপোল চেকপোষ্টে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে ভারত ফেরত পাসপোর্ট যাচ্ছিদের। জেনেটিক সিকুয়েন্স পরীক্ষার মাধ্যমে জানা গেছে, এসব স্থানে ওমিক্রন ধরনের (variant) LF.7, XFG, JN.I and NB.1.8.1 উপধরনের (Sub variant), কারণে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিবেশী দেশসমুহে সংক্রমণ বাড়লে বাংলাদেশেও সেই সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে। এই সংক্রমণ এড়াতে দেশের সকল নৌ, স্থল ও আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর সমুহে স্ক্রিনিংসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মানার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। চলতি মাসের ৪ জুন রোগ নিয়ন্ত্রণ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মহাখালীর পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. ফরহাদ হোসেন স্বাক্ষরিত এক আদেশ জারি করা হয়েছে।
এমতাবস্থায় ভারতসহ বিভিন্ন সংক্রমিত দেশ থেকে আগত সন্দেহজনক যাত্রীদের দেশের স্থল, নৌ বন্দর এবং বিমান বন্দরের ইমিগ্রেশন ও আইএইচআর হেলথ ডেস্কের সহায়তার বিষয়ে স্বাস্থ্য বার্তা প্রদান এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিবিড়ভাবে পরিচালনা করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
আজ রোববার সকাল ১১টার দিকে বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনে সরেজমিনে দেখা যায়, মেডিকেল ডেস্কে দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারি কর্মকর্তাদের ভারত থেকে ফিরে আসা যাত্রীদের করোনার উপসর্গ আছে কিনা তা যাচাই-বাছাইসহ শরীরের তাপমাত্রা মাফতে দেখা গেছে।
ভারত ফেরত যাত্রী পরিতোষ মন্ডল জানান, দশদিন আগে চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়েছিলাম। আজ দেশে ফিরলাম। বাংলাদেশের মতো ভারতের কোথাও করোনা বা ওমিক্রনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেনি।
ভারত ফেরত যাত্রী সীমা রানি বলেন, একমাস চিকিৎসার পর আজ দেশে ফিরে আসলাম। ভারতের কোথাও নতুন করে করোনার প্রভাব ছড়িয়েছে শুনিনি। দেশে আসার পর দেখছি করোনার পরীক্ষা করছে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশনের উপ-সহকারি মেডিকেল অফিসার আব্দুল মজিদ বলেন, ভারতে জেনেটিক সিকুয়েন্স পরীক্ষার মাধ্যমে জানা গেছে ভারতের কিছু কিছু স্থানে ওমিক্রন ধরনের (variant) LF.7, XFG, JN.I and NB.1.8.1 উপধরন (Sub variant) সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশে করোনার এ ধরনটি যাতে ছড়াতে না পারে সেজন্য স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে সতর্কতার জন্য ভারত ফেরত প্রত্যেক যাত্রীকে আমরা স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছি। আমাদেরকে পরিচালক স্যার নির্দেশনা দিয়েছেন যদি কারও শরীরে করোনা বা ওমিক্রনের উপধারার উপসর্গ পাওয়া যায় তাহলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আইসোলেশন করার পরামর্শ দিয়েছেন।
রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার বৈশাখী সিনেমা হলে ‘তাণ্ডব’ সিনেমা প্রদর্শনের সময় কারিগরি ত্রুটির কারণে প্রচারে বিঘ্ন ঘটায় উত্তেজিত দর্শকরা ভাঙচুর চালিয়েছেন।
গতকাল ঈদের দিন শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, ঈদ উপলক্ষে মুক্তিপ্রাপ্ত শাকিব খান অভিনীত ‘তাণ্ডব’ সিনেমাটি দেখতে শুরু থেকেই দর্শকদের ভিড় লক্ষ্য করা যায়। ২৫০ আসনবিশিষ্ট বৈশাখী সিনেমা হলে রাতের শো চলাকালীন সময়ে হঠাৎ কারিগরি সমস্যার কারণে সিনেমা বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় ৩০ মিনিট অপেক্ষার পরও সমস্যার সমাধান না হওয়ায় দর্শকরা ক্ষিপ্ত হয়ে চেয়ার, ফ্যান ও টিকিট কাউন্টারে ভাঙচুর চালান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দর্শক বলেন, ‘রাত সাড়ে ১০টার দিকে সিনেমা বন্ধ হয়ে যায়। আমরা ৩০ মিনিট অপেক্ষা করেও কোনো সুরাহা না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠি। পরে টিকিটের টাকা ফেরতের দাবি জানাই, তখন হল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়।’
বৈশাখী হলের ব্যবস্থাপক মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘রাতের শো চলাকালে সার্ভারজনিত সমস্যা দেখা দেয়, যা প্রায় ৩০ মিনিট স্থায়ী ছিল। তখন কিছু দর্শক উত্তেজিত হয়ে ভাঙচুর চালান। এতে প্রায় লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে।’
এদিকে এ বিষয়ে কালুখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ জামাল হোসেন বলেন, ‘এমন কোনো ঘটনার বিষয়ে আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। হল মালিকও যোগাযোগ করেননি।’
প্রসঙ্গত, ঈদুল আজহায় মুক্তিপ্রাপ্ত আলোচিত ছবি রায়হান রাফী পরিচালিত ‘তান্ডব’-এ অভিনয় করেছেন মেগাস্টার শাকিব খান, সাবিলা নূরসহ আরও অনেকে।
লালবাগ থেকে হাড় ভেঙে যাওয়া চাচাকে নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসতাপালে এসেছেন আকাশ নামে যুবক। তার চাচাকে জরুরী ভিত্তিতে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখার প্রয়োজন হলেও তা মেলেনি, এমনকি ডাক্তাদের দেখাও মেলেনি। অথচ হাসপাতালের নির্দেশনাতে বলা রয়েছে, সব রোগীদের জন্য ডাক্তার ও প্রয়োজনীয় সব সুযোগ-সুবিধা সবসময়ই বহাল থাকবে।
শনিবার (৭ জুন) সরেজমিনে ঢামেকে দেখা মেলে জাহিদ মিয়া নামে এক ব্যক্তির। তিনদিন আগে সিলেট থেকে এসেছেন তিনি। সিমেন্টের বস্তা বহন করতে গিয়ে অসাবধানতাবশত তা বুকে পড়ে ভেঙ্গে যায় কয়েকটি হাড়। চিকিৎসা নিতে এতে বেশ কয়েকদিন পার হয়ে গেলেও মিলছে না কোনো সেবা।
এসবের পাশাপাশি রয়েছে আরও এক গুরুতর সমস্যা। হাসপাতালে আগত অধিকাংশ রোগীর অভিযোগ, নার্সরা অসৌজন্যমূলক আচরন করেন, পাশাপাশি সেবা প্রদানেও উদাসীনতা দেখান তারা। নার্সদের এমন ব্যবহারে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রোগীরা।
সেবা নেই বেসরকারি হাসপাতালে
রাজধানীর কল্যাণপুরে ইবনে সিনা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে সেবা নিতে এসেছেন মিমি (৩৫)। তিনি বলেন, ‘আমার শরীর খারাপ লাগায় জরুরি বিভাগে এসেছি ডাক্তার দেখাতে। একজন বিশেষজ্ঞ দেখাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এখান থেকে জানানো হলো, ঈদের দিন কোনো বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নেই।’
জরুরি দায়িত্বে থাকা ডাক্তার শাখাওয়াত জানান, ডিপার্টমেন্ট অনুযায়ী ডাক্তারদের ডিউটি ভাগ করা আছে। তবে ঈদের দিন কোনো বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নেই। রবিবার থেকে দুজন করে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার থাকবেন বলে জানান তিনি।
ইবনে সিনার কাস্টমার কেয়ার থেকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কাস্টমার কেয়ার অফিসার বলেন, ‘আমাদের সম্পূর্ণ সেবা চালু হবে ১৪ তারিখ। সব ডাক্তার ১৪ জুন থেকে জয়েন করবেন।’
ইনডোরে যারা ভর্তি রয়েছেন তাদের জরুরি প্রয়োজনে কে দেখবেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যে রোগী যে চিকিৎসকের আওতায় ভর্তি আছেন, তার সঙ্গে যোগাযোগ করে দায়িত্বরত চিকিৎসকরা সেবা দেবেন। ঈদের দিন কোনো ডাক্তার আসেননি।’
প্রসূতি বিভাগ খোলা রাখার ব্যাপারে বলেন, ‘যদি সেরকম রোগী আসে, জরুরি ব্যবস্থা নেয়ার মতো চিকিৎসক আছেন।’
তবে শনিবার কোনো ডাক্তার এই বিভাগেও ছিল না বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
একই চিত্র দেখা যায় আনোয়ার খান মর্ডান মেডিকেল হাসপাতালেও। খবর নিয়ে জানা যায়, সেখানেও ঈদের দিন ও ঈদের পরদিন অর্থাৎ ৮ জুন কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক থাকবেন না। সেক্ষেত্রে সেবা নিতে আসা অনেককেই ফিরে যেতে হচ্ছে বলে জানান সেখানকার একজন দায়িত্বরত কর্মকর্তা।
এসব পরিস্থিতি বিবেচনায়, সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের জন্য যে ১৬টি নির্দেশনা দেওয়া আছে, সেটার যথাযথ প্রয়োগ হচ্ছে কি না, সেক্ষেত্রে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক মইনুল আহসান ইউএনবিকে বলেন, ‘প্রাইভেট হাসপাতাল তো তাদের মতো সিদ্ধান্ত নেয়। সরকারি হাসপাতালে কোনো রোগীর যদি অভিযোগ থাকে, ওয়ার্ড নাম্বার ও রোগীর নাম বলে শুধু মৌখিক অভিযোগ করলেই আমরা ব্যবস্থা নেবো।’
নির্দেশনা অনুযায়ী বলা হয়েছিল, হাসপাতাল পরিচালকদের যেকোনো সময় প্রয়োজন হলে হাসপাতালে অবস্থান করতে হবে। তবে চিকিৎসক সংকট বিষয়ে কথা বলার জন্য ঢামেকের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার আসাদুজ্জামান ও উপপরিচালক আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাদেরকে মুঠোফোনে পাওয়া যায়নি।
এর আগে, এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সরকারি হাসপাতালগুলোর জন্য ১৬টি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা এবং বেসরকারি হাসপাতালগুলোর জন্য দুটি মূল নির্দেশনা দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, যাতে সারা দেশে জরুরি চিকিৎসাসেবা বিঘ্নিত না হয়। যদিও সেসব নির্দেশনার বাস্তবায়ন তেমন চোখে পড়েনি।
মন্তব্য