যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর এবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে যাচ্ছে তালেবানের প্রতিনিধিদল।
কাতারের রাজধানী দোহায় মঙ্গলবার ওই আলোচনা হবে বলে আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি জানিয়েছেন।
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমবার কাতারে সেন্টার ফর কনফ্লিক্ট অ্যান্ড হিউম্যানিটারিয়ান স্টাডিস আয়োজিত অনুষ্ঠানে মুত্তাকি জানান, জার্মানির সরকারি কর্মকর্তা ও যুক্তরাজ্যের এমপিদের সঙ্গে এরই মধ্যে বৈঠক করেছে তালেবান সরকার।
ওই অনুষ্ঠানে আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আগামীকাল (মঙ্গলবার) আমরা ইইউর প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলব। অন্যান্য দেশের সঙ্গে আমাদের সাম্প্রতিক বৈঠক ইতিবাচক হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘পুরো বিশ্বের সঙ্গে আমরা সুসম্পর্ক চাই। আমরা সামঞ্জস্যপূর্ণ আন্তর্জাতিক সম্পর্কে বিশ্বাসী। এ ধরনের সম্পর্ক আফগানিস্তানের অস্থিতিশীলতা দূর করবে বলে তালেবান সরকার মনে করে।’
১৫ আগস্ট কাবুল পতনের মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে তালেবান। দেশটিতে চলমান অর্থনৈতিক সংকট ও চরম মানবিক বিপর্যয় মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে তালেবানের অন্তর্বর্তী সরকার।
সরকার গঠনের এক মাসের বেশি সময় পার হলেও এখন পর্যন্ত কোনো দেশ আফগানিস্তানের নতুন সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি।
দোহায় শনি ও রোববার দুই দিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেন তালেবান সরকারের কর্মকর্তারা।
বৈঠকের আগে যুক্তরাষ্ট্রের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা বলেছিলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় স্বার্থ সম্পর্কিত আলোচনার ধারাবাহিকতায় দোহায় বৈঠকটি হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘তালেবানকে স্বীকৃতি বা বৈধতা দেয়ার জন্য এ বৈঠক হচ্ছে না। আমরা বারবার বলে এসেছি, তালেবানের কর্মকাণ্ডের ওপরই তাদের বৈধতা বা স্বীকৃতি দেয়া নির্ভর করছে।’
ক্ষমতা কুক্ষিগত করার পর তালেবান সরকারের পথচলা খুব একটা সহজ হচ্ছে না। একদিকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি না পাওয়ার চাপ আর অন্যদিকে নিষিদ্ধঘোষিত সন্ত্রাসী সংগঠন আইএসের আফগান শাখা আইএস-খোরাসানের আফগানিস্তানের বিভিন্ন প্রান্তে একের পর এক হামলা দুশ্চিন্তায় ফেলেছে কট্টর ইসলামপন্থি গোষ্ঠীটিকে।
শুক্রবার জুমার নামাজের পর আফগানিস্তানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় কুন্দুজ প্রদেশে শিয়া মসজিদে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ৬০ জনের বেশি মানুষ প্রাণ হারায়। গত দুই মাসে চালানো অন্যান্য হামলার মতো ওই হামলারও দায় নেয় আইএস-খোরাসান।
আরও পড়ুন:আজ সকাল থেকেই কুরবানির পশুর সংকট দেখা দিয়েছে গাবতলী হাটে। গরু না পেয়ে ক্রেতারা ভিড় জমাচ্ছেন নতুন বাজার ১০০ ফিট গরুর হাটে।
শুক্রবার সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, রাজধানীর সর্ববৃহৎ গরুর হাট গাবতলীতে সকালে গরু কিনতে এসে অনেকেই বিপাকে পড়েছেন। হাটজুড়ে গরু আছে হাতে গোনা কয়েকটি, দাম তার আকাশচুম্বী।
ঈদের একদিন আগে গাবতলীর হাটে গরু কিনতে এসেছেন সেলিম হোসেন। তিনি বলেসন, ‘কখনো ঈদের আগের দিন সকালে হাটে এমন গরু সংকট দেখিনি। যে কয়টা গরু আছে তা আকারে ছোট এবং দাম চাচ্ছে অনেক।’
আরেক ক্রেতা ইকবাল হাসান বলেন, ‘হাটে গরু কিনতে এসে গরু না পেয়ে বাধ্য হয়ে ছাগল কিনে বাড়ি ফিরছি। শেষ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করা ঠিক হয়নি।’
গাবতলী হাটে গরু বিক্রি করে ট্রাকে করে ঘরে ফিরছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের একজন মনসুর বলেন, ‘১১টি গরু নিয়ে এসেছিলাম। কালকে ভোররাতের মধ্যে সবকটি বিক্রি শেষ। এখন বাড়ি ফিরছি।’
আরেক ব্যবসায়ী মোসাদ্দেক বলেন, ‘গরু সব বিক্রি হয়েছে কিন্তু দাম তেমন পাইনি। প্রতিটি গরুই অনেক কমে বিক্রি করতে হয়েছে। আগেরবার শেষ রাতে দাম পড়ে যাওয়ার পর এবার আর ব্যাপারীরা গরু ধরে রাখেনি।’
এদিকে গাবতলীর হাটে গরু না পেয়ে নতুন বাজার ১০০ ফিটে আসছেন ক্রেতারা। এমনই একজন ক্রেতা মাহতাব শেখ বলেন, ‘গাবতলীতে গরু নেই বললেই চলে। দিয়াবাড়িতেও পছন্দের গরু পেলাম না। শেষমেশ ১০০ ফিটে এসেছি। কিন্তু ব্যাপারীরা দাম চাচ্ছেন বেশি।’
নতুন বাজারের এ হাট ঘুরে দেখা যায়, দুপুরের মধ্যেই হাটের বেশিরভাগ গরু বিক্রি হয়ে গেছে। অল্প যে সংখ্যক গরু আছে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তায় ব্যবসায়ীরা। লোকসানে ছাড়বেন নাকি লাভের আশায় রাত অবধি অপেক্ষা করবেন—এমন দোলাচলে ভুগছেন তারা।
দিনাজপুর থেকে হাটে গরু নিয়ে এসেছেন মাসুম মিয়া। বলেন, ‘বাকি হাটে গরু কম শুনে দাম একটু বেশি চাচ্ছি। কিন্তু আগেরবারও এমন অনেক হাটে গরু ছিল না সকালের দিকে। পরে বিকালের মধ্যে গরু চলে আসায় আবার দাম পড়ে গেছে।’
আরেক ব্যবসায়ী রিমন মুন্সি বলেন, ‘সবাই বলে গরুর দাম বেশি চাচ্ছি। কিন্তু কেউ এটা বুঝতে চায় না, যে এবার গরুর খাবারের দাম আগের তুলনায় দ্বিগুণ। আমরা ব্যাপারীরা অযথা কোনো দাম চাচ্ছি না। হিসাব করলে দেখা যাবে, গরু প্রতি ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা লোকসান হচ্ছে।’
নতুন বাজারের এ হাটে শেষ সময়ে এসে দাম বেড়েছে ছাগলের। ক্রেতারা অভিযোগ জানিয়ে বলেন, ১৫ হাজার টাকার ছাগল ২৫ হাজার টাকা চাচ্ছে ব্যবসায়ীরা। প্রতি ছাগলে দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা।
এদিকে, বৈরি আবহাওয়ায় পশু বিক্রি নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে রাজধানীর হাটগুলোতে। বৃষ্টির কারণে ন্যূনতম লাভ রেখে গরু বিক্রি করে দিতে চাচ্ছেন বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে আজ দুপুরে বাসস’কে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রেস উইং জানিয়েছে, পবিত্র ঈদ উল আযহা উপলক্ষ্যে আজ শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ও বিটিভি ওয়ার্ল্ডে এই ভাষণ সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।
চট্টগ্রামের কালুরঘাট রেলসেতুতে ট্রেনের ধাক্কায় সংঘটিত দুর্ঘটনায় শিশুসহ ৩ জন নিহতের ঘটনায় তদন্তে চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। এ ছাড়া, এ ঘটনায় ৪ জন রেল কর্মীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
শুক্রবার (৬ জুন) এ তথ্য নিশ্চিত করেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা রেজাউল করিম সিদ্দিকী।
বরখাস্ত হওয়া চার রেলকর্মী হলেন— পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনের দায়িত্ব পালনকারী গার্ড সোহেল রানা (হেড কোয়ার্টার, চট্টগ্রাম), লোকো মাস্টার গোলাম রসুল, সহকারী লোকো মাস্টার আমিন উল্লাহ, এবং অস্থায়ী গেট কিপার (টিএলআর) মাহবুব।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৫ জুন) রাতে ওই দুর্ঘটনার তদন্তে চার সদস্যের তদন্ত কমিটিকে আগামী তিন দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রদান করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের চট্টগ্রাম বিভাগের পরিবহন কর্মকর্তার নেতৃত্বে গঠিত এই তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন—চট্টগ্রাম বিভাগের ডিভিশনাল মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার (লোকো), ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার-১ ও পাহাড়তলী, চট্টগ্রামের ডিভিশনাল মেডিকেল অফিসার।
এর আগে, বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতুতে ঢাকা অভিমুখী একটি ট্রেন সিএনজি চালিত অটোরিকশাকে ধাক্কা দিলে একটি শিশুসহ তিনজন নিহত ও পাঁচজন আহত হন। আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনটি সেতুতে প্রবেশ করামাত্র অটোরিকশাটিকে ধাক্কা দেয়। এ ছাড়াও মোটরসাইকেলস আরও কয়েকটি ছিল যানবাহনে ধাক্কা দেয় ট্রেনটি।
আসন্ন ঈদুল আজহায় ঢাকায় নেওয়া নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে শতভাগ নিশ্চিত বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম। তিনি জানান, নিরাপত্তা নিশ্চিতে রাজধানীজুড়ে ৫০০টি টহল দল মোতায়েন করা হয়েছে।
আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে নিরাপত্তাব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, ঈদের নামাজ স্বাভাবিক নিয়মে অনুষ্ঠিত হবে এবং সারাদেশে নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে।
তিনি জানান, জাতীয় ঈদগাহে যারা নামাজ আদায় করবেন, তাদের নিজস্ব জায়নামাজ আনতে হবে না, কারণ সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
প্রস্তুতির কোনো ঘাটতি নেই উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ছুটির মধ্যেও সারাদেশে দায়িত্বে রয়েছে।’
ঈদের ছুটিতে প্রায় ফাঁকা রাজধানীর নিরাপত্তা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘ঢাকা শহরের অলিগলিতে ৫০০টি টহল দল মোতায়েন করা হয়েছে। মাঝেমধ্যে ছোটখাটো ঘটনা ঘটে—আমরা এমন ঘটনাও রোধে কাজ করছি।’
থানায় মামলা করতে না পারার অভিযোগ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন,‘যদি কোনো কর্মকর্তা মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানান, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মহাখালী বাস টার্মিনালে যাত্রী হয়রানির সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে এক সাংবাদিকের উপর হামলার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমার নজরে এসেছে, আমরা এটির তদন্ত করছি।’
অপরাধী গ্রেপ্তার করার কয়েকদিন পরে বের হয়ে আরও বেশি অপরাধে জড়িয়ে যায়- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেনন, ‘এটা তো আর পুলিশের হাতে না। এটা আদালতের বিষয়। কিছুদিন আগে আপনারা দেখেছেন, দুজন শীর্ষ সন্ত্রাসী ছাড়া পাওয়ার পর আবারও অপরাধে জড়িয়ে যাওয়ায় তাদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে। এমন যদি কেউ অবৈধকাজে জড়িয়ে যায় তাহলে তাকেও ছাড়া হবে না, পুঁটিমাছ কিংবা রুই কাতলা হোক কাউকে ছাড় নেই। আইন সবার জন্য সমান।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এবার নিরাপত্তা নিয়ে আমি ১০০ ভাগ কনফিডেন্ট আছি।
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার উত্তর ঝাটিবুনিয়া গ্রামের কৃষক সোহাগ মৃধার উপহারের কোরবানির গরু ‘কালো মানিক’ গ্রহণ করেননি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তবে তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সোহাগকে এলাকায় ফিরে স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে কোরবানি ঈদ উদযাপনের অনুরোধ জানিয়েছেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ রাতে বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন।
এর আগে, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে ‘কালো মানিক’ নামের আদরের ষাঁড়টি নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন সোহাগ মৃধা। রাজধানীতে পৌঁছানোর পর বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে গরুটি উপহার দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও বেগম খালেদা জিয়া তা গ্রহণ না করে সোহাগের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। পরে তার পরিবারের জন্য ঈদের বিশেষ উপহারও পাঠান।
ডা. জাহিদ বলেন, বেগম খালেদা জিয়া এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কোরবানির পশু উপহার দেওয়ার জন্য সোহাগ মৃধা ও তাঁর পরিবারের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। দলীয় চেয়ারপারসনের পক্ষ থেকে তাকে ঈদের উপহারও পাঠানো হয়েছে।
সোহাগ মৃধার পরিবারের সদস্যরা জানান, কালো মানিক নামের ষাঁড়টির ওজন প্রায় ৩৫ মণ, দৈর্ঘ্য ১০ ফুট এবং উচ্চতা ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি। কুচকুচে কালো রঙের হওয়ায় স্থানীয়রা আদর করে নাম রেখেছেন ‘কালো মানিক’। ষাঁড়টির জন্য ১০ লাখ টাকা দাম উঠলেও সোহাগ তা বিক্রি করেননি।
সোহাগ মৃধা জানান, তিনি গণতন্ত্রের মাকে (বেগম খালেদা জিয়া) এই গরুটি উপহার দিতে চেয়েছিলেন। ২০২৩ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শেখ হাসিনাকে এক কৃষকের গরু উপহার দেন। ওই ঘটনা দেখে তিনি অনুপ্রেরণা পেয়েছেন। তখনই তাঁর মনে ইচ্ছা জাগে, সুযোগ পেলে প্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে তিনিও একটি গরু উপহার দেবেন।
২০১৮ সালের শেষ দিকে স্থানীয় চৈতা বাজার থেকে মাত্র ১ লাখ ৩৭ হাজার টাকায় একটি ফ্রিজিয়ান গাভি কেনেন সোহাগ। সপ্তাহ না যেতেই গাভিটি একটি বাছুর প্রসব করে। পরে গাভিটি বিক্রি করে দেওয়া হয়। কিন্তু বাছুরটি পরিবারের সবাই মিলে ছয় বছর ধরে দেশীয় খাবার আর যত্ন দিয়ে লালন-পালন করেন। এই বাছুরই আজকের বিশালদেহী ‘কালো মানিক’।
বিএনপির আমড়াগাছিয়া ইউনিয়ন শাখার সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, সোহাগ মৃধা একজন নিবেদিতপ্রাণ বিএনপি কর্মী। পরিবারের সহায়তায় ফ্রিজিয়ান জাতের গরুটি তিনি দীর্ঘদিন ধরে লালন-পালন করেছেন।
সোহাগের মা হাজেরা বেগম বলেন, ‘ওর মন চাইছে, তাই ও উপহার দিতে চায়। আমরা খুশি। ওর বাবা নেই। সামান্য জমি চাষ করেই সংসার চালায়। ছোটবেলা থেকেই ও বিএনপিকে ভালোবাসে।’
সোহাগের স্ত্রী সুলতানা আক্তার পলি বলেন, ‘কালো মানিক আমার ছোট ছেলের বয়সী। দুজনকেই সমানভাবে স্নেহ-ভালোবাসায় লালন-পালন করেছি। ছেলের বাবার ইচ্ছা ছিল প্রিয় নেত্রীকে এটি উপহার দেবে, তাতে আমরাও খুশি।’
পদ্মা সেতু দিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৫২ হাজার ৪৮৭টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ৫ কোটি ৪৩ লাখ ২৮ হাজার টাকা। এটিই এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ পরিমাণ টোল আদায়ের রেকর্ড।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) গত বছরের একদিনে সর্বোচ্চ প্রায় পৌনে পাঁচ লাখ টাকার টোল আদায়ের রেকর্ড ভেঙে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ টাকা টোল আদায় করা হয়।
ঈদুল আজহার ১০ দিনের লম্বা ছুটির প্রথম দিনেই এই রেকর্ড হয়েছে। তবে ছুটি ছাড়াই আগের দিন বুধবার (৪ জুন) পদ্মা সেতুতে একদিনে ৪ কোটি ৯ লাখ টাকারও বেশি টোল আদায় করা হয়েছে। এদিন ৩৭ হাজার ৪৬৫ গাড়ি পারাপার হয়েছে সেতুটি দিয়ে।
বৃহস্পতিবার মাওয়া প্রান্ত দিয়ে প্রবেশ করেছে ৩৫ হাজার ৯৮৫টি যান। এতে মাওয়ায় টোল প্লাজায় টোল আদায় হয় ৩ কোটি ১৬ লাখ ৪৩ হাজার ৮০০ টাকা।
আর জাজিরা প্রান্ত দিয়ে প্রবেশ করে ১৬ হাজার ৫০২টি যান। এসব যানবাহন থেকে ২ কোটি ২৬ লাখ ৮৪ হাজার ২০০ টাকা টোল আদায় হয়েছে বলে জানান আলতাফ।
এর আগে, ২০২২ সালের ২৬ জুন, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী দিনে সর্বোচ্চ ৫১ হাজার ৩১৬টি যানবাহন পারাপারের রেকর্ড ছিল। আর ২০২৪ সালের ৯ এপ্রিল সর্বোচ্চ টোল আদায়ের রেকর্ড ছিল ৪ কোটি ৮৯ লাখ ৯৪ হাজার ৭০০ টাকা।
পদ্মা সেতুর দায়িত্বে থাকা যুগ্ম সচিব ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের পরিচালক (প্রশাসন) আলতাফ হোসেন সেখ বলেন, ‘ঈদে ঘরমুখো মানুষ নির্বিঘ্নে বাড়ি ফেরার ক্ষেত্রে পদ্মা সেতু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।’
আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতু তিন বছর পূর্তি। এ পর্যন্ত টোল আদায় হয়েছে ২ হাজার ৪৫২ কোটি ৮২ লাখ টাকার বেশি । এই সময়ে ১ কোটি ৮৯ লাখ ৬৪ হাজার ২১৮ যান পারাপার হয়েছে।
কুষ্টিয়া দৌলতপুর সীমান্তে ঈদ-উল আযহাকে কেন্দ্র করে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বিজিবি। সীমান্তের সার্বিক নিরাপত্তায় পুশ-ইন, গবাদি পশু চোরাচালান ও পশুর চামড়া পাচার রোধে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সর্বোচ্চ সতর্ক ও কঠোর অবস্থানে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) দুপুর সাড়ে ১২টায় উপজেলার প্রাগপুর বিজিবি ক্যাম্পে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন, ৪৭ বিজিবি ব্যাটায়িলনের অধিনায়ক লে. কর্ণেল মাহবুব মুর্শেদ রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি উল্লেখ করেন, দেশীয় খামারিদের স্বার্থ সংরক্ষণ ও বাজার স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে বিজিবি ইতোমধ্যে সীমান্ত এলাকায় গরু চোরাচালান রোধে অতিরিক্ত টহল, অস্থায়ী চেকপোস্ট, গোয়েন্দা নজরদারি ও বিশেষ অপারেশন ব্যবস্থা চালু করেছে।
একইভাবে, ঈদের পর কোরবানির চামড়া পাচার রোধে সীমান্তে বিশেষ নজরদারি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। প্রয়োজনীয় স্থানে ভ্রাম্যমাণ চেকপোস্ট ও মোবাইল টিম মোতায়েন করে চামড়ার পাচার রোধে স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে সমন্বয় করে যৌথ অভিযান পরিচালনার প্রস্তুতি নিয়েছে।
এছাড়াও সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশ বা পুশ-ইন প্রতিরোধেও বিজিবি কঠোর অবস্থানে রয়েছে। অনুপ্রবেশ বা পুশ-ইন প্রতিরোধের বিষয়ে প্রতিপক্ষ বিএসএফ’র সাথে পতাকা বৈঠক, লিখিত ও মৌখিক প্রতিবাদ এবং পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছে ।
কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়ন (৪৭ বিজিবি) দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা, সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ দেশের জনগণকে একটি নিরাপদ ও স্বস্থিদায়ক ঈদ উদযাপনের পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং মাদক পাচারসহ সব ধরনের অবৈধ কার্যক্রম প্রতিরোধে কঠোর অবস্থানে থাকার বিষয়টিও নিশ্চিত করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
মন্তব্য