ছবি ও ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপ ইনস্টাগ্রামে ১৩ বছরের কমবয়সীদের প্রবেশাধিকার দেয়ার পরিকল্পনা স্থগিত করা হয়েছে। শিশুদের সামাজিক যোগাযোগের এ প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করতে দেয়ার জন্য ইনস্টাগ্রাম কিডস নামে নতুন একটি সংস্করণ তৈরির কাজ চলছিল।
ইনস্টাগ্রামের প্রধান অ্যাডাম মোজেরির বরাত দিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ইনস্টাগ্রামের সত্ত্বাধিকারী প্রতিষ্ঠান ফেসবুক ‘অভিভাবক, বিশেষজ্ঞ, নীতিনির্ধারক ও নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর পরামর্শ ও দাবিদাওয়া’ আমলে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের ফাঁস করা ফেসবুকের অভ্যন্তরীণ গবেষণায় ‘কিশোরীদের ওপর ইনস্টাগ্রামের নেতিবাচক প্রভাব’ প্রকাশের পর আসে এ সিদ্ধান্ত।
ওয়ালস্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০২০ সালে কিশোরীদের কাছে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারে নিজেদের শরীর নিয়ে তাদের মধ্যে আফসোস তৈরি হয় কি না। এতে ৩২ শতাংশের উত্তর ছিল, ভীষণ আফসোস হয়; ২২ শতাংশ নিজেদের শরীর নিয়ে আত্মতৃপ্তির কথা জানায়; ৪৬ শতাংশের মতে, তাদের ওপর কোনো প্রভাব পড়েনি।
যদিও সাম্প্রতিক একটি ব্লগ পোস্টে ফেসবুকের প্রধান গবেষক প্রতিতি রায়চৌধুরী দাবি করেছিলেন, ‘কৌশলগত দিক থেকে জরিপটি উপলব্ধিতে ত্রুটি রয়েছে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের’। ‘মাত্র ৪০ শতাংশ কিশোর-কিশোরীর তথ্যের ওপর নির্ভর করা হয়েছে জরিপে’ এবং ‘প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন নিশ্চিতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ইনস্টাগ্রামের নেতিবাচক দিক তুলে ধরা হয়েছে’ বলে দাবি করেন তিনি।
ইনস্টাগ্রামে অ্যাকাউন্ট খুলতে হলে ন্যূনতম বয়স হতে হয় ১৩ বছর। কিন্তু মিথ্যা তথ্য ব্যবহার করে অনেক শিশুই প্ল্যাটফর্মটির অপব্যবহার করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ অবস্থায় সংকটের ‘বাস্তব সমাধান’ হিসেবে শিশুদের জন্য ইনস্টাগ্রাম কিডস চালুর পরিকল্পনা নিয়েছিল ফেসবুক। বলা হচ্ছিল, এতে মিথ্যা বলে ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করতে হবে না শিশুদের। একই সঙ্গে শিশুদের জন্য নতুন প্ল্যাটফর্মটির কনটেন্টও থাকবে তাদের বয়স অনুযায়ী পরিশীলিত।
চলতি বছরের এপ্রিলে ক্যাম্পেইন ফর আ কমার্শিয়াল-ফ্রি চাইল্ডহুড নামের একটি কর্মসূচি থেকে ‘ছবিভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম’ হিসেবে ইনস্টাগ্রামকে শিশুদের স্বাস্থ্য ও ব্যক্তিগত গোপনীয়তার জন্য বিপজ্জনক আখ্যায়িত করা হয়। কর্মসূচির পক্ষে ৯৯ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান স্বাক্ষরিত খোলা চিঠিতে ইনস্টাগ্রাম কিডস প্রকল্প বাতিলের আহ্বান জানানো হয়।
নতুন এক ব্লগ পোস্টে মোজেরি জানান, ১০ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুদের জন্য ইনস্টাগ্রামের একটি সংস্করণ চালু করা বাস্তব সমাধান বলে এখনও মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘পরিচয়পত্রবিহীন শিশুদের বয়স যাচাইয়ের কাজের জন্য অ্যাপের সক্ষমতার ওপর নির্ভর করার চেয়ে ইনস্টাগ্রামের নতুন সংস্করণ চালু করাই অধিক কার্যকর সিদ্ধান্ত। কারণ বাস্তবতা হচ্ছে, শিশুরা ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করছে।’
ইনস্টাগ্রাম কিডসের কাজ স্থগিত থাকলেও বিদ্যমান অ্যাপে ১৩ থেকে ১৯ বছর বয়সীদের অ্যাকাউন্টগুলো যেন অভিভাবকরা তত্ত্বাবধান করতে পারেন, তা নিশ্চিতে কাজ করছে ইনস্টাগ্রাম। এ বিষয়ে কয়েক মাসের মধ্যেই আরও ঘোষণা আসবে বলেও জানিয়েছেন মোজেরি।
আরও পড়ুন:কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে বাংলাদেশে বন্ধ হওয়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক বুধবার ফের চালু হয়েছে।
গত ১৭ জুলাই রাত থেকে দেশে বন্ধ ছিল মোবাইল ইন্টারনেট। তখন থেকে বন্ধ হয়ে যায় ফেসবুকসহ কয়েকটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম।
মেটা ও টিকটকের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বুধবার বৈঠক শেষে বিটিআরসি ভবনে সংবাদ সম্মেলনে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক জানিয়েছিলেন, বিকেলের মধ্যে চালু হচ্ছে ফেসবুক, টিকটক ও ইউটিউব।
তার ওই বক্তব্যের পর দুপুর থেকেই ফেসবুক চালু হয় দেশে।
এর আগে সংবাদ সম্মেলনে দেশে জনপ্রিয় তিন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ফের চালু করা নিয়ে পলক সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘আমরা যে সকল সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম কিছুটা সময়ের জন্য আসলে সাময়িকভাবে আমরা তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনার ব্যাপারে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছিলাম বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) পক্ষ থেকে। আমরা সার্বিক বিবেচনা করে, আমাদের ফ্রিল্যান্সার, ই-কমার্স উদ্যোক্তা, আমাদের ব্যবসায়িক সম্প্রদায় এবং হয়তো স্কুল, কলেজ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এগুলো এখন সাময়িকভাবে বন্ধ আছে, কিন্তু আমাদের ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক, গবেষক বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে কিন্তু তারা শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে চায়।
‘সে ক্ষেত্রেও কিন্তু ফেসবুক, টিকটক, ইউটিউব—এই প্ল্যাটফর্ম বেশ প্রয়োজনীয় প্ল্যাটফর্ম। এটা আমরা মনে করি। তো সাময়িকভাবে কিছু বিধিনিষেধ আমরা আরোপ করতে বাধ্য হয়েছিলাম, তবে আনুষ্ঠানিকভাবে আমি আপনাদেরকে জানাতে চাচ্ছি যে, আজকে আমরা সেই বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করে নিচ্ছি এবং বাংলাদেশে আমাদের সাইবার স্পেসে আমরা ফেসবুক, টিকটক এবং ইউটিউবের কার্যক্রম পরিচালনা করতে আর কোনো বাধা রাখছি না। এটা সম্পূর্ণভাবে সবগুলো অ্যাপ্লিকেশন আমরা ওপেন করে দিচ্ছি।’
কখন থেকে প্ল্যাটফর্মগুলো চালু করা হবে, তা নিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘এটা আমরা এখনই এই প্রেস কনফারেন্স শেষে আমরা নির্দেশনা দিয়ে দিয়েছি বিটিআরসিকে। হয়তো কিছুটা সময় লাগবে। হয়তো এক ঘণ্টা বা দুই ঘণ্টা সময় লাগবে। আশা করছি আজকে বিকেলের মধ্যে আমরা সবগুলো অ্যাপ্লিকেশন ওপেন করে দিতে পারব।’
আরও পড়ুন:কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে বাংলাদেশে বন্ধ হওয়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ফেসবুক, টিকটক ও ইউটিউব বিকেলের মধ্যে চালু হচ্ছে বলে বুধবার জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
মেটা ও টিকটকের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে বিটিআরসি ভবনে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান প্রতিমন্ত্রী।
দেশে জনপ্রিয় তিন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ফের চালু করা নিয়ে পলক সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা যে সকল সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম কিছুটা সময়ের জন্য আসলে সাময়িকভাবে আমরা তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনার ব্যাপারে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছিলাম বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) পক্ষ থেকে। আমরা সার্বিক বিবেচনা করে, আমাদের ফ্রিল্যান্সার, ই-কমার্স উদ্যোক্তা, আমাদের ব্যবসায়িক সম্প্রদায় এবং হয়তো স্কুল, কলেজ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এগুলো এখন সাময়িকভাবে বন্ধ আছে, কিন্তু আমাদের ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক, গবেষক বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে কিন্তু তারা শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে চায়।
‘সে ক্ষেত্রেও কিন্তু ফেসবুক, টিকটক, ইউটিউব—এই প্ল্যাটফর্ম বেশ প্রয়োজনীয় প্ল্যাটফর্ম। এটা আমরা মনে করি। তো সাময়িকভাবে কিছু বিধিনিষেধ আমরা আরোপ করতে বাধ্য হয়েছিলাম, তবে আনুষ্ঠানিকভাবে আমি আপনাদেরকে জানাতে চাচ্ছি যে, আজকে আমরা সেই বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করে নিচ্ছি এবং বাংলাদেশে আমাদের সাইবার স্পেসে আমরা ফেসবুক, টিকটক এবং ইউটিউবের কার্যক্রম পরিচালনা করতে আর কোনো বাধা রাখছি না। এটা সম্পূর্ণভাবে সবগুলো অ্যাপ্লিকেশন আমরা ওপেন করে দিচ্ছি।’
কখন থেকে প্ল্যাটফর্মগুলো চালু করা হবে, তা নিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এটা আমরা এখনই এই প্রেস কনফারেন্স শেষে আমরা নির্দেশনা দিয়ে দিয়েছি বিটিআরসিকে। হয়তো কিছুটা সময় লাগবে। হয়তো এক ঘণ্টা বা দুই ঘণ্টা সময় লাগবে। আশা করছি আজকে বিকেলের মধ্যে আমরা সবগুলো অ্যাপ্লিকেশন ওপেন করে দিতে পারব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দেখছি যে, এগুলো বিধিনিষেধ আরোপের ফলে ভিপিএন অ্যাপ্লিকেশনগুলো ব্যবহার করে অনেক ব্যান্ডউইথ ট্রাফিক দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে এবং সেটা একটা নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি। অপর দিকে আর্থিকভাবেও ক্ষতি। সবকিছু মিলিয়ে আমরা একটাই অনুরোধ করব আমাদের গণমাধ্যমের সাংবাদিক বন্ধুদের মাধ্যমে আমাদের দেশের সকল নাগরিকের কাছে যে, আপনারা কোনো মিথ্যা, গুজব, কোনো মিথ্যা অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হবেন না।
‘আপনারা দয়া করে আমাদের যদি কোনো কর্মকাণ্ডে আপনারা ক্ষুব্ধ হয়ে থাকেন, আমাদের কোনো আচরণে বা কথায় যদি আপনারা মনঃক্ষুণ্ন হয়ে থাকেন, আপনারা আপনাদের মত প্রকাশ করবেন, সমালোচনা করবেন। সেই স্বাধীনতা আমাদের আছে বাংলাদেশে, কিন্তু কেউ আপনারা সহিংসতাকে উৎসাহ দেবেন না।’
আরও পড়ুন:সারা দেশে বাসাবাড়িতে আজ বুধবার রাত থেকেই পরীক্ষামূলকভাবে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট চালু হবে। আর মোবাইল ডাটা ইন্টারনেট আগামী সপ্তাহের রোববার বা সোমবার চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমন তথ্য জানিয়েছেন।
বুধবার বিকেল ৪টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনের প্রধান সম্মেলন কক্ষে বক্তব্য দেন প্রতিমন্ত্রী।
ইন্টারনেট সেবা সম্পর্কিত সার্বিক বিষয়াবলী নিয়ে তিনি বলেন, ‘আজকে (বুধবার) রাত থেকে ব্রডব্যান্ড কানেক্টিভিটি বাড়ানো হবে। সারা দেশের বাসা-বাড়িতে আজ রাত থেকে পরীক্ষামূলকভাবে ব্রডব্যান্ড চালু হবে, যা আগামীকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আমরা পর্যবেক্ষণ করব।’
আগামী রবি বা সোমবার সারা দেশে মোবাইল ইন্টারনেট চালু হতে পারে জানিয়ে পলক বলেন, ‘আমরা দৈনিক ৭০-৮০ কোটি টাকা ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছি। এছাড়া ফেসবুক ও ইউটিউব কোনোভাবেই বাংলাদেশের আইন মানছে না। এমনকি তারা তাদের নিজেদের পলিসিও মানছে না।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ফেসবুক আমেরিকার কোম্পানি। তারা সে দেশের সরকারের আইন অক্ষরে অক্ষরে পালন করে। কিন্তু আমাদের দেশের পলিসি মানে না। আমাদের সাইবার স্পেস ব্যবহার করে অর্থ উপার্জন করতে হলে দেশের আইন মেনে ফেসবুককে সোশ্যাল মিডিয়া চালাতে হবে। তারা (ফেসবুক) নিজেদের ব্যবসার কথা চিন্তা করে; কিন্তু বাংলাদেশের জনগণের কথা চিন্তা করে না।’
প্রতিমন্ত্রী পলক আরও বলেন, ‘সহিংসতার বিষয়ে ফেসবুক, টিকটক ও ইউটিউবকে চিঠি দেয়া হবে। তাদের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘দেশীয় উদ্যোক্তারা ফেসবুক, টিকটক ও ইউটিউবের বিকল্প হিসেবে সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ তৈরি করলে আমরা সহযোগিতা করব।’
‘৪৮ ঘণ্টায় ৩৫ শিশু নিখোঁজ’- শনিবার (৬ জুলাই) সকাল থেকে এমন একটি পোস্ট দেখা যেতে থাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপ ও ব্যক্তিগত আইডিতে।
পোস্টগুলোতে বলা হয়, ‘ব্রেকিং নিউজ, গত ৪৮ ঘণ্টায় ঢাকা ও চট্টগ্রামে ৩৫ শিশু নিখোঁজ হয়েছে।’
ফেসবুকে ব্যাপকভাবে এই তথ্য ছড়িয়ে পড়লে অভিভাবকরাও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
তবে এই অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন গুজব’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
ডিএমপি জানায়, তদন্তে দেখা গেছে একের পর এক শিশু নিখোঁজ হওয়ার এই অভিযোগ ভিত্তিহীন। নিখোঁজ হিসেবে যাদের নাম উল্লেখ করে পোস্ট করা হয়েছিল তাদের অনেককে পরে পাওয়া গেছে। আবার অনেককে পাওয়া গেলেও তা আর জানানো হয় না।
আদাবর থানার ওসি মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমরা এ ধরনের কোনো তথ্য পাইনি।’
একই বক্তব্য দেন শাহবাগ থানার ওসি নূর আলম।
এ প্রসঙ্গে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) খন্দকার মহিদ উদ্দিন বলেন, ‘৪৮ ঘণ্টায় ৩৫ শিশু নিখোঁজ হয়েছে এমন কোনো তথ্য ডিএমপির কাছে নেই।’
তিনি জানান, ৪ থেকে ৬ মে পর্যন্ত ৭২ ঘণ্টায় বিভিন্নভাবে শিশু নিখোঁজের ঘটনায় বিভিন্ন থানায় ৩৩টি জিডি করা হয়েছে। জুন মাসের ৪ থেকে ৬ তারিখ পর্যন্ত ৭২ ঘণ্টায় জিডি করা হয়েছে ৩৬টি। একইভাবে ৪ থেকে ৬ জুলাই ৭২ ঘণ্টায় ৩২টি জিডি করা হয়।
ডিএমপি অতিরিক্ত কমিশনার আরও বলেন, “সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হওয়া ‘৪৮ ঘণ্টায় ৩৫ শিশু নিখোঁজ হয়েছে’ এমন তথ্য সঠিক নয়। এছাড়া নিখোঁজ হওয়া শিশুদের পরবর্তীতে সন্ধান পাওয়া গেছে।”
আরও পড়ুন:টিকটকের ভিডিও বানাতে গিয়ে কুড়িগ্রামের রাজারহাটের তিস্তা নদীতে ডুবে সোহাগ (১২) নামের এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে।
ঈদুল ফিতরের তৃতীয় দিন শনিবার বিকেলে তিস্তা নদী থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে রংপুর ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল।
প্রাণ হারানো সোহাগ রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের খিতাব গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে।
স্থানীয় ও পুলিশের ভাষ্য, সোহাগ তার ফুফাতো বোনকে নিয়ে টিকটক বানাতে নদীতে গোসল করতে নামে। ওই সময় তার সঙ্গে আরও দুই বন্ধু ছিল। টিকটকের ভিডিও ধারণের সময় সোহাগ পানিতে গোসল করছিল। অন্যরা গোসল করে তীরে ওঠে।
দুই বন্ধু নদীর পাড়ে গিয়ে সোহাগকে খুঁজে না পেয়ে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দুই ঘণ্টা পর তিস্তা নদী থেকে সোহাগের মরদেহ উদ্ধার করে।
রাজারহাট থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান টিকটকের ভিডিও বানাতে গিয়ে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘তিস্তা নদী থেকে সোহাগ নামের এক কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আরও পড়ুন:সংবাদ ও রাজনৈতিক বিষয়বস্তুকে ভবিষ্যতে কম গুরুত্ব দেয়ার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এপ্রিলের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ার ব্যবহারকারীদের জন্য ফেসবুকে খবর প্রচার বন্ধ করবে মেটা। গত বছর যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানিতে ফিচারটি বন্ধ করে দেয়া হয়।
ফেসবুকে ২০১৯ সালে চালু হওয়া নিউজ ট্যাবটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের পাশাপাশি ছোট ও স্থানীয় প্রকাশনার শিরোনামগুলোও ব্যবসায়িকভাবে ব্যবহার করেছে।
মেটা বলছে, ব্যবহারকারীরা সংবাদ নিবন্ধের লিংক দেখতে সক্ষম হবেন। সংবাদ সংস্থাগুলো তাদের লেখা ও ওয়েবসাইট লিঙ্ক পোস্ট ও প্রচার করতে পারবে, যেমন অন্য কোনো ব্যক্তি বা সংস্থা ফেসবুকে করতে পারে।
ভুল তথ্য কীভাবে ছড়ানো হয় এবং এটি রাজনৈতিক মেরুকরণে অবদান রাখে কি না, তা নিয়ে বছরের পর বছর ধরে সমালোচনার পর মেটা তার প্ল্যাটফর্মগুলোতে সংবাদ ও রাজনৈতিক উপাদান কমানোর চেষ্টার পর এই পরিবর্তন আসছে।
মেটার মুখপাত্র ড্যানি লিভার বলেছেন, ‘এই পরিবর্তন গ্রাহকের ফলো করা অ্যাকাউন্টের পোস্টে প্রভাব ফেলবে না। এটি সিস্টেমের সুপারিশগুলোকে প্রভাবিত করবে এবং ব্যবহারকারীরা যদি আরও চায়, তবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
‘ঘোষণাটি এমন সময় আসছে, যখন ব্যবহারকারীরা বছরের পর বছর আমাদের কাছে জানতে চেয়েছিল যে, আমরা কীভাবে রাজনৈতিক বিষয়বস্তুগুলো পরিচালনা করি তার উপর ভিত্তি করে।’
মেটার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নিউজ ট্যাবে এই পরিবর্তন তাদের ফ্যাক্ট-চেকিং নেটওয়ার্ক এবং ভুল তথ্যের পর্যালোচনায় কোনো প্রভাব ফেলবে না। তবে ভুল তথ্য প্রতিষ্ঠানটির জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়েই গেছে। বিশেষ করে যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন এবং অন্যান্য প্রতিযোগিতা চলছে।
কর্নেল ব্রুকস স্কুল অফ পাবলিক পলিসির টেক পলিসি ইনস্টিটিউটের পরিচালক ও প্রযুক্তি বিষয়ক নীতি গবেষক সারাহ ক্রেপস বলেছেন, ‘ফেসবুক নিজেকে রাজনৈতিক প্লাটফর্ম হিসেবে মনে করে না, এটি চালান প্রযুক্তিবিদরা। তারপর হঠাৎ তারা এ বিষয়ে মূল্যায়ন শুরু করে এবং নিজেদের রাজনীতিতে নিমজ্জিত দেখতে পান। ফলে তারা নিজেরাই শিরোনাম হয়ে ওঠেন।’
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, এই বছর অনেকগুলো বড় নির্বাচন আসছে। ফলে এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে, ফেসবুক রাজনীতি থেকে আরও এক ধাপ দূরে সরে যাচ্ছে। অসাবধানতাবশত নিজেরাই যাতে রাজনৈতিক শিরোনাম হয়, তার জন্যই এমন সিদ্ধান্ত।’
পয়েন্টারের মিডিয়া বিশ্লেষক রিক অ্যাডমন্ডস বলেন, ‘নিউজ ট্যাবের বিলুপ্তি সংবাদ সংস্থাগুলোর জন্য আশ্চর্যজনক নয়। বেশ কয়েক বছর ধরে তাদের ওয়েবসাইটগুলোতে ফেসবুক ট্র্যাফিক হ্রাস পাচ্ছে। ফলে সংস্থাগুলোকে দর্শকদের আকৃষ্ট করার অনুসন্ধান ও নিউজলেটারের মতো অন্যান্য উপায়গুলোতে মনোনিবেশ করতে উৎসাহিত করছে।’
অ্যাডমন্ডস বলেন, ‘আমি বলব আপনি যদি খেয়াল করতেন, তাহলে আপনি দেখতে পেতেন যে, এটি আসছে। তবে এটি সংবাদ ব্যবসার জন্য আরও একটি দুঃসংবাদ।’
মেটা জানিয়েছে, বিশ্বব্যাপী ব্যবহারকারীরা তাদের ফেসবুক ফিডে যা দেখেন, তার চেয়ে তিন শতাংশেরও কম সংবাদ তৈরি হয়। অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রে ফেসবুক সংবাদ ব্যবহারকারীর সংখ্যা গত বছর ৮০ শতাংশেরও বেশি হ্রাস পেয়েছে।
তবে ২০২৩ সালের পিউ রিসার্চ স্টাডি অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকদের অর্ধেক অন্তত মাঝে মাঝে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে খবর পান। ফেসবুকের মতো একটি প্ল্যাটফর্ম অন্যান্য মাধ্যমকে সেখানে ছাড়িয়ে গেছে।
পিউ জানিয়েছে, প্রতি ১০ জন প্রাপ্তবয়স্ক যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকের মধ্যে তিনজন বলেছেন যে, তারা নিয়মিত ফেসবুক থেকে খবর পান এবং ১৬ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিক বলেছেন যে, তারা নিয়মিত ইনস্টাগ্রাম থেকে খবর পান। এ দুই মাধ্যমেরই মালিকানা মেটার।
ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারীরা সম্প্রতি ব্যবহারকারীদের অনুসরণ করেন না, এমন অ্যাকাউন্টগুলোতে পোস্ট করা রাজনৈতিক বিষয়বস্তুর ‘সক্রিয়ভাবে’ সুপারিশ করা বন্ধ করার জন্য অ্যাপটির প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। কারণ, ফিল্টার বন্ধ করার অপশন সবসময় ইউজার সেটিংসে থাকলেও মেটা যে এই পরিবর্তন করেছে তা অনেকেই জানতেন না।
আরও পড়ুন:ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গের নেতৃত্বাধীন মেটার প্ল্যাটফর্মগুলো স্ন্যাপচ্যাট, ইউটিউব এবং অ্যামাজন ব্যবহারকারীদের তথ্য গোপনে নজরদারি করছে বলে অভিযোগ করে নতুন তথ্য প্রকাশ করেছে ক্যালিফোর্নিয়ার একটি ফেডারেল আদালত।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম টেকক্রাঞ্চের বরাত দিয়ে বুধবার এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়, ফেসবুক ২০১৬ সালে ‘ঘোস্টবাস্টারস’ নামে একটি গোপন প্রজেক্ট চালু করেছিল যাতে স্ন্যাপচ্যাট ও এর সার্ভার ব্যবহারকারীদের মধ্যে নেটওয়ার্ক ট্রাফিক এনক্রিপ্ট এবং ডিক্রিপ্ট করা যায়।
স্ন্যাপচ্যাটের ভূতের (ঘোস্ট) মতো লোগোর সঙ্গে মিল রেখে ফেসবুক এটির নাম দিয়েছে ‘প্রজেক্ট ঘোস্টবাস্টারস’।
আদালতের নথি অনুসারে, ঘোস্টবাস্টারস প্রজেক্টটি স্ন্যাপচ্যাটের প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা অর্জন ও ব্যবহারকারীর আচরণ বোঝার জন্য তৈরি করা হয়েছে।
নথিতে প্রকল্পটি নিয়ে আলোচনা করা সে সময়ের অভ্যন্তরীণ ফেসবুক ইমেইলগুলোও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ২০১৬ সালের জুনে মার্ক এমন একটি ইমেইলে বলেন, স্ন্যাপচ্যাট তাদের সিস্টেম এনক্রিপট (যে পদ্ধতির মাধ্যমে তথ্য গোপন কোডে রূপান্তরিত হয় যা তথ্যের প্রকৃত অর্থ লুকিয়ে রাখে) করার কারণে অ্যাপটির অভ্যন্তরীণ কোনো তথ্য ফেসবুকের কাছে নেই।
তাই তাদের সম্পর্কে নির্ভরযোগ্য তথ্য পেতে একটি নতুন উপায় বের করা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন মার্ক। এর জন্য একটি কাস্টম সফটওয়্যার তৈরির কথা জানান তিনি।
এর পরিপ্রেক্ষিতেই পরবর্তীতে ফেসবুকের প্রকৌশলীরা ঘোস্টবাস্টারস তৈরি করেন। পরে অ্যামাজন এবং ইউটিউবকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রকল্পটি প্রসারিত করা হয়ে।
ক্যালিফোর্নিয়ার আদালতের তথ্য অনুসারে, ফেসবুকের সিনিয়র এক্সিকিউটিভদের একটি দল এবং প্রায় ৪১ জন আইনজীবী প্রজেক্ট ঘোস্টবাস্টারে কাজ করেছেন, তবে ফেসবুকের কিছু কর্মী এ প্রকল্পের বিপক্ষে ছিলেন। তারা এটি নিয়ে তাদের উদ্বেগও প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য