২৩ বছর বয়সী ভারতীয় যুবক জয়ন্ত কানড়োইয়ের ওজন মাত্র ৩৬ কেজি, কিন্তু তার কণ্ঠের বলিষ্ঠতায় স্পষ্ট লড়াকু ব্যক্তিত্ব। জয়ন্তর প্রতিদ্বন্দ্বী সহজ কেউ নয়। প্রাণঘাতী রোগ ক্যানসারের সঙ্গে তার লড়াই চলছে কিশোর বয়স থেকে। জীবন জয়ের যুদ্ধে গত নয় বছরে ছয়বার ক্যানসারকে হারিয়েছেন তিনি।
জয়ন্ত জানান, গত নয় বছরে গুণে গুণে এক হাজার ২৩৭ দিন বা প্রায় চার বছরই হাসপাতালে কেটেছে তার। ক্যানসারকে জিততে না দিলেও তার শরীরজুড়ে রোগটির ধ্বংসলীলা। ১৭টি কেমোথেরাপি, ৬০টির বেশি রেডিওথেরাপি আর অস্থিমজ্জা স্থানান্তরের মতো কঠিন চিকিৎসার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে তাকে।
একের পর এক অস্ত্রোপচার, আর শরীর-মনের শক্তি নিংড়ে নেয়া ওষুধ, আর স্বাস্থ্যপরীক্ষার কষ্টকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চলেছেন জয়ন্ত। তার কাছে ক্যানসার এখনও অজেয়।
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য রাজস্থানের আজমির শহরের বাসিন্দা জয়ন্ত। ২০১৩ সালে যখন দশম শ্রেণির ছাত্র সে, তখন প্রথম ক্যানসার ধরা পড়ে তার।
তিনি বলেন, ‘ঘাড়ের ডান দিকে মাংসপিণ্ডর মতো কিছু একটা অনুভব করি। পরে জানা যায়, এটা ক্যানসার। সেই প্রথম হজকিন লিম্ফোমার নাম শুনি আমি। কোনো ব্যথা ছিল না। কিন্তু দিন দিন মাংসপিণ্ডটি বড় হচ্ছিল।
‘প্রথমবার অপারেশন থিয়েটার দেখি আমি সে সময়। ভয় পাইনি একটুও। জয়পুরের ভগবান মহাবীর ক্যানসার হাসপাতালে ভর্তি হই। অস্ত্রোপচারের পর শুরু হয় কেমোথেরাপির ধাক্কা। ছয়টি কেমোথেরাপি নিয়ে ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি প্রথম আমাকে ক্যানসারমুক্ত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। সেই দিনটির সব স্মৃতি আজও চোখে ভাসে আমার।’
এরপর জয়পুর থেকে আজমিরে ফেরেন জয়ন্ত, অংশ নেন মাধ্যমিক পরীক্ষায়, নিজ ক্লাসে প্রথম হন তিনি। গর্ব নিয়ে জয়ন্ত বলেন, ‘শিক্ষাজীবনের পুরো সময়েই প্রথম সারির শিক্ষার্থী ছিলাম আমি।’
এসবের মধ্যেই ক্যানসারমুক্ত জয়ন্ত তীব্র ক্লান্তিতে ভুগতেন। এতটাই যে লম্বা সময়ের জন্য স্কুলেও যেতে পারছিলেন না। অথচ পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত একটি দিনও স্কুল বাদ না দেয়ার রেকর্ড ছিল তার।
একাদশ শ্রেণিতে পড়ার সময় জয়ন্তর দেহে আরেকটি মাংসপিণ্ড ধরা পড়ে; এবার ঘাড়ের বাম পাশে। ২০১৫ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি আবারও ভগবান মহাবীর ক্যানসার হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে শুরু করেন।
জয়ন্ত কখনোই নিজের পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটতে দেননি। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় উৎরে যান এসবের মধ্যেই, বিকমে পড়াশোনা শুরু করেন।
জয়ন্ত বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে ২০১৭ সালের শুরুতে আবারও ক্যানসার ধরা পড়ে আমার শরীরে, এবার অগ্ন্যাশয়ে। প্রায়ই পেটে অসহ্য ব্যথা হতো। পরিস্থিতি চরমে পৌঁছায় শেষ বর্ষে পড়াশোনার সময়। দিল্লিতে একা থাকছিলাম বলে বাবা আমাকে দ্রুত বাড়িতে ফিরে চিকিৎসা শুরু করার অনুরোধ করেন।’
দ্য বেটার ইন্ডিয়ার জুলাই মাসের একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, অসুস্থতা মারাত্মক রূপ নেয়ায় পড়াশোনা অসমাপ্ত রেখেই ২০১৭ সালে আজমিরে ফেরেন জয়ন্ত। তিনি বলেন, ‘পড়াশোনা শেষ না করে বাড়ি ফেরার কারণে খুব কষ্টে ছিলাম। কিন্তু ব্যথাও সহ্য করতে পারছিলাম না। ভেঙেচুরে যাচ্ছিলাম মনে হতো।’
সেবার চিকিৎসকরা জানান, অগ্ন্যাশয়ের টিউমারে পৌঁছাতে জয়ন্তর পেটে নয় ইঞ্চি লম্বা ফুটো করতে হবে।
জয়ন্ত বলেন, ‘সেবারই প্রথম বাবার মুখে দুশ্চিন্তার ছাপ দেখলাম। টিউমারটা মাত্র এক সেন্টিমিটার ছিল। কিন্তু পাকস্থলীর যে অংশে এটি ছিল, সে অংশটি কেটে ফেলে দিতে হবে- এই চিন্তা আমার বাবাকে কুড়ে খাচ্ছিল।’
অগ্ন্যাশয়ে টিউমার ধরা পড়ার দুই বছর পর কেমোথেরাপিসহ সব চিকিৎসা শেষ করেন জয়ন্ত। তৃতীয়বার ক্যানসারকে হারিয়ে বাড়ি ফিরেই নতুন উদ্যমে শুরু করেন পড়াশোনা। সশরীরে শ্রেণিকক্ষে উপস্থিতি ছাড়া শিক্ষা কার্যক্রমে নাম লেখান তিনি, সম্পন্ন করেন স্নাতক।
জয়ন্তর বাবা ৫৭ বছর বয়সী অশোক কানড়োই বলেন, ‘পড়াশোনার জন্য ছেলেকে আবারও দূরে পাঠানোর ঝুঁকি নিতে চাইনি। ওর ডিগ্রির চেয়ে জীবন বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। নয় বছর ধরে সৃষ্টিকর্তার কাছে শুধু সন্তানের সুস্বাস্থ্য চেয়েছি। তাই চেয়ে যাব আমার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত।’
২০১৯ সালে আবারও অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসারে আক্রান্ত হন জয়ন্ত; ২০১৭ সালে যেখানে ক্যানসার ধরা পড়েছিল, ঠিক সেই একই জায়গায় ধরা পড়ে নতুন টিউমার।
চতুর্থবার ক্যানসার শনাক্ত হওয়ার পরও মুখের হাসি মুছতে দেননি জয়ন্ত। দীর্ঘযুদ্ধে শরীর ভেঙে পড়লেও আবারও চিকিৎসা শুরু করেন; আবারও জয়ী হয়ে ফেরেন।
গত দুই বছরে অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসার আর দেখা দেয়নি। কিন্তু গত বছর জয়ন্তর ডান হাতের বগলের নিচে আরেকটি টিউমার ধরা পড়ে। এবার ছেলেকে নিয়ে আহমেদাবাদের গুজরাট ক্যানসার হাসপাতালে যান বাবা।
জয়ন্ত বলেন, ‘২০২০ সালের ২০ মার্চ চিকিৎসা শেষে আজমিরে নিজের বাড়িতে ফিরলাম। পরদিন থেকে করোনাভাইরাস মহামারির কারণে লকডাউন শুরু হলো। অস্ত্রোপচারপরবর্তী চিকিৎসার জন্য আহমেদাবাদ যাওয়ার দরকার হলেও আর যেতে পারিনি।’
ক্যানসারের পঞ্চম আঘাত থেকে সেরে উঠতে না উঠতেই আট মাসের ব্যবধানে জয়ন্ত জানতে পারেন ষষ্ঠবারের মতো শরীরে বাসা বেঁধেছে হতচ্ছাড়া রোগটি। সময় ২০২০ সালের নভেম্বর। এবার ক্যানসারের আক্রমণস্থল তলপেট।
এই সময় অস্থিমজ্জা স্থানান্তরের জটিল চিকিৎসার যন্ত্রণাও সহ্য করতে হয় জয়ন্তকে। শরীরে সুঁই ঢোকাতে ভয় না পেলেও মেরুদণ্ডের নিচ থেকে অস্তিমজ্জা বের করে আনার সময় অসহনীয় ব্যথা সহ্য করতে হয়েছিল তাকে।
জয়ন্ত বলেন, ‘ছয়বার ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করেছি। প্রায় প্রতিবারই দেহের নতুন কোনো অংশ আক্রান্ত হয়েছে। যতবার অসুস্থ হয়েছি, আত্মীয়রা আমার মা-বাবাকে পরামর্শ দিয়েছিল কোনো হাসপাতালে আমাকে ফেলে রেখে আসতে। তারা ভেবেছিল যে আমি যেহেতু বাঁচবোই না, শুধু শুধু কেন আমার বোঝা টানবেন আমার মা-বাবা।
‘আজ যখন আমি অন্যদের বাঁচতে উৎসাহ দিই, আমার ওই আত্মীয়-স্বজনরা হাঁ করে তাকিয়ে শোনে। তারা আজ আমাকে ভাগনে ডেকে যোগাযোগ করতে চায়।’
পুরো যাত্রা শুধু জয়ন্তর জন্য নয়, তার পরিবারের জন্যও একইরকম ক্লান্তিকর ছিল। শারীরিক ব্যথা সহ্য করেছেন তিনি, একইরকম মানসিক যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে গেছে তার পুরো পরিবার। এখন সবাই খুশি।
ক্যানসার নিয়ে সচেতনতা তৈরি, দুঃস্থদের চিকিৎসায় তহবিল সংগ্রহ, ক্যানসারে আক্রান্তদের মনোবল বাড়ানো ইত্যাদি লক্ষ্য নিয়ে বন্ধুদের সহযোগিতায় একটি দাতব্য সংগঠন গড়ে তুলেছেন জয়ন্ত। সংগঠনটিতে বর্তমানে ৩৫০ জন নিবন্ধিত স্বেচ্ছাসেবক আছেন।
এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে চলতি বছরের হিসাবে মৃতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে।
শনিবার সকাল ৮টা থেকে রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় এতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৭ জন। এর মধ্যদিয়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে এক হাজার ৬ জনে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নতুন করে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ২৮৮২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৬২৯ জন আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২২৫৩ জন।
এতে বলা হয়, বর্তমানে হাসপাতালে মোট ৯ হাজার ৩৫৭ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন। ঢাকার হাসপাতালে ৩ হাজার ১২০ জন এবং অন্যান্য বিভাগের হাসপাতালে ৬ হাজার ২৩৭ জন।
সারা দেশে এ বছরে এখন পর্যন্ত ২ লাখ ৫ হাজার ২৮৮ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। সুস্থ হয়ে ফিরেছেন ১ লাখ ৯৫ হাজার ৯২৫ জন
ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৯৮৯ জনের প্রাণ গেল।
এসময় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ২৪২৫ ডেঙ্গু রোগী। এদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭৫১ জন, আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৬৭৪ জন।
শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মোট ৯ হাজার ৯৫৯ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন আছেন। ঢাকার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ৩ হাজার ৩৭৯ জন এবং অন্যান্য বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ৬ হাজার ৫৮০ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন।
চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে এখন পর্যন্ত ২ লাখ ৩ হাজার ৪০৬ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ৮৩ হাজার ২২২ জন এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নিয়েছেন ১ লাখ ২০ হাজার ১৮৪ জন।
আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ লাখ ৯২ হাজার ৪৫৮ জন। ঢাকায় ৭৯ হাজার ২০৪ এবং ঢাকার বাইরে ১ লাখ ১৩ হাজার ২৫৪ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
আরও পড়ুন:বিশ্বে চার ধরনের ডেঙ্গু রোগেরই টিকা আবিষ্কারের লক্ষ্যে গবেষণা চলছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেছেন, ‘ডেঙ্গুর টিকা নিয়ে বিশ্বজোড়া গবেষণা চলছে। অলরেডি দুটি টিকা তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু ওই টিকাগুলো এখনও ব্যবহারের অনুমোদন পায়নি।’
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন শেষে দেশে ফিরে শনিবার দুপুরে মানিকগঞ্জে নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনে ভবিষ্যতে ভয়ঙ্কর কোনো মহামারি দেখা দিলে তা কীভাবে ঠেকাতে হবে, জনগণের সেবা নিশ্চিত করতে হবে এবং স্বাস্থ্যসেবায় গরিব রাষ্ট্রগুলো যাতে প্রয়োজনীয় ফান্ডিং পায়- এসব বিষয়ে কথা বলেন তিনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আবিষ্কৃত টিকা দুটি (ডেঙ্গুর) হয়ত ডেঙ্গু কিছুটা দমন করতে পারে, কিন্তু সব ধরনের ডেঙ্গুর দমন এতে হবে না। আবার টিকাগুলোতে কিছু সমস্যাও রয়েছে। ইতোমধ্যে যারা একবার ডেঙ্গুর টিকা নিয়েছে, তারা যদি অন্য ভাইরাসে আক্রান্ত হয়, তাহলে তাদের অবস্থা বেশি খারাপ হয়ে পড়ে। এ কারণে বিশ্বজুড়ে ওই টিকা ব্যবহার বন্ধ রাখা হয়েছে।’
তবে আমাদের দেশে আইসিডিডিআর,বি-তে একটি টিকা তৈরি হয়েছে, যেটি বেশ কার্যকর বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সেটা পরীক্ষামূলক অবস্থায় আছে। টিকা আবিষ্কারকরা বলছেন, টিকাটি বেশ কার্যকর। টিকাটি নিয়ে আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে এবং পরীক্ষা শেষে ডব্লিউএইচওর অনুমোদন পেলে দেশে তা ব্যবহার করতে পারব। তবে এই মহূর্তে পৃথিবীর কোথাও ডেঙ্গুর কার্যকর টিকা নেই।’
সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যক্ষ্মা রোগের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের সব দেশ থেকে যক্ষ্মা যক্ষা নির্মূল করতে কাজ করছে। বাংলাদেশ যক্ষ্মা নির্মূলে কাজ করছে।
‘আগের তুলনায় যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা ৫০ শতাংশ কমে গেছে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে যক্ষ্মা যাতে আমরা এসডিজি গোল্ড অর্জন করতে পারি, সে লক্ষ্যে কাজ করছি।’
তিনি বলেন, ‘টেকনোলজির মাধ্যমে কীভাবে দেশের স্বাস্থ্যসেবার উন্নতি করা যায়, সে বিষয়ে কাজ চলছে। টেকনোলজি যাতে মনোপলি বা একচেটিয়া না হয়ে দেশের সবার কল্যাণে কাজে লাগে সে চেষ্টা করা হচ্ছে। করোনাভাইরাসের সময় ভ্যাকসিন ও ওষুধ নিয়ে বিশ্বে চরম মনোপলি দেখেছি। অনেক গরিব দেশ ওষুধ ও টিকা পায়নি। অথচ বাজারে তা দেদারসে বিক্রি হয়েছে।
‘স্বাস্থ্য খাতে যাতে জনগণের সেবাপ্রাপ্তিতে কোনো ঘাটতি না থাকে, যন্ত্রপাতির ঘাটতি না থাকে, প্রয়োজেনে যাতে হাসপাতাল তৈরি করা হয়, সেই বিষয়টিতে আমরা বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করছি।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে সর্দি জ্বর হলেও ডেঙ্গু পরীক্ষা করাতে হবে। কারণ দেরিতে ডেঙ্গু ধরা পড়লে তখন চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে তোলা কঠিন হয়ে পড়ে। ডেঙ্গুতে মৃত্যুর একটি বড় কারণ দেরিতে ডেঙ্গু শনাক্ত ও চিকিৎসা দেয়া। এজন্য তাড়াতাড়ি পরীক্ষা করা এবং চিকিৎসা নেয়া প্রয়োজন।’
আরও পড়ুন:এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে আরও আটজনের মৃত্যু হয়েছে। আর নতুন করে আক্রান্ত হয়ে ১ হাজার ৭৯৩ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টার এ তথ্য জানানো হয়।
নতুন আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫৮৪ জন আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১২০৯ জন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মোট ৯ হাজার ৫২৬ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন আছেন। ঢাকার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ৩ হাজার ২৮৩ জন এবং অন্যান্য বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ৬ হাজার ২৪৩ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন।
চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে এখন পর্যন্ত ২ লাখ ৯৮১ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ৮২ হাজার ৪৭১ জন এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নিয়েছেন ১ লাখ ১৮ হাজার ৫১০ জন।
আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ লাখ ৯০ হাজার ৪৮০ জন। ঢাকায় ৭৮ হাজার ৫৫৭ এবং ঢাকার বাইরে ১ লাখ ১১ হাজার ৯২৩ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত ৯৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে নারী ৬৩১ জন ও পুরুষ ৩৪৪ জন।
আরও পড়ুন:চলতি বছরের জানুয়ারিতে দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়। এরপর থেকে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ক্রমশ বেড়ে চলেছে। প্রকোপটা রাজধানী ঢাকায় শুরু হলেও ক্রমে তা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।
এডিস মশাবাহিত এই রোগে আক্রান্ত সারা দেশে আরও নয়জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে রাজধানী ঢাকায় মারা গেছেন তিনজন। বাকি ৬জন মহানগরীর বাইরে দেশের বিভিন্ন স্থানে। এ নিয়ে চলতি বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ৯৬৭ জন।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় ৯জনের মৃত্যু ছাড়াও নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২ হাজার ৩৫৭ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী। তাদের মধ্যে ঢাকা মহানগরীতে ৬৭১ ও ঢাকা মহানগরীর বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে ১ হাজার ৬৮৬ জন ভর্তি হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ৯ হাজার ৭৯৭ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন। তাদের মধ্যে ঢাকার ৫৩টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ৩ হাজার ৪৫৭ এবং ঢাকার বাইরে অন্যান্য বিভাগে ৬ হাজার ৩৪০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে এ পর্যন্ত ১ লাখ ৯৯ হাজার ১৮৮ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ৮১ হাজার ৮৮৭ জন এবং ঢাকার বাইরে ১ লাখ ১৭ হাজার ৩০১ জন।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ১ লাখ ৮৮ হাজার ৪২৪ জন। তাদের মধ্যে ঢাকায় ৭৭ হাজার ৮০৩ জন এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন স্থানের ১ লাখ ১০ হাজার ৬২১ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ২ হাজার ৫১৮ জন। এর মধ্যে ঢাকায় ৭৪৯ জন এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন স্থানে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৭৬৯ জন।
আরও পড়ুন:এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে আরও ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৫৮ জন।
বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ২ হাজার ৯৫০ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭২৬ জন। আর ঢাকার বাইরে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২ হাজার ২২৪ জন।
ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে বর্তমানে সারা দেশে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৯ হাজার ৯৬৭ জন রোগী। তাদের মধ্যে ৩ হাজার ৫৩৮ জন ঢাকায় এবং ৬ হাজার ৪২৯ জন রোগী ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
সরকারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১ লাখ ৯৬ হাজার ৮৩১ জন। তাদের মধ্যে চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ১ লাখ ৮৫ হাজার ৯০৬ জন।
আরও পড়ুন:সোমবার সকাল আটটা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে প্রাণহানি কিছুটা কমেছে। গতকাল ১৯ জনের মৃত্যু হলেও আজ তা ১৫ জনে নেমেছে। আর ডেঙ্গু নিয়ে সারা দেশের হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৩ হাজার ১২৩ জন। গতকাল এ সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৩৩ জন।
আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭৭৪ জন, আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৩৪৯ জন।
মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মোট ১০ হাজার ১৫৬ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন আছেন। ঢাকার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ৩ হাজার ৫৮১ জন এবং অন্যান্য বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ৬ হাজার ৫৭৫ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন।
চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৯৩ হাজার ৮৮১ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ৮০ হাজার ৪৯০ জন এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নিয়েছেন ১ লাখ ১৩ হাজার ৩৯১ জন।
আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ লাখ ৮২ হাজার ৭৮২ জন। ঢাকায় ৭৬ হাজার ২৯২ এবং ঢাকার বাইরে ১ লাখ ৬ হাজার ৪৯০ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৯৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য