আফগানিস্তানে বিরোধীদের শেষ ঘাঁটি পাঞ্জশির উপত্যকার দখল নিতে উঠেপড়ে লেগেছে শাসকদল তালেবান। প্রদেশটির নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে মরিয়া স্থানীয় যোদ্ধারাও।
সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, পাঞ্জশিরসহ আফগানিস্তানের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেয়ার দাবি করেছে তালেবান। ‘বিরোধীদের পরাজিত করে পাঞ্জশির এখন তালেবানের’ বলে শুক্রবার জানায় কট্টরপন্থি গোষ্ঠীটির তিনটি সূত্র।
তবে তালেবানের এ দাবির সত্যতা যাচাই করা যায়নি।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, পাঞ্জশিরের তালেবানবিরোধী যোদ্ধারা প্রদেশের নিয়ন্ত্রণ হারানোর বিষয়টি নাকচ করে দিয়েছে।
তালেবানের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা বাহিনী ন্যাশনাল রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্টের (এনআরএফ) মুখপাত্র আলি নাজারির দাবি, তালেবান পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘কয়েক শ তালেবান যোদ্ধা ফাঁদে পড়েছে। তাদের গোলাবারুদ ফুরিয়ে আসছে। তাই তারা আত্মসমর্পণের শর্ত নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে।’
অন্যদিকে পরিস্থিতি ‘জটিল’ বলে উল্লেখ করেছেন যোদ্ধাদের অন্যতম নেতা ও সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহ। ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, দুই পক্ষেরই বিপুলসংখ্যক যোদ্ধা প্রাণ হারিয়েছেন লড়াইয়ে।
স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেল টোলো নিউজকে তিনি জানান, তার দেশ ছেড়ে পালানোর খবর মিথ্যা। তালেবান বিপুল শক্তিতে এগিয়ে এলেও আত্মসমর্পণ করবেন না এবং আফগানিস্তানের জন্য শেষনিঃশ্বাস পর্যন্ত লড়াই করবেন।
পাঞ্জশিরে লড়াইয়ে কয়েক শ মানুষ নিহত হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে।
কাবুলের উত্তরে আফগানিস্তানের অন্যতম ক্ষুদ্র প্রদেশ পাঞ্জশির। এ প্রদেশটি দখলেই কঠিন প্রতিরোধের মুখে তালেবান। আফগান সেনারা আত্মসমর্পণ করে ফেলায় আগস্টে রাজধানীসহ দেশের সব বড় শহরের নিয়ন্ত্রণ বিনা বাধায় নিয়েছে গোষ্ঠীটি।
একমাত্র ব্যতিক্রম দেড় থেকে দুই লাখ বাসিন্দার ছোট্ট পাঞ্জশির।
আফগান সেনাবাহিনী নয়, অঞ্চলটি ধরে রাখার চেষ্টা করছে সাবেক সেনা ও স্থানীয় লোকজন। পাহাড়ে ঘেরা প্রদেশটিতে লুকিয়ে থেকে নিজেদের বাঁচিয়ে তালেবান যোদ্ধাদের সঙ্গে লড়াই করছেন তারা।
১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালে যখন প্রথম দফায় আফগানিস্তানের শাসনব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল তালেবান, তখনও পাঞ্জশিরের দখল নিতে পারেনি গোষ্ঠীটি।
এবারও তালেবানের পাঞ্জশির দখলের দাবি নাকচ করে দিয়েছেন প্রদেশটির অন্য নেতারা। তারা জানিয়েছেন, পাঞ্জশিরকে তালেবানের হাত থেকে বাঁচাতে জোটবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে ক্ষমতাচ্যুত আফগান সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীর সাবেক সদস্য ও স্থানীয়সহ কয়েক হাজার যোদ্ধা।
তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন আদিবাসী নেতা আহমেদ মাসুদ। আশির দশকে সাবেক সোভিয়েতবিরোধী লড়াই এবং নব্বইয়ের দশকে তালেবানবিরোধী লড়াইয়ে সফল যোদ্ধার সন্তান তিনি।
মাসুদ বলেন, ‘পাঞ্জশির তালেবান দখল করেছে বলে ভুয়া প্রচার চালাচ্ছে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম। সবটাই মিথ্যা।’
আফগানিস্তানে দীর্ঘদিন ধরেই তালেবানকে মদদ দেয়ার অভিযোগ রয়েছে প্রতিবেশী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে।
পাঞ্জশির বাদে আফগানিস্তানের বাকি সব অঞ্চল এখন তালেবানের দখলে। যেকোনো সময় নতুন সরকার ঘোষণা করতে পারে তারা।
কট্টরপন্থি গোষ্ঠীটির সঙ্গে আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের আহ্বানে শুক্রবার সাড়া দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও যুক্তরাজ্য। তবে তারা আফগানিস্তানের সরকার হিসেবে তালেবানকে স্বীকৃতি দেবে না বলেও স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে।
কাবুলে কূটনৈতিক উপস্থিতি পুনঃপ্রতিষ্ঠার পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছে ইইউ। তবে সবটাই কঠোর শর্ত সাপেক্ষে। আফগান জনতার নিরাপত্তা হবে মূল লক্ষ্য।
আরও পড়ুন:A video message sent to us @BBCWorld from one of the leaders of the anti-Taliban resistance, fmr VP @AmrullahSaleh2 who says they're under attack from terrorists and points the finger of blame at Pakistan. Pakistan of course deny they support Taliban forces #Panjshir #Afghanistan pic.twitter.com/w3e6GnrRXi
— Yalda Hakim (@BBCYaldaHakim) September 3, 2021
পাবনা থেকে ঢাকায় সরাসরি ট্রেন সার্ভিস চালু, ঈশ্বরদী বিমানবন্দর চালু, শহরে চার লেন সড়ক নির্মাণ, আরিচা-কাজিরহাট ফেরিঘাট খয়েরচরে স্থানান্তরের দাবিতে মানববন্ধন করেছে শেকড় পাবনা ফাউন্ডেশনের ব্যানারে পাবনাবাসী। যেকোন মূল্যে ট্রেন সার্ভিস চালু করতে হরে এই সরকারকে। এসব চারদফা দাবি বাস্তবায়ন না হলে চরম মূল্য দিতে হবে সংশ্লিষ্টদের বলে হুঁশিয়ারী দেওয়া হয়।
রোববার (১৩ জুলাই) সকাল ১১ টা থেকে ঘন্টাব্যাপী আব্দুল হামিদ সড়কের শহীদ চত্ত্বর থেকে পুরো শহরজুড়ে বিশাল মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, পাবনার রাজনৈতিক সংগঠনের চরম ব্যর্থতায় আমরা ট্রেনের দাবিতে রাজপথে নেমে এসেছি। এটাতো রাজনৈতিক দলের কাজ। পাবনা থেকে মাঝ পাড়া পর্যন্ত অকার্যকর একটি রেল লাইন চালু করা হয়েছে। সেটি কার্যকর করে দ্রুত পাবনা-ঢাকা ট্রেন সার্ভিস চালু করে ঢাকায় যাতায়াত সহজীকরণ করতে হবে। কাজিরহাটের ফেরিঘাট খয়েরচরে স্থানান্তর করা হলে দু'ঘন্টার পথ ১৫ মিনিটে পারাপার হওয়া যাবে। ঈশ্বরদী ইপিজেড, রপপুর প্রকল্পের জন্য বিমানবন্দর চালু করা হোক। যানজট নিরসনে পাবনা শহরে চার লেন সড়ক নির্মাণ করতে হবে। পাবনা আটঘরিয়া হয়ে মাঝপাড়া দিয়ে ৩০ কিলোমিটার ঘুড়ে ট্রেন ঢাকায় যাওয়ার কথা শুনতেছি। এটা আমরা কোনভাবেই মেনে নেবোনা।
যেকোন মূল্যে পাবনা ঢাকা ট্রেন চালু করতেই হরে। তাছাড়া এটার জন্য সংশ্লিষ্টদের চরম মূল্য দিতে হবে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের আন্দোলন শেষে সরকার পতনের আন্দোলনে পরিনত হয়েছিল। আমাদের এই দাবি যেন অন্য দাবিতে পরিনত না হয়। আমরা সবদিক থেকেই বঞ্চিত ও বৈষম্যের শিকার।
বক্তারা আরও বলেন, পাবনাবাসীর প্রাণের দাবি ছিল নগরবাড়ি আরিচায় নতুন যমুনা সেতু নির্মাণ করা। দ্বিতীয় যমুনা সেতু এখান দিয়ে দ্রুত বাস্তবায়ন করা হলে এ অঞ্চলের মানুষের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন তরান্বিত হবে। ইছামতী নদী উদ্ধারে অনেক জটিলতা ছিল। এখন নদী খনন হচ্ছে। যারা মামলা করেছেন দ্রুত মামলা তুলে নিয়ে নদী খননের কাজ দ্রুত বাস্তবায়ন করতে সহযোগীতা করুন। এটা হলে পাবনাবাসীর জন্য স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে। এছাড়াও পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল আধুনিকায়ন করা, মানসিক হাসপাতাল সংস্কার করতে হবে। এটা জুলাইয়ের মাস। এই চত্বরেই দুজন শিক্ষার্থী শহীদ হয়েছিল। এখনো ওসব খুনি গ্রেফতার হয়নি। দ্রুত গ্রেপ্তার করতে প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান।
শেকড় পাবনা ফাউন্ডেশনের সভাপতি খান হাবিব মোস্তফার সভাপতিত্বে ও আতাইকুলা ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক রাজু ইসলাম ওলির সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, পাবনা জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা মো: ইকবাল হোসাইন, পাবনা প্রেসক্লাবের সভাপতি আখতারুজ্জামান আখতার, সাবেক সভাপতি এবিএম ফজলুর রহমান, জামায়াতের পৌর আমীর আব্দুল লতিফ, দেশ বরেণ্য শিল্পী ওবায়দুল্লাহ তারেক, সাইদুল ইসলাম, কিন্ডার গার্টেন এসোসিয়েশনের সভাপতি মাহফুজুর রহমান, আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক আব্দুল আলিম, এডভোকেট রানা, রোটারিয়ান বিনয় জ্যোতি কুন্ডু, সমন্বয়ক শাওন হোসাইন, আইডিয়াল গ্রুপের পরিচালক সিরাজুল ইসলাম সহ পাবনার সর্বস্তরের জনগণ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও মানবন্ধনে পাবনা শহরের বিভিন্ন স্কুল কলেজ ও নার্সিং শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশন পদ্ধতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ।
প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত কোনো প্রার্থী যদি পুলিশ ভেরিফিকেশন প্রতিবেদন ফরম জমা না দেন, তবে তাকে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হবে না। অর্থাৎ ভেরিফিকেশন ছাড়া নিয়োগের সুযোগ থাকছে না।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়েরের সই করা পরিপত্রে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
পরিপত্রে বলা হয়েছে, ‘বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের নিকট থেকে পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য প্রয়োজনীয় পুলিশ ভেরিফিকেশন প্রতিবেদন ফরম প্রাপ্তির পর তা সরাসরি স্পেশাল ব্রাঞ্চ, পুলিশ অধিদপ্তরে পাঠাবে। প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের মধ্যে কেউ পুলিশ ভেরিফিকেশন প্রতিবেদন ফরম দাখিল না করলে তাকে নিয়োগ সুপারিশের জন্য বিবেচনা করা হবে না।’ এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
এর আগে বিদ্যমান নিয়মে, এই ভেরিফিকেশন ফরম শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগে পাঠানো হতো। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সে পদ্ধতি আর অনুসরণ করা হবে না।
পরিপত্রের অনুলিপি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ, আইন মন্ত্রণালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
অন্যদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া দ্রুত ও কার্যকর করার লক্ষ্যেই এ পরিবর্তন আনা হয়েছে। কারণ, আগের প্রক্রিয়ায় ধাপে ধাপে পাঠানোর কারণে দীর্ঘসূত্রিতা তৈরি হচ্ছিল। তাই এনটিআরসিএকে সরাসরি পুলিশের সঙ্গে যুক্ত করে সময় কমানো এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, এনটিআরসিএ-এর অধীন এমপিওভুক্ত বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ, মাদ্রাসা, কারিগরি ও ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তির আলোকে এক লাখ ৮২২ জন শিক্ষক নিয়োগের আবেদন চলছে।
এ আবেদন চলার মধ্যেই গত বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ পুলিশ ভেরিফিকেশন সংক্রান্ত পরিপত্রটি জারি করেছে।
রাজধানীর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তিন নম্বর টার্মিনালের সামনে সড়ক দুর্ঘটনায় এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন।
শনিবার (১২ জুলাই) রাত ১১টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত আশরাফুল আলম (৩২) গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর থানার কালনী গ্রামের প্রয়াত মকসেদ আলীর ছেলে।
নিহতের চাচাতো ভাই হাসান আল আরিফ জানান, রাত সোয়া ১১টার দিকে আশরাফুল মোটরসাইকেল চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় তিন নম্বর টার্মিনালের সামনে একটি অজ্ঞাতনামা পিকআপ ভ্যান তাকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই তিনি নিহত হন।
পুলিশ জানায়, খবর পেয়ে এয়ারপোর্ট থানা পুলিশের সহযোগিতায় লাশ উদ্ধার করে আইনি প্রক্রিয়া শেষে দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান হাসান। ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ঢামেক হাসপাতালের মর্গের দায়িত্বে থাকা এয়ারপোর্ট থানার পুলিশ সদস্য ইসমাইল জানান, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জন্য শুভেচ্ছা উপহার হিসেবে এক হাজার কেজি হাড়িভাঙ্গা আম পাঠাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। দুই প্রতিবেশী দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক জোরদারে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ হাইকমিশনের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সোমবার (১৫ জুলাই) এই আমের চালানটি ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে পৌঁছাবে।
নয়াদিল্লি পৌঁছানোর পর আমগুলো ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, কূটনীতিক এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যেও বিতরণ করা হবে— মৈত্রীর অংশ হিসেবে।
এছাড়া, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও আম পাঠাচ্ছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীসহ সেখানকার বিশিষ্টজনদের জন্য ৩০০ কেজি হাড়িভাঙ্গা আম উপহার পাঠানো হয়। আখাউড়া স্থলবন্দর হয়ে বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটে ৬০টি কার্টনে এসব আম পাঠানো হয়।
প্রতিবছর বাংলাদেশ সরকার মৌসুমি উপহার হিসেবে ত্রিপুরা রাজ্য সরকার ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের জন্য আমসহ বিভিন্ন ফল পাঠিয়ে থাকে। এর জবাবে ত্রিপুরা রাজ্য সরকারও উপহার হিসেবে বাংলাদেশের জন্য পাঠায় বিখ্যাত রসালো ‘কুইন’ জাতের আনারস।
চলতি বছরের আম উপহার পাঠানোর কার্যক্রমটি পরিচালনা করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং এটি রপ্তানিকারকের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়। বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন, আগরতলার কর্মকর্তাদের কাছে উপহারের চালানটি হস্তান্তর করা হয়।
এই উদ্যোগকে ‘আম কূটনীতি’ হিসেবে অভিহিত করা হয়, যা আগের প্রশাসনের সময়েও চলমান ছিল। এখনো এটি সৌহার্দ্য ও পারস্পরিক শুভেচ্ছার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর সুপারিশ বিষয়ে ঐক্য গড়ে এবং রাষ্ট্র সংস্কারের বিভিন্ন বিষয়ে একমত হয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ‘জুলাই সনদ’ তৈরির লক্ষ্যে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আজ আলোচনায় বসেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে আজ সকাল সাড়ে ১১টায় দ্বিতীয় দফার দ্বাদশ দিনের মত আনুষ্ঠানিকভাবে এ আলোচনা শুরু হয়েছে।
কমিশন সূত্রে জানা গেছে, আজকের আলোচনার সূচিতে প্রাধান্য পাচ্ছে- তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা, প্রধান বিচারপতি নিয়োগবিধি ও জরুরি অবস্থা ঘোষণা।
এর আগে, উল্লেখ্য তিনটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। পূর্বের অমীমাংসিত বিষয়গুলো নিয়ে আজ অধিকতর আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।
বরাবরের মতো আজকেও আলোচনায় সভাপতিত্ব করছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ।
এছাড়া, কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন- বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. মো. আইয়ুব মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
সংলাপ শুরু হওয়ার আগে সূচনা বক্তব্যে কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যে বলেন, যেহেতু আপনারা রাজনৈতিক দল করেন, সেহেতু সব বিষয়ে আপনাদের একটি নির্দিষ্ট অবস্থান থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। তবে আপনাদের প্রতি অনুরোধ, একটি মাঝামাঝি স্থানে এসে আমাদের দাঁড়াতে হবে।
পরবর্তীতে যদি জনগণের কাছ থেকে আপনারা প্রতিনিধিত্ব লাভ করতে পারেন, তাহলে সেটি পরিবর্তন করতে পারেন এবং সেটি জনগণের রায়ের ওপর নির্ভরশীল থাকবে।
কিন্তু কমিশন মনে করছে, একটি পর্যায়ে আসা ভালো।
তিনি আরো বলেন, আমরা আপনাদের বক্তব্যকে গুরুত্বহীন মনে করছি না, বরং আমরা চাচ্ছি সকলে একটি ঐক্যমতে পৌঁছাক। চাইলেই এ আলোচনা বাদ দেওয়া যেতে পারে, কিন্তু তাতে বিদ্যমান পরিস্থিতিই থেকে যাবে। আমাদের একটি জায়গায় আসতে হবে- এই বিবেচনাটা যদি আপনারা করেন, তাহলে আমাদের পক্ষে ঐকমত্য গঠন করা সম্ভব।
তিনি সকলের প্রতি কিছুটা ছাড় দিয়ে ও কিছুটা অবস্থান পরিবর্তন করে একটি জায়গায় আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনারা অবস্থার পরিবর্তন করে হলেও এগিয়ে আসুন। না হলে আমরা যেখানে আছি, সেখানেই থেকে যাব। গ্রহণযোগ্যতার দিক থেকে এইটুকু বিবেচনা করুন যে, এটা সম্ভব কি-না।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় অংশগ্রহণ করছে- বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা।
এর আগে, দফায় দফায় বৈঠকে কমিশন প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতি, রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি ও সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণকল্পে স্বতন্ত্র কমিটি গঠন করাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেছে।
কমিশন সূত্রে জানা যায়, আলোচনা শেষে ব্রিফ করবেন রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিরা।
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের ত্রাস খ্যাত শাহীনুর রহমান ওরফে শাহীন ডাকাতকে কক্সবাজার আদালতের হাজতে মুঠোফোন সুবিধা দেয়ার ঘটনায় দুই টিএসআই সহ ৫ জনকে দায়িত্ব অবহেলার দায়ে পুলিশ লাইন্স এ সংযুক্ত করা হয়েছে।
শনিবার সন্ধ্যায় জেলা পুলিশের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এছাড়া কোর্ট হাজতে আসামিদের সাথে সাক্ষাৎতের বিষয়ে আরও সর্তক হওয়ার কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
ক্লোজড হওয়াদের দুই টিএসআই, তিনজন কনস্টেবল। তারা হলেন টিএসআই সুরেন দত্ত, আবদুল ওয়াহেদ, কনস্টেবল নাজম হায়দার, গোলাম।মোস্তফা ও ইয়াছিন নূর।
এর আগে এই ঘটনা নিয়ে শুক্রবার কক্সবাজার জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জসীম উদ্দিন চৌধুরীকে প্রধান করে তিন সদস্যোর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
গত বুধবার (৯ জুন) আদালতে হাজিরা দিতে কোর্ট পুলিশের হেফাজতে হাজতখানা থেকে বের করে আনা হয় শাহীনকে। ঠিক তখনই তার পকেটে থাকা মোবাইল ফোন নজরে আসে কক্সবাজারের গণমাধ্যমকর্মী দের চোখে। এনিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে গঠিত হয় তদন্ত কমিুট।
জানা গেছে, গত ৫ জুন সকালে কক্সবাজারের রামু উপজেলার গর্জনিয়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য শাকের আহমদের বাড়ি থেকে সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয় শাহীন ডাকাতকে। তার বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতি, অস্ত্র, মাদকসহ অন্তত ২০টি মামলা রয়েছে।
কক্সবাজার আদালতের কোর্ট পরিদর্শক মো. গোলাম জিলানী ক্লোজড'র বিষয়টি স্বীকার করেন।
‘মন মোর মেঘেরও সঙ্গী’ এই স্লোগানকে প্রতিপাদ্য করে নওগাঁয় উদযাপিত হলো বর্ষা উৎসব-১৪৩২।
শনবিার (১২ জুলাই) রাত ৮টায় শহরের প্যারিমোহন লাইব্রেরী গ্রন্থাগারে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় এই বর্ষা উৎসব। শুরুতে দলীয় গান পরিবেশনের মধ্যদিয়ে শুরু হয় উৎসব। পরে একে একে গান, নাচ, আবৃত্তি পরিবেশন করেন শিল্পীরা।
এছাড়াও বর্ষাকথনসহ অন্যান্য আয়োজনের মাধমে রাত ১০টায় শেষ হয় এই বর্ষা বরণ উৎসবটি। বর্ষা বরণ উৎসবের আয়োজন করেন ‘নওগাঁ সাংস্কৃতিক ঐক্য’ নামে একটি সংগঠন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চলনা করেন সংগঠনটির সভাপতি মনোয়ার লিটন ও সাধারন সম্পাদক মাগফুরুল হাসান বিদ্যুৎ।
অনুষ্ঠানে নাচ, গান আর কবিতা আবৃত্তি ও বর্ষাকথনে ক্ষণে ক্ষণে ভেসে আসে গ্রাম বাংলার প্রকৃতিতে বর্ষার আবেদনের কথা। শিল্পীদের এমন পরিবেশনায় বর্ষা বন্দনায় মেতে ওঠে স্থানীয় শিল্পী এবং সংস্কৃতি কর্মীরা।
আয়োজকরা জানান, বর্ষা উৎসব উদযাপন করার মাধ্যমে প্রকৃতির প্রতি মানুষের ভালবাসা ও শ্রদ্ধাবোধ প্রকাশ পায়। এছাড়াও প্রজন্মের সাথে প্রজন্মের মিল বন্ধন, অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও শহরের যান্ত্রিক জীবনে হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যর ধারনা দিতে এমন উৎসবের আয়োজন।
নওগাঁ সাংস্কৃতিক ঐক্য সংগঠনটির সভাপতি মনোয়ার লিটন বলেন, বর্ষা আবহমান বাংলার শিল্প, সাহিত্য সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করেছে। বর্ষার সাথে বাংলার মানুষের সম্পর্ক বহু প্রাচীন। বর্ষায় প্রকৃতির রূপ-বৈচিত্র্যে ব্যাপক পরিবর্তন আসে। প্রচন্ড খরতাপের পর বর্ষা এলে প্রাণ ফিরে পায় প্রকৃতি। সাহিত্যের পরতে পরতে বর্ষা যেমন উদ্ভাসিত তেমই যাপিত জীবনেও বর্ষা এনে দেয় নিজেকে খুজে পাওয়ার মূহুর্ত। গ্রীষ্মের ধূলোমলিনতা ধুয়ে প্রকৃতি সবুজের সমারোহে সাজে। জীর্ণতা ধুয়ে মুছে, নব-যৌবন আর শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দিক এবারের বর্ষা এমনি প্রত্যাশার কথা বলেন তিনি।
মন্তব্য