আফগানিস্তানে তালেবানের প্রথম শাসনামলের মতো এবারও দেশটির মন্ত্রিসভায় থাকছেন না কোনো নারী।
তালেবানের এক জ্যেষ্ঠ নেতার বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
এর মধ্য দিয়ে কাবুল পতনের পর মন্ত্রিসভায় নারীর অংশগ্রহণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠনের অঙ্গীকার থেকে সরে আসছে তালেবান।
আফগানিস্তানে নতুন সরকার গঠনের দ্বারপ্রান্তে তালেবান। কাল জুমার নামাজের পর নতুন সরকারের ঘোষণা আসতে পাারে বলে তালেবানের দুটি সূত্র এএফপিকে জানায়।
কাতারের রাজধানী দোহায় তালেবানের রাজনৈতিক কার্যালয়ের প্রধান শের মোহাম্মদ আব্বাস স্তানিকজাই বিবিসি পাশতুকে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আফগান নারীরা দেশের বিভিন্ন সংস্থায় আগের মতোই কাজ করতে পারবেন।
‘তবে নতুন মন্ত্রিসভা বা সরকারের শীর্ষ কোনো পদে তাদের হয়তো নেয়া হবে না। নতুন সরকারে নারীদের অন্তর্ভুক্তির সম্ভাবনা তেমন একটা নেই।’
বৃহস্পতিবার আফগানিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলীয় হেরাত প্রদেশে কাজের অধিকার এবং নতুন সরকারে নারীদের রাখতে বিক্ষোভ করেন প্রায় অর্ধশত আফগান নারী।
বিক্ষোভে নারীরা বলেন, ‘শিক্ষা, কাজ করা ও নিরাপত্তা আমাদের অধিকার। আমরা ভীত নই। আমরা ঐক্যবদ্ধ।’
ইরান সীমান্তবর্তী হেরাত আফগানিস্তানের তুলনামূলক অগ্রসর জনপদ। সেখানকার মেয়ে শিক্ষার্থীরা এরই মধ্যে স্কুলে ফিরে গেছে।
বিক্ষোভ আয়োজনকারীদের একজন বাসিরা তাহেরি। তিনি এএফপিকে জানান, নতুন সরকারে নারীদের তালেবান রাখুক, এটা তিনি চান।
তাহেরি বলেন, ‘আমরা চাই, তালেবান আমাদের সঙ্গে আলোচনা করুক, আমাদের পরামর্শ নিক।
‘তালেবানের বিভিন্ন বৈঠকে আজ পর্যন্ত আমরা নারী কোনো প্রতিনিধি দেখিনি।’
কাবুল পতনের পর ১ লাখ ২২ হাজার আফগান তালেবানের ভয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়।
এদের মধ্যে আফগানিস্তানের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো তালেবানের কোনো নেতার সাক্ষাৎকার নেয়া নারী সংবাদকর্মী বেহেশতা আরগান্দও ছিলেন।
পরিবার নিয়ে কাতারে অবস্থান করা টোলোনিউজের সাবেক এই কর্মী বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আফগান নারীদের পাশে দাঁড়ানো উচিত।
‘তারা খুব খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছেন।’
১৫ আগস্ট কাবুল পতনের দুদিন পর আফগানিস্তানের নতুন সরকারে অংশ নিতে নারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল তালেবান।
সে সময় তালেবানের সাংস্কৃতিক কমিশনের সদস্য এনামুল্লাহ সামানগানি বলেছিলেন, ‘তালেবান নারীদের ভোগান্তির কারণ হতে চায় না। শরিয়াহ আইন অনুযায়ী তাদের সরকারকাঠামোয় থাকা উচিত।’
সোমবার গভীর রাতে আফগানিস্তান ছাড়ে যুক্তরাষ্ট্রের সব সেনা। দীর্ঘ ২০ বছর পর আফগানিস্তান বিদেশি সেনামুক্ত হয়।
আফগানিস্তানের বিপর্যস্ত অর্থনীতি ও ব্যাপক মাত্রায় গণ-অনাস্থার মধ্যেই শুক্রবার নতুন মন্ত্রিসভার ঘোষণা দিচ্ছে তালেবান।
কাবুল পতনের পর বিভিন্ন সময়ে দেশের যুদ্ধবিধ্বস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধার ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠনের অঙ্গীকার করেছিল তালেবান।
আরও পড়ুন:ঢালিউড অভিনেত্রী পরীমনি সিনেমা থেকে অনেকটা দূরে আছেন। অভিনয়ে খুব একটা না থাকলেও সামাজিক মাধ্যমে নেটিজেনদের মাঝে তিনি সবসময় আলোচনায় থাকেন। এবার আলোচনায় এলেন নিজের কারাগারে বন্দিজীবন নিয়ে। অভিনেত্রী কারাগারে বন্দিজীবনের কঠিন অধ্যায় নিয়ে এবার বড়পর্দায় আসতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন পরীমনি।
চার বছর আগে মাদক মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর রিমান্ড ও কারাবাসের যে বাস্তব অভিজ্ঞতা পরীমনি পেয়েছিলেন, সেটিই এবার রুপালি পর্দায় নেওয়ার কথা চিন্তা করছেন তিনি। ২০২১ সালে র্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন পরীমনি।
সেদিন তার বাসায় প্রায় চার ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন আলামত জব্দ করে সংস্থাটি। পরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয় তার বিরুদ্ধে। সেই ঘটনায় পরীমনি তিন দফায় মোট সাত দিনের রিমান্ডে ছিলেন।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সেই সময়ে কারাগারে বন্দিজীবনের ঘটনার অভিজ্ঞতার কথা বললেন পরীমনি। কারাবাসের সময়কার অনুভূতি প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বলেন, জেলখানা নিয়ে আমি কোনো দিন কিছু বলিনি। বলতেও চাই না। কারণ সত্যিটা মানুষ জানলে আইনের ওপর শ্রদ্ধা হারাবে। তিনি বলেন, ‘রিমান্ড একটা ফালতু জিনিস। সেখানে মানুষকে ভয় দেখানোর জন্য বড় বড় ছবি লাগানো থাকে। কিন্তু এগুলো দেখে কেউ ভয় পায় না। আমি বলেছিলাম— এগুলো বদলানো উচিত।
আটক প্রসঙ্গে পরীমনি বলেন, আমাকে কেন আটক করা হয়েছিল, তারাই জানত না। একজন আরেকজনকে জিজ্ঞেস করত। ওরা নিজেরাই বিভ্রান্ত ছিল। তিনি বলেন, জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পরপরই তিনি নিজের অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি বই লিখেছেন। সেই বই ভবিষ্যতে প্রকাশ করবেন তার ছেলে। একই সঙ্গে বইয়ের গল্প থেকেই সিনেমা তৈরির ইঙ্গিত দেন তিনি। অভিনেত্রী বলেন, আমার ছেলে বড় হয়ে বইটা প্রকাশ করবে। চাইলে এটাকে সিনেমা বানাতেও পারি।
তালাবাটি কম্বল, জেলখানার সম্বল— এ প্রসঙ্গে পরীমনি বলেন, জেলখানার খাবার অনেক স্বাস্থ্যকর। এমনকি অনেক সময় নষ্টও হয়। রান্না হয় ফ্রেশভাবে, পুরো জায়গাটা বেশ ওয়েল মেইনটেইন বলে জানান অভিনেত্রী।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিলকে (আইএফএডি) বাংলাদেশের তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা, নারী, কৃষক ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকারীদের সহায়তার জন্য একটি সামাজিক ব্যবসা তহবিল গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন।
রোববার ইতালির রোমে ওয়ার্ল্ড ফুড ফোরামের ইভেন্টের ফাঁকে আইএফএডির প্রেসিডেন্ট আলভারো লারিওর সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ আহ্বান জানান।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমি আপনাদের একটি সামাজিক ব্যবসা তহবিল গঠনের আহ্বান জানাই। এমন তহবিল দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা মানুষের স্বাস্থ্যসেবা, তরুণ, কৃষক, নারী ও মৎস্য খাতের উদ্যোক্তাদের সহায়তা দেবে।’
বৈঠকে দুই নেতা বিভিন্ন কৌশলগত বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। এর মধ্যে ছিল বাংলাদেশের গভীর সমুদ্রে মৎস্য শিল্প গড়ে তোলা, আম ও কাঁঠালের রপ্তানি সম্প্রসারণ, জলবায়ু সহনশীল কৃষি উদ্যোক্তা তৈরি এবং মহিষের দুধ দিয়ে মোজারেলা চিজসহ দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদনে সহায়তা।
অধ্যাপক ইউনূস আইএফএডি প্রেসিডেন্টকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান এবং কৃষি, সামাজিক ব্যবসা ও প্রযুক্তি খাতে সহযোগিতার সম্ভাবনা যাচাইয়ে একটি বিশেষজ্ঞ দল পাঠানোর অনুরোধ করেন।
প্রত্যুত্তরে আইএফএডি প্রেসিডেন্ট আলভারো লারিও বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের সঙ্গে যৌথভাবে সামাজিক ব্যবসা উদ্যোগে কাজ করার ব্যাপারে গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি জানান, বর্তমানে আইএফএডি বাংলাদেশের কৃষিখাতে অর্ধডজনেরও বেশি প্রকল্পে অর্থায়ন করছে।
প্রধান উপদেষ্টা ফল প্রক্রিয়াকরণ, কোল্ড স্টোরেজ, গুদাম সুবিধা ও আম-কাঁঠালের বৃহৎ পরিসরে রপ্তানিতে প্রযুক্তিগত সহায়তা ও বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে আম রপ্তানি শুরু করেছি, তবে পরিমাণ এখনো কম। চীন বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ আম ও কাঁঠাল আমদানির আগ্রহ দেখিয়েছে।’
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি জানান, বাংলাদেশের নারী দুগ্ধ খামারিরা মহিষের দুধ দিয়ে মোজারেলা চিজ তৈরি করছেন। তিনি এ খাত সম্প্রসারণে আইএফএডির সহায়তা চান।
বঙ্গোপসাগরে গভীর সমুদ্রের মৎস্যসম্পদ নিয়ে আলোচনায় অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বিনিয়োগ ও প্রযুক্তিগত জ্ঞানের অভাবে বাংলাদেশের জেলেরা এখনো অগভীর পানিতেই সীমাবদ্ধ।
তিনি বলেন, ‘আমরা এখনো গভীর সমুদ্রে যেতে সাহস পাই না। আইএফএডি এই খাতে অর্থায়ন ও প্রযুক্তি সহায়তার মাধ্যমে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।’
বাংলাদেশে ১৯৭৮ সালে কার্যক্রম শুরুর পর থেকে আইএফএডি ৩৭টি প্রকল্পে অংশীদার হয়েছে, যার মোট প্রকল্প ব্যয় ৪ দশমিক ২৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ১ দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলার সরাসরি আইএফএডি অর্থায়ন করেছে। বর্তমানে ৪১২ মিলিয়ন ডলারের ছয়টি প্রকল্প চলমান এবং আরও একটি প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন।
অধ্যাপক ইউনূস স্থানীয় সময় রোববার বিকেল ৫টার দিকে রোমে পৌঁছেন। তিনি জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) আয়োজিত ওয়ার্ল্ড ফুড ফোরামে অংশ নেবেন এবং সেখানে মূল অধিবেশনে বক্তব্য দেবেন।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার, এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক ও সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ, পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম এবং আইএফএডির এসোসিয়েট ভাইস প্রেসিডেন্ট ডোনাল ব্রাউন। সূত্র: বাসস
৫ মে শাপলা চত্বর গণহত্যা দিবস ঘোষণাসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত শিক্ষক নিয়োগের বিধিমালা বাতিল করে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের বিধিমালা জারি এবং পবিত্র কোরআন ও ধর্ম অবমাননার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আইন করা। এছাড়া জুলাই সনদেও ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা গণহত্যাকাণ্ড এবং ২০২১ সালের মোদিবিরোধী আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের উল্লেখ রাখার কথা বলেছে সংগঠনটি।
সোমবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে হেফাজতের মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ সাজিদুর রহমানের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী।
এ সময় হেফাজত মহাসচিব সাজিদুর রহমান বলেন, কোন অভিভাবক তার সন্তানকে নাচ-গান শেখাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি করেন না। সংগীতের চেয়ে মুসলমানদের সন্তানদের ধর্ম শিক্ষা জরুরি। কোরআন আবমাননার জন্য শাস্তিযোগ্য আইন করতে হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বলেন, হেফাজতে ইসলাম অরাজনৈতিক ধর্মীয় একটি সংগঠন। কোন দলীয় রাজনৈতিক সাংগঠনিক কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ততা নেই। নির্বাচন নিয়ে হেফাজতের নিজস্ব কোন তৎপরতা বা জোট করা হেফাজতের মৌলিক নীতির পরিপন্থি। তবে হেফাজতে রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক, দেশপ্রেমিক ব্যক্তিরা আছেন। তারা যার যার রাজনৈতিক বক্তব্য ও এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেন। এর সঙ্গে হেফাজতের কোন সম্পর্ক নেই, হেফাজত কোন দায় নেবে না।
ভোট নিয়ে হেফাজত আমিরের একটি বক্তব্য প্রসঙ্গে মামুনুল হক বলেন, হেফাজত আমির দেশের একজন শীর্ষ আলেম ও মুরব্বি। তিনি তার মুরব্বির জায়গা থেকে ধর্মীয় নির্দেশনা দিয়ে থাকেন।
তবে ধর্মীয় দৃষ্টিতে কাকে ভোট দেয়া যাবে বা যাবে না-এ বিষয়ে হেফাজতের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভোটের সময় এ বিষয়ে হেফাজত তার দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরবে।
বিভিন্ন মাজারে হামলা প্রসঙ্গে প্রসঙ্গে মামুনুল হক বলেন, বিভিন্ন মাজারে ইসলাম ও সমাজবিরোধী এবং অনৈতিক কর্মকাণ্ড হয় বলে শোনা যায়। এসব কর্মকাণ্ড বন্ধে আমরা সরকারকে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাই। তবে হেফাজত আইন হাতে তুলে নেবে না।
সংবাদ সম্মেলনে দোয়া ও মোনাজাত করেন হেফাজতের আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, নায়েবে আমির মুফতি জসিম উদ্নি, মাওলানা আব্দুল আউয়াল, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা ফজলুল করিম কাসেমী, খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, সহকারী মহাসচিব মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজি প্রমুখ।
চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী ‘জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫’ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান হবে ১৭ অক্টোবর শুক্রবার। জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ওইদিন বিকালে এ অনুষ্ঠান হবে।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতিতে গণভোটের সময়সূচি নিয়ে মতবিরোধ থাকলেও সনদে সইয়ের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। সনদে কারা সই করবেন, সেটিও দলগুলো ঠিক করে রেখেছেন। তবে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলগুলোর একাধিক নেতা জানিয়েছেন, তারা ‘জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫’-এর চূড়ান্ত কপি দেখে তারপরই সইয়ের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
বিএনপির সূত্র জানিয়েছে, দলটি জুলাই সনদে স্বাক্ষরের জন্য প্রস্তুত। দলের পক্ষে দুজন নেতা এ সনদে স্বাক্ষর করবেন। তারা হলেন- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় বিএনপির পক্ষে নেতৃত্ব দিয়েছেন সালাহউদ্দিন আহমদ। আর সার্বিকভাবে গত ১৭ বছর রাজপথের আন্দোলনে বিএনপির সাংগঠনিক বিষয়গুলো তদারকি করেছেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল। দলের স্থায়ী কমিটি তাদের মনোনয়ন চূড়ান্ত করে আরও আগেই নাম পাঠিয়েছে ঐকমত্য কমিশনে।
কোনো ব্যক্তির নামে ১০টির বেশি সিম থাকলে সেগুলো আগামী ৩০ অক্টোবরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট অপারেটরের মাধ্যমে ‘ডি-রেজিস্টার’ করতে বলেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) বিটিআরসির অফিশিয়াল ফেসবুকে এক বার্তায় এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, নিজ এনআইডিতে পছন্দমতো ১০টি সিমকার্ড রেখে অতিরিক্ত সিমকার্ডগুলো ৩০ অক্টোবর ২০২৫ এর মধ্যে সংশ্লিষ্ট মোবাইল অপারেটরের কাস্টমার কেয়ারের মাধ্যমে ডি-রেজিস্টার (নিবন্ধন বাতিল)/মালিকানা পরিবর্তন করুন।
জাতীয় পরিচয়পত্রের বিপরীতে কতগুলো সিমকার্ড নিবন্ধিত হয়েছে তা যাচাই পদ্ধতি :
*১৬০০১#, এনআইডির শেষ ৪ ডিজিট, সেন্ড
বিটিআরসি বলেছে, কোনো গ্রাহক বর্ণিত প্রক্রিয়ায় সিম ডি-রেজিস্ট্রোর/মালিকানা পরিবর্তনে ব্যর্থ হলে বিটিআরসি কর্তৃক অতিরিক্ত সিমকার্ডগুলো দৈবচয়নের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল করা হবে। গত মে মাসে কমিশন সভায় ব্যক্তির নামে সর্বোচ্চ সিমের সংখ্যা ১৫ থেকে ১০টিতে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত দেয় বিটিআরসি।
২০১৭ সালে একজন গ্রাহকের নামে সর্বোচ্চ ১৫টি সিম নিবন্ধন করা যাবে বলে নির্দেশনা দেয় বিটিআরসি। এর আট বছর পর চলতি বছরের ১৯ মে কমিশন সভায় ১৯ মে সিমের সংখ্যা কমানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয় সংস্থাটি।
রাজধানীর পল্টন মডেল থানার নাশকতার এক মামলায় বিএনপিন স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ ১৬৭ জনকে অব্যাহতির আদেশ দিয়েছেন আদালত। পুলিশের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে সোমবার (১৩ অক্টোবর) ঢাকার মহানগর দায়রা জজ সাব্বির ফয়েজের আদালত এই আদেশ দেন।
অব্যাহতিপ্রাপ্ত অন্যান্য উল্লেখযোগ্য আসামি হলেন– জাতীয়তাবাদী মহিলার দলের সভাপতি আফরোজ আব্বাস, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কফিল উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশিদ হাবিব, মিডিয়া ইউং শামসুদ্দিন দিদার, নির্বাহী কমিটির সদস্য আমুনুল ইসলাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুন রায়, যুবদলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম মনজু, ঢাকা দক্ষিণের ছাত্রদলের সভাপতি জহির উদ্দিন তুহিনসহ প্রমুখ।
মির্জা আব্বাসের আইনজীবী মহি উদ্দিন চৌধুরী এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, সম্প্রতি এই মামলায় তদন্ত শেষে অভিযোগের সত্যতা না পাওয়ায় দায় থেকে আসামিদের অব্যাহতির সুপারিশ করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ। আজ আদালত এ প্রতিবেদন গ্রহণ করে অভিযোগের দায় থেকে আসামিদের অব্যাহতির আদেশ দেন। ফ্যাসিস্ট সরকারের দায়ের করা মিথ্যা মামলায় দেরিতে হলেও আমরা সুবিচার পেয়েছি।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১৪ নভেম্বর বিএনপি নেত্রী আফরোজা আব্বাসের নেতৃত্বে একটি মিছিল ফকিরাপুলের দিক থেকে শো-ডাউন করে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আসে। এরপর নবী উল্লাহ নবী ও কফিল উদ্দিনের নেতৃত্বে অপর দুইটি মিছিল শো-ডাউন করে একই দিক থেকে আসতে থাকে এবং সর্বশেষ মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে ৮-১০ হাজার জনের একটি মিছিল নিয়ে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আসে। তারা নয়াপল্টনে ভিআইপি রোড বন্ধ করে মিছিল ও শো-ডাউন করে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে। পুলিশ তাদের রাস্তার এক লেন ছেড়ে দিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখা ও জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না করার অনুরোধ করলে তারা ক্ষিপ্ত হয়।
আরও বলা হয়, পূর্ব পরিকল্পিতভাবে মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে আসামিরা অবৈধ জনতাবদ্ধে বিএনপির পার্টি অফিস থেকে লাঠিসোঁটা নিয়ে নয়পল্টনে ভিআইপি রোডে হকস বে নামে গাড়ির শো রুমের উত্তর পাশে রাস্তায় পুলিশের একটি সরকারি ডাবল কেবিন পিকাপ পুড়িয়ে আনুমানিক মূল্য ৬০ লাখ টাকার ক্ষতি করে। সরকারি কাজে বাধা দিয়ে অতর্কিতে পুলিশকে আক্রমণ করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। আসামিরা রাস্তার পাশে ডিউটিরত এসির (পেট্রোল-মতিঝিল) সরকারী মিটসুবিসি প্রাইভেট কারে আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুনে পোড়া গাড়ির আনুমানিক মূল্য ৩৫ লাখ টাকা। আসামিদের নিক্ষেপিত ইটের আঘাতে কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। তাদের রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। আসামিরা নাইট এ্যাগেল মোড় থেকে পুলিশ হাসপাতাল ক্রসিং পর্যন্ত ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। তারা রাস্তায় চলাচলরত সাধারণ জনগণের উপর আক্রমণ করে প্রাইভেটকারসহ রাস্তায় আটকে পড়া আরও অনেক গাড়ি ভাঙচুর করতে থাকে। এ ঘটনায় পল্টন থানার উপ-পরিদর্শক মো. আল আমিন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। সম্প্রতি এই মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন মামলা তদন্ত কর্মকর্তা।
আজ সোমবার বেলা ১১টা ১৫ মিনিটের দিকে বায়ুদূষণে বিশ্বের ১২৬টি শহরের মধ্যে ঢাকার অবস্থান সপ্তম। আইকিউএয়ারের বাতাসের মানসূচকে (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স-একিউআই) এ সময় ঢাকার স্কোর ছিল ১৫১। বাতাসের এ মান ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
একই সময়ে দূষিত বায়ুর শহরগুলোর তালিকায় প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে ছিল ইরাকের বাগদাদ ও ভারতের দিল্লি। শহর দুটির স্কোর যথাক্রমে ২২৭৮ ও ১৯০। স্কোর ১৮৩ নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে আছে পাকিস্তানের লাহোর, চতুর্থ অবস্থানে আছে কলকাতা, স্কোর ১৬৮ এবং ১৬৩ স্কোর নিয়ে পঞ্চম অবস্থানে আছে উজবেকিস্তানের তাশকেন্ট।
আইকিউএয়ারের মানদণ্ড অনুযায়ী, স্কোর ৫১ থেকে ১০০ হলে তাকে মাঝারি বা গ্রহণযোগ্য মানের বায়ু হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরকে সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য ‘অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয়। সংবেদনশীল গোষ্ঠীর মধ্যে আছেন বয়স্ক, শিশু, অসুস্থ ব্যক্তি ও অন্তঃসত্ত্বা। স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’ বাতাস। স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে তাকে খুবই অস্বাস্থ্যকর বায়ু ধরা হয়। ৩০১ থেকে তার ওপরের স্কোরকে দুর্যোগপূর্ণ বা ঝুঁকিপূর্ণ ধরা হয়।
মন্তব্য