২০০১ সালে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার দুই দশক পর আরও বেশি শক্তি নিয়ে আফগানিস্তানের মসনদে আবির্ভূত হয়েছে তালেবান। এবার আগের চেয়েও বেশি অঞ্চলে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে কট্টরপন্থি সশস্ত্র গোষ্ঠীটি।
খনিজ সম্পদে ভরপুর আফগানিস্তান চার দশকের বেশি সময়ের সংঘাতে অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে। গভীর রাজনৈতিক ও সামাজিক সংকটে জর্জরিত দেশটি। এর ওপর কট্টরপন্থি বলে দেশটির নতুন শাসক দল কূটনৈতিকভাবেও একঘরে।
এমন অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য পরাশক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ জয় করে ফিরে এলেও দেশ পরিচালনায় বেশ কিছু বড় বাধার সম্মুখীন হতে হবে গোষ্ঠীটিকে।
তালেবানের সামনে প্রায় অবধারিত পাঁচটি চ্যালেঞ্জ তুলে ধরা হয়েছে ডনের প্রতিবেদনে।
আস্থার অভাব
দ্বিতীয় দফার শাসনামলে ঠিক কেমন ভূমিকা নেবে তালেবান, তা নিয়ে শঙ্কা-সন্দেহ-উদ্বেগে দিন পার করছে সাধারণ আফগানদের বড় অংশ। তাদের এ শঙ্কা অযৌক্তিক বলে উড়িয়ে দেয়ারও উপায় নেই।
১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত প্রথম দফায় দেশ শাসন করে তালেবান। সে সময় আফগানদের ওপর শরিয়াহ আইনের নামে কঠোর জীবনযাত্রা চাপিয়ে দিয়েছিল ধর্মভিত্তিক দলটি।
নারীদের শিক্ষা গ্রহণ, চাকরি করা ও উন্মুক্ত স্থানে যাওয়া-আসাসহ সব ধরনের মৌলিক অধিকার নিষিদ্ধ, বিরোধী রাজনৈতিক মতাদর্শীদের নির্মমভাবে হত্যা করা, হাজারা সম্প্রদায়ের মতো ধর্মীয় ও আদিবাসী সংখ্যালঘুদের ওপর গণহত্যাসহ নানা অরাজকতার জন্ম দিয়েছিল তালেবান যোদ্ধারা।
এবার অবশ্য ক্ষমতা দখলের পর গোষ্ঠীটির সুর কিছুটা নমনীয়। সব পক্ষের অংশগ্রহণের ভিত্তিতে একীভূত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠন, যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইসহ আফগান রাজনীতিতে স্পর্শকাতর বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে আলোচনার আশ্বাস দিয়েছে তালেবান নেতারা।
নব্বইয়ের দশকের কঠোর শাসনব্যবস্থার তুলনায় বর্তমান শাসক গোষ্ঠীর পরিবর্তন দৃশ্যমান করতে শিয়া হাজারা সংখ্যালঘুদের কাছে প্রতিনিধি পাঠাচ্ছেন সুন্নিপন্থি তালেবান নেতারা। ১৯৯০ সালের পর তালেবানের বর্বর নিপীড়নের সাক্ষী হয়েছিল হাজারারা।
এ অবস্থায় গ্রামাঞ্চলগুলোতে দীর্ঘ সংঘাতময় পরিস্থিতির অবসান ঘটবে, এমন প্রত্যাশায় কিছুটা স্বস্তিতে স্থানীয়রা। কিন্তু শেষ পর্যন্তে কাজে তালেবানের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন ঘটবে কি না, সে প্রশ্নে দ্বিধাবিভক্ত বেশিরভাগ আফগান।
নারী অধিকারের মতো বিষয়ে শিথিলতার কথাও বলেছে তালেবান, তবে শরিয়াহ আইনের আওতায় যার অর্থ স্পষ্ট করেনি গোষ্ঠীটি। নারীরা, বিশেষ করে যারা শহরে থাকেন, তারা এখন থেকেই ঘরবন্দি। না পারতে বাইরে বের হলেও আপাদমস্তক বোরকায় ঢাকা থাকছে তাদের।
অর্থনৈতিক ও মানবিক বিপর্যয়
বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র দেশ আফগানিস্তান। ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক জোটের অভিযানে তালেবান ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর বিপুল পরিমাণে বিদেশি সহায়তা পেয়েছিল দেশটি।
২০২০ সালেও বেসামরিক সরকারশাসিত আফগানিস্তানে মোট বার্ষিক প্রবৃদ্ধির ৪০ শতাংশের বেশি এসেছিল আন্তর্জাতিক সহায়তা থেকে।
তালেবান ক্ষমতা দখলের পর সেসব সহায়তার বেশিরভাগই স্থগিত করা হয়েছে। বাকি সহায়তার বিষয়েও কোনো নিশ্চয়তা নেই।
আফগানিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যে অর্থ যুক্তরাষ্ট্রে গচ্ছিত আছে, তাতেও প্রবেশাধিকার পাবে না তালেবান শাসকগোষ্ঠী।
সব মিলিয়ে তালেবানের নতুন সরকার বড় ধরনের অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখে পড়তে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করা, পানি, বিদ্যুৎ আর পরিবহনের মতো সেবা-পরিষেবাগুলো চালু রাখা অনিশ্চিত।
দীর্ঘ সংঘাতের পাশাপাশি তীব্র খরার কারণে খাদ্যের মজুত কমছে বলে খাদ্যসংকটের দিক থেকেও আফগানিস্তান মারাত্মক বিপর্যয়ের মুখে রয়েছে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ।
জাতিসংঘের পর্যবেক্ষকদের মতে, বিদ্রোহী থাকাকালীন আফিম-হেরোইনসহ নানা খাত থেকে তালেবানের নিজস্ব আয় অবশ্য কম ছিল না। কিন্তু আফগানিস্তানের জাতীয় বাজেটের সামনে সে আয় কিছুই নয় বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
এ দফায় আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর অবশ্য আয়ের কিছু খাত নিশ্চিত করেছে তালেবান। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, সীমান্ত পারাপার থেকে শুল্ক বাবদ প্রাপ্ত রাজস্বের কথা। কিন্তু জাতীয় চাহিদার তুলনায় এ আয়ও খুব সামান্য।
মেধা পাচার
নগদ অর্থের সংকটের পাশাপাশি আরেকটি বিষয়ে তীব্র অভাবের মুখে পড়তে যাচ্ছে আফগানিস্তানের নতুন শাসক দল। তা হলো দক্ষ জনশক্তি।
গত ১৫ আগস্ট তালেবান রাজধানী কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয়। এরপর যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন জোটের উদ্ধার অভিযানের সুযোগে দুই সপ্তাহের কিছু বেশি সময়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে প্রায় এক লাখ আফগান।
দীর্ঘ অস্থিতিশীলতার কারণে আগেও অনেক মানুষ যে যেভাবে পেরেছে, দেশ ছেড়েছে। এদের অনেকেই ছিলেন নিজ নিজ ক্ষেত্রে দক্ষতা-অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ও সম্ভাবনাময়।
আমলা, ব্যাংকার, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, শিক্ষাবিদ, বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতকসহ বিভিন্ন পেশাজীবী তালেবানের শাসন থেকে বাঁচতে চেয়েছে।
মেধা পাচারের এ সংকট যে আফগান অর্থনীতিকে সামনের দিনগুলোতে আরও বড় সংকটের দিকে ঠেলে দিতে পারে, সে বিষয়ে তালেবানও অবগত।
দক্ষ জনশক্তিকে দেশ না ছাড়ার জন্য অনুরোধ করেছেন তালেবান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ। চিকিৎসা-প্রকৌশলে ‘বিশেষজ্ঞ’দের দেশে প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
কূটনীতিতে কোণঠাসা
প্রথম দফার শাসনামলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ‘অচ্ছুত’ ছিল আফগানিস্তানের তালেবান সরকার।
এবার গোষ্ঠীটি বিশ্ব সম্প্রদায়ের স্বীকৃতি পেতে উদগ্রিব হিসেবেই দৃশ্যমান হয়েছে। যদিও এরই মধ্যে বেশিরভাগ দেশ কাবুলে নিজেদের কূটনৈতিক মিশন ও দূতাবাস বন্ধ করে দিয়েছে বা কার্যক্রম স্থগিত রেখেছে।
এ অবস্থায় আপাতত আঞ্চলিক শক্তিগুলোর মুখাপেক্ষী তালেবান। কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার আগেই প্রতিবেশী পাকিস্তান, ইরান, চীন, রাশিয়া আর কাতারের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে গোষ্ঠীটি।
কোনো দেশই আফগানিস্তানের নতুন সরকার হিসেবে তালেবানকে স্বীকৃতি দেয়নি এখনও। যুক্তরাষ্ট্র স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে, স্বীকৃতি ‘অর্জন করে নিতে হবে’ তালেবানকে।
আফগানদের নিরাপদে দেশ ছাড়তে দিতে তালেবানের ওপর চাপ প্রয়োগ করা নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের একটি প্রস্তাবে ভেটো না দিলেও সম্মতিও দেয়নি দ্বিধাবিভক্ত চীন ও রাশিয়া।
আইএস জঙ্গিদের আধিপত্যের শঙ্কা
আফগানিস্তানের শাসনব্যবস্থা এখন তালেবানের করায়ত্তে হলেও তাদের বিদ্রোহী যুগের অবসানের সঙ্গে সন্ত্রাসী হামলার হুমকি মুছে যায়নি।
সশস্ত্র গোষ্ঠীটির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)। গত সপ্তাহেই কাবুল বিমানবন্দরে আত্মঘাতী হামলায় কমপক্ষে ১৮০ জন নিহতের ঘটনায় দায় স্বীকার করেছে আইএসের আঞ্চলিক শাখা আইএস-কে।
বিমানবন্দরে যুক্তরাষ্ট্রের ছয় হাজার সেনার উপস্থিতিতে ওই হামলায় প্রাণ গেছে ১৩ জন আমেরিকান সেনারও।
তালেবান ও আইএস কট্টরপন্থি ও উগ্রবাদী। কিন্তু আইএসের দৃষ্টিকোণ থেকে শরিয়াহ আইন তালেবানের সংস্করণের চেয়েও অনেক বেশি কট্টর।
আফগানিস্তানে লড়াই অব্যাহত থাকবে বলে ঘোষণা দিয়েছে আইএস। নিজেদের বিবৃতিতে গোষ্ঠীটি তালেবানকে আখ্যায়িত করেছে ‘ধর্মত্যাগী’ বলে।
এ অবস্থায় সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী পদক্ষেপ নিতে হবে তালেবানকে। বিদ্রোহী থাকাকালীন বছরের পর বছর তারা নিজেরাই আফগান ভূখণ্ডে একের পর এক সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে।
এখন শাসক দল হিসেবে আইএসের হামলা থেকে আফগান জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিতে নতুন ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে তালেবান সরকারকে।
আরও পড়ুন:ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বা পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি কেউই মিশরে গাজা সম্মেলনে যোগ দেবেন না। মিশর এই শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেওয়ার জন্য ইরানকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ইঙ্গিত করে সোমবার ভোরে আরাগচি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ এক পোস্টে লিখেছে, প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান বা আমি কেউই ইরানি জনগণের ওপর আক্রমণকারী এবং আমাদের হুমকি ও নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত রাখা প্রতিপক্ষদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে পারি না।
সোমবার ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আইআরএনএ জানিয়েছে, মিশর রোববার সন্ধ্যায় ইরানকে লোহিত সাগরের অবকাশস্থল শারম আল-শেখে সোমবারের শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
জুনে ১২ দিনের যুদ্ধের সময় ইরানের পরমাণু স্থাপনা লক্ষ্য করে করা হামলায় ওয়াশিংটন ইসরায়েলের সঙ্গে সংক্ষেপে যোগ দেয়।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী আরো বলেন, তেহরান ‘গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যা বন্ধ করার’ এবং ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার রক্ষার যে কোনও উদ্যোগকে সমর্থন করে।
ইরান ইসরাইলকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি এবং ১৯৭৯ সালের ইসলামিক বিপ্লবের পর থেকে ফিলিস্তিনিদের সমর্থনকে তাদের পররাষ্ট্র নীতির একটি অংশ করে তুলেছে।
বিপ্লবটি মার্কিন-সমর্থিত ইরানের শাহকে উৎখাত করেছিল।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির যৌথ সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গাজা শান্তি শীর্ষ সম্মেলনের লক্ষ্য যুদ্ধবিরতি সুসংহত করা এবং যুদ্ধোত্তর রাজনৈতিক কাঠামোর রূপরেখা তৈরি করা।
২০টিরও বেশি দেশের নেতৃবৃন্দ এই সম্মেলনে যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। যদিও ইসরায়েল বা হামাস কেউই এতে অংশ নেবে না। সূত্র: বাসস
গাজা থেকে প্রথম পর্যায়ে সাতজন ইসরাইলি জিম্মিকে আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটির (আইসিআরসি) কাছে হস্তান্তর করেছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। সোমবার (১৩ অক্টোবর) স্থানীয় সময় সকালে সাতজন জিম্মিকে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে ইসরাইলের সামরিক বাহিনী নিশ্চিত করেছে।
ইসরাইলি সংবাদমাধ্যমগুলো মুক্তি পাওয়াদের পরিচয় প্রকাশ করেছে। তারা হলেন— যমজ সন্তান গালি এবং জিভ বারম্যান, মাতান অ্যাংরেস্ট, অ্যালোন ওহেল, ওমরি মিরান, এইতান মোর ও গাই গিলবোয়া-দালাল।
সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা বলছে, মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দিদের ইসরাইলি সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ইসরাইলি সেনাবাহিনী নিশ্চিত করেছে, হামাসের মুক্তি দেওয়া সাতজন বন্দি এখন তাদের হেফাজতে রয়েছে এবং তারা ‘ইসরাইলি ভূখণ্ডের পথে’ রয়েছে।
জর্ডানের আম্মান থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক নূর ওদেহ জানিয়েছেন, বন্দিদের ‘অবস্থা মোটামুটি ভালো’ এবং তারা ‘কোনো চিকিৎসা সহায়তা ছাড়াই হেঁটে চলাফেরা করতে পারছেন’।
এর আগে বন্দি বিনিময়ের জন্য মোট ২০ জন ইসরাইলি জিম্মির তালিকা প্রকাশ করেছে হামাস। বর্তমানে হামাসের হাতে থাকা ৪৮ জন জিম্মির মধ্যে এখনো এই ২০ জন জীবিত আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিনিময়ে ইসরাইলি কারাগার থেকে প্রায় ২ হাজার ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার কথা রয়েছে।
ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘শান্তি পরিকল্পনা’ নিয়ে আলোচনায় বসছেন বিশ্বনেতারা। স্থানীয় সময় আজ সোমবার মিসরের পর্যটন শহর শারম আল শেখে অনুষ্ঠিত হবে সম্মেলন। সেখানে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যে যুদ্ধবিরতি ইতিমধ্যে চুক্তি হয়েছে, তাতে ট্রাম্প সই করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। খবর আলজাজিরার।
ট্রাম্পসহ ২০টির বেশি দেশের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা এই সম্মেলনে যোগ দেবেন। সম্মেলনে যোগ দিতে ইতিমধ্যে মিসরে পৌঁছেছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি। সম্মেলনে অংশ নিতে পারেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ ও ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের।
তবে ইসরায়েল সরকারের কেউ থাকছেন না সম্মেলনে। গতকাল রোববার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর মুখপাত্র শোশ বেদরোসিয়ান।
এদিকে ফিলিস্তিনি একটি সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, গাজায় সংঘাত নিয়ে আলোচনা হলেও হামাসের কোনো নেতা সম্মেলনে থাকবেন না। যুদ্ধবিরতির আলোচনায় অংশ নেওয়া হামাসের প্রতিনিধিদলের প্রধান খলিল আল-হায়াসহ বেশির ভাগ সদস্য গত শনিবার শারম আল শেখ ছেড়েছেন।
মাদাগাস্কারের সেনাবাহিনীর একটি অংশ কর্তৃপক্ষের আদেশ উপেক্ষা করে রাজধানী আন্তানানারিভোতে জমায়েত হওয়া হাজার হাজার সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীর সঙ্গে যোগ দিয়েছে। মাদাগাস্কারের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রি রাজোয়েলিনার শাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ক্রমাগত জোরাল হয়ে ওঠার মধ্যে এমন ঘটনা ঘটল।
বিদ্যুৎ ও পানির সংকটকে কেন্দ্র করে গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে মাদাগাস্কারে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ চলছে। গত শনিবার তরুণদের নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভকারীরা প্রথমবারের মতো মাদাগাস্কারের রাজধানী শহরের মে থার্টিন চত্বরে প্রবেশ করেন। চলমান এ বিক্ষোভে এ পর্যন্ত হওয়া সবচেয়ে বড় জমায়েতগুলোর একটি এটি। সম্প্রতি কেনিয়া ও নেপালে হওয়া সরকারবিরোধী বিক্ষোভের অনুপ্রেরণায় ভারত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্রটিতে এমন বিক্ষোভ হচ্ছে। কেনিয়া ও নেপালের ওই বিক্ষোভ জেন–জি বিক্ষোভ হিসেবে পরিচিত।
মাদাগাস্কারের পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিতে স্টান গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ার পর কিছুসংখ্যক সেনাসদস্য ঘটনাস্থলে পৌঁছান। বিক্ষোভকারীরা তখন সেনাসদস্যদের স্বাগত জানান এবং উল্লাস প্রকাশ করেন।
এর আগে আন্তানানারিভো শহরের উপকণ্ঠে অবস্থিত একটি সেনা ব্যারাকে সেনাসদস্যদের মধ্যে একটি বৈঠক হয়। ওই সময় মাদাগাস্কারের সেনাবাহিনীর বিশেষ ইউনিট সিএপিএসএটির সেনাসদস্যরা প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ চেয়ে বিক্ষোভকারীদের করা দাবির সঙ্গে সংহতি প্রকাশের আবেদন জানান, যা বিরল ঘটনা। কারণ, ২০০৯ সালে রাজোয়েলিনার উত্থানের ক্ষেত্রে এই সিএপিএসএটি ইউনিটের মুখ্য ভূমিকা ছিল।
সোয়ানিয়েরানা অঞ্চলের একটি ঘাঁটির সেনাসদস্যরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও বার্তা পোস্ট করেন। সেখানে তারা বলেন, ‘সেনা, আধা সামরিক বাহিনী ও পুলিশ—চলুন, এক হয়ে কাজ করি। বেতনের বিনিময়ে আমাদের বন্ধু, ভাইবোনদের গুলি করার আদেশ আমরা মেনে নেব না।’
বিমানবন্দরে নিযুক্ত সেনাদের উদ্দেশে তারা বলেছেন, কোনো উড়োজাহাজকে উড়তে না দিতে। অন্য সেনাঘাঁটির সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তারা বলেছেন, ‘আপনাদের বন্ধুদের ওপর গুলি করার আদেশ মানবেন না।’
ভিডিওতে আরও বলা হয়, ‘ফটকগুলো বন্ধ করে দিন এবং আমাদের নির্দেশনার জন্য অপেক্ষা করুন। আপনাদের ঊর্ধ্বতনদের আদেশ মানবেন না। যারা আপনাদের সহযোদ্ধাদের ওপর গুলি করার আদেশ দিচ্ছে তাদের দিকে আপনারা অস্ত্র তাক করুন। কারণ, যদি আমরা মারা যাই, তারা আমাদের পরিবারের দেখভাল করবে না।’
ঠিক কতজন সেনাসদস্য বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
নতুন নিয়োগ পাওয়া সশস্ত্র বাহিনীবিষয়ক মন্ত্রী দেরামাসিনজাকা মানানৎসোয়া রাকোতোআরিভেলো সেনাসদস্যদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
এক সংবাদ সম্মেলনে রাকোতোআরিভেলো বলেন, ‘যেসব ভাই আমাদের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করছেন, আমরা তাদের আলোচনাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।’
রাকোতোআরিভেলো আরও বলেন, মালাগাসির সেনাবাহিনী মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা বজায় রেখেছে এবং জাতির শেষ প্রতিরক্ষা রেখা হিসেবে কাজ করছে।
বৃহস্পতিবার নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিতে কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট ও সাঁজোয়া যান ব্যবহার করলে কয়েকজন আহত হন।
দুই বছর ধরে গাজায় নৃশংস গণহত্যা চালানোর পরেও ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন সদ্য ঘোষিত শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী মারিয়া কোরিনা মাচাদো। সম্প্রতি ইসরায়েলের একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ভেনিজুয়েলার বিরোধীদলীয় নেত্রী এ সমর্থন জানান।
ওই সাক্ষাৎকারে মাচাদো বলেন, আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, একদিন ভেনিজুয়েলা ও ইসরায়েলের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠবে। এটি হবে আমাদের পক্ষ থেকে ইসরায়েল রাষ্ট্রের প্রতি সমর্থনের অংশ। আমি বিশ্বাস করি এবং ঘোষণা করতে পারি যে আমাদের সরকার ইসরায়েলে ভেনিজুয়েলার দূতাবাস জেরুজালেমে স্থানান্তর করবে।
দেশে গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার জন্য দীর্ঘদিনের লড়াইয়ের স্বীকৃতিস্বরূপ মাচাদোকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়। নোবেল কমিটি তাদের বিবৃতিতে জানায়, যখন স্বৈরশাসকরা ক্ষমতা দখল করে, তখন স্বাধীনতার সাহসী রক্ষকদের স্বীকৃতি দেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে তৎকালীন ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট হুগো শ্যাভেজের আমলে গাজা যুদ্ধের প্রতিবাদে ভেনিজুয়েলা ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে এবং দেশ থেকে ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করে।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে মাচাদো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্যারিবীয় অঞ্চলে সামরিক উপস্থিতি বাড়ানোর উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়ে আলোচনায় আসেন। ৫৮ বছর বয়সি এই শিল্পপ্রকৌশলী বর্তমানে গোপনে বসবাস করছেন। ২০২৪ সালে আদালতের রায়ে তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হন।
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দাবি করেছেন, দেশটিতে মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধির মূল কারণ হলো বাংলাদেশ ও পাকিস্তান থেকে অনুপ্রবেশ।
শুক্রবার নয়াদিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে গিয়ে অমিত শাহ বলেন, ভারতের ভোটাধিকার কেবল নাগরিকদেরই থাকা উচিত।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানায়, অমিত শাহ বলেন, ‘মুসলিম জনসংখ্যা বেড়েছে ২৪ দশমিক ৬ শতাংশ, অন্যদিকে হিন্দু জনসংখ্যা কমেছে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ। এই পরিবর্তন প্রজনন হারের কারণে নয়, বরং অনুপ্রবেশের ফলেই হয়েছে।’
ধর্মভিত্তিক দেশভাগের প্রসঙ্গ টেনে অমিত শাহ বলেন, ‘ভারতের দুই প্রান্তে পাকিস্তান সৃষ্টি হওয়ার পর থেকেই অনুপ্রবেশ চলছে, আর তার ফলেই এই জনসংখ্যাগত পরিবর্তন দেখা দিয়েছে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘অনুপ্রবেশকারী আর শরণার্থীর মধ্যে পার্থক্য আছে। পাকিস্তান ও বাংলাদেশে হিন্দু জনসংখ্যা কমেছে, কারণ অনেকেই ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। কিন্তু ভারতে মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে প্রধানত অনুপ্রবেশের কারণে, প্রজনন নয়।’
তিনি অভিযোগ করেন, ভোটার তালিকায় অনুপ্রবেশকারীদের অন্তর্ভুক্ত করা সংবিধানের মূল চেতনাকে বিকৃত করছে। ‘ভোটাধিকার কেবল নাগরিকদেরই থাকা উচিত,’ জোর দিয়ে বলেন শাহ।
কিছু রাজনৈতিক দল অনুপ্রবেশকারীদের ‘ভোট ব্যাংক’ হিসেবে ব্যবহার করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। প্রশ্ন তোলেন, ‘গুজরাট ও রাজস্থানেও তো সীমান্ত আছে, সেখানে কেন অনুপ্রবেশ হয় না?’
অমিত শাহ বলেন, ‘অনুপ্রবেশ কোনো রাজনৈতিক বিতর্ক নয়, এটি জাতীয় সমস্যা। বিরোধীরা বলে, বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ) কেন্দ্রের অধীনে, তাই দায়িত্বও কেন্দ্রের। কিন্তু সীমান্তের অনেক জায়গায় ভৌগোলিক কারণে বেড়া দেওয়া সম্ভব নয়। কেবল কেন্দ্র একা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে পারবে না, রাজ্য সরকারগুলোকেও দায়িত্ব নিতে হবে। কিছু দল অনুপ্রবেশকারীদের রক্ষা করে, কারণ তারা সেখানে ভোট ব্যাংক খোঁজে।’
তিনি আরও জানান, ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, আসামে এক দশকে মুসলিম জনসংখ্যা বেড়েছে ২৯ দশমিক ৬ শতাংশ। ‘অনুপ্রবেশ ছাড়া এটি অসম্ভব,’ বলেন শাহ। ‘পশ্চিমবঙ্গের কিছু জেলায় বৃদ্ধির হার ৪০ শতাংশ, আর সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোর কিছু জায়গায় তা ৭০ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছেছে। এসবই অতীতের অনুপ্রবেশের স্পষ্ট প্রমাণ।’
অমিত শাহের দাবি, ঝাড়খণ্ডে আদিবাসী জনসংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে, এবং তার মূল কারণও বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ।
ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন প্রান্তে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছেন। রোববার অস্ট্রেলিয়ার অন্তত ২৭টি স্থানে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাবেশের অংশ নেওয়া অনেকে গাজা উপত্যকায় দুই বছর ধরে চলা যুদ্ধের অবসানে স্বাক্ষরিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি টিকবে কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন।
সমাবেশের আয়োজনকারী সংগঠন প্যালেস্টাইন অ্যাকশন গ্রুপ বলেছে, অস্ট্রেলিয়ার সর্বাধিক জনবহুল শহর সিডনিতে বিক্ষোভে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ অংশ নিয়েছেন। তবে বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যা সম্পর্কে আনুষ্ঠানিক কোনো হিসেব জানায়নি পুলিশ।
এদিকে রোববার সকালের দিকে গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরের দৃশ্য দেখা গেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত চুক্তির প্রথম ধাপে ইসরায়েলি সৈন্যরা উপত্যকার বিভিন্ন এলাকা থেকে চলে গেছেন। দুই বছর ধরে চলা গাজা উপত্যকায় এই যুদ্ধে ইতোমধ্যে ৬৭ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে এবং গাজার বেশিরভাগ অঞ্চল ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
এক বিবৃতিতে সিডনি বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজক আমাল নাসের বলেছেন, যুদ্ধবিরতি টিকলেও ইসরায়েল এখনো গাজা ও পশ্চিম তীরে সামরিক দখল চালিয়ে যাচ্ছে। এই দখলদারিত্ব এবং ইসরায়েলে বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে প্রাতিষ্ঠানিক বৈষম্য এক ধরনের বর্ণবৈষম্যমূলক শাসনব্যবস্থা তৈরি করেছে।
অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং করপোরেশনের (এবিসি) ভিডিওতে দেখা যায়, বিক্ষোভকারীরা ফিলিস্তিনের পতাকা হাতে ও ঐতিহ্যবাহী কেফিয়াহ পরিহিত অবস্থায় শহরের প্রধান প্রধান সড়কে পদযাত্রা করেন। পুলিশ বলেছে, দেশজুড়ে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ শেষ হয়েছে। বিক্ষোভ থেকে কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া অ্যাবি জর্ডান বলেন, ইসরায়েলের তথাকথিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্থায়ী হবে না। তিনি বলেন, ইসরায়েল অতীতে কখনো কোনো যুদ্ধবিরতি রক্ষা করেনি। ৭৮ বছর ধরে তারা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে অবৈধ দখলদারিত্ব চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা ইসরায়েলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য অস্ট্রেলিয়ার সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই।
তবে অস্ট্রেলিয়ার ২০০টিরও বেশি ইহুদি সংগঠনের প্রতিনিধিত্বকারী গোষ্ঠী এক্সিকিউটিভ কাউন্সিল অব অস্ট্রেলিয়ান জিউরি ওই বিক্ষোভের নিন্দা জানিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির সহপ্রধান নির্বাহী পিটার ওয়ার্থহেইম বলেন, ‘বিক্ষোভকারীরা চান এই চুক্তি ব্যর্থ হোক। যার অর্থ যুদ্ধ জারি থাকুক।’
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্রগোষ্ঠী হামাসের হামলায় ইসরায়েলে ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন। পরে সেদিনই গাজায় যুদ্ধ শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। তখন থেকে চলা ইসরায়েলি যুদ্ধে গাজা উপত্যকায় এখন পর্যন্ত ৬৭ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন এবং উপত্যকার বেশিরভাগ এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
ইসরায়েলি যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে অস্ট্রেলিয়ায়, বিশেষ করে সিডনি ও মেলবোর্নে নিয়মিত ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
মন্তব্য