আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর দেশটিতে যুক্তরাষ্ট্রের শত-কোটি ডলারের অস্ত্র ও অত্যাধুনিক সামরিক সরঞ্জাম এখন তালেবানের হাতে।
আফগান সেনাবাহিনীর শক্তি বাড়াতে সাঁজোয়া যান, ড্রোন, হেলিকপ্টার আর উড়োজাহাজসহ গত কয়েক বছরে ৩২ হাজার অস্ত্র দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এসবের কতটা তালেকানের হাতে পড়েছে, সেগুলোর ধরন- ইত্যাদি এখনও অস্পষ্ট। কিন্তু সশস্ত্র গোষ্ঠীটির অস্ত্রভাণ্ডার যে ব্যাপক সমৃদ্ধ হয়েছে, তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই।
তালেবানের জব্দকৃত ১০টি অত্যাধুনিক অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জামের একটি তালিকা তৈরি করেছে টার্কিশ রেডিও অ্যান্ড টেলিভিশন (টিআরটি)। পত্রিকাটির এক বিশেষ প্রতিবেদনে যুদ্ধক্ষেত্রে এসব সামরিক সরঞ্জামের কাজও তুলে ধরা হয়েছে।
১. এ-২৯ সুপার টুক্যানো: হালকা ধাঁচের এই যুদ্ধবিমানের দাম দুই থেকে তিন কোটি ডলার। সমগোত্রীয় অন্য যুদ্ধবিমানের তুলনায় এটির দাম খানিকটা কম।
আমেরিকান প্রতিরক্ষাবিষয়ক প্রতিষ্ঠান সিয়েরা নেভাদা করপোরেশনের তথ্য অনুযায়ী, এ-২৯ সুপার টুক্যানো বিপুল পরিমাণ অস্ত্র বহরে সক্ষম। মূলত দাঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সক্ষম এটি।
উড়ন্ত অবস্থায় ভূপৃষ্ঠের খুব কাছ থেকে এবং পরিবেশ বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি পরিদর্শনে এটি ব্যবহার করা যায়।
আফগানিস্তানের চতুর্থ বৃহৎ শহর মাজার-ই-শরিফের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কমপক্ষে একটি এ-২৯ সুপার টুক্যানো জব্দ করেছে তালেবান।
২. ইউএইচ-৬০ ব্ল্যাক হক: সামরিক পরিবহন ও হামলা চালাতে ব্যবহৃত সাঁজোয়া হেলিকপ্টার এটি। বিশ্বের অন্যতম দামী এই হেলিকপ্টারের বাজারমূল্য ৫৯ লাখ ডলার।
এতে থাকা অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে পাইলট লক্ষ্যবস্তু শনাক্ত করতে পারে এবং রাইফেল ও লেজারচালিত ক্ষেপণাস্ত্রে হামলা চালাতে পারে।
দিন ও রাতের অভিযানে অনেক দূর থেকেও পাইলটের অবস্থান ও লক্ষ্যবস্তুর দূরত্ব সঠিকভাবে নির্ধারণে সক্ষম এটি।
১২ আগস্ট আফগানিস্তানের দ্বিতীয় বৃহৎ শহর কান্দাহারের নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান, যেখানে ছিল যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান সামরিক ঘাঁটি। ওই ঘাঁটি থেকে কমপক্ষে একটি ইউএইচ-৬০ ব্ল্যাক হক জব্দ করেছে তালেবান যোদ্ধারা।
৩. স্ক্যানইগল মিনি মিলিটারি ড্রোন: মানববিহীন ড্রোন (ইউএভি) এটি, যা ব্যবহার করা হয় বিশেষ অভিযানের সময় গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ, নজরদারি ও পরিদর্শনের কাজে। গোপন তথ্যের সুরক্ষা, দ্রুততম সময়ে তারবিহীন অডিও ও ভিডিও প্রমাণ সংগ্রহেও এটি পারদর্শী।
২৪ ঘণ্টার বেশি সময় টানা পাখির দৃষ্টিতে ভিডিও ফুটেজ ধারণে সক্ষম এটি, তাও অনেক দ্রুতগতিতে। একেকটি স্ক্যানইগল মিনি মিলিটারি ড্রোনের দাম প্রায় ৩২ লাখ ডলার।
৪. এমডি-৫৩০এফ: এটি বহুমুখী সামরিক হেলিকপ্টার। একেকটির দাম ২৪ লাখ ডলারের বেশি। কৌশলগত ও পরিবহনের কাজে এটি ব্যবহার করা হয়।
রোটরক্রাফট মডেলের এই হেলিকপ্টার অন্যান্য রোটরক্রাফটের তুলনায় হালকা। গুলি করতে, অস্ত্র পৌঁছে দিতে এবং লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সহায়ক এটি।
তবে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো দ্রুত উড়তে পারার ক্ষমতা। তাই আক্রমণাত্মক অভিযানে এমডি-৫৩০এফের কৌশলগত কার্যকারিতা অনেক।
কমপক্ষে একটি এমডি-৫৩০এফ তালেবানের হাতে পড়েছে বলে জানা গেছে।
৫. মাইন-রেসিস্ট্যান্ট ভেহিকেলস (এমআরএপিস): ল্যান্ড মাইন, গুলি ও বোমা প্রতিরোধী সাঁজোয়া যান এটি।
এ ধরনের একেকটি গাড়ির মূল্য পাঁচ থেকে ১০ লাখ ডলার। সংঘাতপ্রবণ অঞ্চলে নিরাপদ পরিবহন ও কর্মকর্তা ও আরোহীদের সড়কে পুঁতে রাখা বোমা থেকে বাঁচাতে এমআরপিস গাড়ি ব্যবহার করা হয়।
৬. এম১১৫১ হামভি: অস্ত্রবাহী অত্যাধুনিক সাঁজোয়া যান এম১১৫১ হামভি। একেকটির দাম প্রায় সোয়া দুই লাখ ডলার করে। বিশেষ অস্ত্র ও আরোহীদের সুরক্ষার উদ্দেশ্যে নির্মিত হামভি অনেকটা লাইফগার্ডের মতো কাজ করে।
২০১৭ সালে আফগানিস্তানে চার হাজার ৭০০ হামভির একটি চালান পাঠিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র, যার প্রায় পুরোটাই এখন তালেবানের নিয়ন্ত্রণে।
৭. এম২৪ স্নাইপার ওয়েপন সিস্টেম: এক ধরনের স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা এটি, যার আওতায় বিভিন্ন সরঞ্জাম একটি অন্যটির সঙ্গে জুড়ে একটি ‘ইগল আই স্নাইপার রাইফেল’ তৈরি করা হয়।
ইগল আই স্নাইপার রাইফেল দিয়ে অনেক দূর থেকে লক্ষ্যবস্তুর দিকে নজর রেখে সঠিক সময়ে গুলি করা যায়।
৮: এম১৮ অ্যাসল্ট ওয়েপন: এম১৮ অ্যাসল্ট ওয়েপন হলো এক ধরনের সিঙ্গেল-শট রাইফেল, যার গুলি দিয়ে ট্যাঙ্কেও ফুটো করে দেয়া যায়।
ট্যাঙ্কবিধ্বংসী অস্ত্রের চেয়েও শক্তিশালী বুলেট ছুড়তে সক্ষম এই রাইফেল। এ ধরনের কয়েক হাজার রাইফেল জব্দ করেছে তালেবান।
৯. এম৪ কারবাইন: গ্যাস দিয়ে পরিচালিত এম৪ কারবাইন দিয়ে একসঙ্গে অনেক দিকে গুলি ছোড়া যায়। একেকটির দাম গড়ে ৭০০ ডলার করে। এতে লেজার, গ্রেনেড লঞ্চার, রাতের অন্ধকারে দেখার ব্যবস্থা, ফ্ল্যাশলাইট, লেজার মার্ক ও ছোট্ট একটি শটগান যুক্ত থাকে।
এমন কয়েক হাজার অস্ত্র আফগানিস্তানে ফেলে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র, যা নিজেদের অস্ত্রভাণ্ডারে যুক্ত করেছে তালেবান।
১০. ৪০ এমএম হাই এক্সপ্লোসিভ গ্রেনেড: স্বয়ংক্রিয় গ্রেনেড লঞ্চার হিসেবে তৈরি এই অস্ত্র দিয়ে দ্রুতগতির কার্তুজ ছোড়া যায়, যা দুই কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতেও আঘাত হানতে সক্ষম।
স্বয়ংক্রিয় গ্রেনেড লঞ্চারের প্রতিটি কার্তুজের দাম ৪০০ থেকে ৫০০ ডলার।
গত ২০ বছরে আফগান সেনাবাহিনীর সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের প্রায় পুরোটাই যুক্তরাষ্ট্রের কারিগরি সহযোগিতা ও সামরিক সরঞ্জামনির্ভর ছিল।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, শেষ কয়েক বছরেই আফগান সেনাবাহিনীকে সাত হাজারের বেশি মেশিন গান, ২০ হাজার গ্রেনেড, চার হাজার ৭০০ সাঁজোয়া যান, হেলিকপ্টার ও ছোট বিমানসহ দুই শতাধিক আকাশযান, ড্রোনের মতো সরঞ্জাম সরবরাহ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
এ সময়ে আফগানিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে গড়ে তোলা ও প্রশিক্ষণে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যয় ছিল আট হাজার ৩০০ কোটি ডলার।
আরও পড়ুন:দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে খাদে পড়া একটি বাসের ৪৬ যাত্রীর মধ্যে ৪৫ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির পরিবহন বিভাগ।
আল জাজিরা জানায়, বৃহস্পতিবারের ওই দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যাওয়া একমাত্র যাত্রী আট বছর বয়সী এক মেয়ে, যাকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটির খবরে বলা হয়, জোহানেসবার্গ থেকে ৩০০ কিলোমিটার উত্তরে মামাতলাকালা এলাকায় চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে সেতুর ব্যারিয়ারে ধাক্কা খায় বাসটি। পরে ১৬৪ ফুট নিচের খাদে পড়া যানটিতে আগুন ধরে যায়।
পার্শ্ববর্তী দেশ বতসোয়ানা থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার লিমপোপো প্রদেশের মরিয়া যাওয়ার পথে বাসটি দুর্ঘটনার শিকার হয়।
ইস্টার সানডে উপলক্ষে লিমপোপোতে জনপ্রিয় উৎসবের আয়োজন করা হয়। এ বছর ৩১ মার্চ দিবসটি উদযাপন করা হবে।
দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পূর্ণ তদন্তের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার পরিবহনমন্ত্রী সিন্ডিসিওয়ে চিকুঙ্গা।
দুর্ঘটনায় কিছু কিছু যাত্রীর দেহ এমনভাবে পুড়ে গেছে যে, ডিএনএ পরীক্ষা ছাড়া তা শনাক্ত করা যাবে না।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার দপ্তর জানায়, বাস দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বতসোয়ানার প্রতি শোক প্রকাশ করেছেন।
আরও পড়ুন:পশ্চিমা ন্যাটো জোটভুক্ত দেশগুলোর ওপর হামলার পরিকল্পনা নেই রাশিয়ার। এমনকি এর বাইরে পোল্যান্ড, চেক রিপাবলিক বা বাল্টিক কোনো দেশের ওপরও হামলা চালাবে না তারা। তবে ইউক্রেনকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দিলে তা ধ্বংস করা হবে বলে জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
স্থানীয় সময় বুধবার রাশিয়ার বিমান বাহিনীর পাইলটদের সঙ্গে কথা বলার সময় এসব কথা বলেছেন তিনি।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর থেকে পূর্ব দিক থেকে রাশিয়ার দিকে অগ্রসর হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট। তবে রাশিয়ার এসব অঞ্চলের ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর ওপর হামলার পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন পুতিন।
তিনি বলেন, ‘এ জোটভুক্ত দেশগুলোর প্রতিও কোনো আগ্রাসন দেখানো হবে না। পোল্যান্ড, চেক রিপাবলিক বা বাল্টিক রাষ্ট্রগুলোকে ভয় দেখানো হচ্ছে বলে যেসব কথা রটানো হয়েছে, সেগুলো সম্পূর্ণ বাজে কথা।’
এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ইউক্রেনকে অর্থ, অস্ত্র ও বুদ্ধি দিয়ে সমর্থন করার অভিযোগ এনে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘এ কারণেই ওয়াশিংটনের সঙ্গে মস্কোর যে সম্পর্ক, তা সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় পৌঁছেছে।’
পশ্চিমারা ইউক্রেনকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দেয়ার বিষয়ে পুতিন বলেন, ‘এ ধরনের কর্মকাণ্ডে ইউক্রেনের পরিস্থিতি পাল্টাবে না। আর ট্যাঙ্ক, সাঁজোয়া যান ও রকেট লঞ্চারের মতো ওগুলোকেও (এফ-১৬) আমরা ধ্বংস করব।’
তিনি বলেন, ‘এসব যুদ্ধবিমান যদি ইউক্রেনের বাইরের কোনো দেশ থেকে যুদ্ধক্ষেত্রে আসে, তবে সেসব স্থানও আমাদের বৈধ লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবে, তা সে যে স্থানই হোক না কেন।’
এফ-১৬ যুদ্ধবিমান পারমাণবিক যুদ্ধের আশঙ্কাও বাড়াবে বলে এ সময় সতর্ক করেন তিনি।
আরও পড়ুন:গাজা উপকূলে ইসরায়েলি সৈন্যরা দুজন নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিকে গুলি করে হত্যার পর তাদের মরদেহ বুলডোজার দিয়ে বালুর নিচে চাপা দেয়ার একটি ভিডিও ফুটেজ সম্প্রচার করেছে আল জাজিরা।
এ ঘটনা তদন্তের জন্য বুধবার জাতিসংঘকে আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম নাগরিক অধিকার ও অ্যাডভোকেসি সংগঠন ‘দ্য কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশন (সিএআইআর)’।
আনাদোলু এজেন্সির প্রতিবেদনে বৃহস্পতিবার সিএআইআরের এ আহ্বানের কথা জানানো হয়।
আল জাজিরার দুই মিনিটের ওই ভিডিওটিতে দুই ফিলিস্তিনিদের মধ্যে একজনকে হাত উঁচু করে সাদা কাপড়ের টুকরো ওড়াতে দেখা যায়।
সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, সাদা কাপড় দেখিয়ে ওই ফিলিস্তিনি হয়ত বোঝাতে চাচ্ছিলেন তারা কোনো হুমকি নন। দুজনই উপকূল বরাবর একটি উন্মুক্ত এলাকায় হাঁটছিলেন, সম্ভবত তারা উত্তর গাজায় ফিরে যাওয়ার চেষ্টায় ছিলেন।
সিএআইআর জানায়, ইসরায়েলি বাহিনী গাজার উপকূলে দুই ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করেছে, যারা কোনো হুমকি ছিল না। এরপর তাদের মৃতদেহ মাটিচাপা দেয়ার জন্য একটি সামরিক বুলডোজার ব্যবহার করা হয়।
এমন জঘন্য যুদ্ধাপরাধের আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান জানিয়ে কাউন্সিল বলেছে, ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের ‘ইচ্ছে মতো’ হত্যা করছে এবং তাদের মৃতদেহগুলো ‘আবর্জনার মতো’ ব্যবহার করছে।
গণহত্যামূলক ইসরায়েলি সরকারকে জাতিসংঘের তদন্ত করা উচিত বলে মনে করছে সংগঠনটি।
আরও পড়ুন:ভারতের তেলেঙ্গানা রাজ্যের হায়দরাবাদে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন টেনিস তারকা সানিয়া মির্জা।
অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম) প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়াইসির বিরুদ্ধে কংগ্রেস তাকে প্রার্থী করার কথা ভাবছে বলে সূত্রের বরাতে বৃহস্পতিবার জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস।
বুধবার গোয়া, তেলেঙ্গানা, উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড এবং দমন ও দিউ- এই চার রাজ্যের প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনার জন্য কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটি (সিইসি) ১৮ জনের নাম অনুমোদন করেছে।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, কংগ্রেস সানিয়া মির্জার জনপ্রিয়তা ও তার সেলিব্রিটি স্ট্যাটাসের দিকে নজর রেখে এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। কংগ্রেস সর্বশেষ ১৯৮০ সালে হায়দরাবাদে জিতেছিল এবং কে এস নারায়ণ সাংসদ হয়েছিলেন।
সূত্রের খবর, সানিয়ার নাম প্রস্তাব করেছিলেন সাবেক ভারতীয় ক্রিকেট অধিনায়ক কংগ্রেস নেতা মহম্মদ আজহারউদ্দিন। ২০১৯ সালে সানিয়া মির্জার বোন আনাম মির্জার সঙ্গে বিয়ে হয় ক্রিকেটারের ছেলে মহম্মদ আসাদুদ্দিনের।
আজহারউদ্দিন সম্প্রতি অনুষ্ঠিত তেলেঙ্গানা বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন, যেখানে তিনি জুবিলি হিলস আসন থেকে ভারত রাষ্ট্র সমিতির (বিআরএস) মাগন্তি গোপীনাথের কাছে ১৬০০০ ভোটে হেরে গিয়েছিলেন।
এআইএমআইএম-এর একটি শক্ত ঘাঁটি হায়দরাবাদ, এই অঞ্চলে ২০২৩ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ‘গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টির’ (কংগ্রেস) সাম্প্রতিক পুনরুত্থান এআইএমআইএমের আধিপত্যের কাছে একটি উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। যা একটি তীব্র কঠিন লড়াইয়ের পরিস্থিতি তৈরি করেছে।
১৯৮৪ সালে সুলতান সালাহউদ্দিন ওয়াইসি হায়দরাবাদ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এবং পরে ১৯৮৯ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত এআইএমআইএম প্রার্থী হিসেবে জিতেছিলেন।
এর পর আসাদ্দুদ্দিন ওয়াইসি ২০০৪ সাল থেকে এই আসনটি ধরে রেখে উত্তরাধিকার বহন করছেন। ২০১৯ সালে ওয়েইসির বিরুদ্ধে ১৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তিনি তার আধিপত্য বজায় রেখে মোট প্রদত্ত ভোটের ৫৮.৯৪% পেয়ে আসনটি জিতেছিলেন।
এই লোকসভা নির্বাচনের জন্য হায়দরাবাদে বিজেপি মাধবী লতাকে প্রার্থী করেছে, এবং বিআরএস গদ্দাম শ্রীনিবাস যাদবকে প্রার্থী করেছে।
৫৪৩টি সংসদীয় আসনের নির্বাচন সাত ধাপে অনুষ্ঠিত হবে, যা ১৯ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে ১ জুন শেষ হবে। তেলেঙ্গানায় ভোট হবে ১৩ মে।
রাশিয়ার মস্কোতে গত শুক্রবার কনসার্ট হলে ব্যাপক প্রাণঘাতী হামলার দায় ইসলামিক স্টেট (আইএস) স্বীকার করলেও এ ধরনের আক্রমণের সামর্থ্য জঙ্গি সংগঠনটির আছে বলে বিশ্বাস করে না রাশিয়া।
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বুধবার তার দেশের এ অবস্থান ব্যক্ত করেন বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
জাখারোভা বলেন, মস্কোর কনসার্ট হলে হামলা চালানোর মতো সামর্থ্য আইএসের আছে, এমনটি বিশ্বাস করা অত্যন্ত কঠিন।
সাম্প্রতিক ওই হামলায় নিহত হন কমপক্ষে ১৪৩ জন। আহত অনেককে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে।
মস্কোর উপকণ্ঠে ক্রোকাস সিটি হলে হামলায় ইউক্রেনের জড়িত থাকার বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করেন রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র। যদিও এ দাবির স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ হাজির করতে পারেননি তিনি।
রাশিয়ায় ২০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলার পর দায় স্বীকার করে আইএস। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা দাবি করেন, তাদের কাছে থাকা গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, হামলাটি চালায় আইএসের আফগান শাখা ইসলামিক স্টেট খোরাসান।
হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ বারবার নাকচ করেছে ইউক্রেন, তবে জাখারোভার ভাষ্য, ইউক্রেনকে হামলার দায় থেকে বাঁচাতে ত্বরিত গতিতে আইএসের ওপর দায় চাপায় পশ্চিমা দেশগুলো।
আরও পড়ুন:ফিলিস্তিন ও দেশটির অবরুদ্ধ উপত্যকা গাজার নির্যাতিত মানুষকে সমর্থন দেয়ার ক্ষেত্রে ইরান কখনও ইতস্তত বোধ করবে না বলে মন্তব্য করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি।
গাজার শাসক দল হামাসের পলিট ব্যুরোর প্রধান ইসমাইল হানিয়ার নেতৃত্বে সংগঠনটির একটি প্রতিনিধিদল মঙ্গলবার তেহরানে সাক্ষাৎ করতে গেলে আয়াতুল্লাহ এ মন্তব্য করেন বলে জানিয়েছে প্রেস টিভি।
খামেনিকে উদ্ধৃত করে ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমটির খবরে বলা হয়, ‘ফিলিস্তিনিদের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম এবং গাজার নিপীড়িত ও সহিষ্ণু জনগণকে সমর্থনের ক্ষেত্রে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান কখনও ইতস্তত বোধ করবে না।’
গত বছরের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের ব্যাপক প্রাণঘাতী হামলার জবাবে ওই দিন থেকেই উপত্যকায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। প্রায় বিরতিহীন এ হামলায় গাজায় প্রাণ গেছে কমপক্ষে ৩২ হাজার ৪১৪ জনের।
এমন বাস্তবতায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের মুখে ‘ঐতিহাসিক ধৈর্য’ ধরার জন্য গাজাবাসীর প্রশংসা করে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা বলেন, এ ধৈর্য ইসলাম ও মুসলমানদের জন্য মর্যাদা ও গর্বের উৎসে পরিণত হয়েছে।
পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের শাংলা জেলার বিশাম এলাকায় মঙ্গলবার গাড়িবহরে আত্মঘাতী বোমা হামলায় চীনের পাঁচ নাগরিকসহ কমপক্ষে ছয়জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দি এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
মালাকান্দ পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মোহাম্মদ আলি গান্দাপুরের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসলামাবাদ থেকে খাইবার পাখতুনখোয়ার দুসু এলাকার ক্যাম্পে যাওয়ার পথে চীনের প্রকৌশলীদের গাড়িবহরে বিস্ফোরকভর্তি গাড়িটি উঠিয়ে দেয় আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী।
তিনি আরও বলেন, ‘হামলায় চীনের পাঁচ নাগরিক ও তাদের পাকিস্তানি চালক নিহত হন।’
হামলার পরপরই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকাটি ঘিরে ফেলেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ঘটনার তদন্তে নামায় এ পথে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ইসলামাবাদে চীনা দূতাবাস গিয়ে রাষ্ট্রদূত জিয়াং জ্যায়দংয়ের কাছে শোক প্রকাশ করেন।
এক বিবৃতিতে শাহবাজ শরিফ বলেন, ‘চায়না-পাকিস্তান ইকোনোমিক করিডরের (সিপিইসি) শত্রুরা আরও একবার এ ধরনের কাপুরুষোচিত কাজ করে একে ব্যাহত করার চক্রান্ত করেছে, কিন্তু অশুভ অভিলাষ পূরণে কখনই সফল হবে না তারা।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য