দুই দশক পর অবশেষে আফগানিস্তান থেকে নিজেদের সব সেনাকে সরিয়ে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
সোমবার রাতে এক ভিডিও বার্তায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ডের প্রধান জেন কেনেথ এফ ম্যাকেঞ্জি। এ ঘোষণার পর গুলি ছুড়ে বিজয় উদযাপন করেছেন তালেবান যোদ্ধারা।
সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
জেনারেল ম্যাকেঞ্জি জানিয়েছেন, সেনাদের ছাড়াও সব মিলিয়ে প্রায় এক লাখ ২৩ হাজার বেসামরিক নাগরিককে সরিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছেন তারা।
যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহার কার্যক্রম সমাপ্তি ঘোষণার পর তালেবান কর্মকর্তা আনাস হাক্কানি এক টুইট বার্তায় লিখেছেন, আমরা আবার ইতিহাস সৃষ্টি করেছি। যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো কর্তৃক আফগানিস্তানের ২০ বছরের দখল আজ রাতে শেষ হয়েছে। আমি খুবই খুশি যে ২০ বছর জিহাদ, ত্যাগ ও কষ্টের পর আজ এ ঐতিহাসিক মুহূর্তটি দেখার সৌভাগ্য হয়েছে। এটি নিয়ে আমি গর্বিত।
যুদ্ধের শুরু যেভাবে
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে সন্ত্রাসী হামলা চালায় জঙ্গি সংগঠন আল কায়েদা। একই সঙ্গে চারটি সমন্বিত হামলায় প্রাণ হারান প্রায় তিন হাজার মানুষ।
এ হামলার পরই আল কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেনকে আশ্রয় দেয়ার অভিযোগে ওই বছরের ৭ অক্টোবর আফগানিস্তানে সামরিক অভিযান শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলো। উৎখাত করা হয় ওসামা বিন লাদেনকে আশ্রয় দেয়া কট্টর ইসলামপন্থি গোষ্ঠী তালেবান সরকারকে।
যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতি
আগস্টের মাঝামাঝি আফগানিস্তান যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
এতে বলা হয়েছে, ২০০১ সালে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় দুই হাজার ৩০০ সেনা প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও প্রায় ২০ হাজার ৬০০ সেনা।
এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র যুক্তরাজ্য হারিয়েছে প্রায় ৪৫০ সেনা।
দীর্ঘস্থায়ী এ যুদ্ধে সবচেয়ে বেশি মূল্য চুকাতে হয়েছে আফগানিস্তানের জনগণকে। বিদেশি সেনা, তালেবানসহ অন্য গোষ্ঠীগুলোর সংঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় আড়াই লাখ আফগান। এদের মধ্যে প্রায় ৭১ হাজারই বেসামরিক নাগরিক।
ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, রক্তক্ষয়ী এই যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের খরচ হয়েছে প্রায় দুই ট্রিলিয়ন (দুই হাজার বিলিয়ন) ডলার।
শেষ মুহূর্তে যা ঘটেছে
১৫ আগস্ট কাবুল দখলের পর আফগানিস্তানের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান। সশস্ত্র গোষ্ঠীটি ক্ষমতায় আসার পর দেশটি থেকে নিজেদের নাগরিকদের সরিয়ে নেয়ার কাজ শুরু করে পশ্চিমাসহ বিভিন্ন দেশ।
কাবুল বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে উদ্ধারকাজ করছিল যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী। মিত্র দেশগুলোর সময় বাড়ানোর চাপ থাকলেও ৩১ আগস্টের মধ্যে উদ্ধারকাজ শেষ করার ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন।
আগে থেকেই বিমানবন্দরটিতে হামলার আশঙ্কা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। সে জন্য আফগান ও নিজেদের নাগরিকদের সতর্কও করে। বৃহস্পতিবার সকালেও বিমানবন্দরে হামলা হতে পারে বলে সতর্ক করে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। তাদের নাগরিকদের বিমানবন্দরে না আসার অনুরোধও করে।
বিমানবন্দর ও আশপাশের কিছু এলাকা থেকে আফগানদের সরিয়ে দিয়ে খালিও করা হয় এ দিন। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। বৃহস্পতিবার বিকেলে বিমানবন্দরের বাইরে অ্যাবে গেটের পাশে এক বোমা হামলায় ১৭০ জন নিহত হন। এদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ১৩ সেনাও ছিলেন।
জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট-খোরাসান (আইএস-কে) এই হামলার দায় স্বীকার করেছে।
সোমবারও কাবুল বিমানবন্দরে রকেট হামলা চালানোর কথা জানিয়েছে আইএস-কে। তবে এ হামলায় কেউ হতাহত হননি।
এর আগের দিন রোববারে আইএস-কে জঙ্গি সন্দেহে কাবুলের একটি লক্ষ্যবস্তুতে ড্রোন হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে প্রাণ হারিয়েছেন ১০ বেসামরিক নাগরিক, যাদের ছয়জনই শিশু। স্বজনরা জানিয়েছেন, আফগানিস্তান ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন ওই নিহতরা। তাদের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসাও ছিল।
২০১৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা ফিরিয়ে আনার অঙ্গীকার করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর ধারাবাহিকতায় আফগান সরকারকে এড়িয়ে তালেবানের সঙ্গে শান্তিচুক্তি বিষয়ক আলোচনা শুরু করে দেশটি।
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে তালেবানের সঙ্গে শান্তিচুক্তি করে যুক্তরাষ্ট্র। এর বিনিময়ে বিদেশি সেনাদের ওপর হামলা বন্ধের অঙ্গীকার করে তালেবান। এ বছরের মে মাস থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। এই সুযোগে আফগানিস্তানের একের পর এক অঞ্চল দখল করতে শুরু করে কট্টর ইসলামপন্থি গোষ্ঠীটি।
এপ্রিলের মাঝামাঝি আফগান যুদ্ধ অবসানের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি জানান, ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সব সেনা সরিয়ে নেয়া হবে।
তবে হঠাৎ করেই জুলাইয়ে সেনা প্রত্যাহারের তারিখ এগিয়ে এনে ৩১ আগস্ট ঘোষণা করেন বাইডেন।
আরও পড়ুন:We made history again.The 20-year long occupation of Afghanistan by the United States & NATO has ended tonight. I am very happy that after 20 years of jihad, sacrifices & hardships I have this pride to see these historic moments. I pray for the souls of all the martyrs of Jihad. pic.twitter.com/WrfzE26ErM
— Anas Haqqani(انس حقاني) (@AnasHaqqani313) August 30, 2021
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ৭৫তম জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুল্ক যুদ্ধ নিয়ে কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা তিক্ততার মাঝেই গতকাল মঙ্গলবার দুই নেতার ফোনালাপ হয়েছে।
ট্রাম্প-মোদির এই ফোনালাপকে সম্পর্কের শীতলতা কাটার ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে। ফোনালাপের পর ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া পোস্টে ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করেন। লিখেছেন, মোদি একটি অসাধারণ কাজ করছেন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করতে সহায়তার জন্য তাঁকে ধন্যবাদ।
রাশিয়ার কাছে থেকে অপরিশোধিত তেল কেনার কারণে সম্প্রতি ভারতের ওপর শাস্তিমূলক ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। পারস্পরিক মিলিয়ে দেশটির ওপর আরোপ হওয়া মোট শুল্কের পরিমাণ ৫০ শতাংশ। বিবিসি বলছে, এমন পদক্ষেপ নেওয়ার পর মোদির সঙ্গে এটিই ট্রাম্পের প্রথম ফোনালাপ।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুভেচ্ছা বার্তার জবাবও দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। এক্সে লিখেছেন, ‘জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানোর জন্য আমার বন্ধু ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ। আপনার মতো আমিও ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের অংশীদারত্ব নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী। ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে আপনার পদক্ষেপে আমাদের সমর্থন আছে।’
এর আগে শুল্ক যুদ্ধ নিয়ে উভয় নেতার মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। ভারত ট্রাম্প প্রশাসনের বাড়তি শুল্ককে ‘অন্যায়’ হিসেবে উল্লেখ করেছিল। আর ভারতের অর্থনীতিকে ‘মৃত’ বলেছিলেন ট্রাম্প। উভয়পক্ষের তীক্ষ্ণ মন্তব্য আদানপ্রদানে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তির আলোচনাগুলোও স্থগিত হয়।
তবে গতকাল মঙ্গলবার মার্কিন বাণিজ্য আলোচক ব্রেন্ডান লিঞ্চের নেতৃত্বে একটি দল দিল্লিতে ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।
দিল্লির কর্মকর্তারা বিবিসিকে জানিয়েছেন, মঙ্গলবারের বৈঠককে কোনো বাণিজ্য আলোচনার শুরু হিসেবে দেখা ঠিক হবে না। এটি আলোচনা করার চেষ্টা মাত্র।
পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে নিরাপত্তা বাহিনীর একটি ক্লিয়ারেন্স অভিযান চলাকালে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে পাঁচজন সেনা নিহত হয়েছেন। একই অভিযানে ‘ভারত-সমর্থিত’ পাঁচ সন্ত্রাসীও নিহত হয়েছে বলে সামা টিভির খবরে বলা হয়েছে।
গত সোমবার কেচ জেলার শেরবান্দি এলাকায় এই ঘটনা ঘটে বলে দেশটির আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) নিশ্চিত করেছে।
আইএসপিআর-এর তথ্য অনুযায়ী, শেরবান্দি এলাকায় সন্ত্রাসীদের আস্তানা উচ্ছেদের জন্য নিরাপত্তা বাহিনী একটি অভিযান চালাচ্ছিল। এ সময় একটি ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে সেনাবাহিনীর গাড়ি আঘাতপ্রাপ্ত হয়, যার ফলে পাঁচজন সেনা নিহত হন।
নিহত সেনারা হলেন ক্যাপ্টেন ওয়াকার আহমদ (লোরালাই), নায়েক আসমাতুল্লাহ (ডেরা গাজী খান), ল্যান্স নায়েক জুনায়েদ আহমদ (সুক্কুর), ল্যান্স নায়েক খান মোহাম্মদ (মারদান) এবং সিপাহী মোহাম্মদ জাহুর (সোয়াবি)।
আইএসপিআর-এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, পাকিস্তানের সাহসী অফিসার ও সেনাদের এই আত্মত্যাগ দেশ থেকে সন্ত্রাস নির্মূলের দৃঢ় সংকল্পকে আরও শক্তিশালী করে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘ভারত-পৃষ্ঠপোষক সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে নিরাপত্তা বাহিনী জাতির সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ গত এক সপ্তাহে খাইবার পাখতুনখোয়ার বিভিন্ন সামরিক অভিযানে অন্তত ১৯ জন সেনা নিহত হয়েছেন।
এর মধ্যে খাইবার পাখতুনখোয়ার লালকিলা মাইদান এলাকায় ‘ভারত সমর্থিত সন্ত্রাসী’দের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে সাতজন সেনা সদস্য নিহত হন। নিরাপত্তা বাহিনী সেখানে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এই অভিযান চালাচ্ছিল।
ন্যায়সঙ্গত ও অধিক ভারসাম্যপূর্ণ বৈশ্বিক শাসন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশকেও গ্লোবাল গভর্ন্যান্স ইনিশিয়েটিভ (জিজিআই) এ অংশ নেওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছে চীন।
চীনের প্রেসিডেন্ট সি জিনপিংয়ের উদ্যোগে গৃহীত এ কর্মসূচির লক্ষ্য বৈশ্বিক শাসনব্যবস্থার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একটি ‘চীনা সমাধান’ উপস্থাপন করা।
বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন গত সোমবার ঢাকায় পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়ামের সঙ্গে বৈঠককালে এ আমন্ত্রণ জানান।
মঙ্গলবার ঢাকার চীনা দূতাবাসের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সোমবারের বৈঠকে বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক, প্রত্যক্ষ সহযোগিতা, বৈশ্বিক শাসন উদ্যোগ এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও বলেন, উভয় দেশই সম্পর্ক উন্নয়নের ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রেখেছে। দু’দেশের মধ্যে সহযোগিতা নির্বিঘ্নে চলছে এবং বন্ধুত্ব আরও সুদৃঢ় হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দু’দেশের নেতাদের মধ্যে গৃহীত গুরুত্বপূর্ণ ঐকমত্য বাস্তবায়নে চীন বাংলাদেশের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে প্রস্তুত।
পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম (গ্লোবাল গভর্ন্যান্স ইনিশিয়েটিভকে (বৈশ্বিক শাসন উদ্যোগ) স্বাগত জানিয়ে এর প্রশংসা করেন। তিনি এটিকে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সি জিনপিংয়ের সময়োপযোগী উদ্যোগ হিসেবেও উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ইতিবাচক অগ্রগতি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ এবং দুই দেশের জনগণের কল্যাণে বিভিন্ন ক্ষেত্রে চীনের সঙ্গে সহযোগিতা গভীর করার ইচ্ছা পুনর্ব্যক্ত করে।
ইসরায়েল আন্তর্জাতিকভাবে একঘরে হয়ে পড়েছে বলে প্রথমবারের মতো স্বীকার করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। গাজায় চলমান যুদ্ধ ও কট্টর উগ্র ডানপন্থি নীতির কারণে ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে তিনি বলেছেন, দেশকে এখন স্বনির্ভর অর্থনীতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে। গত সোমবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় চলমান যুদ্ধ ও তার সরকারের কট্টর ডানপন্থি নীতির কারণে ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক চাপে পড়ে অবশেষে প্রথমবারের মতো ইসরাইলের একঘরে হয়ে পড়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
গত সোমবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক সম্মেলনে নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমরা এক ধরনের বিচ্ছিন্নতার মধ্যে চলে যাচ্ছি, আর আমাদের ধীরে ধীরে এমন এক অর্থনীতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে যেখানে স্বনির্ভরতার বৈশিষ্ট্য থাকবে।’
মূলত নেতানিয়াহুর সরকার এতদিন কূটনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন হওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে আসছিল। তবে মাসের পর মাস নানা সতর্কবার্তার পর নেতানিয়াহুর এই বক্তব্যকে বড় ধরনের স্বীকারোক্তি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ইসরায়েলি দৈনিক দ্য মার্কারও নেতানিয়াহুর উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে, তিনি বলেছেন- দেশ এখন ‘এক ধরনের রাজনৈতিক বিচ্ছিন্নতার’ মধ্যে আছে এবং সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বাইরের ওপর নির্ভরতা এড়াতে ইসরায়েলকে নিজেদের অস্ত্র নিজেকেই তৈরি করতে হবে।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে যুক্তরাজ্য, স্পেন ও কানাডা ইতোমধ্যেই ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র রপ্তানি বন্ধ করেছে। অন্যদিকে ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, স্পেন, নরওয়ে ও যুক্তরাজ্যসহ আরও কয়েকটি দেশ চলতি মাসের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে।
এদিকে নেতানিয়াহুর এই মন্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিরোধী নেতা ইয়ার লাপিদ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে তিনি বলেন, ‘বিচ্ছিন্নতা ভাগ্য নয়, এটা নেতানিয়াহুর ভুল ও ব্যর্থ নীতির ফল। তিনি ইসরায়েলকে তৃতীয় বিশ্বের দেশে পরিণত করছেন এবং পথ বদলানোরও চেষ্টা করছেন না।’
গাজা সিটিতে মঙ্গলবার ভোরের আগে ইসরায়েল তাদের বহুল প্রতীক্ষিত স্থল হামলা চালিয়েছে। এর কিছুক্ষণ আগেই সফররত মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও গাজায় হামাস নির্মূল করার ইসরায়েলের লক্ষ্যকে সমর্থন জানান।
এদিকে জাতিসংঘের এক তদন্তে অভিযোগ আনা হয়েছে, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েল ‘গণহত্যা’ চালাচ্ছে এবং প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তাদের উসকানির জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছে।
রাতে ইসরায়েলি সেনারা গাজা সিটিতে ব্যাপক বোমাবর্ষণ চালায় এবং একইসঙ্গে ওই অঞ্চলের সবচেয়ে বড় নগরকেন্দ্রে স্থলবাহিনী অগ্রসর হয়।
সামরিক বাহিনীর এক কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, ‘গত রাতে আমরা গাজা সিটির পরিকল্পনার পরবর্তী ধাপে, মূল ধাপে প্রবেশ করেছি... বাহিনী হামাসের প্রধান ঘাঁটি গাজা সিটিতে স্থল অভিযান সম্প্রসারিত করেছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা গাজা সিটির কেন্দ্রের দিকে অগ্রসর হচ্ছি।’ সাংবাদিকরা যখন জিজ্ঞেস করেন, সেনারা শহরের কেন্দ্রের ভেতর প্রবেশ করেছে কি না, তখন তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ।’
সেনাদের হিসাব অনুযায়ী, ওই এলাকায় প্রায় ‘দুই হাজার থেকে তিন হাজার হামাস যোদ্ধা’ সক্রিয় রয়েছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ বলেন, গাজা সিটি এখন ‘আগুনে জ্বলছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আইডিএফ (ইসরায়েলি সেনাবাহিনী) সন্ত্রাসী অবকাঠামোর ওপর লোহার মুঠোয় আঘাত হানছে, আর আইডিএফ সেনারা সাহসিকতার সঙ্গে লড়াই করছে যাতে জিম্মিদের মুক্তি ও হামাসকে পরাজিত করার জন্য প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি তৈরি হয়।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা এএফপিকে জানিয়েছে, গাজা সিটিতে নিরবচ্ছিন্ন বোমাবর্ষণ চলছে—অক্টোবর ২০২৩-এ হামাসের হামলার পর শুরু হওয়া প্রায় দুই বছরের ইসরায়েলি হামলার কারণে যার অনেকাংশই ইতোমধ্যে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
২৫ বছর বয়সি বাসিন্দা আহমেদ গাজাল বলেছেন, ‘আমরা তাদের চিৎকার শুনতে পাচ্ছি।’
গত সোমবার নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক শেষে রুবিও এই সামরিক অভিযানে জোরালো সমর্থন দেন। নেতানিয়াহু সেনাবাহিনীকে গাজা সিটি দখলের নির্দেশ দিয়েছেন।
ইসরায়েল ছাড়ার সময় রুবিও সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা মনে করি একটি চুক্তি হওয়ার জন্য সময় খুবই সীমিত। আর মাস নয়, আমাদের হাতে হয়তো কেবল কয়েক দিন কিংবা হয়তো কয়েক সপ্তাহ আছে।’
তিনি বলেন, হামাসকে নিরস্ত্র করার কূটনৈতিক সমাধানই যুক্তরাষ্ট্রের অগ্রাধিকার রয়ে গেছে।
তবে তিনি যোগ করেন, ‘কখনো কখনো যখন হামাসের মতো বর্বরদের সঙ্গে লড়াই করতে হয়, তখন সেটা সম্ভব হয় না। তবু আমরা আশা করি এটি ঘটতে পারে।’
জেরুজালেমে গত সোমবার গাজায় আটক জিম্মিদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন রুবিও। তিনি স্বীকার করেন, জিম্মিদের হাতে রেখে হামাস বর্তমানে এক ধরনের চাপ সৃষ্টি করছে।
তিনি বলেন, ‘যদি কোনো জিম্মি না থাকত আর কোনো বেসামরিক নাগরিক বাধা হয়ে না দাঁড়াত, তবে এই যুদ্ধ এক বছর ছয় মাস আগেই শেষ হয়ে যেত।’
অন্যদিকে জিম্মিদের পরিবারের প্রতিনিধিত্বকারী একটি সংগঠন জানিয়েছে, নেতানিয়াহু হামলার নির্দেশ দেওয়ার পর তারা তাদের প্রিয়জনদের জন্য ‘ভয়ে আতঙ্কিত।’
তারা এক বিবৃতিতে জানায়, ‘তিনি (নেতানিয়াহু) এমন সবকিছু করছেন যাতে কোনো চুক্তি না হয় এবং যাতে তাদের (জিম্মিদের) ফেরত আনা না যায়।’
ফিলিস্তিনের গাজায় নৃশংস হামলা ও হত্যাযজ্ঞের মধ্যে ইসরায়েল সফর করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন তিনি। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, গাজায় চলমান সংঘাতে ইসরায়েলকে ‘অবিচল সমর্থন’ দিয়ে যাবে তার দেশ। উপত্যকাটি থেকে হামাসকে নির্মূল করার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
রুবিও ইসরায়েলে পৌঁছান গত রোববার। এরপর গত সোমবার জেরুজালেমে নেতানিয়াহুর সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় পশ্চিমা বিভিন্ন দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার যে পরিকল্পনা করছে, তার সমালোচনা করেন তিনি। বলেন, এমন পদক্ষেপ স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব ফেলবে না। তা শুধু হামাসকে আরও সাহসী করে তুলবে।
রুবিও বলেন, ভালো একটি ভবিষ্যৎ গাজার বাসিন্দাদের প্রাপ্য। তবে যতক্ষণ পর্যন্ত হামাসকে নির্মূল না করা হবে, ততক্ষণ তারা কোনো ভালো ভবিষ্যৎ পাবে না। নেতানিয়াহুর উদ্দেশে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আপনি আমাদের অব্যাহত সমর্থন ও অঙ্গীকারের ওপর নির্ভর করতে পারেন।’ গাজা নগরী দখলে ইসরায়েলি পরিকল্পনা নিয়ে নেতানিয়াহুর সঙ্গে কথা বলবেন বলেও জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থনের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশংসা করেন নেতানিয়াহু। তাকে সম্বোধন করেন ইসরায়েলের ‘সর্বকালের সবচেয়ে ভালো বন্ধু’ হিসেবে। নেতানিয়াহু বলেন, রুবিওর সফর স্পষ্টভাবে এই বার্তা দিচ্ছে যে ইসরায়েলিদের পাশে আছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় বসার পর থেকেই ইসরায়েলকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন ট্রাম্প।
এমন সময় রুবিও ইসরায়েলকে সমর্থনের ঘোষণা দিলেন, যখন আজ শুধু গাজার উত্তরে গাজা নগরীতেই অন্তত ২৫ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। এর আগের দিনও শহর এলাকায় অন্তত ৫৩ জনকে হত্যা করা হয়। ইসরায়েলের হামলা ও হুমকির মুখে সেখান থেকে পালাচ্ছেন লাখ লাখ মানুষ। এর বাইরে পুরো উপত্যকায় চলছে ইসরায়েলের হামলা।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। এতে প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন। জিম্মি করে গাজায় নিয়ে আসা হয় প্রায় ২৫০ জনকে। সেদিন থেকেই গাজায় তীব্র হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। এর পর থেকে ২৩ মাসের বেশি সময়ে উপত্যকাটিতে হামলায় প্রায় ৬৫ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১ লাখ ৬৩ হাজারের বেশি মানুষ।
মধ্যপ্রাচ্যে নানা বিষয় নিয়ে চলমান সংকটের মধ্যেই ৯ সেপ্টেম্বর কাতারের রাজধানী দোহায় হামলা চালায় ইসরায়েল। দোহায় অবস্থান করা হামাস নেতাদের উদ্দেশ্য করে ওই হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি ইসরায়েলি বাহিনীর। তবে এর তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে কাতার। বন্ধুদেশের ওপর হামলার কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন ট্রাম্পও।
এমন পরিস্থিতিতে আজ থেকে দোহায় শুরু হয়েছে আরব লিগ ও ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) জরুরি সম্মেলন। সেখানে যোগ দিতে আরব ও মুসলিম দেশের নেতারা কাতারে পৌঁছেছেন। এর আগের দিন এসব দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। ওই বৈঠকের লক্ষ্য ছিল ইসরায়েলের বিরুদ্ধে শক্ত পদক্ষেপ নিতে একটি খসড়া প্রস্তাব তৈরি করা।
কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান বিন জসিম আল থানি ইসরায়েলের ব্যাপক সমালোচনা করেন। ইসরায়েলের হামলার নিন্দা জানানোয় আরব ও মুসলিম দেশগুলোর প্রশংসা করে তিনি বলেন, কাতারের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আইনি ব্যবস্থা নেবেন তিনি।
জব্দ সম্পদ ব্যবহারের পরিকল্পনা নিয়ে ইউরোপকে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে রাশিয়া। দেশটি বলেছে, রাশিয়ার সম্পদ কেড়ে নেওয়া ইউরোপের যেকোনো দেশের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
২০২২ সালে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইইউ দেশগুলো রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে লেনদেন সীমাবদ্ধ করে। সেই সঙ্গে রাশিয়ার ৩০০ থেকে ৩৫০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের সম্পদ জব্দ করে।
বিপুল পরিমাণ এই সম্পদ এখন ইউক্রেনের সহায়তায় ব্যবহার করার পরিকল্পনা করছে ইউরোপীয় দেশগুলো। স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন দের লিয়েন একটা নতুন উপায় খুঁজছেন যার মাধ্যমে ওইসব সম্পদ ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা খাতে ব্যবহার করা যায়।
এমন প্রতিবেদন সামনে আসার পর গত সোমবার রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বর্তমানে নিরাপত্তা পরিষদের উপপ্রধান দিমিত্রি মেদভেদেভ বলেন, যদি এমনটা ঘটে, চলতি শতকের শেষ পর্যন্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত রাষ্ট্রগুলোকে ধাওয়া করবে রাশিয়া।
তিনি আরও বলেন, এর পাশাপাশি যারা রাশিয়ার সম্পদ দখলে জড়িত থাকবে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশগুলোকেও ছাড়া হবে না। তিনি বলেন, রাশিয়া সম্ভাব্য সব উপায়ে, সব আন্তর্জাতিক ও জাতীয় আদালতে এবং আদালতের বাইরেও ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলোকে ধাওয়া করবে।
জব্দ সম্পদ নিয়ে রাশিয়া বলছে, তাদের সম্পদ দখল মানে চুরি করা। এতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বন্ড ও মুদ্রার ওপর আস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অন্যদিকে ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলোর বক্তব্য, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের সবচেয়ে প্রাণঘাতী যুদ্ধে ইউক্রেন ধ্বংসের জন্য রাশিয়াই দায়ী। তাই মস্কোর সঙ্গে জোর করে হলেও ক্ষতিপূরণ আদায় করতে হবে।
তবে কিছু ব্যাংকার সতর্ক করে বলেছেন, রাষ্ট্রীয় সম্পদ জব্দের নজির বিদেশি রাষ্ট্রগুলোকে পশ্চিমা দেশগুলোর বন্ড কেনায় নিরুৎসাহিত করতে পারে এবং পশ্চিমা দেশগুলোর বিনিয়োগে আস্থা কমতে পারে।
মন্তব্য