ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ঘোষিত ‘জাতীয় নগদীকরণ পাইপলাইন’-এর তীব্র সমালোচনা করেছে কংগ্রেস।
৬ লাখ কোটি নগদীকরণের পরিকল্পনাটি অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন উন্মোচন করেছিলেন যার লক্ষ্য ছিল অবকাঠামো খাতে প্রাইভেট কোম্পানিগুলিকে যুক্ত করা। ২৫টি বিমানবন্দর, ৪০টি রেলওয়ে স্টেশনসহ অন্যান্য স্থাপনাগুলিকে ব্যক্তিগত বিনিয়োগের জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে।
সরকারের এই সিদ্ধান্তের সমালোচানা করে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছেন, ‘৭০ বছর ধরে দেশের মানুষের করের টাকায় যে প্রতিষ্ঠানগুলি তৈরি হয়েছিল, তা এখন একে একে নিজের করপোরেট ‘বন্ধুদের’ হাতে তুলে দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।’
বিভিন্ন সরকারি ক্ষেত্রে কেন্দ্রের একের পর এক বেসরকারিকরণের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে একে মোদির ‘উপহার’ বলেও কটাক্ষ করেছেন কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি। যদিও তিনি স্পষ্ট করেছেন যে, কংগ্রেস কখনই বেসরকারিকরণের বিপক্ষে নয়। কিন্তু যেভাবে রেলওয়ে, বিমানবন্দর, জাহাজ বন্দর, বিদ্যুৎ সরবরাহের মতো একের পর এক লাভের মুখ দেখা সম্পদের বেসরকারিকরণ করা হচ্ছে, সেটা সমর্থনযোগ্য নয় বলেই বলেই তার দাবি।
সোমবার সরকারের পক্ষ থেকে ‘ন্যাশনাল মনিটাইজেশন পাইপলাইন’ নামক নতুন এক উদ্যোগের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের বক্তব্য, ব্যবহার কম হয় এমন সরকারি সম্পত্তি থেকে টাকা তোলার ব্যবস্থা করা হবে এই উদ্যোগে। এর মাধ্যমে ‘অর্থনীতির উৎসগুলো খুলে দেয়া হবে।’ বেসরকারি বিনিয়োগের আহ্বান জানানো হবে বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে জানানো হয়েছে। যদিও সবকিছুরই মাললিকানা থাকবে কেন্দ্রের হাতে। বেসরকারি বিনিয়োগকে উৎসাহিত করা হলেও পুরোপুরি বেসরকারিকরণ করা হবে না। অন্তত কেন্দ্রীয় সরকার এমনটাই দাবি করছে।
মঙ্গলবার বিকেলে এক সাংবাদিক বৈঠক করে পর কিছু পরিসংখ্যান পেশ করে রাহুল গান্ধী দাবি করেন, এই উদ্যোগের মাধ্যমে কয়েক লক্ষ কোটি টাকার উপহার নিজের ব্যবসায়িক বন্ধুদের হাতে তুলে দিতে চাইছে মোদি সরকার। বেশ কিছু সংস্থার নাম না করে রেলওয়ে, বিমানবন্দরসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকার ঠিক কত হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি তাদের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে, সেই পরিসংখ্যান পেশ করেন রাহুল। ‘ন্যাশনাল মনিটাইজেশন পাইপলাইন’ নামক কেন্দ্রের এই উদ্যোগ আসলে এই দেশের ‘যুব সমাজের ভবিষ্যতের উপর হামলা’ বলেও কটাক্ষ করেন তিনি।
রাহুলের সঙ্গে এ দিনের সাংবাদিক বৈঠকে হাজির ছিলেন সাবেক কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমও। যেখানে কেন্দ্রকে কটাক্ষের সুরে সোনিয়া-তনয় বলেন, ‘নরেন্দ্র মোদি এবং বিজেপির স্লোগান ছিল যে ৭০ বছরে নাকি কিছুই হয়নি। কিন্তু গত ৭০ বছরে যে সম্পত্তি তৈরি হয়েছে, সেটাই বিক্রি করার ঘোষণা করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী সব কিছুই বেচে দিচ্ছেন। এই সম্পত্তিগুলি তৈরি হতে ৭০ বছর সময় লেগেছিল। আর এগুলিকে তিন-চারজন শিল্পপতির হাতে উপহারস্বরূপ তুলে দেওয়া হচ্ছে।’
বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় জ্বালানি তেল উৎপাদনকারী দেশ সৌদি আরব জুলাই থেকে পণ্যটির উৎপাদন কমানোর ঘোষণা দিয়েছে।
দেশটি রোববার জানিয়েছে, আগামী মাস থেকে দৈনিক কম উৎপাদন করা হবে ১০ লাখ ব্যারেল তেল।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, ওপেক+ জোটভুক্ত দেশগুলোর তেলের দামে নিম্নমুখিতা ও সম্ভাব্য সরবরাহ আধিক্যের মধ্যে উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্ত নিল সৌদি।
রাশিয়ার নেতৃত্বাধীন জোট ওপেক+ সদরদপ্তর ভিয়েনায় সাত ঘণ্টাব্যাপী আলোচনা শেষে তেল উৎপাদন নিয়ে চুক্তি হয়।
এ বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সৌদির জ্বালানিমন্ত্রী আবদুলাজিজ বিন সালমান বলেন, ‘এটি আমাদের জন্য বিশাল দিন। কারণ চুক্তির মান নজিরবিহীন।’
তিনি বলেন, উৎপাদনের নতুন যে লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে, সেটি অনেক বেশি স্বচ্ছ ও ন্যায্য।
সৌদির মন্ত্রী আরও জানান, জুলাইয়ের পর প্রয়োজনে তেল উৎপাদন আরও কমানো হবে।
ওপেক+ জোটের চুক্তি অনুযায়ী, সৌদির তুলনায় রাশিয়া, নাইজেরিয়া ও অ্যাঙ্গোলা উৎপাদনে কাঁটছাঁট আরও কম করবে। অন্যদিকে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে তেল উৎপাদন বাড়ানোর অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
ওপেক+ সদস্য রাষ্ট্রগুলো বিশ্বে মোট উৎপাদিত অশোধিত তেলের ৪০ শতাংশের জোগান দেয়। জোটের নীতিগত কোনো সিদ্ধান্তের বড় প্রভাব পড়তে পারে তেলের দামে।
আরও পড়ুন:ভারতের বিহার রাজ্যের ভাগলপুরে রোববার সন্ধ্যায় তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়েছে চার লেনের নির্মাণাধীন একটি সেতু।
এ নিয়ে এক বছরের মধ্যে দুইবার রাজ্যে সেতু ধসে পড়ার ঘটনা ঘটল।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়, সেতু ধসে পড়ার দৃশ্যটি ক্যামেরায় ধারণ করেছেন কেউ কেউ। এ ঘটনায় প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি।
সেতুতে ধসের বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়ে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার জানিয়েছেন, দায়ী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ভাগলপুর জেলা প্রশাসক সুব্রত কুমার সেন বার্তা সংস্থা পিটিআইকে বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি খবর পেয়েছি নির্মাণাধীন আগুয়ানী-সুলতানগঞ্জ সেতুর চার থেকে পাঁচটি পিলার ধসে পড়েছে। প্রশাসন সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে।’
সেতু ধসে পড়ার ঘটনাটিকে সামনে এনে বিহার রাজ্য বিজেপির সভাপতি সম্রাট চৌধুরী অভিযোগ করেন, নীতিশ কুমারের নেতৃত্বাধীন বিহার সরকারে অবাধে দুর্নীতি চলছে।
গত বছরের ডিসেম্বরে বিহারের বেগুসরাই জেলায় সেতু ধসে বুরহি গন্দক নদীতে পড়ে। সেতুটি যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত না হওয়ায় ওই দুর্ঘটনায় কারও প্রাণ যায়নি।
আরও পড়ুন:তৃতীয় মেয়াদে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়া রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান শনিবার তার মন্ত্রিসভা ঘোষণা করেছেন।
এ মন্ত্রিসভার সদস্যদের মধ্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও সংস্কৃতিমন্ত্রী ছাড়া বাকি সবাই নতুন।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, এরদোয়ান এবার রাজস্ব ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সাবেক ব্যাংকার মেহমেত সিমসেককে।
নতুন সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী করা হয়েছে এরদোয়ান নিযুক্ত গোয়েন্দাপ্রধান ও সাবেক সেনা হাকান ফিদানকে। তিনি মেবলুত সাবুসোলুর স্থলাভিষিক্ত হবেন। মেবলুত ২০১৪ সাল থেকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
এরদোয়ানের বিশ্বস্ত সহযোগীদের একজন হাকান ফিদান ২০১০ সাল থেকে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এমআইটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। এর আগে এরদোয়ান প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় হাকান তার উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছেন।
এ মেয়াদে প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন তুরস্কের সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অফ জেনারেল স্টাফ ইয়াসার গুলের। তিনি হুলুসি আকারের স্থলাভিষিক্ত হবেন।
এরদোয়ান তার ডেপুটি তথা ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন সেভদেত ইলমাজকে, যিনি এর আগে উন্নয়নমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এর বাইরে আলি ইয়েরলিকায়াকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, ইউসুফ তেকিনকে শিক্ষামন্ত্রী ও ইলমাজ তুঙ্ককে বিচারমন্ত্রী করা হয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফারহেত্তিন কোচা এবং সংস্কৃতি ও পর্যটনমন্ত্রী মেহমেত নুরি এরসই স্বপদে বহাল আছেন।
আরও পড়ুন:বৈশ্বিক পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংঘাতের পরিবর্তে সংলাপে জোর দিয়ে চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লি শাংফু বলেছেন, দুই দেশের মধ্যকার সংঘর্ষ বিশ্বের জন্য অসহনীয় দুর্যোগ বয়ে আনবে।
সিঙ্গাপুরে এশিয়ার শীর্ষ নিরাপত্তা সম্মেলন সাংগ্রি-লা সংলাপে অংশ নিয়ে রোববার এ কথা বলেন তিনি।
লি শাংফুর ভাষ্য, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ বিকাশের জন্য পৃথিবী যথেষ্ট বড় জায়গা।
তিনি বলেন, ‘চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের আলাদা ব্যবস্থা রয়েছে এবং বিভিন্নভাবে (দেশ দুটি) আলাদা, কিন্তু এ কারণে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বাড়ানো এবং সহযোগিতা গভীর করার ক্ষেত্রে সাধারণ ক্ষেত্র ও সাধারণ আগ্রহ সৃষ্টিতে দুই পক্ষ বিরত থাকতে পারে না।
‘এটি অনস্বীকার্য যে, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে মারাত্মক কোনো সংঘর্ষ বা বিরোধ হবে বিশ্বের জন্য অসহনীয় দুর্যোগ।’
গণতান্ত্রিক শাসনে থাকা তাইওয়ান, দক্ষিণ চীন সাগর এবং সেমিকন্ডাকটর চিপ রপ্তানির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নিষেধাজ্ঞার মতো বিষয় নিয়ে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের মারাত্মক অবনতি হয় চীনের। সর্বশেষ শনিবার সংবেদনশীন তাইওয়ান প্রণালি পাড়ি দেয় যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার নৌযান, যাকে ‘ইচ্ছাকৃত উসকানির ঝুঁকি’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে চীন।
আরও পড়ুন:ভারতের ওড়িশার বালেশ্বরে ব্যাপক প্রাণঘাতী ট্রেন দুর্ঘটনায় অত্যন্ত ব্যথিত বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
স্থানীয় সময় শনিবার এক বিবৃতিতে বাইডেন এ মন্তব্য করেন।
ওড়িশার রাজধানী ভুবনেশ্বর থেকে প্রায় ১৭০ কিলোমিটার উত্তরে বালেশ্বরের বাহাঙ্গা বাজারে শুক্রবার সন্ধ্যায় দুর্ঘটনার শিকার হয় তিনটি ট্রেন। ভারতের সাম্প্রতিক ইতিহাসের সবচেয়ে বড় এ দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ২৮৮ জন নিহত ও ১ হাজার এক শর বেশি যাত্রী আহত হন।
বাইডেন বলেন, ‘ভারতে প্রাণঘাতী ট্রেনের সংঘর্ষের বেদনায়ক খবর শুনে (ফার্স্ট লেডি) জিল ও আমি অত্যন্ত ব্যথিত। স্বজন হারানো লোকজন ও ভয়াবহ দুর্ঘটনায় আহত হওয়া অনেকের জন্য আমাদের প্রার্থনা।’
ওড়িশায় শুক্রবারের ওই দুর্ঘটনার পর থেকে শোক জানিয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান। তাদের মধ্যে রয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোসহ অনেকে।
ভারতের ওড়িশার বালেশ্বরে তিন ট্রেনের দুর্ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তি দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যায় ট্রেন দুর্ঘটনার পর শনিবার ঘটনাস্থল বাহাঙ্গা বাজার স্টেশনে গিয়ে তিনি এ কথা জানান বলে এনডিটিভির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
ভারতে দুই দশকের বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ওই ট্রেন দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ২৮৮ জন নিহত ও এক হাজার এক শর বেশি যাত্রী আহত হন।
মোদি বলেন, ‘এটি বেদনাদায়ক ঘটনা। আহতদের চিকিৎসার জন্য সম্ভাব্য সবকিছু করবে সরকার। এটি মারাত্মক ঘটনা।
‘সব দিক থেকে তদন্তের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। দোষীদের কঠোর শাস্তি দেয়া হবে।’
ওড়িশার রাজধানী ভুবনেশ্বর থেকে প্রায় ১৭০ কিলোমিটার উত্তরে বালেশ্বরের বাহাঙ্গা বাজারে বিমান বাহিনীর উড়োজাহাজে করে যান মোদি। তিনি বালেশ্বর জেলা হাসপাতালে আহত যাত্রীদের দেখে আসেন।
ভারতের কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণু ও শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানকে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন মোদি। এ ছাড়া ঘটনাস্থল থেকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন:ভারতের ইতিহাসে বিরতম ট্রেন দুর্ঘটনা। এটিকে একুশ শতকের সবচেয়ে বড় ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে মন্তব্য করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
নিয়তির পরিহাস কাকে বলে, করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা তা যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। বাবা-মা কোনোক্রমে রক্ষা পেলেও শেষ হয়ে গিয়েছে তাদের সন্তানরা। নিজে বেঁচে গেলেও এখন সেসব বাবা-মায়ের সব হারানোর বুক ফাটা কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে দুর্ঘটনাস্থল ও আশেপাশের হাসপাতালগুলো।
৪০ বছর বয়সী লালজি সাগাই। বর্তমানে তার বড় ছেলের ঠাঁই হয়েছে সরো হাসপাতালের মর্গে। আর ছেলের মরদেহ পেতে হাসপাতালে পড়ে রয়েছেন মা।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চোখে একরাশ স্বপ্ন নিয়ে দুই ছেলেকে নিয়ে বাড়ি ছেড়েছিলেন বিহারের মধুবনীর বাসিন্দা লালজি সাগাই। উন্নত জীবনের আশা নিয়ে ভিনরাজ্যে পাড়ি জমিয়েছিলেন তারা।
পেশায় নিরাপত্তাকর্মী লালজি ভেবেছিলেন তার মতোই কাজ করবে দুই সন্তান। কিন্তু নিয়তির লিখন ছিল ভিন্ন।
চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেসের সাধারণ কোচের যাত্রী ছিলেন মা ও দুই ছেলে। শুক্রবারের দুর্ঘটনায় লালজির ছোট ছেলে ইন্দর বেঁচে গেলেও বড় ছেলে সুন্দরের মৃত্যু হয়।
বালেশ্বরের সরোতে কমিউনিটি হেলথ সেন্টারে নিজের ছেলের মরদেহের পাশে দাঁড়িয়ে লালজি সাগাই বলেন, ‘আমরা ৯ জনের একটি দল চেন্নাই যাচ্ছিলাম। সেখানে সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে কাজ করি আমি। যেহেতু আমাদের গ্রামে কোনো কর্মসংস্থানের সুযোগ নেই, তাই আমি পরিবারের জন্য অতিরিক্ত আয় নিশ্চিত করতে দুই ছেলেকে সেখানে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। কিন্তু নিয়তি আমাদের জন্য এমন কিছু পরিকল্পনা করেছিল, যা আমি দুঃস্বপ্নেও অনুমান করতে পারিনি।’
সাগাই যখন কথা বলছিলেন, কষ্টে তার গলা বুজে আসছিল। বুকফাঁটা কান্না আটকে মধ্যবয়সী মা বলতে থাকেন, ‘দুর্ঘটনায় আমার বড় ছেলে মারা গিয়েছে। নিজের হাতে ছেলের লাশ সরিয়েছি।’
খরচ যাই হোক, ছেলের মরদেহ নিয়ে গ্রামে ফিরতে চান তিনি।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য