× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

আন্তর্জাতিক
Bipartisan Taliban on Social Media Religion vs Western Dependence
google_news print-icon

সামাজিকমাধ্যমে কোন কৌশলে এগোচ্ছে তালেবান

সামাজিকমাধ্যমে-কোন-কৌশলে-এগোচ্ছে-তালেবান
প্রতীকী ছবি
জার্মান থিংকট্যাংক মার্শাল ডিজিটাল ফান্ডের সহকারী গবেষক অ্যাড্রিয়েন গোল্ডস্টেইন জানান, টুইটারে সক্রিয় কমপক্ষে ছয়জন তালেবান কর্মকর্তা। তাদের অনুসারী সব মিলিয়ে প্রায় ১০ লাখ। এ নেতাদের সাম্প্রতিক সব টুইটেই তালেবানকে দেখানো হয়েছে শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল ও পশ্চিমা নেতাদের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ হিসেবে।

দুই দশকের ব্যবধানে দ্বিতীয়বার আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করা তালেবানের মধ্যে পরিবর্তন খুব সামান্যই দেখছে বিশ্ব। সেই সামান্য পরিবর্তনের একটি হলো আধুনিক যুগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে নতুন অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি।

এবিসি নিউজের একটি বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদনে বলা হয়, একদিকে দেশের ভেতরে সাম্প্রদায়িকতার বীজ বুনতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের আশ্রয় নিচ্ছে তালেবান, অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বিশ্বের স্বীকৃতি পেতেও সামাজিক মাধ্যমকে সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করছে আফগানিস্তানের বর্তমান শাসক দল।

ক্ষমতা দখলের পর প্রথম সংবাদ সম্মেলনে নিজেদের মধ্যে আচরণগত পরিবর্তন আনার দাবি করেছে তালেবান। নারী অধিকার, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করাসহ নানা আশ্বাস দিয়েছে গোষ্ঠীটি, কিন্তু এসব আশ্বাস সরাসরি নাকচ করে দিয়েছে বহির্বিশ্বের বেশির ভাগ রাষ্ট্রনেতা।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শঙ্কা, তালেবানের শাসনামলে আবারও আল-কায়েদার মতো নিষিদ্ধঘোষিত সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর চারণক্ষেত্র হয়ে উঠতে পারে আফগানিস্তান।

মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য, বিশ্বে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সবচেয়ে নিকৃষ্ট উদাহরণ গোষ্ঠীটির সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয়তা উদ্বেগজনক ও ভীতিকর।

কারণ এবার ক্ষমতায় এসে সামাজিক মাধ্যমগুলোতে নিজেদের প্রতি ঢালাও সমর্থন দেখছে গোষ্ঠীটি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বড় অংশ অনিয়ন্ত্রিত বলে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে উগ্রবাদীদের আকৃষ্ট করা ও নিজেদের উগ্রবাদী আদর্শ আরও ছড়িয়ে দেয়া সহজ হবে তালেবানের জন্য।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণেই এবার বহির্বিশ্বের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগে সক্ষম হয়ে উঠেছে তালেবান, যা আগে কঠিন ছিল। এভাবে দেশ ও দেশের বাইরে অনেক ঘটনাবলিও এখন তালেবানের নিয়ন্ত্রণে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংবাদ ও সংবাদমাধ্যমবিষয়ক জ্ঞানের অভাব আর অপপ্রচারকে পুঁজি করে জনসমর্থন নিজেদের দিকে টানতে তালেবান দীর্ঘদিন ধরেই বেশ কৌশলী। এভাবেই আফগান সরকারকেও অবস্থানগতভাবে দুর্বল করে তুলেছে গোষ্ঠীটি।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে সাংবাদিক ও প্রত্যক্ষদর্শীদের ছবি, ভিডিও আর বিবরণীতে কাবুলে চলমান নৈরাজ্যের চিত্র অস্পষ্ট। অথচ তালেবানশাসিত অঞ্চলগুলোতে গোষ্ঠীটি প্রচার করছে শহরের পরিস্থিতি ‘সম্পূর্ণ স্বাভাবিক ও স্থিতিশীল, যা আগে ছিল না।’

বিশেষজ্ঞদের মতে, নির্মমতা আর নিপীড়ক নীতির জন্য সমালোচিত তালেবান সম্প্রতি ভাবমূর্তি তৈরির জন্য বিপরীতমুখী বার্তা দিচ্ছে অনলাইনে। তারা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি চায়। তাই আফগানিস্তানের বেসামরিক সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর পশ্চিমাদের ধোঁকা দেয়ার এ কৌশল নিয়েছে গোষ্ঠীটি।

ওয়াশিংটনভিত্তিক অলাভজনক থিংকট্যাংক ফাউন্ডেশন ফর ডিফেন্স অফ ডেমোক্রেসিসের সিনিয়র ফেলো টম জোসেলিন বলেন, ‘অনেক বছর ধরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে কৌশলী তালেবান…নিজেদের বার্তা পৌঁছে দিতে বেশ কয়েকটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে গোষ্ঠীটি। বিভিন্ন ঘটনায় আফগান সরকার প্রতিক্রিয়া জানানোর আগেই তালেবানের বক্তব্য জানতে পারতাম আমরা।’

তিনি বলেন, ‘পশ্চিমাদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার চেষ্টা করছে তালেবান, এটাই মুখ্য বিষয়। তারা জানে কীভাবে সাংবাদিকদের নাচাতে হয়। তারা জানে কীভাবে কী বললে সে বক্তব্য পশ্চিমা দেশগুলোর কানে তা শ্রুতিমধুর শোনাবে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এ জন্য মিথ্যার আশ্রয় নেয় গোষ্ঠীটি।’

বার্তার বন্যা তালেবানের

২০১৭ সালে সবশেষ প্রকাশিত তথ্যে বিশ্বব্যাংক জানায়, আফগানিস্তানে মোট জনগোষ্ঠীর মাত্র ১১ দশমিক চার শতাংশ ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ পায়। নব্বইয়ের দশকে তালেবানের আগের শাসনামলে এ হার ছিল শূন্য।

১৭ বছরের ব্যবধানে দেশটিতে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী জনগোষ্ঠী তৈরি হলেও আন্তর্জাতিক বেঞ্চমার্ক থেকে ৪৯ শতাংশ পিছিয়ে ছিল আফগানরা।

অর্থাৎ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শ্রোতা হিসেবে আফগানরা নয়, তালেবানের লক্ষ্য বহির্বিশ্ব।

অন্যদিকে তালেবানের স্থানীয় শ্রোতা, অর্থাৎ আফগান সমর্থকরাও দেশটির সংবাদমাধ্যম অবকাঠামোর ভগ্নদশার বলি। ক্ষমতাসীনদের মিথ্যা বিবৃতির ফাঁকফোকর ধরতে সেসব সংবাদমাধ্যম ব্যর্থ। সাধারণ আফগানদের জন্যও ঘটনার সত্যতা যাচাই করা কঠিন।

তার ওপর বিশ্বের অনেক অঞ্চলের মতো আফগানিস্তানেও ইন্টারনেটবিষয়ক শিক্ষার হার সামান্য বলে মনে করেন গবেষকরা। ফলে সত্যের চেয়ে অপপ্রচারের বিস্তারই সেখানে বেশি।

জোসেলিন জানান, তালেবানের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে টুইটারে বেশ কয়েক বছর ধরেই ভীষণ সক্রিয়। গত সপ্তাহের আলোচিত সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেছিলেন মুজাহিদ।

ইংরেজি, আরবি, পশতু ও উর্দুসহ বেশ কয়েকটি ভাষায় তালেবান নিয়মিত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেদের বার্তা প্রচার করে থাকে।

জোসেলিন বলেন, ‘তালেবান প্রতিদিন যত ভাষায় বার্তা প্রকাশ করে, তত সম্ভবত যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও করে না।’

অনলাইনে উগ্রবাদের প্রচার ঠেকাতে পদক্ষেপ নিয়েছে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম ও দেশ। এতে বিভিন্ন সন্ত্রাসী সংগঠনের সমর্থকদের ইন্টারনেটভিত্তিক কার্যক্রম সীমিত হয়ে এলেও তালেবান এখনও বাধাহীনভাবেই সামাজিক যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছে।

তালেবানকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেনি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমাভিত্তিক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো তালেবান ইস্যুতে কোনো নির্দেশনাও পায়নি। তাদের তালেবানবিরোধী কোনো নীতিমালাও নেই।

এর ফলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গোষ্ঠীটিকে নিয়ন্ত্রণ বেশ কঠিন।

অথচ বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ফেসবুক-টুইটারসহ বেশ কয়েকটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে নিষিদ্ধ। এ নিয়ে গত কয়েক মাস ধরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর দ্বিমুখী নীতি নিয়ে সরব ট্রাম্পবিরোধীরা।

ফেসবুকের দাবি, প্রতিষ্ঠানটির ‘বিপজ্জনক সংগঠনবিষয়ক নীতি’র আওতায় কয়েক বছর ধরেই নিষিদ্ধ তালেবান।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটির যুক্তি, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আলাদা কালো তালিকায় তালেবানের নাম না থাকলেও সরকারের কিছু নিষেধাজ্ঞা আছে গোষ্ঠীটির ওপর। সে হিসেবেই ফেসবুকেও তারা নিষিদ্ধ।

তালেবান বা তালেবানের পক্ষে পরিচালিত অ্যাকাউন্টগুলো মুছে দেয়া হয়েছে বলে দাবি ফেসবুকের।

এ ধরনের অ্যাকাউন্ট শনাক্তে আরবি, পশতুসহ বিভিন্ন ভাষায় দক্ষ একটি বিশেষজ্ঞ দলও গঠন করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

বিবৃতিতে ফেসবুক বলেছে, ‘কোনো দেশে স্বীকৃত সরকারের বিষয়ে ফেসবুক সিদ্ধান্ত নেয় না; বরং সে ক্ষেত্রে বিশ্ব সম্প্রদায়ের গৃহীত পদক্ষেপে শ্রদ্ধাশীল থাকাকেই বাঞ্ছনীয় বলে মনে করে। ক্ষমতায় যেই থাকুক না কেন, সে হিসেবে বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট ও আমাদের নীতিমালা লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব।’

এ বিষয়ে টুইটার এখনও কোনো অবস্থান ঘোষণা করেনি। আফগানিস্তান পরিস্থিতি নিয়ে টুইটারে যাবতীয় তৎপরতা সতর্কভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, অনেক আগেই ফেসবুক-টুইটারে তালেবানকে নিষিদ্ধ করা উচিত ছিল।

জোসেলিন বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তালেবানকে নিজস্ব একটি বাস্তুতন্ত্র গড়ে তুলতে সাহায্য করেছে। আত্মঘাতী হামলা থেকে শুরু করে নারীদের ওপর নিপীড়ন, কঠোর শরিয়াহ আইন প্রয়োগের বিষয়গুলোতে সাধারণ মানুষকে প্রভাবিত করেছে তারা।’

যোগাযোগের সস্তা ও কার্যকর মাধ্যম

জার্মান থিংকট্যাংক মার্শাল ডিজিটাল ফান্ডের সহকারী গবেষক অ্যাড্রিয়েন গোল্ডস্টেইন জানান, টুইটারে সক্রিয় কমপক্ষে ছয়জন তালেবান কর্মকর্তা। তাদের অনুসারী সব মিলিয়ে প্রায় ১০ লাখ।

এ নেতাদের সাম্প্রতিক সব টুইটেই তালেবানকে দেখানো হয়েছে শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল ও পশ্চিমা নেতাদের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ হিসেবে। গোষ্ঠীটির সংবাদ সম্মেলনেও এমন ভাবমূর্তি তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে।

তালেবানের টুইট অপপ্রচার আর মিথ্যায় ভরপুর বলে অনেক মানুষ বিশ্বাস করেন। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে মিডিয়া এশিয়া জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনেও এ ধারণাতেই সমর্থন দেয়া হয়।

বিশ্লেষকদের ভাষ্য, আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদমাধ্যম ও পরামর্শক সংস্থাগুলোর প্রকাশিত তথ্যের চেয়ে ভিন্ন কিছুই প্রকাশ করে তালেবান; হোক তা সামাজিক বা অন্য কোনো মাধ্যমে।

২০১৮ সালে গবেষণাটি করার সময় কেউ ধারণাও করেনি যে তিন বছরের মাথায় আবারও আফগানিস্তান দখল করবে তালেবান। কিন্তু গোষ্ঠীটি সে সময় ঠিকই আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের চেয়েও বেশি ও বিভিন্ন ভাষায় টুইটারে বার্তা প্রকাশ করত নিয়মিত।

একটি ঘটনা নিয়ে তালেবান ও সংবাদমাধ্যম আর বেসরকারি সংস্থাগুলোর তথ্যের অসংগতি ছাড়াও গবেষণায় বেরিয়ে আসে সামাজিক মাধ্যমের ওপর তালেবানের নির্ভরশীলতার তথ্যও।

কারণ বিস্তৃত পরিসরে বার্তা পৌঁছে দেয়ার জন্য এর চেয়ে সস্তা ও সহজ আর কোনো মাধ্যম নেই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের জন্য কোনো আধুনিক অবকাঠামো বা বিশেষজ্ঞেরও প্রয়োজন হয় না।

বিষয়টির সুযোগ নিয়ে ন্যূনতম অর্থ ও সময় ব্যয় করে আফগান সরকারের চেয়েও অনলাইনে বেশি প্রচার চালিয়েছে তালেবান।

অথচ ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার সময় যেকোনোভাবে ইন্টারনেটের ব্যবহার নিষিদ্ধ রেখেছিল এ তালেবানই। নিষেধাজ্ঞা অমান্যে পেতে হতো কঠোর শাস্তি।

বিশ্লেষকদের মতে, আফগানিস্তানের পরিস্থিতি ক্রমেই পরিবর্তনীয়। টুইটার ব্যবহারের মাধ্যমে সাধারণ আফগানদের অনেকেই এখন দেশটির অবস্থা সম্পর্কে বিশ্ব সম্প্রদায়কে অবহিত করে ও সাহায্য চায়।

আরও পড়ুন:
হুড়োহুড়িতে কাবুল বিমানবন্দরে নিহত ৭
কাবুল বিমানবন্দরে ভিড় ঠেকাচ্ছে তালেবান
দেশের পথে শতাধিক ভারতীয়, কাবুলে আটকে সহস্রাধিক
তালেবান শাসন মেনে নিতে বললেন ঘানির ভাই
কাবুল বিমানবন্দরে আইএসের হামলার শঙ্কায় যুক্তরাষ্ট্র

মন্তব্য

আরও পড়ুন

ইসরায়েলে ব্যাপক বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ

গাজায় অভিযান বন্ধের দাবি
ইসরায়েলে ব্যাপক বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ

গাজায় চলমান সামরিক অভিযান অবিলম্বে বন্ধ ও হামাসের হাতে আটক থাকা বাকি জিম্মিদের দ্রুত ফিরিয়ে আনার দাবিতে গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে বিক্ষোভকারীরা সমাবেশ করছেন। ওই দাবিতে ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। খবর বিবিসির।
এতে একদিকে যেমন রয়েছে জিম্মিদের পরিবার অন্যদিকে ইসরায়েলের সাধারণ মানুষও বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। দেশজুড়ে এই বিক্ষোভের আয়োজন করেছে হোস্টেজেস অ্যান্ড মিসিং ফ্যামিলিস ফোরাম নামের একটি গ্রুপ যারা অনেকদিন ধরেই জিম্মিদের মুক্তির বিষয়টিতে সরকারকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলে আসছে।
তারা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যেন তিনি যুদ্ধবিরতি চুক্তি চূড়ান্ত করতে সহায়তা করেন এবং হামাসের হাতে আটক থাকা জিম্মিদেরকে মুক্ত করতে ভূমিকা রাখেন।
ধারণা করা হচ্ছে, হামাস যাদেরকে জিম্মি করে নিয়ে গিয়েছিল তাদের মাঝে ২০ জন এখনো জীবিত আছেন। এদিকে ইসরায়েলের প্রধান প্রধান সড়ক অবরোধ করে এই বিক্ষোভ চলায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। দেশজুড়ে মহাসড়কগুলোতে এখন গাড়ির দীর্ঘ সারি দেখা যাচ্ছে। ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।
তেল আবিবের উত্তরে ইয়াকুম জংশনের কাছে কোস্টাল হাইওয়ে বা রুট টুতে বিক্ষোভকারীরা সড়কের মাঝখানে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়ায় ওই মহাসড়ক পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হাতে জিম্মি হওয়া মাতান জাঙ্গাউকারের মা আইনাভ জাঙ্গাউকার গতকাল মঙ্গলবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কড়া সমালোচনা করেছেন।
তিনি বলেন, ৬৯০ দিন ধরে সরকার কোনো সুস্পষ্ট লক্ষ্য ছাড়াই যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। আজ এটা পরিষ্কার যে নেতানিয়াহু একটি জিনিসকেই ভয় পান। আর তা হলো জনগণের চাপ। আমরা এই যুদ্ধ আরও এক বছর আগেই শেষ করতে পারতাম এবং সকল জিম্মি ও সেনাদেরকে ফিরিতে আনতে পারতাম। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তার ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার স্বার্থে বারবার বেসামরিক মানুষদের বলি দেওয়ার পথ বেছে নিয়েছেন।
ইসরায়েলজুড়ে এই প্রতিবাদটি এমন এক সময়ে হচ্ছে, যখন গাজায় নতুন করে ইসরায়েলি বিমান হামলা চলছে এবং ইসরায়েল সেখানে স্থল অভিযান চালানোরও প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এর আগে গতকাল দক্ষিণ গাজার একটি হাসপাতালে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ২০ জন নিহত হয়। নিহতদের মধ্যে পাঁচজন সাংবাদিক এবং চারজন স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন।
গাজায় একদিনে নিহত আরও ৮৬ ফিলিস্তিনি
গাজায় ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর টানা হামলায় একদিনে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৮৬ জন ফিলিস্তিনি। গত রোববার সন্ধ্যা থেকে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে আহত হয়েছেন আরও ৪৯২ জন। গত সোমবার রাতের দিকে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৫৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন ইসরায়েলি বাহিনীর নিক্ষিপ্ত গোলায়। বাকি ২৮ জন নিহত হয়েছেন খাদ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে সেনাদের এলোপাতাড়ি গুলিতে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গত ‘সোমবার ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গাজার বিভিন্ন হাসপাতালগুলোতে ৮৬ জনের মরদেহ ও ৪৯২ জন আহতকে আনা হয়েছে। তবে প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ অনেকেই ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা রয়েছেন, কিন্তু পর্যাপ্ত সরঞ্জাম ও জনবল না থাকায় উদ্ধার সম্ভব হচ্ছে না।’
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় সামরিক অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, গত সোমবারের পর পর্যন্ত গাজায় মোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬২ হাজার ৭৪৪ জনে। আহত হয়েছেন আরও এক লাখ ৫৮ হাজার ২৫৯ জন ফিলিস্তিনি।
এদিকে গত ১৯ জুন যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় ইসরায়েল ও হামাস দুই মাসের যুদ্ধবিরতিতে রাজি হলেও ১৮ মার্চ সেই যুদ্ধবিরতি ভেঙে ফের গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। ওই সময় থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় পাঁচ মাসে নিহত হয়েছেন অন্তত ১০ হাজার ৯০০ ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন ৪৬ হাজার ২১৮ জন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত মে মাসের শেষ দিক থেকে ত্রাণ ও খাদ্য সংগ্রহ করতে যাওয়া সাধারণ মানুষদের ওপরও হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি সেনারা। ২৭ মে প্রথমবারের মতো গাজায় ত্রাণ নিতে যাওয়া মানুষের ওপর গুলি চালানো হয়, এরপর থেকে নিয়মিতই এমন ঘটনা ঘটছে। এ সময়ের মধ্যে শুধু ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে নিহত হয়েছেন ২ হাজার ১২৩ জন ফিলিস্তিনি, আহত হয়েছেন আরও ১৫ হাজার ৬১৫ জনের বেশি।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক সংগঠন হামাস ইসরায়েলের ভেতরে প্রবেশ করে অতর্কিত হামলা চালায়। সেই হামলায় অন্তত ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায় হামাসের যোদ্ধারা। এর জবাবে গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে আইডিএফ। টানা ১৫ মাসের বেশি সময় যুদ্ধ চালানোর পর যুক্তরাষ্ট্রসহ মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর চাপে ইসরায়েল গত ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছিল।
জিম্মি হওয়া ২৫১ জনের মধ্যে অন্তত ১৫ থেকে ২০ জন এখনো জীবিত আছেন বলে ধারণা করছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। তাদের উদ্ধারে সামরিক অভিযান চালানোর ঘোষণা দিয়েছে আইডিএফ।
জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মহল একাধিকবার গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে। এমনকি জাতিসংঘের আদালত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে নেতানিয়াহু স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, হামাসকে পুরোপুরি দুর্বল ও অকার্যকর না করা এবং জিম্মিদের মুক্ত না করা পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Extreme political instability with the Constitution Amendment Bill in India

ভারতে সংবিধান সংশোধনী বিল নিয়ে চরম রাজনৈতিক অস্থিরতা

‘প্রধানমন্ত্রীকেও পদত্যাগ করতে হতে পারে’, অমিত শাহের বিস্ফোরক মন্তব্যে তোলপাড়
ভারতে সংবিধান সংশোধনী বিল নিয়ে চরম রাজনৈতিক অস্থিরতা

ভারতে ১৩০তম সংবিধান সংশোধনী বিল নিয়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা তীব্র আকার ধারণ করেছে। এই বিলের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক কাঠামোকে দুর্বল করার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেছে বিরোধী দলগুলো।

বিল নিয়ে বিতর্কের মাঝে নতুন আলোড়ন ছড়িয়েছে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মন্তব্য। সংসদে এক আলোচনায় তিনি বলেন, ‘আইনের শাসন সবার ওপরে। প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীকেও জবাবদিহি করতে হবে, এমনকি পদত্যাগ করতেও হতে পারে।’

এই মন্তব্য দেশটির পার্লামেন্ট ভবন থেকে সোশ্যাল মিডিয়া পর্যন্ত নতুন আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বিল পেশ প্রসঙ্গে বিরোধী শিবিরের নেতারা অভিযোগ করছেন, সরকার সংবিধানের মূল কাঠামোকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে চাইছে।

কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী দাবি করেছেন, ‘এটি সংবিধান আক্রমণের সমান, আমরা সর্বাত্মক আন্দোলনে নামব।’

অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘এই বিল জনগণের কণ্ঠরোধের ফাঁদ। সরকার জনসমর্থন হারিয়ে ভয় দেখানোর পথ বেছে নিয়েছে।’

এ প্রেক্ষাপটে বিজেপির পক্ষ থেকে অমিত শাহ বলেন, ‘বিরোধীদের আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। সংবিধানের কাঠামো অক্ষুণ্ণ রয়েছে। আইন ভাঙলে বা সাংবিধানিক সীমা লঙ্ঘন করলে প্রধানমন্ত্রীও রেহাই পাবেন না। আমাদের গণতন্ত্রের শক্তি এটাই।’

তার এই মন্তব্য বিরোধীদের মধ্যে এক ধরনের রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে কাজ করছে। কংগ্রেস সাংসদ জয়রাম রমেশ বলেন, ‘অমিত শাহ নিজেই স্বীকার করেছেন, এই বিলের পর পরিস্থিতি এমন দাঁড়াতে পারে যেখানে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ অনিবার্য হবে।’

টাইমস অব ইন্ডিয়া এক বিশ্লেষণে বলেছে, ‘প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ প্রসঙ্গ টেনে এনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিরোধীদের হাতে অজান্তেই শক্তি তুলে দিলেন।’

আনন্দবাজার পত্রিকা বলেছে, ‘এই বিতর্ক থেকে স্পষ্ট, বিজেপি ভেতরেই চাপ অনুভব করছে, যা বিরোধীরা সুযোগ হিসেবে নেবে।’

এদিকে দেশটির বিভিন্ন প্রান্তে যেমন- মুম্বাই, কলকাতা ও চেন্নাইতেও মিছিল হয়েছে। ছাত্র সংগঠন, শ্রমিক ইউনিয়ন এবং নাগরিক মঞ্চগুলোও রাস্তায় নেমেছে। দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররা বিক্ষোভ করে বলে, ‘সংবিধান রক্ষা করতে না পারলে কোনো সরকার বৈধ নয়।’

অর্থনীতিবিদ এবং বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই পরিস্থিতি দীর্ঘস্থায়ী হলে বিনিয়োগ ও প্রশাসনিক স্থিতিশীলতা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Iran will never have to the United States Khamene

ইরান কখনোই যুক্তরাষ্ট্রের কাছে মাথানত করবে না: খামেনি

ইরান কখনোই যুক্তরাষ্ট্রের কাছে মাথানত করবে না: খামেনি

ইসলামিক প্রজাতন্ত্র ইরানকে পরাধীন করার মার্কিন প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একটি ঐক্যবদ্ধ জাতীয় ফ্রন্ট গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। গত রোববার এই আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেছেন, ইরান কখনোই যুক্তরাষ্ট্রের কাছে মাথানত করবে না। রাজধানী তেহরানের এক মসজিদে দেওয়া এই বক্তব্যর পরে খামেনির সরকারি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।

ইসরায়েলের সঙ্গে টানা ১২ দিনের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষের ২ মাস পর যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ওই আহ্বান জানিয়েছেন খামেনি। সেই যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রও সীমিতভাবে অংশ নিয়ে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় বাঙ্কার বাস্টার বোমা ব্যবহার করে হামলা চালিয়েছিল মার্কিন বাহিনী।

বর্তমানে নিজেদের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলোর সঙ্গে নতুন করে আলোচনায় বসতে যাচ্ছে ইরান।

আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি অভিযোগ করে বলেন, গত জুনে ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনা লক্ষ্য করে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র যে হামলা চালিয়েছিল, তা ছিল ইসলামী প্রজাতন্ত্রকে অস্থিতিশীল করার পরিকল্পনার অংশ।

তিনি বলেন, একেবারে যুদ্ধের শুরুতেই ইরান আক্রান্ত হওয়ার পরদিনই আমেরিকার অ্যাজেন্টরা ইউরোপে বৈঠক করেছেন। সেই বৈঠকে সরকারের পতন কারা ইসলামী প্রজাতন্ত্র শাসন করবেন, সেই বিষয়ে আলোচনা করেছিলেন।

খামেনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের আসল উদ্দেশ্য হলো- ইরানকে নিজের ইচ্ছামতো চালানো এবং ওয়াশিংটনের ‘আনুগত্যে বাধ্য করা’।

তবে জুনের যুদ্ধ ইরানকে ভাঙ্গেনি বরং আরও শক্ত করেছে বলে মনে করেন দেশটির এই সর্বোচ্চ নেতা। তিনি বলেন, ‘ইরানি জাতি দেশের সেনাবাহিনী, সরকার ও ব্যবস্থার পাশে থেকে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে শত্রুদের শক্তিশালী আঘাত করেছে।’

বিদেশি শক্তিগুলো এখন ভেতর থেকে ইরানকে দুর্বল করার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেন খামেনি। তিনি বলেন, ‘শত্রুর মূল কৌশল হলো- দেশে বিভেদ তৈরি করা। আমেরিকা আর ইসরায়েলের অ্যাজেন্টরা ইরানি সমাজে ফাটল ধরানোর চেষ্টা করছে।’

দেশবাসীর প্রশংসা করে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, ‘আজ আল্লাহর অশেষ কৃপায় দেশ ঐক্যবদ্ধ। মতের অমিল থাকলেও যখন দেশের সামগ্রিক ব্যবস্থা, রাষ্ট্র ও শত্রুর বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর প্রসঙ্গ আসে, তখন জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়ে যান।’

১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লব আর যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসে জিম্মি সংকটের পর থেকেই ইরান-আমেরিকার কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন রয়েছে। তারপর থেকে দেশটির বিরুদ্ধে একের পর এক কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে ওয়াশিংটনের এসব নিষেধাজ্ঞার বেশিরভাগই ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ওপর আরোপ করা হয়েছে।

ওয়াশিংটন ও তার মিত্ররা অভিযোগ করে বলেছে, ইরান গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র বানাতে চাইছে; যা তেহরান বারবার অস্বীকার করেছে। গত জুনে যুদ্ধে ইরান-আমেরিকার পারমাণবিক আলোচনার ষষ্ঠ দফার বৈঠক শুরুর আগেই তেহরানে হামলা চালায় ইসরায়েল। যুদ্ধের কারণে সেই আলোচনা থমকে যায়।

মঙ্গলবার ইউরোপের তিন দেশ- ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানির সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা রয়েছে ইরানের। তবে ইউরোপীয় শক্তিগুলো হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, কোনো চুক্তিতে না পৌঁছালে ইরানের বিরুদ্ধে আবারও নিষেধাজ্ঞা ফিরিয়ে আনবে তারা।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
In the Israeli attack at Nass Hospital in Gaza four journalists were killed

গাজার নাসের হাসপাতালে ইসরায়েলি হামলায় চার সাংবাদিকসহ নিহত ১৯

গাজার নাসের হাসপাতালে ইসরায়েলি হামলায় চার সাংবাদিকসহ নিহত ১৯

গাজার দক্ষিণাঞ্চলে নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সে ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় অন্তত চার ফিলিস্তিনি সাংবাদিকসহ ১৯ জন নিহত হয়েছেন, জানিয়েছে উপত্যকাটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

আল-জাজিরা জানিয়েছে, গতকাল সোমবারের এ হামলায় নিহতদের মধ্যে চারজন সাংবাদিক আছেন বলে নিশ্চিত করেছে গাজার সরকারি গণমাধ্যম দপ্তর।

দপ্তরটি থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নাসের হাসপাতালে আরও চারজন সাংবাদিক নিহত হওয়ায় গাজায় শহীদ সাংবাদিকের সংখ্যা ২৪৪ জনে দাঁড়িয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, ওই সাংবাদিকরা শহীদ হন যখন ইসরায়েলি দখলদাররা খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে বোমাবর্ষণ করে। ওই সময় সেখানে একদল সাংবাদিক একটি প্রেস কাভারেজ মিশনে ছিলেন। ইসরাইলের এই ভয়ঙ্কর অপরাধে আরও অনেকে শহীদ হয়েছেন। আমরা ইসরাইলি দখলদারদের, মার্কিন প্রশাসন এবং যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও ফ্রান্সের মতো যেসব দেশ এ গণহত্যার অপরাধে অংশ নিচ্ছে তাদের এ জঘন্য অপরাধগুলো সংঘটনের জন্য পুরোপুরি দায়ী বলে মনে করছি।

নাসের হাসপাতালে হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া এক সাংবাদিক আল-জাজিরাকে জানিয়েছেন, দুই বছর ধরে চলা যুদ্ধের কারণে তারা বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট থেকে বঞ্চিত, তাই ফিলিস্তিনি সাংবাদিকরা খবর পাঠাতে হাসপাতালের এ পরিষেবাগুলো ব্যবহার করে আসছেন।

তিনি বলেন, আমরা সবসময় আহত ফিলিস্তিনিদের অনুসরণ করছি। জানাজা, দাফন থেকে শুরু করে অপুষ্টির ঘটনাগুলোও হাসপাতাল থেকেই জানতে পারছি ও প্রতিবেদন করছি আমরা।

এ কারণেই ফিলিস্তিনি সাংবাদিকরা গাজার হাসপাতালগুলোকে তাদের শিবিরে পরিণত করেছিলেন। সেখানেই তাদের ওপর হামলা চালানো হলো।

ইসরায়েলি বাহিনী প্রথমে বিস্ফোরক ভর্তি একটি আত্মঘাতী ড্রোন দিয়ে হামলা চালায়। ড্রোনটি নাসের হাসপাতালের ছাদে আঘাত হানে। এতে এক সাংবাদিক নিহত ও কয়েকজন আহত হন।

গাজার দমকল বাহিনী নিহতের মৃতদেহ ও আহতদের উদ্ধার করা শুরু করে আর অন্য সাংবাদিকরাও খবর সংগ্রহে সেখানে ভিড় করেন। সেখানে বেসামরিকরাও ছিল। এ সময় ইসরায়েলি বাহিনী একই জায়গায় আবার আঘাত হানে, সেখানে আরেকটি ড্রোন হামলা চালায় তারা।

এতে প্রথম হামলার ঘটনা কাভার করতে থাকা সাংবাদিকদের পাশাপাশি উদ্ধারকাজে রত দমকল কর্মীরাও নিহত হন। নিহতদের মধ্যে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) জন্য কাজ করা এক সাংবাদিকও আছেন বলে বার্তা সংস্থাটি নিশ্চিত করেছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স সামাজিক মাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে নিহত সাংবাদিকদের মধ্যে একজন তাদের চুক্তিভুক্ত ফটো সাংবাদিক হিসেবে কাজ করতেন বলে নিশ্চিত করেছে।

নিহত অন্য দুই সাংবাদিকের মধ্যে একজন আল জাজিরার জন্য এবং অপরজন এনবিসি নেটওয়ার্কের জন্য কাজ করতেন বলে জানা গেছে।

আহতদের মধ্যে রয়টার্সের আরেকজন সাংবাদিক আছেন বলে আল জাজিরা জানিয়েছে।

নাসের হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. সাবের আল-আসমার বলেছেন, অপ্রতুল উপকরণ নিয়েই আমরা হাসপাতালের ভেতরে আমাদের কাজ করছিলাম। সবাই যখন কাজে ব্যস্ত তখনই ভয়াবহ হামলাটি চালানো হয়।

তিনি জানান, এই হামলার কারণে হাসপাতালটিতে থাকা রোগীরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই জোড়া হামলায় অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে চার সাংবাদিক ও একজন দমকল কর্মী রয়েছেন।

এই হামলার বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী বা দেশটির প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর কোনো মন্তব্য করেনি।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
After the Trump Lees meeting Seoul announced the purchase of five Boeing

ট্রাম্প-লি’র বৈঠকের পর ১০৩টি বোয়িং ক্রয়ের ঘোষণা সিউলের

ট্রাম্প-লি’র বৈঠকের পর ১০৩টি বোয়িং ক্রয়ের ঘোষণা সিউলের

যুক্তরাষ্ট্রের বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং ও দক্ষিণ কোরিয়ার বিমান পরিবহন সংস্থা কোরিয়ান এয়ার প্রায় ৩ হাজার ৬শ’ কোটি ডলারের একটি চুক্তি করেছে। গতকাল সোমবার ওয়াশিংটনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিউংয়ের মধ্যে বৈঠকের কয়েক ঘণ্টা পর দুই কোম্পানির মধ্যে এই চুক্তি হয়।

সিউল থেকে এএফপি আজ একথা জানিয়েছে।

এই চুক্তির আওতায় কোরিয়ান এয়ার বোয়িংয়ের কাছ থেকে ১০৩টি যাত্রীবাহী বিমান কিনবে। এমন সময়ে চুক্তিটি হলো, যখন ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর সঙ্গে ব্যবসা বাড়ানোর জন্য বাণিজ্যিক সহযোগী দেশগুলোকে চাপ দিচ্ছেন।

বোয়িং ও কোরিয়ান এয়ারের পক্ষ থেকে দেয়া এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বোয়িং এর ৭৮৭, ৭৭৭ ও ৭৩৭ মডেলের বিমানগুলো এই চুক্তির আওতায় থাকবে।

কোরিয়ান এয়ারের প্রধান ওয়াল্টার চো আশা করছেন, এসব বিমান তাঁর প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হলে বিমানবহরকে আধুনিকায়ন করবে। দক্ষিণ কোরিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম বিমান সংস্থা আসিয়ানা এয়ারলাইনসের সঙ্গে একীভূত হওয়ার পরও প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে কোম্পানির জন্য এই চুক্তি সহায়ক হবে।

গতকাল লি জে মিউং ও ট্রাম্পের বৈঠকে দক্ষিণ কোরিয়ার পণ্যের ওপর গত জুলাইয়ে যুক্তরাষ্ট্র আরোপিত ১৫ শতাংশ শুল্কের বিষয়েও আলোচনা হয়।

সোমবার দুই দেশের সরকারি প্রতিনিধি ও ব্যবসায়ী নেতাদের বৈঠকের সময় বোয়িং এবং কোরিয়ান এয়ারের এই চুক্তি ঘোষণা করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক ও দক্ষিণ কোরিয়ার বাণিজ্যমন্ত্রী কিম জুং-কোয়ান সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

সিউলের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বৈঠকে সই হওয়া একাধিক চুক্তির মধ্যে কোরিয়ান এয়ারের এই চুক্তি ছিল অন্যতম।

এ ছাড়া গতকাল দক্ষিণ কোরিয়ার গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হুন্দাই মোটর গ্রুপ ঘোষণা দিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রে তাদের বিনিয়োগ ২ হাজার ১শ’ কোটি ডলার থেকে বাড়িয়ে ২ হাজার ৬শ’ কোটি ডলার করছে। ট্রাম্প ও লি’র বৈঠকের অল্প সময় পর প্রতিষ্ঠানটি জানায়, তারা যুক্তরাষ্ট্রে একটি নতুন কারখানা স্থাপন করবে। সেখানে বছরে ৩০ হাজার রোবট উৎপাদনের সক্ষমতা থাকবে।

বোয়িংয়ের বাণিজ্যিক উড়োজাহাজ বিভাগের প্রধান স্টেফানি পোপ কোরিয়ান এয়ারের ক্রয়াদেশকে একটি ‘যুগান্তকারী চুক্তি’ বলে অভিহিত করেছেন।

বোয়িং বলেছে, এই চুক্তি যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে প্রায় ১ লাখ ৩৫ হাজার কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃস্টি হবে। বিশ্বজুড়ে কোম্পানিটির কর্মীর সংখ্যা ১ লাখ ৭০ হাজারের বেশি।

নতুন এই কেনাকাটাসহ কোরিয়ান এয়ার চলতি বছর বোয়িংকে ১৫০টির বেশি ক্রয়াদেশ দিয়েছে কিংবা বিমান কেনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

সোমবার দক্ষিণ কোরিয়ার গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হুন্দাই মোটর গ্রুপ ঘোষণা দিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রে তাদের বিনিয়োগ ২ হাজার ১শ’ কোটি ডলার থেকে বাড়িয়ে ২ হাজার ৬শ’ কোটি ডলার করছে।

বেশ কিছুদিন ধরেই বিমান বেচাকেনার এই পরিকল্পনা চলছিল। গত মার্চ মাসে সিউল কর্তৃপক্ষ বলেছিল, কোরিয়ান এয়ার বোয়িং ও মার্কিন ইঞ্জিন নির্মাতা জি ই অ্যারোস্পেসের সঙ্গে চূড়ান্ত চুক্তি করতে চলেছে। গতকাল জি ই-এর সঙ্গে ১ হাজার ৩৭০ কোটি ডলারের চুক্তিও ঘোষণা করা হয়েছে।

ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাওয়া কয়েকটি দেশ ইতোমধ্যে বোয়িংকে বড় ধরনের অর্ডার দেওয়ার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে।

গত জুলাই মাসে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির অংশ হিসেবে ১শ’টি বোয়িং যুদ্ধ বিমান কিনতে সম্মত হয়েছে জাপান।

ইন্দোনেশিয়ার উড়োজাহাজ সংস্থা গারুদা যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক কমানোর চুক্তির অংশ হিসেবে ৫০টি বোয়িং জেট কিনবে।

এসব চুক্তি যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর বিক্রিকে তাদের ইউরোপীয় প্রতিদ্বন্দ্বী এয়ারবাসের বিক্রিকে ছাড়িয়ে যেতে সাহায্য করেছে।

তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বোয়িংকে ধারাবাহিকভাবে কয়েকটি সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছে। এর মধ্যে আছে দুটি মারাত্মক দুর্ঘটনা এবং মাঝ আকাশে বিমানের একটি অংশ ভেঙে পড়ার মতো ঘটনা।

২০১৮ সালে জাকার্তা থেকে ওড়ার পর একটি বোয়িং ৭৩৭ উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে ১৮৯ জন আরোহী নিহত হন। কয়েক মাস পরে ইথিওপিয়া থেকে উড্ডয়নের পরপরই আরেকটি বোয়িং বিমানের দুর্ঘটনায় ১৫৭ জন মারা যান। ২০২৪ সালে উড়ন্ত অবস্থায় একটি বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স বিমানে জরুরি বহির্গমন দরজার প্যানেল খুলে যায়। এ ছাড়া গত বছর প্রায় ৩০ হাজার শ্রমিক আট সপ্তাহ ধর্মঘট করায় বোয়িংয়ের মার্কিন কারখানাগুলোয় উৎপাদন কম হয়।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Yunus Modi and Shehbaz will address the UN on the same day

একই দিনে জাতিসংঘে ভাষণ দেবেন ইউনূস,মোদি ও শেহবাজ

একই দিনে জাতিসংঘে ভাষণ দেবেন ইউনূস,মোদি ও শেহবাজ

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন আগামী সেপ্টেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে একই দিনে ভাষণ দেবেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডনের খবরে বলা হয়, জাতিসংঘের ৮০তম সাধারণ অধিবেশন আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে ৯ সেপ্টেম্বর, আর উচ্চপর্যায়ের সাধারণ বিতর্ক চলবে ২৩ থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।

এদিকে মে মাসে চার দিনের সংঘর্ষের পর প্রথমবারের মতো ভারত ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী একই দিনে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে উপস্থিত হবেন। ২৬ সেপ্টেম্বর এই অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে।

জাতিসংঘ কর্মকর্তাদের শেয়ার করা একটি প্রাথমিক সময়সূচি অনুযায়ী, পাকিস্তানের কৌশলগত সুবিধা থাকতে পারে, কারণ তারা ভারতের পর ভাষণ দেবে। ফলে নয়াদিল্লির বক্তব্যের সরাসরি জবাব দেওয়ার সুযোগ পাবে ইসলামাবাদ।

প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ উচ্চপর্যায়ের পাকিস্তানি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন।

এ দলে থাকবেন উপপ্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার এবং প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা তারিক ফাতেমি।

প্রথমে বক্তব্য রাখবে ব্রাজিল, এরপর যুক্তরাষ্ট্র, যেখানে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে প্রথমবারের মতো জাতিসংঘে ভাষণ দেবেন। এ বছরের থিম হচ্ছে: ‘একসঙ্গে আরো ভালো: শান্তি, উন্নয়ন ও মানবাধিকারের জন্য ৮০ বছর ও তার পরেও।’

প্রাথমিক তালিকা অনুযায়ী, ভারতের প্রধানমন্ত্রী সকালে ভাষণ দেবেন, আর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীসহ ইসরায়েল, চীন ও বাংলাদেশের নেতারা একই দিনের পরবর্তী সময়ে বক্তব্য দেবেন।

৮০তম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ হতে যাচ্ছে সাম্প্রতিক বছরগুলোর সবচেয়ে ব্যস্ত কূটনৈতিক আসরগুলোর একটি। এটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ, ইউক্রেন সংঘাত এবং মে মাসের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে। ইসলামাবাদের বার্তা স্পষ্ট: দক্ষিণ এশিয়ার অস্থিরতা বিশ্ব উপেক্ষা করতে পারে না, আর স্থায়ী শান্তির মূল চাবিকাঠি হলো কাশ্মির।

প্রাথমিক সময়সূচি অনুযায়ী, ২৪ সেপ্টেম্বর জলবায়ুবিষয়ক একটি বিশেষ অনুষ্ঠান এবং ২৬ সেপ্টেম্বর পারমাণবিক অস্ত্র সম্পূর্ণ বিলোপের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
China India Water Water War with Brahmaputra Dam

ব্রহ্মপুত্রে পাল্টাপাল্টি বাঁধ নিয়ে চীন-ভারত পানিযুদ্ধের শঙ্কা

ব্রহ্মপুত্রে পাল্টাপাল্টি বাঁধ নিয়ে চীন-ভারত পানিযুদ্ধের শঙ্কা ক্যাপশন:  ভারতের অরুণাচলে সিয়াং নদীতে বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা করছে ভারত। ছবি: সংগৃহীত

ব্রহ্মপুত্র নদে চীন বিশ্বের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ করতে যাচ্ছে। এমন ঘোষণার সময় থেকেই ভারতে উদ্বেগ দানা বেধেছিল। এবার ভারতও নদের একাংশে পাল্টা বাঁধ নির্মাণ করতে যাচ্ছে।

চারজন কর্মকর্তা ও ভারত সরকারের নথির বরাত দিয়ে এমন তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। ওই নথিটি চীনের বাঁধের সম্ভাব্য প্রভাব বিশ্লেষণ করে তৈরি করা হয়েছে। ভারতের কর্মকর্তাদের শঙ্কা, চীন ব্রহ্মপুত্রে বাঁধ দিলে শুষ্ক মৌসুমে ভারতে পানির প্রবাহ ৮৫ শতাংশ কমতে পারে। তাই সম্ভাব্য প্রভাব মোকাবিলায় দিল্লিও নিজস্ব বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

চীন বাঁধ নির্মাণ করছে তিব্বতের ইয়ারলুং জাংবো নদীতে। এটি ভারতের অরুণাচল প্রদেশের সীমান্তবর্তী। ইয়ারলুং জাংবো ভারতে প্রবেশের পর সিয়াং ও ব্রহ্মপুত্র নদ নামে পরিচিত। ভারত এই নদের অরুণাচল অংশে বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা করছে। যেটির নাম ‘আপার সিয়াং মাল্টিপারপাস স্টোরেজ ড্যাম’। এর আগেও ভারত পানি নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছিল। তবে তা অরুণাচলের বাসিন্দাদের প্রতিবাদের মুখে বন্ধ থাকে। স্থানীয়দের শঙ্কা, যেকোনো বাঁধের কারণে গ্রামের পর গ্রাম পানিতে তলিয়ে যাবে।

গত বছরের ডিসেম্বরে চীন অরুণাচলের সীমান্তবর্তী এলাকায় একটি জলবিদ্যুৎ বাঁধ নির্মাণের ঘোষণা দেয়। এ অবস্থায় নয়াদিল্লি আশঙ্কা করছে, চীন নদীর নিয়ন্ত্রণ নেওয়াকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে পারে। তাই গত মে মাসে ‘আপার সিয়াং মাল্টিপারপাস স্টোরেজ ড্যাম’ নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করে ভারতের জাতীয় জলবিদ্যুৎ কোম্পানি। দুটি সূত্র রয়টার্সকে বলেছে, ভারতের শীর্ষ কর্মকর্তারা চলতি বছরের মধ্যে বাঁধ নির্মাণকাজে গতি আনতে সভা করছেন। এর মধ্যে গত জুলাইয়ে একটি বৈঠকের আয়োজন করে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর।

বেইজিং এখনও বাঁধ নির্মাণের বিস্তারিত পরিকল্পনা প্রকাশ করেনি। তবে নয়াদিল্লি চীনা বাঁধের একটি সম্ভাব্য আকার ধরে নিয়ে বিশ্লেষণ তৈরি করেছে। সূত্র ও নথি অনুযায়ী, দিল্লি অনুমান করছে চীনা বাঁধ বেইজিংকে সর্বোচ্চ ৪০ বিলিয়ন কিউবিক মিটার পানি সরিয়ে নেওয়ার সুযোগ দেবে। ভারতে যেটির প্রভাব পরবে শুষ্ক মৌসুমে। এই সময় ভারতের অংশে নদীতে পানির প্রবাহ কমে যায়। সেক্ষেত্রে ‘আপার সিয়াং মাল্টিপারপাস স্টোরেজ’ প্রকল্পের মাধ্যমে ১৪ বিলিয়ন কিউবিক মিটার পানি সংরক্ষণ করা যাবে। যেটি চীনের বাঁধের প্রভাব কিছুটা শিথিল করবে। অর্থ্যাৎ, এই প্রকল্প থেকে শুষ্ক মৌসুমে ভারত পানি ছাড়তে পারবে।

আবার অসময়ে চীন পানি ছাড়লে সে ধাক্কা মোকাবিলার কথাও বিবেচনা করেছে ভারত। এ জন্য তারা তাদের বাঁধের অন্তত ৩০ শতাংশ সবসময় খালি রাখতে চায়। যাতে চীনের অংশ থেকে ছাড়া পানি এখানে সংরক্ষণ করা যায়।

রয়টার্সের এক প্রশ্নের জবাবে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, জলবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো বৈজ্ঞানিক গবেষণার মধ্য দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এতে নিরাপত্তা ও পরিবেশের বিষয় গুরুত্ব পেয়েছে। যাতে নিচু দেশগুলোর ওপর কোনো প্রভাব না পড়ে। এই মুখপাত্র আরও বলেন, চীন সীমান্তবর্তী নদীগুলোর উন্নয়ন ও ব্যবহারে দায়িত্বশীল মনোভাব বজায় রেখেছে। ভারত ও বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ ও সহযোগিতা বজায় রেখেছে।

ভারতের বাঁধ নির্মাণ পরিকল্পনার বিষয়ে জানতে চাইলে নরেন্দ্র মোদির দপ্তর, পানি ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোনো জবাব দেয়নি। রাষ্ট্রায়ত্ত জলবিদ্যুৎ কোম্পানিও মন্তব্য করেনি। তবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আগে জানিয়েছিল, ১৮ আগস্ট চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে এই বাঁধ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। আগস্টেই পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের এক সহকারী সংসদ সদস্যদের বলেছিলেন, নাগরিকদের জীবন ও জীবিকা রক্ষার জন্য সরকার কিছু প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে বাঁধের বিষয়টিও আছে।

ভারত বাঁধ নির্মাণ নিয়ে খোদ নিজ দেশেই প্রতিরোধের মুখে পড়েছে। গত মে মাসে জাতীয় জলবিদ্যুৎ কোম্পানির কর্মীরা অরুণাচলের পারং গ্রামে জরিপ করতে যান। সে সময় স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা যন্ত্রপাতি ভাংচুর করে। এই জনতার অনেকে অরুণাচলের পাহাড়ি উপত্যকায় ধান, কমলা লেবু ও বাতাবি লেবু চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তারা আঞ্চলিক সড়কগুলোতে অস্থায়ী পাহারা চৌকি বসিয়েছেন, যাতে জলবিদ্যুৎ কোম্পানির কর্মীরা এলাকায় প্রবেশ করতে না পারে।

রয়টার্সকে দুটি সূত্র জানিয়েছে, অন্তত ১৬টি পুরোনো গ্রাম বাঁধের জলাধারে তলিয়ে যাবে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, এতে সরাসরি প্রভাবিত হবে ১০ হাজারের বেশি মানুষ। তবে স্থানীয় সম্প্রদায়গুলোর নেতাদের হিসাব অনুযায়ী, ক্ষতিগ্রস্ত হবে ১ লাখের বেশি মানুষ।

স্থানীয় এক ব্যবসায়ী ওডোনি পালো পবিন বলেন, আমরা এই জমিতে যে এলাচ, ধান, কাঁঠাল আর নাশপাতি ফলাই, তা দিয়ে সংসার চলে। সন্তানদের পড়াশোনার খরচ বহন করি। আমরা জীবন বাজি রেখে হলেও এই বাঁধের বিরুদ্ধে লড়ব।

চীন আশা করছে তাদের বাঁধ নির্মাণ কাজ ২০৩০ সালের মধ্যে শেষ হবে। ভারতের আপার সিয়াং প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পর কাজ শেষ হতেও এক দশক সময় লাগতে পারে। এর মানে হলো, চীনের বাঁধের কাজ আগে শেষ হবে। অপরদিকে ভারতের কাজ তখনো চলমান থাকবে। এই সময় চীন পানি ছাড়লে ভারতের নির্মাণাধীন বাঁধ ক্ষতির মুখে পড়বে।

স্থানীয়দের মতে, তিব্বত ও অরুণাচলের যে স্থানে চীন ও ভারত বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা করছে সেগুলো উচ্চমাত্রার ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা। বাঁধ হলে স্বাভাবিকভাবেই আশপাশের বাসিন্দারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারত-চীন পানি সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ সায়নাংশু মোদকও বলছেন, চীনের বাঁধ নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। তাই ভারতকে অবশ্যই চীনের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনায় বসা উচিত।

মন্তব্য

p
উপরে