× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

আন্তর্জাতিক
The Taliban have no power to stop heroin production without US money
google_news print-icon

আফিম না বেচে চলতে পারবে তালেবান?

আফিম-না-বেচে-চলতে-পারবে-তালেবান?
প্রতীকী ছবি
সাবেক ব্রিটিশ এক সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় এসে আবার চুক্তিতে পৌঁছাতে পারলে স্থায়ীভাবে না হলেও কিছু সময়ের জন্য নিশ্চিতভাবে মাদক চোরাকারবার বন্ধ করবে তালেবান। কারণ ২০০০ সালেও গোষ্ঠীটি কম-বেশি নিজেদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছে বলে আমরা দেখেছি।’

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর চলতি সপ্তাহে প্রথম সংবাদ সম্মেলনে আফিম, হেরোইন উৎপাদন ও পাচার বন্ধের প্রতিশ্রুতি দেন তালেবানের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ। এ আশ্বাসকে বাস্তবে রূপ দেয়ার সম্ভাবনা কতটা, সে হিসাব-নিকাশ করতে ব্যস্ত বিভিন্ন মহল।

আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করা সশস্ত্র গোষ্ঠীটির ইতিহাস কয়েক দশকের হলেও উত্থান শুরু মূলত নব্বইয়ের দশকে। শুরু থেকেই তাদের আয়ের প্রধান উৎস আফিম-হেরোইন। মাদক ব্যবসায় জড়িত স্থানীয় ও আঞ্চলিক বিভিন্ন অপরাধীচক্রের সঙ্গে অংশীদারত্বের ভিত্তিতে বিক্রয়লব্ধ অর্থও পায় তালেবান।

ভাইস নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, জাবিহুল্লাহ মুজাহিদের এ প্রতিশ্রুতির আড়ালে একটা ‘কিন্তু’ আছে। কারণ বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র দেশ হিসেবে আফগানিস্তানের জন্য ‘আন্তর্জাতিক সহযোগিতা’ দরকার বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করেছেন তালেবান মুখপাত্র।

আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক জোটের হামলায় ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরও গত ২০ বছর ধরে বিদেশি সেনাদের অবস্থানের মধ্যেই একের পর এক হামলা চালিয়ে নিজেদের উপস্থিতি জানান দিয়ে এসেছে তালেবান।

‘ইসলামিক আমিরাত অফ আফগানিস্তান’ নামে স্বঘোষিত সমান্তরাল রাষ্ট্র কায়েম করেছে গোষ্ঠীটি। তাদের আছে নিজস্ব একটি সাদা পতাকাও।

দেশের ৩৪ প্রদেশে আছে তালেবানের ছায়া সরকার, যার বার্ষিক আয় প্রায় দেড় শ কোটি ডলার বলে জানা যায় তালেবান সদস্য ও জাতিসংঘের একটি কমিটির তথ্য থেকে।

আয়ের সিংহভাগেরই উৎস মাদক। কারণ সারা বিশ্বের হেরোইনের চাহিদার ৮০ শতাংশই ‌উৎপাদন হয় আফগানিস্তানে। পাশাপাশি হাশিশ বলে পরিচিত বিশেষ ধরনের প্রক্রিয়াজাত গাঁজা আর মেথামফেটামিনধর্মী মাদকও উৎপাদন ও কেনাবেচা চলে তালেবানের তত্ত্বাবধানে।

হেরোইন উৎপাদনে ব্যবহৃত প্রধান কাঁচামাল পপি গাছের ‘রেসিন’ বা রজন। আফগানিস্তানের আইনে নিষিদ্ধ হলেও সহজ চাষ আর লাভ বেশি বলে দুর্গম বিস্তীর্ণ অঞ্চলে জীবিকা পপি চাষনির্ভর।

গত সোমবারের সংবাদ সম্মেলনে মুজাহিদ বলেছিলেন, ‘আমাদের জনগণ ও বিশ্ব সম্প্রদায়কে আশ্বস্ত করছি যে, আর মাদক উৎপাদন আমরা করব না। এখন থেকে কেউ মাদক চোরাচালানেও যুক্ত থাকবে না, হেরোইন কেনাবেচাতেও কারও সম্পৃক্ততা থাকবে না।’

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর কয়েক শ কোটি ডলারের আফিম আর হেরোইন বিক্রি হয়। স্থানীয় পর্যায়েই পপি চাষের বাজারমূল্য প্রায় ৩৫ কোটি ডলার। কৃষকদের কাছ থেকে প্রতি কেজি পপি ৫৫ ডলার দরে কেনে হেরোইন উৎপাদকরা।

প্রক্রিয়াজাত পপি বিদেশে পাচারের পর এর বাজারমূল্য ১৪০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যায়।

তাই পপির ভূস্বর্গ আফগানিস্তানে কৃষকদের জন্য শস্যটি আশীর্বাদের শামিল। দেশটিতে বেশিরভাগ মানুষের বার্ষিক আয় ৬০০ ডলারের কম। পপি চাষ তাদের জন্য ক্ষুধামুক্তির প্রধান উপায়।

সহজে চাষযোগ্য পপি উৎপাদনে নিজেদের জমি ব্যবহার ছাড়া তেমন কোনো পুঁজিও দরকার হয় না।

আফগানিস্তানে পপি উৎপাদন ও উত্তোলনের পর প্রক্রিয়াজাতকরণ থেকে শুরু করে ইউরোপে পৌঁছানো পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে এর দাম বাড়ে। ইউরোপে পৌঁছাতে পৌঁছাতে দাম ছাড়িয়ে যায় আসলের ১০ গুণ। সব মিলিয়ে আফগান অর্থনীতির সব পর্যায়ে নগদ সরবরাহ অব্যাহত রাখতে নিষিদ্ধ পপির ভূমিকা অপরিসীম।

অর্থনীতির এই চাপের কারণেই সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত নিতে এখন বাধ্য তালেবান। দ্বিতীয় দফায় আফগানিস্তানের নতুন শাসক দলটির পক্ষে চাইলেই মাদকের বাণিজ্য বন্ধ করে দেয়া সম্ভব নয়। এটি সম্ভব করতে হলে আগে আফগান কৃষকদের আয়ের বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে গোষ্ঠীটিকে।

অভিজাত নিরাপত্তা বাহিনীর সাবেক এক ব্রিটিশ সেনা (যিনি বর্তমানে মাদকবিরোধী উপদেষ্টা) ভাইস নিউজকে বলেন, ‘মাদক উৎপাদন বন্ধের বিনিময়ে নিজেদের জন্য সেরা চুক্তিটি বের করে আনতে চাইবে তালেবান। দেখা যাক কী হয়। আলোচনায় তারা দারুণ।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাবেক ব্রিটিশ সেনা কর্মকর্তা অবসর গ্রহণের আগে আফগানিস্তানের হেলমান্দ প্রদেশে সফর করেছেন অসংখ্যবার। দেশটিতে হেরোইন উৎপাদনের অন্যতম প্রধান অঞ্চল এই হেলমান্দ।

তিনি বলেন, ‘তালেবান যে হেরোইন বাণিজ্যে মুগ্ধ, বিষয়টা তা নয়। ধর্মভিত্তিক গোষ্ঠীটির ধর্মীয় মতাদর্শ অনুযায়ী মাদক সেবন, কেনাবেচা সবকিছু সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

‘কিন্তু আফগানিস্তানের গ্রামাঞ্চলের সংস্কৃতির সঙ্গে অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িয়ে পপি। তাই তালেবানও জানে যে বিকল্প ব্যবস্থা করা ছাড়া চাইলেই আয়ের এ উৎসে আঘাত হানার ক্ষমতা তাদের নেই।’

২০০৮ সাল থেকে বেশ কয়েকবার আফগান সরকারের মাদকবিরোধী কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন সাবেক এ সেনা কর্মকর্তা। আফগানিস্তানে বিদেশি ঠিকাদার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘মুজাহিদিনদের মুখে খাবার জুগিয়েছে হেরোইন। সোভিয়েত ঔপনিবেশিক শাসকদের বিরুদ্ধে তাদের অস্ত্রের জোগানও হয়েছে হেরোইন বিক্রির অর্থ থেকে। আবার গৃহযুদ্ধ শুরুর পর তালেবানবিরোধী আঞ্চলিক রণাঙ্গনের সব নেতা ও তাজিক-উজবেকসহ বিভিন্ন আদিবাসী গোষ্ঠী আর্থিক ও অস্ত্রসাহায্য পেয়েছে হেরোইন বাণিজ্য থেকে প্রাপ্ত অর্থের মাধ্যমে।’

সাবেক ব্রিটিশ সেনা কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘নিজেদের লাভের জন্যই হেরোইন বাণিজ্যে কর বসিয়েছে তালেবান। বিশেষ করে ২০০৬ সালে যখন আমরা হেলমান্দে প্রবেশ করি, সে সময় তারা জানত যে আমাদের মাদকবিরোধী অভিযান কৃষকদের ক্ষুব্ধ করে তুলবে।

‘তাই তখন তারা বিদেশি দখলদারদের হাত থেকে আবাদি জমি বাঁচানো ও কৃষকদের স্বার্থরক্ষার নামে কর আরোপ করে। এভাবেই কৃষকদের কর্তৃপক্ষ বনে যায় তারা, যা এখনও বিদ্যমান।’

সেনা থেকে উপদেষ্টা বনে যাওয়া এই বিশ্লেষকের ভাষ্য, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে অর্থ আদায় করতে না পারা পর্যন্ত এসব বন্ধ করবে না তারা। আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ছাড়া মাদক বাণিজ্য বন্ধের সক্ষমতা তাদের নেইও।

‘কারণ তখন পুরো দেশ না খেয়ে মরতে বসবে। হেরোইন তাদের একমাত্র টেকসই রপ্তানি পণ্য। তাই এটি বন্ধ করতে হলে দেশকে বাঁচিয়ে রাখতে তাৎক্ষণিক আলোচনায় বসতে তালেবান বাধ্য।’

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে টুইন টাওয়ারসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় একযোগে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে সে বছরই আফগানিস্তানে সামরিক অভিযান শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলো, যা চলে দীর্ঘ ২০ বছর।

সে সময় আফগানিস্তানের ক্ষমতায় ছিল তালেবান। আন্তর্জাতিক জোটের সেনা অভিযানে গোষ্ঠীটি ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগে দেশ শাসন করেছে প্রায় ছয় বছর।

প্রথম দফায় ক্ষমতায় থাকাকালীন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে মাদকবিরোধী সাহায্য হিসেবে কয়েক শ কোটি ডলারের বিনিময়ে হেরোইন রপ্তানি বন্ধে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল তালেবান।

সাবেক ব্রিটিশ সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় এসে আবার চুক্তিতে পৌঁছাতে পারলে স্থায়ীভাবে না হলেও কিছু সময়ের জন্য নিশ্চিতভাবে মাদক চোরাকারবার বন্ধ করবে তালেবান। কারণ ২০০০ সালেও গোষ্ঠীটি কম-বেশি নিজেদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছে বলে আমরা দেখেছি।’

ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগে যুক্তরাষ্ট্রের চুক্তি অনুযায়ী ২০০০ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তালেবানশাসিত অঞ্চলগুলো থেকে মাদকদ্রব্য রপ্তানি সত্যিই শূন্যের কোটায় নেমে এসেছিল। কিন্তু এর বিনিময়ে কৃষকদের আর্থিক সহায়তা বণ্টনের আগেই আফগানিস্তানের গ্রামাঞ্চলের অর্থনীতিতে ধস নামে। দুর্ভিক্ষের যন্ত্রণায় সে সময় লাখো মানুষ প্রতিবেশী পাকিস্তানে গিয়ে আশ্রয় নেয়।

মাদকবিরোধী উপদেষ্টার মতে, এবারও চাইলে হেরোইন বাণিজ্য বন্ধ করতে পারবে তালেবান। কিন্তু তাদের অতীত অভিজ্ঞতা ভালো নয়।

শেষবার হেরোইন বাণিজ্য বন্ধের ফলে দুর্ভিক্ষ নেমে এসেছিল। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্ব সম্প্রদায়ের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষাও হয়নি; বরং তাদের সামরিক হস্তক্ষেপে তালেবান ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিল।

তিনি বলেন, ‘তাই এবার যদি পপি চাষ বন্ধ করতেই হয়, তাহলে নিজেদের জন্য সেরা চুক্তি চাইবে তালেবান।’

আরও পড়ুন:
চরম বিশৃঙ্খলা কাবুল বিমানবন্দরে
পাকিস্তান সিরিজের সূচি নিয়ে বিপাকে আফগানিস্তান
প্রয়োজনে তালেবানের সঙ্গে কাজ করবে যুক্তরাজ্য
হাজারাদের নির্বিচার হত্যার ‘দায় তালেবানের’
কাবুল থেকে নাগরিকদের ফেরানোতে মৃত্যুঝুঁকি অবধারিত: বাইডেন

মন্তব্য

আরও পড়ুন

আন্তর্জাতিক
Palestinians killed while taking relief in Gaza The United Nations

গাজায় ত্রাণ নিতে গিয়ে নিহত ৭৯৮ ফিলিস্তিনি: জাতিসংঘ

গাজায় ত্রাণ নিতে গিয়ে নিহত ৭৯৮ ফিলিস্তিনি: জাতিসংঘ

গাজায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সহায়তায় পরিচালিত ত্রাণকেন্দ্র এবং অন্যান্য মানবিক সহায়তা গোষ্ঠীর ত্রাণ নিতে গিয়ে গত ৬ সপ্তাহে অন্তত ৭৯৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কার্যালয় (ওএইচসিএইচআর) এ তথ্য জানিয়েছে।

গতকাল শুক্রবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি এ কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ২৭ মে থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত আমাদের নথিভুক্ত তথ্য অনুযায়ী, ৭৯৮ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৬১৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ (জিএইচএফ)-এর ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রের আশপাশে, এবং ১৮৩ জন নিহত হয়েছেন অন্যান্য ত্রাণবিতরণ কেন্দ্রের আশেপাশে।’

জিএইচএফ গাজায় মে মাসের শেষ দিকে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ শুরু করে। সংস্থাটি জাতিসংঘের নেতৃত্বাধীন ত্রাণ ব্যবস্থাকে পাশ কাটিয়ে নিজস্ব ব্যবস্থায় কাজ করছে। ইসরায়েল দাবি করেছে, জাতিসংঘ-নেতৃত্বাধীন ব্যবস্থায় হামাস ত্রাণ সরিয়ে নিচ্ছিল।

ইসরায়েলি বাহিনী যেসব জায়গায় তৎপর সেই জায়গাগুলোতে ত্রাণ বিতরণ করে আসছে জিএইচএফ। সেখানে ত্রাণ নেওয়ার চেষ্টা করা শত শত ফিলিস্তিনির মৃত্যুর পর জাতিসংঘ জিএইচএফ-এর ত্রাণ বিতরণ পদ্ধতিকে ‘মূলত ঝুঁকিপূর্ণ’ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রে নিরপেক্ষতার নীতিমালার লঙ্ঘন আখ্যা দিয়েছে। তবে জিএইচএফ গতকাল শুক্রবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছে, জাতিসংঘ নিহতের যে পরিসংখ্যান দিয়েছে তা মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিপূর্ণ।

জিএইচএফ তাদের ত্রাণ বিতরণস্থলগুলোতে এমন প্রাণঘাতী কিছু হওয়ার কথা বরাবরই অস্বীকার করে এসেছে। জিএইচএফ এর মুখপাত্র বলেছেন, আসলে জাতিসংঘের ত্রাণবহরের কাছেই বেশিরভাগ প্রাণঘাতী হামলা হয়েছে।

তবে জাতিসংঘের ওএইচসিএইচআর- এর মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি বলেছেন, ফিলিস্তিনি নিহতের পরিসংখ্যান তারা দিয়েছেন গাজার হাসপাতাল, কবরস্থান, স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ, এনজিও এবং ফিলিস্তিনিদের পরিবারের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে। ২৭ মে থেকে ওএইচসিএইচআর এর রেকর্ড অনুযায়ী, ত্রাণবিতরণ কেন্দ্রগুলোর কাছে হামলায় বেশির ভাগ ফিলিস্তিনিই গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে জানান তিনি।

গাজা যুদ্ধ থেকে ফিরে আরেক ইসরায়েলি সেনার আত্মহত্যা

ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলীয় সদের তেইমান সামরিক ঘাঁটিতে এক ইসরায়েলি সেনা আত্মহত্যা করেছেন। নিজেকে গুলি করে আত্মহত্যা করেন ওই সেনা। সম্প্রতি তিনি গাজা যুদ্ধ থেকে ইসরায়েলি ঘাঁটিতে ফিরে এসেছিলেন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো এ তথ্য জানিয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানায় বার্তা সংস্থা আনাদোলু।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজ পত্রিকার তথ্য অনুযায়ী, নিহত ওই সেনা গোলানি ব্রিগেডের সদস্য ছিলেন। তিনি গাজা থেকে ফিরে ঘাঁটিতে বিশ্রামে ছিলেন এবং সেখানে সামরিক পুলিশের জেরার মুখে পড়েন। মাসখানেক আগে তার বিরুদ্ধে একটি তদন্ত শুরু হয় এবং তার অস্ত্র জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

তবে হারেৎজ জানায়, তিনি ঘুমন্ত বন্ধুর অস্ত্র ব্যবহার করে নিজেকে গুলি করেন। আত্মহত্যার কারণ হিসেবে তদন্তের বিষয়টি ‘ব্যক্তিগত আচরণের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়’ বলেই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, তবে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি।

জানা গেছে, ওই সেনার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু গত মাসে গাজার একটি বিস্ফোরণে নিহত হন। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীতে আত্মহত্যার হার বেড়েছে।

গত রোববার এক রিজার্ভ সেনা মানসিক চাপের কারণে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় শহর সাফেদের কাছে জঙ্গলে আত্মহত্যা করেন। ইসরায়েল হায়োম পত্রিকার তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালেই ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ২১ জন আত্মহত্যা করেছেন। আর মে মাসে হারেৎজ জানিয়েছিল, গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে অন্তত ৪২ ইসরায়েলি সেনা আত্মহত্যা করেছেন।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
The United States will pay the weapon to Ukraine NATO Trump

ইউক্রেনকে অস্ত্র দেবে যুক্তরাষ্ট্র, অর্থ দেবে ন্যাটো: ট্রাম্প

ইউক্রেনকে অস্ত্র দেবে যুক্তরাষ্ট্র, অর্থ দেবে ন্যাটো: ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন যে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ করবে ন্যাটোর মাধ্যমে এবং তিনি আগামী সোমবার রাশিয়া নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দেবেন।

ট্রাম্প সাম্প্রতিক সময়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি হতাশা প্রকাশ করেছেন ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে অগ্রগতির ঘাটতির কারণে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আগ্রাসনের পর থেকেই এই যুদ্ধ চলছে।

এনবিসি নিউজকে ট্রাম্প বলেন, আমি আগামী সোমবার রাশিয়া নিয়ে একটি বড় ঘোষণা দিতে যাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, আমরা অস্ত্র ন্যাটোতে পাঠাচ্ছি এবং ন্যাটো সেই অস্ত্রের সম্পূর্ণ মূল্য পরিশোধ করবে। তারপর ন্যাটো সেগুলো ইউক্রেনকে দেবে। তিনি ব্যাখ্যা করেন, যুক্তরাষ্ট্র অস্ত্র সরবরাহ করবে, কিন্তু সেই খরচ ন্যাটো বহন করবে।

তিনি ইউক্রেনকে সরাসরি মার্কিন অস্ত্র পাঠাবেন প্রেসিডেনশিয়াল ড্রডাউন অথরিটি ব্যবহার করে। এর মাধ্যমে প্রেসিডেন্টদের নিজস্ব অস্ত্র মজুত থেকে জরুরি ভিত্তিতে মিত্র দেশকে সহায়তা দেওয়ার সুযোগ দেয়।

দুই সূত্র জানায়, এই প্যাকেজের মূল্য হতে পারে প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ডলার এবং এতে থাকতে পারে প্রতিরক্ষামূলক প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ও আক্রমণাত্মক মাঝারি পাল্লার রকেট।

এই পদক্ষেপের আগে ট্রাম্প প্রশাসন শুধু সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অনুমোদিত অস্ত্রই পাঠিয়েছে ইউক্রেনে। তবে এখন নিজ ক্ষমতা অনুযায়ী সরাসরি অস্ত্র সহায়তা পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন ট্রাম্প।

ট্রাম্প এর আগে ইউক্রেনে অর্থ ও অস্ত্র সহায়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন, কিন্তু সাম্প্রতিক বক্তব্যে তিনি কিয়েভের প্রতি সমর্থনও জানিয়েছেন এবং রাশিয়ার নেতৃত্বের ওপর অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Israeli attacks in Gaza

গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহত ৬

গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহত ৬

ইসরাইলি হামলায় শুক্রবার ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের উত্তরাঞ্চলে কমপক্ষে ছয় জন নিহত এবং আরো অনেকেই আহত হয়েছে ।

গাজার নাগরিক প্রতিরক্ষা সংস্থার বরাত দিয়ে গাজা সিটি থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।

সংস্থাটি এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘উত্তর গাজার জাবালিয়া আল-নাজলায় বাস্তুচ্যুতদের আশ্রয়দানকারী হালিমা আল-সাদিয়া স্কুলে ইসরাইলি হামলায় পাঁচ জন শহীদ এবং অনেকেই আহত হয়েছেন।’

সংস্থাটি জানিয়েছে, দক্ষিণাঞ্চলীয় গাজা শহরে আরেকটি পৃথক হামলায় কমপক্ষে এক ব্যক্তি নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।

শুক্রবার মধ্য গাজার নুসাইরাতের আল-আওদা হাসপাতাল জানিয়েছে, ইসরাইলি বাহিনী একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গুলি চালিয়েছে ফলে বেশ কয়েকজন হতাহত হয়েছে।

ইসরাইলি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। গাজা উপত্যকায় সম্প্রতি অভিযান জোরদার করেছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী।

গাজায় গণমাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং অনেক এলাকায় প্রবেশের অসুবিধার কারণে এএফপি স্বাধীনভাবে বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা এবং অন্যান্য পক্ষের দেওয়া মৃতের সংখ্যা এবং বিবরণ যাচাই করতে পারেনি।

দক্ষিণ গাজা থেকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এএফপি’র সঙ্গে কথা বলা এক ফিলিস্তিনি বলেছেন, খান ইউনিস শহরের কাছে ইসরাইলি ট্যাঙ্ক দেখা গেছে, সেখানে আক্রমণ ও ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চলছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, ‘এই এলাকায় পরিস্থিতি অত্যন্ত কঠিন। এখানে ব্যাপক গুলিবর্ষণ, প্রায়ই বিমান হামলা ও কামানের গোলাবর্ষণ এবং আল-মাসলাখের দক্ষিণ, পশ্চিম ও উত্তরাঞ্চলে বুলডোজার দিয়ে বাস্তুচ্যুত শিবির ও কৃষিজমি ধ্বংস করা হচ্ছে।’

আন্তর্জাতিক
Brazil threatens to impose a 5 percent tariff on US goods

মার্কিন পণ্যে পাল্টা ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি ব্রাজিলের

মার্কিন পণ্যে পাল্টা ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি ব্রাজিলের

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্রাজিলের রপ্তানিপণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। এর জবাবে পাল্টা একই হারে মার্কিন পণ্যে শুল্ক বসানোর হুমকি দিয়েছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা।

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) ব্রাজিলের একটি সংবাদমাধ্যমের বরাতে ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের খবরে জানানো হয়, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র আমাদের পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক বসালে আমরাও তাদের পণ্যে ৫০ শতাংশ বসাবো।’

ট্রাম্প সম্প্রতি এক বিবৃতিতে ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর বিরুদ্ধে চলমান বিচার কার্যক্রমকে ইঙ্গিত করে দেশটিকে ‘উইচ-হান্ট’ চালানোর অভিযোগে অভিযুক্ত করেন।

শুল্ক আরোপের বিষয়ে তিনি আরও জানান, ব্রাজিল সরকার বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) কাছে আপিল করে আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান এবং ব্যাখ্যা দাবি করতে পারে।

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সকালে লুলা তার মন্ত্রিসভার সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন। ট্রাম্পের ঘোষণার জবাব কীভাবে দেওয়া হবে—তা নির্ধারণে একটি স্টাডি গ্রুপ গঠন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ওই বৈঠকে।

অন্যদিকে, ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, ব্রাজিল পাল্টা শুল্ক আরোপ করলে আরও বেশি হারে শুল্ক বসানো হবে।

চলতি সপ্তাহে ট্রাম্প বাংলাদেশ, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়াসহ একাধিক দেশকে নতুন শুল্কের বিষয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন। চুক্তি না হলে ১ আগস্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
The state of tension across the state accuses of imposing Hindi language in Maharashtra

মহারাষ্ট্রে হিন্দি ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার অভিযোগ, রাজ্যজুড়ে উত্তেজনা

মহারাষ্ট্রে হিন্দি ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার অভিযোগ, রাজ্যজুড়ে উত্তেজনা

ভারতের সবচেয়ে ধনী রাজ্য মহারাষ্ট্রে হিন্দি ভাষা শিক্ষা বাধ্যতামূলক করাকে কেন্দ্র করে কয়েক সপ্তাহ ধরে উত্তেজনা চলছে। সম্প্রতি রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে মারাঠি ভাষা অধিকার রক্ষার দাবিতে বিক্ষোভ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

খবরে বলা হয়, ভাষা নিয়ে চলমান এই বিতর্কের সূত্রপাত এপ্রিল মাসে। সে সময় মহারাষ্ট্র সরকার ঘোষণা দেয়, রাজ্য পরিচালিত প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ইংরেজি ও মারাঠির পাশাপাশি তৃতীয় ভাষা হিসেবে হিন্দি ভাষাও শেখানো হবে। রাজ্য সরকারের দাবি, এটি কেন্দ্রীয় সরকারের জাতীয় শিক্ষানীতির (এনইপি) অংশ।

১৯৬৮ সালে চালু হওয়া এনইপি দেশটির শিক্ষাব্যবস্থাকে উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যেই প্রণয়ন করা হয়। সময়ে সময়ে এই নীতিতে সংশোধন আনা হয়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার পাঁচ বছর আগে এর সর্বশেষ সংস্করণ চালু করেন, যা ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। তবে এটি নিয়ে এর আগেও বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল।

রাজ্যটির ভাষা ও সংস্কৃতি নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠন, বিরোধী দল ও নাগরিক সমাজ এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন। তাদের অভিযোগ, এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে মারাঠি ভাষা ও সংস্কৃতির ওপর হিন্দিকে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

মন্তব্য

খাবার নিতে আসা শিশুদের ওপর ইসরায়েলের ‘অমার্জনীয়’ হামলা

খাবার নিতে আসা শিশুদের ওপর ইসরায়েলের ‘অমার্জনীয়’ হামলা

চলমান যুদ্ধবিরতি আলোচনা ও রাফায় ফিলিস্তিনিদের বিতর্কিত পুনর্বাসন পরিকল্পনার মধ্যেই ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অন্তত ৮২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এদিন শিশুদের খাবার সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়ে প্রাণ গেছে ৯টি শিশুর।

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) ভোর থেকে চালানো হামলায় এসব হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে কাতার ভিত্তিক মার্কিন সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কেন্দ্রীয় গাজার দেইর আল-বালাহ এলাকায় শিশুদের জন্য পুষ্টি সহায়তা সংগ্রহ করতে আসা ফিলিস্তিনিদের ওপর চালানো বিমান হামলায় ১৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন। তাদের মধ্যে ৯টি শিশু ও ৪ জন নারী রয়েছেন। এ ঘটনায় আরও অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ১৯টিই শিশু।

জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল হামলাটিকে ‘অমার্জনীয়’ বলে অভিহিত করে বলেন, ‘সাহায্যের অপেক্ষায় থাকা পরিবারগুলোর ওপর এমন হামলা অত্যন্ত নির্মম ঘটনা। এটি গাজায় চলমান ভয়াবহতার বাস্তব প্রতিচ্ছবি।’

তিনি বলেন, ‘অপর্যাপ্ত সহায়তার কারণে গাজায় শিশুদের না খেয়ে থাকার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে এবং বর্তমানে সেখানে দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি বাড়ছে। জরুরি সহায়তা ও সেবা পূর্ণমাত্রায় চালু না হলে অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের সংখ্যা বাড়তেই থাকবে।’

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Israels proposal for temporary ceasefire in Gaza

গাজায় শর্তসাপেক্ষে সাময়িক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব ইসরায়েলের

গাজায় শর্তসাপেক্ষে সাময়িক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব ইসরায়েলের পশ্চিম তীরের জেনিনে ইসরায়েলি অভিযান। ছবি : সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বর্বরতা অব্যাহত রয়েছে। এদিকে গাজায় হামাস যদি অস্ত্র ত্যাগ করে তাহলে ইসরায়েল সাময়িক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেবে। তবে হামাস সাড়া না দিলে সামরিক অভিযান অব্যাহত থাকবে। ইসরায়েলের এক সিনিয়র কর্মকর্তা এ কথা জানিয়েছেন।

গাজায় একটি অভিযানে খান ইউনিসে এক আইডিএফ সেনা নিহত হয়েছেন। হামাস যোদ্ধারা তাকে অপহরণের চেষ্টা করেছিল। ইসরায়েলি নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির এই ঘটনার জন্য হামাসের সঙ্গে চলমান যুদ্ধবিরতি আলোচনা দায়ী করেছেন। এছাড়া পশ্চিম তীরে এক ইসরায়েলি সেনা ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছেন এবং গাজায় কেরেম শালোম ক্রসিং দিয়ে ১ লাখ ৫২ হাজার লিটার জ্বালানি সরবরাহ করা হয়েছে।

অন্যদিকে, ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়েছেন, হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি আলোচনায় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকেও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। সৌদি আরব এই দাবিকে সমর্থন জানিয়েছে।

যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার মধ্যে গাজায় নিহত ২৪

যুদ্ধবিরতির আলোচনার মধ্যেই গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। অবরুদ্ধ এই উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নতুন করে আরও ২৪ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছে। এরই মধ্যে সেখানে ৫৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনিকে নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির সময়সীমা বাড়িয়ে বলেছেন, এই সপ্তাহে বা আগামী সপ্তাহে গাজায় একটি চুক্তির ‌‌‘খুব ভালো সম্ভাবনা’ রয়েছে। তবে হামাস বলছে, ইসরায়েলের একগুঁয়েমির কারণে কাতারে আলোচনা ‘কঠিন’ হয়ে পড়েছে।

বেশ কিছু চিকিৎসা সূত্র আল জাজিরাকে জানিয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় বিমান হামলা আরও তীব্র করেছে। বৃহস্পতিবার ভোর থেকে এই উপত্যকাজুড়ে কমপক্ষে ২৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সেখানে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় কমপক্ষে ৫৭ হাজার ৫৭৫ জন নিহত এবং ১ লাখ ৩৬ হাজার ৮৭৯ জন আহত হয়েছেন। অপরদিকে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামাসের হামলায় ইসরায়েলে আনুমানিক ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত এবং ২০০ জনেরও বেশি মানুষকে জিম্মি হিসেবে অপহরণ করা হয়েছিল।

গাজায় ত্রাণকেন্দ্রে ৭৭০ জনের বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা

গত মে মাসের শেষের দিক থেকে মানবিক ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলোতে হামলার ফলে গাজা উপত্যকায় ৭৭০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) স্থানীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।

প্রতিবেদন অনুসারে, মানবিক সাহায্য বিতরণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতায় ইসরায়েলের প্রতিষ্ঠিত গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)-এর কেন্দ্রগুলোতে ২৭ মে থেকে নিহতের সংখ্যা ৭৭০ ছাড়িয়ে গেছে।

আল জাজিরা এর আগে জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে, অস্থিতিশীলভাবে ত্রাণ সরবরাহের মধ্যে ২১ লাখ গাজাবাসী খাদ্যের সন্ধানে মরিয়া হয়ে আছে। দিনকে দিন অবরুদ্ধ অঞ্চলে ক্ষুধার্ত মানুষের মাঝে হতাশা বাড়ছেই।

১৮ মে ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী গাজা উপত্যকার উত্তর ও দক্ষিণ অঞ্চলে তাদের বৃহৎ স্থল আক্রমণ ‘গিডিওনস চ্যারিয়টস’-এর অংশ হিসেবে গণহত্যা শুরু করে। এর ঘোষিত লক্ষ্য হলো হামাসের সম্পূর্ণ পরাজয় এবং সেখানে আটক সমস্ত ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, এই অভিযানের পর তাদের বাহিনী সমগ্র গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পরিকল্পনা করছে।

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৮ শিশু নিহত

গাজার মধ্যাঞ্চলে একটি মেডিকেল পয়েন্টের কাছে ইসরায়েলি হামলায় ৮ শিশু ও দুই নারীসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছে বলে সেখানকার এক হাসপাতাল জানিয়েছে। আল-আকসা মার্টায়ার্স হাসপাতাল বলছে, দেইর আল-বালাহ এলাকায় পুষ্টিকর সাপ্লিমেন্টের জন্য লাইন দাঁড়ানো লোকদের ওপর ওই হামলা হয়েছে।

হাসপাতাল থেকে পাওয়া এক ভিডিওতে একাধিক শিশুর মরদেহ এবং আরও কিছু আহত শিশুকে চিকিৎসা দেওয়ার দৃশ্য দেখা গেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, তারা এ খবরের সত্যতা যাচাই করে দেখছে।

পুষ্টিকর সাপ্লিমেন্ট বলতে সাধারণত ভিটামিন ডি ট্যাবলেট, আয়রন ট্যাবলেট, ওমেগা সাপ্লিমেন্ট ও গুড়ো প্রোটিনের মতো নানা সহায়ক পথ্যকে বোঝায়। গাজার ওই মেডিকেল পয়েন্ট থেকে কী কী পাওয়া যাচ্ছিল তা জানা যায়নি।

নতুন যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি নিয়ে দোহায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনা চলাকালেও ফিলিস্তিনি এ ভূখণ্ডটিতে তেল আবিবের হামলা থেমে নেই। প্রতিদিনই তাদের হামলায় গাজায় ডজন ডজন মানুষের মৃত্যুর খবর মিলছে।

দোহার এ আলোচনায় কাতার ও মিসরের পাশাপাশি মধ্যস্থতা করছে যুক্তরাষ্ট্রও। আলোচনায় শিগগিরই ফল আসবে বলে ওয়াশিংটন আশাবাদ ব্যক্ত করলেও হামাস ও ইসরায়েলের কর্মকর্তাদের সাম্প্রতিক মন্তব্যে দ্রুত কোনো ‘ব্রেক থ্রুর’ আশা দেখা যাচ্ছে না। গত বুধবার (৯ জুলাই) রাতে ঊর্ধ্বতন এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা ওয়াশিংটনে সাংবাদিকদের বলেছেন, যুদ্ধবিরতি নিয়ে চুক্তিতে পৌঁছাতে এক-দুই সপ্তাহ লেগে যেতে পারে।

এমন এক সময়ে তিনি এ কথা বললেন যখন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর যুক্তরাষ্ট্র সফর চলছে। ইসরায়েলি ওই কর্মকর্তা আরও বলেছেন, দুই পক্ষ ৬০ দিনের কোনো যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছালে, ইসরায়েল ওই সময়টাকে যুদ্ধের একটি স্থায়ী সমাপ্তির প্রস্তাব দেওয়ার জন্য কাজে লাগাতে চায়, সেখানে অবশ্যই হামাসকে নিরস্ত্র হওয়ার শর্ত দেওয়া হবে। যদি হামাস অস্ত্র সমর্পণে রাজি না হয়, তাহলে ইসরায়েলি সামরিক অভিযান ‘অব্যাহত থাকবে’। এর আগে হামাস বলেছিল, আলোচনা ‘কঠিন’ হয়ে উঠেছে, এজন্য ইসরায়েলি ‘একগুঁয়েমিকেও’ দায়ী করেছে তারা।

ফিলিস্তিনি এ সশস্ত্র গোষ্ঠীটি বলছে, ১০ জন জিম্মিকে মুক্তি দিতে রাজি হয়ে তারা নমনীয়তার পরিচয় দিয়েছে। তারা ইসরায়েলি হামলার অবসান ঘটাবে এমন ‘বিস্তৃত’ চুক্তির দাবিও পুনর্ব্যক্ত করেছে।

মন্তব্য

p
উপরে