অবিশ্বাস্য দ্রুততায় আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করলেও তালেবান অস্তিত্বের সংকটে ভুগছে বলে মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
তার মতে, ২০ বছর আগের তুলনায় গোষ্ঠীটির খুব একটা আদর্শগত পরিবর্তন না ঘটলেও বিশ্ব সম্প্রদায়ের স্বীকৃতি পেতে মরিয়া তারা। অস্তিত্বসংকটের কেন্দ্রে এ বিষয়টিই।
এবিসি নিউজের গুড মর্নিং আমেরিকা অনুষ্ঠানে স্থানীয় সময় বুধবার এসব কথা বলেন বাইডেন। এবিসি নিউজের অনলাইন সংস্করণে সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করা হয় বৃহস্পতিবার।
সাক্ষাৎকারে তালেবানশাসিত সরকার আন্তর্জাতিক বৈধতা পাবে কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত নন বলেও জানান বাইডেন।
তিনি বলেন, ‘তালেবান নিজেদের বিশ্বাস প্রতিষ্ঠায় অগ্রাধিকার দিতে চায়। কিন্তু তাদের খাবার খেয়ে বাঁচতে হবে। সে জন্য আয় করতে হবে, অর্থনীতি সচল রাখতে হবে। চাইলেও সামাজিক ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা উপেক্ষা করতে পারবে না তারা।’
চলতি বছরের মে মাসে আফগানিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলের দখল নিতে আগ্রাসী অভিযান শুরু করে তালেবান। বিষয়টির পরিপ্রেক্ষিতে সে সময় দেশটির পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ গোষ্ঠীটির হাতে চলে যাবে বলে বিশ্লেষকরা সতর্ক করলেও সে শঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছিলেন বাইডেন।
এ বিষয়ে সাংবাদিক জর্জ স্টেফানোপওলাসের প্রশ্নের উত্তরে আমেরিকান প্রেসিডেন্ট বলেন, গত ২০ বছরে তিন লাখ আফগান সেনাকে প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তারা এত সহজে হাল ছেড়ে দিয়ে আত্মসমর্পণ করবে বলে ভাবেননি তিনি।
পূর্ণাঙ্গ সেনা প্রত্যাহারের ফলে তালেবানশাসিত আফগানিস্তান আল-কায়েদা ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর চারণক্ষেত্র হয়ে উঠতে পারে কি না, বৈশ্বিক নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে কি না, এমন প্রশ্নেরও উত্তর দেন বাইডেন।
তার মতে, আফগানিস্তানের চেয়ে বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে আল-কায়েদার মতো নিষিদ্ধঘোষিত সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর কারণে সৃষ্ট ঝুঁকির মাত্রা বেশি। সেনা প্রত্যাহার সিদ্ধান্তের সাফাই গেয়ে তিনি বলেন, ‘ঝুঁকি যেখানে বেশি, সেসব জায়গায় নজর দিতে হবে আমাদের, যেমন সিরিয়া বা পূর্ব আফ্রিকা।’
বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের সুযোগে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত মাত্র ১০ দিনে কাবুল ও ২২টি প্রাদেশিক রাজধানীর নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান। রাজধানীসহ দেশের প্রধান শহর কান্দাহার, হেরাত, জালালাবাদ, মাজার-ই-শরিফ দখলে কোনো রকম বাধার মুখে পড়তে হয়নি গোষ্ঠীটিকে। অথচ তালেবানবিরোধী সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল শহরগুলো।
পূর্ণাঙ্গ সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত বাতিলে বাইডেন সরকারকে সতর্ক করেছিলেন বলে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সামরিক উপদেষ্টারা জানালেও তা প্রত্যাখ্যান করেন প্রেসিডেন্ট।
পূর্বসূরি ডনাল্ড ট্রাম্প তালেবানের সঙ্গে চুক্তি না করলে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর নিজেই আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতেন বলে জানান বাইডেন।
বিদেশি ভূখণ্ডে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘতম, দুই দশকের যুদ্ধে ইতি টানার কোনো সঠিক সময় কখনোই আসত না বলে মন্তব্য করেন বাইডেন।
সেনা প্রত্যাহার সিদ্ধান্তের সাফাই গেয়ে তিনি বলেন, ‘গত ২০ বছরে আফগানিস্তানে আমাদের ব্যয় এক ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি। তাও এ যুদ্ধ জয়ের কোনো সম্ভাবনা আজ পর্যন্ত দেখা যায়নি।’
৩১ আগস্টের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে পূর্ণাঙ্গ সেনা প্রত্যাহারের কথা থাকলেও তারিখটি পেছাতে পারে বলে আভাস দেন বাইডেন।
তিনি বলেন, ‘আফগান ভূখণ্ডে একজন নাগরিককেও ফেলে আসবে না যুক্তরাষ্ট্র। প্রতিদিন পাঁচ থেকে সাত হাজার নাগরিককে কাবুল থেকে সরাতে পারলে ৩১ আগস্টের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ সেনা প্রত্যাহার সম্ভব। তা না হলে আরও কিছুদিন সেখানে থাকতে হতে পারে সেনাদের, তবে তা কোনোমতেই চাই না আমরা।’
১৫ আগস্ট থেকে পাঁচ দিনে কাবুল বিমানবন্দর হয়ে ১৮ হাজার মানুষ আফগানিস্তান ছেড়েছেন বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন প্রতিরক্ষা জোট ন্যাটো। এদের মধ্যে আমেরিকান নাগরিক ও যুক্তরাষ্ট্রের বৈধ স্থায়ী বাসিন্দা এক হাজার ৭৯২ জন। গতকাল পর্যন্ত ছয় হাজার ৭৪১ জনকে ফিরিয়ে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
চলতি মাসের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগী আফগানদের সরিয়ে নেয়া সম্ভব কি না জানতে চাইলে বাইডেন জানান, তাদের বিষয়ে নিশ্চিত নন তিনি।
পরিস্থিতির ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পরিবারের সদস্যসহ মিত্র আফগানদের সংখ্যা প্রায় ৬৫ হাজার। নিরাপত্তা নিশ্চিতে তাদের আফগানিস্তান থেকে সরিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে পুনর্বাসনের আশ্বাস দেয়া হয়েছিল। প্রতিশ্রুতি পূরণের চেষ্টাও চলছে।’
তবে আফগান নাগরিক বা অন্য কারও জন্য নয়, ৩১ আগস্টের পরও যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের আফগানিস্তানে থাকতে হলে কেবল আমেরিকান নাগরিকদের জন্যই থাকবে বলে জানিয়েছেন বাইডেন।
এতে আফগানদের দেয়া প্রতিশ্রুতি লঙ্ঘন হচ্ছে কি না জানতে চাইলে বাইডেন বলেন, বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
কাবুল বিমানবন্দরে অবস্থানরত আমেরিকান কূটনীতিক ও তাদের আফগান সহযোগীদের ওপর কোনো হামলা বা হুমকি কিংবা তাদের ফিরিয়ে নেয়ার প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন না ঘটাতে সোমবার তালেবানকে সতর্ক করেন বাইডেন।
হোয়াইট হাউস থেকে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের কোনো হামলা হলে তাৎক্ষণিক সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করে উপযুক্ত জবাব দেবে যুক্তরাষ্ট্র।’
নারীদের প্রতি তালেবানের আচরণ নিয়ে বিশ্বজুড়ে যে শঙ্কা ঘনিয়ে উঠছে, সে বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বাইডেন বলেন, ‘সারা পৃথিবীতে সামরিক শক্তি প্রয়োগ করে নারী অধিকার রক্ষা করা বাস্তব বুদ্ধি নয়।
‘কূটনৈতিকভাবে এ সমস্যার সমাধান করতে হবে। কাজ না হলে মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের আচরণ বদলাতে আন্তর্জাতিকভাবে চাপ প্রয়োগ করতে হবে।’
কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর গত সোমবার আফগানিস্তানে ‘যুদ্ধ শেষ’ বলে ঘোষণা দেয় তালেবান।
আরও পড়ুন:দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে খাদে পড়া একটি বাসের ৪৬ যাত্রীর মধ্যে ৪৫ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির পরিবহন বিভাগ।
আল জাজিরা জানায়, বৃহস্পতিবারের ওই দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যাওয়া একমাত্র যাত্রী আট বছর বয়সী এক মেয়ে, যাকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটির খবরে বলা হয়, জোহানেসবার্গ থেকে ৩০০ কিলোমিটার উত্তরে মামাতলাকালা এলাকায় চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে সেতুর ব্যারিয়ারে ধাক্কা খায় বাসটি। পরে ১৬৪ ফুট নিচের খাদে পড়া যানটিতে আগুন ধরে যায়।
পার্শ্ববর্তী দেশ বতসোয়ানা থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার লিমপোপো প্রদেশের মরিয়া যাওয়ার পথে বাসটি দুর্ঘটনার শিকার হয়।
ইস্টার সানডে উপলক্ষে লিমপোপোতে জনপ্রিয় উৎসবের আয়োজন করা হয়। এ বছর ৩১ মার্চ দিবসটি উদযাপন করা হবে।
দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পূর্ণ তদন্তের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার পরিবহনমন্ত্রী সিন্ডিসিওয়ে চিকুঙ্গা।
দুর্ঘটনায় কিছু কিছু যাত্রীর দেহ এমনভাবে পুড়ে গেছে যে, ডিএনএ পরীক্ষা ছাড়া তা শনাক্ত করা যাবে না।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার দপ্তর জানায়, বাস দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বতসোয়ানার প্রতি শোক প্রকাশ করেছেন।
আরও পড়ুন:পশ্চিমা ন্যাটো জোটভুক্ত দেশগুলোর ওপর হামলার পরিকল্পনা নেই রাশিয়ার। এমনকি এর বাইরে পোল্যান্ড, চেক রিপাবলিক বা বাল্টিক কোনো দেশের ওপরও হামলা চালাবে না তারা। তবে ইউক্রেনকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দিলে তা ধ্বংস করা হবে বলে জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
স্থানীয় সময় বুধবার রাশিয়ার বিমান বাহিনীর পাইলটদের সঙ্গে কথা বলার সময় এসব কথা বলেছেন তিনি।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর থেকে পূর্ব দিক থেকে রাশিয়ার দিকে অগ্রসর হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট। তবে রাশিয়ার এসব অঞ্চলের ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর ওপর হামলার পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন পুতিন।
তিনি বলেন, ‘এ জোটভুক্ত দেশগুলোর প্রতিও কোনো আগ্রাসন দেখানো হবে না। পোল্যান্ড, চেক রিপাবলিক বা বাল্টিক রাষ্ট্রগুলোকে ভয় দেখানো হচ্ছে বলে যেসব কথা রটানো হয়েছে, সেগুলো সম্পূর্ণ বাজে কথা।’
এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ইউক্রেনকে অর্থ, অস্ত্র ও বুদ্ধি দিয়ে সমর্থন করার অভিযোগ এনে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘এ কারণেই ওয়াশিংটনের সঙ্গে মস্কোর যে সম্পর্ক, তা সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় পৌঁছেছে।’
পশ্চিমারা ইউক্রেনকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দেয়ার বিষয়ে পুতিন বলেন, ‘এ ধরনের কর্মকাণ্ডে ইউক্রেনের পরিস্থিতি পাল্টাবে না। আর ট্যাঙ্ক, সাঁজোয়া যান ও রকেট লঞ্চারের মতো ওগুলোকেও (এফ-১৬) আমরা ধ্বংস করব।’
তিনি বলেন, ‘এসব যুদ্ধবিমান যদি ইউক্রেনের বাইরের কোনো দেশ থেকে যুদ্ধক্ষেত্রে আসে, তবে সেসব স্থানও আমাদের বৈধ লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবে, তা সে যে স্থানই হোক না কেন।’
এফ-১৬ যুদ্ধবিমান পারমাণবিক যুদ্ধের আশঙ্কাও বাড়াবে বলে এ সময় সতর্ক করেন তিনি।
আরও পড়ুন:গাজা উপকূলে ইসরায়েলি সৈন্যরা দুজন নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিকে গুলি করে হত্যার পর তাদের মরদেহ বুলডোজার দিয়ে বালুর নিচে চাপা দেয়ার একটি ভিডিও ফুটেজ সম্প্রচার করেছে আল জাজিরা।
এ ঘটনা তদন্তের জন্য বুধবার জাতিসংঘকে আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম নাগরিক অধিকার ও অ্যাডভোকেসি সংগঠন ‘দ্য কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশন (সিএআইআর)’।
আনাদোলু এজেন্সির প্রতিবেদনে বৃহস্পতিবার সিএআইআরের এ আহ্বানের কথা জানানো হয়।
আল জাজিরার দুই মিনিটের ওই ভিডিওটিতে দুই ফিলিস্তিনিদের মধ্যে একজনকে হাত উঁচু করে সাদা কাপড়ের টুকরো ওড়াতে দেখা যায়।
সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, সাদা কাপড় দেখিয়ে ওই ফিলিস্তিনি হয়ত বোঝাতে চাচ্ছিলেন তারা কোনো হুমকি নন। দুজনই উপকূল বরাবর একটি উন্মুক্ত এলাকায় হাঁটছিলেন, সম্ভবত তারা উত্তর গাজায় ফিরে যাওয়ার চেষ্টায় ছিলেন।
সিএআইআর জানায়, ইসরায়েলি বাহিনী গাজার উপকূলে দুই ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করেছে, যারা কোনো হুমকি ছিল না। এরপর তাদের মৃতদেহ মাটিচাপা দেয়ার জন্য একটি সামরিক বুলডোজার ব্যবহার করা হয়।
এমন জঘন্য যুদ্ধাপরাধের আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান জানিয়ে কাউন্সিল বলেছে, ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের ‘ইচ্ছে মতো’ হত্যা করছে এবং তাদের মৃতদেহগুলো ‘আবর্জনার মতো’ ব্যবহার করছে।
গণহত্যামূলক ইসরায়েলি সরকারকে জাতিসংঘের তদন্ত করা উচিত বলে মনে করছে সংগঠনটি।
আরও পড়ুন:ভারতের তেলেঙ্গানা রাজ্যের হায়দরাবাদে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন টেনিস তারকা সানিয়া মির্জা।
অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম) প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়াইসির বিরুদ্ধে কংগ্রেস তাকে প্রার্থী করার কথা ভাবছে বলে সূত্রের বরাতে বৃহস্পতিবার জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস।
বুধবার গোয়া, তেলেঙ্গানা, উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড এবং দমন ও দিউ- এই চার রাজ্যের প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনার জন্য কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটি (সিইসি) ১৮ জনের নাম অনুমোদন করেছে।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, কংগ্রেস সানিয়া মির্জার জনপ্রিয়তা ও তার সেলিব্রিটি স্ট্যাটাসের দিকে নজর রেখে এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। কংগ্রেস সর্বশেষ ১৯৮০ সালে হায়দরাবাদে জিতেছিল এবং কে এস নারায়ণ সাংসদ হয়েছিলেন।
সূত্রের খবর, সানিয়ার নাম প্রস্তাব করেছিলেন সাবেক ভারতীয় ক্রিকেট অধিনায়ক কংগ্রেস নেতা মহম্মদ আজহারউদ্দিন। ২০১৯ সালে সানিয়া মির্জার বোন আনাম মির্জার সঙ্গে বিয়ে হয় ক্রিকেটারের ছেলে মহম্মদ আসাদুদ্দিনের।
আজহারউদ্দিন সম্প্রতি অনুষ্ঠিত তেলেঙ্গানা বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন, যেখানে তিনি জুবিলি হিলস আসন থেকে ভারত রাষ্ট্র সমিতির (বিআরএস) মাগন্তি গোপীনাথের কাছে ১৬০০০ ভোটে হেরে গিয়েছিলেন।
এআইএমআইএম-এর একটি শক্ত ঘাঁটি হায়দরাবাদ, এই অঞ্চলে ২০২৩ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ‘গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টির’ (কংগ্রেস) সাম্প্রতিক পুনরুত্থান এআইএমআইএমের আধিপত্যের কাছে একটি উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। যা একটি তীব্র কঠিন লড়াইয়ের পরিস্থিতি তৈরি করেছে।
১৯৮৪ সালে সুলতান সালাহউদ্দিন ওয়াইসি হায়দরাবাদ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এবং পরে ১৯৮৯ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত এআইএমআইএম প্রার্থী হিসেবে জিতেছিলেন।
এর পর আসাদ্দুদ্দিন ওয়াইসি ২০০৪ সাল থেকে এই আসনটি ধরে রেখে উত্তরাধিকার বহন করছেন। ২০১৯ সালে ওয়েইসির বিরুদ্ধে ১৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তিনি তার আধিপত্য বজায় রেখে মোট প্রদত্ত ভোটের ৫৮.৯৪% পেয়ে আসনটি জিতেছিলেন।
এই লোকসভা নির্বাচনের জন্য হায়দরাবাদে বিজেপি মাধবী লতাকে প্রার্থী করেছে, এবং বিআরএস গদ্দাম শ্রীনিবাস যাদবকে প্রার্থী করেছে।
৫৪৩টি সংসদীয় আসনের নির্বাচন সাত ধাপে অনুষ্ঠিত হবে, যা ১৯ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে ১ জুন শেষ হবে। তেলেঙ্গানায় ভোট হবে ১৩ মে।
রাশিয়ার মস্কোতে গত শুক্রবার কনসার্ট হলে ব্যাপক প্রাণঘাতী হামলার দায় ইসলামিক স্টেট (আইএস) স্বীকার করলেও এ ধরনের আক্রমণের সামর্থ্য জঙ্গি সংগঠনটির আছে বলে বিশ্বাস করে না রাশিয়া।
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বুধবার তার দেশের এ অবস্থান ব্যক্ত করেন বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
জাখারোভা বলেন, মস্কোর কনসার্ট হলে হামলা চালানোর মতো সামর্থ্য আইএসের আছে, এমনটি বিশ্বাস করা অত্যন্ত কঠিন।
সাম্প্রতিক ওই হামলায় নিহত হন কমপক্ষে ১৪৩ জন। আহত অনেককে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে।
মস্কোর উপকণ্ঠে ক্রোকাস সিটি হলে হামলায় ইউক্রেনের জড়িত থাকার বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করেন রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র। যদিও এ দাবির স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ হাজির করতে পারেননি তিনি।
রাশিয়ায় ২০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলার পর দায় স্বীকার করে আইএস। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা দাবি করেন, তাদের কাছে থাকা গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, হামলাটি চালায় আইএসের আফগান শাখা ইসলামিক স্টেট খোরাসান।
হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ বারবার নাকচ করেছে ইউক্রেন, তবে জাখারোভার ভাষ্য, ইউক্রেনকে হামলার দায় থেকে বাঁচাতে ত্বরিত গতিতে আইএসের ওপর দায় চাপায় পশ্চিমা দেশগুলো।
আরও পড়ুন:ফিলিস্তিন ও দেশটির অবরুদ্ধ উপত্যকা গাজার নির্যাতিত মানুষকে সমর্থন দেয়ার ক্ষেত্রে ইরান কখনও ইতস্তত বোধ করবে না বলে মন্তব্য করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি।
গাজার শাসক দল হামাসের পলিট ব্যুরোর প্রধান ইসমাইল হানিয়ার নেতৃত্বে সংগঠনটির একটি প্রতিনিধিদল মঙ্গলবার তেহরানে সাক্ষাৎ করতে গেলে আয়াতুল্লাহ এ মন্তব্য করেন বলে জানিয়েছে প্রেস টিভি।
খামেনিকে উদ্ধৃত করে ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমটির খবরে বলা হয়, ‘ফিলিস্তিনিদের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম এবং গাজার নিপীড়িত ও সহিষ্ণু জনগণকে সমর্থনের ক্ষেত্রে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান কখনও ইতস্তত বোধ করবে না।’
গত বছরের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের ব্যাপক প্রাণঘাতী হামলার জবাবে ওই দিন থেকেই উপত্যকায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। প্রায় বিরতিহীন এ হামলায় গাজায় প্রাণ গেছে কমপক্ষে ৩২ হাজার ৪১৪ জনের।
এমন বাস্তবতায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের মুখে ‘ঐতিহাসিক ধৈর্য’ ধরার জন্য গাজাবাসীর প্রশংসা করে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা বলেন, এ ধৈর্য ইসলাম ও মুসলমানদের জন্য মর্যাদা ও গর্বের উৎসে পরিণত হয়েছে।
পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের শাংলা জেলার বিশাম এলাকায় মঙ্গলবার গাড়িবহরে আত্মঘাতী বোমা হামলায় চীনের পাঁচ নাগরিকসহ কমপক্ষে ছয়জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দি এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
মালাকান্দ পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মোহাম্মদ আলি গান্দাপুরের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসলামাবাদ থেকে খাইবার পাখতুনখোয়ার দুসু এলাকার ক্যাম্পে যাওয়ার পথে চীনের প্রকৌশলীদের গাড়িবহরে বিস্ফোরকভর্তি গাড়িটি উঠিয়ে দেয় আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী।
তিনি আরও বলেন, ‘হামলায় চীনের পাঁচ নাগরিক ও তাদের পাকিস্তানি চালক নিহত হন।’
হামলার পরপরই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকাটি ঘিরে ফেলেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ঘটনার তদন্তে নামায় এ পথে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ইসলামাবাদে চীনা দূতাবাস গিয়ে রাষ্ট্রদূত জিয়াং জ্যায়দংয়ের কাছে শোক প্রকাশ করেন।
এক বিবৃতিতে শাহবাজ শরিফ বলেন, ‘চায়না-পাকিস্তান ইকোনোমিক করিডরের (সিপিইসি) শত্রুরা আরও একবার এ ধরনের কাপুরুষোচিত কাজ করে একে ব্যাহত করার চক্রান্ত করেছে, কিন্তু অশুভ অভিলাষ পূরণে কখনই সফল হবে না তারা।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য