কী দ্রুততায় দেশের বড় অংশ দখল করে নিয়েছে তালেবান, চোখের সামনে দেখেও তা বিশ্বাস করতে পারছে না সাধারণ আফগানরা।
কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে একই দিনে আফগানিস্তানের দ্বিতীয় ও তৃতীয় বৃহৎ শহর কান্দাহার আর হেরাত দখল করে নিয়েছে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি।
কৌশলগত কারণে গুরুত্বপূর্ণ শহর দক্ষিণের কান্দাহারের বাসিন্দা এক নারী বলেন, ‘আক্ষরিক অর্থেই আমাদের তালেবানের কাছে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে। সরকারের দিক থেকে কোনো রকম প্রতিরোধের মুখেই পড়তে হয়নি তালেবানকে।
‘আমি কোনো দিন কল্পনাও করিনি যে কান্দাহার দখল করা এত সহজ হতে পারে।’
আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, তালেবানের আক্রমণে আফগান সরকার একের পর এক প্রাদেশিক রাজধানী আর জেলার পর জেলার নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে। এতে দেশটির সাধারণ মানুষের চোখে-মুখে অবিশ্বাস আর ক্ষোভের ছাপ স্পষ্ট।
পশ্চিমের হেরাত শহরে তালেবানবিরোধী মিলিশিয়া গোষ্ঠীর এক সদস্য বলেন, ‘বাস্তবতা হলো তালেবানের কাছে এসব এলাকার নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তর করা হয়েছে। এরপর কাবুল আর মাজার-ই-শরিফেরও একই পরিণতি হবে।’
বড় ও প্রধান শহরগুলোর মধ্যে আফগান সরকারের নিয়ন্ত্রণে আছে শুধু কাবুল আর মাজার-ই-শরিফ।
৬ আগস্ট থেকে শনিবার পর্যন্ত ৯ দিনে ৩৪টি প্রাদেশিক রাজধানীর মধ্যে ১৮টির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে তালেবান। সবশেষ লোগার প্রদেশের রাজধানী পুলি-ই-আলিম শহর দখলের মধ্য দিয়ে রাজধানী কাবুলের ৮০ কিলোমিটার দূরত্ব পৌঁছে গেছে যোদ্ধারা।
যদিও গত এক সপ্তাহে আফগান সরকারের কোনো কর্মকর্তা কিংবা প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি তালেবানের প্রাদেশিক রাজধানী দখল প্রকাশ্যে স্বীকার করেননি।
যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা জোট ন্যাটো চলতি বছরের মে মাসে আফগানিস্তান থেকে বিদেশি সেনা প্রত্যাহার শুরু করে। তখন থেকে আগ্রাসী অভিযান শুরু তালেবানের। দেশের সোয়া চার শ জেলার দুই-তৃতীয়াংশ দখলের দাবি করেছে গোষ্ঠীটি।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়, আফগানিস্তানে সহিংসতায় এ পর্যন্ত আড়াই লাখের বেশি মানুষ গৃহহীন হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। গত এক মাসে প্রাণ গেছে এক হাজারের বেশি বেসামরিক আফগানের।
রাজধানী ছেড়ে পালানোদের মধ্যে ৭২ হাজার শিশু আছে বলে জানিয়েছে বেসরকারি সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন।
সহিংস পরিস্থিতির কারণে খাদ্য, ওষুধসহ জরুরি ত্রাণ সরবরাহ ঝুলে আছে এবং হাসপাতাল, ক্লিনিক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো স্থাপনাগুলো ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস।
এ অবস্থায় প্রতিবেশী দেশগুলোকে সীমান্ত খোলা রাখতে এবং প্রাণ বাঁচাতে দেশ ছেড়ে যাওয়া আফগানদের প্রবেশ করতে দেয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এক দিন আগেই অবশ্য আফগান শরণার্থীদের জন্য চামান সীমান্ত খুলে দিয়েছে পাকিস্তান। এরই মধ্যে বিপুলসংখ্যক বেসামরিক আফগান আর নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য আশ্রয় নিয়েছে তাজিকিস্তানে।
কাবুলসহ বিভিন্ন শহরে রাস্তাঘাটে দেখা মিলছে প্রাণ বাঁচাতে ভিটেমাটি ছেড়ে বিভিন্ন সীমান্তের দিকে যেতে থাকা হাজার হাজার আফগান শরণার্থীর।
অথচ তিন মাস ধরে আফগানিস্তানের বিস্তীর্ণ অঞ্চল তালেবান দখল করে নিচ্ছে বলে খবর এলেও অনেকেই এসবে বিশ্বাস করেননি। কান্দাহার ও হেরাতের পরপর পতনে কেটেছে সে অবিশ্বাস।
বর্তমানে কাবুলে অবস্থানরত হেরাতের এক সরকারি কর্মকর্তা বলেন, ‘আমি তো এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না যে সত্যিই এমন কিছু ঘটেছে।’
এমনকি তালেবানের নিয়ন্ত্রণে হেরাত আর কান্দাহারের প্রথম দিনেই শহরে গোষ্ঠীটিকে নিয়ে আগ্রহের শেষ ছিল না বাসিন্দাদের। শুক্রবার ভোরে অনেকেই ‘তালেবান দেখতে’ বের হয়েছিল বলে জানান এক বাসিন্দা।
অনলাইনে বিভিন্ন ভিডিওতেও তালেবান যোদ্ধাদের এক নজর দেখতে ভিড় করতে দেখা গেছে সাধারণ মানুষকে। বিদেশি সেনা অভিযানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া গোষ্ঠীটির দেখা গত ২০ বছরে মেলেনি বলেই এই কৌতূহল।
কান্দাহারে বিশোর্ধ্ব এক তরুণ জানান, আকাশে ফাঁকা গুলি ছুড়ে দিনভর বিজয় উদযাপন করেছে তালেবান সদস্যরা।
সাধারণ জনতাকে হয়রানি
স্থানীয় এক সাংবাদিক জানান, বিজয় উদযাপন খুব বেশি দীর্ঘ করেনি তালেবান যোদ্ধারা। দ্রুতই তারা বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশি ও বেসামরিক বাসিন্দাদের হয়রানি করতে শুরু করে।
ওই সাংবাদিক বলেন, ‘বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে প্রতিটি পরিবারের সদস্যদের বিষয়ে খোঁজখবর করেছে তারা। জানতে চেয়েছে আফগান সরকারের কর্মকর্তা বা কর্মচারী আর নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের খোঁজ।’
বর্তমানে আরেকটি শহরে আত্মগোপনে থাকা ওই সাংবাদিক আরও জানান, তার বাড়িতেও গিয়েছিল তালেবান যোদ্ধারা। ভেবেছিল যে সরকারি কোনো কর্মকর্তার বাড়ি সেটি।
কোনো বাড়িতে গাড়ি ও অস্ত্র পেলে সেগুলোও জব্দ করছে তালেবান সদস্যরা।
গোষ্ঠীটির এসব তৎপরতা ২০ বছর পেছনে তালেবানের পাঁচ বছরের শাসনামল মনে করিয়ে দিয়েছে অনেক আফগানকে।
কান্দাহারের এক তরুণ বলেন, ‘যে তালেবানকে সারা জীবন অভিশাপ দিয়ে এসেছি আমি, এটা সেই তালেবানই। একটুও বদলায়নি তারা।’
তালেবানের ক্রোধের শিকার হওয়ার ভয়ে বাড়ি ছেড়ে না যাওয়া আরেক যুবক বলেন, ‘আমার মনে হয়েছে যে গোষ্ঠীটির গোয়েন্দা কার্যক্রম খুব শক্তিশালী। সুনির্দিষ্ট তালিকার ভিত্তিতেই তল্লাশি চালাচ্ছে তারা।’
একই পরিস্থিতি হেরাতেও। সংক্ষিপ্ত পরিসরে বিজয় উদযাপনের পর সশস্ত্র যোদ্ধারা প্রভাবশালী ব্যক্তি ও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নাম ধরে ধরে তাদের খোঁজ করতে শুরু করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
শহর ছেড়ে পালাতে গিয়ে অনেকেই বাধার মুখে পড়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন পার করছেন। কান্দাহার ও হেরাত দুই শহরেই ফ্লাইট চলাচল বন্ধ রয়েছে। কবে নাগাদ শুরু হবে, তাও জানা নেই কারো।
বাড়ছে গৃহহীন মানুষের সংখ্যা
কাবুলে এখনও তালেবান যোদ্ধারা প্রবেশ করেনি বলে দখলকৃত অনেক শহরের বাসিন্দারা আশ্রয় নিয়েছেন রাজধানীতে। কাবুলের রাস্তাঘাটে দেখা মিলছে না খেয়ে ঘুমিয়ে দিন পার করা হাজারো মানুষের।
কুন্দুজ ছেড়ে পরিবার নিয়ে পালিয়ে আসা ৩৫ বছর বয়সী আসাদুল্লাহ বলেন, ‘আমাদের রুটি কেনার পয়সা নেই। বাচ্চার জন্য ওষুধ কিনতে পারছি না।
‘আমার বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে তালেবান যোদ্ধারা। নিঃস্ব হয়ে এ শহরে এসেছি। আল্লাহ জানেন কী আছে ভাগ্যে।’
আরও পড়ুন:সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে বিএনপি যে নির্বাচনী রোডম্যাপ দাবি করেছে, সেটিকে কিছু উপদেষ্টা ‘মহাপাপ’ হিসেবে দেখছেন বলে মন্তব্য করছেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
নির্বাচনের জন্য অপ্রয়োজনীয় বিলম্ব হচ্ছে বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘স্পষ্ট সময়সীমার মধ্যে নির্বাচনের আহ্বান জানানো কি মহাপাপ? কিছু উপদেষ্টার মন্তব্য থেকে মনে হচ্ছে যে, তারা বিভিন্নভাবে বিভিন্ন মানুষের মধ্যে এই ধারণা উসকে দিচ্ছেন।’
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রবিবার (২৫ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তার সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপি নেতা এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি এবং অন্যান্য গণতান্ত্রিক দলগুলো অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রয়োজনীয় সংস্কার এবং একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে বলেছে। শেখ হাসিনা জনগণের এই ভোট দেওয়ার অধিকার বিলম্বিত করেছিলেন, বঞ্চিত করেছিলেন।’
‘আমাদের সব বিক্ষোভ ও আন্দোলনের লক্ষ্য ছিল এই পরিস্থিতির উত্তরণ। প্রকৃত গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা এবং একটি মুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা। কিন্তু এখন, নির্বাচনকে ঘিরে অনেক চক্রান্ত চলছে,’ যোগ করেন রিজভী।
নিজেদের এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে কিছু উপদেষ্টা নির্বাচন নিয়ে কথা বলছেন বলেও অভিযোগ করেন বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব। এ কারণেই রাজনৈতিক সংকট বাড়ছে বলে তিনি মনে করেন।
রিজভী বলেন, ‘যদি উপদেষ্টারা তাদের দায়িত্বের বাইরে কোনো গোপন এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেন—তাহলে জনগণ তা মেনে নেবে না। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের ভূমিকা পরিবেশ রক্ষা এবং উন্নত করা, কিন্তু তিনি বরং নির্বাচনের কথা বলেন ‘
‘বুড়িগঙ্গা ও শীতলক্ষ্যা নদী রক্ষার জন্য রিজওয়ানা কী করেছেন প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘আমরা এখনও বিষাক্ত বাতাসে শ্বাস নিচ্ছি কেন? দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে, পরিবেশ দূষণমুক্ত করতে তার কোনো উদ্যোগ বা কর্মসূচি আমরা দেখিনি।’
দুই ছাত্র উপদেষ্টার পদত্যাগের জন্য তার দলের আহ্বানকে সমর্থন করে রিজভী বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকা হলো নিরপেক্ষ থাকা। কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল গঠনে সহায়তা করা বা এর বিকাশে সহায়তা করা অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নয় ‘
রিজভী বলেন, ‘অবশ্যই নিরপেক্ষভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। এক্ষেত্রে, যদি একজন উপদেষ্টা (কুমিল্লার) এসপিকে ফোন করে বিএনপির লোকজনকে গ্রেপ্তার করার এবং দলটিকে সেখানে কোনো কার্যকলাপ পরিচালনা করতে বাধা দেওয়ার নির্দেশ দেন—তাহলে কেন তার পদত্যাগের দাবি উঠবে না?’
আজ রবিবার (২৫ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে কিশোরগঞ্জ সাংবাদিক ফোরাম-ঢাকা’র নবনির্বাচিত কমিটির দায়িত্ব গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
সংগঠনের সাবেক কমিটির সভাপতি রাজেন্দ্র চন্দ্র দেব মন্টু নব নির্বাচিত সভাপতি এরফানুল হক নাহিদ ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কিরণের হাতে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।
উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বৃহত্তর ময়মনসিংহ সাংবাদিক সমিতি ঢাকার মহাসচিব উদয় হাকিম, সিনিয়র সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম আঙ্গুর, সংগঠনের সাবেক সভাপতি এরশাদ উদ্দিন, নবনির্বাচিত কমিটির সিনিয়র সভাপতি হামিদ মোহাম্মদ জসিম, যুগ্ম সম্পাদক এম শাহজাহান, শফিকুল ইসলাম সোহাগ, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ জাকির হোসাইন, কোষাধ্যক্ষ মোঃ এনায়েত উল্লাহ, দপ্তর সম্পাদক যোবায়ের আহসান জাবের, জনকল্যাণ সম্পাদক গোলাম রসূল, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক এম শাহীন আরিফিন, কার্যনির্বাহী সদস্য আবুল হাছান, মুশতাক আহমেদ লিটন, জহুরুল আলম জাবেদ।
দায়িত্ব হস্তান্তর শেষে নবনির্বাচিত সভাপতির সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কিরণের সঞ্চালনায় উক্ত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বৃহত্তর ময়মনসিংহ সাংবাদিক সমিতি ঢাকার মহাসচিব উদয় হাকিম, সিনিয়র সাংবাদিক আজিজুল হক এরশাদ, সিনিয়র সহসভাপতি হামিদ মোহাম্মদ জসিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম শাহজাহান, শফিকুল ইসলাম সোহাগ, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসাইন, নির্বাহী সদস্য জহুরুল আলম জাবেদ, জনকল্যাণ সম্পাদক গোলাম রসুল ভূইয়া, মুস্তাক আহমেদ লিটন, আবুল হাছান প্রমুখ।
বক্তারা সংগঠন কে অগ্রসর করার জন্য বিভিন্ন বিষয়ে আলোকপাত করেন। সংগঠনের প্রয়াত নেতৃবৃন্দকে স্মরণ করা হয় এবং যারা অসুস্থ আছেন তাঁদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করা হয়। বক্তারা বেকার সদস্যদের চাকুরির ব্যবস্থা করা, সদস্যদের যে কোনো সমস্যায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ, জনকল্যাণ ফান্ড কে শক্তিশালী করাসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের পরামর্শ দেন।
উল্লেখ্য গত ১৭ মে দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনের মধ্য দিয়ে এ কমিটি ষোষণা করা হয়।
দশ দফা দাবিতে সারাদেশে চলছে আধাবেলা পেট্রোল পাম্প ধর্মঘট, বন্ধ ডিপো থেকে তেল উত্তোলন ও পরিবহন, বিপাকে পড়েছেন রাজধানীবাসী।
উত্তর বাড্ডার বাসিন্দা বাইক চালক জিয়া হোসেন সকালে স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার জন্য বের হলে দেখেন আশপাশের সব পেট্রোল পাম্প বন্ধ।
নিজের দুরবস্থার কথা জানিয়ে জিয়া বলেন, অনেকেই জানে না আজকে ধর্মঘট চলছে। বাইক ঢেলে ঢেলে নানা পাম্পে ঘুরেও তেল পাওয়া যায়নি।
রাইড শেয়ারের আরেক বাইক চালক মনসুর বলেন, "আমরা প্রতিদিন সকালে তেল নিয়ে কাজে বের হই। আজকে সকাল থেকে প্রতিটা পাম্প বন্ধ। বাইকে তেল না থাকায় বসে থাকতে হচ্ছে।"
প্রাইভেট গাড়ির ড্রাইভার নজরুল জানান, পাম্পে তেল থাকলেও বিক্রি বন্ধ রেখেছে কর্মচারীরা। জ্বালানি না থাকায় সড়কে গাড়ির চাপও তুলনামূলক কম।
সরেজমিনে রাজধানীর মালিবাগ, রামপুরা, বাড্ডা, মধুবাগ, শাহজাহানপুর এলাকা ঘুরে দেখা যায় বেশিরভাগ পাম্প বন্ধ।
রামপুরার হাজিপাড়া পেট্রোল পাম্পের কর্মচারী আকবর বলেন, সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত এ ধর্মঘট চলবে। এসময় তেল উত্তোলন এবং বিপণন বন্ধ থাকবে।
বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ও ট্যাংকলরি মালিক ঐক্য পরিষদের ডাকা এই ধর্মঘটের মূল দাবি তেল বিক্রির কমিশন ন্যূনতম ৭ শতাংশ করা এবং সড়ক জনপথ অধিদপ্তরের ইজারা মাশুল আগেরটাই বহাল রাখা।
পাম্প সংযোগ সড়কের ইজারা নবায়নের সময় পে-অর্ডারকে নবায়ন হিসাবে গণ্য করা, বিএসটিআই কর্তৃক আন্ডারগ্রাউন্ড ট্যাংক ক্যালিব্রেশন, ডিপ রড পরীক্ষণ ফি এবং নিবন্ধন প্রথা বাতিল, পরিবেশ অধিদপ্তর, বিইআরসি, কলকারখানা পরিদপ্তর ও ফায়ার সার্ভিসের লাইসেন্স গ্রহণের নিয়ম বাতিল, বিপণন কোম্পানি থেকে ডিলারশিপ ছাড়া সরাসরি তেল বিক্রি বন্ধ, অননুমোদিতভাবে ঘর বা খোলা স্থানে তেল বিক্রয় বন্ধ, ট্যাংকলরি চালকদের লাইসেন্স নবায়ন ও নতুন লাইসেন্স ইস্যুতে জটিলতা দূর করা এবং সব ট্যাংকলরির জন্য আন্তঃজেলা রুট পারমিট প্রদানের দাবি জানিয়েছেন তারা।
এছাড়া যেখানে-সেখানে ট্যাংকলরি থামিয়ে কাগজপত্র পরীক্ষা না করে ডিপো গেইটে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা এবং সব ট্যাংকলরির জন্য আন্তঃজেলা রুট পারমিট ইস্যু করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ পেট্রলপাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ ট্যাংকলরি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন মিলে গঠিত এ ঐক্য পরিষদ।
এদিকে পরিস্থিতি সামাল দিতে সকালে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। বৈঠকের ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানিয়েছে ঐক্য পরিষদ নেতারা।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আজ বিকেলে বৈঠকে বসছেন দেশের একাধিক রাজনৈতিক দলের নেতা।
প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় বিকেল ৫টা ও ৬টা দুই দফায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বাসসকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে প্রথম দফায় বৈঠকে বসবেন, কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ, বীর বিক্রম, মাহমুদুর রহমান মান্না, সাইফুল হক, জুনায়েদ সাকী, হাসনাত কাইয়ুম,মুজিবর রহমান মঞ্জু, মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, খালেকুজ্জামান ভূঁইয়া, টিপু বিশ্বাস, শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু এবং শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন।
দ্বিতীয় দফায় বৈঠকে বসবেন, মাওলানা সাদিকুর রহমান, মাওলানা রেজাউল করিম, মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা আহমেদ আব্দুল কাদের, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদি, মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, নুরুল হক নূর, মাওলানা মুসা বিন ইজহার এবং মুফতি মাওলানা শাখাওয়াত হোসাইন রাযি।
সাংবাদিক মুন্নি সাহা ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ৩৫টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট অবরুদ্ধ (ফ্রিজ) করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট। অ্যাকাউন্টগুলোতে মোট ১৮ কোটি ১৬ লাখ ৫৩ হাজার ৭৩৯ টাকা আছে। গতকাল শনিবার সিআইডি থেকে দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, মুন্নি সাহা ও তার স্বামী কবির হোসেন সাংবাদিকতা পেশাকে ব্যবহার করে বিধিবহির্ভূতভাবে প্রভাব খাটিয়ে প্রতারণা ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করেন। অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ নিজ এবং স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে পরিচালিত ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে লেনদেন করে আসছে বলে সিআইডির কাছে অভিযোগ আসে। অভিযোগের ভিত্তিতে সিআইডি, ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা, ২০১৯ মোতাবেক সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং অনুসন্ধান শুরু করে।
'প্রাথমিক অনুসন্ধানে মুন্নি সাহা ও তার স্বামী কবির হোসেন এবং তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা ব্যাংক হিসাবের তথ্য পর্যালোচনা দেখা যায়, সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে মোট ৪৬টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। যার মধ্যে বর্তমানে ৩৫টি চালু আছে। এসব অ্যাকাউন্টে সন্দেহজনকভাবে মোট ১৮৬ কোটি ৫৬ লাখ ৯১ হাজার আট টাকা লেনদেন করা হয়েছে এবং বর্তমানে ১৮ কোটি ১৬ লাখ ৫৩ হাজার ৭৩৯ টাকা আছে। প্রাথমিক অনুসন্ধানে ওই ব্যাংক হিসাবগুলোর লেনদেন সন্দেহজনক মনে হলে সেগুলো অবরুদ্ধ করার আবেদন করা হয়।'
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের সিনিয়র স্পেশাল জজ মুন্নি সাহা ও তার স্বামী কবির হোসেন এবং তাদের স্বার্থ সম্পৃক্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা ১৮ কোটি ১৬ লাখ ৫৩ হাজার ৭৩৯ টাকাসহ ৩৫টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ (ফ্রিজ) করার আদেশ দেন। তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলমান বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি বাতিলের সিদ্ধান্তে সাময়িক স্থগিতাদেশ জারি করেছেন এক বিচারক। এই আদেশ হাজার হাজার আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর জন্য সাময়িক স্বস্তি এনেছে, যাদের এই নীতির আওতায় অন্যত্র স্থানান্তরিত হওয়ার মুখে পড়তে হয়েছিল।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাম্প প্রশাসনের এই নীতিকে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান ও অন্যান্য ফেডারেল আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন হিসেবে অভিহিত করেছে। এর আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তির ক্ষমতা বাতিল করে।
হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোয়েম এক্স-এ লেখেন, আইন মেনে চলতে ব্যর্থ হয়েছে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। প্রশাসন স্টুডেন্ট অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ ভিজিটর প্রোগ্রামের অধীনে হার্ভার্ডের সার্টিফিকেশন বাতিল করেছে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের সব বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য একটি সতর্কবার্তা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুসারে, গত শিক্ষাবর্ষে ৬ হাজার ৭০০ জনেরও বেশি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী এই প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়েছিল। সম্প্রতি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নির্ধারিত ৬ কোটি ডলারের ফেডারেল অনুদান বাতিল করা হয়। প্রতিষ্ঠানটি ক্যাম্পাসে ইহুদিবিদ্বেষ ও জাতিগতবৈষম্য মোকাবিলায় ব্যর্থ বলে অভিযোগ করা হচ্ছে।
গত কয়েক সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন হার্ভার্ডের জন্য বরাদ্দ প্রায় ৩০০ কোটি ডলারের ফেডারেল অনুদান এবং চুক্তি জব্দ বা বাতিল করেছে।
মন্তব্য