× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

আন্তর্জাতিক
Foreign diplomats are leaving the Taliban capital on their way to Kabul
google_news print-icon

কাবুলের পথে তালেবান

কাবুলের-পথে-তালেবান
আফগানিস্তানের তৃতীয় বৃহৎ শহর হেরাত দখলের পর তালেবান যোদ্ধাদের টহল। ছবি: এএফপি
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, আফগানিস্তানে সহিংসতায় এ পর্যন্ত গৃহহীন হয়েছে আড়াই লাখের বেশি মানুষ। গত এক মাসে প্রাণ গেছে এক হাজারের বেশি বেসামরিক আফগানের। রাজধানী ছেড়ে পালানোদের মধ্যে ৭২ হাজার শিশু আছে বলে জানিয়েছে সেভ দ্য চিলড্রেন।

আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় লোগার প্রদেশের রাজধানী পুলি-ই-আলিমও দখল করেছে দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবান। এর মাধ্যমে কাবুলের ৮০ কিলোমিটারের মধ্যে চলে এসেছে গোষ্ঠীটি।

পুলি-ই-আলিমসহ শুক্রবার তিনটি প্রাদেশিক রাজধানীর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে তালেবান। অন্য শহর দুটি হলো দক্ষিণের হেলমান্দ প্রদেশের লস্কর গাহ ও জাবুল প্রদেশের কালাত।

এর আগে বৃহস্পতিবার গাজনি দখলের মাধ্যমে রাজধানী কাবুলের দেড় শ কিলোমিটারের মধ্যে পৌঁছায় তালেবান যোদ্ধারা। একই দিন দখলে নেয় কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ কান্দাহার ও হেরাত শহর।

গত ৯ দিনে ১৫টি প্রাদেশিক রাজধানী দখল করেছে তালেবান। এ নিয়ে দেশের ৩৪টি প্রাদেশিক রাজধানীর প্রায় অর্ধেকই এখন ওই গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে।

বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়, নিরাপত্তাহীনতায় তড়িঘড়ি রাজধানী ছাড়ছেন বিদেশি কূটনীতিকরা। আফগানিস্তানে অবস্থানরত আমেরিকান কূটনীতিক ও নাগরিকদের দেশে ফিরতে সহযোগিতা করতে স্বল্প সময়ের জন্য কাবুলে পৌঁছেছে যুক্তরাষ্ট্রের তিন হাজার সেনার প্রথম দলটি।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি তালেবানের সাম্প্রতিক আগ্রাসনে জানিয়েছেন 'গভীর উদ্বেগ'। কিন্তু গোষ্ঠীটি খুব দ্রুত কাবুল দখল করবে বলে যে শঙ্কা তৈরি হয়েছে, তা নাকচ করে দিয়েছেন।

কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সবশেষ গোয়েন্দা প্রতিবেদনে ৩০ দিনের মধ্যে তালেবান যোদ্ধারা কাবুল দখল করে নিতে পারে বলে আভাস দেয়া হয়েছে।

কাবুলে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে থাকা নথি ও সরঞ্জামসহ স্পর্শকাতর সবকিছু নষ্ট করে দিতে কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছে ওয়াশিংটন।

এদিকে নিরাপত্তা পরিস্থিতির চরম অবনতির কারণে কাবুলে দূতাবাস সাময়িক বন্ধ করে দিয়েছে ডেনমার্ক ও নরওয়ে। ন্যূনতম কর্মী নিয়ে খোলা আছে জার্মানির দূতাবাস।

দূতাবাসের ১৩০ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দেশে ফিরিয়ে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে ফিনল্যান্ড।

ফ্রান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও আফগানিস্তানে অবস্থানরত নাগরিকদের অবিলম্বে দেশে ফেরার নির্দেশ দিয়েছে। নাগরিকদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনতে কাবুলে স্বল্পসংখ্যক সেনা পাঠাচ্ছে যুক্তরাজ্য ও কানাডার সরকার।

তালেবানের আগ্রাসনের মুখে বেসামরিক আফগানরা মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস।

তার ভাষ্য, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। তিনি বলেন, 'প্রতিদিন সহিংসতার বলি হচ্ছে বিপুলসংখ্যক নারী ও শিশু। নগরাঞ্চলে সহিংসতা অব্যাহত থাকলে ধ্বংস ও হত্যাযজ্ঞের বলি হবে বেসামরিক মানুষ।'

তালেবানকে সহিংসতা বন্ধে এবং বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি সামরিক শক্তি প্রয়োগে ক্ষমতা দখল যে অগ্রহণযোগ্য, সে বার্তা দিতে আহ্বানও জানান গুতেরেস।

তিনি বলেন, সহিংস পরিস্থিতির কারণে খাদ্য ও ওষুধসহ জরুরি ত্রাণ সরবরাহ ঝুলে আছে। ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে হাসপাতাল, ক্লিনিক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো স্থাপনাগুলো।

এ অবস্থায় প্রতিবেশী দেশগুলোকে সীমান্ত খোলা রাখতে এবং প্রাণ বাঁচাতে দেশ ছেড়ে যাওয়া আফগানদের প্রবেশ করতে দেয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব।

এক দিন আগেই অবশ্য আফগান শরণার্থীদের জন্য চামান সীমান্ত খুলে দিয়েছে পাকিস্তান। এরই মধ্যে বিপুলসংখ্যক বেসামরিক আফগান আর নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য আশ্রয় নিয়েছে তাজিকিস্তানে।

যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক জোট ন্যাটোর সেনা প্রত্যাহারের সুযোগে আফগানিস্তানের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া তালেবান। অল্প সময়েই দেশের দুই-তৃতীয়াংশ অঞ্চল দখল করেছে বিদেশি সেনা অভিযানে ২০০১ সালে ক্ষমতাচ্যুত গোষ্ঠীটি।

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে সহিংসতায় এ পর্যন্ত গৃহহীন হয়েছে আড়াই লাখের বেশি মানুষ। গত এক মাসে প্রাণ গেছে এক হাজারের বেশি বেসামরিক আফগানের।

রাজধানী ছেড়ে পালানোদের মধ্যে ৭২ হাজার শিশু আছে বলে জানিয়েছে বেসরকারি সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন।

নব্বইয়ের দশকে উত্থান শুরুর পর দ্রুতই আফগানিস্তানের শাসনব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছিল তালেবান।

ধর্মভিত্তিক কট্টর সংগঠনটির শাসনামলে নারীদের শিক্ষাগ্রহণ নিষিদ্ধ, নির্দেশ অমান্যে প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরসহ বিভিন্ন শাস্তির প্রথা চালু হয়েছিল।

আরও পড়ুন:
আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত ‘ভুল’
আমাদের সঙ্গে সমন্বয় না করা দানিশের ভুল ছিল: তালেবান
বেপরোয়া তালেবান, ফের কোণঠাসা আফগান নারী
‘হেরাতের সিংহের’ আত্মসমর্পণ
২ দিনে ৫, মোট ১৪ প্রাদেশিক রাজধানী তালেবানের দখলে

মন্তব্য

আরও পড়ুন

আন্তর্জাতিক
The last ship of flotilla Israel

ফ্লোটিলার সবশেষ জাহাজটিও আটক করল ইসরায়েল

ফ্লোটিলা আটক আন্তর্জাতিক ‘জলদস্যুতা’ * অনির্দিষ্টকালের জন্য অনশন শুরু ফ্লোটিলার অভিযাত্রীদের * গাজা অভিমুখে আরও ১১ জাহাজের যাত্রা
ফ্লোটিলার সবশেষ জাহাজটিও 
আটক করল ইসরায়েল

অবরুদ্ধ গাজার উদ্দেশে ত্রাণবাহী বহরের একমাত্র জাহাজটিকেও আটক করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের উপকূলে এই ঘটনাটি ঘটে। গতকাল শুক্রবার সকালে একটি লাইভস্ট্রিম ভিডিওতে দেখা যায়, ইসরায়েলি বাহিনী জোর করে জাহাজটিতে ওঠে।
পোল্যান্ডের পতাকাবাহী ‘ম্যারিনেট’ নামের ওই জাহাজটিতে ছয়জন ক্রু রয়েছেন বলে জানা গেছে। এটি ছিল গ্লোবাল সামুদ ফ্লোটিলার শেষ কার্যকর নৌযান। এক সময়ের ৪৪টি জাহাজ নিয়ে গঠিত বহরের সর্বশেষ জাহাজ।
এর আগে, বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জাহাজটির ক্যাপ্টেন একটি ভিডিও বার্তায় জানান, কিছুক্ষণ আগে ইঞ্জিনে যান্ত্রিক সমস্যা দেখা দিয়েছিল। তবে সেটি মেরামত করা হয়েছে এবং এখন জাহাজটি সম্পূর্ণ সচল রয়েছে। ফ্লোটিলা আয়োজকরা আরও জানিয়েছেন, ম্যারিনেট এখনো স্টারলিঙ্ক স্যাটেলাইট সংযোগের মাধ্যমে যোগাযোগে রয়েছে। এর সঙ্গে সরাসরি লাইভস্ট্রিমও সচল রয়েছে, যা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ রিয়েলটাইমে পর্যবেক্ষণ করতে পারছেন।
জাহাজটি ফিরে যাওয়ার কোনো পরিকল্পনা করছে না বলেও জানানো হয়েছে আয়োজকদের পক্ষ থেকে। ইনস্টাগ্রামে প্রকাশিত এক পোস্টে তারা লিখেন, ম্যারিনেট শুধু একটি জাহাজ নয়। এটি সাহসের প্রতীক। এটি ভয়, অবরোধ এবং সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধের প্রতিচ্ছবি।
পোস্টে আরও বলা হয়, গাজা একা নয়। ফিলিস্তিনকে কেউ ভুলে যায়নি। আমরা কোথাও যাচ্ছি না।
উল্লেখ্য, ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ ছিল একটি শান্তিপূর্ণ মানবিক মিশন, যার লক্ষ্য ছিল ইসরায়েলের অবরোধ ভেঙে সরাসরি গাজার মানুষের কাছে ওষুধ ও খাদ্যসহ প্রয়োজনীয় সহায়তা পৌঁছে দেওয়া। আগস্টের শেষ দিকে যাত্রা শুরু করা এই নৌবহরে ৪০টির বেশি বেসামরিক জাহাজ অংশ নেয়। এর মধ্যে ছিল আইনজীবী, চিকিৎসক, সংসদ সদস্য, মানবাধিকার কর্মীসহ নানা দেশের প্রতিনিধিরা।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ইতোমধ্যে ওই বহরের অধিকাংশ জাহাজকে আটক করেছে। গ্রেফতার করা হয়েছে প্রায় ৪৫০ জন আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবককে। এদের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ব্যক্তি হলেন সুইডিশ জলবায়ু অধিকারকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ, যাকে সম্প্রতি একটি জাহাজ থেকে সশস্ত্র ইসরায়েলি সেনারা আটক করে। গ্রেপ্তারের আগে রেকর্ড করা এক ভিডিও বার্তায় থুনবার্গ বলেছিলেন, যদি আপনি এই ভিডিও দেখেন, তাহলে বুঝবেন আমি অপহৃত হয়েছি এবং ইসরায়েলি বাহিনী আমাকে জোর করে ধরে নিয়ে গেছে।
এই ঘটনায় বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। ইতোমধ্যে তুরস্ক, দক্ষিণ আফ্রিকা, আর্জেন্টিনা, মেক্সিকো, ইতালিসহ বহু দেশ নিন্দা জানিয়েছে। ইউরোপজুড়ে রাস্তায় নেমেছে হাজারো মানুষ। ইতালি ডেকেছে সাধারণ ধর্মঘট। তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান এই অভিযানে ইসরায়েলকে ‘সন্ত্রাসী রাষ্ট্র’ বলে উল্লেখ করেছেন এবং এই আক্রমণকে ‘গাজার ক্ষুধার্ত শিশুদের বিরুদ্ধে নিষ্ঠুরতা’ বলে অভিহিত করেছেন।
অন্যদিকে, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ দাবি করছে, তারা শুধু একটি বৈধ সামরিক অবরোধ রক্ষা করছে এবং এই নৌবহর ছিল ‘উসকানিমূলক অভিযান’। তারা বলেছে, যেকোনো সহায়তা তাদের নির্ধারিত নিরাপদ রুটের মাধ্যমেই গাজায় পাঠানো যেতে পারে।
তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, ইসরায়েল যে অবরোধ আরোপ করে রেখেছে, তা আন্তর্জাতিক মানবিক আইন ও জাতিসংঘ ঘোষিত ‘জেনোসাইড কনভেনশন’-এর লঙ্ঘন।
ইসরায়েলে আটক গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার অভিযাত্রীরা অনির্দিষ্টকালের জন্য অনশন শুরু করেছেন। গতকাল শুক্রবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি) কমিটি।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলের নৌবাহিনী গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা মিশনের নৌযানগুলো এবং ক্রু ও অভিযাত্রীদের আটকের প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের জন্য অনশন শুরু করেছেন মিশনের অভিযাত্রীরা।’
ফিলিস্তিনের যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার বাসিন্দাদের জন্য খাদ্য ও ওষুধ নিয়ে গত ৩১ আগস্ট স্পেনের বন্দর থেকে গাজার উপকূলের দিকে যাত্রা শুরু করেছিল ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ মিশনের অন্তর্ভুক্ত ৪৩টি নৌযান। সুইডেনের নাগরিক এবং আন্তর্জাতিক পরিবেশ আন্দোলন কর্মী গ্রেটা থুনবার্গ, দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী নেতা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি ও রাজনীতিবিদ মান্ডলা ম্যান্ডেলাসহ ৪৪টি দেশের ৫০০ জন নাগরিক ছিলেন সেই মিশনে। এই নাগরিকদের কেউ পার্লামেন্টারিয়ান, কেউ আইনজীবী, কেউ রাজনৈতিক আন্দোলনকর্মী এবং কেউ বা স্বেচ্ছাসেবী।
কিন্তু গাজার জলসীমায় কাছাকাছি যাওয়ারি পরপরই একটি ব্যতীত সবগুলো নৌযান আটক করে ইসরায়েলের নৌবাহিনী। নৌযান, ক্রু এবং আরোহীদের নিয়ে যাওয়া হয় ইসরায়েলের বন্দরে।
গত বুধবার রাতে প্রথমে ১৩টি নৌযান আটকায় ইসরায়েলের নৌবাহিনী; কিন্তু তারপরও বাকি ৩০টি নৌযান গাজার উদ্দেশে এগিয়ে যাচ্ছিল। পরের দিন বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত একে একে ২৯টি নৌযান আটক করে ইসরায়েলের নৌসেনারা। সর্বশেষ নৌযানটিকে আটক করা হয়েছে আজ শুক্রবার সকালে।
এফএফসির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বুধবার যেদিন অভিযাত্রীদের আটক করা শুরু হয়, সেদিনই অনশনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তারা।
এদিকে ইসরাইলের দীর্ঘদিনের অবরোধ ভাঙতে গাজা অভিমুখে যাত্রা করেছে আরও ১১টি জাহাজের একটি বহর। আন্তর্জাতিক অধিকার সংগঠন ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের (এফএফসি) তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এই মিশনে অংশ নিয়েছেন প্রায় ১০০ জন সাংবাদিক, চিকিৎসক ও অধিকারকর্মী। এ খবর দিয়েছে তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু। এতে বলা হয়, ‘কনসায়েন্স’ নামের প্রধান জাহাজটি ৮টি ছোট নৌকা নিয়ে গত ৩০ সেপ্টেম্বর রওনা দেয়। পরে এতে যুক্ত হয় ‘থাউজেন্ড ম্যাডলিনস টু গাজা’ নামের আরেকটি বহর, যার সঙ্গে ছিল ফ্রান্স ও ইতালির পতাকাবাহী দুটি জাহাজ। বহরটি বর্তমানে পূর্ব ভূমধ্যসাগরের ক্রিট দ্বীপ উপকূলে অবস্থান করছে।
এই মিশনে বাংলাদেশ থেকে যোগ দিয়েছেন আলোকচিত্রী ও দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদুল আলম। ফ্লোটিলা কোয়ালিশন জানিয়েছে, ইসরাইলের মানবাধিকার লঙ্ঘন, সাংবাদিকদের প্রবেশে বাধা এবং গাজার স্বাস্থ্যব্যবস্থার ধ্বংসের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রতিবাদ জানাতে এই যাত্রা। এদিকে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার সর্বশেষ জাহাজটিও গাজার উপকূলে পৌঁছানোর পর শুক্রবার আটক করেছে ইসরাইলি বাহিনী। এর আগে একইভাবে অন্য জাহাজগুলোরও নিয়ন্ত্রণ নেয় তারা।
ফিলিস্তিনের গাজা অভিমুখে যাত্রা করা ত্রাণবাহী নৌবহর ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’র সবগুলো নৌযান আটকানোর ঘটনায় বিশ্বজুড়ে ব্যাপক নিন্দা জানানো হয়েছে। ইউরোপ থেকে অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আমেরিকা পর্যন্ত দেশে দেশে বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় নেমে ইসরায়েলের পদক্ষেপের তীব্র প্রতিবাদ জানান এবং দেশটির বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞার দাবি তোলেন।
ফ্লোটিলা আটকানোর ঘটনায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘আন্তর্জাতিক জলদস্যুতার’ অভিযোগ তুলেছেন ফিলিস্তিনি এক আইনজীবী।
গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা ইসরায়েলের নৌ অবরোধ ভেঙে সমুদ্রপথে গাজায় ত্রাণ নিয়ে যাওয়ার একটি বৈশ্বিক প্রচেষ্টা। গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার প্রথম বহর ৩১ আগস্ট স্পেনের বার্সেলোনা থেকে যাত্রা শুরু করে।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, প্রায় দুই বছরের যুদ্ধ শেষে গাজায় দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এই নৌবহরের উদ্দেশ্য ছিল অবরুদ্ধ গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছানো এবং অবরোধকে চ্যালেঞ্জ জানানো।
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘আন্তর্জাতিক জলদস্যুতার’ অভিযোগ তুলে ফিলিস্তিনি মানবাধিকার আইনজীবী ডায়ানা বুট্টু বলেছেন, ইসরায়েলের ফ্লোটিলা আটকানোর ঘটনা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের একটি সুস্পষ্ট উদাহরণ।
আল–জাজিরার সহপ্রকাশনা এজে প্লাসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ডায়ানা বুট্টু বলেন, সব জাহাজই আন্তর্জাতিক জলসীমায় অবস্থান করছিল। সেখানে গিয়ে ইসরায়েলি বাহিনীর বিদেশি পতাকা বহনকারী জাহাজে ওঠা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।
এই আইনজীবী অভিযোগ করেন, ফ্লোটিলা থেকে যাত্রীদের আটক করে ইসরায়েলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। যেখানে তাদের যাওয়ার কোনো পরিকল্পনা ছিল না। এরপর তাদের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে প্রবেশের মামলা দিয়ে আবার বহিষ্কার করা হচ্ছে।

মন্তব্য

গাজায় নৌবহর প্রতিবাদে ইসরাইলের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী বিক্ষোভ

গাজায় নৌবহর প্রতিবাদে ইসরাইলের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী বিক্ষোভ

গাজায় অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনিদের জন্য ত্রাণ বহনকারী একটি নৌবহর ইসরাইলি নৌবাহিনী হাতে আটকের ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিশ্বজুড়ে বিক্ষোভকারীরা তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং এর জবাবে আরো কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছে।

প্যারিস থেকে এএফপি এ খবর জানায়।

ইউরোপ থেকে অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ আমেরিকা পর্যন্ত, বিক্ষোভকারীরা গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার প্রতি অসদাচরণের নিন্দা জানাতে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছে। গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা গত মাসে বার্সেলোনা থেকে যাত্রা শুরু করেছিল। জাতিসংঘ প্রায় দুই বছরের যুদ্ধের পর গাজায় দুর্ভিক্ষ চলছে বলে জানিয়েছে।

ইসরাইলি একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রাজনীতিবিদ এবং জলবায়ু প্রচারক গ্রেটা থানবার্গসহ ৪শ’ জনেরও বেশি লোক বহনকারী ৪১টি জাহাজকে বুধবার থেকে ইসরাইলি নৌবাহিনী থামিয়ে দিয়েছে এবং উপকূলীয় অঞ্চলে পৌঁছাতে বাধা দিয়েছে।

স্পেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর বার্সেলোনার পৌর পুলিশ বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, ইসরাইলের কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে প্রায় ১৫হাজার মানুষ বার্সেলোনায় প্রতিবাদ-বিক্ষোভমিছিল করে, ‘গাজা, তুমি একা নও’, ‘ইসরাইলকে বয়কট করো’ এবং ‘ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা’ বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে।

স্প্যানিশ সরকারি টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ছবিতে দেখা গেছে, দাঙ্গা পুলিশ বিক্ষোভকারীদের একটি অংশকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে পিটিয়ে পিছু হটতে বাধ্য করেছে।

বার্সেলোনার সাবেক মেয়র আদা কোলাউকে বহনকারী একটি নৌকাও এগিয়ে যেতে বাধা দেওয়া হয়েছে।

নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি মান্ডলা ম্যান্ডেলাসহ তার সহকর্মীদের ইসরাইল কর্তৃক নির্বাসনের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

ডাবলিনে আইরিশ পার্লামেন্টের বাইরেও কয়েকশ’ বিক্ষোভকারী মিছিল করে। সেখানে ফিলিস্তিনিদের সমর্থনকে প্রায়শই ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে আয়ারল্যান্ডের শতাব্দীব্যাপী সংগ্রামের সাথে তুলনা করা হয়।

মরিয়ম ম্যাকনালি নামে এক নারী বলেছেন, তিনি ডাবলিনের বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। তার মেয়ে নৌবহরের সাথে যাত্রা করেছে।

ম্যাকনালি এএফপিকে বলেছেন, ‘আমি আমার মেয়ের জন্য উদ্বিগ্ন, কিন্তুসে যা করছে তা নিয়ে খুব গর্বিত’।

তিনি বলেছেন, ‘মারাত্মক বিপদের মুখেও সে মানবতার পক্ষে দাঁড়িয়েছে।’

এএফপি’র একজন সাংবাদিক দেখেছেন, প্যারিসের প্লেস দে লা রিপাবলিক-এ প্রায় এক হাজার মানুষ মিছিল করেছে। অন্যদিকে দক্ষিণ ফ্রান্সের বন্দর শহর মার্সেইতে ইসরাইলের কাছে সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির অভিযোগে অস্ত্র প্রস্তুতকারক ইউরোলিংকসের অফিসে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রবেশের সময় বিক্ষোভকারীরা আটকানোর চেষ্টা করলে বিকেলে প্রায় একশ’ ফিলিস্তিনিপন্থী বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এএফপি সংবাদদাতাদের জানিয়েছেন, বার্লিন, দ্য হেগ, তিউনিস, ব্রাসিলিয়া এবং বুয়েনস আয়ারসেও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
- ‘অসহনীয়’ -

ইতালিতে দেশের প্রধান ইউনিয়নগুলো ফ্লোটিলার সাথে সংহতি জানিয়ে শুক্রবার সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। সেখানে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনিকে কর্মীদের রক্ষা করার আহ্বান জানিয়েছে।

রোম ছাড়াও, পুলিশ জানিয়েছে, , মিলান, টোরিনো, ফ্লোরেন্স এবং বোলোগনাসহ অন্যান্য শহরেও ১০ হাজার মানুষ একটি বিক্ষোভ মিছিলে যোগ দিয়েছে।

বুধবার সন্ধ্যায় একই রকম বিক্ষোভের একদিন পর রাজধানীর বিক্ষোভকারীরা কলোসিয়ামে জড়ো হয়ে মিছিল করে ইসরাইলের প্রতি অতি-ডানপন্থী প্রধানমন্ত্রীর নিন্দা জানায়।

বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দিয়েছে, ‘আমরা সবকিছু অবরুদ্ধ করতে প্রস্তুত। গণহত্যা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।

তুরস্কের সরকার ইসরাইলের আক্রমণের তীব্র সমালোচকদের মধ্যে অন্যতম। বিক্ষোভকারীদের একটি দীর্ঘ দল ‘দখলের ওপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা’সহ ব্যানার নিয়ে ইস্তাম্বুলে ইসরাইলি দূতাবাসের দিকে মিছিল করে।

২১ বছর বয়সী ছাত্রী এলিফ বোজকুর্ট এএফপিটিভি’কে বলেছেন, ‘আমরা সুমুদ নৌবহরের সকল সদস্য এবং সকল বন্দীর মুক্তি দাবি করছি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে আমরা দাবি করছি, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গণহত্যাকারী ইসরাইলি রাষ্ট্রের সাথে সকল শিক্ষাগত ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বন্ধ করা হোক।’

ব্রাসেলসে ইউরোপীয় সংসদ ভবনের সামনেও প্রায় ৩ হাজার বিক্ষোভকারী বিক্ষোভে অংশ নেয়। সেখানে একটি ব্যানারে ইইউকে ‘অবরোধ ভাঙার’ আহ্বান জানানো হয়। এ সময় ভিড়ের মধ্যে ধোঁয়াটে বোমা এবং পটকা ফাটানো হয়েছিল।

বিক্ষোভে অংশ নেয়া আইসিস নামে একজন বিক্ষোভকারী এএফপিটিভি’কে বলেছেন, ‘বার্তাটি হল প্রতিটি নৌকাকে রক্ষা করতে হবে,’ ‘প্রতিটি নৌকাকে রক্ষা করতে হবে।’

তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতৃত্বকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটির সাথে ব্লকের চুক্তির মাধ্যমে ‘ইসরাইলে পাঠানো জ্যোতির্বিদ্যা সংক্রান্ত অর্থ’ বন্ধ করার আহ্বান জানান।
- ‘বর্ণবাদী রাষ্ট্র’ -

ঘটনাস্থলে উপস্থিত একজন এএফপি সাংবাদিক এবং সুইস সম্প্রচারকদের মতে, জেনেভায় একই আকারের জনতা সমাবেশ করেছিল। বেশিরভাগ তরুণ বিক্ষোভকারী কেন্দ্রীয় স্টেশনের কাছে আগুন জ্বালিয়েছিল।

এরপর বিক্ষোভকারীরা সুইস শহরের মন্ট ব্লাঙ্ক ব্রিজের দিকে রওনা দিয়ে লেক জেনেভার শেষ প্রান্তের দিকে অগ্রসর হলে সেখানে দাঙ্গা পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এ সময় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হলে দাঙ্গাপুলিশ লাঠিচার্জ করে পিছু হটিয়ে দেয়।

গ্রীক রাজধানী এথেন্সে বিক্ষোভকারীদের একটি দল আতশবাজি এবং অগ্নিসংযোগ শুরু করে।

গ্রীসের ওয়ার্ল্ড অ্যাগেইনস্ট রেসিজম অ্যান্ড ফ্যাসিজম গ্রুপের সমন্বয়কারী পেট্রোস কনস্টান্টিনো এএফপিটিভি’কে বলেছেন, ‘সুমুদের নৌবহরের ওপর আক্রমণ, এটি ইসরাইলি বর্ণবাদ রাষ্ট্রের বর্বরতার বহিঃপ্রকাশ। তারা গাজায় মানবিক সাহায্যের জন্য একটি পথও খুলতে চায় না’।

মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের সামনেও কয়েক ডজন বিক্ষোভকারী সমাবেশও মিছিল করেছে।সূত্র : বাসস

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Global Sumud flotillar is a Seized all ships except

গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার একটি বাদে সব জাহাজ আটক

আটক ৩১৭ জনকে ইউরোপে পাঠাবে ইসরায়েল * ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অভিযোগ যাচ্ছে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে
গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার একটি 
বাদে সব জাহাজ আটক

গাজা উপত্যকার উদ্দেশে যাত্রা করা গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি নৌবাহিনী। অন্তত ৩১৭ জন কর্মীকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আয়োজকরা। ইসরায়েল জানিয়েছে, গাজাগামী ত্রাণবাহী ৪৪টি জাহাজের মধ্যে একটি জাহাজ ছাড়া সবগুলোকে আটক করা হয়েছে।
আটক হওয়া কর্মীরা এসেছেন নানা দেশ থেকে—স্পেন, ইতালি, ব্রাজিল, তুরস্ক, গ্রিস, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, সুইডেন, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্সসহ ৩৭টি দেশের নাগরিক রয়েছেন তাদের মধ্যে।
বাংলাদেশের শহিদুল আলম ছাড়াও সুমুদ ফ্লোটিলায় রয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক রুহি আক্তারও। শহিদুল আলম ‘কনশায়েন্স’ নামে একটি বড় জাহাজে রয়েছেন। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সেটি আটক হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
তুরস্কের সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড জানিয়েছে, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ বলেছে—গাজামুখী ত্রাণবাহী বহরে থাকা কর্মীদের ইউরোপে ফেরত পাঠানো হবে। ভূমধ্যসাগরে একের পর এক নৌযান আটক করার পর এই ঘোষণা আসে।
ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক বিবৃতিতে জানায়, ‘নিজ নিজ ইয়টে থাকা যাত্রীরা নিরাপদে ও শান্তিপূর্ণভাবে ইসরায়েলে পৌঁছাচ্ছেন। সেখান থেকেই তাদের ইউরোপে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হবে। যাত্রীরা নিরাপদে আছেন এবং সুস্থ আছেন।’ এ সময় গ্রেটা থুনবার্গসহ আটক কর্মীদের ছবি প্রকাশ করা হয়।
সংগঠকদের দাবি, ফ্লোটিলার অন্তত ২২৩ জন কর্মীকে আটক করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা এক্সে জানিয়েছে, বুধবার রাত থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৫টি নৌযান আক্রমণ করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। আরও আটটি নৌযান আক্রমণের শিকার হতে পারে বা বর্তমানে আক্রমণের মুখে রয়েছে। এছাড়া ফ্লোটিলা তাদের ইনস্টাগ্রামে আটক হওয়া ২২৩ জন কর্মীর নাম ও জাতীয়তা প্রকাশ করেছে।
প্রসঙ্গত, গাজার নৌ অবরোধ ভাঙতে ও সহায়তা পৌঁছে দিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শত শত কর্মী ৪৪টি নৌযানে অংশ নিয়েছেন। তবে ইসরায়েল এর আগেও এ ধরনের ফ্লোটিলা অভিযাত্রা ব্যর্থ করেছে। এবারের যাত্রাও একই পরিণতির মুখে পড়তে চলেছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে গাজা অভিমুখে ত্রাণ নিয়ে যাত্রা করা গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার বহরে ইসরায়েলি বাহিনীর লঙ্ঘনের অভিযোগগুলো জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) পাঠানো হবে। ত্রাণ বহরের সঙ্গে থাকা আইনজীবীদের বরাতে ভূমধ্যসাগরে অবস্থিত একটি জাহাজে থাকা আল জাজিরার হাসান মাসুদ বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, নৌবহরে থাকা আইনজীবীরা ইসরায়েলের আন্তর্জাতিক মানবিক ও সামুদ্রিক আইন লঙ্ঘনের ঘটনা নথিভুক্ত করছেন। ইসরায়েলি লঙ্ঘনের অভিযোগগুলো আইসিজেতে পাঠানো হবে।
হাসান মাসুদ বলেন, ‘আমরা সমস্ত ক্যামেরা পর্যবেক্ষণ করছি। আমরা নিশ্চিত করতে পারি, বেশ কয়েকটি নৌকা এখনো গাজায় পৌঁছানোর চেষ্টা করছে। এমনকি যদি কেবল একটি নৌকা গাজায় পৌঁছায়, তবুও এটি অবরোধ ভাঙার লক্ষ্য অর্জন করবে।’
তিনি আরও জানান, ইতালির সিসিলি থেকে রওনা হওয়ার পর আরেকটি নৌবহর এখন গাজার দিকে যাত্রা করছে। এটি ইঙ্গিত দিচ্ছে, কর্মীরা ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনি জনগণের কাছে পৌঁছানোর জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।
এদিকে, ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন অনুসারে, ইসরায়েলি নৌকমান্ডোরা গ্লোবাল ফ্লোটিলার ৪৪টি জাহাজের মধ্যে প্রায় ৪০টিতে উঠে পড়ে। তারা জিপিএস সিগন্যাল বন্ধ করে দিয়ে জাহাজে থাকা শত শত কর্মীকে আটক করে।
রয়টার্সের যাচাই করা ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ভিডিওতে গ্রেটাকে সৈন্য-বেষ্টিত একটি ডেকের ওপর বসে থাকতে দেখা গেছে। আটক যাত্রীদের মধ্যে নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি মান্ডলা ম্যান্ডেলাও রয়েছেন।
গাজামুখী নৌবহরটিতে ইসরায়েলি এমন হামলায় বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। এটিকে ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ আখ্যা দিয়েছে তুরস্ক। একই সঙ্গে এ ঘটনায় স্পেন, ইতালি, জার্মানি, তুরস্ক ও গ্রিসসহ বহু দেশে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়েছে।
জানা গেছে, ইসরায়েলের বাধা পেরিয়ে গাজার জলসীমায় ঢুকে পড়েছে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার একটি জাহাজ। পথে রয়েছে আরও ২৩টি। গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা লাইভ ট্র্যাকার অনুযায়ী, মিকেনো নামে ওই জাহাজ বর্তমানে গাজার জলসীমায় অবস্থান করছে। তবে সেটি ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে পড়েছে কি না তা স্পষ্ট নয়।
আল জাজিরা জানিয়েছে, গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা থেকে এ পর্যন্ত দুই শতাধিক কর্মী-সামাজিক আন্দোলনকারীকে বন্দি করেছে ইসরায়েল। গাজার অবরোধ ভেঙে মানবিক সাহায্য পৌঁছাতে যাওয়া এই বহরে ৪০টিরও বেশি জাহাজ ছিল।
এর আগে ইসরায়েলি নৌবাহিনী ফ্লোটিলার জাহাজগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ করে দেয়, জলকামান ছুড়ে আক্রমণ চালায় এবং আন্তর্জাতিক জলসীমা থেকে কর্মীদের আটক করে।
তবে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা বলছে, এই বাধা তাদের মিশন থামাতে পারবে না। ইসরায়েলকে ফাঁকি দিয়ে গাজার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে সুমুদ ফ্লোটিলার অন্তত ৩০ জাহাজ। গাজা উপকূল থেকে আর মাত্র ৮৫ কিমি দূরে রয়েছে তারা।
সংগঠনটির ভাষ্যমতে, অবৈধভাবে চালানো ইসরায়েলি বাধা সত্ত্বেও তারা গাজার অবরোধ ভাঙতে এবং একটি মানবিক করিডোর খুলতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। তাদের দাবি, যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় অনাহারে থাকা ফিলিস্তিনিদের জন্য এই নৌবহর খাদ্য ও মানবিক সহায়তা বহন করছে।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Elon Mask is the owner of and 1 billion

৫০ হাজার কোটি ডলারের মালিক হলেন ইলন মাস্ক

৫০ হাজার কোটি ডলারের মালিক হলেন ইলন মাস্ক

বিশ্বের প্রথম ব্যক্তি হিসেবে ৫০০ বিলিয়ন অর্থাৎ ৫০ হাজার কোটি ডলার নিট সম্পদের মাইলফলক ছুঁয়েছেন বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্ক। ফোর্বসের সর্বশেষ তালিকা অনুযায়ী গত বুধবার তার সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ৫০ হাজার ১০ কোটি ডলারে।

ফোর্বসের তালিকায় মাস্কের পর দ্বিতীয় স্থানে আছেন ওরাকল প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি এলিসন। গত বুধবার পর্যন্ত তার নিট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩৫ হাজার ৭০ কোটি ডলার।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, মূলত টেসলার শেয়ারের পুনরুত্থান ও নিজের মালিকানাধীন অন্যান্য প্রযুক্তি উদ্যোগের (স্টার্টআপ) বাজারমূল্য বেড়ে যাওয়ায় এই রেকর্ড গড়তে পেরেছে ইলন। টেসলার ১২ দশমিক ৪ শতাংশ শেয়ার তার মালিকানায় রয়েছে। চলতি বছরে টেসলার শেয়ারমূল্য এরই মধ্য ১৪ শতাংশের বেশি বেড়েছে ও বুধবার কোম্পানিটির শেয়ার আরও ৩ দশমিক ৩ শতাংশ বৃদ্ধির মাধ্যমে মাস্কের সম্পদে একদিনেই যুক্ত হয় প্রায় ৬ বিলিয়ন বা ৬০০ কোটি ডলার।

রয়টার্স বলছে, ইলন মাস্কের জন্য বছরের শুরুটা অস্থির থাকলেও বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে আসায় টেসলার শেয়ার আবার ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। টেসলা বোর্ডের চেয়ারম্যান রবিন ডেনহোলম গত মাসে জানান, হোয়াইট হাউসে কয়েক মাস ব্যস্ত থাকার পর মাস্ক এখন আবার ‘সম্মুখসারিতে ও একেবারে কেন্দ্রে’ ফিরে এসেছেন। এর কয়েক দিনের মধ্যেই মাস্ক নিজেই টেসলার প্রায় ১০০ কোটি ডলারের শেয়ার কিনে কোম্পানির ভবিষ্যতের প্রতি আস্থার বড় বার্তা দেন।

তবে গাড়ি বিক্রি কমে যাওয়া ও মুনাফার চাপ অব্যাহত থাকায় শেয়ার কিছুটা ক্ষতির মুখে পড়েছে টেসলা। এর ফলে তথাকথিত ‘ম্যাগনিফিসেন্ট সেভেন’ গ্রুপের বৃহৎ প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর মধ্যে টেসলা অন্যতম খারাপ পারফরমার হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

গত মাসে টেসলা বোর্ড মাস্কের জন্য ১ ট্রিলিয়ন বা ১ লাখ কোটি ডলারের ক্ষতিপূরণ পরিকল্পনা প্রস্তাব করে, যেখানে উচ্চাভিলাষী আর্থিক ও কার্যকরী লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। একই সঙ্গে মাস্কের আরও বড় শেয়ার দাবিও এতে বিবেচনায় আনা হয়।

মাস্কের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কোম্পানি এক্সএআই ও রকেট নির্মাতা স্পেসএক্স এ বছরেও বাজারমূল্যে বড় সাফল্য পেয়েছে। জুলাই পর্যন্ত এক্সএআইয়ের মূল্য ছিল ৭ হাজার ৫০০ কোটি ডলার। সেপ্টেম্বরে সিএনবিসির খবরে বলা হয়, নতুন তহবিল সংগ্রহের পর এর মূল্য ২০ হাজার কোটি ডলার হতে পারে। তবে মাস্ক তখন জানান, তারা কোনো মূলধন সংগ্রহ করছেন না।

অন্যদিকে ব্লুমবার্গের জুলাই মাসের প্রতিবেদনে বলা হয়, স্পেসএক্স নতুন অর্থ সংগ্রহ ও অভ্যন্তরীণ শেয়ার বিক্রির পরিকল্পনা করছে, যা কোম্পানির মূল্য প্রায় ৪০ হাজার কোটি ডলারে উন্নীত করবে।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Yogi turned off the Internet in Uttar Pradesh Issue I Love Muhammad Poster Issue

‘আই লাভ মুহাম্মদ’ পোস্টার ইস্যু উত্তর প্রদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করলেন যোগী

‘আই লাভ মুহাম্মদ’ পোস্টার ইস্যু উত্তর প্রদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করলেন যোগী

উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ও ভারতের কট্টর হিন্দুত্ববাদী বিজেপি নেতা যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যে ব্যাপক সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। এই সহিংসতার জেরে রাজ্যে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। উত্তেজনা যাতে না বাড়ে, তাই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ৩টা থেকে আগামী ৪৮ ঘণ্টা ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ থাকবে।

জেলা প্রশাসনের জারি করা আদেশে বলা হয়, ফেসবুক, ইউটিউব, হোয়াটসঅ্যাপের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়ানো ও সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা উসকে দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতেই এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ইতোমধ্যে দাঙ্গা ও সহিংসতাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

এদিকে হিন্দু সম্প্রদায়ের দশেরা ও দুর্গাপূজার উৎসব ঘিরে জনসমাগমের কথা মাথায় রেখে বেরেলিতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। স্থানীয় পুলিশ ছাড়াও মোতায়েন করা হয়েছে প্রভিন্সিয়াল আর্মড কনস্ট্যাবুলারি (পিএসি) ও র‍্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স (আরএএফ)। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিভিন্ন এলাকায় নজরদারির জন্য ড্রোনও ব্যবহার করছে নিরাপত্তা বাহিনী।

বেরেলির পাশাপাশি শাহজাহানপুর, পিলিভিত ও বদায়ুঁ জেলা প্রশাসনকেও সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন বিভাগীয় কমিশনার ভূপেন্দ্র চৌধুরী।

গত শুক্রবার ‘আই লাভ মোহাম্মদ’ পোস্টার ইস্যুতে একটি বিক্ষোভ ডেকেছিলেন প্রখ্যাত ইসলামী পণ্ডিত ও রাজনীতিবিদ তৌকির রাজা খান। ওই ডাকে জুমার নামাজের পর কোটওয়ালি এলাকার একটি মসজিদের বাইরে প্রায় ২ হাজার মানুষ জড়ো হন। সেখানে হঠাৎ পুলিশের সঙ্গে তারা সংঘর্ষে জড়ান। এ সময় ইটপাটকেল ছোড়ার ঘটনাও ঘটে।

ওই ঘটনার পর থেকে এ পর্যন্ত ৮১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত বুধবার শহরের সিবিগঞ্জ এলাকায় পুলিশের সঙ্গে ‘এনকাউন্টারে’ আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তারা চিকিৎসাধীন থাকলেও পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন।

তৌকির খান তার কয়েক সহযোগী, একজন আত্মীয়সহ বর্তমানে কারাগারে আছেন। পুলিশ এখন পর্যন্ত ১০টি এফআইআর দায়ের করেছে, যাতে ১৮০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং অজ্ঞাত পরিচয়ে আরও ২ হাজার ৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ‘আই লাভ মুহাম্মদ’ বিতর্কের সূত্রপাত হয় গত ৪ সেপ্টেম্বর ঈদে-মিলাদুন্নবীর মিছিলের সময়। কানপুরে মিছিলের পথে একটি তাঁবুতে ‘আই লাভ মুহাম্মদ’ লেখা পোস্টার ঝোলানো হয়েছিল। স্থানীয় হিন্দু সংগঠনগুলো অভিযোগ তোলে, ওই জায়গাতেই রামনবমীর মতো হিন্দু উৎসব হয়। তাই এই পোস্টার ইচ্ছাকৃতভাবে দেওয়া হয়েছে।

এরপর থেকে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। হিন্দু সংগঠনগুলোর দাবি, তাদের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। অন্যদিকে মুসলিমরা অভিযোগ করেন, নবীজির প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করায় তাদের টার্গেট করা হচ্ছে। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে।

কয়েক সপ্তাহ পর বারানসিতে পাল্টা কর্মসূচি শুরু হয়। ধর্মীয় নেতারা ‘আই লাভ মুহাম্মদ’ পোস্টারের প্রতিবাদে ‘আই লাভ মহাদেব’ লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ করেন। তারা দাবি করেন, উসকানিমূলক পোস্টারের মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টা করা হচ্ছে।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Flood warnings in the coastal region in fear of the Philippine cyclone injury

ফিলিপাইন ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতের আশঙ্কায় উপকূলীয় অঞ্চলে বন্যার সতর্কবার্তা

ফিলিপাইন ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতের আশঙ্কায় উপকূলীয় অঞ্চলে বন্যার সতর্কবার্তা

ফিলিপাইনের আবহাওয়া পূর্বাভাসে বৃহস্পতিবার উপকূলীয় অঞ্চলে বিপজ্জনক বন্যার সতর্কবার্তা দিয়েছেন। গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঝড় ম্যাটমো দুর্যোগ কবলিত দেশটিতে আঘাত হানার আশঙ্কায় এ সতর্কতাবার্তা দেওয়া হয়েছে।

ঘণ্টায় ৭৫ কিলোমিটার (৪৭ মাইল) বেগে বাতাস বয়ে আনা এই ঘূর্ণিঝড়টি শুক্রবার সকালে লুজনের প্রধান দ্বীপে পৌঁছানোর কয়েক ঘন্টা আগে তীব্র গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঝড়ে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

জাতীয় আবহাওয়া পরিষেবা জানিয়েছে, ‘উত্তর ও পূর্ব লুজনের নিম্নভূমি বা উন্মুক্ত উপকূলীয় এলাকায় ৩৬ ঘন্টার মধ্যে ১.০ থেকে ৩.০ মিটার (৩-১০ ফুট) উচ্চতার প্রাণঘাতী ঝড়ো হাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।’

খবর বার্তা সংস্থা এএফপি’র।

ঝড়ো হাওয়া যখন সমুদ্রের বিশাল ঢেউ উপকূলের দিকে ঠেলে দেয়, তখন বন্যা, সম্পত্তির ক্ষতি ও মৃত্যুর আশঙ্কা দেখা দেয়।

তাৎক্ষণিকভাবে কর্তৃপক্ষ স্থানীয়দের সরিয়ে নেওয়ার কোনও নির্দেশ দেয়নি। তবে আবহাওয়া পরিষেবা জানিয়েছে, ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে এবং সমুদ্র উত্তাল এবং সকল ধরণের জাহাজের জন্য সমুদ্র ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হবে।

মধ্য ফিলিপাইনে ৬.৯ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্পে ৭২ জন নিহত এবং প্রায় ৬০০টি বাড়ি ধ্বংস হওয়ার মাত্র তিন দিন পর, আফটারশকের (ভূমিকম্পন পরবর্তী কম্পনের) ভয়ে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় ঘুমিয়ে পড়েছে।

ফিলিপাইনে প্রতি বছর গড়ে ২০টি ঝড় ও টাইফুন আঘাত হানে। এগুলো প্রায়ই দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় আঘাত হানে, ওই স্থানগুলোতে লাখ লাখ অসহায় মানুষ দারিদ্র্যের মধ্যে বাস করে।

বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে দিয়েছেন যে মানব-চালিত জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে গ্রহ উষ্ণ হওয়ার সাথে সাথে ঝড় আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে।

গত সপ্তাহে উত্তর ফিলিপাইনে টাইফুন বুয়ালোইয়ের আঘাতে ৩৭ জনে প্রাণহানি ঘটেছে এবং ৪ লাখ মানুষকে তাদের বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ স্থানে চলে যেতে হয়েছে।

সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে টাইফুন রাগাসার আঘাতে দেশটিতে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। সূত্র : বাসস

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Netanyahu under two way pressure on Trumps proposal?

ট্রাম্পের প্রস্তাব নিয়ে দ্বিমুখী চাপে নেতানিয়াহু?

ট্রাম্পের প্রস্তাব নিয়ে দ্বিমুখী চাপে নেতানিয়াহু?

গাজা যুদ্ধের অবসান এবং বিধ্বস্ত ওই অঞ্চল পুনর্গঠনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি প্রস্তাব দিয়েছেন। সেটি মেনেও নিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তবে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ঘণ্টাখানেক পরই ভোল পাল্টেছেন তিনি।

নেতানিয়াহু বলেছেন, তিনি কখনও ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের অস্তিত্ব মেনে নেবেন না এবং গাজার অধিকাংশ এলাকায় ইসরায়েলি সেনাদের উপস্থিতি অব্যাহত থাকবে। ট্রাম্পের প্রস্তাবে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের কথা বলা হয়েছে, নেতানিয়াহু বারবার এটার নিন্দা করে আসছিলেন।

ওই প্রস্তাবের সমর্থন জানিয়ে এই পরিকল্পনায় কিছুটা গতি এনে দিয়েছে জর্ডান, মিসর, কাতার, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া এবং তুরস্কের মতো শীর্ষস্থানীয় আরব ও মুসলিমপ্রধান দেশ।

আলোচনার গতি বজায় রাখতে ট্রাম্প শর্ত জুড়ে দিয়েছেন, এই প্রস্তাবে হামাস রাজি কি না ‘হ্যাঁ অথবা না’ তা জানাতে ‘তিন থেকে চার দিন’ সময় আছে। যদি উত্তর না হয়, তাহলে যুদ্ধ চলবে।

প্রস্তাবিত চুক্তিটি অনেকটাই জো বাইডেনের এক বছরেরও বেশি সময় আগে করা পরিকল্পনার মতো। এরপর থেকে ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের ব্যাপক হত্যাকাণ্ড, গাজায় আরও ধ্বংসযজ্ঞ এবং এখন দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে গাজায় ইসরায়েলি জিম্মিদের মাসের পর মাস যন্ত্রণা এবং বন্দিদশা সহ্য করতে হয়েছে।

ইসরায়েলি গণমাধ্যমে অনেক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে যে বাইডেনের উদ্যোগ ব্যর্থ হওয়ার কারণ হলো, নেতানিয়াহু তার মন্ত্রিসভার কট্টর ডানপন্থিদের চাপের মুখে নতুন দাবি যুক্ত করেছিলেন।

এত কিছুর পরেও যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্পের পরিকল্পনা প্রস্তাব একটি উল্লেখযোগ্য মুহূর্ত। প্রথমবারের মতো, ট্রাম্প যুদ্ধ শেষ করার জন্য ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টি করছেন। যাতে চাপে পড়েছেন নেতানিয়াহু সরকারও।

মন্তব্য

p
উপরে