মাইক্রোসফট করপোরেশনের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস ও তার স্ত্রী মেলিন্ডা ফ্রেঞ্চ গেটসের বিচ্ছেদ আনুষ্ঠানিকভাবে চূড়ান্ত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এক আদালতের নথিতে স্থানীয় সময় সোমবার এমনটাই বলা হয়েছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
৬৫ বছর বয়সী বিল গেটস বিশ্বের চতুর্থ শীর্ষ ধনী। অন্যদিকে মাইক্রোসফটের সাবেক ব্যবস্থাপক ৫৬ বছর বয়সী মেলিন্ডা বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ইস্যু ও নারীদের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠায় সোচ্চার।
২৭ বছর বৈবাহিক জীবন কাটিয়ে চলতি বছরের ৩ মে বিচ্ছেদের আবেদন করেছিলেন বিল ও মেলিন্ডা।
বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিলেও নিজেদের জনহিতৈষীমূলক কর্মকাণ্ডে এর কোনো প্রভাব পড়বে না বলে সে সময়ই অঙ্গীকার করেন এই দম্পতি।
বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ব্যক্তিগত দাতব্য সংস্থা বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের কাজ আগের মতোই একসঙ্গে করার বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ তারা।
গেটস দম্পতি জানান, নিজেদের বৈবাহিক সম্পদ কীভাবে ভাগ হবে, সে বিষয়ে তারা একটি চুক্তিতে পৌঁছেছেন।
অবশ্য ওই চুক্তির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটল শহরের কিং কাউন্টি সুপিরিয়র কোর্টের বিচ্ছেদের চূড়ান্ত আদেশে কিছু বলা হয়নি।
কোর্টের আদেশে বলা হয়, বিচ্ছেদ চুক্তির শর্ত অবশ্যই বিল-মেলিন্ডা দম্পতিকে মেনে চলতে হবে।
২০০০ সালে পথ চলতে শুরু করা সিয়াটলভিত্তিক বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য খাতে অল্প সময়ে বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী ও প্রভাবশালী দাতব্য সংস্থায় পরিণত হয়।
বিল ও মেলিন্ডার ম্যালেরিয়া ও পোলিও নির্মূল, শিশু পুষ্টি ও টিকাদান কর্মসূচি বিশ্বজুড়ে ব্যাপক প্রশংসা পায়।
করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা ও নারী অধিকার প্রচারে বিল ও মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন ৫ হাজার কোটি ডলারের বেশি অর্থ দান করে।
বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেয়ার পর যৌথ এক বিবৃতিতে এই দম্পতি বলেছিলেন, ‘অনেক ভেবে-চিন্তে এবং সম্পর্কের অনেক খুঁটিনাটি বিষয় খতিয়ে দেখে আমরা বৈবাহিক জীবনের ইতি টানার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘গত ২৭ বছরে আমরা দুর্দান্ত তিন সন্তানকে বড় করেছি এবং একটি ফাউন্ডেশন গড়ে তুলেছি, যা বিশ্বব্যাপী সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে স্বাস্থ্যকর, কর্মক্ষম জীবনযাপনে সক্ষম করে তুলতে কাজ করছে।’
গেটস দম্পতির বিচ্ছেদ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ধনীদের বৈবাহিক সম্পর্কের ইতি টানার দ্বিতীয় ঘটনা।
ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ার ইনডেক্স অনুযায়ী বর্তমানে বিশ্বের শীর্ষ ধনী জেফ বেজোস ও ম্যাকেঞ্জি স্কট ২০১৯ সালে বিচ্ছেদের ঘোষণা দিয়েছিলেন।
এ দম্পতির বিচ্ছেদে সম্পদের ভাগাভাগিতে রাতারাতি বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী বনে যান ম্যাকেঞ্জি।
আরও পড়ুন:ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধ জমিতে ভাসমান কাঠামো বা ডালি পদ্ধতিতে সবজি আবাদ শুরু হয়েছে। এতে কৃষকদের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে।
স্থানীয় কৃষি অফিস জানায়, হাওর জনিত কারণে নবীনগরের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জমি বর্ষাকালে পানিতে নিমজ্জিত থাকে। এ সময় শাক-সবজির প্রাপ্যতা কমে যায়, বাজারে দামও বেড়ে যায়। এসব জমিতে ভাসমান ডালি তৈরি করে সবজি আবাদে কৃষকরা আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
ফ্রিপ প্রকল্পের অর্থায়নে উপজেলার ইব্রাহিমপুর, নাটঘর, রছুল্লাবাদ, সাতমোড়া, সলিমগঞ্জ এবং বড়িকান্দি ইউনিয়নে চলতি মৌসুমে ভাসমান ডালি পদ্ধতিতে সবজি আবাদ করা হচ্ছে। কৃষি বিভাগ এ জন্য কৃষকদের প্রশিক্ষণ, পরামর্শ ও কারিগরি সহায়তা দিয়ে আসছে।
ইব্রাহিমপুর গ্রামের কৃষক কাওছার মিয়া বলেন, "আগে বর্ষাকালে তিন-চার মাস জমি পতিত পড়ে থাকত। এবার উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে ১০ শতাংশ জায়গায় ভাসমান পদ্ধতিতে লাউ আবাদ করেছি। ইতিমধ্যে প্রায় ২০০ লাউ বিক্রি করে ১৫ হাজার টাকা আয় করেছি। আগামীতে আরও জমিতে এ পদ্ধতিতে চাষ করব।"
নাটঘর ইউনিয়নের কুড়িঘর গ্রামের কৃষক সুমন মিয়া জানান, আমিই প্রথম এ ইউনিয়নে ডালি পদ্ধতিতে সবজি আবাদ শুরু করেছি। এ বছর ১৮ শতক জমিতে ময়না লাউ আবাদ করেছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করতে পারব।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ জাহাঙ্গীর আলম লিটন বলেন, ফ্রিপ প্রকল্পের আওতায় দুই শতাধিক কৃষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ভাসমান ডালি কাঠামো তৈরি ও বীজ-সার সরবরাহ করে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এই প্রযুক্তি আগামী দিনে এ অঞ্চলের জন্য দারুণ সম্ভাবনাময়।
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, ডালি পদ্ধতিতে আগাম ও অসময়ে সবজি উৎপাদন সম্ভব হওয়ায় খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি কৃষকদের বাড়তি আয়ের সুযোগও তৈরি হচ্ছে।
আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি)-এর সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেছেন, ডাকসু নির্বাচন দেশের রাজনীতিতে নতুন দিকনির্দেশনা দিয়েছে। জনআকাঙ্ক্ষা ও সময়ের পরিবর্তন বুঝতে না পারলে, ৯১ অথবা ২০০১ সালের মানদণ্ড দিয়ে ২০২৫ সালের রাজনীতি পড়ার চেষ্টা করলে ভুল হবে। শুক্রবার সকালে বরিশাল প্রেসক্লাবে আয়োজিত উন্নয়ন ও সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার ফুয়াদ। তিনি বলেন,ডাকসু নির্বাচন আগামী দিনের রাজনীতির একটি নির্বাচনী গ্রামার আমাদের হাতে তুলে দিয়েছে। কেউ যেন ৯১, ৯৬ বা ২০০১ সালের ম্যাট্রিক্স দিয়ে সেটি বিচার না করে। এটি নতুন মেট্রিক্স আগামী দিনের রাজনীতির জন্য।
ফুয়াদ আরও বলেন, ডাকসু নির্বাচনকে ইসলামপন্থীদের বিজয়, জামায়াত-শিবিরের উত্থান বা জঙ্গিবাদ হিসেবে দেখা ভুল হবে। গণ-অভ্যুত্থানকে আওয়ামী লীগ যেভাবে ভুল বুঝেছে, ডাকসু নির্বাচনের বার্তাকেও বিএনপি ও কিছু বামপন্থী বুদ্ধিজীবী ঠিকভাবে বোঝেননি। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বা জাতীয় পার্টি ছাড়া ইনক্লুসিভ হবে না এ ধরনের বক্তব্য ডাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে ভুল প্রমাণিত হয়েছে।
তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, জগন্নাথ হলের ভোটের ফলাফল দেখলে বোঝা যায়, দেশের বিভিন্ন প্রার্থী ও দল জামায়াত-শিবিরকে সমর্থন দেয়নি। ভোটের পর দেখা গেছে, শিবিরের প্যানেলে ভোট জমা হয়নি এবং তাই শিবিরকে অতিরিক্ত গুরুত্ব দেওয়ার দরকার নেই।
ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, ডাকসু নির্বাচন ফেয়ার হয়েছে। এখানে কোনো ইসলামপন্থী, মৌলবাদী বা দক্ষিনপন্থী বিজয়ী হয়নি। ভোট প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ স্বচ্ছ ছিল। দেশের রাজনীতি এখনো শান্ত হয়নি, আমরা এখনও ভলকানের উপরে বসবাস করছি। কেউ যদি ফেব্রুয়ারির পর দেশকে ‘সুইজারল্যান্ড’ মনে করে, তা হবে না। যে কোনো সময় নেপাল, শ্রীলঙ্কা বা ইন্দোনেশিয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। সমস্ত রাজনৈতিক দলকে সতর্ক থাকতে হবে।
তিনি আরও বলেন, দুই নাম্বারি রাজনীতি, চেতনা ব্যবসা বা ঠিকাদারী রাজনীতি আর চলবে না। স্বচ্ছতা, সততা এবং ভদ্রতা ছাড়া আগামী দিনের রাজনীতি সুষ্ঠু হবে না। তরুণরা পলিটিক্যালি সচেতন, আর তাদের আকাঙ্ক্ষাকে অসম্মান করলে রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া নিশ্চিত।
প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন আমার বাংলাদেশ পার্টি বরিশাল জেলার সদস্য সচিব জি এম রাব্বি, যুগ্ম আহ্বায়ক সুজন তালুকদার, বরিশাল মহানগরের যুগ্ম সদস্য সচিব ডা: তানভীর আহমেদ, সদস্য হায়দার ভূইয়া, নাজমুল মুন্নাসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ এবং স্থানীয় ও জাতীয় মিডিয়ার সাংবাদিকরা।
ঠাকুরগাঁওয়ে প্রথমবারের মতো সদর উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে মাসব্যাপী সাঁতার প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে সদর উপজেলা পরিষদের পুকুরে ওই প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মেহনাজ ফেরদৌস। সেসময় উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার খাইরুল ইসলাম। ওই প্রশিক্ষণে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৩০জন প্রশিক্ষণার্থী অংশগ্রহণ করেন। সপ্তাহে দুদিন ওই প্রশিক্ষণ করা হবে। প্রশিক্ষক হিসেবে রয়েছেন সাবেক নৌবাহিনীর সদস্য আনিসুজ্জামান(অব.)।
এদিকে জেলায় প্রথমবারের মতো সাঁতার প্রশিক্ষণের আয়োজন করায় খুশি স্থানীয়রা। উপজেলা নির্বাহী অফিসার খাইরুল ইসলাম বলেন, এ প্রশিক্ষণ বর্তমান সময়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সকল মানুষের সাঁতার জানা দরকার। নিজেকে নিরাপদে রাখার জন্য এটি সময়োপযোগী প্রশিক্ষণ। এ ধরণের প্রশিক্ষণ দক্ষ ও সাহসী সাঁতারু গড়ে তুলতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ১৭ হাজার হেক্টর। বর্ষা মৌসুমের শুরুতে কম বৃষ্টিপাত হওয়ায় আমন আবাদ পিছিয়ে যায়। বর্তমানে বৃষ্টিপাতের পরিমান বেশি হওয়ায় আমন আবাদে ধানের পাতার সংকট পড়ায় আবার কিছুটা থেমে যায়।
উপজেলার আটুলিয়া মুন্সিগঞ্জ, ভূরুলিয়া, কাশিমাড়ী, কৈখালী, ঈশ্বরীপুর, নুরনগর, শ্যামনগর, গাবুরাসহ অন্যান্য ইউনিয়নে আমন ধান আবাদ হয়ে থাকে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে প্রকাশ, উপজেলায় আমন আবাদের লক্ষ্য মাত্রা ১৬ হাজার ৮ শত কুড়ি হেক্টর। চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৪৯ হাজার ২৬৬ মেট্রিকটন। এর মধ্যে উফসি আবাদের লক্ষ্য মাত্রা ১৬ হাজার ১২৫ হেক্টর। চাউলে লক্ষ্যমাত্রা ৪৬হাজার ৭৮৪ মেট্রিকটন। হাইব্রিড আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৬৫০ হেক্টর। চাল উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা ২ হাজার ৪শত পাঁচ মেট্রিক টন। স্থানীয় আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৪৫ হেক্টর। চালের লক্ষ্যমাত্রা ৭৭ মেট্রিক টন।
উপজেলার মুন্সীগঞ্জ ইউপির ধানখালী গ্রামের আমন চাষি আব্দুল করিম বলেন আমন ধান রোপণ শেষ পর্যায়ে। শেষ মুহূর্তে বেশ বৃষ্টিপাতের কারণে ধানের বীজ বপন করতে না পারায় ধানের পাতার সংকট পড়ে যায়। আবাদচন্ডিপুর গ্রামের আমনচাষি আশিকুর রহমান বলেন আমন ধান রোপন শেষ পর্যায়ে। প্রথম দিকে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় আমন চাষ কিছুটা হলেও দেরি হয়।
আমনচাষি নকিপুর গ্রামের শফিকুল ইসলাম, বারসিকের কর্মকর্তা রামকৃষ্ণ জোয়ারদ্দার বলেন স্থানীয় জাতের ধান চিনিকিনি, নারকেল মুছিসহ অন্যান্য জাতের ধান বিলুপ্তির পথে। কৃষকরা বলেন হাইব্রিড ধান চাষ বেশি লক্ষ্য করা যায়।
উপজেলায় কৃষকের প্রধান ফসল আমন আবাদ। আমন চাষকে ঘিরে কৃষকরা নতুন নতুন স্বপ্ন দেখে থাকেন। উপজেলায় আমন আবাদের পাশাপাশি বোরো ও আউস ধান আবাদ হয়ে থাকে। কৃষকদের তথ্য মতে ও উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী শ্যামনগরে লবন পানিতে চিংড়ি চাষের প্রাধান্য থাকলেও বোরো ধান, আমান ধানের আবাদ দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী শ্যামনগরে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ২৯৫ হেক্টর। অর্জিত হয় ২ হাজার ৩১০ হেক্টর। এর মধ্যে উফসি জাতের অর্জন ছিল ১ হাজার ৫৭০ হেক্টর।
চলতি বছরে কৃষি অফিসের আয়োজনে ২ হাজার ৯০০ জন কৃষকদের মধ্যে প্রনোদনা দেওয়া হয় ধান বীজ ও সার। এর মধ্যে ঘূর্ণীঝড় রিমালে ক্ষতিগ্রস্ত ১ হাজার ৩০০ জন কৃষকের মধ্যে প্রণোদনা প্রদান করা হয়। প্রতি কৃষকের ৫ কেজি ধান বীজ, ১০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার বিতরণ করা হয়। বিতরণকৃত ধান বীজের মধ্যে ছিল ব্রি-৭৫, ব্রি-৮৭, বিনা-১৭, ব্রি ধান-৯৩ ও ৯৫ ও ব্রি-৪৯।
উপজেলা কৃষি অফিসার নাজমুল হুদা দৈনিক বাংলাকে বলেন, প্রণোদনায় বিতরণকৃত ধান গুলি এই এলাকার উপযোগি জাত। এদের জীবনকাল ১২৫দিন। তিনি বলেন উপকূলের শ্যামনগর থেকে স্থানীয় জাতের ধান চিনি কানি, নারকেল মুছি,পাজাম ধান কৃষক পর্যায় থেকে হারিয়ে যাচ্ছে।
স্বপ্নছোঁয়া কর্মযজ্ঞে রাউজানের বিসিক নগরীর প্লটগুলোতে গ্যাসে উৎপাদন নিশ্চিত করা হচ্ছে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশনের মাধ্যমে। কারণ বিদ্যুতের মাধ্যমে সব ধরনের উৎপাদন সম্ভব নয়। ‘বিসিক শিল্প নগরী রাউজান প্রকল্প’ দ্রুততম সময়ের মধ্যে শেষ হওয়ার পথে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা এ প্রকল্প রাউজানকে সুপ্রতিষ্ঠিত করে তুলবে এমন ধারণা সরকারের।
সরকারের পক্ষে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) এ প্রকল্পের বাস্তবায়ন করছে সম্পূর্ণ সরকারী অর্থায়নে। সরকার কর্মসংস্থান বাড়াতে চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলায় ৯৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকা ব্যয়ে গড়ে তুলছে রাউজান বিসিক শিল্প নগরী। এ পর্যন্ত প্রকল্পের প্রায় ৯০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। যদিও ২০২২ সালের জুনে এ প্রকল্পের কাজ শেষ করে প্লট বরাদ্দ দেওয়ার কথা ছিল কিন্তু অবকাঠামোগত উন্নয়ন শতভাগ শেষ না হওয়া ও দেশের অস্বাভাবিক পরিস্থিতির কারণে সময় বাড়িয়ে তা ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে।
এদিকে, প্রকল্প পরিচালনার জন্য অবকাঠামো নির্মাণও প্রায় শেষ। আগামী বছরের জুনে ছোট বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান অনুযায়ী প্লট বরাদ্দ দেয়া হবে। প্রকল্পের ভেতরে কর্মসংস্থান হবে প্রায় সাড়ে সাত হাজার কর্মজীবির। আর বাহিরেও এ প্রকল্পকে ঘিরে আরো প্রায় ৮ হাজার লোকের কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রকল্পের তথ্যানুযায়ী, ২০১৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর একনেকে অনুমোদন পাওয়া এ প্রকল্পটি ৩৫ একর ভূমির উপর প্রতিষ্ঠিত করার অনুমতি পেয়েছে। প্রতি একর ভূমির মূল্য পড়েছে প্রায় ৬৭ লাখ ৫২ হাজার ৫৪২ টাকা। ৩৫ একর ভূমির মোট মূল্য প্রায় ২৩ কোটি ৬৩ লাখ ৩৮ হাজার ৯৭১ টাকা। পরিকল্পনা কমিশন হতে ২০২০ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি এবং শিল্প মন্ত্রণালয় হতে একই বছরের ৪ মার্চ প্রথম সংশোধনীর অনুমতি পেয়েছিল। ১৮৪টি শিল্প প্লটের মধ্যে ১৪৮টি শিল্প ই্উনিট তৈরী করা হবে। প্রকল্পের অঙ্গভিত্তিক প্রাক্কলন ব্যয় হচ্ছে রাজস্ব খাতে ১৬৩ দশমিক ৯৮ লাখ টাকা, মূলধন খাতে ৮ হাজার ৮৪৫ দশমিক ৪২ লাখ ফটাকা, প্রাইস কন্টিজেন্সি খাতে ১৭৯ দশমিক ৯০ লাখ টাকা, ফিজিক্যাল কন্টিজেন্সি খাতে ১৭৬ দশমিক ৭০ লাখ টাকাসহ মোট ৯ হাজার ৩৬৬ লাখ টাকা এ প্রকল্পের মোট ব্যয়।
এ ব্যাপারে বিসিকের চট্টগ্রামস্থ জেলা কার্যালয়ের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার বলেন, এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হল উদ্যোক্তাদের শিল্প প্লটের বর্ধিত চাহিদা পূরণ করা। এক্ষেত্রে ১৪৮টি শিল্প প্লটের জন্য অবকাঠামোগত সুবিধাগুলো তৈরি এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে। আরো জানা গেছে, প্রকল্পে বিদ্যমান খালের উভয়দিকে প্রায় সাতশ’ ফুট দীর্ঘ রিটেইনিং ওয়াল দেয়া হয়েছে মাটি ভাঙ্গন রোধে। পুরো প্রকল্প জুড়ে দেয়া হচ্ছে সীমানা প্রচীর। বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে (বিপিডিবি) প্রায় এক কোটি টাকা দেয়া হয়েছে। গ্যাস লাইনের জন্য সাড়ে তিন কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে কর্ণফুলী গ্যাস এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেডকে (কেজিডিসিএল)। প্রশাসনিক ভবনে একজন কর্মকর্তার অধীনে ৮ জন কর্মচারী কাজ করবে।
এ প্রকল্পে ‘এ’ ক্লাস প্লট ৩২ হাজার বর্গফুটের ১৮টি, ‘বি’ ক্লাস ১৭ হাজার ৬০০ বর্গফুট পরিমাপের ২টি, ‘সি’ ক্লাস প্লটগুলো ১১ হাজার ২০০ বর্গফুটের ১৭টি এবং স্পেশাল ক্যাটাগরির আওতায় রয়েছে ৬ হাজার ৪২৩ বর্গফুট থেকে ১৫ হাজার ৬৪৪ বর্গফুট পরিমাপের ২৮টি প্লট। প্রকল্পে প্রবেশের জন্য ৪০ ফুট প্রশস্ত এপ্রোস সড়ক তৈরি করাসহ প্রত্যেকটি প্লটের সামনে ৩০ ফুট প্রশস্ত রাস্তা থাকবে।
শ্রীমঙ্গলে ৪৬ বোতল বিদেশি মদসহ মো. হাবিব উল্লাহ (৩২) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত বৃহস্পতিবার রাতে এসআই দেলোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে একটি টিম শ্রীমঙ্গল-হবিগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের উত্তরসুর এলাকার কৈশর হাজী মার্কেটের সামনে চেকপোস্ট পরিচালনা করে।
চেকপোস্ট পরিচালনাকালে একটি নম্বরবিহীন সিএনজি অটোরিকশা থামিয়ে তল্লাশি করা হয়। এসময় যাত্রী বসার সিটের পিছন থেকে একটি কাগজের কার্টুন ও সাদা প্লাস্টিকের বস্তায় রাখা বিভিন্ন ব্রান্ডের ৪৬ বোতল বিদেশি মদ জব্দ করা হয়।
শ্রীমঙ্গল থানার ওসি আমিনুল ইসলাম জানান, ‘গ্রেপ্তারকৃত হাবিব উল্লাহ শ্রীমঙ্গলের টিলাগাঁও (হুগলিয়া) গ্রামের আজিম মোল্লার ছেলে। তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে এবং শুক্রবার তাকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।’
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় সেনাবাহিনীর বিশেষ অভিযানে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য ও অস্ত্রসহ তিন শীর্ষ সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে উপজেলার মুড়াপাড়া ইউনিয়নের মাছিমপুর এলাকায় ওই অভিযান পরিচালনা করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হলেন, মুড়াপাড়া ইউনিয়নের মাছিমপুর এলাকার আরশু মিয়ার ছেলে রাসেল, ব্রাহ্মণগাঁও এলাকার মনির হোসেনের ছেলে রাজন মিয়া এবং শাওন মিয়া। তারা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় অস্ত্র ও মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থেকে আতঙ্ক সৃষ্টি করছিল বলে জানা গেছে।
সেনাবাহিনী জানায়, অভিযানের সময় গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে একটি পিস্তলের গুলি, একটি শর্টগানের গুলি, ৪৬০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ৪৯ বোতল ফেনসিডিল ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। এসব অস্ত্র ও মাদক স্থানীয় চক্রের মাধ্যমে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হতো।
রূপগঞ্জ থানার ওসি তরিকুল ইসলাম বলেন, সেনাবাহিনীর হাতে আটক তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক আইনে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আইনী প্রক্রিয়া শেষে তাদের আদালতে পাঠানো হবে।
জানা যায়, ওই অভিযানে স্থানীয়দের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে রাসেল, রাজন ও শাওনের কারণে মুড়াপাড়া ও আশপাশের এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে ভয়ের পরিবেশ বিরাজ করছিল। তারা নিয়মিত মাদক ব্যবসা চালাত এবং প্রতিপক্ষকে দমাতে অস্ত্র ব্যবহার করত। সেনাবাহিনীর অভিযানে তাদের গ্রেপ্তারের ফলে এলাকায় শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে বলে স্থানীয়রা আশা প্রকাশ করেছেন।
প্রশাসন জানিয়েছে, রূপগঞ্জে সকল জায়গা জুড়ে মাদক ও অস্ত্র ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
মন্তব্য