× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

আন্তর্জাতিক
India has a strong message to the United States regarding human rights
google_news print-icon

মানবাধিকার প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রকে কড়া বার্তা ভারতের

মানবাধিকার-প্রসঙ্গে-যুক্তরাষ্ট্রকে-কড়া-বার্তা-ভারতের
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন। ছবি: এএফপি
দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষায় দায়িত্বে নিয়োজিত যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী সচিব ডিন থম্পসন সাংবাদিকদের জানান, ভারত সফরে গিয়ে ব্লিংকেন মানবাধিকার নিয়ে কথা বলবেন। এরপরই ভারত সরকারের পক্ষ থেকে পাল্টা জবাব দেয়া হয়।

মঙ্গলবার দুই দিনের ভারত সফরে আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন। এর আগে মানবাধিকার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশ্নের কড়া জবাব দিল ভারত।

দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘ভারত গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও মানবাধিকার রক্ষার সাফল্যে গর্বিত এবং যারা বৈচিত্রকে স্বীকৃতি দেয় তাদের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যেতে পথ খোলা রাখা হয়েছে।’

বিতর্কের সূত্রপাত শুক্রবার। দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষায় দায়িত্বে নিয়োজিত যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী সচিব ডিন থম্পসন সাংবাদিকদের জানান, ভারত সফরে গিয়ে ব্লিংকেন মানবাধিকার নিয়ে কথা বলবেন। এরপরই ভারত সরকারের পক্ষ থেকে পাল্টা জবাব দেয়া হয়।

বলা হয়, ‘মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের অধিকারের মতো বিষয়গুলো কোনো একটি নির্দিষ্ট দেশে আবদ্ধ নয়, গোটা বিশ্বজুড়েই এর ব্যাপ্তি ও প্রভাব রয়েছে। জাতীয় বা সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গির বাইরেও এর বিস্তার রয়েছে। ভারত এই দুটি ক্ষেত্রেই নিজেদের সাফল্য নিয়ে গর্বিত এবং বরাবরই সেই অভিজ্ঞতা বিনিময় করে এসেছে।’

জবাবে থম্পসনও কিছুটা দমে গিয়ে বলেন, ‘মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই জানাচ্ছি যে আপনারা সঠিক। আমরা এই বিষয়ে কথা বলব, কারণ আমাদের বিশ্বাস দুই দেশের মধ্যেই মূল্যবোধের দিক থেকে অনেক বেশি মিল রয়েছে। আমাদের বিশ্বাস ভারত এই আলোচনায় অত্যন্ত অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে এবং এই দুটি ক্ষেত্রে মিলিতভাবে এগিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে সম্মতি জানাবে।’

মঙ্গলবার ভারত সফরে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে দেখা করবেন অ্যান্টনি ব্লিংকেন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রী হিসেবে এটিই তার প্রথম ভারত সফর হবে।

সরকারের একটি সূত্র জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভারত সফরে বিভিন্ন বৈঠকের আলোচনায় বিশেষ গুরুত্ব পাবে আফগানিস্তান ইস্যু।

সূত্রটির ভাষ্য অনুযায়ী, আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহারের ফলে নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি, সন্ত্রাসীদের অর্থায়ন এবং আশ্রয় কেন্দ্রগুলো নিয়ে পাকিস্তানের ওপর চাপ দেয়ার প্রয়োজনের বিষয় এজেন্ডায় থাকবে। ভারতের পক্ষ থেকে বিশ্ব রাজনীতি ও সাংস্কৃতিক সমন্বয় বজায় রাখা নিয়ে আলোচনার প্রসঙ্গ তুলে ধরা হবে। এছাড়াও জাতিসংঘে একসঙ্গে কাজ করা নিয়েও আলোচনা হতে পারে।

আরও পড়ুন:
ভূমি ধসে প্রাণ গেল ৯ পর্যটকের
মৃত্যুর কিছুক্ষণ আগে
পেগাসাস: মোদিকে আক্রমণ বিশ্ব হিন্দু পরিষদ নেতার
পেগাসাস স্পাইওয়্যার: ‘মোদি রাষ্ট্রদ্রোহী’, শাহর ইস্তফা দাবি রাহুলের
সংসদ অধিবেশন থেকে বরখাস্ত তৃণমূলের শান্তনু

মন্তব্য

আরও পড়ুন

আন্তর্জাতিক
Zionist enemies have to be punished by big crime Khamene

ইহুদিবাদী শত্রু বড় অপরাধ করেছে, শাস্তি পেতে হবে: খামেনি

ইহুদিবাদী শত্রু বড় অপরাধ করেছে, শাস্তি পেতে হবে: খামেনি আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে শাস্তি অব্যাহত থাকবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। যুক্তরাষ্ট্র ইরানে হামলা চালানোর পর সামাজিক মাধ্যমে তিনি প্রথম এসব নিয়ে কথা বলেছেন।

সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে খামেনি বলেন, ইহুদিবাদী শত্রু একটি বড় ভুল করেছে, একটি বড় অপরাধ করেছে, তাকে শাস্তি দিতে হবে এবং তাকে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে; এখনই তাকে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে ইরানের মধ্যাঞ্চলে একটি অ্যাম্বুলেন্সে ইসরায়েলের ড্রোন হামলায় কমপক্ষে তিনজন নিহত হয়েছে। ইরানের বার্তা সংস্থা ইসনা নিউজের বরাত দিয়ে আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ইস্পাহান প্রদেশের নাজাফাবাদ কাউন্টির গভর্নর হামিদরেজা মোহাম্মদি ফেশারাকির বরাত দিয়ে ইসনার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অ্যাম্বুলেন্সে একজন রোগীকে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তর করা হচ্ছিল। সে সময় সেখানে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।

ফেশারাকির বলেন, অ্যাম্বুলেন্সে থাকা চালক, রোগী ও রোগীর সঙ্গে থাকা এক স্বজন নিহত হয়েছেন। তিনি আরো জানিয়েছেন যে, ড্রোনের আঘাতে অ্যাম্বুলেন্সটি পথ থেকে সরে যায় এবং পাশ দিয়ে যাওয়া একটি গাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষ হয়।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
The United States calls to interfere with Irans warning to stop the Hormuz system

হরমুজ প্রণালি বন্ধের হুঁশিয়ারি ইরানের, চীনকে হস্তক্ষেপের আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের

হরমুজ প্রণালি বন্ধের হুঁশিয়ারি ইরানের, চীনকে হস্তক্ষেপের আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের

যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নৌরুট হরমুজ প্রণালি বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরান। এর পরপরই প্রণালিটি খোলা রাখতে চীনকে হস্তক্ষেপ করার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম প্রেস টিভি জানিয়েছে, দেশটির পার্লামেন্ট হরমুজ প্রণালি বন্ধ করে দেওয়ার একটি পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে ইরানের সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও রোববার ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমি চীন সরকারকে বলব তারা যেন ইরানকে এই পদক্ষেপ থেকে বিরত রাখে। কারণ চীন তাদের তেলের জন্য হরমুজ প্রণালির ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল।’

তিনি আরও বলেন, ‘যদি ইরান প্রণালিটি বন্ধ করে, তবে এটি হবে তাদের জন্য অর্থনৈতিক আত্মহত্যা। পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের হাতে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে, তবে অন্য দেশগুলোরও বিষয়টি নিয়ে ভাবা উচিত। কারণ এতে আমাদের চেয়ে অন্য দেশের অর্থনীতি অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’

হরমুজ প্রণালি বিশ্বজুড়ে জ্বালানি সরবরাহের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রুট। বিশ্বের মোট তেলের প্রায় ২০ শতাংশ এই পথ দিয়ে পরিবাহিত হয়। মধ্যপ্রাচ্যের প্রধান তেল ও গ্যাস উৎপাদনকারী দেশগুলো এই জলপথ ব্যবহার করেই বিশ্ববাজারে জ্বালানি সরবরাহ করে। ফলে এই পথে জাহাজ চলাচল ব্যাহত হলে বিশ্বব্যাপী তেলের দাম আকাশচুম্বী হতে পারে।

এরই মধ্যে ইরানের হুমকির পর তেলের দাম বাড়তে শুরু করেছে বিশ্ববাজারে। সোমবার অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৮১ দশমিক ৪০ ডলারে পৌঁছায়, যা গত পাঁচ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। যদিও পরে তা কিছুটা কমে ৭৮ ডলারে স্থির হয়। এমএসটি ফিন্যান্সিয়ালের জ্বালানি গবেষণা প্রধান সল কাভোনিক বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র এই অঞ্চলে যেকোনো পাল্টা হামলা মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত। কিন্তু ঝুঁকি হলো, পরিস্থিতি আরও মারাত্মক রূপ নিলে তেলের দামও দ্রুত বাড়তে পারে।’

অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়লে তার প্রভাব পড়ে গাড়ির জ্বালানি থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামের ওপর। চীন বিশ্বের অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে ইরান থেকে বেশি তেল কেনে। জাহাজ ট্র্যাকিং সংস্থা ভর্টেক্সার তথ্য অনুযায়ী, গত মাসে ইরান থেকে চীনের তেল আমদানি দৈনিক ১.৮ মিলিয়ন ব্যারেল ছাড়িয়েছে। এছাড়া ভারত, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো এশিয়ার অন্যান্য বড় অর্থনীতির দেশগুলোও হরমুজ প্রণালির ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল।

এদিকে, ইরানে মার্কিন হামলার বিষয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে চীন। সোমবার বেইজিং বলেছে, মার্কিন হামলা ওয়াশিংটনের বিশ্বাসযোগ্যতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। জাতিসংঘে চীনের রাষ্ট্রদূত ফু কং সব পক্ষকে ‘শক্তি প্রয়োগ’ থেকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদপত্র গ্লোবাল টাইমস বলেছে, মার্কিন হস্তক্ষেপ মধ্যপ্রাচ্যকে আরও অস্থিতিশীল করে তুলেছে এবং সংঘাতকে ‘নিয়ন্ত্রণহীন’ দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

জ্বালানি বিশ্লেষক বন্দনা হরি বিবিসিকে বলেন, প্রণালিটি বন্ধ করে দিলে ইরানের ‘লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হবে’। কারণ এর মাধ্যমে ইরান কেবল উপসাগরীয় প্রতিবেশী দেশগুলোকেই শত্রু বানাবে না, বরং তাদের তেলের প্রধান বাজার চীনকেও ক্ষুব্ধ করবে।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
The US attacks in Iran are saying that different countries in the world are saying

ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যা বলছে

ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যা বলছে

ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার ঘটনায় বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশের মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। কিছু দেশ যুক্তরাষ্ট্রের এই হামলার নিন্দা জানালেও অনেকেই আবার মার্কিন এই হামলার প্রশংসা করছে। তবে জাতিসংঘও এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে। সংস্থাটির মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস বলেছেন, একমাত্র সমাধান হলো শান্তি।

এই কথাগুলোর মাধ্যমে গুতেরেস ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছেন। মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত প্রশমনের আহ্বান জানিয়ে এই কূটনীতিক সতর্ক করেছেন যে, যদি এটি ‘নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়’ তবে তা মানবজাতির জন্য ‘বিপর্যয়কর’ পরিণতি ডেকে আনতে পারে।

গত রোববার ভোরে, ইরানের ফরদো, নাতাঞ্জ এবং ইস্পাহানের পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্ত হলো। গত ১৩ জুন থেকে ইসরায়েল তেহরানে হামলা চালিয়ে আসছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু দাবি করেছেন, এই আক্রমণের উদ্দেশ্য হলো ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংস করা।

ইসরায়েল দাবি করেছে, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করলে তা তাদের রাষ্ট্র হিসেবে অস্তিত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। ইরানের হামলার জবাবে ইরানও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে, যা ইসরায়েলের বিভিন্ন অঞ্চলে আঘাত হেনেছে। এর মধ্যে বিভিন্ন সামরিক ও বেসামরিক লক্ষ্যবস্তু রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের হামলা এমন এক সময়ে এসেছে, যার মাত্র দুই দিন আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন যে তিনি ইসরায়েলের এই আক্রমণে সমর্থন দেবেন কি না, সে সিদ্ধান্ত তিনি দুই সপ্তাহের মধ্যে নেবেন।

এদিকে ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর জাতিসংঘের মহাসচিব বলেন, আজ যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইরানের বিরুদ্ধে বলপ্রয়োগে আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এটি এমন একটি অঞ্চলে বিপজ্জনক মাত্রার উত্তেজনা বৃদ্ধি, যা এরইমধ্যে সঙ্কটের কিনারায় রয়েছে এবং এটি আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য সরাসরি হুমকি।

তিনি আরও বলেন, আমি সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি যেন তারা উত্তেজনা প্রশমিত করে এবং জাতিসংঘ সনদ ও আন্তর্জাতিক আইনের অন্যান্য বিধান অনুযায়ী তাদের দায়িত্ব পালন করে।

সামরিক অভিযানের পর টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে ট্রাম্প এই হামলাগুলোকে ‘চমৎকার সাফল্য’ হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, এতে তিনটি পারমাণবিক স্থাপনার ‘সম্পূর্ণ ও চূড়ান্ত ধ্বংস’ ঘটেছে।

অন্যদিকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি এই ঘটনাগুলোর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, এটি জাতিসংঘ সনদ, আন্তর্জাতিক আইন এবং পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তির একটি ‘গভীর লঙ্ঘন’। তিনি লিখেছেন, আজ যা ঘটেছে তা নিন্দনীয় এবং এর দীর্ঘস্থায়ী পরিণতি বয়ে আনবে। আরাঘচি আরও বলেন, ইরান তার সার্বভৌমত্ব, স্বার্থ এবং জনগণকে রক্ষার জন্য সব ধরনের উপায় অবলম্বন করবে। ইরানের রেভ্যলুশনারি গার্ডস বাহিনী ঘোষণা দিয়েছে, ওয়াশিংটনকে তারা এমনভাবে জবাব দেবে, যাতে তারা অনুশোচনা করতে বাধ্য হয়।

বিভক্ত বিশ্ব

যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। সৌদি আরব ইরানের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছে। অন্যদিকে, ওমান এই হামলার নিন্দা জানিয়ে উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানিয়েছে।

ইরান ঘিরে উত্তেজনা বৃদ্ধির নিন্দা জানিয়েছে মিসর। দেশটি বলেছে, জাতিসংঘ সনদ ও আন্তর্জাতিক আইনের যেকোনো লঙ্ঘনের নিন্দা জানায় মিশর। বিশেষ করে যেকোনো রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব রক্ষার ওপর দেশটি জোর দিয়েছে। ওই অঞ্চলে সংঘাত ও উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে বলে দেশটি সতর্ক করে দিয়েছে।

এদিকে কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, ‘বর্তমান বিপজ্জনক উত্তেজনা আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিকভাবে বিপর্যয়কর পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যেতে পারে।’ সব দেশ বিবেচনা ও ধৈর্যের প্রদর্শন করবে বলে আশা প্রকাশ করেছে দেশটি।

ইরাকও ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছে, শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচিকে লক্ষ্যবস্তু করার মাধ্যমে বিপজ্জনকভাবে উত্তেজনা বৃদ্ধি ও আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি তৈরি হচ্ছে। উত্তেজনা প্রশমনে দ্রুত কূটনৈতিক আলোচনার ওপর গুরুত্ব দিয়েছে ইরাক।

লেবাননের প্রধানমন্ত্রী জোসেফ আউন বলেছেন, ‘ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা হামলা উত্তেজনা আরো বাড়িয়ে দিতে পারে, যার ফলে আঞ্চলিক ও একাধিক দেশের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে।’

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলায় জোরালো নিন্দা জানিয়েছে চীন ও রাশিয়া। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, আন্তর্জাতিক আণবিক সংস্থার নজরদারিতে থাকা ওই স্থাপনাগুলোয় হামলায় তারা জোর নিন্দা জানাচ্ছে, যা জাতিসংঘ সনদের লঙ্ঘন। এই ঘটনা মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা আরো বাড়িয়ে দেবে এমনটা জানিয়ে সব পক্ষকে হামলা বন্ধ করা ও দ্রুত আলোচনায় ফেরার জন্য তাগিদ দিয়েছে চীন।

অন্যদিকে মার্কিন হামলার জোর সমালোচনা করেছে রাশিয়া। দেশটি বলছে, কোনো ন্যায্যতা ছাড়া একটি সার্বভৌম দেশের ওপর এই হামলা একটি ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন সিদ্ধান্ত, যা জাতিসংঘ সনদ, আন্তর্জাতিক আইন ও নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবনার লঙ্ঘন। সকল ধরনের আগ্রাসন বন্ধের দাবি জানিয়েছে রাশিয়া। সেই সঙ্গে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক আলোচনার পরিবেশ সৃষ্টির জন্য আহ্বান জানিয়েছে।

এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতির প্রধান কায়া কাল্লাস বলেন, ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে দেওয়া যাবে না, কারণ এটি আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি হবে। তিনি আরও বলেন, সব পক্ষকে সংযত হওয়া, আলোচনার টেবিলে ফিরে আসা এবং ভবিষ্যৎ উত্তেজনা এড়ানো উচিত।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার মন্তব্য করেছেন যে, ট্রাম্প প্রশাসন এমন পদক্ষেপ নিয়েছে যা ইরানকে পারমাণবিক শক্তিতে পরিণত হওয়ার হুমকি ‘হ্রাস’ করতে সহায়ক হবে। তিনি বলেন, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্য একটি গুরুতর হুমকি। ইরানকে কখনোই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে দেওয়া হবে না। তিনি আরও বলেন, আমরা ইরানকে আলোচনার টেবিলে ফিরে আসার এবং এই সংকটের কূটনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করার আহ্বান জানাই।

লাতিন আমেরিকায় চিলি, বলিভিয়া, ভেনেজুয়েলা এবং কিউবার রাষ্ট্রপ্রধানরা যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছেন।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Anti war protests in the United States after the invasion of Iran

ইরানে হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রে যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ

ইরানে হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রে যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ ইরানে বিমান হামলার বিরুদ্ধে রোববার যুক্তরাষ্ট্রে যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ। ছবি: সংগৃহীত

ইরানে বিমান হামলার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে। দ্য নিউইয়র্ক টাইমস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, রোববার আমেরিকান নাগরিকরা শহরগুলোতে ইরানে ট্রাম্প প্রশাসনের বিমান হামলার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, নিউইয়র্ক, রিচমন্ড, বোস্টন, শিকাগো, ওয়াশিংটন এবং লস অ্যাঞ্জেলেসে এসব যুদ্ধবিরোধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

প্রতিবাদ সমাবেশ চলাকালীন বিক্ষোভকারীদের ইরানের পতাকা হাতে দেখা যায়। সেই সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে তারা পোস্টার প্রদর্শন করেন। এর আগে রোববার ভোরে যুক্তরাষ্ট্র বি-২ স্টেলথ বোমারু বিমান দিয়ে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় আক্রমণ চালায়।

হামলার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেন, মার্কিন বিমানবাহিনী ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় ‘সফল আক্রমণ’ চালিয়েছে।

এরপর এই হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন দেশ। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিক বিবৃতিতে পারমাণবিক স্থাপনায় হামলাকে আন্তর্জাতিক আইনের ‘গুরুতর ও নজিরবিহীন লঙ্ঘন’ বলে বর্ণনা করে। পাশাপাশি এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পূর্ণ অধিকার রয়েছে বলে জানায়। এর আগে গত শনিবার রাতে ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে মার্কিন বি-২ বোমারু বিমান। হামলার পর ট্রুথ সোশ্যালে এক বার্তায় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প লেখেন, আমরা ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনা- ফোরদো, নাতানজ এবং ইসফাহানে আমাদের অত্যন্ত সফল হামলা সম্পন্ন করেছি। সব বিমান এখন ইরানের আকাশসীমার বাইরে রয়েছে।

এসব লক্ষ্যবস্তু ছিল অত্যন্ত নিরাপদ ও কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ, তাই সেগুলোর ওপর হামলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলেও তিনি জানান ।

এদিকে ইরান-ইসরাইল চলমান যুদ্ধের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিশোধের হুমকি দিয়েছে তেহরান। সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র ইব্রাহিম জোলফাগারি বলেন, ‘এই শত্রুতাপূর্ণ হামলা ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের সশস্ত্র বাহিনীকে লক্ষ্যবস্তুর পরিধি আরো বিস্তৃত করবে এবং এই অঞ্চলে যুদ্ধের প্রসারের পথকে আরো প্রশস্ত করবে’।

তিনি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলেন, ইসলামের যোদ্ধারা লক্ষ্যবস্তুতে শক্তিশালী (সামরিক) অভিযানের মাধ্যমে আপনাদের ওপর গুরুতর ও অপ্রত্যাশিত পরিণতি ডেকে আনবে।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
What do the world leaders say about US attacks in Iran

ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা নিয়ে বিশ্বনেতারা কী বলছেন

ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা নিয়ে বিশ্বনেতারা কী বলছেন বাঁ থেকে সি চিনপিং, নরেন্দ্র মোদি, পুতিন এবং এরদোয়ান। ছবি: সংগৃহীত

গত শনিবার মধ্যরাতের পর ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর মধ্য দিয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে মধ্যপ্রাচ্যের এ সংঘাতে সরাসরি জড়িয়ে ফেললেন। ট্রাম্পের এ পদক্ষেপে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে সংঘাত আরও বিপজ্জনক রূপ নেওয়ার ঝুঁকি বেড়েছে। বিশ্বনেতা ও কূটনীতিকদের কেউ কেউ এর নিন্দা জানিয়েছেন। অন্যরা উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতিসংঘ: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, তিনি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। তিনি এ হামলাকে উত্তেজনাপূর্ণ একটি অঞ্চলে বিপজ্জনক মাত্রায় উত্তেজনা বৃদ্ধির ঘটনা হিসেবে বর্ণনা করেছেন। একে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য সরাসরি হুমকি বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।

ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেশটির আলোচনায় মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করছিল ওমান। ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলাকে অবৈধ আগ্রাসন বলে উল্লেখ করে এ কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছে দেশটি। সেই সঙ্গে উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানিয়েছে তারা।

গুতেরেস সতর্ক করে বলেন, ‘এই সংঘাত দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে; যা বেসামরিক মানুষ, এতদঞ্চল ও সারা বিশ্বের জন্যই ভয়ানক পরিণতি ঢেকে আনতে পারে।’

যুক্তরাজ্য: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেন, ‘ইরানকে কখনোই পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করতে দেওয়া যাবে না। যুক্তরাষ্ট্র সেই হুমকি কমাতে পদক্ষেপ নিয়েছে।’ তিনি ইরানকে আলোচনার টেবিলে ফেরার ও এ সংকটের একটি কূটনৈতিক সমাধানে পৌঁছার আহ্বান জানান।

অস্ট্রেলিয়া: অস্ট্রেলিয়া সরকারের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা পরিষ্কারভাবে বলেছি, ইরানের পারমাণবিক ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য একটি হুমকি।’

নিউজিল্যান্ড: নিউজিল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইনস্টন পিটার্স কূটনৈতিক প্রক্রিয়ার সংকট সমাধানের আহ্বান জানিয়ে এক বিবৃতিতে বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে চলমান সামরিক কর্মকাণ্ড অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এ উত্তেজনা যাতে আর না বাড়ে, তা নিশ্চিত করা খুব গুরুত্বপূর্ণ।’

মধ্যপ্রাচ্যে চলমান সামরিক কর্মকাণ্ড অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এ উত্তেজনা যাতে আর না বাড়ে, তা নিশ্চিত করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

মেক্সিকো: মেক্সিকোর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংঘাতে জড়িত পক্ষগুলোর প্রতি কূটনৈতিক সংলাপ শুরু করা ও শান্তি প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছে।

চিলি: প্রেসিডেন্ট গাব্রিয়েল বোরিক বলেন, আন্তর্জাতিক আইনে এ হামলা অবৈধ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি লেখেন, ‘আমরা শান্তি চাই এবং শান্তি প্রয়োজন।’

ভেনিজুয়েলা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইভান গিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে এক পোস্টে ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের হামলাকে অবৈধ, অযৌক্তিক ও ভীষণ বিপজ্জনক আগ্রাসন বলে বর্ণনা করেছেন।

সৌদি আরব: বিবিসি জানায়, সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, রিয়াদ গভীর উদ্বেগের সঙ্গে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানে চলমান পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে, বিশেষ করে দেশটির পারমাণবিক স্থাপনাগুলো লক্ষ্য করে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার বিষয়টি।

বিবৃতিতে উত্তেজনা কমাতে সংযম প্রদর্শন এবং সংঘাত এড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপরও গুরুত্ব আরোপ করা হয়। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি এ সংকটের একটি রাজনৈতিক সমাধানে পৌঁছার প্রচেষ্টা জোরদার করার আহ্বানও জানিয়েছে সৌদি আরব।

ওমান: আল–জাজিরা জানায়, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেশটির আলোচনায় মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করছিল ওমান। ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলাকে অবৈধ আগ্রাসন বলে উল্লেখ করে এ কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছে দেশটি। ওমান তাৎক্ষণিকভাবে ও সর্বাত্মক উত্তেজনা প্রশমনেরও আহ্বান জানিয়েছে।

ওমান নিউজ এজেন্সিকে ওমানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেন, দেশটি এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে এবং সতর্ক করে বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ সংঘাত আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। এটি আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘ সনদেরও স্পষ্ট লঙ্ঘন।

কাতার: যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর এ অঞ্চলে যে বিপজ্জনক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে, তা আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভয়ানক পরিণতি ডেকে আনতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছে কাতার।

ইরাক: ইরাক প্রতিবেশী ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এ পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছে। এ হামলায় যে সামরিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে, তা আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি সৃষ্টি করেছে বলেও উল্লেখ করেছে দেশটি।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
22 killed in a suicide attack in church in Syria

সিরিয়ায় গির্জায় আত্মঘাতীর হামলায় নিহত ২২

সিরিয়ায় গির্জায় আত্মঘাতীর হামলায় নিহত ২২

সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের একটি গ্রিক অর্থোডক্স গির্জায় ঢুকে প্রার্থনাকারীদের ওপর গুলি চালান এক বন্দুকধারী। পরে তার নিজের শরীরে বাঁধা বিস্ফোরকের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আত্মঘাতী হন। এ ঘটনায় অন্তত ২২ জন নিহত এবং ৬৩ জন আহত হয়েছেন।

স্থানীয় সময় রবিবার (২২ জুন) দামেস্কের মার এলিয়াস গির্জায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে সিরিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া, রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সানার এক প্রতিবেদনে হতাহতের সংখ্যা জানানো হয়েছে।

এদিকে, ব্রিটেনভিত্তিক যুদ্ধ পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, হামলায় অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছেন এবং আরও অনেক আহত হয়েছেন। তবে আহতদের কোনো নির্দিষ্ট সংখ্যা জানায়নি তারা।

কিছু স্থানীয় গণমাধ্যমের তথ্যমতে, হতাহতদের মধ্যে শিশুও রয়েছে।

বহু বছর পর সিরিয়ায় গির্জায় এই ধরনের হামলা হলো। এমন এক সময়ে এ হামলা ঘটনা হলো যখন দেশটি ইসলামপন্থীদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং তারা সেখানকার সংখ্যালঘুদের সমর্থন অর্জনের চেষ্টা করছেন।

এই প্রেক্ষাপটে মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটিতে আবারও উগ্রবাদী গোষ্ঠীগুলোর মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

কোনো গোষ্ঠী তাৎক্ষণিকভাবে এই হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে সিরিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নূরুদ্দিন আল-বাবা এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে, এই হামলার পেছনে উগ্রবাদী ইসলামিক স্টেট (আইএস) জড়িত থাকতে পারে।

তিনি বলেন, ‘এক বন্দুকধারী গির্জায় ঢুকে প্রার্থনারতদের লক্ষ্য করে গুলি চালায় এবং পরে শরীরের বাঁধা বিস্ফোরকের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিজেই নিজেকে উড়িয়ে দেন।’

এই মুখপাত্রের দাবি, উপাসনালয়গুলোর নিরাপত্তা তাদের জন্য একটি রেড লাইন। তবে আইএস ও উৎখাত হওয়া আসাদ সরকারের অবশিষ্ট সদস্যরা সিরিয়াকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন।

সিরিয়ার তথ্যমন্ত্রী হামজা মোস্তাফা এটিকে সন্ত্রাসী হামলা আখ্যা দিয়ে নিন্দা জানিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে তিনি লিখেছেন, ‘এই কাপুরুষোচিত কাজ আমাদের নাগরিক মূল্যবোধের পরিপন্থী, যা আমাদের একসূত্রে বেঁধে রাখে। আমরা সমান নাগরিকত্বের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং রাষ্ট্র সব অপরাধী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াই করে সমাজের রক্ষায় সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাব।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মুখ ঢাকা এক বন্দুকধারী গির্জায় ঢুকে গুলি চালান। তখন উপস্থিত জনতা তাকে থামাতে ধাক্কা দিলে তিনি গির্জার প্রবেশপথে বিস্ফোরণ ঘটান।

ঘটনার পর ওই দিন সন্ধ্যায় সিরিয়ার সমাজকল্যাণ ও শ্রমমন্ত্রী হিন্দ কাবাওয়াত গির্জায় গিয়ে ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে দেখা করে শোক প্রকাশ করেন।

গির্জার ফাদার ফাদি ঘাট্টাস বলেন, ‘সবাই তখন ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করছিল। আমি নিজ চোখে অন্তত ২০ জনের লাশ দেখেছি। গির্জায় তখন ৩৫০ জন প্রার্থনারত ছিল।’

তবে আরেক যাজক, মেলেটিয়াস শাহাতি বলেন, ‘হামলাকারী একজন ছিলেন না, দ্বিতীয় আরেক বন্দুকধারীও গির্জার দরজার দিকে গুলি ছুঁড়েছিলেন, এরপর প্রথম হামলাকারী বিস্ফোরণ ঘটান।’

ঘটনার পর হতাহতদের সহায়তায় সিরিয়ার নিরাপত্তা বাহিনী ও উদ্ধারকারী দল দ্রুত গির্জায় ছুটে যায়।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Talking about two weeks two days after the attack was Trumps tactics

দুই সপ্তাহের কথা বলে দুদিনের মাথায় হামলা চালানো ছিল ট্রাম্পের ‘রণকৌশল’

দুই সপ্তাহের কথা বলে দুদিনের মাথায় হামলা চালানো ছিল ট্রাম্পের ‘রণকৌশল’

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর আবার নিজের অস্থিতিশীল আচরণের জন্য আলোচনায় এসেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইরানে হামলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে দুই সপ্তাহ সময় নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু দুদিন না যেতেই তেহরানে হামলা চালিয়ে বসেন ট্রাম্প। মূলত হামলার পরিকল্পনা গোপন রাখতেই ওই তিনি ওই ঘোষণা দিয়েছিলেন বলে স্বীকার করেছেন।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানে সামরিক অভিযানের ব্যাপারে কয়েকদিন ধরেই দৃঢ়ভাবে আগ্রহী ছিলেন ট্রাম্প। হামলার বিষয়ে তার প্রকৃত চিন্তাভাবনা গোপন রাখতেই তিনি তার জ্যেষ্ঠ সহকারীদের একটি নির্দেশ দেন— প্রেসকে জানিয়ে দেওয়া হোক, দুই সপ্তাহের মধ্যে অভিযান চালানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন ট্রাম্প!

তার মানে দাঁড়ায়, দুই সপ্তাহের ঘোষণা দিয়ে দুদিনের মাথায় হামলা চালানো কোনো অস্থিতিশীল আচরণ নয়, বরং এটি ট্রাম্পের সুপরিকল্পিত রণকৌশল।

সূত্রের বরাত দিয়ে সিএনএন বলছে, ইতোমধ্যেই ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন— কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে এমন খবর প্রকাশ হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছিলেন ট্রাম্প। এ কারণে দুই সপ্তাহের সময়সীমার ঘোষণা দেন তিনি।

ইরানিদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি এবং তার পরিকল্পনা গোপন রাখার অভিপ্রায়েই এই কৌশল অবলম্বন করেন ট্রাম্প।

গত বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) ইসরায়েল ও ইরানের সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের জড়ানোর ব্যাপারে দুই সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছিলেন ট্রাম্প।

ট্রাম্পের ভাষ্যে, ওই দিন তিনি তার সাবেক উপদেষ্টা স্টিভ ব্যাননের সঙ্গে দুপুরের খাবারের জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলেন। ব্যানন প্রকাশ্যে যুক্তরাষ্ট্রের জড়িত থাকার বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন।

এরপরই তার প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট হোয়াইট হাউস ব্রিফিং রুমে গিয়ে প্রেসিডেন্টের নির্দেশ অনুসারে ওই দুই সপ্তাহের সময়সীমার ঘোষণা দেন।

যদিও হামলার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এসেছিল শনিবার (২১ জুন), তবে ট্রাম্পের আশপাশের মানুষের বিশ্বাস, ইরানে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে প্রেসিডেন্টের মন অনেক আগেই স্থির হয়ে গিয়েছিল।

সূত্র আরও জানায়, ট্রাম্পকে আগেই হামলার পরিকল্পনা সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছিল এবং তিনি প্রতিদিনই জ্যেষ্ঠ জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সঙ্গে সরাসরি বৈঠক করছিলেন। এর পাশাপাশি দিনে একাধিকবার ফোনালাপও চলছিল বলে বিশ্বাস তার আশেপাশের লোকেদের।

এরপর, রবিবার (২২ জুন) ভোরে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, ‘আমরা ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় অত্যন্ত সফলভাবে হামলা পরিচালনা করেছি, যার মধ্যে রয়েছে ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইসফাহান।’

মন্তব্য

p
উপরে