ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তা থেকে টারনেট শহরে বিমানে যাবেন এক ব্যক্তি। কিন্তু করোনা পরীক্ষার ফল পজিটিভ আসায় বিমান চলাচলে তার অনুমতি নেই।
কিন্তু টারনেটে নিজের বাড়িতে তাকে ফিরতেই হবে। উপায়ান্তর না দেখে স্ত্রীর আইডি ও করোনার নেগেটিভ পরীক্ষার ফল নিয়ে হিজাব গায়ে তিনি হাজির হন জাকার্তার হালিম পেরদানা কুসুমা বিমানবন্দরে।
ইন্দোনেশিয়ার অভ্যন্তরীণ সিটিলিঙ্ক ফ্লাইটে ওঠার পর বাথরুমে যান ওই ব্যক্তি। হিজাব খুলে ফেলে পুরুষদের পোশাকে বাথরুম থেকে বের হন তিনি।
আর তখনই তার ছল ধরতে পারেন ফ্লাইটটির এক নারী অ্যাটেনডেন্ট। বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গেই টারনেট শহরের বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে জানান ওই নারী।
টারনেট শহরে বিমানটি অবতরণের পরপরই কৌশলের আশ্রয় নেয়া ব্যক্তিটিকে আটক করে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
টারনেট বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা ওই ব্যক্তির কোভিড পরীক্ষা করেন। পরীক্ষার ফল যথারীতি পজিটিভই আসে।
সিএনএন বলছে, ইন্দোনেশিয়া কর্তৃপক্ষ নামের আদ্যক্ষর অনুযায়ী ওই ব্যক্তির নাম ‘ডিডব্লিউ’ জানায়।
টারনেট কোভিড-১৯ টাস্কফোর্স দলের প্রধান মোহাম্মদ আরিফ গনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘ওই ব্যক্তিকে বিমানবন্দর থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে তার বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। সেখানে তিনি আইসোলেশনে থাকবেন।
‘আইসোলেশনের নিয়মকানুন তিনি মানছেন কি না, তা তদারকিতে টাস্কফোর্স কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।’
আইসোলেশনের সময় পার হলে স্থানীয় পুলিশ তার বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে বলে জানা গেছে।
করোনার প্রাদুর্ভাব ব্যাপকভাবে দেখা দিয়েছে ইন্দোনেশিয়াজুড়ে।
বিশ্বের চতুর্থ সর্বোচ্চ জনসংখ্যার দেশ ইন্দোনেশিয়া সম্প্রতি করোনার অতি সংক্রামক ডেল্টা ধরনের কারণে এশিয়ায় রোগটির হটস্পটে পরিণত হয়েছে।
মহামারি শুরুর পর ইন্দোনেশিয়ায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৩০ লাখ মানুষের দেহে করোনা শনাক্ত হয়। আর এতে মৃত্যু হয় ৭৪ হাজার ৯২০ জনের।
আরও পড়ুন:চার লাখ টাকা দাদন নিয়ে নতুন ট্রলার আর জাল দিয়ে সাগরে ইলিশ ধরায় ব্যস্ত ছিলেন মো. জাকির হাওলাদার। আগামী জুন-জুলাইয়ের মধ্যে ইলিশের বিনিময়ে দাদন পরিশোধ করার পরিকল্পনা ছিল তার। এজন্য দিন-রাত পরিশ্রমও করছিলেন তিনি। কিন্তু আশানুরূপ ইলিশ পাওয়া যায়নি এবার। এর মধ্যেই শুরু হয়ে গেছে আবার সাগরে মাছ ধরায় ৬৫ দিনের অবরোধ।
অবরোধের জন্য এখন মহা দুশ্চিন্তায় জাকির। পটুয়াখালীর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রাঙ্গাবালী উপজেলার ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের মৃত সামু হাওলাদারের ছেলে তিনি।
কোনো প্রশ্ন করার আগেই ৫০ বছরের জাকির বলে উঠলেন, ‘তুফানের বারী খাই আমরা আর চাউল পায় আইরারা।’
অর্থাৎ ট্রলার চালাতে গিয়ে প্রতিনিয়ত সাগরের ঢেউয়ের ঝাপটা সামলাতে হিমশিম খেতে হয় জেলেদের। অথচ অবরোধের সময় সরকারি খাদ্য সহায়তা থেকে বঞ্চিত হন তারা।
জাকির হাওলাদার বলেন, ‘কি কমু কন। টাহার চিন্তায় রাইতে ঘুমাইতে পারি না। পাঁচজনের সংসার। মরণ ছাড়া উপায় নাই। গত কয়েকদিন কিছু ইলিশ পাইছি, হয়তো কয়দিন পরে বৃষ্টি হইলে আরও অনেক পাইতাম। কিন্তু এহন দিলো অবরোধ। সরকারি নিষেধাজ্ঞা মানলেও জ্বালা, না মানলেও জ্বালা।’
জাকির মনে করেন, মাছ ধরায় সাগরে ঘন ঘন নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং প্রকৃত জেলেরা সরকারি সহযোগিতা না পেলে অনেকেই এই পেশাটি ছেড়ে দিতে বাধ্য হবেন।
সম্প্রতি রাঙ্গাবালী উপজেলার কোড়ালিয়া খেয়াঘাট এলাকায় খালের পাড়ে তুলে রাখা ট্রলারের পাশে দাঁড়িয়ে কথা হয় জাকিরের সঙ্গে। এ সময় তার মতো আরও বেশ কয়েকজন জেলে নিজেদের হতাশার কথা জানান।
রাঙ্গাবালীর ভাঙ্গনকবলিত চালিতাবুনিয়া ইউনিয়ন। উত্তাল আগুনমুখা নদী পাড়ি দিয়ে যেতে হয় সেখানে। এই ইউনিয়নে বিবিরহাওলা গ্রামের ২০-২৫ জন জেলে সাগরে মাছ ধরেন। গ্রামের লঞ্চঘাট এলাকায় একটি গাছের নিচে বসেছিলেন তাদেরই একজন রিপন মিয়া।
নোঙ্গর করা নিজের ট্রলার দেখিয়ে রিপন বলেন, ‘তিনদিন আগে বাজার-সদাই নিয়া সাগরে গেছিলাম। খরচ হইছিল ১৭ হাজার টাহা। গতকাইল আইছি। মাছ পাইছি মাত্র আট হাজার টাহার। এহন আবার ৬৫ দিন ঘরে বইয়া থাকতে অইবে। সাত জন শ্রমিক রাখছি, অগ্রিম টাহা দিয়া। ওগোতো ছাড়তেও পারমু না।’
রিপন বলেন, ‘এইডাই মোগো জীবন। এ আর নতুন কিছু না। এইযে দেহেন নদীর ঢেউ রাস্তার পাশে আইসা পড়ে, আবার ভাডার টানে সব শুকায় যায়। মোগো জীবনও এমন। যহন মাছ পাই, তহন আল্লার নামে খালি পাইতেই থাহি। আর যহন পাই না, তহন খালি হাতেই ফিরতে হয়।’
অবরোধের সময় সরকারি খাদ্য সহায়তার বিষয়ে রিপন বলেন, ‘মোর ট্রলারে মোরা আটজন। এর মধ্যে চারজনে চাউল পাই। হেই চাউল আনতে আনতে মোগো জান শেষ। আর বাকি চাইরজনেতো হেই সুযোগও নাই।’
তবে মাছের উৎপাদন বাড়াতে সরকারি নিষেধাজ্ঞার প্রয়োজন আছে বলেও মনে করেন রিপন।
বিবিরহাওলা গ্রামের ওই লঞ্চঘাট থেকে প্রায় ১৫ কিলোমটিার দূরে চরলতা গ্রাম। সেই গ্রামেই কথা হয় আইয়ুব গাজী নামে আরেক জেলের সঙ্গে।
আইয়ুব বলেন, ‘সবে মাত্র মাছ পড়া শুরু করেছে, ঠিক সেই মুহূর্তেই সাগরে অবরোধ দিলো। এর কোনো মানে অয়? ১২ লোক মোর ট্রলারে। আগেই হেগো টাহা-টোহা দিয়া রাখছি।’
আইয়ুব জানান, গত বছর অবরোধের আগে ভালো মাছ পাওয়া গেলেও এবার তেমন পাওয়া যায়নি।
তিনি বলেন, ‘চল্লিশ বছর ধইরা এই পেশায় আছি। ইচ্ছা করলেই ছাড়তে পারমু না। সরকারি আইন মেনেই মোরা মাছ ধরা বন্ধ রাখছি। আল্লাহ ভরসা। ৬৫ দিন যেভাবেই হোক ধারদেনা করে হলেও চালাইতে অইবে। এ ছাড়া তো আর কোনো উপায় দেহি না।’
সাগরে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা কেন?
পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্লাহ জানান, মেরিন ফিশারিজ অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী, প্রতিবছর ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই মোট ৬৫ দিন বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
২০১৫ সালে এই নিষেধাজ্ঞা চালু হলেও ২০১৯ সাল পর্যন্ত শুধু ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রলার এর আওতায় ছিল। কিন্তু ২০২০ সালে ২৫ হাজার স্থানীয় ট্রলার ও নৌকাকেও এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়।
মোল্লা এমদাদুল্লাহ বলেন, ‘মূলত হারিয়ে যাওয়া কিছু মাছের বংশবৃদ্ধির পাশাপাশি সামুদ্রিক ৪৭৫ প্রজাতির মাছের অবাধ প্রজননের জন্যই এই অবরোধ। এত বছর শুধু মাত্র ইলিশ মাছের নিরাপদ প্রজননের জন্য নির্দিষ্ট কয়েকটি স্থানকে অভয়শ্রাম হিসাবে চিহ্নিত করে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা দেয়া হতো। এতে আমরা সফলও হয়েছি। প্রতিবছরই ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে।’
তিনি জানান, অতীতের সফলতা মাথায় রেখেই মৎস্য গবেষকদের পরামর্শে গভীর সাগরে দেশীয় জলসীমায় ৬৫ দিন মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। গত দুই বছরে এই উদ্যোগে ইলিশসহ অন্যান্য সামুদ্রিক মাছের উৎপাদনও অনেক বেড়েছে।
তিনি আরও জানান, পটুয়াখালী জেলায় বিভিন্ন নদ-নদী এবং সাগরে ৭০ থেকে ৮০ হাজার জেলে মাছ ধরার কাজে নিয়োজিত থাকলেও জেলা মৎস্য অফিস কর্তৃক নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা মোট ৬৭ হাজার। এর মধ্যে সমুদ্রগামী নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ৪৭ হাজার ৮০৫ জন। অবরোধ চলার সময় সমুদ্রগামী নিবন্ধিত প্রত্যেক জেলেকে ৮৬ কেজি চাল সরকারি খাদ্য সহায়তা দেয়া হবে।
আরও পড়ুন:শরীয়তপুরের জাজিরার মিরাশার বাজারে কৃষকের উৎপাদিত ফসল সরাসরি বিক্রি করা হয়। জেলার অন্যতম বৃহৎ এই পাইকারি সবজির বাজারে প্রতি কেজি মিষ্টি কুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৭ থেকে ৮ টাকা দরে। ওই মিষ্টি কুমড়াই পাইকারি বাজারটি থেকে মাত্র ১৫ কিলোমিটার দূরে জেলা শহরে কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ২২ থেকে ২৫ টাকায়।
শুধু মিষ্টি কুমড়াই নয়, কৃষকের উৎপাদিত প্রায় সব সবজিই দুই থেকে তিন গুণ দামে বিক্রি হচ্ছে। কৃষকের কাছ থেকে সবজি কেনার পর মধ্যস্বত্বভোগীদের তিন-চার দফা হাত বদলের কারণে দাম কয়েক গুণ বাড়ে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
জেলা শহরসহ আশপাশের অন্তত ১২টি সবজির বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। কৃষক পর্যায়ে দাম কম থাকলেও ভোক্তা পর্যায়ে কয়েকগুণ বেশি দামে কিনতে হচ্ছে।
কৃষক মাঠে ফসল ফলিয়ে ন্যায্যমূল্য না পেলেও অতিরিক্ত মুনাফায় পকেট ভারী হচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগীদের। ক্রেতারা বলছেন, নজরদারির অভাবে ইচ্ছেমতো দাম নেয়া হচ্ছে। তাই সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়টি মনিটরিং প্রয়োজন।
তবে প্রশাসন বলছে, কৃষকের সঙ্গে সরাসরি ভোক্তার সংযোগ না থাকায় কৃষকের পণ্য ভোক্তার কাছে পৌঁছাতে কয়েক হাত বদলের কারণে দাম বৃদ্ধি পায়। তাই দাম নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হচ্ছে।
জানা গেছে, কৃষকদের উৎপাদিত সবজি সঠিক দামে সরাসরি ভোক্তা পর্যায়ে বিক্রির জন্য ২০০৭ সালে ঢাকা-শরীয়তপুর সড়কের পাশে জাজিরার মিরাশার এলাকায় একটি কৃষি বাজার স্থাপন করা হয়। জাজিরা ও নড়িয়ার স্থানীয় কৃষকরা ওই বাজারে তাদের উৎপাদিত সবজি বিক্রি করে থাকেন। ওই বাজার থেকে রাজধানী ঢাকা, শরীয়তপুর, ফরিদপুর, মাদারীপুরসহ আশেপাশের জেলা থেকে পাইকাররা সবজি সংগ্রহ করেন।
সোমবার মিরাশার কৃষি বাজারে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি কেজি বেগুন ২০ থেকে ২২ টাকা, ঢেঁড়স ১১ থেকে ১৩ টাকা, টমেটো ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, কাঁচামরিচ ৪২ থেকে ৪৫ টাকা, উস্তা ২২ থেকে ২৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অথচ জেলা শহরের পালং বাজার, আঙ্গারিয়া বাজার, কোর্ট বাজারসহ আশপাশের বাজারে এসব সবজি বিক্রি হচ্ছে দুই থেকে তিনগুণ বেশি দামে। প্রতিটি বাজারেই বেগুন ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, ঢেঁড়স ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, টমেটো ৯০ থেকে ১১০ টাকা, কাঁচামরিচ ৮০ থেকে ৮৫, উস্তা ৪৫ থেকে ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়াও পাইকারি বাজারে শশা ১৫ টাকা বিক্রি করা হলেও খুচরা বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ২৫ হতে ৩০ টাকা দরে। ঝিঙ্গে পাইকারে ২৫ টাকা, খুচরা বাজারে তা ৪৫ টাকা। কাঁচা কলা প্রতি হালি ১০ হতে ১২ টাকা, খুচরা বাজারে ২৫ টাকা হতে ৩০ টাকা। ধনে পাতা প্রতি কেজি ৭০ টাকা হলেও খুচরা বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজি দরে।
জাজিরার মুলনা ইউনিয়নের ডুবিসায়বর গ্রামের কৃষক ইউনুস মাদবর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আড়াই বিঘা জমিতে মিষ্টি কুমড়া করেছি। মিরাশার বাজারে ৭ টাকা কেজি দরে ১৩৫ কেজি কুমড়া বিক্রি করেছি। এ দামে উৎপাদন ব্যয় ও পরিবহন খরচও উঠবে না। এভাবে বছরের পর বছর লোকসান গুণতে হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে আগামীতে সবজি উৎপাদন বন্ধ করে দিতে হবে।’
নাওডোবা ইউনিয়নের মাদবর কান্দি গ্রামের সুরুজ মাদবর ৮৫ টাকা কেজি দরে ১২০ কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি করে হতাশ। মিরাশার বাজারেই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় সুরুজ মাদবরের। আক্ষেপ করে তিনি বলেন, ‘রোদ বৃষ্টি মাথায় নিয়ে ঋণের টাকায় ফসল ফলাই। কিন্তু বিক্রির সময় কম মূল্যে বিক্রি করতে হচ্ছে। অথচ আমাদের এই সবজিই হাট-বাজার দুই-তিনগুণ বেশি দামে বিক্রি করতে দেখে হতাশ হই। আমাদের বিষয়ে ভাবার কেউ নাই।’
জেলা শহরের পালং বাজারে সবজি ক্রয় করতে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করেন শান্তিনগর আবাসিক এলাকার বাসিন্দা সবুজ বেপারী। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘সব কিছুর দাম আমাদের মত নিম্ন আয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। অথচ পাইকারি বাজারে এসব সবজির দাম ২ থেকে ৩ গুণ কম। এতে করে কৃষককে ঠকানো হচ্ছে। মাঝখান থেকে সিন্ডিকেট করে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে মধ্যসত্বভোগীরা। দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়টি মনিটরিং করার দাবি জানাই।’
জেলা শহরের পালং বাজারের খুচরা সবজি ব্যবসায়ী মুন্না বলেন, ‘আমরা এখানকার আড়ৎ থেকে সবজি কিনে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করি। আমরা সীমিত লাভে সবজি বিক্রি করি। এখানে আড়তদাররা কী দামে সবজি কিনে তা আমরা বলতে পারব না। কৃষকের সবজি কয়েক হাত বদল হয়ে খুচরা পর্যায়ে আসতে আসতে দাম কয়েকগুণ বাড়ে। এতে ক্রেতারা অনেক সময় আমাদের ওপর ক্ষোভ ঝাড়েন। কিন্তু আমাদের তো কিছুই করার নেই।’
মিরাশার চাষিবাজারের সভাপতি আব্দুল জলিল মাদবর বলেন, ‘কৃষকরা পণ্য কোনো ফরিয়াদের কাছে বিক্রি করেন, সেখান থেকে বিভিন্ন অঞ্চলের পাইকাররা সংগ্রহ করেন। পাইকাররা সেই সবজি বিভিন্ন হাট-বাজারের আড়তে বিক্রি করেন। আড়ৎ থেকে খুচরা বিক্রেতারা তা ক্রয় করে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করেন। এভাবে কয়েক দফা হাত বদলের কারণে সবজির দাম দুই-তিনগুণ বেড়ে যায়।’
শরীয়তপুর জেলা কৃষি বিপনন কর্মকর্তা ইউসুফ হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কৃষকের সঙ্গে সরাসরি ভোক্তার সংযোগ নেই। কৃষকের পণ্য ভোক্তার কাছে পৌঁছাতে অন্তত চার হাত বদল হয়। ফলে প্রতি ধাপে এর দাম বৃদ্ধি পায়। আমরা চেষ্টা করছি অন্তত কৃষকের সঙ্গে খুচরা বিক্রেতার সংযোগ স্থাপনের জন্য। তাহলে কৃষকও ন্যায্যমূল্য পাবেন, আবার ভোক্তাও সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য কিনতে পারবেন।’
শরীয়তপুর ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সুজন কাজী বলেন, ‘পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে বিক্রির সামঞ্জস্য থাকতে হবে। সিন্ডিকেট করে দাম বৃদ্ধির কোনো সুযোগ নেই। বাজারে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। অবৈধ উপায়ে অতিরিক্ত মুনাফালোভীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আরও পড়ুন:চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় নানাবাড়ি বেড়াতে গিয়ে পুকুরে ডুবে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
আলমডাঙ্গার আলীহাটনগর গ্রামে মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান আলমডাঙ্গা থানার ওসি সাইফুল ইসলাম।
মৃত শিশুটির নাম রহমান হোসেন। ৯ বছরের রহমান চিৎলা গ্রামের কৃষক জাকিরুল ইসলামের ছেলে। সে চিৎলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র ছিল।
জাকিরুল বলেন, ‘আমার ছেলে রহমান গত রোববার তার নানাবাড়ি আলীহাটনগরে বেড়াতে যায়। সেখানে বাড়ির পাশের পুকুরে গোসলে নেমে সে ডুবে যায়। আশপাশের লোকজন তাকে তুলে সদর হাসপাতালে নেয়। সেখানকার ডাক্তার জানায় আমার ছেলে মারা গেছে।’
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাসনিম আফরিন জ্যোতি জানান, সেখানে নেয়ার আগেই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে।
ওসি সাইফুল ইসলাম জানান, কোনো অভিযোগ না থাকায় শিশুর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:রাজধানীর বনশ্রী এলাকায় তেলের লরি বিকল হয়ে পড়লে তা সারানোর কাজ করছিলেন মোহাম্মদ হৃদয় নামের ১৮ বছরের এক তরুণ। তিনি লরির নিচে, চাকার পাশে কাজ করার সময় হঠাৎই লরি গড়িয়ে তাকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
সোমবার রাত ৯টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
রামপুরা থানার পুলিশের উপপরিদর্শক(এসআই) ফারুক হোসেন জানান, তারা খবর পেয়ে বনশ্রী এলাকা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে যান। পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়।
নিহতের দাদা মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘হৃদয় মোটর মেকানিকের কাজ করত, রাতে রামপুরা বনশ্রী এলাকায় একটি তেলের লরির নিচে কাজ করার সময় ওই তেলের লরিতে চাপা পড়ে। ওইখানেই ও মারা গেছে বলে আমরা জানতে পারি।’
তিনি আরও বলেন, নিহতের গ্রামের বাড়ি ভোলার তজুমুদ্দিন থানার গোশকপুর গ্রামে। তার বাবার নাম নীরব।
হৃদয় নারায়ণগঞ্জে ফতুল্লা থানার পাগলা ট্রাকস্ট্যান্ডে থাকতেন। তিন ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় হৃদয়।
আরও পড়ুন:ফেসবুক ও টিকটকের মাধ্যমে পরিচয়। পরে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। সেই সম্পর্কের সূত্রে ভারতে নিয়ে যাওয়া হয় তরুণীকে। সেখানে তাকে দিয়ে করানো হয় যৌন ব্যবসা।
কিছুদিন পর দেশে ফিরে বিয়ে করেন দুজন। পরে আবারও তরুণীকে কৌশলে ভারতে পাচার করে দেয়া হয়। সেখানে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়ে কিছুদিন পর দেশে পালিয়ে এসে পাঁচ যুবকের নামে মামলা করেন তরুণী।
হবিগঞ্জে মঙ্গলবার দুপুরে প্রেস ব্রিফিংয়ে সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য জানান র্যাব-৯-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট নাহিদ হাসান।
তিনি জানান, মামলার পর পুলিশ লালমনিরহাট থেকে তিনজনকে এবং র্যাব হবিগঞ্জ থেকে প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করে। মঙ্গলবার সকালে প্রধান আসামি সোহেল মিয়াকে মৌলভীবাজার থেকে গ্রেপ্তার করেন র্যাব সদস্যরা। সোহেলের বাড়ি হবিগঞ্জের নবীগঞ্জের বেতাপুর গ্রামে।
লেফটেন্যান্ট নাহিদ হাসান জানান, সোহেল প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, ৩ বছর আগে ফেসবুক ও টিকটকের মাধ্যমে তার সঙ্গে পরিচয় হয় পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার ডেমরা গ্রামের এক তরুণীর। পরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
প্রেমিক সোহেল গত বছরের মার্চ মাসে সাতক্ষীরার সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতের কলকাতায় নিয়ে যান ওই তরুণীকে। এ সময় সেখানে তাকে আটকে রেখে যৌন ব্যবসা করতে বাধ্য করা হয়।
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে দেশে ফিরে সোহেল ওই তরুণীকে বিয়ে করেন। পরে তরুণীকে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সীমান্ত দিয়ে কৌশলে ভারতে পাচার করে দেন সোহেল। পাচারের আগে তাকে ধর্ষণ করেন সোহেল ও চার সহযোগী।
ভারতে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়ে ১৫ মে দেশে পালিয়ে আসেন তরুণী।
২১ মে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম থানায় পাঁচ যুবকের নামে পাচার, ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগে মামলা করেন তরুণী।
আরও পড়ুন:গৃহবধূ হত্যা মামলায় একজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছে রংপুরের একটি বিচারিক আদালত।
রায়ে আসামিকে ৩ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
রংপুরের বিশেষ জজ আদালতের বিচারক রেজাউল করিম মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ১ টার দিকে এই রায় দেন।
নিউজবাংলকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জয়নাল আবেদীন।
তিনি জানান, শংকরপুর মধ্যপাড়া গ্রামের খোরশেদ আলমের মা রেহেনা বেগম ২০১৫ সালের ২৬ জুলাই রাতে খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। এ সময় তার ঘরে চুরি করতে ঢোকেন লাভলু।
ঘরে মাত্র ১০০ টাকা পেয়ে রেহেনা বেগমের কানে থাকা সোনার দুল ছিনিয়ে নেন। তখন লাভলুকে চিনে ফেলেন রেহেনা।
এ কারণে তাকে হত্যা করে বাড়ির অদূরে বাঁশ ঝাড়ে ফেলে চলে যান লাভলু ।
আইনজীবী আরও বলেন, এ ঘটনায় রেহেনার ছেলে খোরশেদ আলম বাদী হয়ে মিঠাপুকুর থানায় মামলা করেন। পরে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন লাভলু।
২০১৬ সালের ১৫ জুন তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। ২১ জন সাক্ষীর জবানবন্দি ও জেরা শেষে আদালত মঙ্গলবার আমৃত্যু কারাদণ্ডের রায় দিয়েছে।
রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট প্রকাশ করলেও উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা জানিয়েছে আসামিপক্ষের আইনজীবী।
আরও পড়ুন:মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় দুই শিক্ষার্থীকে অপহরণের অভিযোগে চারজনকে আটক করেছে র্যাব।
মানিকগঞ্জের র্যাব-৪-এর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আরিফ হোসেন মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন। তাতে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ধামরাইয়ের বারোবাড়িয়া এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।
তারা হলেন, ধামরাইয়ের দক্ষিণ হাতকোড়া এলাকার আল আমিন, কৃষ্ণপুরা এলাকার পিন্টু মিয়া, বারোবাড়িয়া এলাকার আবু বকর সিদ্দিক ও চরিপাড়া এলাকার আরিফুল ইসলাম।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সোমবার রাত ৯টার দিকে সাটুরিয়ায় কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের এক ছাত্র ও এক ছাত্রী বাড়ি ফিরছিলেন। ধামরাইয়ের বারোবাড়িয়া বাসস্ট্যান্ডে বাস থেকে নামার পর তাদের অপহরণ করা হয়। তাদের নিয়ে রাখা হয় বারোবাড়িয়া এলাকার পুরোনো একটি বাড়িতে।
সে রাতেই ওই শিক্ষার্থীদের পরিবারের কাছে ফোন করে দেড় লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে বাড়িতে ফোন করার কথা বলে র্যাবকে ফোন করে ওই শিক্ষার্থীদের একজন।
র্যাব কর্মকর্তা আরিফ জানান, ফোন পেয়ে র্যাবের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে। আটক করা হয় চারজনকে। তাদের কাছ থেকে একটি মোটরসাইকেল, ৩২ হাজার টাকা ও ৫টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে।
ধামরাই থানায় মামলা দিয়ে তাদের সেখানে হস্তান্তর করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য