ভারতে আগামী সাধারণ নির্বাচনের তিন বছর বাকি থাকতেই তৎপরতা শুরু করেছে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস। ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে জয় পেতে দেশটির আলোচিত নির্বাচনবিষয়ক কৌশলবিদ (পলিটিক্যাল স্ট্র্যাটেজিস্ট) প্রশান্ত কিশোরের দ্বারস্থ হয়েছে গান্ধী পরিবার।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়, কংগ্রেস নেতা সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধী মঙ্গলবার প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। নির্বাচন মাথায় রেখে তারা বড় কোনো পরিকল্পনা নিয়ে এগোনোর লক্ষ্যে কাজ করছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, রাহুল গান্ধীর দিল্লির বাসভবনে গত সন্ধ্যার বৈঠকে তার সঙ্গে ছিলেন বোন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। তাদের সঙ্গেই কথা বলেন প্রশান্ত কিশোর।
তবে কংগ্রেস সূত্রের মাধ্যমে পরে জানা গেছে, ভার্চুয়াল লিংকের মাধ্যমে আলোচনায় যোগ দিয়েছিলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীও।
বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে বৈঠকে গান্ধী পরিবারের তিন নেতার উপস্থিতি তাৎপর্যপূর্ণ। এর অর্থ হলো, যে লক্ষ্য নিয়ে কাজ চলছে, তাতে জয় পেতে একজোট হয়ে এবং যে কোনো কৌশল গ্রহণে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নেবেন তারা।
সূত্রের বরাতে সংবাদমাধ্যমটি জানায়, পাঞ্জাব বা উত্তর প্রদেশের নির্বাচন নিয়ে এ বৈঠক হতে পারে বলে শুরুতে ধারণা করা হচ্ছিল।
আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচন সামনে রেখে পাঞ্জাবে টালমাটাল অবস্থায় রয়েছে কংগ্রেস। বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী বিজেপি নেতা অমরিন্দর সিংয়ের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেস নেতা নভজোত সিং সিধু।
সিধুকে জেতাতে কংগ্রেস প্রশান্ত কিশোরের সাহায্য চাইবে বলে জল্পনা চলছিল।
তবে পরে জানা গেছে, পরিকল্পনা আরও বড় কিছুর। ২০২৪ সালে পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ লোকসভার নিয়ন্ত্রণ পাওয়ার লড়াইয়ে জয় পেতে কংগ্রেসকে সহযোগিতা করতে পারেন কিশোর।
ভারতের বেশ কয়েকটি নির্বাচনে, বিশেষ করে অঞ্চলভিত্তিক রাজনৈতিক সমীকরণ পাল্টে দিতে সক্ষম বলে দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনায় প্রশান্ত কিশোর।
অপ্রতিদ্বন্দ্বী এ কৌশলবিদের সঙ্গে গান্ধী পরিবারের একজোট হওয়া এবারই প্রথম নয়।
২০১৭ সালে উত্তর প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রসের জেতাতে কাজ করেছিলেন কিশোর। কিন্তু রাজ্যটিতে পরাজয়ে দলটির সঙ্গে সম্পর্কে তিক্ততা তৈরি হয় তার। সেবার সমাজবাদী পার্টি ও কংগ্রেস জোটকে পেছনে ফেলে রাজ্য জয় করে হিন্দুত্ববাদী বিজেপি, যে শাসন চলছে এখনও।
ওই ঘটনার চার বছর পর আবারও দলটির সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধতে যাচ্ছেন তিনি।
রাজনীতিক সমীকরণ বদলে দিতে কিশোরের দক্ষতার ইতিহাসে কলঙ্কের ছাপ ফেলে ২০১৭ সালের উত্তর প্রদেশ নির্বাচন।
সে সময় কংগ্রেসের কাজের ধরন আর ভারসাম্যহীনতা নিয়ে অসন্তোষ জানিয়েছিলেন কিশোর; যা পরের প্রায় সবগুলো নির্বাচনে দলটির ভরাডুবির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
এদিকে, গান্ধী পরিবারের সঙ্গে বৈঠকের আগে এনসিপি প্রধান শারদ পাওয়ারের সঙ্গে দুটি বৈঠক করেছেন কিশোর।
এতে গুঞ্জন রটেছে যে ক্ষমতাসীন বিজেপিকে ২০২৪ সালের নির্বাচনে হারাতে একজোট হতে পারে বাকি দলগুলো।
শারদ পাওয়ারের বাড়িতে সাবেক বিজেপি নেতা যশবন্ত সিনহার নেতৃত্বে ওই বৈঠকে অংশ নেয়নি কংগ্রেস। কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে বিজেপিবিরোধী কোনো জোট হতে পারে না বলে সে সময় স্পষ্ট জানিয়েছিলেন কিশোর ও পাওয়ার।
তবে এখন পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে কিশোর নিজে কোনো স্বীকারোক্তি দেননি। এনডিটিভিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, নির্বাচনে জয় পেতে এ ধরনের কৌশল ভারতের বর্তমান রাজনৈতিক গতিপ্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
কে এই প্রশান্ত কিশোর
ভারতের আলোচিত নির্বাচন কৌশল প্রণয়নকারী প্রশান্ত কিশোরের জন্ম ১৯৭৭ সালে।
পশ্চিমবঙ্গের আগে ভারতের আরও কয়েকটি রাজ্যে কিশোরকে নিয়োগ দিয়ে সাফল্য পেয়েছে অন্য কয়েকটি দল। এমনকি নরেন্দ্র মোদি ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে তার ইমেজ বাড়ানোর কাজও করেন এই কৌশলবিদ।
ভারতের রাজনীতির এই চিকিৎসক অবশ্য কখনোই রাজনীতিতে সরাসরি যুক্ত ছিলেন না। অর্থের বিনিময়ে রাজনীতির দাওয়াই দেয়ার পেশায় নামার আগে তিনি ছিলেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ।
আফ্রিকায় স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ হিসেবে আট বছর চাকরির পর ২০১১ সালে দেশে ফেরেন; গড়েন সিটিজেনস ফর অ্যাকাউন্টেবল গভর্নমেন্ট (সিএজি) নামে একটি সংস্থা।
২০১২ সালে গুজরাট বিধানসভার নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদির হয়ে ভোটের রণকৌশল প্রণয়ন করেন কিশোর। গুজরাট দাঙ্গায় বিতর্কিত মোদির ভিন্নধর্মী ভাবমূর্তি তরুণদের সামনে নিয়ে এসেছিলেন তিনি। মোদিকে জেতাতে উন্নয়নের সঙ্গে ঐক্যের বার্তা জুড়ে তৈরি করেন প্রচারণা কৌশল।
মূলধারার গণমাধ্যমকে এড়িয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিশোর এমনভাবে প্রচারণা চালান, যার ফলে গুজরাট দাঙ্গার কালিমা মুছে ফের গুজরাটের ক্ষমতায় আসতে সক্ষম হন মোদি।
সেই সাফল্যের পর প্রশান্তকে জাতীয় পর্যায়ের দায়িত্ব দেন মোদি। ভারতের ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রচার-প্রচারণার কৌশল তৈরি করেন কিশোর।
ওই সময়ই কিশোরের মাথা থেকে বের হয় ‘চায়ে পে চর্চা’, ‘রান ফর ইউনিটির’ মতো ধারণাগুলো। এতে ভর করে দেশজুড়ে বিপুল জনপ্রিয় হয়ে ওঠা মোদি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থেকে হন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
এরপর ২০১৫ সালে বিহারের বিধানসভার ভোটে সংযুক্ত জনতা দলের নেতা নীতিশ কুমারকে জেতাতে ভূমিকা রাখেন কিশোর। ওই সময় অঞ্চল ভাগ করে সেখানকার সমস্যা বুঝে তিনি নীতিশের বক্তব্য তৈরি করতেন। নীতিশের উপদেষ্টা হিসেবেও বেশ কিছু জনমুখী পরিকল্পনা হয় তার হাত ধরে।
২০১৬ সালের পাঞ্জাব বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংয়ের জয় নিশ্চিতেরও কারিগর ছিলেন প্রশান্ত কিশোর।
তবে পরের বছর উত্তর প্রদেশ বিধানসভার ভোটে ধাক্কা খান কিশোর। সেবার কংগ্রেসের রাজনৈতিক কৌশল তৈরি করলেও সেটি পুরোপুরি ব্যর্থ হয়। ওই নির্বাচনে মাত্র সাতটি আসন পায় কংগ্রেস। প্রতিপক্ষ বিজেপি তিন শতাধিক আসন নিয়ে ক্ষমতায় আসে।
কিশোরের ঝুলিতে ব্যর্থতা বলতে গেলে এই একটিই।
২০১৯ সালে তার কৌশল অনুসরণ করে অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন জগনমোহন রেড্ডি।
গুজরাট, বিহার, পাঞ্জাব, উত্তর প্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশের পর চলতি বছর পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে প্রশান্ত কিশোর কাজ করেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও ভারতীয় কৌশলবিদ প্রশান্ত কিশোর। ছবি: সংগৃহীত
নির্বাচনে তৃণমূলের জয় নিশ্চিতের পর ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘মোদির জনপ্রিয়তা মানে এই নয় যে বিজেপি সব নির্বাচনেই জিতবে।’
পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনের অভিজ্ঞতা জানিয়ে কিশোর বলেছিলেন, ‘আমরা কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গেছি। নির্বাচন কমিশন চরমভাবে পক্ষপাতদুষ্ট ছিল। এতে আমাদের প্রচার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছিল। তবে আমরা যা করছি সে বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। প্রত্যাশার চেয়েও ভালো করেছে তৃণমূল।’
প্রশান্ত কিশোরের সাফল্যের রহস্য নিয়ে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার তাদের প্রতিবেদনে লিখেছিল, তার প্রথম হাতিয়ার রিসার্চ বা গবেষণা। প্রতিটি বুথ ধরে সমীক্ষা করে সেখানকার সমস্যা জানেন তিনি এবং সেই অনুযায়ী পরিকল্পনা নেন।
দ্বিতীয়ত, পেশাদারদের দিয়ে অভিনব প্রচার ও রাজনৈতিক কর্মসূচি তৈরি করেন কিশোর। সেই অনুযায়ী পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথ বাতলে দেন। এর সঙ্গে পক্ষের এবং বিপক্ষের শক্তি-দুর্বলতা বুঝে কৌশল সাজান।
আনন্দবাজার লিখেছে, বিভিন্ন রকম সমীকরণ নিয়ে বিচার-বিশ্লেষণ করে তার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা এবং ঘাটতি দূর করে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে যাওয়ার পরিকল্পনা প্রশান্ত কিশোরের সাফল্যের চাবিকাঠি।
এর ব্যতিক্রম ছিল না পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনেও। কিশোরের পরামর্শে নাগরিকদের সুবিধা-অসুবিধা জানতে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি শুরু করে তৃণমূল।
‘দিদিকে বলো’র সাফল্যের পর দলের জনসংযোগ বাড়াতে চালু করা হয় ‘বাংলার গর্ব মমতা’ নামের প্রচার। ১১ ধাপে তিনটি পর্যায়ে ৭৫ দিন ধরে চলা চলা এ কর্মসূচিতে সাত প্রায় হাজার গ্রামে প্রচারণা চালান তৃণমূলের এক লাখ নেতা-কর্মী। তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে বোঝান রাজ্যের উন্নয়নে মমতার অপরিহার্যতার বিষয়টি।
তৃণমূলে মমতা ছাড়া আর বিকল্প কোনো মুখ নেই। তাই তার কারিশমার ওপর ভিত্তি করেই কর্মসূচি সাজান প্রশান্ত কিশোর। তার সে প্রচারণা অনুযায়ী বাংলা শেষ পর্যন্ত বেছে নিয়েছে মমতাকেই।
সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) নুরুল হুদাকে আটকের সময় যেভাবে মব জাস্টিজ করা হয়েছে তা কাম্য নয় বলে জানিয়েয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে এ ধরনের ঘটনায় বাহিনীর কেউ জড়িত থাকলে তা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
গতকাল সোমবার সকালে গাজীপুরের কালিয়াকৈরের মৌচাকে হর্টিকালচার সেন্টার পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘গত রোববার সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার হাবিবুল আউয়ালকে গ্রেপ্তারের যে খবর প্রকাশিত হয়েছে, তা সঠিক নয়; তাকে এখনো গ্রেপ্তার করা হয়নি। গ্রেপ্তার হয়েছেন নুরুল হুদা।’
‘তবে তাকে গ্রেপ্তারের সময় যেভাবে মব জাস্টিজ করা হয়েছে তা কাম্য নয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে এ ধরনের বিশৃঙ্খলা ঘটেছে। এ ঘটনার তদন্ত হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
কৃষি জমি দখল রোধে কৃষি জমি সুরক্ষা আইন করা হচ্ছে জানিয়ে উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘বিদেশি ফলের পাশাপাশি দেশীয় ফলের উৎপাদন বাড়াতে হবে, যেন এসব ফল হারিয়ে না যায়।’
পরিদর্শনের সময় গাজীপুর জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফীন, পুলিশ সুপার ড. চৌধুরী যাবের সাদেক, কালিয়াকৈর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা কাউসার আহমেদ, হর্টিকালচার সেন্টারের এনামুল হকসহ পুলিশ ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় উপদেষ্টা হর্টিকালচার সেন্টারের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন এবং কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং নানা দিক নির্দেশনা দেন।
অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা জয় করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে ভর্তির জন্য নির্বাচিত নেত্রকোনার চারজন শিক্ষার্থীকে ২০ হাজার টাকা করে মোট ৮০ হাজার টাকা শিক্ষা সহায়তা দেওয়া হয়েছে। গত রোববার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভা শেষে তাদের হাতে এই অর্থ তোলে দেন জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস।
এই চারজন মেধাবী শিক্ষার্থীরা হলেন ইংরেজি বিভাগে মো. সাজ্জাদ আলী, অর্থনীতি বিভাগে মানব তালুকদার, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে রেশমা আক্তার এবং বাংলা বিভাগে বন্যা রানী সরকার।
জানা যায়, এই চারজন মেধাবী শিক্ষার্থী নিজেদের প্রচেষ্টা ও প্রতিভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য মনোনীত হন। তবে তাদের প্রত্যেকেই আর্থিক সংকটে ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়লে খবর পেয়ে পাশে দাঁড়িয়েছে জেলা প্রশাসন।
বিষয়টি জেলা প্রশাসনের নজরে এলে জেলা পরিষদের মাধ্যমে প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে শিক্ষা সহায়তা প্রদান করা হয়, যাতে তারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারেন।
নেত্রকোণা জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস জানান, ‘চারজন শিক্ষার্থী ভর্তি সহায়তার জন্য আবেদন করেছিলেন। পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট কলেজের মাধ্যমে যাচাই করে দেখা যায়, তারা আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা হয়।’
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, “এই মেধাবী শিক্ষার্থীরা নিঃসন্দেহে আমাদের জেলার সম্পদ। ভবিষ্যতে যেন কেউ আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে উচ্চশিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হয়, সে লক্ষ্যেই জেলা প্রশাসনের সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানদেরও এগিয়ে আসা প্রয়োজন, যাতে মেধার বিকাশে অর্থ কখনো বাধা হয়ে না দাঁড়ায়।” এছাড়াও স্থানীয়ভাবে এই পদক্ষেপকে শিক্ষাবান্ধব প্রশাসনের একটি মানবিক দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের পরিবার ও অভিভাবকরাও এ সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর চট্টগ্রাম প্রতিদিন তৈরি করছে বিপুল পরিমাণ বর্জ্য, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশজুড়ে রয়েছে প্লাস্টিক বর্জ্য। নগরজুড়ে উৎপন্ন এই প্লাস্টিক বর্জ্য নিয়ন্ত্রণের অভাবে সরাসরি নদী, খাল ও নালায় গিয়ে মিশছে। যা পরিবেশের জন্য এক ভয়াবহ হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সম্প্রতি চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট), জার্মান সরকার এবং বাউস বিশ্ববিদ্যালয়ের এক যৌথ গবেষণায় দেখা যায়, চট্টগ্রাম শহরে প্রতিদিন প্রায় ২৫০ টন প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরি হয়। এর মধ্যে ১৪০ টন সরাসরি খাল ও নালার মাধ্যমে গিয়ে পড়ে কর্ণফুলী নদীতে। নদীতে জমা হওয়া এই প্লাস্টিক বর্জ্যে তৈরি হচ্ছে পলিথিন ও প্লাস্টিকের আস্তর। এর ফলে নদীর স্বাভাবিক গভীরতা দিন দিন কমে যাচ্ছে, ব্যাহত হচ্ছে কর্ণফুলী নদীতে জাহাজ ও নৌযান চলাচল। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে নদীর গভীরতা বাড়াতে সম্প্রতি প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ক্যাপিটাল ড্রেজিং করতে হয়েছে। এই ব্যয় অর্থনীতির ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অন্যান্য প্লাস্টিকের পাশাপাশি ওয়ান টাইম প্লাস্টিক সবচেয়ে বেশি পরিবেশের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। বিশেষজ্ঞদের ভাষ্য, প্লাস্টিক মূলত তৈরি হয় পেট্রোলিয়াম থেকে। সুতরাং পরিবেশের ওপর এর একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব থেকে যায়। এছাড়া প্লাস্টিক পলিথিনের মান উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় যেগুলোর প্রায় প্রতিটি পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক। বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় ৪৮০ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদন হয়। ওয়ান টাইম প্লাস্টিক পরিবেশের উপর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।
চুয়েটের পরিবেশ প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা যদি শহরের বর্জ্য ঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা করতে পারতাম তাহলে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ ড্রেজিংয়ে খরচ হতো না। একইসঙ্গে পরিবেশ রক্ষায় আমাদের আরও সচেতন হতে হবে।’ এক গবেষণায় দেখা যায়, কর্ণফুলী নদীতে প্রতিদিন গড়ে ৭৮৫ টন বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য গিয়ে পড়ছে। এর মধ্যে রয়েছে একবার ব্যবহার করে ফেলে দেওয়া ওয়ান টাইম প্লাস্টিক, যা পরিবেশের জন্য সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর। গবেষকরা জানান, বন্দরে যেসব জাহাজ আসে সেগুলোও কম-বেশি প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরি করে। এসব বর্জ্য যথাযথভাবে নিষ্কাশন না হলে তা শুধু নদী নয়, সমুদ্রের জীববৈচিত্র্য এবং সামুদ্রিক পরিবেশেও মারাত্মক প্রভাব ফেলবে।
এসসিআইপি প্লাস্টিক প্রজেক্টের পরিচালক ড. ফারজানা রহমান জুথি সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রতিদিনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা যথাযথভাবে করতে হবে। আর এটি করতে না পারলে নদী ও সমুদ্র উভয়ের পরিবেশই বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।’
জানা গেছে, বাংলাদেশ প্লাস্টিক দূষণের দিক থেকে বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দেশের মধ্যে একটি। নদীতে প্লাস্টিক দূষণ রোধে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন গবেষকরা। কারণ, এটি শুধু পরিবেশ নয়, জনস্বাস্থ্যের ওপরও দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলছে। জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের এক সমীক্ষায় কর্ণফুলী নদীর ৭৯টি স্থানে দূষণের চিত্র ধরা পড়েছে। এর মধ্যে ৭৭টি স্থানে দূষণকে ভয়াবহ বলা হয়েছে। শিল্প-কারখানা, গৃহস্থালি, রাসায়নিক, কঠিন ও তরল বর্জ্য, পয়োঃবর্জ্য ও পলিথিন সরাসরি নদীতে ফেলার কারণে নদীর জীববৈচিত্র্য মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে। সমীক্ষায় দেখা গেছে, চট্টগ্রাম শহরের ২৩টি স্থানে এবং ১৯টি খালের মাধ্যমে গৃহস্থালি ও শিল্প বর্জ্য কর্ণফুলীতে যাচ্ছে। শুধু নগরী নয়, রাঙ্গুনিয়া, বোয়ালখালী ও কর্ণফুলী উপজেলা থেকেও নদীতে ব্যাপক দূষণ হচ্ছে।
বিশেষভাবে কর্ণফুলী উপজেলায় অবস্থিত দেশের শীর্ষস্থানীয় সিমেন্ট, চিনি, তেল পরিশোধন, ফিশিং কমপ্লেক্স ও অন্যান্য শিল্প প্রতিষ্ঠান নদীতে সরাসরি বর্জ্য ফেলছে। নগরীর বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠা তেলের দোকান, খোলা টয়লেট, ডায়িং মিল, সার কারখানাসহ নানা প্রতিষ্ঠানের বর্জ্য ড্রেন ও খালের মাধ্যমে গিয়ে মিশছে কর্ণফুলীতে। কৃষি কাজে ব্যবহৃত কীটনাশক ও রাসায়নিক সারও খালের মাধ্যমে নদীতে পৌঁছে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।ঢাকায় আয়োজিত এক সেমিনারে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. এম. ফিরোজ আহমেদ জানান, দেশে বছরে প্রায় ৯, ৭৭,০০০ টন প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপন্ন হয়। এর মধ্যে ওয়ান টাইম প্লাস্টিক সবচেয়ে ক্ষতিকর। তিনি বলেন, ‘প্লাস্টিক মূলত পেট্রোলিয়াম থেকে তৈরি হয়। এটি পরিবেশে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলে। এসব প্লাস্টিকের মান উন্নয়নের জন্য ব্যবহৃত কেমিক্যালগুলোও পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।’ তিনি আরও বলেন, বিশ্বে প্রতিবছর প্রায় ৪৮০ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক উৎপাদিত হচ্ছে, যা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবক হিসেবে কাজ করছে।
গড়াইয়ের পানি প্রবাহের সঙ্গেই জড়িয়ে আছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৪ জেলার মানুষের ভালোমন্দ। তাদের ভাগ্য নিয়ন্ত্রিত হয় গড়াইয়ের ওপর। একটু বলে রাখা দরকার, ১৯৫৪ সালে কুষ্টিয়া ও যশোর অঞ্চলে সেচ সুবিধা ও বন্যা থেকে ফসল ও জনপদ রক্ষার জন্য গঙ্গা কপোতাক্ষ পরিকল্পনা (জিকে) সেচ প্রকল্প নামে কার্যক্রম চালু হয়। জাতিসংঘের সহযোগিতায় চালু হওয়া সে প্রকল্পের আওতায় ফসল উৎপাদন বেড়ে যায় প্রায় তিনগুণ। এ প্রকল্পের মূল উৎস ছিল গড়াই। গড়াই নাব্য সংকটে থাকায় উৎসমুখের কাছে ভেড়ামারাতে পাম্প হাউস স্থাপন করে এ প্রকল্প টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়েছিল, তাও রক্ষা হয়নি। গড়াই শুকিয়ে যাওয়ার ফলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পরিবেশের ওপরও বিরূপ প্রভাব পড়ছে।
আর নানা কারণে কুষ্টিয়া শহরের গড়াই নদীর তীরবর্তী দুই পাড় দখলের কবলে পড়ছে। অবৈধ স্থাপনা ও বাধের দুইপাড় দখলের কারণে ধীরে ধীরে গ্রাস করছে গড়াই নদীর শহর রক্ষা বাঁধ। স্বেচ্চাচারিভাবে নদী তীরে দোকান পাঠ, খামার, প্রতিষ্ঠান, এমনকি ঘর বাড়িও নির্মাণ করা হচ্ছে। নদীর কিছু কিছু জায়গায় ইতোমধ্যেই দখলদাররা বালু মহাল তৈরি করে পুরো চর দখল করে নিয়েছে। এমনকি নদীর তীরে মোটা বালি চিকন বালির বিশাল বিশাল বড় বড় গাদি করে ট্রলি ও ডাম ট্রাক এর মাধ্যমে এসব বালি বিক্রয় করছে। যা নদী রক্ষা বাঁধ ও তীর হুমকির মধ্যে পড়েছে। এছাড়াও নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে ক্ষমতাসীনদের ছত্র ছায়ায় বিভিন্ন মানুষকে টাকার বিনিময়ে জায়গা বিক্রয় করে তাদেরকে বসবাস করার অনুমতিও দেওয়া হচ্ছে। এলাকাবাসীর দাবি এই দখলদাররা এলাকার উচ্চ পদের লোকদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখেছে যার ফলে এদের কিছুই হচ্ছে না।
সরজমিনে দেখা যায়, অবৈধ দখলদারদের হাতে বেদখল হয়ে যাচ্ছে কুষ্টিয়া গড়াই নদীর চর ও তীরবর্তী অঞ্চল গুলো। কিছু অসাধু চক্র ক্ষমতার বড়াই দেখিয়ে একের পর এক দখল করে নিচ্ছে গড়াই নদীর পাড়। কুষ্টিয়া থানাপাড়া থেকে শশ্নান ঘাট পর্যন্ত ক্ষমতা দেখিয়ে নদী তীরে দোকান পাঠ, খামার এমনকি ঘর বাড়ি ও নির্মাণ করেছে ওইসব ভূমিদস্যুরা। কোথাও কোথাও পাকা দোতলা পর্যন্ত বাড়ি করা হয়েছে। শুধু তাই নয় কুষ্টিয়া হরিপুর ব্রিজের দুই পাশে দোকানপাট করেছে । এমনকি ব্রিজের পিলার দখল করে দোকান তৈরি করা হয়েছে। এতে হুমকিতে রয়েছে নদীর পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষ। এছাড়াও এইসব দখলবাজদের জন্য সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে কুষ্টিয়া গড়াই নদীর তীর। নষ্ট হচ্ছে নদীর পরিবেশ ও প্রকৃতি। নদী দখল হওয়া এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে কুষ্টিয়া শহরসংলগ্ন জুগিয়ার নদী তীরবর্তী অঞ্চল, মঙ্গলবাড়িয়া বাঁধ সংলগ্ন, রেইনউক বাঁধ ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকা, হরিপুর সংযোগ ব্রিজ এলাকা, হরিপুরের বিভিন্ন নদীর তীরসংলগ্ন এলাকা, বড়বাজার ঘোড়ার ঘাট এলাকা, শ্বশ্নান ঘাট, সৈয়দ মাসউদ রুমী সেতুসংলগ্ন এলাকা, কয়া বাজার ও কুমারখালী শহররক্ষা বাঁধ। খোকসা উপজেলাতেও চলছে নদী দখলের মহোৎসব। স্থানীয়দের অভিযোগ এই দখলদারিকে কেন্দ্র করে নদী তীরে বেশ কয়েকবার রক্তা রক্তির ঘটনাও ঘটেছে।
কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের সূত্রে জানা যায়, এসব অবৈধ স্থাপনা নিয়ে কাজ করছে তারা। অতি দ্রুতই এগুলো ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাশিদুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।
সাতক্ষীরায় গরমের তীব্রতায় নাভিশ্বাস উঠেছে খেটে খাওয়া মানুষের। আষাঢ়ের শুরু থেকে গরমের তীব্রতা হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় দুপুরের আগেই ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে রাস্তা। অসহনীয় কষ্ট বেড়েছে শ্রমজীবী মানুষের। ভিড় বেড়েছে ডাব, শরবত আর আখের রসের দোকানে। গরমের তীব্রতা কাটাতে শহরের পৌরদিঘীতে দীর্ঘক্ষণ ধরে গোসল করছেন অনেকেই।
সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সোমবার সাতক্ষীরার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আদ্রতা শতকরা ৫৪ ভাগ। অপরদিকে শনিবার সাতক্ষীরায় এ বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বিরাজমান ছিল। ওইদিন তাপমাত্রা ছিল ৪০.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সাতক্ষীরায় গরমের তীব্রতায় নাকাল হয়ে পড়েছে মানুষ। গরমে বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি কষ্ট পাচ্ছে। মাঝে মধ্যে বৃষ্টির দেখা দিলেও ভ্যাপসা গরম আরো অসহনীয় লাগছে জনসাধারণের ।
ভ্যানচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ভ্যান চালাতে খুব কষ্ট হচ্ছে। রাস্তায় বের হলে মুখ পুড়ে যাচ্ছে গরমে। এছাড়া বাইরে বের হওয়া মানুষের সংখ্যা কমে যাচ্ছে বলে ভাড়াও সেভাবে পাচ্ছিনা।’
শহীদ রাজ্জাক পার্কের শরবত বিক্রেতা ইনতাজ আলী জানান, অন্য যেকোন সময়ের তুলনায় শরবত বিক্রি বেড়েছে। আগে যেখানে ৪০ থেকে ৫০ গ্লাস শরবত বিক্রি করতাম, এখন সেখানে ১০০ ছাড়িয়ে যাচ্ছে।
সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক কামরুন্নাহার বলেন, ‘সাতক্ষীরায় কখনো মৃদু আবার কখনো মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ ধারা জুন মাসের পুরোটা সময় থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পতিত আওয়ামী সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তার মা ও ফুফার নামে নামকরণ করা বরিশাল বিভাগের পাঁচটি কলেজের নতুন নামকরণ করা হয়েছে।
বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইউনুস আলী সিদ্দিকী জানান, সম্প্রতি নাম পরিবর্তন করে প্রজ্ঞাপণ জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ।
নাম পরিবর্তন করা পাঁচ কলেজ হচ্ছে; বরিশাল নগরীর কাউনিয়া এলাকায় স্থাপিত শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত সরকারি কলেজের নাম পরিবর্তন করে নতুন নামকরণ করা হয়েছে ‘কাউনিয়া সরকারি কলেজ’। মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায় ‘দেশরত্ন শেখ হাসিনা মহাবিদ্যালয়ের’ নাম পরিবর্তন করে ‘আলিমাবাদ সরকারি মহাবিদ্যালয়’, আগৈলঝাড়ার শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত সরকারি ডিগ্রি কলেজের নামের পরিবর্তে ‘আগৈলঝাড়া সরকারি ডিগ্রি কলেজ’, নাজিরপুর উপজেলার ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয়ের নতুন নাম হয়েছে ‘নাজিরপুর সরকারি মহিলা কলেজ’। ভোলার সরকারি ‘শেখ ফজিলাতুন্নেছা’ মহিলা কলেজের পরিবর্তে ‘ভোলা সরকারি মহিলা কলেজ’ নামকরণ করা হয়েছে।
শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইউনুস আলী সিদ্দিকী বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা চেয়েছিলো। তালিকা পাঠানোর পর মন্ত্রণালয় নাম পরিবর্তন করেছে। বিষয়টি নোটিশ আকারে স্ব স্ব কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো এরই মধ্যে নতুন নামের সাইনবোর্ড স্থাপন করেছেন।
কেরানীগঞ্জে গভীর রাতে বিস্ফোরণের ঘটনায় একটি পাঁচ তলা ভবনের নিচতলার দেয়াল ধসে পড়েছে এবং শিশুসহ তিনজন আহত হয়েছেন। গত রোববার গভীর রাতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার শুভাড্যা খেজুরবাগ মন্দির এলাকার পাকিজা নামক ভবনের নিচতলায় এ বিস্ফোরণ ঘটে।
কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ থানার এসআই তুষার জানান, আহতরা হলেন আল সামির (৮), তার বাবা ফারুক হোসেন (৪০) এবং মা শিউলি (৩০)। বিস্ফোরণের পর তারা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরেছেন।
আহত ফারুক হোসেন জানান, ঘুমন্ত অবস্থায় হঠাৎ বিকট শব্দে ঘুম ভেঙে দেখি আমার স্ত্রীর হাত ও শিশুপুত্র সামিরের শরীর আগুনে পুড়ে গেছে। আমারও মুখের বাম পাশে ঝলসে যায়। তিনি আরও জানান, মাসখানেক ধরেই রুমের ফ্লোর অতিরিক্ত গরম হচ্ছিল। বিষয়টি বাড়ির মালিককে জানানো হলেও তখন তা মেরামত করা হয়নি। ভবনের মালিক সহিদ বলেন, ভবনের ফ্লোর গরম হওয়ার বিষয়টি জানার পর আমি দ্রুত দেশে ফিরে আসি। বিস্ফোরণের সময় পাশের রুমেই ছিলাম। বিকট শব্দে ঘুম ভেঙে দেখি ভবনের নিচ তলার দেয়াল ভেঙে গেছে। ভবনটি রাজউকের অনুমোদন না থাকলেও তিনি ইউনিয়ন পরিষদের অনুমতি নিয়ে নির্মাণ করেছেন বলে দাবি করেন। ভবনটিতে মোট ১০টি পরিবার বসবাস করছে।
পরিদর্শন শেষে পোস্তগোলা ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আবু মুহাম্মদ সাজেদুল কবির জোয়ার্দার জানান, ভবনটি অনিয়মিত ও অপরিকল্পিভাবে ডোবা ভরাট করে তৈরি হওয়ার কারণে ধসে পড়তে পারে। অথবা গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকেও বিস্ফোরণ হয়ে থাকতে পারে। তিনি আরও জানান, ভবনটি বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে এবং এ বিষয়ে মালিকপক্ষকে সতর্ক করা হয়েছে। ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলছে বলেও তিনি জানান।
মন্তব্য