বিজেপিকর্মীদের ফের বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন দলটির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
এমনকি তার সঙ্গে ধাক্কাধাক্কিতে জড়িয়ে পড়ে বিজেপির দুই গোষ্ঠী।
মঙ্গলবার পূর্ব বর্ধমান জেলার কার্যকারিণী বৈঠকে যোগ দিতে বিজেপির জেলা অফিসে পৌঁছলে বিজেপির একটি গোষ্ঠীর বিক্ষোভের মুখে পড়েন দিলীপ।
ওই দিনের বৈঠকে আমন্ত্রণ না পাওয়া নিয়ে কিছু কর্মী সকাল থেকে বিজেপির জেলা অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন।
দিলীপ জেলা অফিসে পৌঁছলে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে কথা-কাটাকাটি ও ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়।
জানা গেছে, বিজেপির পুরুলিয়া জেলা যুব মোর্চা সহসভাপতি ইন্দ্রনীল গোস্বামী আমন্ত্রণ না পেয়ে দিলীপকে কিছু বলতে চেয়ে ভেতরে ঢুকতে চাইলে তাকে বাধা দেয়া হয়। তখনই গোলমাল বাধে।
এমনকি দিলীপ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলে বিক্ষোভকারীরা সেখানে গিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন।
বাধ্য হয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দিতে হয় দিলীপকে।
বিজেপির রাজ্য সভাপতির সামনেই বিজেপির দুই গোষ্ঠী অশ্রাব্য গালিগালাজ ও ধাক্কাধাক্কিতে জড়িয়ে পড়ে।
বিজেপির পুরোনো এক কর্মীর অভিযোগ, ‘দীর্ঘদিন ধরে দলের কাজ করেছেন তারা।
‘একসময় দিলীপের মতো রাজ্য নেতারা তাদের বাড়িতে গিয়ে মধ্যহ্নভোজ সেরে দলের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করতেন।
‘আর এখন তারাই ব্রাত্য হয়ে গেছেন। যত স্বার্থান্বেষী, দুর্নীতিবাজরা এখন দলের বৈঠকে ডাক পায় । অথচ তাদের ডাকা হয় না।’
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে সরকার গঠনে বিজেপির স্বপ্ন ভেঙে যেতে সেই যে দলে গোষ্ঠী কোন্দল আর ভাঙনের রক্তক্ষরণ শুরু হয়েছে, তা আর থামছে না । দিকে দিকে বিজেপিতে বিদ্রোহের স্বর চড়ছে ।
সৌমিত্র খাঁ, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এমনকি সম্প্রতি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়া বিজেপির সংসদ সদস্য বাবুল সুপ্রিয় ও দিলীপের ঝগড়া এখন প্রকাশ্য।
জানা গেছে, দলবিরোধী কাজের জন্য এদের বিরুদ্ধে দিলীপ দিল্লিতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন।
অন্যদিকে বাবুলের তৃণমূলে যোগ দেয়ার জল্পনাও তুঙ্গে উঠেছে।
অবশ্য তৃণমূলে যোগদানের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন বাবুল।
তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি তার তৃণমূল ঘনিষ্ঠতার পোস্ট রয়েছে।
অন্যদিকে দলবিরোধী কাজের অভিযোগে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দলবিরোধী মন্তব্য করে দল থেকে বহিষ্কার হয়েছেন পুরুলিয়ার তিন বিজেপি নেতা ।
এরা হলেন বিজেপির এসসি মোর্চার সাধারণ সম্পাদক স্বপন বাউরি। কাশিপুর বিধানসভার শুভদীপ প্রামাণিক ও বলরামপুর বিধানসভার সভাপতি অশ্বিনী সিং সর্দার।
বিজেপির পুরুলিয়ার জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘দলবিরোধী কাজের জন্য রাজ্য কমিটির সিদ্ধান্তে এদের বহিষ্কার করা হয়েছে।’
বহিষ্কার হওয়ার পর স্বপন বাউরি বলেন, ‘দিলীপ ঘোষ অন্ধ ধৃতরাষ্ট্র।’
বিধানসভা নির্বাচনের আগেও বর্ধমানে বিজেপির গোষ্ঠী সংঘর্ষে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল।
পুলিশ নামিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হয়।
কয়েকজন দলীয় নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল তখন।
রাজ্যে ভোটে হারার পর হুগলিতেও দিলীপ বিজেপিকর্মীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন।
মঙ্গলবার পূর্ব বর্ধমান ছাড়ার আগে বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দল নিয়ে দিলীপ কোনো মন্তব্য করেননি।
তবে সূত্রের খবর, দিলীপ দিল্লি গিয়ে নাকি বিজেপির শীর্ষ নেতাদের তৃণমূল থেকে আসা নতুন কাউকে দলের বড় কোনো দায়িত্ব না দিতে পরামর্শ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন:কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার জয়সিদ্ধি ইউনিয়নের বাসিন্দা গোরখোদক মনু মিয়া মারা গেছেন। শনিবার (২৮ জুন) সকাল ১০টার দিকে আলগাপাড়া গ্রামের নিজ বাড়িতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
মনু মিয়া তার জীবদ্দশায় প্রায় সাড়ে তিন হাজারের মতো কবর খনন করেছেন। কবর খুঁড়তে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে তিনি ঘোড়া ব্যবহার করতেন। কিছুদিন আগে বার্ধক্যজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি হন। এই সুযোগে রহস্যজনক কারণে দুর্বৃত্তরা মনু মিয়ার ঘোড়াটিকে হত্যা করে।
বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে চারদিকে সমালোচনার ঝড় উঠে। তবে শারীরিক দিক বিবেচনায় তখন মনু মিয়াকে তার ঘোড়ার মৃত্যুর কথা জানানো হয়নি।
এরপর কিছুটা সুস্থ হলে তাকে ঘোড়াটির মৃত্যুর খবর জানানো হয়। ঢাকায় চিকিৎসার পর কিছুটা সুস্থ হলে নিজ বাড়িতে যান মনু মিয়া। আজ শনিবার সকালে সেখানেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, ও সিলেট বিভাগের অনেক অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো বা হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
এছাড়াও খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।
আজ সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ কথা বলা হয়েছে।
এতে আরো বলা হয়, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
আবহাওয়ার সিনপটিক অবস্থা সম্পর্কে বলা হয়েছে, মৌসুমি বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ মধ্য প্রদেশ, বিহার, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং এটি উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।
আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে।
গতকাল (শুক্রবার) দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ডিমলায় ৩৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে বান্দরবানে ২৪ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
উল্লেখ্য, আজ ভোর ৬টা পর্যন্ত বিগত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে মোংলায় ৯৩ মিলিমিটার বা মিমি।
আজ সকাল ৬টায় ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৮৩ শতাংশ।
ঢাকায় বাতাসের গতি দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার বেগে প্রবাহিত হতে পারে।
ঢাকায় আজ সূর্যাস্ত সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ভোর ৫টা ১৪ মিনিটে।
পারস্পরিক শুল্ক চুক্তি চূড়ান্ত করতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অব্যাহত আলোচনায় রয়েছে বাংলাদেশ।
সর্বশেষ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে গত বৃহস্পতিবার, যেখানে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান এবং যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে নেতৃত্ব দেন দেশটির বাণিজ্য প্রতিনিধি কার্যালয়ের (ইউএসটিআর) দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী ব্রেন্ডান লিঞ্চ।
জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থা আঙ্কটাডের সাবেক বাণিজ্যনীতি প্রধান ড. রহমান বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের দলের সঙ্গে আমাদের আলোচনায় খুব ভালো অগ্রগতি হয়েছে। উভয় পক্ষ দ্রুততম সময়ে চুক্তিটি চূড়ান্ত করতে আন্তরিক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।’
দেশটির দক্ষিণে শুক্রবার ইসরাইলি হামলায় একজন নারী নিহত ও অপর ২৫ জন আহত হয়েছেন। ইসরাইলি সেনাবাহিনী হিজবুল্লাহর অস্ত্রকে এই হামলার জন্য দায়ী করেছে।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে বৈরুত থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা শত্রুতার অবসান ঘটানোর লক্ষ্যে ২৭ নভেম্বরের যুদ্ধবিরতি পর থেকে ইসরাইল লেবাননের ওপর, বিশেষ করে দক্ষিণে নিয়মিত হামলা চালিয়ে আসছে, যার মধ্যে দুই মাসের সর্বাত্মক যুদ্ধও অন্তর্ভুক্ত। ফলে, হিজবুল্লাহ মারাত্মকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে।
সরকারি ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সি (এনএনএ) প্রকাশিত এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘নাবাতিয়েহের একটি অ্যাপার্টমেন্টে ইসরাইলি শত্রুর হামলায়’ এক নারী নিহত ও অপর ১৪ জন আহত হয়েছে।
এনএনএ জানিয়েছে, একটি ড্রোন অ্যাপার্টমেন্ট লক্ষ্য করে ইসরাইলি হামলা চালিয়েছে।
ইসরাইলি সামরিক মুখপাত্র আভিচায় আদ্রাই সোশ্যাল মিডিয়ায় বলেছেন, সেনাবাহিনী ‘কোনও বেসামরিক ভবনকে লক্ষ্যবস্তু করেনি।’
এনএনএ-এর আগে নাবাতিয়েহ অঞ্চলের আরও কয়েকটি এলাকায় ‘একের পর এক ভারী বোম হামলার’ খবর দিয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এসব হামলায় সাতজন আহত হয়েছে।
পরে শুক্রবার মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশের দক্ষিণে শাকরাতে ‘ইসরাইলি ড্রোন হামলায়’ আরও চারজন আহত হয়েছে।
ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিমানগুলো নাবাতিয়েহ ও ইসরাইলি সীমান্তের কাছে বিউফোর্ট রিজ এলাকায় হিজবুল্লাহ’র অগ্নিনির্বাপণ ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত একটি স্থানে আঘাত করেছে।
বলা হয়েছে যে, স্থানটি ‘একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূগর্ভস্থ প্রকল্পের অংশ যা অভিযানের ফলে সম্পূর্ণরূপে ব্যবহারের বাইরে’ ছিল।
সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা ‘হিজবুল্লাহ’র পুনর্বাসন প্রচেষ্টা আগে থেকেই চিহ্নিত করেছে এবং এলাকায় সন্ত্রাসী অবকাঠামোগত স্থানগুলোয় হামলা করেছে’, ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীর কর্মকাণ্ডকে ‘ইসরাইল ও লেবাননের মধ্যে বোঝাপড়ার স্পষ্ট লঙ্ঘন’ বলে অভিহিত করেছে।
ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর আদ্রাই বলেছেন, অগ্নি ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সাইটের ভিতরে থাকা বেসামরিক ভবনে ‘একটি রকেট আঘাত হেনেছে।
তিনি বলেন,‘লেবাননের সরকার তার ভূখণ্ডের মধ্যে যা ঘটে তার জন্য দায়ী, কারণ তারা হিজবুল্লাহর ভারী অস্ত্র ও রকেট জব্দ করেনি।’
যুদ্ধবিরতি চুক্তির অধীনে, হিজবুল্লাহকে তার যোদ্ধাদের ইসরাইলি সীমান্ত থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে ফিরিয়ে আনার কথা।
ইসরাইলকে দেশ থেকে তার সৈন্যদের সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার করতে হয়। কিন্তু লেবাননের দক্ষিণে পাঁচটি স্থানে তাদের রাখা হয়েছে। তারা একে কৌশলগত বলে মনে করে।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের একটি প্রস্তাবের ওপর ভিত্তি করে এই যুদ্ধবিরতি করা হয়েছিল যেখানে বলা হয়েছে লেবাননের দক্ষিণে লেবাননের সৈন্য ও জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদেরই একমাত্র অস্ত্র বহন করা উচিত এবং সমস্ত অ-রাষ্ট্রীয় গোষ্ঠীর নিরস্ত্রীকরণের আহ্বান জানানো হয়।
লেবাননের সেনাবাহিনী হিজবুল্লাহর অবকাঠামো ভেঙে দিচ্ছে এবং কর্তৃপক্ষ অস্ত্র বহনের ওপর রাষ্ট্রীয় একচেটিয়া অধিকারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
লেবাননের প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন এক বিবৃতিতে এই হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, ইসরাইল ‘আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক প্রস্তাব উপেক্ষা করে চলেছে।’ তিনি ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কার্যকর পদক্ষেপ’ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নওয়াফ সালাম এক বিবৃতিতে এই হামলাকে ‘জাতীয় সার্বভৌমত্বের স্পষ্ট লঙ্ঘন এবং ‘শত্রুতা বন্ধের ব্যবস্থা ও স্থিতিশীলতার’ জন্য হুমকি বলে অভিহিত করেছেন।
জাতিসংঘকে লেখা এক চিঠিতে লেবাননে জাতিসংঘের অন্তর্বর্তীকালীন বাহিনীর ম্যান্ডেট এক বছরের জন্য নবায়নের অনুরোধ জানিয়ে, যা আগস্টে শেষ হচ্ছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ‘ইসরাইলের দখলকৃত সমস্ত লেবাননের ভূখণ্ড থেকে প্রত্যাহার ও চলমান লঙ্ঘন বন্ধ করার’ দাবি করেছে।
এই মাসের শুরুতে, ইসরাইল সতর্ক করে দিয়েছে যে হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র না করা পর্যন্ত তারা লেবাননে হামলা চালিয়ে যাবে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি একটি ভিডিওর মাধ্যমে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর অপপ্রচার চালানো হচ্ছে বলে শনাক্ত করেছে ফ্যাক্টওয়াচ।
বাংলাদেশে গুজব, ভুয়া খবর ও অপতথ্য প্রতিরোধ এবং জনসাধারণকে সঠিক তথ্য জানাতে কাজ করা স্বাধীন অনুসন্ধানী সংস্থা ফ্যাক্টওয়াচ এ তথ্য জানিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদিত এবং পরিচালিত হয় সেন্টার ফর ক্রিটিক্যাল অ্যান্ড কোয়ালিটেটিভ স্টাডিজ (সিকিউএস)’র মাধ্যমে।
ফ্যাক্টওয়াচ জানায়, সম্প্রতি ফেসবুক ও টিকটকে এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি অনেক ভিডিও ছড়ানো হয়েছে, যেগুলোর লক্ষ্য আগামী নির্বাচনকে ঘিরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে পক্ষে-বিপক্ষে উপস্থাপন করা। এসব ভিডিওর মাধ্যমে জনমত প্রভাবিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
ফ্যাক্টওয়াচ অনুসন্ধান দলের বরাতে বলা হয়, গত ২১ জুন ‘পলিটিক্যাল মিম’ নামের একটি ফেসবুক পেইজে ‘কেন টেম্পোস্ট্যান্ড ও চাঁদাবাজদের ভোট দেব না’ শিরোনামে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়। ওই ভিডিওতে হিজাব পরা এক নারীকে বলতে শোনা যায়, ‘টেম্পোস্ট্যান্ড বা কোনো চাঁদাবাজকে ভোট দিলে তাদের অপকর্মের দায় আপনাকেও নিতে হবে।’
ফ্যাক্টওয়াচ নিশ্চিত করেছে, ভিডিওটি আসল নয়, এটি সম্পূর্ণভাবে এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে।
ইরান ও ইসরায়েলের সাম্প্রতিক সংঘাতের প্রেক্ষাপটে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা সন্দেহে ব্যাপক গ্রেপ্তার অভিযান চালিয়েছে তেহরান। এর পাশাপাশি একাধিক অভিযুক্তের মৃত্যুদণ্ডও কার্যকর করেছে ইরান সরকার।
ইরানের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ইসরায়েলি এজেন্টদের অনুপ্রবেশের পর এসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা।
ইরান সরকারের অভিযোগ, ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) শীর্ষ কমান্ডার ও পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের টার্গেট করে হত্যাসহ যুদ্ধ চলাকালীন একাধিক গুরুত্বপূর্ণ হত্যাকাণ্ডে ইসরায়েলের কাছে সরবরাহ করা তথ্যই ভূমিকা রেখেছে।
এসব হত্যাকাণ্ডের জন্য ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদকে দায়ী করেছে তেহরান। তারা ইরানের ভেতর থেকেই এসব পরিচালনা করেছে বলে দাবি দেশটির।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই হত্যাকাণ্ডগুলোর ব্যাপকতা ও নিখুঁত বাস্তবায়নে হতবাক ইরানি কর্তৃপক্ষ। এ কারণে জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে এখন যেকোনো বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করছে ইরান।
তবে এসব পদক্ষেপ প্রকৃতপক্ষে ভিন্নমত দমন ও জনগণের ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার হাতিয়ার হয়ে উঠছে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে।
এদিকে, ইসরায়েলের সঙ্গে ১২ দিনব্যাপী সংঘাতের সময় তাদের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে তিনজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে ইরান সরকার। যুদ্ধবিরতির পরদিন ২৫ জুন এই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
এরপর থেকে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ রয়েছে—এমন শত শত সন্দেহভাজনের গ্রেপ্তারের ঘোষণা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এমনকি আটক কয়েকজনের বক্তব্যও রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়েছে। সেখানে তাদের ইসরায়েলি গোয়েন্দাদের সঙ্গে কাজ করার কথা স্বীকার করতে দেখা যায়।
এদিকে, চলমান এই অভিযানে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মানবাধিকার কর্মী ও সংগঠনগুলো।
তারা বলেন, ইরানের বিচারব্যবস্থায় জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি গ্রহণ ও অন্যায্য বিচারের ইতিহাস রয়েছে। তাছাড়া, আরও মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।
অন্যদিকে, ইরানের গোয়েন্দা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সিআইএ, মোসাদ ও এমআই৬-এর মতো পশ্চিমা ও ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে ‘নিরলস লড়াই’ চালিয়ে যাচ্ছে তারা।
আইআরজিসি সঙ্গে সম্পৃক্ত ফার্স নিউজ এজেন্সির তথ্য অনুসারে, ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানে হামলা শুরু করার পর থেকে ইসরায়েলি গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক ইরানেরর ভেতরে অত্যন্ত সক্রিয় হয়ে উঠেছে। সংঘাতের ১২ দিনে এই নেটওয়ার্কের সঙ্গে জড়িত সাত শতাধিক ব্যক্তিকে ইরানি গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা বাহিনী গ্রেপ্তার করেছে বলেও দাবি করেছে তারা।
বিবিসি ফারসিকে ইরানের কয়েকজন নাগরিক জানিয়েছেন, তারা ইরানের গোয়েন্দা মন্ত্রণালয় থেকে হুঁশিয়ারিমূলক বার্তা পেয়েছেন। সেখানে তাদের ফোন নম্বর ইসরায়েল-সংশ্লিষ্ট সোশ্যাল মিডিয়া পেজে পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তাদের এসব পেজ ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, না হলে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছে।
বিবিসি ফারসি, লন্ডনভিত্তিক ইরান ইন্টারন্যাশনাল ও মানোতো টিভিসহ দেশের বাইরের ফারসি ভাষার গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের ওপরও ইরান সরকার চাপ বাড়িয়েছে বলে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
ইরান ইন্টারন্যাশনালের অভিযোগ, সম্প্রতি তাদের একজন নারী উপস্থাপিকার মা, বাবা ও ভাইকে তেহরানে আটক করেছে আইআরজিসি। চ্যানেল থেকে ওই উপস্থাপিকাকে পদত্যাগ করার জন্য তার বাবাকে দিয়ে ফোন করিয়ে আহ্বান জানানো হয়। এমনকি পদত্যাগ না করলে আরও কঠোর পরিণতির হুমকি দেওয়া হয়।
যুদ্ধ শুরুর পর বিবিসি ফারসির সাংবাদিক ও তাদের পরিবারের প্রতি হুমকি আরও বেড়ে গেছে বলে দাবি করেছে সংবাদ মাধ্যমটি।
ইরানি নিরাপত্তা কর্মকর্তারা তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে যুদ্ধাবস্থায় পরিবারের সদস্যদের জিম্মি করাও ন্যায্য—এমন হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন কয়েকজন সাংবাদিক।
এসব সাংবাদিককে ‘মোহারেব’ বা ‘আল্লাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে’ এমন ব্যক্তি হিসেবে আখ্যা দেওয়া হচ্ছে যা ইরানি আইনে মৃত্যুদণ্ডযোগ্য অপরাধ।
সাংবাদিকদের পরিবারের প্রতি হুমকি এবং চ্যানেলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে বাধ্য করার প্রচেষ্টার মতো ঘটনার কথা জানিয়েছে মানোতো টিভিও।
এসব পদক্ষেপ মূলত ভিন্নমত দমন ও নির্বাসিত সংবাদকর্মীদের ভয় দেখানোর একটি বৃহৎ কৌশলের অংশ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বহু অধিকারকর্মী, লেখক ও শিল্পীকেও আটক করেছে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী। অনেক ক্ষেত্রে কোনো আনুষ্ঠানিক অভিযোগ ছাড়াই তাদের করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এমনকি ২০২২ সালের ‘নারী, জীবন, স্বাধীনতা’ আন্দোলনের সময় নিহতদের পরিবারের সদস্যদেরও আটক করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, কেবল বর্তমান আন্দোলন নয়, আগের আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধেও অভিযান চালানো হচ্ছে বলে ইঙ্গিত দেয় এসব পদক্ষেপ।
যুদ্ধ চলাকালে সরকার ইন্টারনেটে প্রবেশাধিকারে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে। যুদ্ধবিরতির পরও পূর্ণ প্রবেশাধিকার এখনো ফিরিয়ে দেওয়া হয়নি।
দেশজুড়ে সরকারবিরোধী বিক্ষোভের সময় ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণ এখন ইরানের একটি সাধারণ কৌশলে পরিণত হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
ইরানে ইনস্টাগ্রাম, টেলিগ্রাম, এক্স ও ইউটিউবসহ অধিকাংশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম এবং বিবিসি ফারসিসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম দীর্ঘদিন ধরেই বন্ধ। সেগুলো কেবল ভিপিএন বা প্রক্সি সার্ভিস ব্যবহার করেই দেখা যায়।
এসব ঘটনায় আশির দশকে ইরান-ইরাক যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির সঙ্গে বর্তমানের এসব পদক্ষেপের মিল খুঁজে পাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন মানবাধিকার-কর্মী ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। সে সময় রাজনৈতিক বিরোধীদের নির্মমভাবে দমন করেছিল ইরান সরকার।
ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাতের পর আন্তর্জাতিক পরিসরে দুর্বল হয়ে পড়া ইরান হয়তো আবার দেশের অভ্যন্তরেই ব্যাপক গ্রেপ্তার, মৃত্যুদণ্ডের মাধ্যমে কঠোর দমন-পীড়নের পথে হাঁটছে—এমন আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন অনেকে।
ইরানের এসব কর্মকাণ্ডের সমালোচকরা ১৯৮৮ সালের ঘটনা মনে করিয়ে দিয়ে বলেন, সে সময় সংক্ষিপ্ত ও গোপন বিচার শেষে হাজার হাজার রাজনৈতিক বন্দিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল, যাদের অধিকাংশই ছিল আগেই সাজাপ্রাপ্ত। ওই সময়ে অধিকাংশকে পরিচয়হীন গণকবরে দাফন করা হয়েছিল। বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার অনুসন্ধানে এসব তথ্য উঠে এসেছিল।
গলে প্রথম টেস্ট অবিশ্বাস্যভাবে ড্র হয়েছিল। তবে দ্বিতীয় টেস্টে অবিশ্বাস্য কিছু না হলে যে হারতে চলেছে বাংলাদেশ, তা একপ্রকার নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল গতকালই। ইনিংস ব্যবধানে হার এড়াতে পারে কি না—শুধু তা-ই দেখার অপেক্ষা ছিল। তবে সেই আশা পূরণেও ব্যর্থ হয়েছে টাইগাররা।
কলম্বো টেস্টের তৃতীয় দিন ১১৫ রান তুলতে গিয়ে ৬ উইকেট হারিয়ে দিন শেষ করে বাংলাদেশ। এরপর চতুর্থ দিন শুরুর পর মাত্র ৩৪ বলেই গুটিয়ে গিয়েছে টাইগারদের ইনিংস।
দ্বিতীয় ইনিংসে স্বীকৃত ব্যাটার হিসেবে কেবল লিটন দাসই আউট হতে বাকি ছিলেন। তবে চতুর্থ দিনের খেলা শুরুর পর পঞ্চম বলেই সাজঘরে ফেরেন তিনি।
লিটনের আউটে বাংলাদেশ ১১৭ রানে সাত উইকেট হারানোর পর স্কোরবোর্ডে আর ১৬ রান যোগ করতে পারেন লেজের দিকের ব্যাটাররা। ফলে ৭৮ রান ও এক ইনিংস ব্যবধানে হারের লজ্জায় ডুবতে হয় নাজমুল হোসেন শান্ত অ্যান্ড কোং-কে।
প্রথম ইনিংসে কেউ অর্ধশত ছুঁতে না পারলেও বেশ কয়েকটি ত্রিশোর্ধ্ব ইনিংসে ২৪৭ রান করেছিল বাংলাদেশ। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে প্রবাথ জয়সুরিয়ার বোলিং তাণ্ডবে ১৩৩ রানেই শেষ হয় টাইগারদের ইনিংস। এই ইনিংসে একাই পাঁচ উইকেট ঝুলিতে পুরেছেন জয়সুরিয়া।
দুই ইনিংস মিলিয়ে ৩৮০ রান করতে পেরেছে বাংলাদেশ, যা শ্রীলঙ্কার প্রথম ইনিংসের ৪৫৮ রান টপকে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল না। ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কার ১৫৮, দীনেশ চান্দিমালের ৯৩ ও কুশল মেন্ডিসের ৮৪ রানের ইনিংসে ভর করে ওই রান করে স্বাগতিকরা।
বল হাতে তাইজুল ইসলামও পাঁচ উইকেট নিয়েছিলেন, যা ছিল বিদেশের মাটিতে দ্বিতীয় বাংলাদেশি বোলার হিসেবে টেস্টে সর্বোচ্চ পাঁচবার পাঁচ উইকেট করে নেওয়ার রেকর্ড। তবে লজ্জাজনক হারে সেই রেকর্ড ম্লান হয়েছে।
টেস্ট ইতিসাসে এটি বাংলাদেশের ৪৭তম ইনিংস ব্যবধানে পরাজয়। আর সর্বোচ্চ ৯ বার টাইগারদের এই তেতো অভিজ্ঞতা দিল শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশের বিপক্ষে একই সংখ্যক টেস্ট ম্যাচে ইনিংস ব্যবধানে জেতার রেকর্ড আছে দক্ষিণ আফ্রিকারও। এই রেকর্ডে শ্রীলঙ্কা আজ প্রোটিয়াদের পাশে বসল।
মন্তব্য