‘অ্যালোপ্যাথি’ নিয়ে যোগগুরু রামদেবের বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে রাজ্যে রাজ্যে মামলা হয়েছে। সেসব মামলায় স্থগিতাদেশ চেয়ে এবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি।
এফআইআরকে চ্যালেঞ্জ করে রামদেব চাইছেন শীর্ষ আদালত সব শাস্তিমূলক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে তাকে রক্ষাকবচ দিক। পাশাপাশি সব মামলা দিল্লির আদালতে স্থানান্তরের আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
এর আগে গ্রেপ্তার নিয়ে নেটমাধ্যমে সরাসরি প্রশাসনকে চ্যালেঞ্জ ছুড়তে দেখা গেছে রামদেবকে। টুইটারে ‘অ্যারেস্ট রামদেব’ ট্রেন্ড শুরু হতেই আসরে নামেন তিনি।
রীতিমতো হাসির ছলে কেন্দ্রকে নিশানা করে রামদেব বলেছিলেন, ‘ওর বাবাও গ্রেপ্তার করতে পারবে না। ওরা ঠগ রামদেব, গ্রেপ্তার রামদেব এসব ট্রেন্ড করাচ্ছে নেটমাধ্যমে। ওরা এ রকম করুক। আমার লোকেরা এসব দেখে অভ্যস্ত।’
গত মাসে দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিপর্যয়ের মধ্যে অ্যালোপ্যাথি ওষুধ এবং ভাইরাসের প্রতিষেধক হিসেবে এর প্রভাব সম্পর্কে বিভিন্ন বিভ্রান্তিমূলক মন্তব্য করেছিলেন রামদেব।
এক ভিডিওতে তিনি বলেন, ‘চিকিৎসা বা অক্সিজেন না পেয়ে যত মানুষ মারা গেছে, তার চেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে অ্যালোপ্যাথি ওষুধ খেয়ে। অ্যালোপ্যাথি এক দেউলিয়া হওয়া বিজ্ঞান।’
ভিডিওতে তিনি আরও বলেন, ‘টিকার দুটি ডোজ পাওয়ার পরও ১ হাজার চিকিৎসক মারা গেছেন। নিজেদের বাঁচাতে না পারলে এরা কী ধরনের ডাক্তার?’
ওই ঘটনায় শোরগোল পড়ে যায় গোটা দেশে। নড়েচড়ে বসে ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন। রামদেবকে আইনি নোটিশ ধরানো হয় সংস্থাটির পক্ষ থেকে।
১ হাজার কোটি টাকার মানহানির মামলা করে ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন। প্রধানমন্ত্রীকে সরাসরি চিঠি লিখে হস্তক্ষেপেরও দাবি জানানো হয়।
এমন পরিস্থিতিতে ভারত সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন আসরে নামেন। তিনি রামদেবকে মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইতে অনুরোধ করেন।
রামদেব ভাঙেন তবু মচকাবেন না। মন্তব্য ফিরিয়ে নিলেও অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা নিয়ে ২৫টি প্রশ্ন ছুড়ে দেন তিনি।
তার মূল বক্তব্য, ২০০ বছরেও অ্যালোপ্যাথি বহু রোগ নিরাময় করতে পারেনি।
আরও পড়ুন:আজ সোমবার বেলা ১২টার দিকে উপজেলা পরিষদ চত্বরে মেলার উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার শবনম শারমিন।
উপজেলা কৃষি অফিসার আকলিমা বেগম এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. আজহার উল আলম, মৎস কর্মকর্তা জয় বণিক, উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি রফিকুল ইসলাম, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা জলি বদন তৈয়বা প্রমুখ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ভৈরব এর আয়োজনে তিন দিনব্যাপী এবারের কৃষি প্রযুক্তি মেলায় মোট ১৪টি স্টল রয়েছে। মেলায় বিভিন্ন কৃষির আধুনিক যন্ত্র, ফলজ, ফুলসহ বিভিন্ন জাতের গাছের চারা রয়েছে। প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত মেলার স্টলগুলি খোলা থাকবে। এ মেলা চলবে ২২ জুন থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকলিমা বেগম বলেন, উপজেলার কৃষকদের অংশগ্রহণে তিন দিনব্যাপী কৃষি প্রযুক্তি মেলা শুরু হয়েছে।
উপজেলা প্রাঙ্গণে কৃষি প্রযুক্তি মেলায় কৃষি কাজের সকল প্রযুক্তিসহ কৃষি সম্পকিত নানা বিষয়ে কৃষকদের সহযোগিতা ও পরামর্শের জন্য মেলায় বিভিন্ন স্টল বসেছে। এসব স্টলে এসে কৃষকরা প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিষয়ে জানতে পারবেন এবং তাদের কৃষি কাজে প্রযুক্তি ব্যবহারে কাজে লাগাতে পারবেন।
এবিষয়ে ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শবনম শারমিন বলেন, কৃষিতে প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি ছাড়া আমাদের বিকল্প কোনো পথ নেই। এরই মধ্যে কৃষিতে প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হয়েছে এবং বাংলাদেশ কৃষিতে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। এই ধরণের মেলা কৃষকদের আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে কৃষকদের প্রযুক্তি জ্ঞান ও ফলন বৃদ্ধির জন্য সহায়ক হিসাবে কাজে দিবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর প্রতিনিয়ত এ লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে, তারা গবেষণা করছেন, সারা বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন এবং কৃষিতে প্রযুক্তি ব্যবহারে উৎসাহিত করছেন। বর্তমানে সব ধরনের চাষে উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। এ উৎপাদন আরো বাড়াতে হবে। কৃষিতে যতো বেশি প্রযুক্তি ব্যবহার হবে ততো বেশি উৎপাদন বাড়বে।
নওগাঁর ধামইরহাট থানায় রক্ষিত প্রশ্নপত্রের ট্রাংক খোলা অবস্থায় পাওয়ার ঘটনায় ওই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) আরও চার পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। রোববার দুপুরে নওগাঁর পত্নীতলা সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. শরিফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ধামরইহাট থানা প্রত্যাহার হওয়া পুলিশ কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যরা হলেন, ধামইরহাট থানার ওসি আব্দুল মালেক, পুলিশ সদস্য মো. রেজুয়ানুর রহমান, আতিকুর রহমান ও মেহেদী হাসান।
এ ঘটনায় এর আগে আরও দুই পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়। তাঁরা হলেন, ধামইরহাট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জাকিরুল ইসলাম ও পুলিশ সদস্য ইকবাল হোসেন। থানায় রক্ষিত প্রশ্নপত্রের ট্রাংক খোলা পাওয়ার ঘটনায় ধামইরহাট থেকে মোট ছয় পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহারের ঘটনা ঘটলো।
এএসপি শরিফুল ইসলাম জানান, আসন্ন এইচএসসি প্রশ্নপত্রের বেশ কয়েকটি বাক্স ধামইরহাট থানা হেফাজতে রাখা হয়। প্রশ্নপত্রের বাক্সগুলো থানার মালখানা কক্ষে রাখার কথা। কিন্তু কয়েকটি বাক্স ধামইরহাট থানায় আসামি রাখার হাজতখানা ঘরে রাখা হয়েছিল। ওই হাজতখানায় গত মঙ্গলবার রাতে মাদক মামলার এক আসামিকে রাখা হয়। গভীর রাতে ওই আসামি ট্রাংকের সিলগালা উঠিয়ে তালা খুলে ফেলে। ট্রাংকের ভেতরে প্যাকেটবন্ধ অবস্থায় থাকা প্রশ্নপত্র বের করে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলে হাজত ঘরের মধ্যে। কয়েকটি ছিঁড়েও ফেলে। পরদিন সকালে থানার কর্তব্যরত অফিসারের নজরে আসে এটি।
ঘটনা জানার পর ওই দিন থানার লকআপ বা হাজত পাহারার দায়িত্বে নিয়োজিত একজন এসআই ও একজন কনস্টেবলকে প্রত্যাহার করে নওগাঁ পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়। পরবর্তীতে এ ঘটনায় দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগে গতকাল শনিবার ধামইরহাট থানার ওসিসহ আরও চার পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করে নওগাঁ পুলিশ লাইনে ক্লোজ কর হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্তে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য কিংবা অন্য কারও বিরুদ্ধে দায়িত্ব অবহেলার প্রমাণ মিললে তাঁদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও জানান, থানা হাজতে থাকা অবস্থায় যে ব্যক্তি প্রশ্নপত্রের ট্রাংক খোলেন সেই ব্যক্তিকে হত্যাকা-ে জড়িত থাকার অভিযোগে ধামইরহাট থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে। সরকারি সম্পদ বিনষ্টের অভিযোগে ওই আসামির বিরুদ্ধে নতুন একটি মামলা করেছে ধামইরহাট থানা পুলিশ। গত বুধবার আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
এদিকে থানায় রক্ষিত প্রশ্নপত্রের ট্রাংক খোলা পাওয়ার ঘটনায় রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষার ইতিহাস দ্বিতীয় পত্রের প্রশ্নপত্র বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড।
রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আ.ন.ম মোফাখখারুল ইসলাম শনিবার জানান, ইতিহাস বিষয়ের যে সেটটি থানায় নষ্ট হয়েছে সেটিতে আর পরীক্ষা নেওয়া হবে না। রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় আগামী ১৯ জুলাই বিকল্প সেটে পরীক্ষা নেওয়া হবে।
নওগাঁ জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার রাতে নওগাঁর ধামইরহাট থানায় রক্ষিত প্রশ্নপত্রের ট্রাংক খোলা অবস্থায় পাওয়ার পর নওগাঁ জেলা পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
নওগাঁর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সাদিয়া আফরিন জানান, ওই প্যাকেটে ৫০টি প্রশ্নপত্র ছিল। সব কটিই উদ্ধার করা হয়েছে। কয়েকটি ছেঁড়া থাকলেও কোনো প্রশ্নপত্র হারিয়ে যায়নি।
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় টয়লেটের ছাদে গাঁজা চাষ করায় ফয়সাল মিয়া বিজয় (৩২) নামের এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শনিবার দিবাগত রাতে সাটুরিয়া উপজেলার ধানকোড়া ইউনিয়নের সাইজাল বরুন্ডি এলাকা থেকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) একটি দল তাকে গ্রেফতার করেন। এসময় চারটি গাঁজা গাছ উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃত ফয়সাল মিয়া বিজয় সাটুরিয়া উপজেলার ধানকোড়া ইউনিয়নের সাইজাল বরুন্ডি এলাকার মোজাম্মেল হকের ছেলে।
জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ জানান,ফয়সাল মিয়া বিজয় তার বসতঘরের পাশের পাকা টয়লেটের ছাদে গাঁজা চাষ করছে,এমন সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার রাতে তার বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। পরে ফয়সাল মিয়া বিজয়কে আটক করা হয় এবং তার পাকা টয়লেটের উপর থেকে রোপন করা চারটি গাঁজা গাছ উদ্ধার করা হয়। এরপর গাঁজা গাছসহ তাকে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়।
জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের পরিদর্শক মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন জানান,নিয়মিত মাদকবিরোধী অভিয়ানের অংশ হিসেবে চারটি গাঁজা গাছসহ তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এঘটনায় তার বিরুদ্ধে সাটুরিয়া থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা করা হয়েছে।
নিবন্ধনের আবেদন জমা দেওয়ার শেষ দিনে এখন পর্যন্ত অন্তত দুই ডজন রাজনৈতিক দল নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আবেদন জমা দিয়েছে। রবিবার (২২ জুন) সকাল থেকে দলগুলোর প্রধান ও নেতারা নিজেরাই নির্বাচন ভবনে এসে নিবন্ধনের আবেদনপত্র জমা দেন।
এরইমধ্যে আবেদন জমা দিয়েছে— জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), জনতার পার্টি বাংলাদেশ (জেপিবি), গণদল, বাংলাদেশ জনজোট পার্টি (বাজপা), বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টি (বিআরপি), বাংলাদেশ সমতা পার্টি, বাংলাদেশ ফরায়েজি আন্দোলন, বাংলাদেশ সিটিজেন পার্টি, ইসলামী ঐক্য জোট, নতুন বাংলাদেশ পার্টি (এনবিপি), বাংলাদেশ জাগ্রত জনতা পার্টি, বাংলাদেশ গণ বিপ্লবী পার্টি, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ভাসানী ন্যাপ), বাংলাদেশ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ফেডারেশন, জনতার দল, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা জনতা পার্টি, বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল (এমএল), বাংলাদেশ নাগরিক পার্টি (বিএনপি), জাতীয় ন্যায়বিচার পার্টি, বাংলাদেশ ডেমোক্রেটিক পার্টি (বিডিপি) ও ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি)।
‘হাতি’ প্রতীক চায় জেপিবি
জনতার পার্টি বাংলাদেশ (জেপিবি) নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের আবেদনপত্র জমা দিয়ে দলীয় প্রতীক হিসেবে ‘হাতি’ চেয়েছে। নির্বাচন ভবনে আবেদনপত্র জমা দিয়ে জেপিবির মহাসচিব শওকত মাহমুদ বলেন, ‘আমরা রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের আবেদন করেছি। বর্তমানে নিবন্ধনের যে নিয়ম রয়েছে তা কঠিন।’
‘যদিও নির্বাচন সংস্কার কমিশন এসব পরিবর্তনের সুপারিশ করেছে, এখনো তা বাস্তবায়িত হয়নি। তবুও আমরা প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী আবেদন করেছি এবং নিবন্ধনের আশাবাদ ব্যক্ত করছি।’
তিনি বলেন, দলটি সংস্কারের পক্ষে এবং ভবিষ্যতে আইন পরিবর্তন হলে কমিশনের সঙ্গে সহযোগিতা করবে।
জনতার দল চায় ‘চাবি’ প্রতীক
অন্য আরেকটি দল জনতার দল দলীয় প্রতীক হিসেবে ‘চাবি’ চেয়ে আবেদনপত্র জমা দেয়। দলের আহ্বায়ক অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম কামাল ও সদস্যসচিব আজম খান নির্বাচন ভবনে এসে আবেদন জমা দেন। আবেদন জমা দেওয়ার পর শামীম কামাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজনীয় সব শর্ত পূরণ করেছি এবং জেলা ও উপজেলা কমিটি গঠন করেছি। এখন সিদ্ধান্ত কমিশনের।’
এদিকে, বিকেলে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) তাদের নিবন্ধনের আবেদন জমা দেওয়ার কথা রয়েছে। নির্বাচন কমিশন ১০ মার্চ নতুন রাজনৈতিক দলগুলোকে নিবন্ধনের জন্য ২০ এপ্রিল পর্যন্ত সময় দিয়ে আবেদন আহ্বান করে। ওই সময়ের মধ্যে ৬৫টি দল আবেদন করে। পরে কমিশন সময়সীমা ২২ জুন পর্যন্ত বাড়ায়।
রাষ্ট্রপতির আদেশ ১৯৭২-এর ৯০(ক) ধারা অনুযায়ী নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধিত হয়। নিবন্ধিত দল জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজস্ব প্রতীকে অংশ নিতে পারে। বর্তমানে ইসির তালিকাভুক্ত নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৫০টি। এর মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত এবং জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন আদালতের আদেশে পুনরুদ্ধারের পথে রয়েছে।
নতুন অর্থবছরের জন্য সাত লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার জাতীয় বাজেটে অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। রবিবার (২২ জুন) প্রধান উপদেষ্টার তেজগাঁওয়ের অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বাজেট অনুমোদন পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বাজেট অনুমোদন হয়েছে। বাজেটের অঙ্ক পরিবর্তন হবে না। আমরা কোনো মেগাপ্রকল্প নিচ্ছি না। পাশাপাশি, পুরোনো অনেক প্রকল্প বাদ দিয়ে দিয়েছি। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) টাকা মোটামুটি একটা বাস্তব পর্যয়ে নিয়ে এসেছি।’
তিনি বলেন, ‘আগে বাজেট নিয়ে যা লেখালেখা হয়েছে, তার মধ্যে তিনটি বিষয়ে পরিবর্তন এসেছে। একটা হচ্ছে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ৮১ হাজার ২৯৭ কোটি টাকা ছিল, সেটা পরিবর্তন করে ৯১ হাজার ২৯৭ কোটি টাকা করা হয়েছে। ১০ হাজার কোটি টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে।’
‘দ্বিতীয়টি হচ্ছে, ডব্লিউটিওর একটি চুক্তি আছে যে আমরা রফতানি খাতে প্রণোদনা চারধাপে কমিয়ে আনবো। এরইমধ্যে দুইধাপ আমরা করেছি। তারা বলেছিল, জুলাই থেকে তৃতীয় ধাপ শুরু করা। কিন্তু আমরা বলেছি, জানুয়ারির আগে আমরা শুরু করবো না। প্রস্তুতির জন্য আমাদের সময় লাগবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে সংসদ না থাকায় এবার উপদেষ্টা পরিষদের মাধ্যমে সরকারের ব্যয় ও সংশোধিত অর্থ অধ্যাদেশ অনুমোদন করা হয়েছে। অর্থ অধ্যাদেশ রাষ্ট্রপতির সম্মতি নিয়ে নির্দিষ্টকরণ অধ্যাদেশের গেজেট আকারে প্রকাশিত হবে। অধ্যাদেশটি জারি করার পর তা তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হয়ে যাবে।
জুলাই অভ্যুত্থানে বদলে যাওয়া বাংলাদেশের ভিন্ন বাস্তবতায় এবার সংসদের বাইরে বাজেট উপস্থাপন করা হয় ভিন্ন আঙ্গিকে। গত ২ জুন বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। সংসদ না থাকায় তার বাজেট বক্তৃতা বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারে সম্প্রচার করা হয়।
সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ বাতিলের দাবিতে আগামীকাল সোমবার (২৩ জুন) বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করবেন সচিবালয়ের কর্মচারীরা।
রবিবার (২২ জুন) সচিবালয়ের ভেতরে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে এই কর্মবিরতির ঘোষণা দেন সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের চেয়ারম্যান মো. নূরুল ইসলাম।
এর আগে, বেলা সোয়া ১১টার দিকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের নিচ থেকে বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু করেন কর্মচারীরা। এ সময় বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে তারা সচিবালয়ের বিভিন্ন দিক প্রদক্ষিণ করেন।
মিছিল থেকে ‘অবৈধ কালো আইন, মানি না, মানবো না’, ‘আমাদের দাবি মানতে হবে, মানতে হবে’, ‘আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘ফ্যাসিবাদী কাল আইন, মানি না মানবো না’, ‘আপস না লড়াই, লড়াই লড়াই’, ‘সারা বাংলার কর্মচারী, এক হও লড়াই কর’-সহ নানা স্লোগান দেওয়া হয়।
চাকরি নিরাপত্তা ও সুযোগ-সুবিধা হ্রাসের আশঙ্কায় একাধিক বিভাগের সরকারি কর্মচারীরা যে ধারাবাহিক বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন, আজকের কর্মসূচি ছিল তারই অংশ।
এর আগে, ১৯ জুনও সচিবালয়ে আন্দোলন ও বিক্ষোভ করেন সরকারি কর্মচারীরা। অধ্যাদেশটি বাতিল না হলে আরও কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণাও দিয়েছিলেন তারা।
গত ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদনের পর সরকারি চাকরি অধ্যাদেশের খসড়া বাতিলের দাবিতে গত ২৪ মে আন্দোলনে নামেন সচিবালয়ের কর্মচারীরা।
কর্মচারীদের আন্দোলনের মধ্যেই ২৫ মে রাতে এই অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। অধ্যাদেশ অনুযায়ী, চার ধরনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধের জন্য বিভাগীয় মামলা ছাড়াই শুধু কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে চাকরিচ্যুত করা যাবে।
সরকারি কর্মচারীরা অধ্যাদেশটিকে নিবর্তনমূলক ও কালো আইন হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। । এটি বাতিল করার জন্য সচিবালয়ে বিক্ষোভ মিছিল, কর্মবিরতি, অবস্থান কর্মসূচি ছাড়াও কয়েকজন উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা।
কোনো এক ব্যক্তি তার জীবদ্দশায় সর্বোচ্চ দশ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা উচিত না বলে মনে করে জামায়াতে ইসলামী। রবিবার (২২জুন) দুপুরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনার শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফকালে এমন কথা বলেন দলটির নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।
তিনি বলেন, ‘বার ও মেয়াদ নিয়ে ঝামেলার মধ্যে প্রস্তাব করেছিলাম—একজন ব্যক্তি তার জীবদ্দশায় সর্বোচ্চ দশ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রীর দায়্ত্বি পালন করতে পারবেন না।’
এ বিষয়ে সবাইকে একমত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বার ও মেয়াদের ব্যাখ্যায় যাওয়ার দরকার নেই। তিনটি দল ছাড়া সবাই এই প্রশ্নে এক জায়গায় এসেছি।’
‘অর্থাৎ একজন ব্যক্তি তার জীবনে সর্বোচ্চ ১০ বছর প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব পালন করতে পারবেন, সেটা যত বারই হোক। এটা জাতির আকাঙ্ক্ষা, আমি মনে করি। এটিই আমাদের সিদ্ধান্ত হওয়া উচিত সবার ঐকমত্যের ভিত্তিতে, বলেন জামায়াতের এই নায়েবে আমির।
তিনি বলেন, ‘এমন নজির বহুদেশে আছে। এটা বাংলাদেশেও জরুরি বলে আমরা মনে করি। এ নিয়ে আমরা প্রায় ঐকমত্যে এসেছি। বিকালে আরও দুটো পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা হবে।’
বৈঠকে আলী রীয়াজ ছাড়াও আরও উপস্থিত রয়েছেন, ঐকমত্য কমিশনের সদস্য জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী, পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন, নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান বিচারপতি এমদাদুল হক এবং দুদক সংস্কার কমিশনের প্রধান ইফতেখারুজ্জামান।
এরআগে গেল ১৭ জুন দ্বিতীয় পর্যায়ের অসমাপ্ত আলোচনায় অংশ নেয়নি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে যোগাযোগের পর পরেরদিন অবশ্য অংশ নিয়েছিল তারা।
এদিকে সংসদের উচ্চকক্ষের আসন বণ্টন, জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনসহ বেশ কয়েকটি বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে রাজনৈতিক দলগুলো এখনো কাছাকাছি আসতে পারেনি। প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় ভারসাম্য আনতেই এনসিসি গঠনের কথা বলা হচ্ছে।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতি এবং সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচন নিয়েও দলগুলোর ঐকমত্য হয়নি গত সপ্তাহে হওয়া চার দিনের সংলাপে। এ পর্যায়ে ঐকমত্যের সংজ্ঞা নিয়েও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতানৈক্য প্রকাশ পেয়েছে। কমিশন এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার কথাও ভাবছে।
মন্তব্য